এক বৃষ্টিস্নাত সন্ধ্যা ২ পর্ব-৩১+৩২+৩৩

0
1613

#এক_বৃষ্টিস্নাত_সন্ধ্যা (সিজন২)
৩১.
#WriterঃMousumi_Akter

পেটের উপর ভারী কিছু পড়তেই ঘুম ভেঙে গেলো আমার।চোখ খুলে আবার ও চেষ্টা করলাম ঘুমোনোর কিন্তু ঘুম আর কিছুতেই এলো না।সারারাত এপাস ওপাস করে কেটেছে আমার।একটুও ঘুম হয় নি আমার।শেষ রাতের দিকে একটু ঘুম এসেছিলো চোখে এক ঘন্টা পরে দেখি আবার ঘুম ভেঙে গিয়েছে।ঘুম ভাঙতেই দেখি আমার পেটের উপর উনার হাত।এই হাতের জন্যই বোধ হয় মনে হচ্ছিলো ভারী কিছু পেটের উপর পড়েছে।ঘুমের মাঝে উনি হয়তো খেয়াল ই করেন নি।আমি হাত আস্তে করে সরানোর চেষ্টা করছি।উনার হাত ধরতেই আমার হাত সহ পেট কোমর এক হাতে জড়িয়ে ধরলেন।উফফ কি মুশকিল হয়ে গেলো এখন উঠবো কিভাবে।এখন কয়টা বাজে সেটাও তো দেখতে পাচ্ছি না।হাতড়ে দেখি বিহান ভাই এর ফোন,ওহ মাই গড ফোন এর পাওয়ার অফ হয়ে গিয়েছে।ফোনের পাওয়ার অফ দেখলে কুচি কুচি করবেন উনি আমাকে।চট জলদী লাফ দিয়ে বিছানা থেকে উঠলাম আমি।তড়ি ঘড়ি করে উনার ফোন চার্য দিলাম আমি।ফ্যানের বাতাসে পাতলা মসৃণ চুল গুলো উড়ছে উনার, কখন শার্ট খুলে রেখেছেন উনি।খালি গায়ে সুঠাম দেহের একটা পুরুষ আমার সামনে।লজ্জায় একবার তাকিয়ে আর তাকাতে পারছি না।একটা ছেলের বডি ফিটনেস এতটা সুন্দর ও হতে পারে।এত সুন্দর হওয়ার কি প্রয়োজন ছিলো।ঠোঁটের কোনে মৃদু হাসি চলে আসে লজ্জায় উনাকে নিয়ে ভাবতে গেলে।জিন্স কোমর থেকে নেমে নাভির নিচে নেমে গিয়েছে উনার।কি প্রয়োজন ছিলো জিন্স পরে ঘুমোনোর।পায়ের নিচের দিকে উলটা ভাজ দিয়ে রেখেছেন।হাতের ঘড়ি ও খুলেন নি।

আমি বাইরে দিয়ে বেশ কিছুক্ষণ পায়চারী করতে করতে ভাবছি,কাল এসে আমাকে অনেক অপমান করেছেন যা তা কথা বলেছেন আমি নাকি পতিভক্তি করিনা।ঘোর পাপী জান্নাত পাবো না।আজ উনাকে এমন বিরক্ত করবো না জাস্ট অতিষ্ট হয়ে যাবে।আমাকে বিরক্ত করা তাইনা বিহান ভাই।আজ সারাদিন এমন বিরক্ত করবো না জিন্দেগীতে ভুলতে পারবেন না প্রমিজ।এইবার বুঝবেন দিয়া ও কম না কিছুতে।সকাল সকাল ব্রাশ করে নিচে গেলাম কেউ উঠার আগেই একটা কফি বানিয়ে এনে ড্রেসিন টেবিলের উপর রাখলাম।উনার তো ঘুম ই ভাঙছে না কি করা যায় তাহলে এখন।

–উনার কানের কাছে গান চালিয়ে দিলাম তুই আমার মাহিয়া মাহিয়া মাহি মাহিয়া।

–উনি বিরক্তির সাথে চোখ মেলে তাকালেন।বিরক্তি মানে ভীষণ বিরক্তি উনার চোখে মুখে।ভীষণ বিরক্ত মুডে তাকিয়ে আছেন আমার দিকে।

–আমি এক গাল হেসে মাথায় ভাল ভাবে ঘোমটা টেনে দিয়ে বললাম,আসসালামু আলাইকুম ।

–চোখ পিটপিট করে কপাল কুচকে তাকিয়ে বললেন,ওয়ালাইকুম আসসালাম। উনি আশ্চর্যজনক ভাবে উত্তর দিলেন।উনি ভ্যাবাচেকা খেয়ে গিয়েছেন সকাল সকাল আমাকে সালাম দিতে দেখে।

–শুভ সকাল প্রিয় স্বামি।

–গুড মর্নিং,বাট হোয়াট রং উইথ ইউ।

–কেমন আছেন পতিপরমেশ্বর স্বামি।

–আমার ভাল থাকার বারোটা বাজাতে কীত্তন এর রিহার্সাল শুরু করেছিস।এগুলো কি শুরু হয়েছে।উনার কপালের চামড়া বিরক্তিতে কয়েকটা ভাজ পড়েছে।

