অবশেষে ভালোবেসে পর্ব-৩১+৩২

0
759

#অবশেষে_ভালোবেসে
পর্বঃ ৩১
লেখিকাঃ মেহেরুন নেসা
.
ওর নাম নিতেই ও স্টেজ এ উঠে আসতেই করতালি শব্দ শুনতে পেলো আর সাথেই চোখ গেলো অডিয়েন্স এর সাথে প্রথম সাড়ি তে বসে থাকা সানভির উপর।।
.
স্টেজ এ দাঁড়িয়ে থাকা সবার সাথে হাই হ্যালো করে নির্ভান ওর নির্ধারিত সীট এ গিয়ে বসলো সাথে আরো একজন জাজ ও আছেন ওর পরেই তাকেও ইনভাইট করা হলো। তারপর শুরু হলো প্রথম রাউন্ড question answer এর সব কাপলই লাস্ট একটা প্রশ্নে আটকে গেলো আর সেটা হচ্ছে,,,, তাদের প্রথম দেখায় তারা কি রঙের ড্রেস পরেছিলো!!,, মনে মনে নির্ভান ঠিকই উত্তর টা দিলো লাইট পিংক কালারের ড্রেস পরেছিলো সানভি! সব আটকে গেলেও লাস্ট যে কাপল ছিলো যারা এই প্রশ্ন টার ও উত্তর খুব পারফেক্ট দিয়েছে। তারা আর এতে নির্ভান জানতেও পারলো যে কাপল ছোট কালের ফ্রেন্ড তখন থেকেই তাদের ভালোবাসার শুরু নাম টাও খুব মিল ধ্রুব তারা! তাদের এতো মিল এতো পার্ফেক্ট হওয়ার পর ও কিছু টা দূর দূর মনে হলো ওদের।
এরপরের রাউন্ডে ও ওই কাপল ধ্রুব তারা খুব ভালো পারফরম্যান্স দিয়েছে। তাই দ্বিতীয় রাউন্ড শেষে যখন ব্রেক দেওয়া হলো নির্ভান ওদের সাথে দেখা করার জন্য বেক স্টেজ এ গেলো।।

হেই.. আপনি ধ্রুব এন্ড আপনি তারা রাইট?

– হ্যাঁ, আপনি এখানে!!

– হ্যাঁ,, তোমাদের দেখতে, তোমাদের থেকে শিখতে।

– শিখতে?? ( ধ্রুব তারা দুইজনই একই সাথে বলে উঠে)

– yess… যাই হোক তোমাদের পরিচয় তো অনেকদিনের তাই না?

– হ্যাঁ আমরা ছোটকাল থেকেই ফ্রেন্ডস, ফ্যামিলি ফ্রেন্ডস এন্ড প্রতিবেশী ও। ( ধ্রুব)

তারা এখানে কিছু বললো না শুধু ভদ্রতার জন্য একটু হাসি দিয়ে মাথা নাড়লো। নির্ভান শকড রিয়েকসন দিয়ে আবার জিজ্ঞেস করলো

– আর এখন??

– We are married. ( ধ্রুব)

তারা এটা শুনে ধ্রুবের দিকে তাকালো, নির্ভান কিছু বলতেই নিচ্ছিলো তখনই তারা চমকে দিয়ে বললো

– এবং আমরা ডিভোর্স ও ফাইল করে দিয়েছি। এক্সকিউজ মি।
বলেই নির্ভান এর পাশ কাটিয়ে চলে গেলো। ধ্রুব তো ডিভোর্স এর কথা প্রায় ভুলেই গিয়েছিলো,, কতো কিছু ঠিক করতে হবে!!

– এটা কি ছিলো?

ধ্রুব মাথা ঝুলালো।

– আর ইউ সিরিয়াস?

