এলোকেশী বিচিত্রা ফুল পর্ব-০৩ এবং শেষ পর্ব

0
15

গল্পঃ #এলোকেশী_বিচিত্রা_ফুল
কলমেঃ #সুকন্যা_ইশা
#সমাপ্তি_পর্ব

ছেলেটা হাসলো নীরবে। বললো,

“জিজ্ঞেস করলাম। উপভোগ তো নিশ্চয় করেছেন। তাই।”

সাম্রাজ্ঞী জবাব দিলো না তবুও। নিজেই শুধালো,

“আপনার নামটা জানা হয়নি।”

“কথা ঘোরাচ্ছেন?”

“না।”

“নীলাদ্র তালুকদার। প্রেসক্রিপশনে নিশ্চয় ছিলো?”

“খেয়াল করিনি।”

“বাহ্! একটা মানুষকে রাতের ব্যবধানে সুস্থ করে তুললেন, অথচ তার নামটাই খেয়াল করলেন না?”

সাম্রাজ্ঞী চুপ রইলো। পাশে থাকা মাধবীলতার মুকুটটা সে আবার টুকরো টুকরো করে আলাদা করেছে। নতুন করে তৈরি করছে সে। নীলাদ্র তা দেখছে মাঝে মাঝে। তবে তার চোখের ধারালো দৃষ্টি সাম্রাজ্ঞীর মুখ জুড়ে।

বেশ কিছুক্ষণ অতিবাহিত হওয়ার পরে নীলাদ্র নামক সেই পুরুষ হঠাৎ প্রশ্ন করলো,

“বিয়ে করবেন?”

সাম্রাজ্ঞীর বুক কাঁপলো ভীষণ! বিস্ফোরিত নয়নে সে তাকিয়ে রইলো নীলাদ্রর দিকে। হঠাৎ এমন কোনো প্রশ্ন করবে এই লোক,তা সে ঘুনাক্ষরেও বুঝতে পারেনি। আশাহীন এই প্রশ্নের জবাবে সাম্রাজ্ঞী কিছু না বলাতে নীলাদ্র পুনরায় বললো,

“অবাক হলেন কেন? সাধারণ প্রশ্নই তো করলাম।”

“আপনার জন্য সাধারণ হতে পারে। আমার জন্য নয়।”

নীলাদ্র ঠোঁট চেপে হাসে।

“তাহলে কি এবার প্রশ্নটা আরেকটু জটিল করে করবো?”

“মানে?”

সাম্রাজ্ঞীর সন্দিহান কন্ঠস্বর। কী সব বলছে এই লোক!

“বিয়ে করবেন আমাকে?”

সাম্রাজ্ঞী দাঁতে দাঁত চাপতেই নীলাদ্র আগেভাগেই বলে উঠলো,

“শান্ত হয়ে সবটা শুনুন। আজকের এই নরম বিকেলটা নাহয় আমায় দিলেন। বিশেষ কোনো ক্ষতি হবে কি?”

“কী শুনবো আর? আপনার যাচ্ছে তাই কথাবার্তা? অর্থহীন প্রশ্ন?”

মেয়েটা রাগী স্বরে শব্দ ছুঁড়লো। কিন্তু নীলাদ্র সেসব গায়ে না মেখে হাসলো মৃদু। পুরুষের ঠোঁট থেকে যেন হাসি সরতে চায় না একদম!

