কমলা রঙের রোদ পর্ব-১২+১৩

0
3

#কমলা_রঙের_রোদ [১২]
#জেরিন_আক্তার_নিপা

খুশবুর একটু একটু লজ্জা লাগছে। শাড়িটা ভীষণ পাতলা। পেট দেখা যাচ্ছে না তো? যদিও খুশি সুন্দর করিয়েই পরিয়ে দিয়েছে। তারপরও খুশবুর কেমন যেন লাগছে। খুশবুকে দেখে মাহিয়া যেন বিশ্বাসই করতে পারছে না এটা সত্যিই তার বান্ধবী। সান পলকহীন চোখে খুশবুকে দেখে যাচ্ছে। আজ যেভাবেই হোক মনের কথা বলতে হবে। কিন্তু সে কি পারবে? এই মেয়ের চোখের দিকে তাকালে তো নিজেকেই ভুলে যায়। সেখানে তিনটা শব্দ উচ্চারণ করা কঠিন কাজ।
মাহিয়া খুশবুর দিকে এগিয়ে গেল। খুশবু কাচুমাচু মুখে সবার আগে যে প্রশ্নটা করল তা হলো,

-দোস্ত আমার পেট দেখে যাচ্ছে?

-কি?

-আরে দেখ না পেট দেখা যাচ্ছে কি-না। পাতলা শাড়ি তো।

মাহিয়া ভালো করে দেখে বলল,

-না। দেখা যায় না।

খুশবুর হাতে একটা শপিং ব্যাগ দেখে মাহিয়া জিজ্ঞেস করল,

-হাতে কী ওটা? গিফট নিয়ে এসেছিস নাকি!

-দূর গিফট! তুই গিফট এনেছিস না? তোর গিফটই আমার গিফট। এটাতে বোরখা।

মাহিয়া কপাল কুঞ্চিত করে বলল,

-বোরখা!

-তোর মনে হয় বাড়ি থেকে আমি এমন ইন্ডিয়ান নায়িকা সেজে বেরোতে পারবো? উপরে বোরখা পরে এসেছি৷ রিকশায় থাকতেই খুলে ফেলেছি।

দুই বান্ধবী এত কী কথা বলছে? মাহিয়াটা একটা গবেট। খুশবুকে এদিকে নিয়ে এসে তার সাথে কথা বলিয়ে দিবে না! গাধীটাকে সব বুঝিয়ে দিতে হয়। খুশবু তার হাতের ব্যাগটা মাহিয়াকে ধরিয়ে দিয়ে বলল,

-এটা কোথাও রেখে দে। আমি যাবার সময় মনে করে দিয়ে দিস।

সান মাহিয়ার ফোনে মেসেজ করল। মেসেজ দেখে মাহিয়া খুশবুকে তাড়া দিতে লাগল।

-চল চল ভেতরে যাই। অনেক বকবক করে ফেলেছি।

মাহিয়ার হাত ধরে কয়েক কদম হাঁটতেই সানকে সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখল। নিচু গলায় খুশবু বলল,

-তোর ভাইটাও দেখি এসেছে।

মাহিয়া খুশবুর মতোই ফিসফিসিয়ে বলল,

-বাহ রে, এত আয়োজনের মূলে যে সে-ই আসবে না?

খুশবু কপালে ভাঁজ ফেলে জিজ্ঞেস করল,

-তোর ভাইয়ের জন্মদিন! এই কথা আগে না বলে পরিচিত কারো কেন বলেছিস?

-সত্যি বললে তুই আসতি? আচ্ছা চুপ কর এখন। ভাইয়ার সাথে একটু ভালো করে কথা বলিস। আমার প্রেস্টিজের ব্যাপার।

সান খুশবুকে দেখে ভীষণ আন্তরিকতার সাথে বলল,

-মাহিয়া জানিয়েছিল তুমি আসবে না। কিন্তু তুমি এসেছ দেখে ভালো লাগলো।

খুশবু কী বলবে ভেবে পেলো না। মাহিয়া বলল,

-আসতে চাচ্ছিলই না তো। জোর করে ধরে এনেছি। আমার বান্ধবীকে একটু স্পেশাল ট্রিটমেন্ট দিও বুঝলে। নাহলে পরে আবার আমার খবর আছে।