–ওগো কেমন আছেন বলুন না।খুব জানতে ইচ্ছা করছে আপনি কি সেই কাল রাতের মতোই আছেন নাকি খানিক টা বদলে গিয়েছেন।

–কিছু খেয়েছিস তুই।কি খেয়েছিস।

–স্বামি সকালে উঠে কিছুই খায় নি এখনো,আমি কিভাবে খাই বলেন তো।
ওগো এই নিন আপনার ব্রাশ আর পেষ্ট।দ্রুত ব্রাশ করে নিন, আপনার কফি ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে।

–উনি চোখ মুখের অদ্ভুত একটা রিয়াকশন দেখাতে দেখাতে উঠলেন।প্যান্ট একটু টেনে উপরে তুলে তোয়ালে গলায় নিলেন।ব্রাশ টা আমার হাত থেকে নিয়ে ভ্র‍্য যুগল কুচকে তাকিয়ে আছেন আমার দিকে।

–ওগো ওভাবে কি দেখছেন গো।

–হোয়াট দ্যা ল্যাঙ্গুয়েজ। স্টপ ইট জাস্ট স্টপ ইট।মাথায় এত বড় একটা ঘোমটা টেনে শাবানা শাবানা বিহ্যাভ করছিস কেনো?পাগলের গুষ্টিতে বিয়ে করে নিজেই পাগল হয়ে যাবো।

–কেনো গো এই শুভ সকালে ওভাবে কথা বলছেন কেনো?

–শুভ কে অশুভ করতে এত সকালে উঠেছিস তাইনা?দশ মিনিট জাস্ট দশ মিনিটে রেডি হ।বই নিয়ে আয় তোকে আজ বই পড়াবো বলেই ওয়াশ রুমে গিয়ে দরজা আটকে দিলেন।আর বাইরে এসে এসব উদ্ভব ভাষা শুনলে এখন থেকে আছাড় মারবো অত্যাচারি বংশের বারান্দায় গিয়ে পড়বি।

–দুই মিনিটে বেরিয়ে এলেন ওয়াশ রুম থেকে।ওয়াশরুমের দরজা খুব জোরে খুললেন। দরজা খোলার শব্দে বুক কেঁপে উঠলো আমার।টাওয়াল পরে মুখে ব্রাশ নিয়ে ক্ষিপ্ত নয়নে তাকিয়ে আছেন আমার দিকে।উনার চোখ রক্তজবার মতো হয়ে আছে।উনার রাগের মাত্র বাড়ার সাথে সাথে চোখ দুটো ক্রমশ ছোট হয়ে আসছে।কিন্তু কেনো ওয়াশ রুমে গিয়ে হলো এমন।আমি হাতের মুঠোয় ওরনার এক কোনা ধরে কচলাচ্ছি আর ঠোঁট কামড়ে ধরে ভাবছি কি হলো টা কি উনার।

–উনি আমার দিকে এগিয়ে এসে বললেন,কি দিয়েছিস ব্রাশে।

–আমি দুই কান ধরে বললাম,কসম কিচ্ছু দেয় নি আমি ব্রাশে।আপনার ব্যাগ থেকে ব্রাশ আর পেষ্ট নিয়েই দিয়েছি আর কিছুই দেয় নি আমি।

-সিরিয়াসলি।

–আমি তো আসলেই কিছুই দেয় নি তাহলে উনি কি বলছেন।আমি তো অন্য ঝামেলা করিনি উনি রেগে আছেন কেনো?কি মুশকিলে পড়লাম কি জানি।

–উনাকে আমার দিকে এগোতে দেখে আমি পেছনে যেতে যেতে সোফার উপর পড়ে গেলাম।উনি আমার দিকে খানিক টা ঝুকে বললেন, খুব সাহস বেড়েছে তাইনা?আমার পেছনে লাগার খুব শখ তাইনা মিসেস বিহান।কি ছিলো এটাতে পেষ্ট।

–পে’পে’পেষ্ট ই ছিলো।

–ওকে নাউ ইউ টেল মি হোয়াট ইজ দিস।বলেই উনার ব্রাশ আমার গাল ধরে জোর করে দাঁতে ঘষে দিলেন।

–ওয়াক থু!বিহান ভাই কি ছিলো এটা।ওয়াক।এটা তো পেষ্ট না তাহলে কি এটা।

–এটা সেভ করা ফোম ছিলো।যা ব্যবহার করে ছেলেরা দাঁড়ি গোফ কাটে।তুই আমাকে এটা দিয়েছিস, তোর জন্য এই অখাদ্য আমি মুখে দিলাম।

