এই ভালো এই খারাপ পর্ব-০১

0
130

#এই_ভালো_এই_খারাপ
#পর্ব১
#প্রিমা_ফারনাজ_চৌধুরী

“আমার স্বামী আমাকে সহ্য করতে পারেনা। কিছু হতে না হতেই ঘাড়ধাক্কা দিয়ে বের করে দেয়। কথায় কথায় বলে, বেরিয়ে যাও। এবার তো সোজা বাড়ি থেকে বের করে দিল ঘাড়ধাক্কা দিয়ে। আজ দুই সপ্তাহ বাপের বাড়িতে পড়ে আছি। কোনো খোঁজখবর অব্দি নেয়নি। ”

বলতে না বলতেই কেঁদে ফেললো তিথি। বয়স উনিশ-বিশ হবে। এইটুকুনি একটা মেয়েকে এভাবে বাড়ি থেকে বের করে দেয়াটা ঠিক হলো? এই ধরণের পুরুষগুলো কি যে চায় তারা নিজেও জানে না।

তাসলিমা খাতুন বললেন,

” এমন কেন তোমার বর? ”

তিথি গালমুছে বলল, ” আমি গরিব ঘরের মেয়ে তাই সহ্য করতে পারে না। কেমন নাক সিটকায় সবকিছুতে। অহংকারী মানুষ। কোনোদিন আমার বাপের বাড়িতে পা রাখেনি আমরা গরিব বলে। আমার বাবাকে বলে ছোটলোক।”

তাসলিমা খাতুন বললেন,

” এসব মোটেও ভালো না। অহংকার পতনের মূল।”

তিথি বলল, ” আমি কাউকে কিচ্ছু বলিনা। আমার বাবাকেও কিছু বলিনা উনি গালাগালি করেন বলে। একবার উনি গোলামের পুত বলে ডেকেছিলেন সেই থেকে যোগাযোগও বন্ধ করে দিতে বলেছেন কিন্তু আমি যোগাযোগ বন্ধ করিনি তাই আমাকে আরেকদফা অপমান করলো।
আমি কাকে কি বলব বুঝে উঠতে পারছিনা। আমার শ্বাশুড়ি অতটা খারাপ না কিন্তু উনার ছেলের হয়ে কথা বলে প্রায়সময়। বলেন, তোমার শ্বশুর আমাকে রোজ মারতো। এত বদমেজাজি ছিল তারপরও আমি কি বাড়ি ছেড়ে চলে গেছি? সোয়ামির ঘর করতে গেলে মাটির দলার মতো নরম হয়ে থাকতে হয়। ”

তাসলিমা খাতুন বললেন, ” তোমার প্রতি তার কোনো টান নেই? তুমি বুঝতে পারো না? ”

” না। টান থাকলে আমি মারধর খেয়েও পড়ে থাকতাম ওই বাড়িতে। পড়ে থাকবোই বা কি করে আমাকে তো ঘাড়ধাক্কা দিয়ে বের করে দিল। মুখের উপর গেইট বন্ধ করে চলে গেল। দারোয়ানকে বলল গেইট খুললে ওদের মুন্ডু কেটে নেবে। আমার গর্ভে বাচ্চা এসেছে তাই আমি সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছি। আমার মামাতো বোন বললো বাচ্চা নষ্ট করে ফেলতে তাহলে ডিভোর্স হয়ে গেলেও সমস্যা নেই। আমি কি করব বলুন। যাই হয়ে যাক ওই লোকটার সাথে আর কোনোদিন বনিবনা হবে না আমার। যাদের সাথে সংসার করা যায় তাদের মতো না ওই লোকটা। এত অহংকার, দম্ভ যে মাটিতে পা পড়েনা। কথায় কথায় বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাও, কিছু খেতে না চাইলে এত আহ্লাদ আসে কোথা থেকে, এত ছোটলোকের মতো চলাফেরা কেন, এসব কথায় জর্জরিত করে আমাকে। ”

তাসলিমা খাতুন বললেন,

” তুমি আমার কাছে এসে ভালো করেছ। কিন্তু তুমি আমার কথা শোনো। বাচ্চার কথাটা জানিয়ে দাও তোমার হাসবেন্ডকে। ”

তিথি বলল, ” জানে ভালো করে। ”

তাসলিমা খাতুন অবাক হয়ে বললেন,

” জানার পরেও বের করে দিল? তোমার হাসবেন্ডের সাথে কি অন্য কারো সাথে অ্যাফেয়ার আছে? ”

