#এক_মুঠো_বুনোপ্রেম
পর্ব ৫
#জান্নাতুল_মাওয়া_লিজা
(উন্মুক্ত ও পূর্ণ মনস্কদের জন্য)
সকাল আট টা।
নিজের বেডরুমে ড্রেসিং টেবিলের সামনে বসে স্বীয় চেহারাটা একদৃষ্টে দেখছে অপরাজিতা। সদ্য কেনা লাল পেড়ো বেগুনী এক জামদানী শাড়ীতে সেজেছে সে। মুখে হালকা সাজসজ্জা। একসময়ের রুপসী যুবতী অপরাজিতা আজ সময়ের স্রোতে চল্লিশোর্ধ্ব। মুখে ফাইন লাইন আর রিঙ্কল ছাপিয়ে এক রুপসী তনু এখনো ভেতর থেকে উঁকি দেয়। ডাগর নেত্রযুগল, খাড়া নাসিকা, আর চিকন বিপরীত উষ্ঠ! ভীষণ অভাবনীয় হলেও সত্য যে, এই কঠোর আর দৃঢ় নারীর জীবনেও যে প্রেম তার অতীতের এক স্বল্প সময় জুড়ে বিস্তৃত হলেও তার রেশ রয়ে গেছে আজ অবধি। সেই অতীতের থেকে পালিয়ে বাঁচলেও অতীত তাকেই হাতড়ে বেড়ায়। এত ঘটনা বহুল তার অতীত জীবন, যা সাধারন মানুষের অজানা, এমনকি তার অতি আপন ভাই বোনেরাও কেউ জানে না সঠিক ইতিহাস। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে অপরাজিতা ভাবতে লাগলো, প্রতিটা মানুষের লুকানো চেহারার ভেতরে থাকে কত লুকানো সত্য।
অপরাজিতার গন্তব্য পুরাতন ঢাকার ক্রিশ্চিয়ান(খ্রীস্টান) কবরস্থান। তার এক ভীষণই প্রিয় মানুষ যে সেখানে শায়িত আছে! সে তাকে লাল বেগুনী শাড়িতেই বেশি পছন্দ করতো, তাই সে এই বেশেই আজ বের হচ্ছে। কোনো কেলেন্ডারে আজ দাগ কাটা না থাকলেও আজ দিনটি অপরাজিতার জীবনে এক বিশেষ দিন।
পরম ভালোবাসার মানুষটির মৃত্যুর দিন আজ।
অপরাজিতার ফোনে হঠাৎ ই কল এলো, স্ক্রিনে নাম ভেসে উঠলো জুনি।
অপরাজিতা কল রিসিভ করলেই সেই জুনি বলে উঠলো, ” আসছিস তুই?
অপরাজিতা থমথমে মুখে উত্তর করলো,
” হুম, আসছি আমি!”
জুনি ক্রন্দনরত হয়ে শুধালো,
” আর্শিকে এবারো দেখাবি না, ওর বাবার কবরটা?”
অপরাজিতার বুক ধুকপুক করে উঠলো, কথাটা শুনে, সে কম্পনরত স্বরে উত্তর দিলো,
” না! আমার বলার মতো সাহস হয় না, যদি ও আমাকে ভুল বুঝে আমার থেকে দূরে সরে যায়?”
জুনি নামধারী সে ভদ্রমহিলা বলে উঠলো,
” যে দূরে যাওয়ার, সে এমনি দূরে যাবে। আর যে থাকার সে থাকবেই! তবে তোর সব সত্যি জানিয়ে দেওয়া উচিত আর্শিকে”
” নাহ! আর্শির ডক্তর আমাকে পরামর্শ দিয়েছে ও অতীতের ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনা গুলো যত দ্রুত ভুলে যায় ততই মঙ্গল, তাহলেই ও দ্রুত স্বাভাবিক হতে পারবে, কারন ও আলঝেইমার রোগে আক্রান্ত, মেডিসিন ও চলছে, তারপরো প্রায় প্রতিমাসেই ও প্রহকে স্বপ্নে দেখে, আমি চাইনা ও সব সত্য শুনে আবার ওই সংঘাতপূর্ণ জীবনে চলে যাক!”
জুনি আবার বলে উঠলেন, ” তুই যা ভালো মন্র করিস, অবশ্যই তুই ই ভালো বুঝিস সব, তাহলে, কখন আসছিস?”