“সত্যিই কি অর্থহীন প্রশ্ন? আপনি চাইলেই আমার প্রথম প্রশ্নটার জবাব দিতে পারতেন।”

সাম্রাজ্ঞী কী জবাব দেবে খুঁজে পেলো না। অগত্যা বললো,

“একাকীত্ব সুন্দর। নিজের মতোই থাকা,নিজের মতোই বাঁচা। হ্যাঁ আমি ভীষণ উপভোগ করি এই একাকীত্বকে।”

“হুম। একাকীত্ব সুন্দর। উপভোগ করার মতোই। কিন্তু সবসময়ের জন্য নয়। সারাজীবনের জন্য নয়।”

সাম্রাজ্ঞীর নজর তার হাতের মাধবীলতাগুলোর ওপর। সে ভাবনায় নিমজ্জিত হতে চেয়েও পারলো না নীলাদ্রর জন্য। শুনলো,

“জীবনের একটা পর্যায়ে গিয়ে আমাদের সবারই একটা বিশ্বস্ত,কাছের হাত প্রয়োজন হয়।”

“এসব আমাকেই কেন বলছেন?”

“জানি না। যদি সোজাসাপ্টা শুনতে চান, তাহলে বলবো আমি আপনাকে বিয়ে করতে চাই।”

সাম্রাজ্ঞী কেমন অবুঝের মতন তাকালো। নীলাদ্রর এমন হুটহাট বলা কথাগুলোর কোনো অক্ষর যেন তার জানা নয়। সে রূঢ় স্বরে বললো,

“চেনা নেই,জানা নেই। বিয়ে করতে চান মানে কী?”

নীলাদ্র সাম্রাজ্ঞীর হাত থেকে মাধবীলতাগুলো নিয়ে ধীরে ধীরে একটা একটা যুক্ত করতে লাগলো। সাথে বলে উঠলো,

“যে এলোকেশীকে দেখার পরে আমার জ্বরের রাত কেটেছে নির্ঘুম, তাকে ছাড়া আমার চলবে না আর।”

“মানে?”

সাম্রাজ্ঞীর কন্ঠে প্রবল সন্দেহ! সবটা বুঝেও যেন সে কিছুই বুঝতে চাইছে না। নীরব ভূমিকা পালনে নিরত হলো সে। অপরদিকে নীলাদ্রর চোখ যেন সরতে চাইছে না সাম্রাজ্ঞীর চুলগুলোর ওপর থেকে। গত রাতে মেয়েটা যখন নীলাদ্রর এক ছোট ভাইকে ওষুধ বুঝিয়ে দিচ্ছিলো,তখনই এক নজর দেখেছে সে সাম্রাজ্ঞীকে। ধ্যান জ্ঞান ছিলো না মেয়েটার এলোমেলো চুলগুলোতে। খোঁপায় আবদ্ধ চুলগুলো কখন যে খুলে এলিয়ে গেছিলো পিঠজুড়ে,তা বুঝতে পারেনি মেয়েটা।

নীলাদ্র সাম্রাজ্ঞীর মুখের দিকে চেয়ে দেখে মেয়েটা কৌতুহল নিয়ে তার দিকে তাকিয়ে রয়েছে এখনো। তাই অবশেষে নীলাদ্র বললো,

“সারাজীবন যদি এই এলোকেশী রূপ দেখার সুযোগটা দিতেন,তাহলে ধন্য হতাম।”

“দেখুন,আজেবাজে কথা বলবেন না। আপনি আমার অতীত জানেন না।”

“আমি তো অতীতে বাঁচি না। আমি বর্তমানে বাঁচি। অতীত দিয়ে আমি কী করবো?”

সাম্রাজ্ঞী অধরোষ্ঠে বিরক্তি প্রকাশ করে পুনরায় উঠে যেতে চাইলো। এই কথোপকথন তার জন্য স্পর্শকাতর। সে তো চায় না তার পুরনো ক্ষতকে খোঁচাতে!

নীলাদ্র মাধবীলতার মুকুটটা তৈরি করে ফেললো। একটু এদিক সেদিক হয়েছে বটে! তবে সে পেরেছে। আলগোছে নরম ফুলের মুকুটটাকে সে সাম্রাজ্ঞীর সামনে রাখলো। সাম্রাজ্ঞী অবাক হয়। পুরুষ মানুষ এসব কীভাবে পারে! তাও আবার শহুরে মানুষ!

