#আসমানী
#পর্ব_১৯
#লেখনীতে_তাহমিনা_মিনা
হাসপাতালের বেডে শুয়ে আছে নাহিদ।আপাতত সে আশঙ্কা মুক্ত।কড়া নিরাপত্তার মধ্যে আছে সে।বাইরে দুজন পুলিশ দাঁড়িয়ে আছে তাকে পাহারা দিতে।বাইরের অনেকে শুনেছে এই রুমে একজন আসামীকে রাখা হয়েছে।তারা এই রুমের দিকেই যেন বাঁকা চোখে তাকিয়ে আছে।যেন এই রুমটাই অশুচি।তবে,ডাক্তারের কোনো হেলদোল নেই।তার কাছে সকল রোগীই সমান।হোক সে খুনী কিংবা ডাকাত। একজন ডাক্তার বা নার্সের কাছে দুজনই সমান।তারা মানুষের সেবার জন্য ব্রত নিয়েছেন।তাই অনেকেই যখন এই রুমে যে আছে তাকে নিয়ে ছি ছি করছে,তখন ডাক্তার আর নার্সেরা তাদের দূরে সরে যেতে বলছে।
হাসপাতালের বাইরে পায়চারি করছে নাবিল।একটু আগে সে খবর পেয়েছে তার ভাই ভালো আছে।সুস্থ আছে।সেই খবর সে সাথে সাথেই তার বাবা মাকে জানিয়েছে।বাবা একেবারে নির্বাক হয়ে গেছে।আর মা বিলাপ করছে।নাতাশা মা কে সামলানোর চেষ্টা করছে।পাড়া প্রতিবেশী আর আত্মীয়স্বজন এসে বারেবারে কথা শুনাচ্ছে।এতো ভালো একটা ছেলের ভিতরে যে এইরকম শয়তান লুকিয়ে ছিল সেটা নাকি তারা ঘুনাক্ষরেও টের পায় নি।আবার অনেকে তার ভাইয়ের এই কাজের জন্য তাদের বাহবা দিচ্ছে।নাবিলের কোনো দিকেই ভাবার সময় এখন নেই।সে খবর পেয়েছে তার ভাইয়ের পিঠে আর পায়ে গুলি লেগেছে।আর যে মানুষটা গুলি করেছে,সে তার ভাইয়ের স্ত্রী আসমানী।তার আসমানী ভাবী।আসমানী ভাবীর জায়গায় অন্য যে কেউ থাকলে নাবিল এতো বিচলিত হতো না কিন্তু এই মানুষটার এই রুপ কোনোভাবেই হজম করতে পারছেনা সে।সে বুঝতে পারছে না আসমানী ভাবীর সাথে ভাইয়ের কি এমন শত্রুতা ছিল।
তার ভাবনার মাঝেই তার সামনে একটা কালো রঙের গাড়ি এসে থামে।নাবিল পাথরের মতো দাঁড়িয়ে পড়ে সেখানে।প্রথমে একজন ছেলে আর তারপর একজন মেয়ে নেমে আসে গাড়ি থেকে।ছেলেটিকে নাবিল চিনে না।কিন্তু মেয়েটিকে ভালোমতোই চিনে।কালো পোশাকে মেয়েটিকে দেখতে বেশ অন্যরকম লাগছে।সে মেয়েটির সামনে গিয়ে কোনো কিছু জিজ্ঞেস করার আগেই মেয়েটি তাকে বলে,”আমার একটা উপকার করতে পারবে নাবিল?”
নাবিলের কথা আবার গুলিয়ে যায়।কিন্তু মেয়েটিকে জিজ্ঞেস করে,”কি উপকার?”
“তোমাদের বাড়ি থেকে কি আমার সব জিনিস নিয়ে আসতে পারবে?সব লাগবে না আরকি।খাটের নিচে দেখবে আমি বেশ বড়সড় একটা ব্যাগ লুকিয়ে রেখেছি।শুধু ঐটাই নিয়ে আসবে।আর কিছুই লাগবে না।পারবে না তুমি?”
নাবিল মাথা নাড়ে।যার অর্থ সে পারবে।
মেয়েটি অর্থাৎ আসমানী সামনের দিকে হাঁটতে শুরু করলে পিছনে থেকে নাবিল বলে উঠে,”আমার ভাইকে কেন মারলে ভাবী?তোমার হাত কাঁপলো না?তুমি কি পুলিশের লোক?”