অপরাজিতা সরল বাক্যে উত্তর দিলো, ” আসছি আমি, ঠিক ন’টায়।”
অপরাজিতা বের হতে উদ্যত হলো, কিন্তু বের হতে না হতেই এষের সাথে দেখা। নিজের ভাতিজা এষকেও অপরাজিতা বহু বুঝিয়েছে, কিন্তু এবার শেষবারের মতো বুঝাতে চাইলো। এই বয়সের বা এই জেনারেশন এর ছেলে মেয়েদের মধ্যে ভালোবাসাও যেমন এক্সট্রিম ঘৃণাও তেমন এক্সট্রিম তা তিনি ভালো করেই জানেন। তাই কোন কিছুতেই চাপ প্রয়োগে কিছু হবে না, তা সে ভালো ভাবেই জানেন।
অপরাজিতাকে দেখে এষই প্রথম বলে উঠলো,
” ফুপি, আজ তোমাকে তো দারুন সুইটু লাগছে, মনে হচ্ছে, নতুন বউ”
অপরাজিতা কথা ঘুরালো। সে কোমল স্বরে আদরজাত ভঙ্গিতে মাথায় হাত রেখে এষকে বললো,
” আব্বু, এষ আমার, গতরাতে কোথায় ছিলে?”
এষ মাথা চুলকে উত্তর দিলো, ” তোমাদের আর্শি মনির রুমের ব্যলকনিতে, বাইরে বৃষ্টি হচ্ছিলো না, ঘুমের ফাঁকে ফাঁকে বৃষ্টি দেখছিলাম! আবার জানালার চিপা দিয়ে আর্শিকেউ দেখছিলাম! ”
অপরাজিতা হাসলো। মনে মনে ভাবলো, আরাম বিছানা ছেড়ে ছেলেটা লুকিয়ে লুকিয়ে ব্যালকনিতে থাকে প্রায়ই, একমাত্র আর্শিকে দেখার জন্য, মেয়েটার মধ্যে কি এমন পেয়েছে ছেলেটা? ভালোবাসা এমনও হয়?
অপরাজিতা আদর মিশ্রিত কন্ঠে বললো,
” এষ, আব্বু আমার, গ্র্যাজুয়েশন শেষ করেছো তাও এক বছর হলো। আর ছয় মাস ইন্টার্নি করেছো, তার পর গত ছয়মাস যাবত তুমি এই দেশে এসে পড়ে রয়েছো, তুমিই বলো, তোমার বাবা মায়ের মনটা কি বলছে?”
এই কথা শোনার পরই এষ তার ফুপিকে থামালো,
” ফুপি তুমি জানো আমি এদেশে কেনো এসেছি, তার পরো আজ নিয়ে চৌদ্দ দিন তুমি আমাকে বুঝাতে এসেছো, যেনো আমি দেশে চলে যাই, আমার বাবা মা ও আমাকে বুঝাতে আসে বলে আমি ওদের সাথে কথা বলাই বন্ধ করে দিয়েছি, আমার ভাই বোনরাও আমাকে বোঝাতে আসে। কাজিনরা বোঝাতে আসে। তবে আমাকে কে বুঝে? এত বুঝিয়ে কি হবে? তোমার মেয়েতো আমাকে বুঝে না, আর তুমিও বুঝো না, তাই আমিও আর কিছু বুঝি না, এক পাগলীকে ভালোবাসলাম আমি, আর এখন আমিই আরেক পাগল, যদি মন চায় আর্শির সাথে তুমি আমারো ট্রিটমেন্ট করো মেন্টাল হসপিটালে রাখো, সমস্যা নাই। আমি আমার ভালোবাসার জন্য মেন্টাল হসপিটালে কেনো, রাস্তায় রাস্তায় ঐ যাযাবর কুকুরগুলোর মতো ঘুরে বেড়াতে রাজী”
শেষ বাক্যটা বলার সাথে সাথে অপরাজিতা এষের মুখ আলতো করে আঙ্গুল ছুঁয়ে বললো,
” এমনটা বলিস না আব্বু, তোর ভালোবাসা অবশ্যই জয়ী হবে! ”
এষের মুখে এতগুলো কথা শুনে, অপরাজিতা যেনো নিজের কাছেই নিজে হেরে গেলো। এ কেমন ভালোবাসা? এমন অবাধ্য রকমের ভালোবাসে ছেলেটা মেয়েটাকে? অপরাজিতার চোখে অশ্রু এসে গেলো আর্শির প্রতি এষের ভালোবাসা দেখে। চোখ দিয়ে টপটপ করে অশ্রু এসে পড়তে লাগলো তার নাসিকা টপকে লোনাজল মুখে চলে এল।
” মাম্মি, তুমি কাঁদছো কেনো? কি হয়েছে মাম্মি?”
