#আবার_প্রেম_হোক
#নুসরাত_জাহান_মিম
২৭.
“সরি ভাবি।এবার দুনিয়া এফোড়ওফোড় হয়ে যাক।আমি,অ্যাডভোকেট উশ্মিতা উশ্মিও দেখে নেবো তুমি কি করে আমার ভাইয়াকে ডি*ভো*র্স দাও।যে তোমার কেস নেবে তাকে নাকানিচুবানি যদি না খাইয়েছি আমার নামও উশ্মি না”
বলেই উশ্মি কাপড় হাতে নিয়ে ওয়াশরুমের উদ্দেশ্যে পা বাড়াতে নিলে চাঁদের কিছু বলার পূর্বেই সে বলে,
“না ভাবি।আর কিছু শুনবো না আমি”
দুপুরবেলা,
খাওয়ার টেবিলে খেতে বসেছে সকলে মিলে।খেতে খেতেই রামিম চাঁদকে জিজ্ঞেস করলো,
“হুট করে বড় ডাইনীং আনলে যে?কাল তো কথাই হয়েছিলো আমাদের কোনো সমস্যা নেই।খামোখা দু’দিনের জন্য এতো ঝামেলা পোহানোর দরকার কি ছিলো?”
চাঁদ বেশ শান্তস্বরে জবাব দিলো,
“আমিতো আনিনি।ভাই এনেছে।এখন ভাইয়ের উপর তো আর আমি কিছু বলতে পারিনা”
চাঁদের কথা শেষ হতে না হতেই ভেসে আসে প্রণয়ের গম্ভীর কন্ঠস্বর,
“খাওয়ার সময় আমি বেশি কথা পছন্দ করিনা রামিম।চুপচাপ খা”
রামিম খোচা মে!রে বললো,
“তোর মুখ দিয়েতো ‘মিয়াও’ টাও বের হয়না।ফ্রেঞ্চ ক্যাট জানি কোথাকার”
রামিমের কথার পরেই শোনা যায় মিরের উচ্চ হাসির শব্দ।খেতে খেতেই সে হেসে কুটিকুটি।মিরকে হাসতে দেখে ভড়কে যায় সকলে।বিস্ময় নিয়ে শিফা জিজ্ঞেস করে,
“এই ভাইয়া এই?মাথায় কি পেত্নি আছ!র করলো নাকি?”
বহু কষ্টে হাসি থামিয়ে মির বলে,
“না।পেত্নিতো আছ!র করেনি কিন্তু পুরোনো কিছু কমেডি মনে পড়ে গেলো”
রুবা উৎসুক হয়ে বলে,
“কিসের কমেডি?”
“তোমার প্রণয় ভাই আর চাঁদ ভাবির কমেডি”
তন্ময় অবিশ্বাস্য চাহনী নিক্ষেপ করে মিরকে জিজ্ঞেস করে,
“ভাই কমেডিও করতে পারে?”
“আরেএ এই কমেডি সেই কমেডি না।তাছাড়া কমেডিয়ান তো হলো এই বিড়ালিনী”
উশ্মি কাটা চামচ দিয়ে সালাদ মুখে পুড়ে চিবাতে চিবাতে বললো,
“তা সেই কমেডি আমাদেরও শোনাও ভাইয়া”
এ কথা শুনে আড়চোখে প্রণয়ের দিকে চেয়ে মির জিজ্ঞেস করে,
“কিরে বলবো?”
প্রণয়ের কোনো হেলদোল নেই।সে আপনমনে খাবার খাচ্ছে।তা দেখে আবারও মির জিজ্ঞেস করলো,
“বলে দেবো নাকি সত্যি ই?”
প্রণয় কপাল হালকা একটু কুচকে মিরের পানে বিরক্তির সহিত চেয়ে বলে,
“তুই আমায় জিজ্ঞেস করে করে কোনদিন আবার কোন কথাটা বলেছিস?”