সান হাসলো। খুশবু খুব কষ্টে মাহিয়ার পিঠে কিল বসিয়ে দেওয়া থেকে নিজের হাতটাকে আটকে রেখেছে। লোকটার সামনে এসব কথা বলে মাহি গরুটা তাকে লজ্জা দিচ্ছে কেন?
সান হঠাৎ খুশবুর দিকে হাত বাড়িয়ে দিল। খুশবু বেচারি দোটানায় পড়ে গেছে। স্বল্প পরিচিত একটা পুরুষের হাত ধরা কেমন দেখায়! খুশবু কিছু বুঝে উঠার আগেই মাহিয়া ওর হাত নিয়ে সানের হাতে ধরিয়ে দিল। সান পরিবেশ সহজ রাখতে বলল,

-মাহিয়ার বেস্ট ফ্রেন্ড তুমি। সেদিক দিয়ে আমার পার্টির স্পেশাল গেস্ট। এখানে যারা আছে তাদের লজ্জা পাওয়ার কোন কারণ নেই। চলো আমি নিজে তোমাকে সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দিই।

বান্ধবীর ভাইয়ের হাবভাব দেখে খুশবুর মনে মনে সন্দেহ হচ্ছে। এই লোক কোনভাবে তাকে পছন্দ করে ফেলেনি তো! কাজকর্মে তো এমনই প্রকাশ পাচ্ছে। মাহিয়াও ধুমসে ভাইকে সাহায্য করে যাচ্ছে। ছেলেটা দেখতে ভালো। ক্রাশ খাওয়ার মতোই। কিন্তু খুশবু প্রেম ভালোবাসা নিয়ে এখনও ভাবার সময় পায়নি। তার উপর আবার মা’র কড়াকড়ি, স্মরণ ভাইয়ের শাসন। মনে প্রেমের দোলা লাগার আগেই লাঠির বারির কথা মনে পড়ে।

🌸

খুশি এখনও তার সাথে কথা বলছে না। দোষটা কী করেছে সে? খুশি যেখানে যাচ্ছে স্মরণ বারবার তার সামনে এসে পথ আটকে দাঁড়াচ্ছে। খুশি সন্ধ্যার আগে ঘরে পানি নেওয়ার জন্য কলসি হাতে কলপাড়ে এসেছিল। স্মরণ পেছন থেকে এসে ওর হাত ধরে টেনে আড়ালে নিয়ে এসে জিজ্ঞেস করল,

-বোবা লেগে আছিস কেন? বলবি তো আমার দোষটা কী? কথা বলছিস না কেন আমার সাথে।

খুশি তবুও চলে যেতে চাইলে স্মরণ ওর হাত ধরে রাখল। খুশি চটজলদি আশেপাশে দেখে নিল। চাপা গলায় বলল,

-হাত ছাড়ো।

-না ছাড়লে কী করবি?

-হাত ছাড়ো প্লিজ। কেউ দেখে ফেলবে।

-দেখলে দেখুক আমি কাউকে ভয় পাই না। তুই আমার সাথে কথা না বললে এক্ষুনি খালাকে গিয়ে বলবো খালা আমি তোমার মেয়েকে বিয়ে করতে চাই।

খুশি চোখ বড়ো বড়ো করে স্মরণের দিকে তাকিয়ে রইল। স্মরণ মৃদু হেসে বলল,

-আমার মন বলছে তুইও এটাই চাস।

খুশি এবার ঝাড়ি দিয়ে হাত ছাড়িয়ে বলল,

-জীবনেও না।

-তুই মুখে না বললেও মনে মনে তিন কবুল বলে ফেলেছিস।

-বাজে কথা বলবে না তো।

-শুনেছিস তো পাপিয়াকে কেন সাহায্য করেছি। আমার কি মানুষকে সাহায্য করার ঠেকা পড়েছে? কাদের কাকা বাড়ি এসে ক্ষমা চেয়ে গেছে তো। তারপরও কেন রাগ করে আছিস?

-ও খুশি! খুশি কই রে?

এমন সময় দাদীর ডাক শুনে স্মরণ চরম বিরক্ত হয়ে বলল,

-যাহ শালা! দাদী আর সময় পেলো না।

পরী বানু খুশিকে না দেখতে পেয়ে এখনও ডেকে যাচ্ছেন। খুশি চলে যেতে চাইলে স্মরণ বলল,

-তোর দাদী আর মা আমার জীবনের সবথেকে বড় ভিলেন হয়ে দাঁড়িয়েছে।

-ওরে খুশি? কই গেলি?

