#এক_মুঠো_বুনোপ্রেম
পর্ব ৯
#জান্নাতুল_মাওয়া_লিজা
ভোর ছয়টা। এলার্মের শব্দে আর্শির ঘুম ভাঙ্গলো।
সকালে ঘুম থেকে উঠেই ইদানিং আর্শির নজর আগে যায় তার নিজের কাপড় চোপড়ের দিকে!(যা তার নিজের কাছেই আশ্চর্যকর!) তারপর যায় রুমের লকের দিকে, তারপর যায় তার ব্যালকনির দিকে। নিজের কাপড় চোপড়ের দিকে আগে তাকায় কারন তার অবচেতন মন শুধু এটাই ভাবে যে, এষ লুকিয়ে লুকিয়ে রুমে এসে ঘুমের ঘোরে কিছু করলো টরলো কিনা! তারপর লকের দিকে তাকিয়ে যখন দেখে গেইট লক করা, তখন মনে স্বান্তনা পায়, ” যাক! এষ আসেনি রুমে!” আবার তার মন এটাও চায় যে, এষ এসে ব্যালকনিতে ঘুমালেই বা কি? তাই ব্যলকনির দিকে তাকায়, ওখানে এষ আছে কিনা, তা খুঁজে দেখার জন্য। আবার নিজেকেই নিজে ধিক্কার দেয়! আর নিজে নিজেই বলতে থাকে,
” ধুর! এষ যাতে ব্যালকনিতে না আসতে পারে সেজন্যই তো রুমের গেইট লক করে শুয়েছি! তো আসে কিভাবে? আর আসলেও কি? ও কি খারাপ কোনো ছেলে? আমার অচেতনার সুযোগে সে কোনোদিন আমাকে টাচ করার মতো মানুষ নয়! আর সে তো আমাকে ভীষণই ভালোবাসে! ”
উল্লেখ্য যে, ব্যালকনিতে ঢুকার আলাদা কোনো গেইট নেই। রুমের গেইট দিয়ে রুমে ঢুকে, তারপর রুম পার করে ব্যালকনি। আর্শি এষের স্মৃতি মনে করতে করতেই চোখ মুছতে মুছতে ব্যালকনিতে এসে দাঁড়ালো। ব্যালকনিটা পূর্ব দিকে মুখ করে থাকায় চমৎকার সূর্যোদয় দেখা যাচ্ছে। ভোরবেলায় পূর্বের আকাশ দেখা আর্শির অন্যতম প্রিয় শখ। তবে রাতে ঘুমের ঔষধ খেয়ে ঘুমায় বলে বেশির ভাগ দিন ভোরে সে উঠতেই পারে না। তবে যেদিন সে উঠে, সেদিনটা সে যেনো সবটা সৌন্দর্য্য স্বীয় দৃষ্টিতে লুফে নেয়। একদৃষ্টে মুদ্ধ নয়নে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে মত্ত থাকে সে।
আর্শি মুগ্ধ হয়ে কান পাতে, ” কি সুন্দর পাখিরা কলতান করছে!”
আর্শিদের বর্তমান বাড়িটা আফতাব নগর তথা হাতির ঝিল লেকের ধারে হওয়ায় চারপাশ বেশ খোলামেলা। আধুনিক ঢাকা শহর লোকে লোকারণ্য হলেও এ পাশটা বেশ শুনশান। নেই রাস্তাঘাটের গাড়ির হর্ণ, নেই লোকসমাগম করা বাজার ঘাট। শুধুমাত্র আবাসিক বাড়িঘর, সুপার শপ আর পার্ক! সম্পূর্ণ পূর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক এখানে গড়ে উঠেছে সুশৃঙ্খল আধুনিক ঢাকা সিটি।
ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে আর্শি সূর্যের মৃদু আলোক রশ্মি আর পাখিদের কলতানের মাঝে বারবার হারিয়ে যাচ্ছিলো, তবে হটাৎ ই কার জানি ডাক শুনতে পেলো লেকের ধারে ফুটে থাকা সাদা কাশফুলগুলোর মাঝে থেকে।
ভোরের অরুন রাঙ্গা সূর্যের আলোয় আবছা করে দেখতে পেলো, দূরে, বহুদূর হতে কেউ ওকে ডাকছে আর চিৎকার করে বলছে,
” আর্শি…, আর্শি… আই লাভ ইউ, আই লাভ ইউ…”
আর্শি নি:শব্দে বলে উঠলো, ” এষ!”