বিস্তার হাসে মির।হেসে বলে,
“তাও ঠিক,তাও ঠিক।আসলে হয়েছে কি জানো?এই বিড়ালিনী প্রণয়কে আগে উদ্ভটসব নামে ডাকতো।এই যেমন মি.বিড়াল,ধলা বিলাই,সাদা বিড়াল,ইগোয়েস্টিক বিড়াল আর মি.বিড়ালাক…”
চাঁদের অতি দ্রুত এবং গম্ভীর কন্ঠ ভেসে আসে তৎক্ষনাৎ,
“ও নামে কেবল আমি ডাকি।আমার অধিকার।এবং আমিই ডাকবো সর্বদা”
সকলে তাকায় চাঁদের পানে।চৈত্রও বোনের দিকে বিস্ফোরিত নয়নে চায়।এই ছেলের সাথে তার বোনের সাংঘা!তিক রকমের কিছু একটা যে আছে বেশ বুঝতে পারছে সে।তবে কিছু বলছেনা।সময়ের অপেক্ষায় আছে।বোন তার নিজেই বলবে এ বিশ্বাস বোনের প্রতি খুব করে আছে।চাঁদের কথা শুনে তাকায় প্রণয় নিজেও।অতঃপর দৃষ্টি মিলতেই নিজচাহনী ঘুরিয়ে ফেলে চাঁদ।প্রণয় হাসে মনে মনে।সে হাসির বহিঃপ্রকাশ ঘটে তার বিড়ালাক্ষী জোড়ার তীক্ষ্ণ নজরে।দৃষ্টি প্লেটে সীমাবদ্ধ করে আরেক লোকমা ভাত মুখে নিতে গেলেই ফোন বেজে উঠে তার।দৃষ্টি সেপানে না দিয়ে ভাতটুকু মুখে নিয়ে এরপর তাকায় ফোনের দিকে।অতঃপর বিচলিত ভাব দৃশ্যমান হওয়ার পূর্বেই নিজেকে সামলে নিয়ে খানিকটা পানি খেয়ে কলটা রিসিভ করতে নিলে কেটে যায় তা।সেকেন্ড ছয়েক বাদেই আবারও কল আসে।আসতেই সে রিসিভ করে বলে,
“হা বলো আরফিদ?”
“এ ব্যাপারে পরে আলাপ করছি।বিশেষ কোনো তলব থাকলে জানাতে পারো”
“তাহলে রাখো”
প্রণয় ফোন টেবিলে রাখতেই রিহা তার দিকে চেয়ে বলে,
“অরণের কোনো সমস্যা হলো?”
“না”
ভাতগুলো ডাল দিয়ে মাখতে মাখতে রিহা বললো,
“হঠাৎ ফায়ানের কল এলো যে?প্রয়োজন ছাড়াতো তোর সাথে কথাই বলেনা”
“প্রয়োজন আছে বিধায়ই করেছে”
রিহা আরও কিছু বলতে নিলেই প্রণয়ের গম্ভীর কন্ঠস্বরে চুপ হতে বাধ্য হয়,
“নো মোর ওয়ার্ডস”
বিকালের দিকে,
গগণে লালাভার রেশ।দূর আকাশে দু’একটা কাকও উড়তে দেখা যাচ্ছে বোধহয়।আনমনে হয়ে বারান্দায় বসে ছিলো শিফা।দৃষ্টি তার সেই লালচে-শুভ্রাকাশে।মন তার বড্ড উদাস।পাশে এসে রুবা বসতেই শিফা বলে উঠলো,
“তোর ভাইটা আমায় ভালোবাসলোনা কেন রে রুবা?”
শিফার কথায় তার দিকে তাকালো রুবা।অতঃপর দৃষ্টি নত করে মৌনতা অবলম্বন করলো সে।কেনোনা এর উত্তর তার কাছে কখনোই ছিলোনা।এখনও নেই।রুবার মৌনতা দেখে বিস্তার হাসলো শিফা।ঠোটে হাসির রেখা টেনে ধরেই বললো,
“উশ্মিপুর থেকে কি খুব একটা খারাপ দেখতে আমি?নাকি শ্যাম বলে তোর ভাইটা আমায় ভালোবাসলো না?”
শিফার এবারের কথায় তড়িৎ গতিতে তাকায় রুবা তার পানে।অতঃপর বিস্ময় নিয়ে বলে,
“কিসব বলছিস!এমন হবে কেনো?”
“উশ্মিপুতো খুব সুন্দর রে।এখনতো আরও সুন্দর হয়ে গেছে।আমার শেষ আশাটুকুও এবার নিভে গেলো বুঝি”
রুবা শিফাকে পেছন থেকে গলা জড়িয়ে ধরে গালের সাথে গাল মিলিয়ে বলে,
“কে বলেছে আমার ভাবি সুন্দর না?তুই আমার দেখা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠতম মায়াবতী।তোর চোখেমুখে,বিশেষ করে তোর এই হৃদযন্ত্রে যতটা মায়া আছে না?অতটা মায়া বোধহয় আর কোনো কিছুতেই নেই।ভাই আমার তোর প্রেমে একদিন ঠিক পড়বে।পড়ার পর আর কখনোই সেই প্রেম থেকে উঠতে পারবেনা।দেখে নিস”
“সান্ত্বনা দিচ্ছিস?”
তখনই শোনা যায় রিদির কন্ঠস্বর,
“সান্ত্বনা কেনো দিবে শিফু?রায়হান ভাইয়া তার ছেলেবেলার আবেগকে ধরে রেখে বর্তমান আর ভবিষ্যতটাকে নষ্ট করছে শুধু শুধু।এছাড়া কিছুইনা।তার বোঝা উচিত আবেগ পরিবর্তনশীল।মানিয়ে নিতে হয় আমাদের”
শিফার করুন কন্ঠস্বর,
“মানিয়ে নিতে নিতে আমি বড্ড ক্লান্ত রে রিদু!”