-দাদী ডাকছে। যেতে দাও।

-যাবি কিন্তু তার আগে বল আমার উপর আর রাগ করে নেই তুই।

-না নেই।

-মন থেকে বলছিস তো?

খুশি রাগী চোখে তাকালে স্মরণ ওকে যেতে দিল। তাদের কলপাড়ের পেছনের জায়গাটা জঙ্গলা মতো অনেক বছর ধরে খালি পড়ে আছে। যাদের জমি তারা দেশের বাইরে থাকে। তাই এই জায়গাটা আর পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করা হয় না। জায়গাটার চারদিকে দেয়াল তোলা বলে কেউ ভেতরে আসতে পারে না। কলপাড় লাগোয়া দেয়াল অনেকদিন হলো ভেঙে পড়েছে। খুশি স্মরণ দেখা করলে এখানেই করে।

-এইতো আমি দাদী। ডাকছো কেন?

খুশিকে ওদিক থেকে আসতে দেখে পরী বানু বললেন,

-জঙ্গলে গেছিলি কেন? সাপ বিছা কামড়াইলে এই সন্ধ্যা বেলায় তোরে নিয়া কই ছুটতাম?

-কামড়ায়নি তো দাদী। বলো কেন ডাকছিলে।

-খুশবুরে কই পাঠাইছস? কহন আইবো?

-আমার বান্ধবীর বাসায় নোটস নিতে পাঠিয়েছি। সন্ধ্যার আগেই চলে আসবে।

-তুই নিজে যাইলেই তো পারতি। ওই নাচুনি বুড়ির তো এমনিতেই নাচানাচি ঘোরাঘুরির শখ। কওয়ার আগেই দৌড় দিছে।

-খুশবু যেতে চায়নি। আমি জোর করে পাঠিয়েছি।

স্মরণ ভেবেছিল দাদী খুশির সাথে কথা বলতে ব্যস্ত এই ফাঁকে সে এখান থেকে বেরিয়ে যাবে। শালার হেলিকপ্টার সাইজের মশা। দিনের বেলাও কামড়িয়ে লাল করে ফেলছে। স্মরণ চুপিচুপি চলে যেতে চাইলেও পরী বানু ঠিকই দেখে ফেলেছেন। স্মরণকে কিছু না বললেও খুশিকে বললেন,

-আর কতদিন ডুইবা ডুইবা পানি খাইবি? এক বাড়িতে থাইকাও কথা কইতে জঙ্গলে ছুইটা যাস।

দাদীর কথা শুনে খুশির হাতপা শক্ত হয়ে গেল। দাদী কি সব জানে! দাদী জানে মানে মা’র চোখে পড়া থেকেও বাদ থাকেনি৷ খুশির চুপসে যাওয়া মুখের দিকে তাকিয়ে পরী বানু বললেন,

-বাদাইম্মাটারে কিছু কাজকর্ম করতে কইস। বিয়ার পর বউরে খাওয়াইবো কী?

দাদী তাদের বিয়ে পর্যন্ত ভেবে ফেলেছে! খুশির ভয় লাগার সাথে সাথে কেমন যেন স্বস্তিও লাগছে। দাদী তাদের দলে থাকলে মাকে রাজি করানো কঠিন হবে না।

🌸

খুশবুর কাছে এটা কোন জন্মদিনের পার্টি বলে মনে হচ্ছে না। যদিও সে পার্টি ফার্টিতে জীবনে যায়নি। তারপরও বুঝতে পারছে সবাইকে তার থেকে কিছু লোকাচ্ছে। বিশেষ করে মাহিয়াটা।

-দোস্ত আমার কেন মনে হচ্ছে তোরা আমার থেকে কিছু লোকাচ্ছিস।

খুশবুর কথা শুনে মাহিয়া হেসে উড়িয়ে দিতে চেয়ে বলল,

-দূর! কী লোকাবো তোর থেকে?

-জানি না। কিন্তু তুই সহ তোর ভাইয়ের হাবভাবও আমার ভালো লাগছে না।

-আমার ভাইয়ের হাবভাবে আবার কী হয়েছে?