আর্শি অপরাজিতার বেডরুমে প্রবেশ করলো।
অপরাজিতা বেডে বসে রয়েছে আর এষ পাশেই দাঁড়িয়ে রয়েছে।
” এই উল্লুটা তোমাকে কিছু বলেছে যে, কাঁদছো মাম্মি?”
পালটা প্রশ্ন করলো আর্শি।
” না, কিছু হয়নি, আমি তো খুশিতে কাঁদছি রে! এই এষের হাতে তোকে তুলে দিয়ে আমি নিশ্চিন্তে মরতে পারবো বলে খুশি লাগছে। এষ আর তোকে যা মানাবে না! ”
অপরাজিতা হাসতে হাসতে কথাগুলো বললো।
আর্শির কন্ঠে অভিযোগ,
” এই উল্লুটাকে আমার কোনো অংশেই ছেলে বলে মনে হয়না মাম্মি! এরে কিভাবে বিয়ে করি?”
আর্শির এহেম ছেলেমানুষী কথায় এষ আবারো ফুপির সামনে লজ্জায় যেনো মাটিতে ঢুকে যাচ্ছিলো।
সে হাঁক ছেড়ে বললো,
” এই…এই.. মুখ সামলে কথা বল আর্শি, বেশি লাভ করি বলেই, তুই যা ইচ্ছে, যেভাবে ইচ্ছে সেভাবেই আমাকে অপমান করতে পারিস না আর্শি! ব্যাসিক হিউম্যান রাইট বলে একটা কথা আছে কিন্তু, মনে রাখিস, তুই অশিক্ষিত নয়, আবার ছোটো খুকিও নয়, ভালোবাসার বিনিময়ে ভালোবাসা না দিলি, ভালো কথা। কিন্তু অসম্মান তো করতে পারিস না, সে অধিকার তোর নেই!”
বলেই এষ চুপ গেলো। তবে এষের এ ধরনের ভারবাত্তিক কথাবার্তা আর্শির চামড়া আর হাড্ডি ভেদ করে ভেতরে পৌঁছালো বলে মনে হলো না। বরং আর্শির মনে এক দুষ্টের হাসি হেসে গেলো।
মনে মনে ভাবলো, ” বেশি ভালোবাসো, ভালোবাসো বলতে বলতে মুখের ফেনা তুলে ফেলছো দেখছি, লেটস সি, কতখানি ভালোবাসো তুমি আমাকে, পরীক্ষা দিতে দিতে তুমি লেজ নিয়ে আবার আমেরিকা পালাবে বাছা, আমাকে বিয়ে করার সাধ তোমাকে মিটিয়েই ছাড়বো! ”
অপরাজিতাও এষের পক্ষ নিয়ে বললো,
” আর্শি তুমি তো কখনো মানুষকে এত হেয় করে কথা বলোনা, এষকে কেনো এমন করো? আমি এসব মোটেও পছন্দ করি না, এষ আমাদের গেস্ট, তোমার অপমানের কারনে আমাদের বাসায় না থেকে ছেলেটা হোস্টেলে উঠেছে, নিজের ভাইয়ের ছেলেকে নিজের বাসায়, নিজের কাছে রাখতে পারছি না, এর থেকে বড় দু:খের আর কি আছে?”
