#আসক্তি২
পর্বঃ৩০(বোনাস)
লেখায়ঃআফিয়া আজাদ নিঝুম
আমন্ত্রিত মেহমানরা চলে গেছে ঘন্টাখানিক হবে।শাড়িটা চেঞ্জ করে নেয় পাখি।এখন যেন দেহে প্রাণ ফিরে পেলো। রাখি সহ আরো কয়েকজন মেয়ে পাখিকে ড্রয়িং রুমে বসিয়ে রেখেছে।আর ওরা শানের ঘর সাজাতে ব্যস্ত।পাখি এসবে ভীষণ বিরক্ত। কারণ এগুলো অতিরিক্ত আদিখ্যেতা ছাড়া কিছুই মনে হচ্ছে না তার।একবার তো রাখিকে বলেও ফেলল,”এতসবের কি খু্ব দরকার আছে?”
রাখি তো ঠোঁট কাটা স্বভাবের। গায়ে ধাক্কা মেরে বললো,”কেন খুব অসুবিধা করবে বুঝি?”
এরপর লজ্জায় পাখি আর ও কথার পথ মারায় নি।অগত্যা ইনায়াহ্’র সাথে বসে গোপাল ভাঁড় দেখতে হচ্ছে।
সারাদিনের সাজসজ্জায় ভীষণ ক্লান্ত পাখি।ঘুমে চোখদুটো ঢুলু ঢুলু।মনে মনে পার্লারের মেয়েদের গুষ্টি উদ্ধার করছে ।পই পই করে বলেছিলো “এতো ভারি মেকআপ করাবেন না ”
তবুও তারা পাখির কথা শোনে নি।সে মেকআপ তুলতে আবার কত্তো কাহিনী।ঠোঁটের ডগায় বিড়বিড় রাখিসহ সব মেয়েদের গালাগাল করে সোফায় ইনায়াহ্’র কোলে মাথাটা আলগোছে রেখে চোখ বুঁজে ফেলে পাখি।খিলখিলিয়ে হেসে ওঠে ইনায়াহ্।তখনি হাসিটা ম্লান হয়ে যায় ঠোঁটের কোণে।পাখি ক্লান্ত পাপড়ি দুটো টেনে খুলে ভ্রু নাচায়। মানে হাসি থামানোর কারণ কী?
ইনায়াহ্ খুব করূনস্বরে বলে,”তুমি নাকি এখন থেকে সান সাইনের ঘরে থাকবা,আমার ঘরে থাকবা না?”
চট করে উঠে বসে পাখি।চিন্তায় পরে যায় এসব ইনায়াহ্’কে কেন বলা হয়েছে? আর কে বলছে?
ঘুমকে দূরে ঠেলে ইনায়াহ্’কে বুকে জড়িয়ে বলে,”এসব কে বলেছে মা?”
“সান সাইন যখন তোমায় ঘরে নিয়ে গেলো হাত টেনে, তখন দিদা আর রাখি ম্যাম বলেছে।বলেছে আমি যেন…..”,বলতেই দুফোটা চোখের জল গড়িয়ে পড়ে ইনায়াহ্’র।বাকিটা আর বলা হয় না।পাখির বুকে ইনায়াহ্’র চোখের পানিটা তীরের মতো বিঁধছে।
পাখির কোমড় জড়িয়ে কেঁদে ওঠে ইনায়াহ্।কান্নাজড়িত দরদমাখা কন্ঠে বলে,”আমি তো তোমাকে ছাড়া থাকতে পারব না মুন সাইন।ওরা জানে না?”
পাখি ইনায়াহ্’র মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে বলে,”এমন কেন ভাবছ বেবি?আমি তো তোমার পাশেই থাকব। বিশ্বাস করো?”
ইনায়াহ্’র কান্নার গতি থেমে আসে।
চাবিটা আঙ্গুলের ডগায় ঘুরাতে ঘুরাতে ড্রয়িংরুমে পা রাখে শান।ঢুকেই ইনায়াহ্’কে কাঁদতে দেখে।দৌঁড়ে এসে জড়িয়ে ধরে বলে,”মাম্মাম,কি হয়েছে তোমার?”