” থাকলে তো ভালোই হতো। কিন্তু সবাই তো আমার মতো গর্দভ নয়। আমাকে পেয়েছে কপাল করে। ওরকম দাম্ভিক অহংকারী দামড়া গন্ডারের সাথে জেনেশুনে কেউ নিজেকে জড়াবে না। আমার বাবা কি দেখে যে এত টাকাপয়সা ধারদেনা করে বিয়ে দিল আমি জানি না। এখন কিছু বললে ফোনের ওপাশে গোলামের পুত বলে চিল্লায়। কিন্তু মেয়ে জামাইয়ের সামনে গেলে সেই নেংটি ইঁদুরের মতো পালাই পালাই করে। ”

তাসলিমা খাতুনের হাসি পেল কথাটায় কিন্তু উনি নিজের ভাবগাম্ভীর্যতা ধরে রেখে বললেন,

” তোমার গায়ের রঙ শ্যামকালো। এটা বলে কি খোঁটা দেয় তোমাকে? ”

তিথি বলল, ” মাগোমা খোঁটা দেবে কেন? আমার চেহারায় কি মায়া। তাই তো এতদিন একটু হলেও আদর সোহাগ পেয়েছি।
আর সেও অত সুন্দর কোথায়? আমার চাইতে একটু উজ্জ্বল রঙ। তাছাড়া গায়ের রঙ ফর্সা হলেই কি সুন্দর বলে তাকে? মুখটাকে সারাক্ষণ হনুমানের মতো করে রাখে। আমাকে দেখলেই নাকটাকে এমনভাবে তুলে রাখে যেন আমি তরতাজা পায়খানা। আর পায়খানার তাজা গন্ধে তার চারপাশ ভরে গেছে। ”

তাসলিমা খাতুন নড়েচড়ে বসলেন। হাসলেনও। তিথি তা দেখে বলল,

” আমার কথায় হাসি পাচ্ছে আপনার? আমি কি পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি তা আপনাকে বলতে পারছিনা। আমি পরামর্শ নিতে এসেছি। পরামর্শ দিন। আপনার ফি অনেক। বারবার আসতে পারব না। ”

তাসলিমা খাতুন বলল, ” তুমি কোনো সমাধান না পেলে ফিসটা নিয়ে যেও যেহেতু তোমার শ্বাশুড়ি আমার ছোটবেলার বন্ধু হয়। ”

তিথি বলল, ” ওসব কথা ছাড়ুন। আমি কি করব সেটা বলুন। ”

তাসলিমা খাতুন বললেন,

” আমার আরও প্রশ্ন আছে তিথি। দেখো স্বামী স্ত্রীর মধ্যেকার সম্পর্কটা খুব সহজ আবার খুবই কঠিন। তোমার কথা শুনে মনে হচ্ছে তোমার হাসবেন্ড কোনো একটা কারণে তোমাকে সহ্য করতে পারে না। তুমি কখনো তার মন যুগিয়ে চলতে চেয়েছ? ”

তিথি বলল, ” অনেকবার। রাতে কি এমনি এমনি ভালোবাসতো? ”

বলেই নিজে লজ্জা পেয়ে গেল। তাসলিমা খাতুন হেসে বললেন, ” লজ্জা পাওয়ার কিছু নেই। বলো।”

তিথি বলল, ” শ্বাশুড়ি মা বলেছেন সেজেগুজে থাকতে। তাই রাতে সাজগোজ করতাম। কিন্তু সেই গন্ডার তো সাজগোছও পছন্দ করেনা। সেবার ভিমবার এনে দিল লিপস্টিক মোছার জন্য। ভাবতে পারেন? ”

তাসলিমা খাতুন বলল, ” কি বলো? এতো রীতিমতো অত্যাচার? ”

” শুধু কি তাই? আমি ছোটলোক বলে এক টেবিলে বসে কোনোদিন খায়নি। আমার ব্যবহ্ত সাবান কখনো ইউজ করে না। আমার কাপড়চোপড় কখনো তার আলমিরায় ঠাঁই পায়নি। ”

তিথির চোখে জল টলমল করে উঠে। তাসলিমা খাতুন তাকে সান্ত্বনা দিয়ে বলল,

” কাঁদবে না তিথি। বি স্ট্রং। ”

তিথি টিস্যু দিয়ে নাকের পানি মুছে বলল,

” কাঁদবো না আর। অনেক কেঁদেছি। ”

তাসলিমা খাতুন বললেন,

” গুড। তোমার স্বামীর সাথে পরিবারের বাকি সদস্যদের সম্পর্ক কেমন? ”

” ভালো। ”

” শুধু তোমার সাথে এমন করে? ”

” হ্যা। ”

” তোমার শ্বাশুড়ি ছেলেকে একটুও বকাঝকা করে না? বোঝায় না? ”