এষের কন্ঠস্বর প্রতিধ্বনিত হয়ে তিন দুগুনে ছয় হয়ে গেলো।
আর্শির হৃদপিন্ডের র’ক্ত ছলাৎ ছলাৎ করে উঠলো।
ষ্পষ্ট দেখতে আর্শি তার মোটা ফ্রেমের চশমাটা দ্রুত পড়ে নিলো। এবার এষকে স্পষ্ট দেখতে পেলো সে। বিড়বিড়িয়ে বলে উঠলো,
“পাগল নাকি ছেলেটা! ঐ কাশ বনে প্রায়ই বি’ষধর সাপ বের হয়! জানের ভয় নেই এর! ”
আর্শিও হাত নাড়িয়ে জানান দিলো যে, সে শুনতে পারছে।
সাথে সাথে কল বেজে উঠলো আর্শির ফোনে।
এষ ব্যস্ত স্বরে বলে উঠলো,
” আর্শি, আজ রাতে খুব ইচ্ছে হচ্ছিলো, তোকে দেখতে, কিন্তু তুই তো আবার দরজা লক করে…”
আর্শি দূরের কাশবনে দাঁড়িয়ে থাকা এষের দিকে তাকিয়ে বললো,
” মিস্টার এষ, আপনিই কিন্তু দরজা লক করে ঘুমাতে বলেছিলেন আমাকে, কারন আমাকে দেখলেই আপনার নাকি হুঁশ উড়ে যায়….!”
আর্শিকে কথার মাঝখানে থামিয়ে এষ বললো,
” আর্শি জান আমার, তোকে একবার হাগ করার জন্য আমার কলিজাটা পুড়ে যাচ্ছে রে! গেইট টা খুলবি প্লিজ?”
আর্শি বললো,
” তাহলে ওখানে কি করছিস, কাশবনে?”
এষ হেসে উত্তর করলো,
” আমার মন বললো, তুই আজ সকালে উঠে সূর্যোদয় দেখার জন্য এখানে আসবি, তাই কাশবনে এসে দাঁড়ালাম, তাছাড়া চিৎকার করে বলতেও মন চাইছিলো যে, তোকে ভালোবাসি, তাই এখানে এসেছি, এখন এসব বাদ দে, আগে গেইট টা খুলে দে”
আর্শি আস্তে করে “আচ্ছা” বলে গেইট টা খুলতেই দেখে, এষ একদম দরজায় এসে গেছে।
আর্শি ভ্রু উঁচিয়ে হেসে বললো ” সো ফার্স্ট!”
আর্শিকে আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই সরাসরি জড়িয়ে ধরলো সে। আর্শি এষের এত তাৎক্ষণিকতায় হতবাক! এষ যেনো মুহূর্তের মধ্যেই ডুব দিলো আর্শির মধ্যে। আর্শিরও দুচোখ বুজে গেলো পরম আদরে।
এভাবে কতক্ষণ কেটে গেলো কে জানে। হঠাৎ ই নিরবতা ভেঙ্গে এষ আর্শির কানের কাছে মুখ এনে চোখ বন্ধ করেই বলতে লাগলো,
” তোকে ছাড়া এক ন্যানো সেকেন্ডও আমার দম বদ্ধকর লাগে রে!”
আর্শি স্পষ্ট বুঝতে পারলো যে, এষের গলা ধরে আসছিলো আবেগে। সাথে চোখও হয়তো ভিজে আসছিলো । আর্শিও ওভাবেই লেপ্টে জড়িয়ে দাঁড়িয়ে আছে। পৃথিবীতে মহাপ্রলয় লাগলেও যেনো কেউ ওদের বিচ্ছিন্ন করতে পারবে নাহ!