–আর আপনি জেনে শুনে আমার মুখে দিলেন,তাও আবার আপনার মুখের তা।সরুন তো বমি পাচ্ছে।

–আর বেশী পাকনামি করবি।

–আপনার টাওয়াল খুলে যাচ্ছে বিহান ভাই।

কথা টা শুনেই উনার চোখ বড় বড় হয়ে গেলো।তাৎক্ষনাত টাওয়াল ওর গিট ধরে উঠে গেলেন।মনে হয়ে একটু লজ্জা পেয়েছে উনি।চোখ মুখের ভাব যেনো কেমন মনে হলো।আমার দিকে তাকিয়ে ডান চোখ টিপে আবার ওয়াশ রুমে প্রবেশ করলেন।উনি এমন অসভ্যর মতো চোখ মারা শিখেছেন কবে।এই ছেলের দ্বারা দেখছি সব ই সম্ভব।খানিক পরে ওয়াশ রুম থেকে গোসল শেষ করে বের হলেন
টাওয়াল দিয়ে মাথা মুছতে মুছতে।আমি সোফাতে বসে ফোন গুতাচ্ছি।আমার হাত থেকে ফোন টা কেড়ে নিয়ে বিছানায় ফেলে দিয়ে বললেন,আমার চুলের পানিটা মুছে দে তো দিয়া।উনার চুলের পানি ফোটা ফোটা আমার চোখে মুখে পড়ছে। আমি খানিক টা অবাক হয়ে বললাম,আমি দিবো।উনি আমার পাশে বসে বললেন,তাহলে কি আমার আর পাঁচটা বউ আছে সে দিবে।আমি উনার মাথার চুল মুছে দিতে দিতে বললাম,কেনো শ্বশুরের মেয়ে আছে না আপনার।সে কোথায় বিহান ভাই।কখনো তো আপনাকে ফোন টোন দিতে দেখি না।আমার বফ আছে সে তো সারাদিন ফোন করে।উনার মাথার পানি মোছা অবস্থায় আমার হাত ধরে বললেন,তুই এত সুইট করে কিভাবে কথা বলিস দিয়া।একটা ছেলেকে ভীষণভাবে জেলাস ফিল করানোর ক্ষমতা তোর মাঝেই আছে।এই বিশেষ ক্ষমতার অধিকারী মেয়েটা কি আমার পুচকি।আমি উনার কথার মানে পুরাটায় বুঝলাম তবুও প্রশ্ন করলাম,তা বিহান ভাই ইদানিং আমাকে বউ বউ করেন কেনো?কাহিনী কী?উনি আমার হাত উনার হাতের মধ্য নিয়ে আঙুল দিয়ে স্লাইড করতে করতে বললেন,তুই এত প্রশ্ন করিস কেনো?তুই না আর পিচ্চি নেই বেশ বড় হয়ে গিয়েছিস।আর প্রেমিক হৃদয়ের না বলা কথা গুলো ও বুঝে নিতে শিখে গিয়েছিস।উনাকে আবার ও প্রশ্ন করলাম প্রেমিক টা আবার কে বিহান ভাই?উনি উঠে গিয়ে ড্রেসিন টেবিলের সামনে গিয়ে বললেন,লোসন কোথায় তোর দিয়া।আমি লোসন টা এগিয়ে দিয়ে বললাম,বিহান ভাই বললেন না প্রেমিক টা কে?উনি আমার গালে একটু লোসন লাগিয়ে দিয়ে বললেন,তুই ও যেটা শুনতে অধীর আগ্রহে প্রহর গুনছিস আমিও সেটা বলতে হাজার বার চেষ্টা করেও ব্যার্থ হচ্ছি।আচ্ছা দিয়া আমি না হয় বলতে পারছি না তুইতো হুট করেই বলতে পারিস তাইনা?এইযে তুই আর আমি আছি আর তো কেউ নেই এখন তো বলতে পারিস।

পৃথিবীর সব লজ্জা কি আমার নাকে এসে পড়লো এখন।ভীষণ লজ্জা পেয়ে বাইরে ছুটে এলাম।ইস বেলকনিতে বেলি ফুলগুলো কি সুন্দর ফুটে আছে।উনি পাশে থাকলে এই পৃথিবীর সব কিছুই সুন্দর লাগে আমার কাছে।দিয়া তুই এত বোকা কেনো সারাজীবন কানের কাছে শ্বশুরের মেয়ে করে গেলো তুই বুঝতেই পারলি না।বেলি ফুলের দিকে তাকিয়ে বললাম,আচ্ছা আমি এত বোকা ছিলাম কেনো?লজ্জায় মুখ ঢাকলাম দু’হাতে।যদিও উনি নিজ মুখে কিছুই বলেন নি।উনাকে আমি এইবার ঢাকা যাওয়ার আগে বলিয়েই ছাড়বো।ইস আম্মু যদি সেদিন জোর করে বিয়েটা না দিয়ে দিতো আজ এই মানসিক তৃপ্তি আমি পেতাম ই না।পরিবার আসলেই বিয়ের জন্য সব সময় সঠিক সিধান্ত ই নেয়।আই লাভ ইউ আম্মু।তোমার রাগি মুডি,খিটখিটে মেজাজের ভাতিজা টা না আসলেই বেষ্ট।উনার এই রাগ আমার অভ্যাস,আমার ভালবাসা এখন।উনার এই ভীষণ রাগ,অগ্নিচোখ না দেখে থাকতে পারিনা আমি।উনি না বকলে সব কিছু অসহ্য লাগে।উনি বকার পরেই ভালবাসার সুন্দর একটা ইঙ্গিত দেন।উনি ই আমার ভালবাসা উনি আমার অভ্যাস।সকালের মৃদু বাতাস এসে গায়ে লাগছে, নিচে মারুফা খালা ছোট মাছ কাটছেন।আমিও ধীরে ধীরে নিচে গেলাম।মামি আমাকে দেখে বললেন এত সকালে তুই কেনো উঠেছিস।মামিকে বললাম,বাড়ির বউ দেরিতে উঠলে কেমন দেখায় মামি বলেই হেসে রান্না ঘরে গেলাম।মামি মারুফা খালাকে বলছে, দিয়া মনে হয় ধীরে ধীরে বুঝতে শিখছে এটা ওর সংসার।