উৎসুক চোখ দুটো পাখির দিকে উত্তরের আশায় থাকে।
“ওকে নাকি রাহেলা চাচি আর রাখি বলেছে আমায় ছেড়ে থাকতে হবে সেটা ভেবে কাঁদছে”
শান ভাবনায় পরে যায়। কৌতূহল দমাতে না পেরে বলে,”কেন তুমি কোথায় যাবা?তোমায় ছাড়া থাকতে হবে কেন?”
পাখি হতাশ চোখে তাকিয়ে শানকে বোঝার চেষ্টা করে। মুখ ফসকে বেরিয়ে যায়,”কেন জানেন না?আমি বাড়ি চলে যাব”
এতোক্ষনে খেয়াল হয় শানের। নিজের করা ভুলে নিজেই লজ্জিত হয়।অসহায় মুখ করে পাখির দিকে তাকায়। ইনায়াহ্’কে উদ্দেশ্য করে বলে,”আমিও যে তোমার মুন সাইন ছাড়া থাকতে পারব না মা”
শানের কথায় পাখি হেসে ফেলে মুখে হাত দিয়ে ইনায়াহ্ চট করে বলে,”আইডিয়া”
“কি?”,শান পাখি দুজনেই একসাথে প্রশ্ন করে।শানের চোখে সোজা চোখ পড়তেই লজ্জায় চোখ সরিয়ে নেয় পাখি।
ইনায়াহ্ বিজ্ঞের মতো ভেবে বলে,”আমরা তিনজনে একঘরে ঘুমাব।ইয়েএএ”
“মজা হবে না বলো সান সাইন?”,স্বগতোক্তি করে জানতে চায় ইনায়াহ্।
শান মুখটা ফ্যাকাসে করে অনর্থক হাসি টেনে বলে,”হ্যাএএ,খুউউব মজা হবে”
শানের মুখের দিকে তাকানো যাচ্ছিলো না।বহু কষ্টে পাখি হাসিটা চেপে রাখে।কিন্তু বেশিক্ষন রাখতে পারলো না।বোম ফাটানো হাসিতে পুরো বাড়ি কাপিয়ে হাসতে হাসতে সোফায় গড়াগড়ি খাচ্ছিলো।
পাখির হাসিতে শানের শরীর জ্বলে পুড়ে একাকার।অবশ্য ভালো যে লাগছে না তা কিন্তু নয়। এই প্রথম পাখিকে এভাবে প্রাণ খুলে হাসতে দেখলো শান।সরু চোখে তাকিয়ে বলে,”হেসে নাও।যা আমার তা আমি উসুল করতে জানি পাখি রানী। ”
পাখি হাসিটা জোড় করে কয়েক সেকেন্ড থামিয়ে রেখে আবার শানের দিকে তাকিয়ে হেসে ফেলে শব্দ করে।
ওর হাসিতে উপর থেকে দপদপ করে নেমে আসে সবাই।হৈহৈ করে বলে,”কি হইছে, কি হইছে। পাখি?এমনে হাসছো ক্যা?”
পাখি কি বলবে সবার দিকে একনজর তাকিয়ে আবার শানের দিকে তাকায়।ফের হেসে দেয়।তবে শান এবার রাগি চোখে তাকাতেই হাসিটা উবে যায়।শান সিঁড়ি ধরে উপরে উঠতেই আটকে দেয় মেয়েরা।অবাক হয়ে প্রশ্ন করে,”কী?”
“এখন যাওয়া যাবে না”
“আজব তো,আমার ঘরে আমি যাবো না মানে!”
“যাবেন না বলি নি।বলেছি আরো ঘন্টা খানিক পরে”
“পাখি তোমার বন্ধুরা এবার বেশি করছে।সরতে বলো ওদের”
পাখি একটু গলা উচিয়ে বলে,” আমাকেই উপরে উঠতে দিচ্ছে না আবার আমি যাবো উকিল হতে!”