রিদি এর জবাবে কিছুই বলেনা।রুবা দুইজনের মাঝে দাঁড়িয়ে বারান্দার গ্রিলে হাত রেখে আকাশ পানে চেয়ে সেথাকার লালাভায় নিজের দৃষ্টি জ্ঞাপন করে বলে,
“যার কাছে যার শান্তি মেলে,বিধাতা তাকে তারই করুক!”
To be continued….
#আবার_প্রেম_হোক
#নুসরাত_জাহান_মিম
২৭.(বর্ধিতাংশ)
ছাদের রেলিং ঘেষে দাঁড়িয়ে আছে চাঁদ।হাতে তার দু’টো ডায়েরী।একটাকে পায়ের কাছে রেখে অপরটা রেলিং এর উপর রেখে কলম হাতে তার অর্ধেকাংশের বেশি পূর্ণ পাতাগুলো উল্টিয়ে খালি পাতায় বিচরণ চালায় দু’আঙুলের।সেথায় এক এক শব্দ তুলে লিখছে,
“আপনিময়ী আমি আপনার থেকেই পালিয়ে বেড়াই,ইহাই কি জীবন ত…”
হঠাৎ উশ্মি আর রুবার আওয়াজ পেয়ে ভড়কে গিয়ে হাত থেকে ছিটকে রাস্তার দিকে ডায়েরীটি পড়ে যায় চাঁদের,
“ভাবি!”
চাঁদ পিছু ঘুরেই বিস্ফোরিত নয়নে তাকায় উশ্মি আর রুবার পানে,যেনো এ দৃষ্টি দিয়েই ভ!স্ম করে দেবে তাদের!রুবা ঢোক গিলে বলে,
“কাক…কী হয়েছে ভাবি?”
চাঁদ হনহনিয়ে এসে রুবার বাহু টে!নে বলে,
“সরো!”
রুবা হালকা কুকিয়ে বলে,
“ভাবি ব্যথা লাগ…”
চাঁদের উচ্চ কন্ঠস্বরে রুবার কথা সেখানেই থেমে যায়,
“জাস্ট শাট আপ রুবা!”
উশ্মিসহ রুবা নিজেও চাঁদের এরূপ ব্যবহারে বিস্মিত হয়।এ পর্যন্ত চাঁদকে নম্রভাষী ব্যতীত এতোটা হিংস্র হতে সে কখনোই দেখেনি।হঠাৎ কী হলো চাঁদের?এমন করছে কেনো সে?উশ্মি কিছু বলার পূর্বেই চাঁদ ছাদ থেকে তড়িৎ গতিতে নিচে নামতে ব্যস্ত হয়।রুবা সেখানেই পাথরের ন্যায় জমে যায়।তার মধ্যে কোনো হেলদোল নেই।উশ্মি কিছু একটা ভেবে চাঁদ যেখানে দাঁড়িয়ে ছিলো সেখানে আসে।এসে খুজতে লাগে চাঁদের এরূপ ভয়ংকর রূপের কারন।এবং সেখানে তা পেয়েও যায় সে।একটা খোলা কলম আর একটা বন্ধ করা ডায়েরী।ডায়েরীটা লক সিস্টেম।পাসওয়ার্ড দিতে হবে।নাহলে খোলা যাবেনা।উশ্মি বেশ বিব্রতবোধ করলো এতে।আর চিন্তায় মগ্নও হলো,কী এমন হতে পারে এ ডায়েরীতে যার জন্য এতে এভাবে লক দিতে হয়েছে?এতোটা কিসেরই বা পার্সোনাল?রহস্যভেদ তো তার করতেই হবে।নাহলেতো জানা যাবেনা চাঁদ কেনো প্রণয়কে ডি*ভোর্স দিতে চায়।আর কেনোই বা চাঁদ এভাবে হুড়মুড়িয়ে নিচে নামলো?রুবার সাথে এমন ব্যবহারই বা করলো কেনো?অতঃপর যেইনা সে ছাদের রেলিং এর নিচ দিয়ে তাকালো দেখতে পেলো রাস্তায় হন্তদন্ত হয়ে ছোটাছুটি করা চাঁদকে।পাগলের মতো সে কী যেনো খুজছে।কী এমন জিনিস খুজছে?কীই বা নিচে পড়ে গেছে?কলমতো খোলা ছিলো।তার মানে কী আরও একটি ডায়েরী?নাকি কোনো খাতা বা চিঠি টাইপের কিছু?