আজও তোমারই অপেক্ষায় পর্ব-২৩ এবং শেষ পর্ব

0
480

#আজও_তোমারই_অপেক্ষায়
#আফসানা_মিমি
অন্তিম পর্ব

“ আমি আপনাকে কোনোদিনও বিয়ে করব না, মিচকে শয়তান। সকলের সামনে ভদ্র সেজে থাকা, আর আমার সামনে ভিলেন সাজা বের করছি। আমি এখনই মীর দাদাভাইয়ের কাছে সব বলে দিব।”

একনাগাড়ে কথা বলে মিলি নিশ্বাস ফেলে। সকলের আড়ালে একাকীত্বে নিয়ে আসার মানে কী? আজ এর একটা ব্যবস্থা করেই ছাড়বে সে। ছেলে হয়েছে বলে সে বেঁচে যাবে তা একদম ভাবতে দিবে না। মিলি চলে আসতে নিলে রাদিফ বাঁধা প্রদান করে। মিলির হাত ধরে একদম তার কাছে নিয়ে আসে। মিলির চোখে চোখ রেখে বলে,“ আমি কোনদিক দিয়ে খারাপ শুনি?”
“ সবদিক দিয়ে।”
রাদিফ কিছুক্ষণ ভাবে। মিলির কানের কাছে এগিয়ে ফিসফিস করে বলে,” কি করেছি শুনি?”
মিলি নিশ্চুপ। সে ভাবছে, সত্যিই তো রাদিফ তার সাথে অস্বাভাবিক কোন আচরণ করেনি কিন্তু তবুও সে রাদিফকে বিয়ে করবে না। মিলি চোখ ফিরিয়ে নেয়, রাদিফের কথায় ভয়ংকর অনুভূতি সৃষ্টি হচ্ছে তার। সে রাূিফের থেকে দূরে গেলেই বাঁচে। সে হাত মুচড়ে উত্তর দেয়,“ এই যে আমার হাত ধরেছেন, সকলের সামনে তো ভদ্রলোক সাজেন কিন্তু আড়ালে,,,,!

মিলির কথা শেষ হওয়ার পূর্বেই রাদিফ তার কথা থামিয়ে দেয়। মিলির নরম তুলতুলে গালে অধর ছুঁয়ে। স্তব্ধ মিলির সারা শরীর শিহরিণ ছড়িয়ে যায়। রাদিফের দিকে বড়ো চোখ করে তাকালে রাদিফ বলে,“ মিচকে শয়তানের শয়তানি দেখিয়ে দিলাম। ডাক ঢোল পিটিয়ে কাকে কাকে বলবে বলে আসো,যাও।”

কালো রঙোর চশমাটা ভালোভাবে যথাস্থানে বসিয়ে বাঁকা হেসে হাঁটা ধরে রাদিফ। এদিকে ভয়ংকর ভয় পাওয়া মিলি বুকে থু থু দিতে থাকে। তার মুখে একটাই জপ,“ মিচকে শয়তানটা কি করে গেলো!”

————————————–

সময় বড্ড অদ্ভুত জিনিস। একটি মানুষের জীবনে সময়ের মূল্যটা পানির শ্রোতের মতো। খারাপ সময়টা চলে গেলে ভালো সময়কে কাজে লাগাতে হয়। মীর কিছু সময় ধরে আশার পিছনে ঘুর ঘুর করছে। সে আাশাকে কিছু বলতে চাইছে। আশা বুঝেও বুঝছে না। সে মীরের সাথে কথাই বলছে না। মীরের জন্য আশার কতো কষ্ট পোহাতে হয়েছে সে কি জানে? জানবে কীভাবে? মীর তো আরামে ক্ষেতে চাষাবাদ করেছে। এক কাপ চা করে বই হাতে সোফায় বসে আশা। মীরও তার পাশে বসেছে। পা নাচিয়ে নাচিয়ে আশার মনোযোগ চাইছে। আশা তখনও নিশ্চুপ। মীর অভিনয়ে কাঁচকলা। ধৈর্য শক্তিকে শূন্যের কৌটায়। আশার হাত থেকে বই কেড়ে নিয়ে বলতে শুরু করে,“ কি হয়েছে তোমার? মেয়ের জামাই ফিরে এসেছে, কই একটু যত্ন, আপ্যায়ন করবে তা না করে মুখ ফুলিয়ে রেখেছো কেন?”

চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে উত্তর আশা উত্তর দেয়,“ মেয়েকে চাই, তো নিয়ে যা। আমার পিছনে কি? নাকি শাশুড়িকে ঘর শাশুড়ি বানাতে চাইছিস?”

“ দরকার পড়লে তাই করব। শাশুড়ির সাথে মা যুক্ত আছে সেটা ভুলে যেও না।আমার মাকে আমার কাছে রাখব, তাতে কোনো সমস্যা দেখছি না।”

আশা এবার মীরের কান টেনে ধরে। পিঠে কয়েকটি দুরুম করে আঘাত করে বলে,“ বদমায়েশ! আমাদের কষ্টে রেখে এখন মন গলানো হচ্ছে?”

মীর আর্তনাদের করে হেসে ফেলে উত্তর দেয়, “ বরফ গলে গেছে তবে?”

আশা হাসে। মীরের মাথায় হাত বুলিয়ে বলে,“ আর যাসনে বাপ! তোকে ছাড়া আমরা কেউ ভালো ছিলাম না।”

মীর ফুফুর কথায় না যাওয়ার ওয়াদা করে।
—————

দীর্ঘদিন শরীর স্বাস্থ্যের দিকে খেয়াল রাখেনি হিমা। আজকাল তাকে যে দেখতে সেই ভোজনরসিকের খেতাব প্রাপ্ত করবে। পরিবারের সকলে তাকে ঘণ্টায় ঘণ্টায় খাবারের সামনে বসিয়ে রাখে। হিমার অবস্থা নাজেহাল! পরিবারের সকলে মিলে তার সাথে অবিচার করছে কিন্তু কেউ তাকে বুঝছেই না। এই তো কিছুক্ষণ আগেই আশা দুইটা আপেল দিয়ে গিয়েছে। চোখ রাঙিয়ে বলে গিয়েছে দুইটাই শেষ করতে। হিমা ঘরে বসে তাই করছে। জানালার কাছাকাছি দাঁড়িয়ে চুল নিয়ে খেলা করছে আর আপেল খাচ্ছে। বাগানের দিকে দৃষ্টি ফেলতেই সেখানে রাদিফ ও মিলিকে দেখতে পায়। রাদিফ বাগানে বসে ফোন দেখছে।ফোন দেখছে বললেও ভুল হবে, সে তো মিলির ছবি তুলছে। আবার কখনো মনোযোগী মিলির ভিডিও করে নিচ্ছে। বাগানের একপাশে জবা ফুলের গাছ রয়েছে। হোসনেআরাকে সেখানেই বসে থাকতে দেখা যাচ্ছে।হাতে তার ছোট্ট ঝুড়ি যার মধ্যে হোসনেআরা চার পাঁচটা জবাফুল ছিঁড়ে রেখেছে। হয়তো এই ফুলগুলো দিয়ে সে মারিয়ার জন্য কোনো ফেসপ্যাক তৈরী করবে! বেচারি মারিয়া মায়ের অত্যাচার সহ্য করে নিবে। হিমা উপরে দাঁড়িয়ে এসব দেখে মজা পাচ্ছে। আপেল শেষ করে সেও নিচে যাবে ভাবছে। মিলিকে রাদিফের দুষ্টুমির কথা জানাবে। নিশ্চয়ই তা শুনে রাদিফকে আচ্ছামত ধোলাই দিবে। এসব ভেবেই হিমা হাসছিল। হাতে থাকা আপেলে কামড় বসাতে যাবে তার আগেই কেউ একজন তার হাত থেকে আপেল কেড়ে নেয়। হিমা পিছনে তাকিয়ে দেখে মীর দাঁড়িয়ে আছে। তার মুখে দুষ্ট হাসি। হিমাকে দেখিয়ে সে আপেলে কামড় বসায়। রসালো ভঙ্গিতে মুখে নাড়াচাড়া করে হিমাকে লোভ দেখাতে থাকে। হিমা পুরোটাই দেখছে।তার এঁটো আপেল খেয়ে তাকেই লোভ দেখাচ্ছে বিষয়টা হাস্যকর মনে হচ্ছে। হিমা বিনা বাক্যে মীরের থেকে আপেল কেড়ে নিতে উদ্ভব হয়। মীরের কাছাকাছি আসতেই মীর হাত উপরে উঠিয়ে ফেলে। অতো লম্বা, চিকনা মীরের সামনে পাঁচ ফুট হিমা কিছুই নয়। কয়েকবার লাফিয়ে নিতে গিয়ে হাঁপিয়ে ওঠে। মীর শয়তানি হাসি হেসে বলতে শুরু করে,“ এতোটুকুতেই শক্তি শেষ? এতো খেয়েও তো আমার সমান হতে পারলি না, হিমালয়? ছোট বেলায় তোকে এতো বলতাম, হরলিক্স খা! খেতি না। এখন দেখ অপুষ্টিতে ভুগছিস সাথে আমাদেরও ভোগাচ্ছিস।”