চলবে,,

#এক_বৃষ্টিস্নাত_সন্ধ্যা(সিজন২)
৩২.
#WriterঃMousumi_Akter

রান্নাঘরে আজ নিজে থেকেই গোছগাছ শুরু করলাম।ভীষণ কাজ করতে ইচ্ছা করছে,রান্না করতে, ঘর গোছাতে এক হাতে সব করতে মন চাচ্ছে।রান্নাঘরে বসে রসুন এর কোয়ার খোসা ছড়াচ্ছি বসে বসে।মামি আমাকে বললেন একি দিয়া রান্না ঘরে কি করছিস মা বিহানের কিছু লাগে কিনা তুই বিহানের কাছেই যা।আমি হেসে বললাম তোমার ছেলে কি ছোট বাচ্চা আছে যে যা লাগবে তাই দিতে হবে।যা লাগে নিজেই নিয়ে নিতে পারবে।মামি আমার কাছে বসে বললেন,ছেলে ছোট না হলেও তুইতো বড় হয়েও ছোট আছিস মা।শোন পুরুষ মানুষ চায় স্ত্রীরা তাদের হাতের কাছে থাকুক।যা লাগে স্ত্রীর হাত থেকে নিক এটাই তারা চায়।আমি হেসে বললাম,তোমার ছেলে এমন চাইবে না ভেবো না।

–এরই মাঝে উপর থেকে বিহান ভাই ডাকছেন দিয়া কোথায় গেলি,এক মিনিটে কি হারিয়ে যাস তুই?

–মামি আমার হাত ধরে বললো,যা দিয়া বিহানের কিছু লাগবে হয়তো।

–মামি যাচ্ছি তবে রান্না কিন্তু আজ আমিই করবো।

–আচ্ছা ঠিক আছে মা, তুই যাতো আগে।ছেলেটা কতদিন পরে এসেছে।

–মারুফা খালা বললো,, ও দিয়া যাও মা।তোমার শ্বাশুড়ি তো ভালো আমাদের শ্বাশুড়িরা তো আমাদের স্বামির সাথে এক জায়গা দেখলেই ডেকে একটা কাজ ধরিয়ে দিতো।

–মারুফা খালাকে বললাম,কি বলো খালা শ্বাশুড়ি আবার এমন ও হয় নাকি।

–হয় মানে আমার শ্বাশুড়ি এমন ই ছিলো।

–দজ্জাল ছিলো বুঝি খালা।

–আগের যুগের মানুষ তো অমন ই ছিলো।

–সিড়ি বেয়ে উপরে উঠতেই দেখি বিহান ভাই ফোনের পাওয়ার বাটন চাপছেন বিছানায় বসে।আমি রুমে যেতেই আমার দিকে তাকিয়ে ফোনের পাওয়ার বাটন চাপতে চাপতেই বললেন,আমার ফোন অফ হয়ে গিয়েছে কিভাবে দিয়া।আমার ফোনে চার্য নেই কেনো?আর ফোন চার্যে দিয়েছে কে?

–ওড়নার এক কোনা কচলাতে কচলাতে বললাম,চার্যে দিয়ে বুঝি কোনো অপরাধ করেছি।দেখলাম চার্য নেই তাই চার্যে দিয়েছি।

–আমার ফোনে চার্য নেই এটা কিভাবে সম্ভব।কাল রাতে ফোনে ৮২ % চার্য ছিলো।আর কিভাবে চার্য দিয়েছিস কানেকশন ই তো পায় নি।একটুও চার্য হয় নি।ভেরি স্ট্রেইঞ্জ ফোনের চার্য এমনি শেষ হয়ে গেলো।

–আপনার মোবাইল কি আপনার মতোই কঠিন অতি সহযে চার্য হয় না।

–উনি চোখ গোল গোল করে আমার দিকে তাকালেন।বিছানা ছেড়ে উঠে ফোনের চার্যার হাতে নিলেন।আমার দিকে তাকিয়ে বললেন,চেয়ার টেবিলে বস এক মিনিটে।হাইয়ার ম্যাথ বার কর।যেকদিন বাড়িতে ম্যাথ দেখিয়ে দিবো।এই খেলাম আরেক বাড়ি উনি আবার ম্যাথ দেখাবেন ক্যানো?কথা না বাড়িয়ে চেয়ার টেবিলে বসে গেলাম।পা নাচাচ্ছি আর বই এর পৃষ্টা উল্টাচ্ছি।উনি ফোন চার্য দিয়ে চেয়ার টেনে বসলেন।আমার দিকে তাকিয়ে বললেন,পা দুলাচ্ছিস কেনো?পৃথিবীর সব বদ অভ্যাস কি তোর আছে।এই নিয়ে আর কতবার বলবো।বুঝিনা এসব কি উনার চোখেই পড়ে শুধু।এতবার ভাবি আর পা দুলাবো না কিন্তু এটা হয়েই যায়।ডাক্তার দেখানো উচিত কিনা বুঝছি না।