– হুম… অনেক কাহিনী আছে।।

– আমি শুনতে চাই।

– কিন্তু আপ….
ধ্রুবের আর কিছু বলার আগেই ম্যানেজার আসে নির্ভান কে ডাকতে এবং সব প্রতিযোগিদের কাছে আর মাত্র বিশ মিনিট আছে এটা জানাতে।

– ওকে তাহলে সব শেষ হওয়ার পর আমি শুনবো এন্ড নো এক্সকিউজ।
বলেই নির্ভান চলে এলো।।
পুরো গেম শো টা জুরেই নির্ভান ওই কাপল এর উপর খুবই আকর্ষিত হয়ে ছিলো ওর কাছে তারার বিহেভ টা দেখে মনে হচ্ছিলো ওই মেয়ে টাও সানভির মতো ধ্রুবের ভালোবাসার মূল্য টা বুঝতে পারছে না। তাই তো বিয়ের পর ও!
.
নির্ভান ওর সীট এ আসার পর ই সানভি এগিয়ে আসে

– কোথায় গিয়েছিলেন মি.কে? কিছু দরকার হলে আমাকে বলতেন।

– নাহ ইটস ওকে।
টাইম হয়ে যাওয়ায় সানভি ওর অডিয়েন্স সীট এ গিয়ে বসে পরলো। পরের এনাউন্সমেন্ট আর গেম দেখে নির্ভান সেই মজা পেয়েছে। কারণ এটাতে ছেলেদের জুতা মেয়েদের পরানো হয়েছে আর মেয়েদের জুতা ছেলেদের। ওর খুব ফানি লেগেছে ব্যাপার টা। আর সাথে খারাপ ও লাগলো যে ওর প্রিয় কাপল টা জিততে পারেনি। স্টেজ এ ট্রফি দিতে উঠে ধ্রুব আর তারা কে বললো

– তোমরাও ভালো খেলেছো। বেটার লাক নেক্সট টাইম।।

– নেক্সট টাইম! (ধ্রুব)

– মি. নির্ভান তখন তো খেলার চাপে কিছু বলিনি। কিন্তু আমার বোন নূর আপনার অনেক বড় ফ্যান ও এখানেই আছে ওর সাথে দেখা করতে পারবেন একটু?? ( তারা)

– হ্যাঁ অবশ্যই ব্যাকস্টেজ এ গেলে তখন।

– থ্যাংক ইউ।
.
ব্যাক স্টেজ এ তারা নূর কে ডাকতে গেলে নির্ভান ধ্রুব কে নিজের রুমে ডাকায় ডাকিয়ে সব শুনতে চাইলে জানতে পারে যে ধ্রুব আর তারা ছোট কাল থেকেই ফ্রেন্ড একসময় ধ্রুব কে ভালো পড়াশোনার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয় আর তারা গ্রামেই এখান থেকেই ওদের আলাদা হওয়া সময়ে তারা ঢাকায় এলে শুনে ধ্রুব লন্ডনে চলে গেছে। এর পর অপেক্ষার পর যখন অনেক বছর পর দেখা হয় তখন ওরা একে অপরের প্রেমে পরলেও তারার চাচ্চু আর ধ্রুবের ফুপ্পির মধ্যে কি এক ঝামেলায় ধ্রুবের মা আর ধ্রুব কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে যার কারণ এ বিয়ে হয়েছে আবার ভেঙেও যাচ্ছে আর তাই এখন তারা আর ধ্রুব কে মাফ করতে পারছেনা। শুনে নির্ভান বললো

– হাহ,, আসলেই আমরা সময় থাকতে মূল্য দিতে জানিনা, আর যখন মূল্য দিতে জানি তখন সময় আমাদের হাতে থাকেনা।।। দেখোনা যে তোমাকে আগে এতো ভালোবাসতো তার সাথেই তুমি এতো অন্যায় করেছো আর তার প্রতিদান স্বরূপ সে তোমার কাছ থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। আর আমি…. যাই হোক, তোমাদের এতো আগের থেকে পরিচয় তাই তোমাদের সম্পর্কে জানতে ইচ্ছুক ছিলাম। কিন্তু সম্পর্কে যে এতো কাহিনী তা জানতাম না। নলেই বড় একটা শ্বাস নিয়ে বললো,,, all the best for ur future.
এরপর ধ্রুব নির্ভান এর কাছে ওর কি হয়েছে জানতে চাইলে বললো,,,, তোমাকে সে একসময় ভালোবেসেছিলো এখন ঘৃণা করে কিন্তু আমার সে না আমাকে ভালোবাসে আর না ই ঘৃণা। কিছুই হতে পারিনি তার কাছে। আর….
আর বলা হলো না কারণ তারা ওর বোন কে নিয়ে এসেছে ওর বোন তো সেই খুশি রকস্টার কে দেখে। সেল্ফি নিচ্ছিলো তার ফ্যান এর সাথে তখন সানভি রুমে এন্টার করে।

