#এই_অবেলায়_তুমি
#পর্ব_২২
লেখিকা #Sabihatul_Sabha
“চল ফুচকা খেতে যাবি…?”
ইরিন নূরের দিকে তাকিয়ে বললো,’হ্যা যাওয়া যায়।’
নূরঃ চল।
ইরিন আর নূর কলেজের সামনে ফুচকা খাচ্ছে।
নূরঃ মামা আরেক প্লেট দেন ঝাল দিবেন বেশি করে।
ইরিনঃ এতো ঝাল কিভাবে খাস তুই..?
‘হেই কেমন আছো..?’
ইরিনঃ আসসালামু আলাইকুম মা…তুক্কো ভাইয়া।
ইরিনের দিকে তাকিয়ে মিষ্টি একটা হাসি দিয়ে শুভ সালামের উওর দিয়ে নূরের দিকে তাকালো।
আহ্ হাসি তো নয় যেনো তীর ছোড়লো ইরিনের বুকে সে আবারো ক্রাশ খেলে শুভর উপর,হাসির উপর প্রেমে পড়লো।
নূর শুভকে দেখেই খাওয়া বন্ধ করে রাগা ফুঁসছে।
শুভঃ নূর তুমি ঠিক আছো..?
নূরঃ ইরিন চল…
শুভ অবাক হয়ে গেলো নূরের এমন ব্যাবহারে।
নূর ফুচকার প্লেট টা রাখবে এমন সময় শুভ গিয়ে নূরের সামনে দাঁড়ালো কিছু বলার জন্য মুখ খুলবে এর আগেই নূর একটা ঝাল ফুচকা শুভর মুখে ঢুকিয়ে দিলো।
শুভ বোকার মতো তাকিয়ে আছে।
নূর শুভর দিকে তাকিয়ে দাঁতে দাঁত চেপে বলে উঠলো, ‘ যখন তখন আমাকে বিরক্ত করতে আসবেন না। আপনার চেলা গুলোকে সাবধান করে দিবেন যেনো আমার আশেপাশে ঘুরঘুর না করে।যেখানে সেখানে ভাবি না ডাকে।আপনার জন্য আমি ক্লাসে ও শান্তি পাচ্ছি না। যে যেভাবে পারছে বলে যাচ্ছে। যেই শুভ ভাই কোনো মেয়ের দিকে তাকায় না তাকে কি দেখিয়ে পাগল করেছি।আপনার জন্য না জানি দুই দিন পর আরো কি কি শুনতে হয়। তাই প্লিজ আমাদের থেকে দশ হাত দূরে থাকবেন!!…
শুভ চুপচাপ এতক্ষন নূরের কথাগুলো শুনলো ঝাল থেকেও বেশি জ্বালা করছে বুকে।কার এত বড় সাহস নূরকে এই সব বলে তাকে এই কলেজ থেকে বের করে দিবে।
নূর আর ইরিন চলে গেলো। শুভ এখনো তাকিয়ে আছে নূরের যাওয়ার দিকে। পরক্ষনে কাকে যেনো কল দিলো।
শুভঃ আমি দশ মিনিটের মধ্যে জানতে চাই,১০২নং ক্লাস রুমে আজ কি হয়ে ছিলো!…
——
ইরিনঃ নূর শুনলাম সামনে নাকি একটা মেলা বসেছে চল যাই।
নূরঃ না যাবো না। তুই যা।
ইরিনঃ চল না কলিজা প্লিজ প্লিজ প্লিজ।
নূরঃ আচ্ছা চল।
মেলায় চুড়ি দেখছিলো নূর। মেলাটা অনেক বড়। ঘুরে ঘুরে দেখছে ইরিন। আর নূর একটা দোকানে চুড়ি হাতে নিয়ে পড়ে দেখছে ওকে কেমন লাগবে।
হঠাৎ পিছন থেকে একটা কন্ঠস্বর কানে বেজে উঠলো,’ কালো চুড়ি কেনো..? নীল চুড়ি নাও। নীল চুড়ি তোমাকে সুন্দর মানাবে।
নূর পিছন ফিরে তাকিয়ে মনে হচ্ছে এক হাজার ভোল্টেজের শক খেয়েছে। উনি এই মেলায় কি করছে..?
নূরঃ রুদ্র ভাইয়া আপনি?
রুদ্রঃ দেখতেই তো পাচ্ছো। জিজ্ঞেস করার কি আছে…
নূরঃ আপনি এখানে কি করছেন..?
রুদ্রঃ তুমি কি করতে এসেছো..?
নূরঃ আমি তো মেলা দেখার জন্য এসেছি…
রুদ্রঃ আমি ও মেলা দেখার জন্য এসেছি।
নূরঃ আপনি তো এখন হসপিটাল থাকার কথা। মেলা দেখার জন্য নিজের ডিউটি ফেলে চলে এসেছেন.!