মীরের কথায় হিমা ভ্রু যুগল কুঁচকে নেয়। দাড়িয়ে ভাবতে থাকে, ছোটবেলায় আদতে এমন ঘটেছিল কিনা। কিন্তু হিমার ছোট্ট মাথা কিছুই মনে করতে পারেনি। অগত্যা মাথা চুলকে উত্তর দেয়,“ তুমি মিথ্যা বলছো, মীর ভাই। আমি ছোট বেলায় অনেক খেতাম।”

“ হ্যাঁ হ্যাঁ সবার মাথা খেতি,আর আমার ক’লি’জা।”
“ তুমি আমাকে জ্বালাতে এসেছো তাই না,মীর ভাই! মনে রেখো, আমি আজ একটুও জ্বলবো না।”

মীরের মুখের ভাবগতি পরিবর্তন হয়ে যায়। চোখের নেশাটা তীব্রভাবে বেড়ে যায়। ঝটপট পা ফেলে চোখের পলকে সে হিমার কাছাকাছি চলে আসে। হিমার চোখের দিকে গভীর নয়নে তাকিয়ে বলে,“ আমি জ্বলছি, হিমালয়! নতুনভাবে জ্বলছি। পূর্বে ছিল অনিশ্চয়তার জ্বালা আর এখন! পেয়েও না ছুঁতে পাওয়ার জ্বালা।এতো জ্বালা আর সহ্য হচ্ছে না রে, হিমালয়! কিছু একটা কর, নয়তো আমি যন্ত্রণায় ম’রে যাব।”

হিমা মীরের ঠোঁটের উপর হাত রাখে।চোখে মুখে তার আতঙ্ক। মীরের মুখে মৃত্যুর কথা গলায় বিঁধে থাকা কাঁটার মতো যন্ত্রণা দেয়। সে মীরের চোখে চোখ চোখে উত্তর দেয়,“ তোমার থেকে দূরে থেকে মৃত্যুকে গ্রহণ করতে রাজি ছিলাম। আমি জানতাম তুমি ফিরে আসবে। অপরাধের যাতনায় বার বার ভেঙে পড়েছি আমি, মীর ভাই! তোমার থেকে দূরে থাকা আমার পক্ষেও সম্ভব নয়। তুমি যেই যন্ত্রণায় দিন পাড় করছো, আমিও সেই যন্ত্রণায় প্রতিনিয়তই ছটফট করছি। এবার আর ভুল করব না।”

মীর হিমার কপালের সাথে নিজের কপাল মিলায়। নিশ্বাসের দ্রুত গতি জানান দিচ্ছে দুজনের অস্থিরতা। ঘন ঘন গরম নিশ্বাস একে অপরের নাকে বাড়ি খাচ্ছে। মীর মাতাল স্বরে শুধায়,“ একবার মীর বলে ডাকবি, হিমালয়!”