–উনি আমার সামনে থেকে বই টেনে নিয়ে বললেন,হাইয়ার ম্যাথে এবার কত মার্ক পেয়েছিস।

–৮৩

–আর একটু হলেই ফেল করতি।

–আমি A+ পেয়েছি,তাও বলছেন ফেইল করতাম।

–তো কি,১০০ থেকে ১৭ মার্ক কম পেয়েছিস।বাকি মার্ক কিসে কম পেয়েছিস।কোথায় গেলো বাকি মার্ক।

–জানিনা।

–আমি বলবো?

–আপনি কিভাবে জানলেন।

–বিকজ আমি কলেজে গিয়ে খাতা দেখে এসছি।স্যার তো ভাল মনের মানুষ তাই ৮৩ দিয়েছি আমি হলে উলটা হতো ৩৮ ও পেতি না।কিছু ম্যাথের উত্তর মুখস্থ ছিলো সেখানে সোজা উত্তর বসিয়ে দিয়েছিস।কি বাটপারি বুদ্ধি, এসব খান বংশে ছাড়া নেই।ম্যাথ এর মাঝে হাবিজাবি করেছিস কোথাও মেলে নি দেখে সোজা মুখস্থ উত্তর বসিয়েছিস।মুখস্থ বিদ্যা হলে এমন ই হয়।

–এইজন্য তো আমার স্যার হন নি।

–হই নি,বলা তো যায় না ইন ফিউচার হলে তোর কি হবে দিয়া।

–লেখাপড়ার ইতি টেনে পাক্কা গৃহিনী হয়ে যাবো।

–ওয়াও ফ্যান্টাসটিক চিন্তাধারা তোর।
খাতা দে ম্যাথ দেই কিছু দেখি কেমন পারিস।

–পাটিগনিত দেন,বীজগনিত দিয়েন না।

–বীজ গনিত ছাড়া হাইয়ার ম্যাথ এ আর কি আছে।আর বই এর মাঝে এগুলা কি করেছিস দিয়া।প্রতিটা পৃষ্টায় ফুল একেছিস একটাও ফুলের জাত হয় নি।বই এর কোনো পৃষ্টায় তো বাদ দেস নি আঁকাআঁকি করতে।

উনার হাতের লেখা এত সুন্দর, উনার লেখায় খাতার সৌন্দর্য বেড়ে গিয়েছে বহুগুন।উনি আমাকে ম্যাথ করতে দিয়ে চুলের মধ্য হাত চালিয়ে কিছু ভাবছেন।আমি কলম গালে দিয়ে অপলক নয়নে উনার মুখপানে তাকিয়ে দেখছি।এই সকালে ভোরে কালো টি-শার্টে ভীষণ সুন্দর লাগছে উনাকে পরনেও কালো থ্রি কোয়ার্টার। কলম কামড়ে চলেছি আর উনাকে নিয়ে কল্পনার সাগড়ে পাড়ি জমিয়েছি।উনি হঠাত আমার দিকে তাকিয়ে হাত এদিক ওদিক করে দেখলেন চোখের পলক পড়ে কিনা।ভ্রু নাচিয়ে বললেন এইভাবে কি দেখছিস। এইভাবে কারো দিকে তাকিয়ে থাকলে তার কত টুকু অস্বস্তি ফিল হয় তুই জানিস গভেট মহিলা একটা।ঠিকঠাক ভাবে ম্যাথ কর।

উনি এবার গিয়ে উনার ফোন অন করলেন,ফোন নিয়ে বেলকনিতে গেলেন।উনার দিকে তাকিয়ে দেখি উনি একবার আমার দিকে তো একবার ফোনের দিকে তাকাচ্ছেন।ঠোঁট কামড়ে ধরে পূর্ণ মনোযোগ দিলেন ফোনের দিকে।উনার ভাবসাব খুব একটা ভাল মনে হলো না আমার।আমি বই খাতা রেখে রুম থেকে বেরিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নিতেই উনি আমার সামনে দাঁড়ালেন।হঠাত উনার চোখে মুখে ক্রমশ রাগ ধারণ করছে।

খুব সরল মনে প্রশ্ন করলাম বিহান ভাই কি হয়েছে।

–উনি দাঁতে দাঁত চেপে বললেন,কাল রাতে আমার ফোন নিয়ে কি করেছিস।

–কই কি করলাম

–উনি আমার হাত শক্ত ভাবে চেপে ধরে টেনে রুমের মধ্য নিয়ে ওয়ালের সাথে শক্তভাবে চেপে ধরে বললেন,আমার ফোন থেকে লেডিস জিনিসের অর্ডার করেছিস তুই?হাউ ডেয়ার ইউ দিয়া।