মস্তিষ্কে বেশ চাপ প্রয়োগ করার পরেও মেলাতে পারছেনা উশ্মি।তার তীক্ষ্ণ মস্তিষ্কের চিন্তাধারা তাকে ভাবতে বাধ্য করছে এই চাঁদ মেয়েটার জীবনে কিছু একটাতো হয়েছে।অতীতে কোনো না কোনো কিছুতো অবশ্যই হয়েছে।নাহলে একটা মেয়ে কেনোই বা তার স্বপ্নের মেডিকেল ছেড়ে এতোদূর আসবে?কী হয়েছে এই মেয়ের জীবনে?সে কি কোনো অপরা!ধ করেছিলো?নাকি তার সাথেই কোনো অপ!রাধ হয়েছিলো?জানতে হবে উশ্মিকে।এ রহস্যের উদঘাটন সে করবেই।তার জীবনের প্রথম কেসটা নাহয় তার ভাবির রহস্য উন্মোচন দ্বারাই হোক!নজরটা চাঁদ থেকে আর সরানো যাবেনা তার।নজরে গেথে গেলো হাতে থাকা ডায়েরীটি এবং পাগলের মতো ছুটতে থাকা চাঁদও।এই ডায়েরী যেকোনো মূল্যে খুলতেই হবে।এবং তার জন্য মোক্ষম সুযোগের অপেক্ষা করতে হবে।উশ্মি আবারও ডায়েরীটি একইভাবে একই জায়গায় রেখে দিলো।রেখে রুবাকে নিয়ে নিচে নেমে এলো চুপচাপ।
ছাদ থেকে নেমেই রাস্তায় এসে পাগলের মতো এদিক থেকে ওদিক ছোটাছুটি করছে চাঁদ।ঘাম ছুটে গেছে তার।দিকবিদিকশুন্য হয়ে পড়ছে সে।চোখে ঝাপসাও দেখছে খানিকটা।নিজেকে যথেষ্ট সামলানোর চেষ্টা করছে আপাতত।ডায়েরীটা নিচে পড়ে হঠাৎ গায়েব হলো কী করে?বেশি থেকে বেশি পাঁচ মিনিট লেগেছে চাঁদের নামতে।তাহলে পাঁচ মিনিটে কে নিয়ে গেলো?লকতো দেয়া আছে।কিন্তু কোনোভাবে যদি তা কেউ খুলে ফেলে সর্বনাশ হয়ে যাবে যে!ভাবতে পারছেনা চাঁদ আর।এবার সে রাস্তার মাঝে হাটুগেরে বসে চশমাসহই মুখ দু’হাতে ঢেকে শব্দহীন কেদে দিলো।সাহসী মেয়েটা নিমিষেই গুড়িয়ে গেলো।সাহসটা আর রইলোনা।মনে অজানা আশংকা আর ভয়েরা হানা দিতে লাগলো তার।কোনোভাবে কেউ ডায়েরীটা পেয়ে গেলে জীবন তার ধ্বংস হয়ে যাবে!সেইসাথে ধ্বংস হবে আরও কয়েকটা জীবনও।অতিরিক্ত ভাবতে ভাবতে সেখানেই স্মৃতিশক্তি লোপ পেয়ে জ্ঞান হারালো চাঁদ।
.
.
.
.
.
.
.
.
বিছানা থেকে ধড়ফড়িয়ে লাফিয়ে উঠে বিচলিত হয়ে চাঁদ বললো,
“আমা…আমার ডায়েরী।আমার ডায়েরী কোথায়?কোথায় আমার ডায়েরী!উউউউউফ!”
বলেই নিজের চুল খিচে ধরলো সে।ঠোট কা!মড়ে অশ্রু বইয়ে দিলো আঁখি জোড়া দিয়ে।এরপর অশান্ত হয়ে বারবার বললো,
“ভা…ভাই..ওভাই?ভাইরে?এই ভাই কই তুই?ভাইয়ারেএএ!আমি ধ্বংস হয়ে গেলাম ভাই।আমি শেষ হয়ে গেলাম।আমার বুঝি আর বেঁচে থাকা হলোনা ভাই।ও ভাই!ভাই আমার!ভাই!”
বোনের এমন আহাজারি শুনে দৌড়ে বোনকে জাপটে ধরলো চৈত্র।মাথায় হাত বুলিয়ে বললো,
“কী হয়েছে ছোটি?এইযে ভাই এসে গেছি।বল ভাইকে কী হয়েছে?ভাই সব ঠিক করে দেবো।তুই একটু শান্ত হ।শান্ত হ প্লিজ!”