– মি. কে এখন যেতে হবে।

– হুম। সবাই সানভি কে দেখছিলো তাই নির্ভান বললো,,,, আমার সে! মানে আমার সেক্রেটারি।
তারপর সবাইকে বাই বলে চলে এলো সানভি কে নিয়ে। বাহিরে আসতেই ওর ফ্যান রা ওকে দেখে চিৎকার করে উঠলো। অনেক মানুষ দাড়িয়ে আছে তবুও বডিগার্ড দের মাঝে দাঁড়িয়ে নির্ভান সবাইকে হাত দিয়ে বাই দেখিয়ে চলে এলো।
.
গাড়িতে বসে নির্ভান সানভি কে ধ্রুব আর তারার কথা বললো ওদের সাথে কি কি হয়েছে তা জানালো। সানভি তেমন রিয়েকশন দিলো না দেখে নির্ভান আবার কানের কাছে গিয়ে ধীরে ধীরে বললো

– আমাদের লাইফের তারা আমি আর ধ্রুব তুমি তাই এখন আমাকে বুঝতে পারছো না।

– হুম আর তাই তো কিছুদিন পরে হয়তো আপনি বুঝতে পেরে এই ধ্রুবের কাছ থেকে দূরে সরে যাবেন।

– আমি জানি এই ধ্রুব এমন কিছুই করবে না যাতে এই তারা দূরে সরে যাবে।

– কিন্তু এমন কিছু তো অবশ্যই হচ্ছে যাতে…যাতে তারা কে দূরে অবশ্যই যেতে হবে। মি. কে এখন আমাকে যেতে হবে
সানভির বাসা এসে পরায় ও চলে গেলো বের হয়ে। নির্ভান বাসায় এসে শুনে রাইসা আর ওর বাবা মা ও আসবে এবং অবশ্যই যেনো তাদের স্পেশাল গেস্ট এর মতো বিহেভ করা হবে। এতে সাংবাদিক রা কিছু টা হলেও ক্লু পেয়েই যাবে।
ওর মা বাবা অনেক এক্সাইটেড আর ও ততই চিন্তিত।
.
পরেরদিন সকালে সানভি নির্ভানের স্টুডিও তে আসেনি সোজা ওই হল এ চলে গিয়েছে যেখানে নির্ভানের এলবাম লঞ্চ করা হবে। অনেক কাজ আছে সব কাজ চেক করতে হবে সব ঠিক ভাবে হয়েছে কিনা। খাবার থেকে শুরু করে সব এরেঞ্জমেন্ট চেক করে শেষে ওর বাসায় গিয়ে ওর পার্টি ড্রেস পরে ইভেন্ট এ চলে আসে। আর কিছুক্ষনের মধ্যেই নির্ভান ও ওর ফ্যামিলি ও আসে সানভি তাদের ওয়েলকাম করতে গেলে তাদের পেছনেই রাইসা আর ওর ফ্যামিলি ও আসে আর তখনই নির্ভানের মা রাইসা কে নির্ভানের সাইডে হাটতে বলে। কিন্তু নির্ভান এগিয়ে গিয়ে সানভির সাথে কথা বলার বাহানায় এগিয়ে যাওয়ায় সাংবাদিক রা রাইসা আর নির্ভান এর বিদলে সানভি আর নির্ভান এর ছবি তুললো।।
.
.
.
চলবে।

