এক ফালি প্রণয় পর্ব-৩৫ এবং শেষ পর্ব

0
6

#এক_ফালি_প্রণয়|৩৫|
#শার্লিন_হাসান

দেখতে,দেখতে পূর্ণর বিয়ের দিন ঘনিয়ে আসে। চৌধুরী পরিবারের সবাই শিকদার বাড়ীতে এসেছে।
সিনথি তূর্ণর সম্পর্ক আগের থেকে অনেকটা উন্নত। যেটা দেখে পূর্ণর ভালো লাগা কাজ করে। সবকিছুর জন্য নিজেকে দায়ী মনে হয়। শরীফ শিকদার আজকাল বেশ চুপচাপ। দুইদিন আগেও তাকে থানায় যেতে হয়েছে। তীর্থ খানের কেসটা আবারও সামনে আসছে। এমনকি তার নিজ ভাইয়ের মৃত্যুটাকে এখন খু’ন বলে কেস ফাইল করা হয়।

শরীফ শিকদার বুঝেছে সবটা পূর্ণ করেছে। এখন চাইলেও কিছু করতে পারবে না।

বিয়ের দিন আলতাফ পারভেজ চৌধুরী উপস্থিত হয়। তাকে সুন্দর ভাবেই বরণ করে নেওয়া হয়।
এসেই তিনি তার একমাত্র পূত্র বঁধু তাহসিনার খোঁজ করেন। সিনথি রোদকে ডেকে পাঠায়। রোদ মাথায় গোমটা টেনে আলতাফ পারভেজ চৌধুরীর কাছে আসে। আদ্রিশ সোফায় বসে দেখছে তার বাবার কান্ড। রোদকে দেখে আলতাফ পারভেজ চৌধুরী বলেন, “তাহসিনা মা কেমন আছো?”

“আলহামদুলিল্লাহ ভালো আপনি?”

“আলহামদুলিল্লাহ।”
রোদ আর কথা বাড়ায়না। আদ্রিশ তার বাবার চেহারার দিকে তাকিয়ে আছে। কেমন চোরের মনে পুলিশ, পুলিশ ভাব। শরীফ শিকদারের সাথে ভালোই আই কন্ট্রাক্ট হচ্ছে তার।
আদ্রিশ মনে,মনে আওড়ায়, “বিয়েটা গেলেই দু’জনকে জেলে ঢুকতে হবে।”

অরিনকে লাল শাড়ীতে লাল বউ সাজানো হয়েছে। আর কিছুক্ষণ তারপর নিজেকে তাহিয়ান শিকদার পূর্ণর নামে লিখে দিবে।

শিকদার পরিবার আসতে তাঁদেরকে বরণ করে নেওয়া হয়। কিছুক্ষণ পর বিয়ে পড়ানো হবে। পূর্ণ সোফায় বসে আছে। তার কিছু সামনে সিনথি,রোদ এবং তিশা বসে আছে। পূর্ণ রোদের দিকে তাকিয়ে মেকি হাসে। নিজেকে ছোট লাগে রোদের সামনে। মনে,মনে আওড়ায়,
“এই রোদ মেয়েটা তাকে একজন এক আকাশ ভালোবেসে পায়নি। শুধু আমার জন্য!”

ভাবনার মাঝে হুজুর আসতে বিয়ে পড়ানো শুরু হয়। তিনবার ‘কবুল’ বলার মধ্য দিয়ে একটা পবিত্র বন্ধনে আবদ্ধ হয়।
তূর্ণ সিনথি পাশাপাশি দাঁড়িয়ে বিয়ে দেখছে। তূর্ণ সিনথির দিকে একবার তাকায়। আজকে তার বউ হালকা রঙের শাড়ীতে সেজেছে।

“তিনটা মানুষের জীবনে ভিন্ন তিনটি গল্প হলো। অথচ তিনজনের মাঝে যেকোন দু’জনের কথা ছিলো এক হওয়ার কিন্তু তিনজনই ভিন্ন তিনজনের গল্পের ‘তুমি’ হলো।”

ভেবে হাসে তূর্ণ। বিয়ের কাজ শেষ সবাই মিলে খেতে বসে। কিছু পিকচার ক্যাপচার করে নেয়। একসময় অবসরে তিনটা ভিন্ন গল্পের পিকচার দেখবে সবাই। কেউ ভালোবাসার মানুষকে পেয়েছে কেউ বা পায়নি।