বিছানায় বসেই ভাইয়ের পেটে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে চাঁদ বলে,
“কিছু ঠিক হবেনা ভাই।ওরা জানলে…ওরা জানলে সব লণ্ডভণ্ড করে দেবে ভাই।আমার ভুল হয়ে গেছে।ভুল হয়ে গেছে ওগুলো নিয়ে ছাদে যাওয়া।ভাইরে!এই আমার আরেকটা ডায়েরী কোথায়?কোথায় গেলো সবগুলো!ও ভাইইইই!ভাইরে!আমার এতোবছরের লুকানো বিষাদতা সবখানে ছড়িয়ে যাবে ভাই!কিছু একটা কর প্লিজ!ডায়েরীগুলো খুজে দে।পুড়িয়ে দে!জ্বালিয়ে দে প্লিজ!আমার সেসব স্মৃতি এ জীবনে চাইনা।আমার জীবনটাই আমি আর…”
বলতে বলতে আবারও জ্ঞান হারালো চাঁদ।চৈত্র চাঁদের আওয়াজ না পেয়ে বোনকে ডাকলো।কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে বোনকে সরিয়ে দেখলো আবারও জ্ঞান হারিয়েছে সে।মির চৈত্রের সামনে এসে বললো,
“দেখি ভাইয়া।আমি একটু চাঁদকে দেখি।হঠাৎ কী হলো বুঝলাম না।একটু দেখতে দিন প্লিজ”
চৈত্র নিজেকে সামলে বোনকে বিছানায় শুইয়ে দিয়ে বলে,
“হা…হ্যা দেখুন”
চাঁদের রুমে সকলে জড়োসড়ো হয়ে আছে।ছুটে চলে এসেছেন চাঁদের মা আর খালামনিও।কাজ ছেড়ে তখনই ছুটি নিয়ে এসে পড়েছেন চাঁদের বাবা ইহাদুল ইসলাম।রাস্তায় আছেন চাঁদের খালুও।হঠাৎ করে মেয়েটার কী হলো কেউ বুঝতে পারলোনা।সেখানে উপস্থিত প্রত্যেকটা মানুষ শংকিত!ভয়ে তাদের আত্মা শুকিয়ে যাবার উপক্রম।কি বিশ্রী একটা পরিস্থিতি!এতোটা বিধ্বস্ত অবস্থায় চাঁদকে কখনো কেউ দেখেনি।চাঁদের ননদগুলোর চোখ ফুলে লাল হয়ে আছে।অমৃতা-নিমৃতার অবস্থাও করুন।মেয়েগুলো একটু বেশিই চাঁদকে ভালোবাসে কিনা?বাকিরাও বেশ চিন্তিত।শুধু ভাবলেশহীন সেখানে প্রণয়।চুপচাপ দাঁড়িয়ে সবটা কেবলই দেখে যাচ্ছে সে।কিছু বলছেওনা।কোনোকিছুর প্রতিক্রিয়াও দিচ্ছেনা।চাঁদের বাবা ইহাদুল ইসলামের ভাঙা কন্ঠ পেয়ে এবং তীব্র গতিতে নিজের দিকে আসতে দেখে ভড়!কাতে বাধ্য হয় প্রণয়।ইহাদুল ইসলাম প্রণয়ের দু’হাত ধরে বলেন,
“বাবা?ও বাবা?দেখোনা আমার মেয়েটাকে।তুমিতো ডাক্তার তাইনা?আমার মেয়েটাকে দেখে দাওনা বাবা।হঠাৎ হঠাৎ কী হয় তার?পাঁচ বছর আগেও বিধ্বস্ত অবস্থায় দেখে আমি ম*রতে ম!রতে বেচেছি।মেয়েটাকে ম!রে ম*রে বেঁচে থাকতে দেখেছি।আমার মেয়েটাকে ঠিক করে দাওনা বাবা!এ মেয়েটা যে আমার জান বাবা!আমার একমাত্র কলিজার টুকরা।ছোট থেকে এই মেয়েটা আমি আর তার ভাই ব্যতীত অন্য পুরুষকে এক আনাও ভরসা করেনি।আমি তোমাকে ভরসা করে তোমার হাতে তুলে দিয়েছি আমার ছোট্ট পরীটাকে।আমার মেয়েটাকে বাঁচাও প্লিজ!আমি চাইনা আমার মেয়েটা আরও একবার সেসব বিধ্বস্ত অবস্থার মাঝে হারিয়ে যাক!নিজেকে ভুলে গিয়ে ম!রে যাক।বাবাগো আমার মেয়েটাকে তুমি…”
হঠাৎ করে ইহাদুল ইসলামকে নিজের বক্ষপটে স্থান পেতে দেয় প্রণয়।তার মাথায় হাত বুলিয়ে বলে,
“শান্ত হন আব্বু শান্ত হন।চন্দ্রের কিছু হবেনা।চন্দ্রের ন্যায় সাহসী মেয়ে এ জগতে আর দু’টো নেই।সে নিজেকে ঠিক সামলে নেবে।আপনি শান্ত হন।”
“আমার সাহসী সেই মেয়েটার মৃ!ত্যু আমি সেদিনই দেখেছি প্রণয়।যেদিন চৈত্র আর চাঁদ রাতের আধারে তাদের খালামনির বাড়ির উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়লো।আমার সেই অকুতোভয় মেয়েটাকে এরপর আমি আর কখনোই দেখলাম না বাবা।এখন যেই চাঁদকে দেখছোনা? এই চাঁদটা কেবলই খোলাসায় আবৃত।কোনো সাহস তার মাঝে বিদ্যমান নেই আর।নাহলে এ অবস্থা হতো?এভাবে পাগলামো করতো সে?তুমি আমার মেয়েটাকে আগের মতো বানিয়ে দাওনা বাবা!আমার সেই চাঁদ মেয়েটাকে ফিরিয়ে আনোনা বাবা!”