আসমানী নিজের চোখের পানি লুকিয়ে মুচকি হেসে উত্তর দেয়,”আমি পুলিশের লোক না আবার বলতে পারো পুলিশের লোকও।আসলে আমার প্রতিহিংসা দেখে আমাকে কাজে বহাল করেছিল উপর মহল।বলতে পারো সিক্রেট এজেন্সির লোক আমি।আর বাকি রইলো তোমার ভাইকে কেন মারলাম?তোমার ভাইয়ের পেশা টা আহামরি ভালো কিছু নয় যে তাকে পুজো করবো।আমি আমার কাজ করেছি।এর বেশি কিছু নয়।আর কেন করেছি?সেটা আমি নিজে তোমাদের গিয়ে বলে আসবো।আমাকে যদি তোমরা ক্ষমা করতে পারো,তবে করবে।না করলেও আমার কিছুই যায় বা আসবে না।কারণ আমি আমার জায়গায় দাঁড়িয়ে ঠিকই আছি।”
নাবিল আবার প্রশ্ন করে,”তুমি কি সবকিছু প্ল্যান করেই আমাদের বাড়িতে এসেছিলে ভাবী?”
আসমানী এবার নাবিলের সামনে এসে ওর চোখে চোখ রেখে ছোট্ট একটা নিশ্বাস ফেলে বলে,”দুঃখজনক হলেও এইটাই সত্যি।ঐ ছেলেগুলোকে উস্কে দিয়েছিল আমার দলের লোকেরা।তারপর আমাদের যারা বিয়ে পড়িয়েছিল,তারাও আমাদের কথামতোই বিয়ে পড়িয়েছিল।তোমার ভাইয়ের চাকরিও আমাদের প্ল্যানমাফিকই দেওয়া হয়েছিল। আর কোনো প্রশ্ন?”
নাবিল ঢোক গিলে বলে,”নাহ।আমার ভাইয়া ভালো আছে?”
“হ্যাঁ,সে ভালো আছে।বেঁচে আছে।বেশ ভালোমতোই বেঁচে আছে।তুমি চিন্তা করো না।এখন বাসায় যাও।আমি এখানেই আছি।সন্ধ্যা পর্যন্ত থাকবো।এর মধ্যে তুমি এসে আমার ব্যাগ দিয়ে যেও।আমায় ব্যাগ দিতে এলে তোমার ভাইকে দেখে যেও।”
নাবিলের চোখে আশার আলো ফুটে উঠে।সে তড়িঘড়ি করে বলে,”আচ্ছা,ভাবী।”
আসমানী আর কোনো কথা না বলে হাসপাতালের ভিতরে চলে যায়।
নাবিলও বেশ খুশি হয়ে বাড়ির দিকে পা বাড়ায়।সে তার ভাইকে দেখতে পাবে আপাতত এইটুকুই তার জন্য অনেক যথেষ্ট।
★★★
ঘুমন্ত নাহিদের পাশে বসে আছে আসমানী।নিজেকে বাইরে থেকে স্বাভাবিক রাখলেও ভিতরে ভিতরে একেবারেই শেষ হয়ে যাচ্ছে সে।নিজের অজান্তেই সে ভালোবেসেছে এই মানুষটিকে।কিন্তু এই মানুষটিকে ধরার জন্যই সে এতোদূর এসেছে।সে চেয়েছিল নিজের হাতে এই লোকটিকে শাস্তি দিবে।কিন্তু সে পারেনি।তার বাবাকে দেওয়া কথা সে রাখতে পারেনি।তার এই কাজের জন্য কি তার বাবা তাকে ক্ষমা করবে?
কিভাবে পারতো লোকটির বুকে গুলি করতে?সে যে তাকেও ভালোবাসে।বাবাকে যেভাবে ভালোবাসে,সেভাবে এই লোকটিকেও ভালোবাসে।বড্ড বেশি ভালোবাসে।কেন এতোটা ভালোবেসেছে,সেটা আসমানী নিজেও জানে না।হয়তো নিজের পরিবার হারিয়ে আরও একটা পরিবার পাওয়ায় সে লোভ সামলাতে পারে নি।সবাইকে ভালোবাসতে গিয়ে এই মানুষটিকেও ভালোবেসে ফেলেছে।
“আসমানী,আরিয়ান মুখ খুলেছে।”
আয়ুশের দিকে না তাকিয়েই তাকে বলে,”কি বলেছে সে?নাহিদ কি নারী পাচার কারীদের সাথে জড়িত?”
“নাহ।নাহিদ জড়িত নয়।কিন্তু সেটা সে প্রথমেই স্বীকার করে নি।নাহিদের নামই প্রথমে দিয়েছে।এমনকি সব জায়গায় নাহিদের নামই সে ব্যবহার করেছে।বাকিদের মধ্যে অনেকেই স্বীকার করেছে ঐ কাজটা আরিয়ানের।নাহিদের না।নাহিদ শুধু ডাকাতি করেছে।সেখানে সেই লিডার।তোর ধারণাই ঠিক ছিল।”
আসমানী বেশ স্বাভাবিকভাবেই বলে,”আমি জানতাম।”
“হুমম।”
“ওর জ্ঞান ফিরবে কখন?”