মুখে একরাশ বিরক্তির ছাপ নিয়ে ফিরে এসে বসে পরে সোফায়।পাখির দিকে আড়চোখে তাকাতেই পাখি হাসিটা মিলিয়ে নেয়।শান রাগিচোখে চেয়ে আনমনে বলে,”হেসে নাও।আমিও বোঝাব। দেখিও”
🌸🌸
ঘন্টাখানিক যেতে না যেতেই মেয়েগুলো নেমে আসে।রাখি ওদের লিডার।এসেই পাখিকে তাড়া দেয়।
“হুহ হুহ নে, উঠ”
“কোথায় যাব?”,কন্ঠের স্বর খাঁদে নামিয়ে বলে পাখি
“বাসর ঘরে”
চমকে যায় পাখি।জীবনে যেন প্রথম শুনলো এই কথাটা।
“আসবি নাকি সবাই মিলে কোলে তুলে নেবো?”,একরোখা প্রশ্ন করে রাখি।
পাখি ঘুম জড়ানো মাথাটা ইনায়াহ্’র কাঁধে দিচ্ছে। আর ইনায়াহ্ বিরক্তি নিয়ে বার বার সরিয়ে দিচ্ছে।কারণ তার টিভি দেখতে মনঃক্ষুণ্ণ হচ্ছে।
জড়িয়ে আসা কন্ঠে বলে,”কিসের বাসর,কার বাসর,কবে?আমি জানি না কিছু।আমি ইনায়াহ্’র কাছে ঘুমাব”
বলেই শানের মনোভাব বোঝার চেষ্টা করে পাখি।শান রাগিচোখে চেয়ে আছে ওর দিকে।
মেয়েরা আর কোন কথা না বলে পাখিকে ধরে মিলে নিয়ে যায়।
“আরে করছিস কি?ইনায়াহ্…. কাঁদবে আমিও থাকতে পারব না ওকে ছাড়া”,হাত পা ছুড়ে বলে পাখি।মূলত সে চাইছে শানকে খেপাতে।
পাখিকে ওর ঘরে নিয়ে গিয়ে জোড় করে নতুন আরেকটা ব্যাকলেস লেহেঙ্গা পরিয়ে দেয়।বেশ গর্জিয়াস করে সাজিয়ে দেয় রাখি।একপ্রকার ঠেলতে ঠেলতে নিয়ে যায় শানের ঘরে।পাখির ভিতর ভিতর কিরকম অনুভূতি হচ্ছে তা সে কাউকেই বোঝাতে পারছে না।দরদর করে ঘাম ঝড়ছে শরীর বেয়ে।রাখির দিকে করূন দৃষ্টিতে তাকাতেই রাখি কানে কানে বলে,”ইনজয় বেইব”
পাখির কান দিয়ে গরম ধোঁয়া বের হয় যেন।
ঠেলে ঠুলে খাটের মাঝে নিয়ে বসিয়ে দেয় পাখিকে।
পাখিকে নিয়ে যাওয়ার কিছুক্ষন পরেই ইনায়াহ্ টিভি দেখতে দেখতে ঘুমিয়ে গেছে শানের কোলে।শান ওকে বুকে জড়িয়ে উঠে দাঁড়ায় ঘরে যাবে বলে।রাখি দ্রুত নেমে বলে,”আমায় দিন আমি শোয়াই দিই”
শান কিছু না বলে রাখিকে দিয়ে উপরে উঠে যায়।রাখি রাহেলাকে ডেকে ইনায়াহ্’র শোয়ানোর কথা বলে।তখন রাহেলা বলে, “আমার ঘরে দিয়া আসো মা।আমার কাছে থাকলে কাঁদবে না ”
শান ভিড়ানো দরজাটা ঠেলে ভিতরে পা রাখে।তাজা ফুলের তাজা ঘ্রান নাকের কাছ আসতেই প্রান ভরে যায়।চারিদিকে সুবাসিত। চোখ পড়ে বেশ বড়সড় ঘোমটা টেনে খাটের মাঝখানে বসে থাকা পাখির উপর।দরজাটা খোলা রেখেই ভিতরে ঢোকে।পাখির বুক ধুকপুক করে চলেছে ইতোমধ্যে। অজানা অনুভূতিতে সারা শরীর কাপঁছে ঠকঠক করে।শান ওর দিকে একবার চেয়ে কাবার্ড থেকে ড্রেস বের করে ওয়াশরুমে চলে যায়।এরপর একপ্রকার শব্দ করে দরজাটা লাগিয়ে দেয়।অন্তরাত্মা কেঁপে ওঠে পাখির।লেহেঙ্গা সমেত বিছানার চাদরটা খামছে ধরে। শ্বাস নেয়াই যেন দুষ্কর হয়ে দাঁড়িয়েছে।
রাত হয়ে গেছে অনেকটাই।সবাই নিজ নিজ বাড়ি চলে যায়।রাখিও আর দেরি করে না।চলে যায় বাড়িতে।
শান সোজা দ্রুত পায়ে পাখির দিকে এগিয়ে যেতেই দড়বড় করে বিছানা ছাড়ে পাখি।ঘোমটার আড়ালে বলে,”এসব কি ধরনের অসভ্যতা?এভাবে এগিয়ে আসার মানে কি?”