-মনে হচ্ছে তোর ভাই আমাকে পছন্দ করে। সেটা তুইও জানিস।

মাহিয়ার কাশি উঠে গেল। এই মেয়ে এত চালাক কেন? আল্লাহ একে একটু কম বুদ্ধি দিতে পারল না! খুশবু মাহিয়ার দিকে তাকিয়ে বলল,

-দেখেছিস আমি ঠিকই ধারণা করেছি।

-আমার ভাই তোকে পছন্দ করলে সমস্যা কী? আমার ভাই কি কারো থেকে কিছু কম নাকি?

-তুই বুঝতে পারছিস না। এসব প্রেম ভালোবাসা আমার জন্য না। শুধু শুধু তোর ভাই কষ্ট পাবে। মাঝখান দিয়ে তুই আমার শত্রু হবি।

-জীবনেও না। ভাই কষ্ট পাক মন চায় দেবদাস হয়ে যাক। তোর সাথে আমার সম্পর্ক কখনও নষ্ট হবে না।

খুশবু মাহিয়ার দিকে তাকিয়ে আহ্লাদী গলায় বলল,

-তুই আমাকে ইমোশনাল করে দিলি দোস্ত। আয় তো, আমার বুকে আয়।

সান ভেবেছিল সবাই চলে গেলে সে খুশবুকে প্রপোজ করবে। বন্ধু বান্ধবরা এখনও এটাই জানে আজ তার জন্মদিন। তাই মিছেমিছি কেকও কাটতে হয়েছে। এখন সান সবার চলে যাওয়ার অপেক্ষায় আছে।

-কখন যাবে এরা?

জন্মদিনের মিথ্যেটা না বললে খুশবুকে আনা যেত না। আবার যদি জন্মদিনের পার্টিতে মানুষ না থাকে তবুও খুশবু সন্দেহ করবে। সান এখন দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে নিজেকে গালমন্দ করছে। সানের বন্ধুরা রাতভর আনন্দ করার কথা বললে সান বলল,

-আমি ভদ্র একটা ছেলে। আমার জন্মদিনের পার্টি রাত আটটার পরেই শেষ হয়ে যাবে।

খুশবু একা দাঁড়িয়ে ছিল। দারোয়ান এসে জানাল তাকে নিতে কেউ এসেছে। তাকে নিতে কে আসতে পারে ভেবে পেলো না খুশবু। কেউ তো জানেই না সে এখানে এসেছে।

-কে এসেছে?

-নাম বলেনি। আপনাকে গিয়ে দেখা করতে বলেছে।

খুশবু ছুটে দেখতে এলো। স্মরণ বাইকে বসে খুশবুর জন্য অপেক্ষা করছে। খুশবু দূর থেকে স্মরণকে দেখে খুশি হয়ে গেল। স্মরণ ভাই তাকে নিতে এসেছে দেখে হাঁফ ছেড়ে বাঁচল। যাক রাতের বেলা তাকে একা বাড়ি ফিরতে হবে না। খুশবু স্মরণের সামনে এসে দাঁড়ালে স্মরণ কতক্ষণ হতবিহ্বল চোখে খুশবুর দিকে তাকিয়ে রইল।এই শাড়িটা খুশবুর পরনে কেন? এটা স্মরণ খুশিকে কিনে দিয়েছিল। খুশি একদিনও পরেনি।

-তুমি আমাকে নিতে এসেছ?

খুশবুর প্রশ্ন শুনে স্মরণের ধ্যান ভাঙল। জবাবে বলল,

-হুম।

-তুমি জানো কীভাবে আমি এখানে এসেছি।

-খুশি বলেছে। বাড়ি ফিরবি কখন?

-একটু পরেই বেরিয়ে পড়তাম। কিন্তু এখন তুমি এসেছ তাই তোমার সাথে চলে যাব।

-ঠিক আছে।

-স্মরণ ভাই, তুমি একটু দাঁড়াও।

এটা বলেই খুশি আবার ছুটে ভেতরে চলে গেল। খুশির উপর স্মরণের রাগ লাগছে। আবার মানুষটা খুশবু দেখে পুরোপুরি রাগও করতে পারছে না। খুশবুই হয়তো বায়না ধরেছিল। তারপরও খুশি স্মরণের দেওয়া প্রথম উপহারটা খুশবুকে কীভাবে দিয়ে দিল।