বিকেলেট দিকে আদ্রিশ,রোদ চলে যায় চৌধুরী বাড়ীতে। দুইদিন পর বৌভাত তখন আবার আসবে।
বাড়িতে এসে চেঞ্জ করে সন্ধ্যায় গার্ডেনে বসে আদ্রিশ এবং রোদ। চারপাশে লাইট জ্বলছে মাঝে বেতের চেয়ার টেবিল রাখা। আশেপাশে থেকে মৃদু বাতাস আসছে। আদ্রিশ রোদের দিকে তাকিয়ে বলে, “তাহসিনা শোন?”

“বলো?”

“আমার বাবা যা করেছে খারাপ করেছে,বা’জে করেছে। তার জন্য সে শাস্তি পাবে। তবে আমার তোমার সাথে কথা বলতে,হাতে হাত রাখতে অস্বস্তি অনুভব হয়।”

“কেন?”

“কারণ আমার বাবা একজন খু’নি। তাও তোমার বাবা মায়ের খু’নি। আমি একজন খু’নির সন্তান। বুঝো তো?”

রোদ আদ্রিশের কথায় হাসে। রোদকে হাসতে দেখে আদ্রিশ বেশ অবাক হয়। আদ্রিশের ফেসের রিয়েকশন দেখে রোদ উঠে দাঁড়ায়। সোজা আদ্রিশের কোলে বসে তার গলা জড়িয়ে ধরে গালে চু’মু খায়। কাঁধে মাথা রেখে বলে, “শোন, আলতাফ পারভেজ চৌধুরী যা করেছে তার জন্য শাস্তি পাবে। তুমি আমার হাজবেন্ড এসব ভেবো না তাহসিনা বদলে যায়নি আর না বদলাবে।”

“এই তাহসিনাকে আমি ভালোবাসি।”

“ভালোবাসি।”

★★★

ফুল সজ্জিত রুমে বসে আছে অরিন। কিছুক্ষণ পর পূর্ণ আসে রুমে। খাটের মাঝ বরাবর বসে থাকা নববধূর কাছে যায় সে। দোপাট্টা সরিয়ে তাকে একনজর দেখে। অরিন বেশীক্ষণ মাথা নিচু করে থাকেনি। পূর্ণকে তাকিয়ো থাকতে দেখে তার পান্জাবির কলার ধরে তার দিকে টেনে সোজা অধরে অধর মিলিয়ে দেয়। অরিনের কাজে পূর্ণ হতভম্ব হয়ে যায়। নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে অরিনকে বলে, “ভারী নির্লজ্জ মেয়ে তুমি। আগে জানতাম ছটফট করো এখন দেখি অধৈর্য তুমি।”

“চুপ থাকুন আজকে আপনায় একটু বেশী সুন লাগছিলো তো তাই সুযোগ খুজছিলাম চুমু দেওয়ার। পাইনি এখন পেয়েছি দিয়ে দিয়েছি।”

“ভালো করেছ।”

অরিন মুখ বাকায় পূর্ণকে। অরিন পূর্ণর দিকে একনজর তাকিয়ে হাসে। অরিনকে এভাবে হাসতে দেখে পূর্ণ শুধায়, “হাসো কেন?”

“না মানে! মেয়র সাহেব সত্যি আমার।”

“হ্যাঁ সত্যি তোমার।”

“মনে আছে প্রথম দিনের কথা?”

“তুমি বলো?”

“আপনি আমাদের এলাকায় গিয়েছিলেন। আমি কলেজ থেকে ফেরার পথে শুনছিলাম আপনার নাম। এর আগে আপনায় চিনতাম না। ভীড় ঠেলে দেখেছিলাম আপনায়। ভালো লেগেছিলো শ্যামপুরুষকে। বাড়ীতে গিয়ে আইডি খুঁজি দ্যান পেয়ে যাই সহজেই। তবে আপনাকে ইমপ্রেস করতে অনেক কাঠখোট্টা পোহাতে হয়েছে। যাক ইমপ্রেস হলেন কেমনে,কেমনে জানি।”

“আমার প্রেম করার বয়স ছিলো না তখন বুঝলে? তাও তুমি মেয়ে কীভাবে জেনো আমার হৃদয় কেড়ে নিয়েছ।”

“বলুন?”