রুদ্রঃ এত অবাক হওয়ার কি আছে। তুমি কলেজ যাওয়ার নাম করে মেলায় মেলায় ঘুরে বেড়াও। আজকে বাসায় গিয়ে চাচ্চু কে বলতে হবে।
নূরঃ একদম না রুদ্র ভাইয়া। আমি তো শুধু আজ কেই এসেছি। আর কখনো আসিনি।
রুদ্রঃ একাই এসেছো..?
নূরঃ না ইরিন ও এসেছে।
রুদ্রঃ ওওহ তোমার বান্ধবী..?
নূরঃ জ্বি… আপনি কার সাথে এসেছেন..?
রুদ্রঃ কেনো আমাকে দেখে কি তোমার ছোটো বাচ্চা মনে হয়। যে কারো সাথে আসতে হবে।
নূর আর কিছু না বলে চুড়ি দেখা শুরু করলো।
কিছুক্ষন পর রুদ্রের দিকে তাকিয়ে দেখে রুদ্র মুখ কালো করে এদিকে ওদিকে তাকাচ্ছে।
নূরঃ সত্যি করে বলুন তো আপনি এখানে কার সাথে এসেছেন..? গার্লফ্রেন্ড এর সাথে তাই না..?
রুদ্র অবাক হয়ে বললো,’ কেনো গার্লফ্রেন্ড ছাড়া কি আশা যায় না..? কই কোথাও তো সাইনবোর্ড দেখছি না। যে লেখা আছে গার্লফ্রেন্ড ছাড়া আসা নিষেধ।
নূরঃ একদম বেশি কথা বলবেন না ভাইয়া। শুধু শুধু কেনো মেলায় আসবেন।
রুদ্রঃ আমি তো শুধু শুধু আসিনি।
নূরঃ তাহলে..
রুদ্রঃ নীল বললো তুমি মেলায়। তাই আমিও দুই ঘন্টার জন্য চলে আসলাম।
নূরঃ আপনাকে নীল বলেছে আমি এখানে আর আপনিও চলে এসেছেন।কি আজব আপনি বললেন আর আমি বিশ্বাস করে নিলাম।কিন্তু নীল কোথায়।
দেখো তোমাকে এই কানের ঝুমকোটা বেশি সুন্দর লাগবে।
ইরিন বিরক্ত হয়ে নীলের দিকে তাকালো। এই ছেলে আসার পর থেকে এই নিয়ে মনে হয় মেলার অর্ধেক জিনিস ওকে দেখিয়ে ফেলেছে। কখনো বলছে এটা সুন্দর লাগবে আবার কখনো ওটা।যখন ও ধরতে যায় তখনি আবার বলছে না না এটা না অন্যটা দেখো।
ইরিনঃ আপনার সমস্যা কি..?
নীলঃ এভাবে বলছো কেনো কত কষ্ট করে সব কিছু তোমাকে দেখাচ্ছি। তোমার আমাকে থ্যাংক্স দেওয়া দরকার আর তুৃমি রেগে যাচ্ছো।এটা কিন্তু ঠিক না হরিণ।
ইরিনঃ আপনাকে বলেছি আমার হেল্প করতে। এখনো ভালো করে একটা চুড়িও কিনতে পারিনি। যেটা ধরি ওটাই আপনার পছন্দ হয় না। এবার মুখে টেপ মেরে চুপ করে দাড়িয়ে থাকুন। আর একটা কথাও বলবেন না।
নূর সামনে তাকিয়ে দেখে কয়েকটা মেয়ে হা করে রুদ্রের দিকে তাকিয়ে আছে। গেলো তো শান্ত মেজাজটা গরম হয়ে।
নূরঃ আপনাকে এত সুন্দর করে সেজেগুজে মেলায় আসতে কে বলেছে।.?