–ওটা আপনার ফোন ছিলো বুঝি বিহান ভাই।

–তাহলে কার ফোন ছিলো

–আমি ভেবেছি আমার ফোন ছিলো।

–কনভারসেষণ সব পড়েছি আমি।তুই ইচ্ছা করেই আমার ফোন থেকেই অর্ডার করেছিস।এখন মিথ্যা বলা হচ্ছে।

–এটা কি কোনো অন্যায় ছিলো বিহান ভাই।জাস্ট এই টুকুই তো।

–উনি বিরক্তিতে চুলের মধ্য হাত চালাতে চালাতে বললেন,অর্ডার করেছিস ভাল কথা।আমার নামে উলটা পালটা কথা বলেছিস কেনো?আমি লিপিস্টিক পরি,লেডিস গেঞ্জি পরি।

–কি করবো ওরা উল্টা পাল্টা কথা বলছিলো।

–ওরা বলছিল নাকি তুই?তারা রিপ্লে দিয়েছে,আমি নাকি মেন্টাল, আমার প্রফাইল ঘেটে বলেছে আমি কি ডাক্তার নাকি পাগল।

–কি সাহস আপনাকে পাগল বলেছে।

সাহস ওদের থেকে তোর বেশী বেড়েছে।আজ আমি কি করবো দিয়া তুই বুঝতেও পারছিস না।বলেই আমাকে পাজা কোলে তুলে নিলেন।এখুনি কি আছাড় দিবেন।আমি ভয়ে উনার বুকের কাছের গেঞ্জি টেনে ধরে উনার বুকে মাথা গুজলাম।

চলবে,,,

#এক_বৃষ্টিস্নাত_সন্ধ্যা(সিজন২)
৩৩
#WriterঃMousumi_Akter

বিহান ভাই আমাকে কে কি আছাড় দিবেন?সরি আর এমন হবে না।আমি কখনো আর আপনার ফোন স্পর্শ করবো না।প্লিজ আমায় ফেলবেব না।আমি আপনার কোনো কিছুই আর স্পর্শ করবো না,কোনদিন না।আমাকে নিচে নামান প্লিজ এক্ষুনি মামিকে ডাকবো কিন্তু,চোখ অফ করে এক নিঃশ্বাসে কথাগুলো বলে শেষ করলাম।কথাগুলো বলতে বলতে উনার গলা শক্তভাবে জড়িয়ে ধরে উনার বুকে মাথা গুজে রইলাম।উনি আমাকে কোলে তোলার জন্য নিঃশ্বাস অতি দ্রুত বইতে শুরু করলো আমার।উনি রাগে দাঁতে দাঁত চেপে রক্তজবার ন্যায় চোখ করে আমার দিকে তাকিয়ে রইলেন পলকবিহীন ভাবে।

–উনি রুড কন্ঠে বললেন,দিয়ারে তোকে আজ এমন শিক্ষা দিবো যে এই জীবনে আমাকে বিরক্ত করার কল্পনাও করতে পারবি না।তোকে আজ বেলকনি থেকে ফেলে দিবো,দিবো মানে দিবোই,আজ তোর রেহাই নেই।তোর জন্য আমাকে এমন ডিজগাস্টিং কথা শুনতে হয়েছে।এমন ভাবে ফেলবো ট্যাপা মাছের মতো ঠাসস করে উঠবি।

–উনি কি আমায় এনিয়ে বিনিয়ে ট্যাপা মাছ বললেন।এই মুহুর্তে তো কিছুই বলতে পারছি না এই রাঘব বোয়াল কে।আগে এর হাত থেকে মুক্তি পেয়ে নেই তারপর দেখা যাবে।আরো খানিক টা জোরে ধরলাম উনাকে।

–উনি জোরে নিঃশ্বাস নিতে নিতে বললেন,যেভাবে জড়িয়ে ধরেছিস,তোকে ফেলতে গেলে তো নিজেই পড়ে যাবো।অকালে নিজের প্রাণ দিতে চাই না।আমার ব্রাইট ফিউচার পড়ে আছে সামনে।ফেলতে যখন চেয়েছি কোথাও তো ফেলতেই হবে তাইনা?তাই বরং বিছানায় ফেলি।

–চট জলদি বললাম,হ্যাঁ হ্যাঁ বিছানায় ফেলুন আমি তাহলে আপনার গলা ছেড়ে দিচ্ছি।

–ছেড়ে দিলে বেলকনি থেকেই ফেলবো।বাঁচতে চাইলে ভাল ভাবে জড়িয়ে ধরে থাক।

–উনি কথাটা বলতেই আমি পিটপিট করে তাকিয়ে দেখি দরজায় দুলাভাই এসে দাঁড়ালেন সাথে বিভোর ভাই ও আছে।বিভোর ভাই আমাদের এইভাবে দেখেই পেছন ঘুরে দাঁড়িয়ে দুলাভাই এর হাত ধরে টানছেন।দুলাভাই কে নেওয়ার জন্য হাত ধরে টানাটানি করেই চলেছেন।বিভোর ভাই এক টানে দরজা থেকে সরিয়ে নিলেন দুলাভাইকে।