#অবশেষে_ভালোবেসে
পর্বঃ ৩২
লেখিকাঃ মেহেরুন নেসা
.
তখনই নির্ভানের মা রাইসা কে নির্ভানের সাইডে হাটতে বলে। কিন্তু নির্ভান এগিয়ে গিয়ে সানভির সাথে কথা বলার বাহানায় এগিয়ে যাওয়ায় সাংবাদিক রা রাইসা আর নির্ভান এর বিদলে সানভি আর নির্ভান এর ছবি তুললো।।
.
হলে আগের থেকেই অনেক প্রেস এবং নিউজ এর লোক এসে বসে ছিলো আর মিউজিক ইন্ডাস্ট্রির ফেমাস পার্সন তা তো আছেই।
কিছুক্ষনের মধ্যেই ওর নিউ এলবাম এর মেইন পোস্টার আর গান রিলিজ করার পর সাংবাদিক দের সাথে মিটিং এ তাদের প্রশ্নের উত্তর দিবে। কিন্তু তার আগে ওর কয়েকটা গান এর পারফরম্যান্স আছে তার জন্যই রেডি হচ্ছে এখন সানভি ও পুরো প্রোগ্রাম এর সব ঠিক আছে কিনা তা তদারকি করছে আর নির্ভান এর বাবা মা রাইসার বাবা মায়ের সাথে কথায় ব্যাস্ত।
হটাৎ করেই লাইটস অফ হয়ে গেলো আর স্টেজ এ কিছু লাইটিং এর পরে দেখা গেলো নির্ভান স্টেজ এ উঠে আসছে পেছনে ব্যান্ড এর লোক আছে। প্রথমে ও ওর পুরোনো এলবাম এর কয়েকটা গান গাইলো তারপর বললো,,,, The song of tonight the launching song is coming…. বলেই নতুন গান গাওয়া শুরু করলো। আর সাথে সাথেই করতালি বেজে উঠলো। সানভির গান এর বিট আর গান দুটোই খুব ভালো লাগলো কিন্তু হটাৎ খেয়াল হলো গান টা রোমান্টিক গান ও যে রকস্টার ও এবার রক গান গায়নি। একটা রোমান্টিক ঠান্ডা গান লিখেছে ও এবার। নির্ভান এখন সানভির দিকেই তাকিয়ে আছে তাই সানভি এক।জায়গায় দাড়াচ্ছে না আর এতে সানভি মনে মনে বলছে,,,,, মি.কে এর সাথে কথা বলতেই হবে।
.
নির্ভানের স্টেজ পারফরম্যান্স শেষ হতেই ও চেঞ্জিং রুমে গেলো, পেছনে সানভি ও গেলো কথা আর বাড়ার আগেই ওর এটা শেষ করতেই হবে মি.কে এর ফ্যামিলি তার জন্য খারাপ কিছু তো আর চুজ করেনি। তাই সানভি চেঞ্জিং রুমে গিয়ে গেইট লাগিয়ে দিলো যাতে কেউ ভেতরে এসে ওদের কথা কেউ শুনে না ফেলে।
নির্ভান ওর জ্যাকেট খুলছিলো তখনই সানভি এসে গেইট লাগিয়ে দেয়া দেখে ওর দিকে তাকিয়ে আছে

– মি. কে।

– হ্যাঁ বলো।

– আপনার এসব এখানেই স্টপ করতে হবে।

– কিসব গান গাওয়া??

– নাহ তা কেনো হবে। আপনি এমন করতে পারেন না আপনার জন্য রাইসা ম্যম ই পারফেক্ট। প্লিজ মি.কে আমার দিকে এভাবে তাকিয়ে থাকা, রাইসা কে রেখে আমার সাথে হাটা এসব আজ করেছেন মি.কে প্লিজ এসব আর করবেন না এসব ঠিক না।

– তুমি জানো এই গান টা এলবামে ছিলো না আমি ওইদিন এটা এড করিয়েছি। এটা কে আমি এলবামের টপ এ এনেছি মেইন সং বানিয়েছি। কারণ গান টা আমি তোমার জন্য বানিয়েছি। তুমি কেনো বুঝোনা!! তুমি কেনো বুঝোনা!!

– মি.কে।

– শুনো সান আমার জন্য গান যেমন তুমিও তেমন। না আমি গান ছাড়তে পারবো আর না ই তোমাকে। আমি জানিনা আমি আজ বাসায় গিয়ে আম্মু পাপা কে বলে দিবো আমি তোমাকে ভালোবাসি তুমি কি করবে জানিনা। কিন্তু আমি রাইসা কে বিয়ে করতে পারবো না সরি সান।