রুদ্রঃ আমি সেজেগুজে কখন আসলাম। আমি তো হসপিটাল থেকে এসেছি।
নূর রুদ্রের দিকে রেগে বলে উঠলো, ‘ যেখান থেকেই আসুন এখানে আসার কি দরকার ছিলো। ‘
রুদ্রঃ তুমি জানো মেলায় কতো বাজে বাজে ছেলেরা আসে। আর তুমি একটা মেয়ে বান্ধবী নিয়ে লাফাতে লাফাতে চলে আসলে।তাি আমি তোমার বডিগার্ড হয়ে চলে আসলাম।
নূরঃ আপনি জানেন না সুদর্শন পুরুষ মেলায় আসতে নেই।
নূরের কথা শুনে রুদ্র হুঁ হুঁ করে হেসে উঠলো।
নূর আর চোখে রুদ্রের দিকে তাকিয়ে আবার মেয়ে গুলোর দিকে তাকালো। এখনো হা করে তাকিয়ে আছে আর এক জন আরেক জনকে কি যেনো বলছে।
নূর মিনমিন সুরে বলে উঠলো, ‘ একদম হাসবেন না আপনি৷ এমনিতে মেয়েগুলো আপনাকে দেখে ক্রাশ খেয়েছে আর আপনার এই মুগ্ধ করা হাসিতে নিশ্চয়ই এক একটার হার্টবিট মিস হয়েছে।’
নূর রুদ্রের হাত ধরাতে রুদ্র ভূত দেখার মতো চমকে নূরের হাতের দিকে তাকালো।
নূরঃ চলেন আমি চুড়ি কিনবো।
রুদ্রঃ এখান থেকে কেনো। এই চুড়ি গুলো খুব সুন্দর।
নূর একবার চুড়ি আরেক বার মেয়েগুলোর দিকে তাকিয়ে রুদ্রের হাত ধরে হাঁটা শুরু করলো।
ইরিন চুড়ি নিয়েছে দুই ডজন। নূরের জন্য নিজের জন্য। কানের ঝুমকো নিয়েছেও দুইজোড়া। আরো অনেক কিছু নিয়েছে। নীল আর ওকে বিরক্ত করেনি ভদ্র ছেলের মতো দাঁড়িয়ে ছিলো।
পাশে থেকে ইরিনকে একটা মেয়ে বলে উঠলো, ‘ আপু তোমার বয়ফ্রেন্ডটা তো অনেক ভালো।তুমি ধমকানোর সাথে সাথে মুখে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আমার বয়ফ্রেন্ডের সাথে একটু উচ্চ সুরে কথা বললে ব্রেক*আপ।
ইরিনের বলতে ইচ্ছে হলো। আপু এই বেয়াদব ছেলে আমার বয়ফ্রেন্ড না। কিন্তু কেনো যেনো আর বলতে ইচ্ছে হলো না।
নীলের সামনে এসে বললো, ‘ আমার শেষ। আপনি কি কিছু কিনবেন..?
নীল মাথা নেড়ে বুঝালো। না সে কিছু কিনবে না।
ইরিন সামনে তাকিয়ে অবাক হয়ে বলে উঠলো, ‘ ওহহহ আল্লাহ ওই তো আমার ক্রাশ।কত খুঁজেছি কিউটের ডিব্বাটা কে।ওফ্ফ এই মেলায় পাবো ভাবতেও পারিনি। ‘
ইরিনের কথা শুনে নীলের চোখ মুখ লাল হয়ে গেলো। হাত মুষ্টি বদ্ধ করে ইরিন যে দিকে তাকিয়ে আছে নীল ও তাকালো।
নীল সামনে তাকিয়ে থমকে গেলো। লাস্টে কিনা ইরিন রুদ্রের উপর ক্রাশ খেলো। নিজের ভাইয়ের উপর।
ইরিন খুশিতে নীলের হাত ঝাপটে ধরে বলে উঠলো, ‘ দেখ দুস্ত ছেলেটা কতো কিউট, হ্যান্ডসাম ওফ্ফ আমি তো দেখেই ফিদা।এমন একটা কিউট পুলা যদি আমার বয়ফ্রেন্ড হতো না না জামাই হতো এক সপ্তাহ রুম থেকেই বের হতাম না।’
নীলের মনে হচ্ছে ও স্বপ্ন দেখছে। এই হরিণের মাথা ঠিক আছে কাকে কি বলছে। মনতো চাচ্ছে ঠাটিয়ে একটা থাপ্পড় বসাতে।
নীলঃ হরিন তুমি ঠিক আছো..
ইরিন চমকে নীলের দিকে তাকালো সে তো এই সুদর্শন যুবক কে দেখে ভুলেই গিয়ে ছিলো ওর সাথে নূর না নীল আছে। লজ্জায় মাথা নিচু করে আছে ছি! ছি! ছি নীল এখন ওকে ক্যারেক্টারলেস মেয়ে ভাববে।
নূর ইরিনের সামনে এসে বললো , ‘ কি রে তুই এভাবে নতুন বউদের মতো মাঝ মেলায় দাঁড়িয়ে লজ্জায় লাল নীল হচ্ছিস কেনো।’
নূরের কন্ঠ শুনে মাথা তুলে নূরের দিকে তাকালো। সাথে ওই সুদর্শন যুবক কে দেখেও ফিরে তাকালো না। এই যুবকের জন্য আজ ওর মাথা কাটা গেছে ভুলেও আর এই যুবকের দিকে ও তাকাবে না।
ওর কি দোষ ও যাকে দেখে তার উপর ক্রাশ খায়। ওর জীবনে ওর দেখা এমন কোনো ছেলে নেই যে ও ক্রাশ খায়নি। শুধু বুক ফুলিয়ে গর্ব করে বলতে পারবে ওর সাথের এই নীল ছেলেটির উপর ও কোনো দিন ক্রাশ খায়নি। তবে, তবে হাজার বার মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে থেকেছে এই ছেলেটির দিকে। নীল কি কখনো বুঝতে পেরেছে তার দিকেও কোনো মেয়ে এতটা মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকে। নীল যথেষ্ট সুন্দর ছেলে যে কোনো মেয়ে প্রথম দেখায় প্রেমে পরতে বাধ্য।