“তোমার কথাবার্তা আমার ভালো লাগতো। সময় দিতে না পারলেও চাইতাম তুমি আমার সাথে বকবক করো। কী জানি আমি জানতাম না ভালোবাসা কী। তবে বুঝেছি মায়া নামক জিনিসটা থেকে ভালবাসার উৎপত্তি। এই মায়ায় আটকে যাওয়ার নামই বোধহয় ভালোবাসা।”

পূর্ণর কথা গুলো অরিন নিরব হয়ে শ্রবণ করে। উঠে দোপাট্টা রেখে অযু করে দুজন নামাজ আদায় করে নেয়। অরিন পূর্ণকে টেনে আয়নার সামনে দাঁড় করায়। দু’জন দুজনের দিকে তাকায়। পূর্ণ আস্তে করে বলে, “মেইড ফর ইচ অ্যাদার!”

অরিনের কোমড় জড়িয়ে নিজের সাথে মিশিয়ে শুধায়, “এই মেয়েটা আমার বউ।”

“কোন সন্দেহ?”

“একদম না।”

পূর্ণ অরিনের কপালে নিজের অধরেট বিচরণ ঘটায়।

★★★

রাতের টুকটাক কাজ সামলে সিনথি রুমে আসে। তূর্ণ ফোন স্ক্রোল করছে। সিনথিকে দেখে তূর্ণ কপাট রাগ দেখিয়ে বলে, “এতো লেট করে রুমে আসো কেন? বাইরেই থেকে যেতে।”

“কাজ ছিলো।”

“কিসের এতো কাজ? বাড়ীতে কাজের বুয়া থাকতে,এতো মানুষ থাকতে তোমার এতো কিসের কাজ?”

“বড় বউ আমি। কাজ না থাকলেও টুকটাক থাকে যা করাটা আমার দায়িত্ব।”

“ঠিক আছে যাও দায়িত্ব পালন করো।”

“আপনি রেগে আছেন?”

তূর্ণ জবাব দেয়না। সিনথি দরজাটা লাগিয়ে দিয়ে তূর্ণর পাশে গিয়ে বসে। কানের কাছে মুখ নিয়ে বলে, “আপনি রেগে আছেন আর আমি বুঝেছি আপনার ভালোবাসা চাই।”

(আপাতত এখানে তবে তাদের নিয়ে একটা বোনাস পার্ট দেবো।)

★★★

দেখতে,দেখতে কেটে যায় তিনটে বছর। আলতাফ পারভেজ চৌধুরী এবং শরীফ শিকদার জেলে আছেন। তাঁদের শাস্তি হিসাবে যাবত জীবন কারাদন্ড।
চৌধুরী বাড়ীতে ছোট একটা বাচ্চার হাসির শব্দের ধ্বনি শোনা যাচ্ছে। রোদ তার মেয়ে রোদশীর পেছনে দৌড়াচ্ছে খিচুরির বাটি হাতে। পুরো নাম রোদশী চৌধুরী তুবা। মা’কে দৌড়াতে দেখে মেয়ে জেনো বেশ আনন্দ পাচ্ছে। পুরো লিভিং রুম জুড়ে তাঁদের এই দৌড়াদৌড়ি। ফারিহা চৌধুরী কিচেন থেকে বেড়িয়ে আসতে রোদশী তার সামনেই পড়ে। নাতনিকে জাপ্টে ধরে ফারিহা বলেন, “তুবা ছোট বেলার আদ্রিশের থেকেও বেশী দুষ্টু হয়ে গেছে। মা’কে কেউ এভাবে জ্বালায়?”