–বিহান ভাই আমাকে বিছানায় ফেলে দিয়ে আমার দিকে ঝুঁকে পড়লেন।একদম আমার দিকে ঝুঁকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলেন আমার দিকে।চোখে মুখে গম্ভীর ভাব এখনো রয়েছে।ভ্রু উচিয়ে বললেন,এত ভয় নিয়ে আমার সাথে ফাইজলামি করিস।এত ভয়! আসলেই কি ভয় নাকি ভয় পাওয়ার ভান।আমি চোখ ছোট ছোট করে দরজায় সোজা দৃষ্টি নিক্ষেপ করলাম।উনি আমাকে বললেন,লুক ওট মি ওদিকে কি দেখছিস আমার দিকে দেখ।আমি এখানে আর মন চোখ অন্যদিকে কেনো?লিপিস্টিক চাই আমাকে বলা যেতো না।আমাকে বলতে কি সমস্যা।সেদিন যে লিপিস্টিক কিনে দিলাম তার একটাও ইউজ করতে দেখলাম না।ওগুলো কি আমি সাজিয়ে রাখতে দিয়েছি,কয়েক দিন ইউজ করে ফেলে দিয়ে বলা যায় না লিপিস্টিক শেষ আবার লাগবে।পুচকে একটা মানুষ সারাক্ষণ সেজেগুজে ঘুরঘুর না করে ওয়ান টুর বাচ্চার মতো বিহ্যাভ।তোকে বলেই বা কি হবে মেয়ে মানুষের সমস্যায় এটা টিপ ফুরালে তার খালি পাতা টাও রেখে দেয়।আমার ঘরে যেনো আনইউজ কিছু না দেখি।যেগুলা ইউজ করিস না সেগুলা ফেলে দিবি।

–অরেঞ্জ কালার টা ভাল লাগছিলো তাই?

–দাঁতে দাঁত চেপে বললেন,আমাকে বলতে কি খুব অসুবিধা হচ্ছিলো ষ্টুপিড একটা।সন্ধ্যার পরে রেডি হয়ে বাইরে যাবি আজ আমার সাথে।

দরজা থেকে দুলাভাই খ্যাক করে গলা পরিষ্কার করার শব্দ করতেই বিহান ভাই কেঁপে উঠে আকস্মিক ভাবে উঠে গেলেন ।আমিও দ্রুত উঠে জামা ঠিক করতে করতে এগিয়ে গেলাম।বিহান ভাই গেঞ্জি টেনে ঠিক করে নিয়ে লজ্জায় নিচের ঠোঁট কামড়ে চুলের মধ্য হাত চালিয়ে দিলেন।উনি যে কি ভীষণ লজ্জা পেয়েছেন সেটা উনার চোখে মুখে স্পষ্ট আর ক্লিয়ার।লজ্জা সামলাতে চুলের মধ্য হাত চালিয়ে নিচু হয়ে দাঁড়িয়ে রইলেন।

–কি ভুলভাল সময়ে আমার আগমন হলো আমার শালাবউ।শালাবাবু তো মনে মনে ভাবছে দুলাভাই এসেছে যখন চলে গেলো না কেনো।না হলে বাকিটুকু..এটুকু বলেই দুলাভাই চুপ হয়ে গেলেন।

–ভাজ্ঞিস দুলাভাই আপনি এসেছিলেন।না হলে আজ যে উনি কি করতেন আমাকে।

–বিহান ভাই তৎক্ষনাত আমার দিকে চোখ বড় বড় করে ভীষণ রাগী দৃষ্টিতে তাকালেন।যার মানে আমাকে চুপ করতে বললেন।

–দুলাভাই শুকনো কাশি দিয়ে বললেন,আচ্ছা শালাবউ তাহলে এই কাহিনী।

–হ্যাঁ দুলাভাই উনি আমায় শাস্তি দিচ্ছিলেন।আপনি এসেই তো বাঁচালেন।আপনার ওই শালাবাবু যে লোক উনার হাত থেকে বাঁচা সহজ নয়।

–শালাবাবু আমি তাহলে গেলাম,শাস্তি দিতে থাকো।

–দুলাভাই না প্লিজ।

–বিহান ভাই মাথা থেকে হাত নামিয়ে বললেন,দুলাভাই আপনি যেটা ভাবছেন সেটা নয়।আপনার এই শালাবউ যা করেছে ভাবতেও পারবেন না।

–আমি কিছুই ভাবছি না শালাবাবু,চালিয়ে যাও।এখনি তো সময়।
এতদিন পরে বাড়িতে এসোছো দীর্ঘদিনের উপোস বউ ছাড়া।