———
রিয়া বই সামনে বসে আছে আর খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে মাহিন কে দেখছে।
মাহিন রিয়াকে এক ধমক দিয়ে বলে উঠলো, ‘ এই মেয়ে পড়া বইয়ের দিকে আমার দিকে না। আজ যদি পড়া না পারো আমার হাতে সত্যি মার খাবে।’
রিয়াঃ আমি আপনার দিকে তাকাই নিতো স্যার আমি তো আপনার মাঝে একটা জিনিস খুজতে ছিলাম।
মাহিনঃ রিয়া বেশি কথা না বলে পড়ায় মনযোগ দাও।
রিয়াঃ শুনতে চাইবেন না স্যার। কি খুঁজছি।
মাহিনঃ আমার একদম শুনার ইচ্ছে নেই।
রিয়াঃ কিন্তু আমার তো বলতে ইচ্ছে হচ্ছে।
মাহিন বিরক্ত হয়ে রিয়ার দিকে তাকালো।
রিয়াঃ স্যার আপনার প্রেমিকার বিয়ে হয়ে গেলো তাও আপনি এতো শান্ত আছেন কিভাবে। আপনার মুখে তো দেবদাস-এর কোনো কিছুই দেখছি না। আপনি তো এতক্ষনে প্রেমিকার শুখে দেবদাস হয়ে যাওয়ার কথা।
মাহিনঃ ফালতু বকবক না করে চুপ করে থাকো। আমাদের মতো মধ্যবিত্ত ঘরের ছেলেদের প্রেমের শুখে দেবদাস হলে সংসার দেখবে কে। আর আমি কাল থেকে আর আসবো না।আমার চাকরি হয়েছে।
রিয়াঃ স্যার আপনার চাকরি হলো আর আপনি এই মাত্র বললেন। এটা কিন্তু একদম ঠিক করেননি কষ্ট পেলাম স্যার।মিষ্টি কোথায়..?
মাহিনঃ খুব জলদি বিয়ে করছি একসাথে না হয় বিয়ের মিষ্টি ও খাওয়াবো।
মাহিনের মুখে বিয়ের কতা শুনে হাসি হাসি মুখটা চুপসে গেলো। চোখে জল চিকচিক করে উঠলো। খুব যত্ন করে চোখের পানি আড়াল করে নিলো রিয়া। না আর কিছুতেই এই মানুষটার সামনে সে দুর্বল হবে না। অনেক বেহায়া পনা করেছে আর করবে না।
আজ থেকে তিন মাস আগে প্রপোজ করে ছিলো তখনি মাহিন ওকে বলে দিয়েছে ও অন্য কাউকে খুব ভালোবাসে। তারপর অনেক কষ্টে জানতে পেরেছে মেয়েটির নাম আদিবা কিন্তু সে কি জানতো সেই আদিবা ওর ভাবি হয়ে যাবে। স্যার তার মনের কথা তার প্রেয়সীকে বলার আগেই ছ্যাঁখা খেয়ে যাবে।
———
রাতে মাথা ধরে আছে তাই নূর গেলো কফি বানাতে। কফি বানাতে গিয়ে হাত পুড়িয়ে ফেলেছে অনেকক্ষানি জায়গা ফুসকা পড়ে গেছে। নূর এবার ভ্যা ভ্যা করে কান্না করে দিলো।
রুদ্র ড্রয়িং রুমে বসে ছিলো নূরের কান্নার আওয়াজ শুনে তারাতাড়ি রান্না ঘরে উঁকি দিলো। নূর হাত বারবার ঝারা দিচ্ছে চোখ দিয়ে পানি পরছে।
রুদ্র অস্থির হয়ে এসে নূরের হাত ধরে বললো,’ তোমার হাত পুড়ল কিভাবে..?’
নূর কান্না বন্ধ করে রুদ্রের দিকে তাকালো। রুদ্র কে দেখে মনে হচ্ছে হাতটা নূরের না রুদ্রের পুড়েছে।
নূরঃ কফি বানাতে এসে ছিলাম। পাতিলে হাত লেগে পুড়ে গেছে বলে আবার কান্না শুরু করলো।
আনিতা বেগম মেয়ের কান্নার আওয়াজ শুনে তারাতাড়ি এসে দেখেন মেয়ে হাত পুড়িয়ে দাঁড়িয়ে কান্না করছে৷
রুদ্র নূরকে ড্রয়িং রুমে আসতে বলে নিজের রুমে গেলো।
একটু পর একটা মলম এনে যত্ন করে হাতে লাগিয়ে দিলো।
নূর হাতের ব্যথা ভুলে রুদ্রের দিকে মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে রিলো। আচ্ছা ও কি আবার কারো মায়ায় জরাচ্ছে।
ইতিমধ্যে বাসার সবাই এসে ঘিরে ধরলো নূরকে। মাহিতো নূরকে জড়িয়ে ধরে আছে। একটা মাত্র আদরের ছোট বোন তার। হাত অনেকটাই পুড়ে ফুসকা পড়ে গেছে।
রুহি মনে মনে খুশি হলেও মুখটা কালো করে দাঁড়িয়ে আছে, ‘ইইসস নূর কষ্ট হচ্ছে…? ‘
চলবে….