এষের নি:স্বাসে যেনো গরম জলিয় বাষ্প বের হচ্ছে। কান্নারত খসখসে কন্ঠে সে বলতে লাগলো,
” আমি একদম ফেঁসে গেছি রে আর্শি! একদম ফেঁসে গেছি, এখন তুই যদি বলিস তোকে পাওয়ার জন্য আমাকে আগুনে ঝাঁপ দিতে হবে, বা পানিতে ডুবতে হবে, আমি হয়তো তাই ই করবো, এম আই সিক আর্শি? আমি কি মেন্টালি সিক? এমন কেনো হলো? আর্শি? আমি তোকে ভালোবেসে একেবারে নি:স্ব হয়ে গেলাম, আমাকে বাঁচা আর্শি আমাকে বাঁচা!”
আর্শি এবারে হেসে বলে উঠলো,
” ইউ আর নট অনলি নি:স্ব! তুই নি:স্ব হওয়ার আগে আমাকেউ দেওলিয়া বানিয়ে ছেড়েছিস রে! আই অলসো ডিপলি ইন লাভ উইথ ইউ! তবে ছেলেদের মেয়ে মানুষের মতো কান্না আমার ভালোলাগে না। চোখ মুছ এক্ষুণি!”
এষ নিজের চোখ আর্শির কামিযে মুছে নিলো। একটা ফিকে হাসি দিলো তারপর আর্শির একটা হাত স্বীয় বুকে টেনে নিয়ে আকুল চোখে তাকালো আর্শির পানে, তারপর বলে উঠলো,
” তুই একটা কথা দিবি রে? বল?”
আর্শি হেসে বললো,
” মানুষ ওয়াদা দেয় ওয়াদা ভাঙ্গার জন্য, সেজন্য আমি কাউকে ওয়াদা দেই না, পরে যদি রাখতে না পারি? তাছাড়া আমার অসুখের কথা তো তুই জানিসই, মাঝে মাঝে আত্মভোলা হয়ে যাই, সেক্ষেত্রে তোকে দেওয়া কথা ভুলে যাওয়ার সম্ভাবনাও অনেক বেশি, তাই থাক না…!”
আর্শির এভাবে কথা বলা দেখে এষ আবারো তার চোখ দিয়ে অশ্রুর বর্ষণ ঢালতে শুরু করলো।
সে গটগট করে বলতে লাগলো, দাঁড়ি কমা সেমিকোলন বিহীন,
” আর্শি আমি তোকে ছাড়া একটা মুহূর্তও কল্পনা করতে পারি না, মাঝে মাঝে মনে হয়, তুই আমাকে কি ব্লাক ম্যাজিক ট্যাজিক কিছু করেছিস নাকি? তাহলে আমার এমন লাগে কেনো? আমি আর দেরি করতে পারবো না, তুই আজই আমার হয়ে যা প্লিজ, আজই..আজই আমি ফুপিকে বলে তোকে নিয়ে চিরস্থায়ী বন্ধনে আবদ্ধ হতে চাই, প্লিজ না করিস না! বাঁচা আমাকে, প্লিজ..”
আর্শি এষের বাঁধন হতে নিজেকে সামান্য মুক্ত করে গাঢ় দৃষ্টিতে তার পানে চেয়ে বললো,
” আমার মেডিক্যাল কমপ্লেক্সেটির কথা তো তুই ভালো করেই জানিস, আমার ট্রিটমেন্ট চলছে সেটাও তুই জানিস, তোর ফ্যামিলি আমাকে কোনোদিন মেনে নেবে না, সেটাও জানিস, শুধু আমার মায়ের রাজী থাকায় আমি তোকে বিয়ে করে বসবো এটা ভুল কথা, নিজের পেরেন্টস দের বোঝা গিয়ে, ভাইবোন্ দের বোঝা তারপর বিয়ে হবে”
এষ হঠাৎ করতালি দিয়ে উঠলো,
” বাহ! যুক্তি তো ভালোই দেখাস, আমার এত এত আবেগেও তোর নিঠুর মন গলে না! হাউ প্রিটি! এই নিঠুর রমনীকেই আমি আমার স্বর্বস্ব শঁপেছি। ঠিক আছে, আমি এক মাসের মধ্যেই আমার বাবা মাকে এদেশে আনছি, তারপর? আর কি কি ডিমান্ড তোর? তুই সারা পৃথিবী চাইলে তাই ই তোর পায়ের তলায় লুটাবো আমি, এই কথা আমি দিলাম!”
আর্শি এষকে এক আঙ্গুলে ধাক্কা দিয়ে বললো.