“আব্বু!আব্বু আপনি শান্ত হন।আচ্ছা আমি আপনার মেয়েকে ঠিক করে দেবো।শান্ত হন আপনি”
চৈত্র নিজ জায়গায় দাঁড়িয়ে থেকেই বললো,
“আমার আগের বোনটাকে আপনি কখনোই ফিরিয়ে দিতে পারবেন না।সেটা সম্ভবই না।বোনটা আমার সেদিনই ম!রেছে।বর্তমানে যে আছে সে কেবলই বাবা-মা আর এই অভাগা ভাইটার দিকে তাকিয়ে থেকে নিজেকে সংযত রাখা এক মহীয়সী নারী।যেটা কেবল আমার বোনই পারে।”
আর কিছু বলেনা চৈত্র।প্রস্থান করে সে জায়গা।
সকলের অবস্থাই বেশ করুন।মেয়ের শোকে চাঁদের মাও একবার জ্ঞান হারিয়েছেন।বারবার উঠে-বসে কপাল চাপড়াচ্ছেন আর আহাজারি করছেন,
“আমার মেয়েটা বুঝি এবার ম!রেই গেলো চৈত্রের আব্বু!শুনছেন আপনি?হায় আল্লাহ!আমার চোখের মনি।ও আমার চাঁদ মা!”
“শুনছেন আপনি?মেয়েটার অমতে বিয়েটা দেয়া ঠিক হয়নি।ঠিক হয়নিগো চৈত্রের আব্বু!চৈত্রের কথা শোনা উচিত ছিলো।উচিত ছিলো আমাদের।ওকে না জানিয়ে কিছু করা ঠিক হয়নি।একদমই উচিত হয়নি।আমি…আমি আমার মেয়েকে আর ও শহরে যেতে দেবোনা।চৈত্র ঠিকই বলে ও শহর আমার মেয়ের জন্য অভিশপ্ত!অভিশাপই নিয়ে আসে বারবার।এবার আমার মেয়েটাকে বুঝি খে!য়েই ফেললো গো!”
To be continued….
#আবার_প্রেম_হোক
#নুসরাত_জাহান_মিম
২৮.
“ভাবির সাথে অতীতে ঠিক কী হয়েছিলো ভাইয়া?”
উশ্মির প্রশ্নে তার পানে না তাকিয়েই চৈত্র জবাব দেয়,
“অতীতকে অতীতের সাথে ধুয়েমুছে ফেলা উচিত বলেই আমি মনে করি”
“অতীত না জানলে ভাবির কেসটা আমি কিভাবে নেবো ভাইয়া?”
অবাক হয়ে কপাল কুচকে চৈত্র বলে,
“কেস?”
“জ্বি কেস।ভাবি আমার কাছে ডিভো!র্স কেস নিয়ে এসেছিলো।আমি প্রত্যাখ্যান করেছি।কিন্তু আজকে যা ঘটনা হলো এরপর বিষয়টা মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে।আপনি কাইন্ডলি বিষয়টা বুঝিয়ে বলুন ভাইয়া”
“কোনো কেসের দরকার নেই।ডিভো!র্সও হবে না আর না অতীত নিয়ে আপনাকে জানতে হবে।আপনি পারলে চাঁদের কাছে একটু বসুন।নাহয় রেস্ট নিন।আমাকে ফারদার এসব প্রশ্ন করে বিভ্রান্ত করবেন না প্লিজ”
বলেই সে স্থান ত্যাগ করে বোনের রুমের উদ্দেশ্যে পা বাড়ায় চৈত্র।সেখানে আসতেই দেখে তার বোন ঘুমাচ্ছে।পাশেই রুবা,শিফা আর রিদি বসে আছে তার।রিহাও চিন্তিত।অপরপাশে আছে অমৃতা-নিমৃতাও।চৈত্র রিহাকে বলে,
“মিস রিহা?”
রিহা চৈত্রের পানে চেয়ে বলে,
“জ্বি বলুন?”
“আপনারা সবাই একটু বের হলে বোনের সাথে কয়েকটা কথা বলতাম”
“হ্যা হ্যা অবশ্যই।চল তোরা”
অমৃতারা ঠায় বসে আছে বলে চৈত্রের শীতল কন্ঠস্বরে তারাও যেতে বাধ্য হয়,
“তোদের কি ফেয়ারওয়েল কার্ড পাঠানোর পর বেরুবি?”