হিমা মীরের দিকে তাকায়। একজোড়া চাতক চোখে হিমার জন্য আকুলতা দেখতে পায়। হিমা চোখ বন্ধ করে নেয়।ঘন ঘন নিশ্বাস ফেলে কাঁপা স্বরে বলে,“ মীর, ভালোবাসায় রাঙিয়ে দিলাম তোমায়! তুমি শুধু বলো, ভালোবাসবে আমায়!”

মীরের মুখে চমৎকার হাসি ফুটে ওঠে।সে হিমাকে জড়িয়ে ধরে বলে,“ আজ প্রেমের বর্ষণে ছড়িয়ে উঠুক সব। তুই শুধু আমারই হয়ে থাক!”
___________________________________________

আনন্দ নগরে ডাক ঢোলের বাজনা বাজছে। আজ আনন্দ নগরে আনন্দে চারদিকে মুখরিত। এতো বড়ো বিয়ের আয়োজন আজ পর্যন্ত কেউ দেখেনি। জনে জনে এগিয়ে আসছে আফজাল হোসেনের বাড়ির দিকে। সকলেই আমন্ত্রিত মীর,হিমা ও রাদিফ মিলির বিয়েতে।

মীর রাদিফ তৈরী হয়ে মেহমানদারদের সাথে কথা বলায় ব্যস্ত। তাদের বঁধুকে এখনো তারা দেখেনি। দেখা যাচ্ছে কিছুক্ষণ পর পরই উভয়ের চোখ প্রধান ফটকের নিকে নিবদ্ধ হতে! উভয়ই চাতক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রয়েছে! প্রেয়সীকে দেখার আশায় ছটফট করছে। মীর রাদিফের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে দুই বঁধু ফটকে পা ফেলে। মীর রাদিফের সামনে দাঁড়িয়ে ছিল। টকটকে লাল শাড়িতে হিমাকে দেখে বুকে হাত রেখে রাদিফের উপর হেলে পড়ে! রাদিফ মীরকে সামলিয়ে মিলিকে দেখে স্তব্ধ হয়ে যায়। ছোট মেয়েটাকে গোলাপি শাড়িতে পরিপূর্ণ লাগছে। দেখা গেল মিলিকে দেখে রাদিফের হার্ট বিট মিস হয়ে যায়! মীরকে আগলে ধরে শুকনো ঢুক গিলে বলে,“ ভাই, এই মেয়েকে এতো বড়ো মনে হচ্ছে কেন? আজ সত্যিই গলা শুকিয়ে যাচ্ছে।মীর, ভাই আমার! আমাকে পানি দে, নয়তো তৃষ্ণা নিবারণের উপায় বলে দে।”

মীরের অবস্থাও অনুরূপ। কিন্তু সে তো রাদিফ নামক ভদ্রলোক নয়! রাদিফকে একা ফেলেই সে হাঁটা ধরে।যাওয়ার আগে বলে যায়,“ তুই থাক শা’লা। হাতের কাছে খাবার পেয়েও খেতে চাস না। তুই তো পুরুষ নামের অপুরুষ। আমি তৃষ্ণা মিটিয়ে আসি, তুই এখানে থেকে মৃত্যুকে গ্রহণ কর!”

রাদিফ মাথা চুলকায়।আশপাশ তাকিয়ে মুঠোফোন বের করে মিলির ছবি তুলে নেয়! এখন সে পাক্কা ফটোগ্রাফার! তবে তা নিজের মানুষের জন্য।

“ তোকে সুন্দর লাগছে, হিমালয়! ইচ্ছে করছে, এখনই তোকে,,,,

হিমা মীরের হাতে চিমটি বসায়। সকলের অগোচরে দাঁতে দাঁত চেপে বলে,“ কিছু তো লজ্জা পাও, মীর ভাই! তোমার কথা শুনলে পাখিরাও লজ্জা পাবে সেখানে আমি তো নিষ্পাপ ফুল মাত্র।”

“ আমি অধৈর্য হয়ে যাচ্ছি, এই ফুলের নির্যাস নিতে। কি করব বল!”

“ এতো অধৈর্য হওয়া তো ভালো লক্ষণ নয়! তুমি জানো না! ধৈর্যের ফল মিষ্টি হয়!”