#এই_অবেলায়_তুমি
#পর্ব_২৩
লেখিকা #Sabihatul_Sabha
কারো গরম নিশ্বাস, আলতো স্পর্শ অনুভব হতেই ঘুম ভেঙে যায় আবিরের। ঘুম ভাঙতেই চোখ খুলে দেখতে পায়। আদিবা ওকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরে আছে। আদিবার মুখটা আবিরের মুখের সামনে তাই ওর গরম নিশ্বাস আবিরের মুখের উপর পরছে।আবির কিছু সময় আদিবার মুখের দিকে তাকিয়ে রইলো। কাঁচের জানালা ভেদ করে চাঁদের আলো আদিবার মুখে এসে পরছে।এতে আদিবার মুখটা আরো আকর্ষণীয় হয়ে উঠছে।
আবির খুব যত্ন করে আদিবাকে নিজের সাথে মিশিয়ে নিলো কপালে ভালোবাসার পরশ একে দিলো।
নূর আজকে খুব সকালে ঘুম থেকে উঠে বসে আছে। আলসেমি ভেঙে ফ্রেশ হয়ে ওযু করে এসে নামাজ পড়ে নিলো।ব্যালকনির দিকে তাকিয়ে দেখে আঁধার কেটে আলো ফোটা শুরু করেছে।নূর মাথায় ঘুমটা দিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে ছাঁদে চলে গেলো। ফুল গাছগুলোতে পানি দিয়ে পিছন ফিরে দেখে রুদ্র পকেটে এক হাত দিয়ে আছে,আরেক হাত দিয়ে মোবাইলে কি যেনো করছে।
নূর রুদ্রের দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। ভাইয়া মনে হয় আগের থেকে দিন দিন আরো বেশি সুন্দর হয়ে যাচ্ছে।
রুদ্র মোবাইল থেকে চোখ সরিয়ে নূরের দিকে তাকালো ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞেস করলো, ‘ কি দেখছো…?
নূর মাথা নাড়িয়ে বললো কিছু না।
রুদ্রঃ তাহলে এভাবে তাকিয়ে আছো কেনো..? নজর লাগবে তো।
নূর রুদ্রের কথা শুনে লজ্জা পেলেও পর মূহুর্তে হেঁসে উঠলো। তারপর রুদ্রের পাশে গিয়ে দাড়িয়ে বললো,’ এত সকালে আপনি ছাঁদে..’
রুদ্রঃ কেনো? সকালে কি ছাঁদে আসা নিষেধ।
নূরঃ আমি কিন্তু তা বলিনি। আপনাকে তো কখনো সকালে উঠতে দেখিনি তাই বললাম।
রুদ্র হেঁসে বলে উঠলো, ‘ তুমি সকালে উঠলে তো দেখবে। আচ্ছা বলো তো সকালে তোমার ফুল গাছ গুলোতে পানি দেয় কে…?
নূরঃ আমি ঠিক বলতে পারি না। তবে হয়তো মাহি আপু দেয়….
রুদ্র আর কিছুই বললো না। যে মেয়ে ইশারায় বুঝে না। তাকে একদম খাইয়ে দেওয়ার একদম ইচ্ছে নেই।
মোবাইলে কি করছেন? গার্লফ্রেন্ড এর সাথে কথা বলছেন..?
রুদ্রঃ তোমরা মেয়েরা না মোবাইল হাতে তার মানে এই যে গার্লফ্রেন্ড এর সাথে কথা বলছি।কি আজব চিন্তা ভাবনা তোমাদের। হাতটা দেখি..?
নূর পুড়ে যাওয়া হাতটা মেলে ধরলো রুদ্রের সামনে। ফুসকা পড়ে গেছে।
রুদ্রঃ এখানে যেনো কোনো কিছুর ঘষা না লাগে দেখে রেখো। এখন রুমে গিয়ে মলমটা লাগিয়ে নিও।
নূর ছাঁদ থেকে নেমে নিজের রুমে চলে আসলো।
আদিবা চা নিয়ে রুমে এসে দেখে আবির এখনো ঘুমাচ্ছে। চা রেখে আবির কে ডাক দিলো উঠার জন্য।
আদিবাঃ এই যে শুনছেন.. আর কত ঘুমাবেন এখন তো উঠেন। না হলে আজ আর অফিসে যাওয়া হবে না।
আবিরঃ কি হয়েছে? এত সকালে ডাকো কেনো বউ..?