– মি.কে আপনি…

– সান আমার ভালোবাসা লাভ এট ফার্স্ট সাইট না।,,,, বলেই সানভির দিকে আগালো সানভি এবার অটল দাঁড়িয়ে আছে,,,, প্রতিদিন দেখে প্রতিদিন তোমার উপস্থিতি অনুভব করে প্রতিদিন তিলে তিলে এই ভালোবাসা টা গড়ে উঠেছে। এখন তোমাকে যেদিন না দেখি ভালো লাগে না যেদিন তুমি আশেপাশে না থাকো ভালো লাগেনা। তোমাকে ছাড়া ভালো লাগেনা।

– আমার মনে হচ্ছে আপনি এই বিষয় টা নিয়ে একটু বেশিই ভাবছেন তাই এমন মনে হচ্ছে, Believe me this is not love.
নির্ভান একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো মনে হয় যেন হাল ছেড়ে দিচ্ছে প্রতিকূল আবহাওয়ায় যেমন সমুদ্রে নৌকা তীরে উঠতে সক্ষম হয় না ঠিক তেমনই অনেক চেষ্টা করেও পারলো না নির্ভান সানভির মন গলাতে।

– সান! মিস সান কোথায় গেলো যে আমার সব কথা শুনতো?

– আমিও সেই মি.কে কে খুজছি যে এমন অপ্রয়োজনীয় কথা বা ব্যবহার করতো না। আমার কথা শেষ হয়তো বুঝাতে পেরেছি এখন বাহিরে একটু দেখতে হবে আমি আসি। বলেই নির্ভান এর কাছ থেকে সরে রুম থেকে বের হয়ে গেলো। বাহিরে এসেই দেখে রাইসা দাঁড়িয়ে আছে

– সানভি! তুমি নির্ভান এর চেঞ্জিং রুমে?

– আ.. আম,, মি. কে এর ড্রেস হ্যাঁ তার ড্রেস এ একটু প্রবলেম হয়েছিলো তাই এসেছিলাম। এখন ওইদিক টা সামলাতে হবে এখন আসি।। বলেই চলে গেলো।

– স্ট্রেঞ্জ! যাই হোক। নিরররভান…. বলেই ওর চেঞ্জিং রুমে নক করলো কিন্তু নির্ভান কোনো রেসপন্স দিলো না।। আবার নক করলে বললো,,,, আমি চেঞ্জ করছি Don’t you understand? পরে আসো।
খুব রেগে আছে নির্ভান আর ওর এই কথায় রাইসা ও একটু কষ্ট পেলো।
.
স্টেজ এ এসেছে নির্ভান প্রেস দের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে তেমন একটা ভালো মুডে নেই কিন্তু প্রেস দের সামনে তো আর বুঝতে দেয়া যায়না।। তবুও তারাতারি এই প্রশ্ন উত্তর সেশন শেষ করলো তবুও কি এতো তারাতারি ছাড় পাবে তা কি আর হয় এর পর এ সে আসতেই আছে। অনেকের সাথে ছবি তোলা কথা বলা সবই হচ্ছে কিন্তু নির্ভানের যেন কিছুতেই মন বসছে না।
.
এদিকে সানভির ও ভালো লাগছে না এমন করে তবুও যেটা সঠিক তা ওর করতেই হবে। খুব পানি পিপাসা লাগায় ড্রিংক সেকশন এ গিয়ে পানিই নিচ্ছিলো কিন্তু সামনেই একটা ড্রিংক এ নজর পরলো ও ঠিক চিনতে পারছিলো না এটা কখন মেন্যু তে এড হলো?
তাই সেখানে থাকা সার্ভার কে জিজ্ঞেস করলো

– এক্সকিউজ মি এটা কিসের ড্রিংক?

– ম্যাম এটা মিল্ক শেক। পিনাট মিল্ক শেক।

– পিনাট!! পিনাট মিল্ক শেক? মানে কি? এটা মেন্যু তে কিভাবে এড হলো? এন্ড পিনাট আমি স্ট্রিক্টলি নিষেধ করেছিলাম পিনাট এর কোনো আইটেম যেন এখানে সার্ভ করা নাহয়।

– বাট আমরা তো অর্ডার পেয়েছি ম্যাম।

– আহ ম্যানেজার কোথায় ক্যাটারিং এর আমি কথা বলত্র চাই।

– ওকে ম্যাম। বলেই ওই লোক চলে গেলো কিছুক্ষনের মধ্যেই অন্য এক লোকের সাথে ফিরে এলো।

– জি ম্যাম আমি এখানের ম্যানেজার এনি প্রবলেম?