“দুপুরের মাঝেই।তারপর আমরা ওকে নিয়ে যাব।জেলের হাসপাতালে রাখবো।এখানে থাকলে এখানকার ডাক্তাররা ওকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে দিবে না।”
“ওকে কি আমরা সন্ধ্যায় নিয়ে যাব?”
“হ্যাঁ,রাতের দিকেই।না হলে এই আসামীকে নিয়ে যাওয়া এতো সহজ না।জনগন দুই ভাগে ভাগ হয়ে গেছে।কেউ ওদের কাজকে সাপোর্ট করছে কেউ কেউ আবার বিরোধিতা করছে।”
“বুঝতে পেরেছি।ওর পরিবারকে নিরাপত্তা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে?”
“হ্যাঁ,হয়েছে।চিন্তা করিস না।”
“হুমম।”
আয়ুশ চলে গেলে আসমানী নাহিদের মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়।এই মানুষটিকে ছেড়ে তাকে থাকতে হবে এটা কোনোভাবেই যেন মেনে নিতে পারছে না সে।নিজের ভাগ্যের জন্য কাকে দোষারোপ করবে সে?
★★★
নাতাশা নাহিদকে জড়িয়ে ধরে কান্না করছে।নাবিল বারবার চোখের পানি মুছছে।আসমানী রুমের এক কোণে দাঁড়িয়ে আছে মাথা নিচু করে।নাবিল আসমানীর দিকে তাকিয়ে কাচুমাচু করে বলে,”ওকে না নিয়ে এসে পারলাম না ভাবী।ওকে বলতেই ও বায়না করছিল আসার জন্য।”
আসমানী কিছুই বলে না।
নাতাশা হাউমাউ করে কাঁদছে।আসমানীর দিকে তীর্যক দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলে,”আমার ভাই তোমার কি ক্ষতি করেছিল হ্যাঁ?কি করিনি তোমার জন্য আমরা?তোমাকে ভালোভাবে মেনে নিয়েছিলাম আমরা।আমার মা,বাবা তোমাকে কত ভালোবাসে,ভরসা করে।তুমি কিভাবে পারলে আমার ভাইকে গুলি করতে?তোমার হাত কাঁপলো না?সে তো তোমার স্বামী হয়।তাকে না তুমি ভালোবাসো।নাকি সবটাই তোমার নাটক?নাটক করেই তো আমাদের সংসারে ঢুকেছিলে।আমরা তো সুখীই ছিলাম।ঐ টিনের ঘরেই আমরা সুখে ছিলাম।শান্তিতে ছিলাম।কেন এসেছিলে তুমি আমাদের বাড়িতে?”
আসমানী ঠায় দাঁড়িয়ে থাকে।এখন নাতাশার কোনো কিছু বোঝার চেষ্টা করারও শক্তি নেই সেটা আসমানী ভালো করেই জানে।
নাতাশা কান্না করতে করতে বলে,”আমার ভাইটাকে কেমন করে মারলে তুমি?কত রক্ত বের হয়েছে যে এতো ব্যান্ডেজ করে দিয়েছে?”
নাতাশা শুধু বিলাপ করতেই থাকে।নাবিল নিজেকে সামলে নিয়ে বলে,”ভাইয়ার কত বছরের জেল হতে পারে?”
“জানিনা।সেটা আদালতের কাজ।কোর্টে তোলার পরই সেটা জানা যাবে।”
“সর্বনিম্ন কত হতে পারে?”
“তোমার ভাইয়ের উদ্দেশ্য হয়তো ভালো ছিল।সেই সুবাদে হয়তো শাস্তি কিছুটা কমও হতে পারে।তবে,১২ বছর তো অবশ্যই।”
নাবিলের হঠাৎ কেমন হাঁসফাঁস লাগে।এতো বছর ভাইকে ছেড়ে সে কিভাবে থাকবে?জীবন কি তবে এই রকম বিচ্ছিরি ভাবেই কেটে যাবে?”
★★★
পাশাপাশি দুটো চেয়ারে বসে আছে নাহিদ আর আরিয়ান।আরিয়ানকে বেঁধে রাখা হয়েছে।কিন্তু নাহিদ শান্তশিষ্ট ভাবে সামনে বসে থাকা আসমানীর দিকে তাকিয়ে আছে।আরিয়ান বড্ড বেশি চিৎকার চেঁচামেচি করছে।
আয়ুশ রেগে আরিয়ানকে সজোরে থাপ্পড় মারে।আসমানীর অস্বস্তি লাগছে নাহিদের এইভাবে তাকিয়ে থাকায়।
নীরবতা ভেঙে নাহিদ জিজ্ঞেস করে,”আসমানী,আমার ভালোবাসা।তুমি আমাকে গুলি করেছো তাতে আমার কোনো দুঃখ নেই।তবে,শুধু শুধু আমায় কেন এতো বড় অপবাদ দিলে?আমি তো তোমার বাবা মাকে চিনিও না।তাদের জীবনে দেখিও নি।তাদের আমি মারবো কিভাবে?”