“মাম্মা আমার সাতে খেলছে দাদীন।”

মেয়ের কথা শোনে রোদ স্থির হয়ে বসে। মাথায় আদ্রিশ কে এনে কয়েকটা গা’লি দেয়। এই মেয়েকে নিয়ে আর ভাল্লাগেনা তার। অফিস সামলানো সাথো এই দুই বছরের মেয়ে বেশ পাকনা। তার নতুন,নতুন প্রশ্নের জবাব দাও তাকে সময় দাও। খিচুড়ির বাটি রেখে মেয়েকে কোলে নেয় রোদ। চুপচাপ রুমে এনে খাটে বসিয়ে দেয়।

“গুড গার্ল চুপ করে বোসো। তোমার বাবাকে কল দিচ্ছি।”

কথাটা বলে রোদ আদ্রিশকে ভিডিও কল দেয়।
মিটিং শেষ করে রুম থেকে বের হয়েছে আদ্রিশ। বউয়ের কল পেতে রিসিভ করে। রোদশীর কাছে ফোন দিতে চিল্লিয়ে বলে, “বাবা তুমি তাড়াতাড়ি আসো। আমরা খেলবো।”

“তুবা মামনি বাবা আসছি। একটু অপেক্ষা করো।”

আদ্রিশের থেকে জবাব পেয়ে রোদশী খুশি হয়ে মায়ের দিকে তাকায়। এখন তার বাবার ফেরার অপেক্ষা করছে। রোদ আদ্রিশ আর রোদশীকে দেখছে। তার ভালোবাসা,সুখ এই দু’জন মানুষ। অতীত ভাবতে হাসে রোদ। না চাইতেই দীর্ঘ শ্বাস বেড়িয়ে আসে।

অফিস থেকে বেড়িয়ে সোজা একটা মলে যায় আদ্রিশ। সেখান থেকে কিছু কিনে সোজা হসপিটালে আসে আদ্রিশ। পূর্ণর বেবিকে দেখার জন্য।

আদ্রিশ যেতে পূর্ণর সাথে কুশল বিনিময় করে। পূর্ণর মেয়েকে কোলে নিয়ে কপালে চুমু খায়। পূর্ণর কোলে ছোট্ট মেয়েকে দিয়ে আদ্রিশ শুধায়, “ওর নাম?”

পূর্ণ অধরে হাসি টেনে বলে, ” আহিয়া আদনান তোফা।”

জবাবে আদ্রিশ বলে, “তুবার বোন তোফা। বাহ্ বেশ মিল তো! পরের বার তূর্ণ ভাইয়ার মেয়ে বেবি হলে ওঁদের নামের সাথে মিলিয়ে রাখলেই হবে।”

“এখনো আমার ছেলে কম যায় না।”

“তূর্ণ ভাইয়ার ছেলেকে নিজের ছেলে বানিয়ে দিলে।”

“হ্যাঁ! একই ব্যপারস্যপার। আমার মেয়ে তূর্ণ ভাইয়ার ও মেয়ে। ওর ছেলে তো আমার ও ছেলে। হিসাব ঘুরেফিরে এক জায়গায়ই।”

পূর্ণর কথায় আদ্রিশ স্মিত হাসে। পকেট থেকে বক্স বের করে তাতে থাকা একটা গোল্ডের চেইন তোফাকে পড়িয়ে দেয়। আদ্রিশ বিদায় নিয়ে চলে আসতে যাবে তূর্ণর সাথে দেখা। সাথে সিনথি আট তাঁদের একমাত্র ছেলেও আছে। তূর্ণর ছেলে তাহসান শিকদার অর্ক আদ্রিশকে দেখে হাত উঁচিয়ে বলে, “হাই তুবার পাপা।”

ছেলের এমন কথায় তূর্ণ আদ্রিশের দিকে তাকায়। আদ্রিশ তীব্রর দিকে তাকিয়ে হাসে। গাল টেনে দিয়ে বলে, “গুড বয় বড্ড পাকা তুমি। যাবে তুবার সাথে দেখা করতে?”

আদ্রিশের কথায় তূর্ণ সিনথির দিকে তাকায়। অর্ক মাথা নাড়ায়। সে যাবে। তখন সিনথি বলে, “আমরা তোফাকে দেখে তারপর তুবার কাছে যাবো। কী বলো বাবা?”