“পনেরো বছরের যে সাম্রাজ্ঞী স্বামীকে তালাক দিয়ে নিজের বাবার কাছে ফিরে আসতে দু’বার ভাবেনি,সেই সাম্রাজ্ঞীর প্রতি আমার বিশেষ সম্মান রইলো। দশ বছরে কঠোর পরিশ্রম করে নতুন ভাবে যে সাম্রাজ্ঞী নিজের যোগ্যতায় তার অবস্থান গড়ে নিলো,তাকে নিয়ে আমি গৌরব করছি। আজকের যে সাম্রাজ্ঞী অন্য নারীর ঢাল হয়ে দাঁড়িয়েছে,সেই সাম্রাজ্ঞীর প্রতি আমার সম্মান বেড়েছে লক্ষ গুণ। আর গতরাতে দেখা এলোকেশী সাম্রাজ্ঞীর প্রতি আমার এক বুক প্রেম।”

নীলাদ্রর প্রতিটা কথা মেয়েটা মন দিয়ে শুনলেও শেষ বাক্যটা সাম্রাজ্ঞীকে আক্রমণ করলো ভীষণ তেড়ে। সে সহসাই রেগে গিয়ে বললো,

“আমি এই প্রেম শব্দকে ঘৃণা করি। প্রেমের প্রতি আমার অনুভূতি সবসময় ঘৃণ্যই থাকবে।”

মেয়েটা না চাইতেও তার চোখে জল জমলো। সে লুকিয়ে নিলো তা। কানে এলো তার পুরুষালী কন্ঠস্বর।

“প্রেম পবিত্র। ঘৃণা করলে ঐ মানুষগুলোকে করুন যারা আপনার প্রেমের মূল্য দিতে পারেনি। প্রেমকে কেন আপনি ঘৃণা করবেন? প্রেম ঘৃণা করার মতো কিছু নয়। প্রেম অনুভব করতে হয়। প্রেম উপভোগ্য, ঠিক যেমনটা আপনি একাকীত্ব উপভোগ করেন।”

সাম্রাজ্ঞী বসে থাকে চুপচাপ। অস্তমিত সূর্য আর মাত্র কিছুক্ষণের মধ্যেই সম্পূর্ণ ডুবে যাবে। চারিদিকে লালাভ আভা ছড়িয়ে একটা মোহনীয় পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে। পাখিরা নীড়ে ফিরে যাওয়ার আগ মুহূর্তে খেলাধুলা করে নিচ্ছে খুব। তাদেরই কলরবে মুখরিত আকাশ।

সাম্রাজ্ঞী কৌতুহল নিয়ে প্রশ্ন করলো,

“আপনি আমার সম্পর্কে এতো কিছু কীভাবে জানলেন?”

“সেসব তো লম্বা কাহিনী।”

“শুনি?”

দেখতে বেশ সুদর্শন পুরুষটা মুচকি হাসলো। বললো,

“ভোরেই বেরিয়েছিলাম আপনার খোঁজে। বাবা মায়ের মুখে শুনেছি আপনি কোনো এক সাহুকারের মেয়ে। এটা বলতেই দেখলাম গ্রামের প্রায় সবাই আপনাকে চেনে এক নামে। সাম্রাজ্ঞী! তারপরই এই কয়েকজনের কাছ থেকে খন্ড খন্ড তথ্য পেয়ে জানতে পারলাম এলোকেশীর অতীত সম্পর্কে। আবার…”

“এলোকেশী ডাকছেন কেন? নাম ধরেই ডাকুন।”

“আমি এলোকেশী বলেই ডাকবো।”

নীলাদ্রর সটান জবাবে সাম্রাজ্ঞী কেমন চুপসে গেলো। শক্ত মনের মেয়েটা অন্য দিকে তাকিয়ে নরমভাবে বসে রইলো।