আসমানী তাচ্ছিল্যের হাসি হেসে বলে,”চিনো না তুমি আমার বাবা মা কে?দেখোও নি?অথচ তুমি পরোক্ষভাবে তাদের মৃত্যুর জন্য দায়ী।তুমি দায়ী।তুমিই তাদের খুনী।”
নাহিদ বেশ শান্তস্বরে জিজ্ঞেস করে,”কিভাবে আমি তাদের খুনী হলাম? তুমি তো বলেছিলে তোমার মা আর ভাই বোন অসুখে মারা গেছে।আর তোমার বাবা ব্রেইন স্ট্রোক করে মারা গেছে।”
“জানতে চাও তুমি কিভাবে আমার পরিবার মারা গেল?”
“হ্যাঁ,বলো আমাকে।”
“আমার মা আর ভাই বোন হাসপাতালে ভর্তি ছিল।তাদের তিনজনের অবস্থা অনেক বেশি খারাপ ছিল।এতোটাই খারাপ ছিল যে ওদের ICU তে রাখতে হয়েছিল।কিন্তু আমরা আহামরি তেমন ধনী মানুষ ছিলাম না।তার উপর করোনায় আমার বাবার ব্যবসায় অনেক ক্ষতি হয়েছিল।তবুও আমরা স্বচ্ছল ভাবে ছিলাম।কারণ আমাদের নিজেদের ফ্ল্যাট ছিল দুইটা।একটাতে আমরা থাকতাম আরেকটা ভাড়া দিতাম।আমাদের এলাকায় পৈতৃক সম্পত্তিও ছিল।সেখান থেকেও টাকা আসতো যথেষ্ট।আমার মা আর ভাই-বোন অসুস্থ হয়ে যাওয়ায় আমার বাবা তার সারাজীবনের সমস্ত সঞ্চয় তুলে আনতে গিয়েছিল ব্যাংক থেকে।কিন্তু টাকা নিয়ে আর ফিরে আসতে পারেনি।তোমাদের দলের কে বা কারা আমার বাবাকে ধনকুবের মনে করে রাতের অন্ধকারে তার সমস্ত টাকা নিয়ে গিয়েছিল।আমার বাবা কাঁদতে কাঁদতে ডাক্তারদের হাতে পায়ে ধরেছিল যাতে ওদের ICU থেকে বের না করে।বড় চাচা জমি বিক্রির জন্য সেই রাতেই রওনা দিয়েছিল।কিন্তু ডাক্তাররা টাকার জন্য আমার মা আর ভাই-বোন কে নরমাল ওয়ার্ডে বের করে দিয়েছিল।টাকার ব্যবস্থা হয়ে গেলেও আর ঐ হাসপাতালের ICU তে জায়গা পায়নি।কারণ ততোক্ষণে আরও অনেকে অসুস্থ হয়ে ICU তে ভর্তি হয়েছিল।আমি আর বাবা অন্য হাসপাতালের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলাম।কিন্তু গাড়িতেই আমার ছোট্ট বোনটা আমার চোখের সামনে তড়পাতে তড়পাতে মারা গেছে।আমার মা হাসপাতালে নেওয়ার পর ICU তে এডমিট করারও সময় দেয়নি আমাদের।সে আমাদের উপর অভিমান করে চলে গেছে।আর আমার ছোট্ট চঞ্চল ভাইটা ICU তে থাকাবস্থায় শান্তভাবে চলে গেছে।আমার বাবা এতো শোক সহ্য করতে পারেনি।দুই মাসের মাথায়ই স্ট্রোক করে চলে গেছে।আমার পুরো পরিবার আমার চোখের সামনে একে একে চলে গেছে।আমি অনাথ হয়ে গেছি।আমার পরিবারের মৃত্যুর জন্য আমি কাকে দায়ী করবো বলো?আমার ভাগ্যকেই কি শুধু দোষারোপ করবো?না জেনে না বুঝে আমার পরিবারকে শেষ করে দিয়েছো তুমি।না জানি আরও কত পরিবারের এই অবস্থা করে দিয়েছো তুমি।তুমিই তো লিডার।তুমিই সবকিছুর জন্য দায়ী।আমি তোমাকে দায়ী করবো না তো কাকে করবো?নেহাৎ তোমাকে ভালোবাসি। না হলে তোমার বুকে গুলি করতেও আমার হাত কাঁপতো না এক ফুঁটাও।”
চলবে…..