শান কন্ঠে অধিক মাধুরতা মিশিয়ে বলে,”কি করলাম আমি?তুমি ভয়ে নামছো কেন?অপরাধীর মতো পালাচ্ছো কেন?
পাখি কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বলে,”দেখুন যতোই আজ ফুলশয্যা টয্যা হোক না কেন আআমি মমোটইেই এসবে মানসিক ভাবে প্রস্তুত নই”
“আমি প্রস্তুত করে নিবো”,একরোখা জবাব শানের।
পাখি জিহ্ব কেটে বলে,”ছিঃ”
“ও ছি ছিৎকারে কিচ্ছু হবে না ”
পাখি বুঝতে পারে শানকে তখন খেপানো উচিত হয় নি, উহু একদমই উচিত হয় নি।সুযোগ বুঝে পা টিপে টিপে দরজার কাছে এসে দরজা খুলতেই শান দ্রুত এসে দরজায় নিজের বলিষ্ঠ হাত রাখে। বন্ধ হয় দরজা।নিজের পিছনে এতোটাই কাছে শান ঘুরতে গেলেই বুকের উপর মুখ থুবড়ে পরে যাবে সে। ভেবেই বুক যেন হাঁফরের মতো ওঠানামা করছে।কেউ কোন কথা না বলে ওভাবেই চুপচাপ থাকে।
পাখি আমতাআমতা করে বলে,”ইইনায়াহ্,ইনায়াহ্ তো আমায় ছাড়া ঘুমাতে পারে না, না?আজ যাই। ”
শান্তস্বরে শান জবাব দেয়ে,”ইনায়াহ্ ঘুমিয়েছে আরও ঘন্টা খানিক আগে”
“ওহহহ ঘুমিয়ে গেছে?”
“পিছনে ঘুরো”,পাখির কথাকে উপেক্ষা করে বলে শান।কিন্তু পাখি ঘোরে না।অগত্যা শান মাথার উপর থেকে ওড়না টা সরিয়ে দেয়।ব্যাকলেস লেহেঙ্গার কারনে পিঠটা পুরোটাই উন্মুক্ত হয়ে যায়।পাখি স্তম্ভিত হয়ে খামচে ধরে লেহেঙ্গার কুচি।এরপর ওকে আকষ্মাত কোলে তুলে নিয়ে বিছানায় বসায়। দুহাত কচলাচ্ছে পাখি মাথা নিচু করে।এটাই বোধহয় পৃথিবীর সবথেকে লজ্জাজনক পরিস্থিতি।
শান সন্দিহান চোখে চেয়ে বলে,”আমায় খেপাতে ভালো লাগে, না?খুব হাসছিলে তখন দেখলাম।এবার হাসি কোথায় গেলো?আজ পুরো ডানা দুটোই কেটে দিবো যে…..”