সকলে বের হতেই দরজা ভিড়িয়ে চাঁদকে আস্তে করে ডাকে চৈত্র।চাঁদ খানিকটা নড়েচড়ে উঠতেই চৈত্র বলে,
“একটু উঠতে পারবি ছোটি?”
চাঁদ পিটপিট করে চোখ মেলে চাইতে নিলে আবারও শুনতে পায়,
“ভাই তোর সাথে কথা বলতাম?”
চাঁদ ধড়ফড়িয়ে উঠতে নিলে চৈত্র তাকে শান্ত করে বলে,
“আস্তে আস্তে।এমন করার কিছু নেই।তুই ভালোভাবে বস।এরপর ভাইকে বল কী হয়েছিলো?”
বালিশে হেলান দিয়ে চাঁদ বলে,
“আমি ছাদে গিয়েছিলাম ভাই”
বলেই থামে চাঁদ।চাঁদকে থামতে দেখে চৈত্র শান্তস্বরে বলে,
“আচ্ছা।তারপর?”
“আমার ডায়েরী দু’টো আছেনা?লক সিস্টেম?”
“হিম?”
“ওগুলো নিয়ে গেছিলাম।একটা নিচে রেখে আরেকটা দিয়ে লিখছিলাম কিছু একটা”
“আচ্ছা এরপর?”
“রুবা আর উশ্মি এসে হঠাৎ ডাক দিলো।তাই হাত থেকে ফসকে ডায়েরীটা রাস্তায় পরে গেলো।নিচেও নেমে গেলাম আমি।খুজলাম কিন্তু পেলাম না।এখন অন্যটাও পাচ্ছিনা”
“কী এমন ছিলো ডায়েরীগুলোয়?”
দীর্ঘশ্বাস ফেলে চাঁদ বলে,
“আমার সমস্ত জীবনের স্মরণীয় এবং জোর করে স্মরণীয় সকল স্মৃতি ছিলো।তুই তো বুঝতেই পারছিস?”
“এগুলো কেউ ডায়েরীতে লিখে?”
“লিখেছিলাম।ভেবেছিলাম লক সিস্টেম যেহেতু কেউ খুলতে পারবেনা আমি বাদে।তাই”
“তাহলে চিন্তা করছিস কেনো?কেউতো খুলতে পারবেনা”
“একটা নাহয় নাই পারলো।কিন্তু অপরটা?যেটা রাস্তায় পড়লো?সেটাতো খোলাই ছিলো।যদি কোনোভাবে লক হয়ে যায় তাহলে ভালো।নাহলে?সবাই জেনে যাবে ভাই!সবাই জেনে যাবে।এরপর আমার যাও অল্পকিছু শান্তি আছে তাও হারা!ম হয়ে যাবে তাইনা ভাই?”
“এভাবে বলিস না।কিছু হবেনা।আমি আছি না?”
“তোরা আছিস বলেই আমি আছি।নাহয়…”
বোনের ঠোটে হাত রেখে চৈত্র বলে,
“আর কিছু না।আজ অনেক কাহিনী হয়ে গেলো।তোর এভাবে প্যানি!ক করা উচিত হয়নি।অনেকেই অনেক কিছু ভাবছে।তোর ঐ উকিল ননদ আমাকে রীতিমতো ইনভেস্টিগেট করে ফেলেছে”
“উশ্মি?”
“হ্যা যেই হোক।এখন সবটা কিভাবে সামাল দিবি দেখ।আব্বু-আম্মুও খুব ভয় পেয়েছে”
“আমি তখন কিছু ভাবতে পারিনি ভাই।মনে হচ্ছিলো আমার সব শেষ।আমারতো সব শেষই রে ভাই!কে নিলো আমার ডায়েরীগুলো?বুঝতে পারছিনা কিছুই।হঠাৎ করে রাস্তা থেকে অচেনা ডায়েরী কে ই বা নেবে?আর ছাদের টা?ওয়েইট!উশ্মি আর রুবা?”
“তোর ননদেরা?”
“হ্যা?ওরাইতো লাস্ট টাইম ছিলো ওখানে”
“নাওতো নিতে পারে।আর নিলেও লকতো খুলতে পারবেনা”
“তা পারবেনা।তবুও জিজ্ঞেস করবো দেখি”
“আর তুই নাকি প্রণয়ের থেকে ডি*ভোর্স নিবি?”
“কে বললো তোকে?”
“যার কাছে কেস দিতে চেয়েছিস সেই”
“উশ্মি?”
“হিম।দেখ বোন।জীবনতো একটাই তাইনা?জীবনকে আর কত রঙহীন রাখবি বল?এবার জীবনে রঙের ছিটেফোঁটা নাহয় আসতে দে?”