আবিরের মুখে বউ ডাক শুনে সারা শরীর শিউরে উঠলো আদিবার। ও কি ভুল শুনলো!
আদিবা মিনমিন সুরে বলে উঠলো, ‘ নয় টা বাজে। আজ কি অফিসে যাবেন না।’
আবির আর মুর ভেঙে উঠে বসলো।
আবিরঃ কি বেপার বউ। মেয়েরা স্বামী কে নিজের কাছে কিভাবে রাখবে সারাক্ষণ এই প্লেন করে আর তুমি আমাকে তাড়ানোর প্লেন করছো।
বার বার আবিরের মুখে বউ ডাক শুনে আদিবা একদম জমে গেছে। মনে হাজার কথা আসলেও মুখে আসছে না।
আদিবা কে এমন চুপ থাকতে দেখে আবির মুখ গুমোট করে ওয়াশরুমে চলে গেলো ফ্রেশ হতে।
আবির ওয়াশরুম থেকে এসে দেখে আদিবা আগের জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে। গেলো তো শান্ত মেজাজ টা গরম হয়ে। এই মেয়ে কি পাগল এতক্ষন এক জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকার মানে কি। আবির গিয়ে খাটে বসে আদিবা কে ইশারা করলো কাছে আসার জন্য। আদিবা গুটিগুটি পায়ে আবিরের সামনে গিয়ে দাঁড়ালো। আবির আদিবার হাত ধরে টান দিয়ে নিজের কোলে বসিয়ে নিলো। চা’য়ের কাপ হাতে নিয়ে বললো,’ চা’য়ে চিনির পরিমাণ ঠিক আছে তো..?
আদিবার মনে হচ্ছে শ্বাস আটকে আসছে। আবিরের থেকে ছুটার চেষ্টা করতেই আরো শক্ত করে ধরলো আবির।
আবিরঃ একদম উঠার চেষ্টা করবে না৷ চুপচাপ বসে থাকো। এই নাও আগে খেয়ে দেখো চা’য়ে চিনি ঠিক আছে কি না…তবে বেশি খাবে না একটু।
আদিবা বুঝে পায় না প্রতি দিন কেনো প্রথম ও খেয়ে দেখতে হবে চিনি ঠিক আছে কি না।
নূর রেডি হয়ে নিচে আসলো খাবার খেয়ে কলেজ চলে যাবে।নিচে নেমে দেখে বড়রা সবাই খাবার খেয়ে যাঁর যাঁর কাজে চলে গেছে। নিচে আবির,রুদ্র, রুহি,আদি,মাহি,মিম, নীল বসে খাবার খাচ্ছে। আদিবা ভাবি,শুভ্রতা ভাবি রান্না ঘরে কাজ করছে।
নূর গিয়ে রুদ্রের পাশের চেয়ার টা খালি পেয়ে বসে পরলো। কিন্তু খেতে গিয়ে বাঁধলো আরেক সমস্যা। কাল রাতে মাহি খাইয়ে দিয়েছে। ডান হাত পুড়েছে।
নূর ঠোঁট উল্টে খাবারের দিকে তাকিয়ে আছে।
রুদ্র নূরের মুখের দিকে তাকিয়ে খাবার ওর সামনে ধরলো।
নূর রুদ্রের দিকে অবাক হয়ে তাকানোর আগে চার জোড়া চোখ হা করে তাকিয়ে আছে। নীল আর আবির নিজেদের মতো খাবার খাচ্ছে যেনো এটা কোনো অবাক হওয়ার কিছুই না।
রুদ্র সবাই কে বলে উঠলো, ” এভাবে হা করে তাকিয়ে আছো কেনো তোমরা…? হা বন্ধ করো মাছি ঢুকবে। চোখ ঘুরিয়ে নিজেদের খাবারের দিকে তাকাও।আর তুমি(নূরের দিকে তাকিয়ে) তারাতারি হা করো আমার আবার হসপিটাল যেতে হবে।
নূর তাও মুখ বন্ধ করে আছে। না!না ভুলেও মুখ খুলবে না।
রুদ্র নূরের পুড়া হাতটা যখনি ধরতে যাবে নূর ভয়ে হা করে রুদ্রের হাত থেকে খেয়ে নিলো। এতগুলো মানুষের সামনে লজ্জায় নিচের দিকে তাকিয়ে আছে আর রুদ্র নিজেও খাচ্ছে নূরকে খাইয়ে দিচ্ছে।
মাহি একটু পর পর আর চোখে রুদ্র আর নূরের দিকে তাকাচ্ছে।