আর্শি মায়ের কথাগুলো শুনে বেশ আহত হলো,
” আচ্ছা মাম্মি, স্যরি, আম রিয়েলি স্যরি, আর এমনটি হবে না”
মুখে মা কে স্যরি বললো বটে, তবে ভেতরে ভেতরে তার অন্য কিছু খেলে যাচ্ছিলো।
মায়ের অনুরোধে অগ্যতা এষের সাথেই ভার্সিটির উদ্দ্যেশ্যে রওনা হলো সে। আর মাত্র একটা সেমিস্টার অর্থাৎ ছয়টা মাসই বাকি আর্শির তার গ্র্যাজুয়েশন শেষ করার জন্য। তাই শুধুশুধু ডিমেনশিয়ার নামক ব্যধীর অযুহাত দিয়ে এই সাড়ে তিন বছরের পরিশ্রমকে পন্ড করতে চায়না আর্শি। তারও ইচ্ছে মায়ের মতো সোসাইটিতে তারও একটা সম্মানজনক পদ হবে, লোকজন তাকে সম্মান করবে। বড় কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হবে সে। বড় নাম কামাবে, সব একার চেষ্টায়ই হবে! মা কে একা একা দেখতে দেখতে তারও মায়ের মতো সিঙ্গেল মাদার হতে ইচ্ছে করে। ফেমিনিজম তার রক্তে রক্তে মিশে গেছে। ভাই, বন্ধু হিসেবে পুরুষ ঠিক আছে, তবে সঙ্গী হিসেবে সে পুরুষদেরকে মানতে নারাজ। তাই এষকে তার এত অবহেলা, অনাদর।
গাড়িতে আর্শির পাশাপাশি বসে এষের নিজেকে এক মেরুদণ্ডহীন পুরুষ মনে হচ্ছিলো। কারন হয়তো তার জায়গায় অন্য কোনো পুরুষ হলে আর্শির সামনে নিজের পুরুষত্ব জাহির করেই দেখাতো। এবার এষেরও ইচ্ছে হলো এমন কিছু একটা করার। সে আড়চোখে আর্শির দিকে তাকালো। আর্শি কানে হেডফোন গুঁজে সিটে হেলান দিয়ে চোখ বুজে গান শুনছে। এষ আর্শিকে ডাক দেওয়ায় তার মনোযোগে ব্যঘাত ঘটলো। চোখে মুখে বিরক্তি নিয়ে সে ড্রাইভিং সিটে বসে থাকা এষের দিকে চাইলো। এষ শক্ত ভাষায় আর্শিকে প্রশ্ন করলো,
” আর্শি জানিস, হার্ট বুকের কোন পাশে থাকে?”
আর্শি হাসিমুখে বললো,
” এটা কে না জানে? বুকের সামান্য বাঁ পাশে হার্ট থাকে। ডান পাশে কম অংশ আর বাঁ পাশে বেশি অংশ থাকে!”
” আচ্ছা, ভালো কথা তুই জানিস, কিন্তু হার্ট রান্না করে খেতে কেমন লাগে জানিস? তোকে আজ আমার হার্ট রান্না করে খাওয়াবো চল!”
আর্শি হেসে দিলো,
” পাগল হয়েছিস? এ কেমন কথা?”
” আজ এক রেস্টুরেন্টে নিয়ে যাবো আজ তোকে, তারপর আমার হার্ট ভুনা খাওয়াবো তোকে!”
আর্শি কথাটা হেসে উড়িয়ে দিলো। হয়তো এষ ইয়ার্কি মারছে।
যেহেতু এষ নিজেই ড্রাইভ করছিলো সে, তাই ইচ্ছে করেই গাড়ি আর্শির ক্যাম্পাসের দিকে না নিয়ে সে নিয়ে গেলো আশুলিয়ার দিকে। ঐদিকে বেশ নির্জন স্থান আছে সে মনে মনে ভাবলো, ঐ যায়গায়ই সে আর্শিকে একটা উপযুক্ত শিক্ষা দেবে।
অন্যদিকে গাড়ি ঘুরাতে দেখেই আর্শি এষকে ভয়ে ভয়ে জিজ্ঞেস করলো,
” এ..এই গাড়ি কোন দিকে নিচ্ছিস? ঢাকা শহর ক..ক..কি চিনিস না নাকি?”
এষের চোখ দুটি কালো সানগ্লাসে ঢাকা। সে সামনের দিকে দৃষ্টি রেখে আদেশের স্বরে বললো,
” ওয়েট একটা কাজ আছে আশুলিয়ায়, কিছুক্ষণ একটু মুখ বন্ধ রাখ ধৈর্য্য ধরে”
বলেই এষ ফুল ভলিওমে গান ছেড়ে দিলো।
গান বাজতে লাগলো, ” বিট ইট, যাস্ট বিট ইট..”
একটা নির্জন বানানী ঘেরা স্থানে এষ গাড়ি থামালো।
নিজের পাশের গেইট খুলে আর্শির গেইটও খুলে দিলো।
আর্শি অবাকের সাথে বের হয়ে এলো।
ছোটো থেকেই সে এষকে দেখছে, তবে আজ এষের মধ্যে অদ্ভূত এক ক্রোধ দেখতে পাচ্ছে সে।
এষ আর্শিকে ধমকের সুরে বললো চল ঐখানটায় রেস্টুরেন্ট টা আছে, চল!