” ধুর! ডোন্ট টক সিলি! আমি মোটেও এত লোভী না, তবে এখন তোর একটা কিস পেতে খুবই লোভ হচ্ছে!”
একথা বলতেই এষ তার আর্শির গালে টুপ করে একটা চুমু সজোরে দিয়ে পালালো।
.
.
” এই এই, প্রেমদাস যাচ্ছে রে! প্রেমদাস!প্রেমদাস! হই হই প্রেমদাস, ইয়ো ইয়ো প্রেমদাস! প্রেমদাস! ”
হঠাৎই একদল মেয়ে এষকে উদ্দ্যেশ্য করে এভাবে ধবণি দিয়ে উঠলো। আর মেয়েদের দলটা উক্ত বাক্যটি ব্যাঙ্গাত্মক স্বরে বলার পর হর্ষধবণি দিয়ে উঠলো। এষ বুঝতে পারলো প্রেমদাস ওকেই বলা হয়েছে। সে ভাবলো, প্রেমের জন্য, প্রেমিকার জন্য সে দাসত্ব বরণ করেছে বলেই তাকে প্রেমদাস বলা হয়েছে।
এষও মেয়েদের দলটাকে উদ্দ্যেশ্যে করে পাল্টা বলে উঠলো,
” কি!জ্বলন লাগে নাকি?! নিজেদের হ্যান্ডসাম, কেয়ারিং বয়ফ্রেন্ড নেই বুঝি! তাই অন্যের কেয়ারিং দেখে জেলাসী তে পুড়ে মরে!”
মেয়েদের দলটা আর কিছু না বলার সুযোগ পেয়ে কে’টে পড়ে।
এই বলে এষ পাশে তাকাতেই দেখে নেহালকে।
নিহুর বয়ফ্রেন্ড নেহালকে এষ বেশ কয়েকবার দেখেছে এই ক্যাম্পাসেই।
কখনো কথা হয়নি তবে আজ এষ কথা বলার জন্য এগিয়ে আসতেই হাসিমুখে নেহালই বলে উঠলো,
” হাই এষ! আমি নেহাল রহমান”
এষ ও আগ বাড়িয়ে হাত এগিয়ে দিলো করমর্দনের জন্য!
নেহাল এষের হাত বেশ শক্ত করে ধরে ঝাঁকুনি দিয়ে বললো,
” একদম মজবুত ইটের গাঁথুনি, জিম করা হয় নাকি?”
এষ হাসিমুখে মাথা নাড়লো। নেহাল এষের ভুল ভাঙ্গিয়ে দিয়ে বললো,
” ব্রো, ভুল বুঝবেন না, গার্লস গ্রুপটা প্রেমদাস আপনাকে বলেনি, বরং আমাকে বলেছে, আপনি তো মাত্র ছ মাস যাবত আর্শির পিছুপিছু ক্যাম্পাসে, আর আমি তো গত সাড়ে তিন বছর যাবত ই আসছি, আমি নিজেও একটা প্রাইভেট কোম্পানিতে জব করি, আপনার মতো সারাদিন সারাক্ষন এখানে বসে থাকতাম না, তবে সকাল, বিকাল দুবার আসতাম নিহুর পিছুপিছু, তাই আমার নাম এরা দিয়েছিলো প্রেমদাস!”
এষ হেসে উঠলো,
” যাক বাবা, এখানে কেউ তো একজন আছে তার সমকক্ষ!”