রুহি মুখটা বেঁকে খাবারে মন দিলো। ডং হাত পুড়েছে তাই খাইয়ে দিতে হবে। সবি প্লেন করা রুদ্রের হাতে খাওয়ার ধান্দা। আমি তোকে খুব ভালো করে চিনি। আদি গিয়েছে এখন আবার রুদ্র কে তোর রূপে পাগল করার ধান্দায় আছিস না। তোর সব আশায় আবারও পানি ডালার জন্য আমি রেডি শুধু সঠিক সময়ের অপেক্ষা মাত্র বলে শয়তানি হাসি দিয়ে খাবারে স্বাদ নিতে ব্যস্ত হয়ে পরলো।
আদি রেগে উঠে চলে গেলো। আদিকে এভাবে উঠে যেতে দেখে আবির আর মাহি মুচকি হাসলো।
রুদ্র নূরকে খাইয়ে বললো, ‘গিয়ে গাড়িতে বসতে। ‘
রুদ্রের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে মাহির চোখ জলে টইটম্বুর হয়ে উঠলো। এ-ই লোকটা কেনো ওর এভাবে কেয়ার করে না।কেনো ওর দিকে প্রেমময় দৃষ্টিতে তাকায় না।
গাড়ি চলছে কলেজের উদ্দেশ্যে।
রুদ্র একটু পর পর নূরের দিকে তাকাচ্ছে। নূর চোখ বন্ধ করে সিটের মধ্যে হেলান দিয়ে আছে।
হঠাৎ নূর বলে উঠলো, ‘ গাড়ি চালাচ্ছেন গাড়ি চালান না। এদিক ওদিকে তাকাচ্ছে কেনো।আমার এতো তারাতারি মরার সখ নেই। এখনো নাতি-নাতনীদের মুখে দাদী ডাক শুনিনি।
নূরের কথা শুনে রুদ্র হুঁ হুঁ করে হেশে উঠলো।
আর নূর চোখ বন্ধ করেই রুদ্রের হাসির শব্দ শুনতে লাগলো। আজ কাল রুদ্রের সব কিছুই নূরের ভালো লাগে। আগের মতো বিরক্ত হয় না।
——
কলেজে এসে দেখে আজকে ইরিন আসেনি।
নূরঃ ইসস মনেই ছিলোনা আজ যে ইরিন আসবে না। বাসায় থাকতে মনে হলে একদমি আসতাম না।
দেখতে দেখতে ২টা ক্লাস করে গিয়ে ক্যান্টিনে বসলাম। হঠাৎ রুদ্র ভাইয়ার কথা মনে পরলো। ভাইয়া এখন কি করছে..? কিছু খেয়েছে তো, নাকি না খেয়ে আছে।একবার কি কল দিবো। ওফ্ফ এমন অদ্ভুত চিন্তা আমি কেনো করছি। উনার কথা এত কেনো ভাবছি।কিন্তু একটা কল দিলে তো আর কোনো সমস্যা নেই। যদি উনি বিরক্ত হয় আমার কল দেওয়াতে। এইসব ভাবতে ভাবতে মোবাইল হাতে নিয়ে মনে পড়লো৷ থুর নাম্বার এই তো নাই।
কোনো রকমে সব গুলো ক্লাস করে। কলেজ ক্যাম্পাসে দাঁড়িয়ে আছে নূর বাহিরে বৃষ্টি পরছে।বৃষ্টি নূরের খুবই পছন্দ। বৃষ্টি দেখলেই বাচ্চামু শুরু করে। বৃষ্টির প্রতিটা ফোটাতে আনন্দের অনুভূতি খুঁজে পায়। খুশিতে গদোগদো হয়ে বেরিয়ে গেলো বৃষ্টির মধ্যে। সারা রাস্তা বৃষ্টির প্রতিটা ফোটার সাথে আজকে আনন্দ ভাগাভাগি করে এসেছে৷
বাসায় আসার সাথে সাথে আনিতা বেগম চিৎকার চেচামেচি শুরু করলেন। মেয়েকে মারতে শুদ্ধ গেলেন দু’বার। শায়েলা বেগম দু’হাতে আগলে নিলেন নূরকে।
আনিতা বেগম রেগে বলে উঠলেন,’ এই মেয়ের জ্বর হলে কেউ যাবে না ওর কাছে। ডাক্তার ও আনা হবে না এই বাসায়। বৃষ্টিতে ভিজলেই ওর জ্বর হয়। তাও কেনো সারা রাস্তা বৃষ্টিতে ভিজে এসেছে। ‘
শায়েলা বেগমঃ ছোটো থাম! মেয়ে মানুষ একটু না হয়। ভিজেছে তাই বলে এতো রেগে যাওয়ার কি আছে। আর জ্বর হলে তোর ডাক্তার আনা লাগবে না আমাদের রুদ্র আছে কিসের জন্য। এখনি একটু আধটু মজা করবে বিয়ের পর তো আর করবে না।