আর্শি দ্বীধাগ্রস্ত হয়ে এগিয়ে গেলো এষকে অনুসরন করে। সে মনে মনে ভাবলো হয়তো বনের গহীনে রেস্টুরেন্ট টা বনের গহীনে।
তাই এষকে অনুসরন করে সে হেঁটে চললো, বনের গহীনে।
এষ যখন বুঝতে পারলো অনেক গহীনে চলে এসেছে তখন একটা বিশাল গাছের আড়ালে দাঁড় করিয়ে এষ তার চোখের চশমা খুলে ফেললো প্রথমে, তার ডাগর ডাগর বিশাল চোখ গুলো লাল হয়ে আছে ক্রোধে। তারপর সে শার্ট এর বোতাম খুলতে লাগলো। এষের ফর্সা সাদা লোমশ বুক বের হয়ে এলো। আর্শি একবার তাকিয়েও আবার তাকানোর সাহস পেল না।
আর্শি এষের অভিপ্রায় বুঝতে না পেরে বলতে লাগলো, ” ছি: কি করছিস এসব, ঠিক আছিস তো তুই? ”
এষ নিজের টিশার্ট এর বোতাম সবগুলো খুলে কোথাও ছুঁড়ে মারলো তার শার্ট। তার প্যান্টের বেল্ট খোলা শুরু করলো। আর্শি ঘামতে থাকলো।
তারপর প্যান্ট ছুঁড়ে মারলো কোনো একদিন
আর্শি চেঁচিয়ে বলে উঠলো,
” ননসেন্স! কি করছিস এষ, পাগল হয়েছিস নাকি?”
এটুকু বলার পরই সে এষের উদোম শরীর নিজের চোখে যেনো না পড়ে সেজন্য গাড়ির দিকে হাঁট শুরু করলো।
এষ পেছন থেকে এসে দুহাতে আর্শির কোমড় জড়িয়ে ধরলো শক্ত করে।
” আমাকে তোর ছেলে মানুষ মনে হয়না, তাই না?”
বলেই সে আর্শিকে কোলে তুলে নিয়ে আবার গাছের আড়ালে দাঁড় করিয়ে দিলো।
নিজের সাথে আর্শিকে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে গাছের সাথে পিঠ ঠেকিয়ে আর্শিকে সোজা দাঁড় করিয়ে দিলো এষ। আর এক হাতে মুখ চেপে ধরলো।
এষ হাঁপাচ্ছে, আর আর্শি ভয়ে জুবুথুবু হয়ে গেছে, ঘামছে সে। এষ আর্শির মুখের কাছে মুখ এনে বললো,
” চিল্লানোর চেষ্ঠা করবি না আর্শি, গত ছয় মাস যাবত তুই কখনো বলে আসছিস আমি নাকি কোনো ছেলেমানুষই না। তাই তোকে যাস্ট আমার শরীর টা খুলে দেখাবো যে, আমি সত্যিই ছেলেমানুষ নাকি অন্য কিছু!”
বলেই সে আর্শির ঠোঁট থেকে হাত সরিয়ে ফেলে সেগুলোর দিকে নিজের ঠোঁট এগিয়ে নিয়ে গেলো বেশ করে ছুঁয়ে দেওয়ার জন্য।
আর্শি ভয় পেয়ে দ্রুত গতিতে বলতে লাগলো,
” না রে, প্লিজ, তোর পায়ে পড়ি আমাকে দেখাতে হবে না রে! আমি এই যে মেনে নিলাম, তুই ছেলেমানুষ, যাহ! আর কোনোদিন তোকে একথা বলবোন্না আমি, কথা দিলাম, এবার আমাকে ছেড়ে দে! প্লিজ, তুই ছেলেমানুষ, অব কোর্স তুই ছেলেমানুষ! এই যে কান ধরলাম, তুই ছেলেমানুষ!”
আর্শিকে এত কাছে পেয়েও এষ ছেড়ে দিলো এই কথাটা শুনে।
এবার সে একটা ছুড়ি বের করলো।
ছুড়ি দেখে আর্শি ঘাবড়ে গেলো।
” ক..ক..কি করবি তুই, এই ছুঁড়ি দিয়ে? মারবি আমাকে?”
” না! তোকে মারবো কেনো? তোর শরীরে একটা ফ্লাউয়ার পিঞ্চ ও করতে দেবো না, এই ছুড়ি দিয়ে আমি আমার বুকের বাঁ পাশের হার্ট টা বের করে তোকে রান্না করে খাওয়াবো, তাও তুই সুখী হ, আর কোনো এষ আর কোনোদিন তোকে ডিস্টার্ব করতে আসবে না কোনোদিন!”
এষ ছুড়িটা তার উদোম বুকের বা পাশে তাক করলো।
এষের একথা শুনে আর্শির অন্তরাত্মা সব শুকিয়ে কাষ্ঠ হয়ে গেলো।
সে কাঁদতে কাঁদতে বললো,
” প্লিজ এষ, এসব করিস না, এসব ভালো না! আমিও তোকে…”
(চলবে)