নীলাদ্র পুনরায় বলতে লাগলো,

“আবার সকালে বাবার জমিজমা গুলো দেখে একটু বাড়ির পাশের দিকে যেতেই শুনলাম বেশ হট্টগোল। তারপর সেখানেই দেখলাম, কীভাবে আমার দেখা রাতের সেই এলোকেশী বুড়ো বুড়ি দুটোকে ওখানে শুইয়ে রাখার হুমকি দিলো।”

নীলাদ্রর রঙ্গ রসিকতার সুরে বলা কথায় সাম্রাজ্ঞী ঠোঁট চেপে নীলাদ্রর আড়ালে হাসলো।

“তো,আপনার কী সিদ্ধান্ত?”

“কিসের সিদ্ধান্ত?”

চটপটে জবাব সাম্রাজ্ঞীর। নীলাদ্র বললো অকপটে,

“বিয়ে করবেন না আমাকে? দেখুন,এই মাধবীলতার মুকুটটা তৈরি করেছি আপনাকে ইমপ্রেস করার জন্য। ইমপ্রেস হননি আপনি?”

সাম্রাজ্ঞী হঠাৎ খিলখিলিয়ে হেসে উঠলো। কতগুলো দিন পরে এই প্রাণবন্ত হাসি! কলেজে, বিশ্ববিদ্যালয়ে কত ছেলে তার মন পাওয়ার চেষ্টা করলো। কিন্তু মন তো দূরের কথা,দুটো শব্দও তারা সাম্রাজ্ঞীর ঠোঁটে ফুটতে দেখেনি। কিন্তু,এই অচেনা মানুষটা কীভাবে হাসালো কঠিন সাম্রাজ্ঞীকে!

সাম্রাজ্ঞী জিজ্ঞেস করলো,

“শিখেছেন কীভাবে?”

“এই যে এখানে এসেই। আপনার কাছ থেকে দেখে।”

সাম্রাজ্ঞী উঠে দাঁড়ায়। সবজির বড় ঝুড়িটা বাম কোমরে ঠেকিয়ে নিয়ে ডান হাতে তুলে নিলো অন্য সবজির মাঝারি বস্তাটা। নীলাদ্রও উঠে দাঁড়ালো তবে মাধবীলতার মুকুটটা তার হাতে নিয়ে। বারকয়েক সাম্রাজ্ঞীকে সাহায্য করতে চাইলেও সাম্রাজ্ঞী গ্রহণ করলো না সাহায্যের হাত।

সূর্য ঢলে পড়েছে একেবারে। একটু পরেই শোনা যাবে গ্রামের মসজিদে আযানের ধ্বনি,মন্দিরগুলোতে সন্ধ্যা আরতি।

সাম্রাজ্ঞী কোনো বাক্যব্যয় না করে হাঁটা ধরতেই নীলাদ্রও পাশে পাশে হাঁটতে লাগলো তারপর। বললো,

“এটা নেবেন না? এতো কষ্ট করে বানালাম।”

“আপনি তো অর্ধেকটা বানিয়েছেন। একদিন নাহয় সম্পূর্ণ একটা মুকুট বানিয়ে উপহার দেবেন।”

“পরোক্ষভাবেই কি তবে পজিটিভ জবাব দিলেন?”

“উহুম। শহুরে মানুষকে একটু যাচাই বাছাই করতে হবে না?”

“বসের বকুনি খেয়ে তবে আরো কয়েকটা দিন থেকে গেলাম গ্রামে। শুধু এলোকেশীর যাচাই বাছাইয়ের পদার্থ হিসেবে।”