বেশ মাধুর্য নিয়ে হাসে শান।
পাখি মাথাটা কিঞ্চিত উঠিয়ে বলে,”আপনি ভারি নির্লজ্জ”
“লজ্জা নারীর ভূষণ”
“বেহায়া লোক”
শব্দ করে হেসে ওঠে শান।উঠে পাখির পিছনে গিয়ে বসে।একে একে প্রত্যেকটা অলঙ্কার খুলে ফেলে আলতো হাতে।প্রতিটা স্পর্শ যেন পাখিকে নতুন এক পাখির সাথে পরিচয় করাচ্ছে।চোখ মুখ খিচে রেখেছে করূনভাবে।সেদিকে একবার চেয়ে শান হেসে ফেলে।এরপর পিছন থেকে জড়িয়ে নেয়।কাঁধে মুখ গুঁজে খুব মিষ্টি করে বলে,”তুমি কি সত্যিই মানসিকভাবে অপ্রস্তুত? ”
পাখি কিছু বলতে পারে না।চোখ বন্ধ করে রাখে লজ্জায়।লজ্জা, ভালোলাগা,আংশিক ভয়, নতুন কিছুর অনুসন্ধান সব মিলিয়ে যেন এক মিশ্র অনুভূতি।
কাঁধে ঠোঁট ছুঁইতেই কেপে ওঠে পাখি।শান নিঃশব্দ হেসে কানে কানে বলে,”যা আমার তা আমি নিতে জানি।তবে তুমি না চাইলে না।”
এবার চোখ তুলে তাকায় পাখি।শান ওকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে বলে,”ইচ্ছের বাহিরে কিচ্ছু করতে হবে না।তুমি যা চাইবে তাই হবে।শুধু আমায় ছেড়ে যেও না।আমি এবার ধোকা পেলে সত্যিই মরে যাবো পাখি।”
‘যাও ফ্রেশ হয়ে ঘুমাতে এসো।”,স্বাভাবিক স্বরে বলে শান।
শানের চোখের দিকে একরাশ ভালোবাসা দেখে থমকে যায় পাখি।মনে পড়ে শানের তিক্ততায় ভরা অতীতের কথা।মূহূর্তেই চোখ মুখ শক্ত হয়ে আসে পাখির।সকল জড়তা ভুলে শানের গলা জড়িয়ে ধরে। নিজেকে ভাসিয়ে দেয় অজানা গন্তব্যের ভেলায়।গলায় মুখ গুঁজে বলে,”আমি আপনাকে অনেক ভালোবাসি।জীবন চলে যাবে তবু আপনাকে ছাড়ব না”
শান আবেগাপ্লুত হয়ে পড়ে।সে ভাবতেও পারে না ভালোবাসা নামোক জিনিস টা এভাবে তার জীবনে ধরা দেবে।নিজেকে এই মূহূর্তে পৃথিবীর সবথেকে সুখী মানুষ মনে হচ্ছে শানের।নিজের সাথে পাখিকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে।
“আলু ভর্তা বানানোর প্লান আছে?”,খড়খড়ে কন্ঠে বলে ওঠে পাখি।
মুচকি হেসে হাতের বাঁধন আলগা করে দেয় শান।দুগালে দুইহাত রেখে এগিয়ে যায় পাখির দিকে।গন্তব্য তিড়তিড় করে কাপঁতে থাকা ঐ অধরযুগল।মূহূর্তেই বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় দুজনের খাড়া নাক দুটো।দুজনেই হেসে ফেলে শব্দ করে। পাখির হাসতে থাকা মুখটা হঠাৎই নিজের কাছে নিয়ে আসে শান।হাসিটা মিলিয়ে যায় অন্য একজোড়া ঠোঁটের অন্তরালে।
🌸🌸
সকালের মিষ্টি রোদ মুখে পরতেই চোখের পাতা পিটপিট করে পাখির।নিজেকে আবিষ্কার করে শানের উন্মুক্ত বুকের উপর।শান তখনো জাগে নি।মাথা তুলে শানের দিকে তাকায় পাখি।আজ থেকে এই মানুষটাকে ছুঁয়ে দেখার অধিকার তার,আগলে রাখার দায়িত্ব তার।কি থেকে, কি হলো সবটা ভাবতেই যেন পাখি হেসে ওঠে।একটু পর উঠে শানের কপালে চুমু দেয় পাখি।ঘুম ভেঙ্গে যায় শানের।ঘুম জড়ানো চোখে চেয়ে মুচকি হেসে পাখির দিকে তাকায়।শানের চোখের ভাষা ভীষণ লজ্জায় ফেলল পাখিকে।মাথা নুয়ে বুকের উপর রাখলো।
চলবে….