এষ আর নেহাল সেন্ট্রাল ক্যাফেটেরিয়া তে বসলো।
ওয়েটারকে কফির অর্ডার দিয়ে দুজনে মুখোমুখি দুটো চেয়ারে বসলো।
এষ তার নিজের কথা বলা শুরু করলো,
” আমার পুরো নাম এষাণ কবির চৌধুরী। গত ছ মাস ধরেই আর্শি যতক্ষণ ক্লাশ করে আমি ততক্ষণ ভার্সিটি গেইটের রেস্টুরেন্ট বা টি এস সিতে বা ভার্সিটি ক্যাফেটেরিয়াতে বসে থাকি। আবার কখনো কখনো ক্যাম্পাসের প্লে গ্রাউন্ড(খেলার মাঠ) এই হেঁটে চলি বা বসে থাকি। কানে থাকে হেডফোন। আর্শি মোটেও পাত্তা দিতো না, তাই সংঙ্গী হতো গান, আর বিভিন্ন লিরিক। এভাবে উদ্দ্যেশ্যহীন ভাবে ঘুরাঘুরি করার কারনে বহু জনের বহু প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েছি এতদিন। এ নিয়ে বেশ কয়েকবার বেশ কয়েকজন আমাকে নিয়ে ট্রল ও করেছে। একদল আমকে র্যাগ ও দিতে ধরেছিলো একবার। গলা উঁচিয়ে একদল স’ন্ত্রাস টাইপের ছেলে তাকে ক্যাম্পাসের গেইটে থামিয়ে দিয়েছিলো। তবে ঠিক সে সময়ই আর্শি এসে ছেলেদের দলটাকে থামিয়ে আমাকে নিজের কাজিন পরিচয় বলে দিয়েছিলো। আর আমি বললাম, কাজিন নই, আমি এর প্রেমে দিওয়ানা, কি করবি কর! তো ছেলেদের দলটা আমার এভাবে বলা দেখে ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে দিলো দৌড়। ”
নেহাল সবটা শুনে একবাক্যে বললো,
” ভাই এত ভালোবাসেন আপনি আর্শিকে? আমি তো শুনেছিলাম আপনি আমেরিকার কলম্বিয়া স্টেইট ইউনিভার্সিটি হতে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়েছেন, বিশাল বড় ব্যাপার! এত বড় ডিগ্রী থাকা স্বত্ত্বেও আপনি পড়ে আছেন এই দেশে, একটা মেয়ের ভালোবাসা অর্জনের জন্য! অবিশ্বাস্য! রিয়েলি ইউ আর সামবডি মিরাকল!”
নেহালের মুখে এসব শুনে এষও বলে উঠলো নেহালকে,
” ব্রো, শুধু আমারই প্রশংসা করলেন, আপনিও একটা চিজ ভাই, সাড়ে তিন বছর ধরে সকাল বিকাল দুইবার ডিউটি করছেন প্রেমিকার পেছনে, এত এনার্জি কোথায় পান?”
নেহাল হেসে বলে উঠলো,
” ঐ যে একবার যদি নিহু আমার দিকে তাকিয়ে হাসে, আমি ঐ হাসিমুখ দেখে চলে যেতে পারবো মাইলস অব ডিস্টেন্স! ও ই আমার সকল এনার্জির ভান্ডার, তবে জানেন একিদমই পাত্তা দেয়না আমাকে মেয়েটা। এই দেখেন প্রতি দিন এভারেজে দুইশ টা ভয়েজ মেসেজ পাঠাই আমি, ওর গুণগান, বন্দনা, অর্চনা গেয়ে। বিনিমিয়ে পাঁচটা মিনিট আমার সাথে ঠিকঠাক কথা বলে না ও। আমার সেলারির এক টাকাও আমার বাবা মা কে দেই না, বাবা মা এমনিতেই সেল্ফ সাফিসিয়েন্ট, নিহু ও নেয় না, ও মোটেও লোভী মেয়ে নয়, তবে ওর নামে একটা ফান্ড গড়েছি আমি, আমার সারা জীবনের সকল উপার্জন ওখানে জড়ো করবো, আর আমি ঐ ফান্ড ওকে উইল করে দিয়েছি অলরেডি। ”
নেহালের কথা শুনে এষ যেনো স্তব্ধ হয়ে গেলো। চক্ষু দুটো ছানাবড়া করে সে বললো,
” আপনার ভালোবাসা তো পুরাই অন্য লেভেলের ভালোবাসা, এক্কেবারে প্রো.. প্রো.. প্রো.. প্রো..প্রো…ইনফিনিটি লেভেলের ভালোবাসা এটা!”
নেহাল লজ্জায় কিছুটা লালচে হয়ে উঠলো।
লজ্জাকাতুরে মুখ নিয়ে সে ও বলে উঠলো,
” আরে! ব্রো, আপনার টা তো প্রো..প্রো..প্রো ম্যাক্স ইনফিনিটি!”
একথা শুনে দুজনেই হেসে উঠলো।
(চলবে)