সাম্রাজ্ঞী আবারো মিটমিটিয়ে হাসলো নীলাদ্রর হৃদস্পন্দন বাড়িয়ে।

৮.
সেদিনের পরে বেশ কিছুদিন গ্রামে থেকে গিয়েছিলো নীলাদ্র। শহরে গেলেও খুব কম সময়ের ব্যবধানে গ্রামে ফিরে আসতো। এতে তার পরিবার অবাক হতো সবচেয়ে বেশি। কারণ, শৈশব থেকে শহরে বেড়ে ওঠার কারণে তালুকদার বাড়ির ছেলেমেয়েরা গ্রামের দিকে মুখ ফেরাতো না সহজে। কিন্তু এখন বাড়ির বড় ছেলেটার কী যে হলো! ঘন ঘন নিজ বাড়িতে চলে আসে।

তেমনই একদিন হুট করে গ্রামে ফিরেই মা বাবাকে নিয়ে সোজা চলে গেলো সে সাহুকারের বাড়িতে। সরলভাবেই জানিয়ে দিলো, সাম্রাজ্ঞীকে সে বিয়ে করতে চায়। সাম্রাজ্ঞী এতে কিছুটা বিচলিত হলেও পরে সম্মতি দিয়েছে। কারণ,এবার আর সে বয়ঃসন্ধির আবেগে গা ভাসিয়ে প্রেমে ঢলে পড়েনি। বেশ বিচক্ষণতার সাথে জীবনসঙ্গী নির্বাচন করেছে সে। তাছাড়া,সাম্রাজ্ঞীর বাবাও তালুকদার বাড়ির কর্তাকে চেনেন। তাই সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে তেমন একটা বেগ পেতে হয়নি তাঁদেরও।

সেদিন বাড়ির খালি উঠোনে দাঁড়িয়ে নীলাদ্র সাম্রাজ্ঞীকে একটা মাধবীলতার মুকুট উপহার দিয়েছে সত্যিই। তা পেয়ে কেঁদে ভাসিয়েছে কঠিন সাম্রাজ্ঞী। নীলাদ্র আলগোছে মেয়েটার মাথায় হাত বুলিয়ে তার চিবুক উঁচিয়ে বলেছে সেদিন,

“আপনি একটা ফুল,সাম্রাজ্ঞী। আমার হৃদকোটরে ফোঁটা এক বিচিত্রা ফুল। আপনি এই কঠিন তো এই নরম। এই কাঁদেন তো এই হাসেন। এই রেগে যান তো এই শান্ত হন। কী বিচিত্র রূপ আপনার! একেবারেই বিচিত্রা ফুলের মতো। বেলায় বেলায় রঙ বদল। আমার এলোকেশী বিচিত্রা ফুল।”

সাম্রাজ্ঞী কথা বলে না। সুখের সন্ধানে নেমে সে সার্থক? নাকি সুখ নিজে থেকে এসেই ধরা দিয়েছে তাকে?

গত দিনগুলোতে সাম্রাজ্ঞী খুব চিনে নিয়েছে নীলাদ্রকে। খুব যত্নবান সে। কেবল প্রেমপত্র দিয়ে, লুকিয়ে চুরিয়ে দেখা করলেই যে প্রেম হয় না,তা বুঝিয়েছে সে। মাঝে মাঝে সাম্রাজ্ঞী প্রশ্ন করে,

“প্রথম দেখায় প্রেম হয়?”

কিন্তু নীলাদ্র সবসময় প্রমাণ করেছে, প্রথম দেখাতেও পারে মানুষ প্রেমে পড়তে। প্রথম দেখাতেও পারে মানুষ আজীবন সেই মুখশ্রী মনে রাখতে। প্রেম প্রগাঢ় হলে,প্রেম সত্য হলে ভালোবাসা আপনা আপনি হয়। তাতে আবার প্রথম আর শেষ দেখা কী!

নীলাদ্র আর সাম্রাজ্ঞীর প্রেম থাকুক অটুট। দুঃখের পরে সুখ আসে। কখনো হুট করে,কখনো সময় নিয়ে ধীরে ধীরে। তবুও আসে। সাম্রাজ্ঞীর জীবনেও এসেছে সত্য প্রেম। দীর্ঘ সময় পর!

#সমাপ্ত।