“আমার জীবন সাদামাটাই সুন্দর ভাই”
“প্রণয়ই সে না যার জন্য তোর ও শহর ছাড়তে হলো?যার প্রশ্নের সম্মুখীন তুই হতে চাইতিস না?যার জীবনে তুই আধার আনতে চাইতিস না?সেই কিনা সে বল?”
ভাইয়ের কথায় মাথা নিচু করে চাঁদ।তা দেখে স্মিত হেসে চৈত্র বলে,
“ছেলেটাকে খুব ভালোবাসিস না?”
“ভালোবাসলেই যে তাকে পেতে হবে এমন তো কোনো কথা নেই ভাই”
“পেয়েও হারাতে চাস?”
“বহু আগেই হারিয়েছি।নতুন করে পাওয়ার আর সাধ নেই।সাধ যদি থেকেও থাকে তবুও তাকে আমার আর পাওয়া হবেনা।বরং আমিই পেতে চাইনা”
অসুস্থ চাঁদ রুম থেকে বের হতে বাধ্য হলো ড্রয়িংরুমে তার মা আর বাবার তুমুল ঝগড়ার খবর পেয়ে।ক্লান্ত শরীর নিয়ে তাদের সামনে হাজির হয়ে বলে,
“হয়েছে টা কী আম্মু?এভাবে চেচাচ্ছো কেনো?বাসাভর্তি মেহমান তা কি ভুলে গেছো তোমরা?আব্বু তুমিও?”
চাঁদের বাবা সামনে এসে মেয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে বলেন,
“এখন কেমন লাগছে আম্মু?”
“আলহামদুলিল্লাহ এখন ঠিক আছি আব্বু।তোমরা বলো হয়েছে টা কী?”
চাঁদের মা এবার খানিকটা চেচিয়ে বলেন,
“কোথায় ঠিক আছিস তুই হ্যা?শরীরের কী অবস্থা হয়েছে দেখেছিস?ভুল আমাদের ই ছিলো এভাবে বিয়ে দেওয়া ঠিক হয়নি।এবার আর তোকে ওখানে যেতে দেবোনা।তুই এখানেই থাকবি মা।কালই জামাই যেতে চাচ্ছে।আমি বলেছি কয়েক মাস থাকুক।পরে পাঠাবো।এই নিয়ে তোর আব্বু…”
মায়ের কথা ছিনিয়ে চাঁদ বলে,
“কয়েক মাস কেনো থাকবো?এখন আমার বাড়ি তো ওটাই আম্মু।আমি মাঝেমাঝেই এখানে আসবো।থাকবো কয়েকদিন।বিয়ের পর তো জীবন এমনই তাইনা আম্মু?আর তোমরা চাইলে ঢাকা শিফট হয়ে যাও।ওখানেইতো ছিলাম আমরা”
বলেই বাকিদের দিকে তাকিয়ে বলে,
“যেহেতু কাল চলেই যাচ্ছি আজ চাচ্ছিলাম সবাই মিলে একটু কোথাও ঘুরে আসি?তোমরা কি যাবে আমার সাথে?”
রিহা সামনে এসে বলে,
“অসুস্থ শরীর নিয়ে ঘুরতে চাচ্ছো?”
“অসুস্থ মন আর মস্তিষ্কটাকে সতেজ করতে চাচ্ছি রিহাপু।আর কিছুইনা”
রিহা হেসে বলে,
“খুব পাকা পাকা কথা না?”
উজান চাঁদকে বলে,
“কোথায় যাওয়া যায় ভাবি?”
“অনেক সুন্দর সুন্দর জায়গা ই আমাদের এখানে আছে।কিন্তু কালই তো চলে যাবো।বেশিক্ষণ ঘোরা যাবে কিনা জানিনা।তৈঙ্গা চূড়া যাওয়া যায়রে ভাই?”
বলেই ভাইয়ের দিকে তাকায় চাঁদ।তাকাতেই চৈত্র বলে,
“প্রণয়তো আজ ভোরের দিকেই যাওয়ার কথা বলছে।কিভাবে যাবি তবে?”
মির চাঁদের মাথায় হাত বুলিয়ে বলে,
“আমরা কাল বিকালেই যাবো।প্রণয় গেলে একা যাক।আজ একটু ঘুরি নাহয়।কতদিন হলো চিত্তের মেঘ সরাইনা”
মিরের কথার প্রেক্ষিতে প্রণয় কিছু বলেনা।শুধু বাকা চোখে তাকায় তার পানে।অতঃপর খানিকটা কেশে চৈত্রকে উদ্দেশ্য করে বলে,
“সবাই রেডি হলেই বেরুবো।তৈঙ্গা চূড়া হোক আর যেই চূড়াই হোক সবখানেই যাবো আজ।আপনার বোনকে বলে দেবেন তার হাজবেন্ড এতোটাও খারাপ না যতটা সে ভাবে”
To be continued….