–দুলাভাই সিরিয়াসলি ওসব কিছুই না।

–আমি উত্তেজিত হয়ে বললাম,মিথ্যা বলছেন কেনো? আপনি তো ওসব ও করছিলেন।

–উনি চোখ রাগিয়ে বললেন,তুই কি চুপ করবি।

–দুলাভাই হেসে বললেন,কি করছিলে সেটা গেঞ্জিতে মুখে স্পষ্ট লেগে আছে।

–গেঞ্জিতে আর উনার মুখে আমার ঠোঁটের লিপিস্টিক এর দাগ স্পষ্ট ক্লিয়ার।বিহান ভাই এটা দেখেই রণচন্ডী মুডে আমার দিকে এগিয়ে এলেন।দুলাভাই হাসতে হাসতে বেরিয়ে গেলেন।

–বিহান ভাই আমাকে বললেন,এই সাজ সকালে ঘুম থেকে উঠেই লিপিস্টিক লাগানোর কি প্র‍য়োজন ছিলো।উফফ গড দুলাভাই কি ভাবলেন।আজ দিনটায় এত বাজে হলো কেনো সেটাই বুঝছিনা।

–আমি কি জানতাম আপনি এখনি আমায় কোলে তুলবেন।

–সস্তা লিপিস্টিক না লাগালে তো সেটা আমার গালে লেগে যেতো না। কিপ্টার বংশের কিপটা।

–বাজে কথা বলবেন না আমি অনেক দামাদামি করে ৭০ টাকার লিপিস্টিক ৬৫ টাকা দিয়ে কিনেছি।

–মাই গড অনেক টাকা সেফ করেছিস।

–টিস্যু নিয়ে আয় লিপিস্টিক এর দাগ মুছে দে।

–আমি টিস্যু বক্স থেকে দুইটা টিস্যু নিয়ে উনার সামনে এসে দাঁড়ালাম।বুকের কাছে লেগে থাকা দাগ টিস্যু দিয়ে তুলতে পারলেও মুখ ভাল একটা নাগাল পাচ্ছিনা।পায়ের আঙুলে ভর দিয়ে উনার গালের লিপিস্টিক মুছে দিলাম।

–উনি আমার পায়ের দিকে তাকিয়ে বললেন,এভাবে দাঁড়ালে কচি আঙুল ভেঙে যাবে আমার পায়ের উপর দাঁড়া।

–ব্যাথা পাবেন তো,তার থেকে বরং আপনি চেয়ারে বা খাটে বসুন।

–উহু এভাবেই থাকবো আর তুই আমার পায়ের উপর উঠবি।আমাকে চুপ থাকতে দেখে উনি নিজেই আমার কোমর ধরে উঁচু করে বললেন,এবার মুছে দে।একদম বাচ্চাদের মতো গাল এগিয়ে দিলেন।এটা যেনো তার ভীষণ বায়না ছিলো আমাকেই তার গালের লিপিস্টিক মুছে দিতে হবে।আমার বুঝতে অসুবিধা হলোনা যে উনি আমাকে আসলেই ফেলে দিতো না সব ই ধমকের সুরে আমাকে কোলে তোলার বাহানা।এই পৃথিবীর বেষ্ট ইউনিক আইডিয়ার মানুষ টা আমার উনি।কি সুন্দর ভাবে নিজের সুন্দর চাওয়া গুলো,নিজের ইচ্ছা গুলো নিজেই আদায় করে নেন সেটা আমাকেও বুঝতে দেন না।পর মুহুর্তে ভেবেই অবাক হই উনি কিভাবে ভাল লাগার মুহূর্তে তৈরি করে যান প্রতিনিয়ত।

–উনি এক দৃষ্টিতে শীতল নয়নে তাকিয়ে আছেন আমার দেখা।এ দেখা যেনো কত জন্মের দেখা,উনার চোখে ভীষণ তৃষ্ণা,আমাকে দেখার ভীষণ আকুতি উনার চোখের দৃষ্টিতে গভীর ভাবে ফুটে রয়েছে।বেশ অনেক সময় মৌনতায় কেটে গেলো দুজনের।আমি আস্তে করে বললাম হয়ে গিয়েছে এবার নামিয়ে দিন,নাহলে কেউ চলে আসবে আবার।তখন আবার আমাকেই বকা দিবেন।উনি আস্তে করে নামিয়ে দিলেন আমাকে।ড্রয়ার খুলে আরেক টা গেঞ্জি করে পরনের টা খুলে পরলাম।

–আমি বেশ সন্দিহান ভাবে বললাম,আরেক টা যখন পরবেন তাহলে আমাকে দিয়ে ওইটা মোছানোর কি প্রয়োজন ছিলো।

উনি আমার মুখের কাছে এসে বললেন,

“আমি চাই সে ছুয়ে দিক আমায়,সে কাছে আসুক আমার।
সে আলিঙ্গন করুক আমায়,
তার তপ্ত নিঃশ্বাস উপচে পড়ুক আমার শরীরে।
কারনে অকারণে তাকে ছোয়ার বাহানায় পাগল থাকে মন।

সে কি একটুও অনুভব করে নি সে ছুয়ে দিলে আমার অদ্ভুত এক ফিলিংস হচ্ছিলো।ভেতরে তাকে নিয়ে অনুভূতি গুলো জাগ্রত হচ্ছিলো ভীষণ ভাবে।”

কথা গুলো বলেই বেরিয়ে গেলেন বাইরে।

চলবে,,