– এনি প্রবলেম? আপনাদের আমি তো খুব ভালো করেই ইনস্ট্রাকশন দিয়েছিলাম যে আজকের খাবারে কোনো পিনাট ইউজ করা হবে না তাহলে পিনাট শেক কি করে এড হয়ে গেলো??

– আমাদের তো কিছুক্ষন আগে একটা ম্যাম এসে বলে গেলো স্পেশাল ড্রিংক হিসেবে যেন পিনাট মিল্ক শেক টা এনে রাখা হয়।

– হোয়াট! কে বলেছে?

– নাম জানিনা কিন্তু বলেছিলেন যে সে নাকি মি. নির্ভানের খুব ক্লোজ তার কথা না শুনলে প্রবলেম হবে আমাদের।

– সে যাই বলেছিলো আপনি আমার থেকে সিওর হোন নাই কেনো??

– আই এম সরি ম্যাম, আর হ্যাঁ সে আজনে নীল রঙের ড্রেস পরেছিলেন আপনাদের সাথেই এন্ট্রি নিয়েছিলেন।

– আমাদের সাথে! নীল ড্রেসে! রাইসা… রাইসা কেন এটা করলো। আচ্ছা এই ড্রিংক এখনো পর্যন্ত সার্ভ করা হয়েছে?

– জি ম্যাম কিছুক্ষন আগেই এক ট্রে নিয়ে যাওয়া হয়েছে নির্ভান স্যার আর তার গেস্ট দের জন্য।

– ওহ নো। বলেই সানভি দৌড় নির্ভান খেয়ে ফেললে ডিজাস্টার হয়ে যাবে নির্ভানের পিনাট মানে বাদাম এ এলার্জিক খুবই বাজে রিয়েকশন করে এটা ওর উপর। তাই সানভি তারাতারি ওকে থামাতে যাচ্ছে। নির্ভান স্টেজ এর উপরে সাথে রাইসা আর ওদের দুইজনের বাবা মা ই দাঁড়িয়ে নির্ভান এর হাতে সানভি সেই পিনাট মিল্ক শেক এর গ্লাস টাই দেখতে পাচ্ছে ও যেতে চাচ্ছে তারাতারি কিন্তু সামনে অনেক মানুষ তাদের সরিয়ে ও যেতে পারছে না আর স্টেজ এর কেউ তাকাচ্ছে ও না যে ওকে ড্রিংক টা পান করতে না করবে আর কল করলে যে পিক করবে তা ও না কারণ প্রচুর শব্দে নির্ভানের নতুন গান টা বাজছে। তাই সানভি ওর পুরো জোর লাগিয়ে সবাইকে ঠেলে সরিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে এরই মধ্যে নির্ভান কয়েক সিপ নিয়েছে ওই মিল্ক শেক এর। অবশেষে স্টেজ এর সামনে এসে মি.কে বলে চিৎকার করে বললো,,,, Don’t drink it….
কিন্তু নির্ভান তাকালেও বুঝতে পারলো না সানভি কি বলছে তাই আবার যার সাথে কথা বলছিলো তার সাথে কথা বলতে লাগলো আর গলায় হাত বুলিয়ে আরো এক সিপ নিতেই যাচ্ছিলো কি তখনই সানভি স্টেজ এ উঠে নির্ভান এর হাতে থাকা গ্লাস টা ফেলে দিলো। আর ওর এই কাজে সবাই অবাক হয়ে ওর দিকে তাকালো।

– মিস.সান কি হয়েছে?

তখন সানভি হাপাচ্ছিলো তবুও বললো,,,, এটা তে হা.. পিনাট আছে এটা পিনাট মিল্ক সেক।

– কি হয়েছে সানভি পিনাট হয়েছে তো কি হয়েছে?
রাইসার কথায় ও পেছনে ফিরে বলতেই নিচ্ছিলো যে নির্ভান পিনাট এ এলার্জিক কিন্তু ততক্ষণে নির্ভান সানভির উপর ঢলে পরেছে।

– মি.কে..!!!
.
.
.
চলবে।