নূর খুশিতে ওর বড় আম্মু কে জড়িয়ে ধরার সাথে সাথে হাচ্চুওও বলে হাঁচি দেওয়া শুরু করলো।
আনিতা বেগম রেগে নূরের দিকে তাকিয়ে নিজের রুমে চলে গেলেন।
শায়েলা বেগমঃ নূর তুই একদম কাজ টা ঠিক করিস নি। জানিসই তো বৃষ্টিতে জ্বর চলে আসে। তাও কেনো ভিজতে গেলি। তারাতাড়ি গিয়ে কাপড় চেঞ্জ কর যা।
নূর কাপড় চেঞ্জ করে রুমে লাইট নিবিয়ে দরজা জানালা বন্ধ করে কাঁথা মুড়ি দিয়ে শুয়ে আছে। আর একটু পর পর হাঁচি দিচ্ছে।
রাত যত বাড়ছে বাড়ির সবার চিন্তা ও বেড়ে চলছে। নূর কলেজ থেকে এসে যে দরজা বন্ধ করে কাঁথা মুড়ি দিয়ে শুয়ে আছে। এখনো উঠেনি দরজাও খুলেনি। সবাই একে একে এসে দরজা ধাক্কিয়ে গেছে। অনেক ডেকেছে কিন্তু ভেতর থেকে কোনো সারা শব্দ আসছে না।আনিতা বেগম কান্না শুরু করেছেন। মেয়েটার কি হলো? দরজা কেনো খুলছে না? কলেজ থেকে এসে কিছুই খায় নি। কেনো যে উনি মেয়েকে বকলেন।
রাত দশটায় আবির বাসায় আসে চমকে উঠলো বাসার সবার মুখে চিন্তার ছাপ স্পষ্ট। আনিতা বেগম অসুস্থ হয়ে পরেছেন। আবির গিয়ে ওর আম্মু কে জিজ্ঞেস করলো কি হয়েছে?
উনি সব খুলে বলার সাথে সাথে আবির বুঝলো নূর কেনো দরজা খুলছে না।
আবির নূরের দরজা ধাক্কা দিয়ে বুঝলো ভেতর থেকে লাগানো। তারপর রুদ্রের রুমের সামনে গেলো গিয়ে দেখে দরজায় তালা ঝুলানো।
সাথে সাথে রুদ্র কে কল দিলো বাসায় আসার জন্য।
রুদ্র বাসায় এসে শুনলো নূরের কথা। আবির বললো তোর রুমের দরজা খুল।
রুদ্রঃ আমার রুমে কি আছে?
আবিরঃ নূর যেই রুমে থাকে সেটা তো আগে আমার রুম ছিলো। ওই রুম থেকে পাইপ দিয়ে তোর রুমে আসা যায়।
রুদ্র দরজা খুলে দিলো। আবির পাইপ দিয়ে নূরের রুমে ঢুকেই আগে দরজা খুললো।
সবাই নূরের রুমে ঢুকেই দেখে নূর শুয়ে আছে। মাহি গিয়ে নূরের শরীর হাত দিতেই চমকে উঠলো। নূরের শরীর আগুনের মতো গরম হয়ে আছে।
মাহি ইশারায় রুদ্রকে বললো দেখতে।
রুদ্র নূরের কপালে হাত রেখেই বলে উঠলো এই মেয়ের এতো জ্বর উঠলো কিভাবে। সকালে ও তো ভালো ছিলো।
আনিতা বেগম আবার কান্না শুরু করলো।
মাহিঃ ভাইয়া ও বৃষ্টিতে ভিজে বাসায় এসে ছিলো।
রুদ্রের মন চাইলো নূরকে ঘুম থেকে তুলে ঠাটিয়ে একটা থাপ্পড় বসাতে। আবার মাথায় আসলো বাসার সবাই ওর রুমে তাও ও উঠছে না কেনো?
নূরকে কয়েক বার ডাক দিয়ে। তারপর পানি নিয়ে ওর চোখে মুখে ছিটা মারলো। অনেকক্ষন পর নূর অনেক কষ্টে চোখ খুললো। আবার আসতে করে চোখ বন্ধ করে বিড়বিড় করে কি যেনো বলছে।
রুদ্রঃ ছোট আম্মু ও কি কিছু খেয়েছে?
আনিতা বেগম বললেন নূর কিছুই খায় নি।
মাহি গিয়ে নূরের জন্য খাবার নিয়ে আসলো। জোর করে দুই লোকমা খাইয়ে মেডিসিন খাইয়ে দিলো।
আনিতা বেগম, মাহি বাদে সবাই নিজেদের রুমে চলে গেলো।
রাতে অনেক বুঝিয়ে আনিতা বেগম কে মাহি রুমে পাঠিয়ে দিলো।
হঠাৎ মধ্য রাতে মাহির ফোনটা বেজে উঠলো।
মাহি তাকিয়ে দেখে মোবাইলের স্কিনে ‘ফায়াজ’ নামটা জ্বলজ্বল করছে।
চলবে…
ভুলত্রুটি মার্জনীয়।