তিথি অবাককন্ঠে বলল,

” অতবড় কলিজা কার? এমন গন্ডার যে একটা চিৎকার দিলে মনে হয় ভূমিকম্প হচ্ছে। তাছাড়া বেয়াদব মানুষের কাছ থেকে যতই দূরে থাকা যায় ততই মঙ্গল। আমার শ্বাশুড়িটা মানুষ খারাপ না। উনার বাকি ছেলেমেয়ে গুলোও অতটা খারাপ না। কিন্তু এটা গুন্ডা হয়েছে। ”

তাসলিমা খাতুন বললেন,

” এ পর্যন্ত কতবার ঘর থেকে বের করে দিয়েছে? ”

” বিয়ের পর ঘর থেকে বের করে দিয়েছে চল্লিশ পয়তাল্লিশ বারের মতো। বাড়ি থেকে এই তৃতীয় বারের মতো। আর কত অপমান সইবো বলেন। দারোয়ান আর কাজের বুয়া সবাই আমার দিকে তাকিয়ে হাসছিলো ঠোঁট টিপে। আমার গলায় দঁড়ি দিতে ইচ্ছে হয়েছিলো তখন। প্রত্যেকবার ঘর থেকে বের করে দিলে শ্বাশড়ি এসে চেঁচামেচি করলে ঘরে ঢুকাতো। মেঝেতে শুতে বলতো। অনেক রাত মেঝেতে ঘুমিয়েছি। শীতে কেঁপেছি একটুও মায়া হয়নি। আমাকে বের করে দিলে শ্বাশুড়ি বলতো, ওকে ঠেলে তুই ঘরে ঢুকে যাবি। বলবি এটা আমার ঘর। ”

” বলেছ? ”

” হ্যা বলেছি। বিনিময়ে মেঝেতে ঘুমাতে হয়েছে। আপনি না দেখলে বুঝবেন না। একটা আগাগোড়া বর্বর প্রকৃতির মানুষ সে। নেই মায়া-দয়া, টান-মহব্বত, ভালোবাসা। টনে টনে ইগো আর অহংকার, দম্ভ, রাগ আর ক্ষমতার বড়াই। আমাকে ইচ্ছে করলে কাছে টেনে নিয়েছে আবার ইচ্ছে করলে ঘর থেকে ঘাড়ধাক্কা দিয়ে বের করে দিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছে। বলেছে এটা তোমার বাড়ি নয়। যেন আমি একটা হাতের পুতুল। আমি কোথায় যাব এখন? ”

তাসলিমা খাতুন বললো, ” হতাশ হইয়ো না তিথি। তোমার কোনো বদঅভ্যেস আছে যা তোমার বর অপছন্দ করে? ”

তিথি বলল, ” সে তো অনেকককক আছে। এত কথা বলতে চাইনা। আমি ডিভোর্স চাই ব্যস। ”

তাসলিমা খাতুন বললেন, ” তাহলে বাচ্চাটা এবোরশন করিয়ে ফেলো। ”

তিথি বলল, ” গন্ডারের বাচ্চা গন্ডারই তো হবে। রেখে লাভ কি? ”

তাসলিমা খাতুন ঠোঁটের কোণায় মৃদু হাসির রেখা টেনে বলল, ” কিন্তু এবোরশন করানোর সময় তোমার হাসবেন্ডকে লাগবে। তার অনুমতি ছাড়া হবে না। ”

তিথির কপালে হাত। ” আমি ওই লোকটার সামনে আর যাব না ভাবছি। ”

তাসলিমা খাতুন বললেন, ” বাচ্চাটা তো তোমার একার না। তাই তোমার একার সিদ্ধান্তে কিছু হবে না। আর এটা অনেক সেনসেটিভ একটা ইস্যু। ”

তিথি অনুরোধ করে বলল,

” আমার সিচুয়েশনটা বোঝার চেষ্টা করুন। আমি এখন শুধু আমার কথা ভাবছি। এই বাচ্চা তো ওরা নষ্ট করতে দেবে না। আমাকে জিম্মি করার একমাত্র হাতিয়ার বাচ্চাটা। ”

তাসলিমা খাতুন খসখস করে কি যেন লিখলেন কাগজে। তিথির দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বলল,

” সন্ধ্যায় পারলে আমার বাসায় এসো। তোমাকে বেস্ট সল্যুশনটা দেব আমি। এটা এড্রেস। ”

তিথি বলল, ” আপনার বাড়িতে কেন? ”

তাসলিমা খাতুন বললেন,

” ডিভোর্স পেপারে রেডি করার জন্য তোমাদের বিষয়ে আমাকে আরও আরও স্টাডি করতে হবে আমাকে। জীবনের এতবড় একটা সিদ্ধান্ত হুট করে নিয়ে ফেলা যায় না তিথি। ”