মীর সকলের আড়ালে হিমার হাতের পিঠে ঠোঁট ছুঁয়ে দেয়। হিমার কানের কাছটায় ফিসফিস করে বলে,“ আমি তো আজীবনই ধৈর্য ধরতে রাজি আছি!”

মিলি এতো মানুষ এই প্রথম দেখছে। এতো বড়ো আয়োজনে যে তারও বিয়ে হবে ভাবতেও পারেনি। আনন্দ নগরে হিমার পছন্দের মানুষ হচ্ছেন আসমা বেগমকে। যিনি রাদিফের মা। মিলি ভেবেছিল, তাকে দেখা মাত্রই ভদ্র মহিলা ক্ষেপে যাবে কিন্তু তাকে ভুল প্রমানিত করে রাদিফের মা মিলিকে জড়িয়ে ধরে।কপোলে চুমু এঁকে বলে,“ আরে, এতো ছোট্ট পুতুল! কোথায় পেয়েছিস রে! এই ছোট্ট মেয়েটাই বুঝি আমার ছেলেকে সুস্থ করেছে! আমার কি ভাগ্য দেখলি আশা! এতদিন ছেলের মা ছিলাম, আজ মেয়ের মাও হয়ে গিয়েছি।”

মিলির সৌভাগ্য খুবই ভালো। মাকে হারিয়ে আরেক মাকে পেয়ে। সে চোখ ঘুরিয়ে সবাইকে দেখছিল এমন সময় অনুভব করে, একটি কাঁপা হাত মিলির হাতের মুঠো শক্ত করে ধরে। মিলি পাশ ফিরে দেখে রাদিফ অন্যদিকে তাকিয়ে আছে। মিলি রাদিফের হাতের দিকে তাকিয়ে বিড়বিড় করে বলে,“ উহ! মিচকে শয়তান! ভদ্র সেজে আমার হাত ধরে রেখেছে।”

রাদিফের কানে মিলির বলা কথা প্রবেশ করে। সে অন্যদিকে তাকিয়েই হাসে। কিছুক্ষণ পর মিলির দিকে ঝুঁকে বলতে শুরু করে,“ তোমাকে আজ বড়ো দেখাচ্ছে, মিলি। তুমি কি আগে থেকেই বড়ো ছিলে, নাকি আজই!”

“ বড়ো হয়েছি সেই কবে! আপনি ভালো করে কোনোদিন দেখেছেন? সারাদিন তো ভদ্র বাচ্চা সেজে থাকেন।”

রাদিফ মিলির দিকে তাকায়। চোখে চোখ রেখে বলে,“ আজ আমি তোমায় পেয়ে পরিপূর্ণ, মিলি। মনের অনুভূতি প্রকাশে বরাবরই কাঁচকলা। কিন্তু আজ মনে সাহস এনে প্রস্তাব রাখছি, আমার বউ হবে? এই ভদ্র ছেলের দায়িত্ব নিয়ে তার জীবন রাঙিয়ে দিবে?”

মিলির চোখে পানি।সে মনে প্রাণে রাদিফকে ভালোবাসে। বিয়ে ঠিক হওয়ার পরও মিলির মনে আশংকা ছিল! রাদিফ তাকে মতের বিরুদ্ধে বিয়ে করছে না তো! আজ তার ধারণা ভুল প্রমানিত হয়েছে। মনের আশা পূরণ হয়েছে। সে রাদিফের হাতের মুঠোয় হাত রেখে উত্তর দেয়,“ আমি রাজি।”

তিন কবুলের মাধ্যমে দুই দম্পতির বিয়ে সম্পন্ন হয়ে যায়। সকল অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে মীর হিমার পথ এক হয়ে যায়! একটি সম্পর্কে বিশ্বাসটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। যেখানে বিশ্বাস নেই সেখানে সম্পর্কের কোনো মূল্য নেই।
মীর হিমার জীবন ভালো কাটুক। রঙহীন রাদিফের জীবনে মিলি নামক চঞ্চল পাখি নানা রঙে রাঙিয়ে দিক। মীর এভাবেই ভালোবাসুক তার হিমালয়কে।

সমাপ্ত