মায়ের কথায় অর্ক সম্মতি দিয়ে বলে, “ওকে মাম্মা।”

আদ্রিশ অর্ককে কোলে নিয়ে আদর করে দেয়। ছোট বাচ্চা এমনিতে তার বেশ ভালো লাগে। নিজের মেয়েকে জেনো চোখে হারায়। তার মতে, তার মেয়ে তুবা আল্লাহর তরফ থেকে দেওয়া তার জন্য শ্রেষ্ঠ উপহার।

সব সেরে বাড়ীতে আসে আদ্রিশ। বাবার গাড়ীর আওয়াজ পেতে তুবা বেলকনিতে যায়। হাত উঁচিয়ে বাবাকে ‘হায়’ দেয়। আদ্রিশ ও গাড়ী থেকে মেয়ের দিকে তাকিয়ে হাত নাড়ায়।

ভেতরে যেতে তুবা দৌড়ে ছুটে যায় আদ্রিশের কাছে। মেয়েকে কোলে নিয়ে গালে চুমু খায় আদ্রিশ। তুবাকে নিয়ে ভেতরে গিয়ে রোদের কাছে দেয়। একটু পর সন্ধ্যা নেমে যাবে। ফ্রেশ হয়ে আসতে তুবা আদ্রিশের ফোন তার দিকে এগিয়ে হাত দিয়ে ইশারা করে একটা জায়গা দেখিয়ে বলে, “বাবা আমি দাঁড়াব তুমি ছবি তুলবে।”

মেয়ের কথায় আদ্রিশ আশেপাশে তাকিয়ে রোদকে খুঁজতে থাকে। নির্ঘাত মায়ের থেকে দেখেই শিখেছে কীভাবে পিক তুলতে হয়। মেয়ে যখন আবদার করেছে পূরণ না করে উপায় নেই। তুবা নির্দিষ্ট জায়গায় দাঁড়ায় বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গি প্রকাশ করে আদ্রিশ তা ক্যামেরা বন্দী করে নেয়। বাবা মেয়ের মিল দেখে রোদ বলে, “বারে সব ভালোবাসা আর আদর শুধু বাপ মেয়ের মা’কে কেউ চিনে না।”
রোদের কথায় আদ্রিশ শুধায়,

“আরে জান এমন হিংসে করো কেন?”

তখন তুবা একটা বই আনে। তার বাবাকে দেখিয়ে বলে, “বাবা আমি পড়ব।”

রোদ আদ্রিশ দুজনে মেয়ের দিকে তাকায়। বইটা তার মতো বাচ্চার জন্য তো নয় বরং একটা প্রাইমারি লেভেলের বই। এখন রোদ ভালোই বুঝতে পেরেছে মেয়ে এটা ছিঁড়বে আর পড়বে। আদ্রিশ তুবার কথার জবাবে বলে, “ঠিক আছে তুমি পড়ো। বাবা তোমার মাম্মামকে ঠিক করছি। বড্ড হিংসা করে আমাদের।”

তুবা খাটের উপর বসে বই নিয়ে। রোদ আদ্রিশ দু’জন মেয়ের পাশে বসে। এটা, ওটার চিত্র দেখাচ্ছে আর একের পর এক পৃষ্ঠা ছিঁড়ছে। রোদ তখন চোখ রাঙানি দিয়ে বলে, “গুড গার্ল তুমি পঁচা কাজ করছ কেন?”

তখন আদ্রিয় শুধায়, “বই ছিঁড়তে নেই মা। তুমি এটা রেখে বাবার কাছে আসো।”

মেয়েটাও জেনো বাবা পাগ’ল। বই রেখে সোজা আদ্রিশের কোলে উঠে বসে। আদ্রিশের কপালে চু’মু খায় তুবা। রোদ গাল ফুলিয়ে বসে রয়। আদ্রিশ তার বউকে দেখে হাসে। তুবাকে বুকের সাথে মিশিয়ে টুপ করে রোদের ফোলা গালে চু’মু খেয়ে বলে, “এবার ঠিক আছে তুবার আম্মু?”

“হ্যাঁ ঠিক আছে।”

কথাটা বলে রোদ তুবার কাঁধ অব্দি গড়ানো চুল গুলোতে হাত বুলায়। তার সুখ এবং ভালোবাসা এই যে এই সময়টা ভীষণ সুন্দর তার কাছে। আদ্রিশের কানের কাছে মুখ নিয়ে বলে, “ভালোবাসি তুবার বাবা।”

“ভালোবাসি রোদশীর মাম্মাম।”

মাঝখান দিয়ে তুবা মাথা ঘুরিয়ে বলে, “মাম্মা- বাবা ভালোবাসি।”

(সমাপ্ত)