তিথি বলল, ” ওরা আমাকে ডিভোর্স লেটার পাঠাবে। আমি চাইছি আগেভাগে পাঠিয়ে দিতে। তাহলে এই একটা জায়গায় আমি জিতবো। ওই লোকটা ভেবেছে আমি তার হাতের পুতুল। ”

তাসলিমা খাতুন বললেন, ” না না তিথি তুমি কারো হাতের পুতুল নও। তোমার কি জেদ! তুমি অবশ্যই জয়ী হবে। আচ্ছা আমাকে একটা কথা বলো তোমাকে সে কখনো চড় থাপ্পড় মেরেছে? না মানে তোমার গালের পাশে একটা দাগ দেখতে পেলাম যে। ”

তিথি লজ্জায় কুঁকড়ে গেল। বলল,

” দেখুন, সেদিন আমাকে শেভ করিয়ে দিতে বললো। আমি কি ওসব পারি নাকি? শেভ করিয়ে দিতে গিয়ে গাল কেটে দিলাম। তাই আমার গালও ছিঁড়ে দিল। ”

তাসলিমা খাতুন বলল,

” কিভাবে? ”

তিথি চোখ নামিয়ে রাখলো। উত্তর দিল না।

__________________

” আহা ঘরদোর সব আন্ধার হয়ে গেল। ফিরে আয় বউ। এত মেজাজ গরম হলে জামাইয়ের ঘর করতে পারে না মেয়েরা। ”

তিথি বলল, ” আমি সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছি আম্মা। তোমার ছেলের কাছে আর যাব না। আমি সস্তা হতে হতে একেবারে নীচে নেমে গিয়েছি। ”

আম্বিয়া বেগম রেগে গিয়ে বললেন,

” তোর মতো খানকির বেটি তো আর দেখিনি। তুই ভাবলি কি করে আমার ছেলে তোকে আনতে যাবে। থাক ওখানে। মর। ”

তিথি অবাককন্ঠে বলল, ” তোমাদের রূপ দেখা হয়ে গেছে আমার। আজলান শেখকে বলবে ওই শেখবাড়িকে আমি পা দেখিয়েছি। ”

টুপ করে ফোনটা কেটে দিল তিথি। আম্বিয়া বেগম রাগ সংবরণ করার জন্য পায়চারি করতে করতে বলল,

” দেখেছ ওই মেয়ের গলা কতবড় হয়েছে? দেখেছ তোমরা? এই বাড়িকে নাকি পা দেখিয়েছে? ”

উপস্থিত কেউ কোনো জবাব দেয়নি। আজলান এসে দরজার কাছে দাঁড়িয়ে জুতো খুলতে খুলতে বলে উঠলো,

” কে কাকে পা দেখিয়েছে মা? ”

আম্বিয়া বেগম চমকে উঠলেন ছেলের গলা শুনে। বললেন,

” কেউ না। আমরা অন্য কথা বলছিলাম। বলছিলাম কি বউটারে আনতে যাবি না? বাচ্চা পেটে নিয়ে বাপের বাড়ি আর কতদিন থাকবে? ”

আজলান বলল,

” সে বাচ্চা এবোরশন করাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দেখি কতদূর এগোয়। ”

আম্বিয়া বেগমসহ বাড়িসুদ্ধ সবাই চমকালো কথাটায়। আম্বিয়া বেগমের বড় মেয়ে বলল,

” ওর সাহস তো কম না। দেখেছ মা মেয়েটা কতবড় শয়তান? ”

আজলান বলল,

” ও শয়তান? ওর পুরো গোষ্ঠীটা শয়তান। ”

আম্বিয়া বেগমের বুকটা কাঁপছে। তার বংশধরটা এভাবে চলে যাবে? না না এ হতে পারে না। তিনি বললেন,

” বউটার কথা ছাড়। বাচ্চাটার কথা ভেবে বউটাকে নিয়ে আয় বাবা। ”

আজলান মায়ের দিকে ফিরে চাইলো। আম্বিয়া বেগম আর কিছু বলার সাহস পেলেন না। রান্নাঘরে গিয়ে তিথিকে ফোন দেয়ামাত্রই তিথি ফোন তুললো। বলল,

” আবার কি? ”

” তোর পায়ে পড়ি বাচ্চাটা নষ্ট করিস না। ”

তিথি বলল, ” তোমাকে কে বললো কথাটা? ”

” আজলান বলেছে। তুই ওর হাতে মরতে চাস? ”

তিথি বলল, ” তোমার ছেলেকে এখানে পাঠাও। কে মরবে সেটা তখন দেখা যাবে। ”

আজলানের গলা শোনা গেল।

” মা গরম পানিটা দাও। ”

তিথি তার গলা শুনে ফোন কেটে দিল। গলার আওয়াজটা শুনলেই ঘৃণায় তার গা রিরি করে উঠে।

চলমান….