সান ভেবেছে খুশবু হয়তো পার্টি শেষ হওয়া পর্যন্ত থাকবে। কিন্তু সে কি জানতো খুশবুকে সন্ধ্যার আগেই বাড়ি ফিরে যেতে বলা হয়েছে।
এমনকি মাগরিবের আজানের আগেই খুশবুকে নিতে ওর ভাই চলে আসবে। খুশবু ভেতরে এসে মাহিয়াকে জানাল তাকে নিতে স্মরণ ভাই এসেছে। কথাটা শুনে সান হতবাক হয়ে রইল। খুশবু চলে গেলে তার এত আয়োজন কার জন্য তাহলে? মাহিয়া অসহায় মুখে সানের দিকে তাকাল। সে-ও জানত না এমন কিছু হবে। খুশবু মাহিয়াকে তার বোরখা এনে দিতে বলল। মাহিয়া তারপরও খুশবুকে থেকে যাওয়ার জন্য জোর করতে লাগল।

-এখনই চলে যাবি? এটা কেমন কথা। পার্টি তো এখনও শুরুই হয়নি। থেকে যা না প্লিজ দোস্ত। তোকে আমি নিজে বাড়ি ফিরিয়ে দিয়ে আসবো।

-না রে। তুই তো জানিস আমি বাড়িতে কাউকে বলে আসিনি। শুধু খুশি জানে। খুশিই স্মরণ ভাইকে পাঠিয়েছে। আমি যদি এখন না যাই তাহলে খুশি আর জীবনে আমার কোন কাজে সাহায্য করবে না।

কী আর করার? মাহিয়া খুশবুর বোরখা আনতে চলে গেল। সান শুধু অসহায় ভাবে সবকিছু দেখছে। কী করার আছে তার?

-সত্যিই তুমি চলে যাবে? আরেকটু থেকে যাও।

খুশবু মুখ কালে করে বলল,

-না ভাইয়া। আমার ভাই এসেছে।

সানের ইচ্ছে করছে খুশবুর এই ভাইটাকে কয়েকটা লাগিয়ে দিতে। প্রপোজ করার আগেই ভিলেন হচ্ছে। প্রেম শুরু হলে না জানি আরও কত বাধা সৃষ্টি করবে। বোরখা পরে স্মরণের কাছে এসে খুশবু বলল,

-এবার চলো।

স্মরণ কপাল কুঁচকে তাকে দেখে বলল,

-কে আপনি?

চলবে

#কমলা_রঙের_রোদ [১৩]
#জেরিন_আক্তার_নিপা

খুশবু গিয়েছিল শাড়ি পরনে। এসেছে বোরখা পরে। স্মরণ ওকে চিনতে পারবে না এটাই স্বাভাবিক। স্মরণ যখন খুশবুর অপেক্ষায় বসে আছে তখন একটা বোরখা পরা মেয়ে তার কাছে এসে বলল,

-এবার চলো।

মেয়েটা এসে হুট করে তাকে কোথাও যাওয়ার কথা বলেই বাইকে উঠতে লাগল।
স্মরণ কপাল কুঁচকে মেয়েটার উদ্দেশ্যে বলল,

-কে আপনি?

খুশবু ভাবতে পারেনি স্মরণ ভাই তাকে চিনবে না। তাই সে আকাশ থেকে পড়ার মতো অবাক হয়ে বলল,

-কে আপনি মানে! তুমি আমাকে চিনতে পারছো না?

কন্ঠ শুনে এবার চিনেছে। বোরখার উপর দিয়ে ভালো করে খুশবুকে দেখে বলল,

-তুই কবে থেকে পর্দা করা শুরু করে দিয়েছিস!

-তুমি আগে এটা বলো সত্যিই তুমি আমাকে চিনতে পারোনি?

-প্রথমে পারিনি।

স্মরণ স্বীকার করে নিলো। এই কথা শুনে হাসতে হাসতে খুশবু লুটোপুটি খেতে লাগল। খুশবুকে এভাবে হাসতে দেখে স্মরণ বিরক্ত হলো। এই কথায় এত হাসার মতো কী আছে?

-তুই কি বাড়ি যাবি? নাকি তোকে ফেলে আমি চলে যাব?

বাইকে বসেও খুশবুর হাসি থামলো না। সে ফিকফিক করে হেসেই যাচ্ছে।

-তোর তো হাসির রোগ আছে। কোন নরমাল মানুষ সামান্য একটা ঘটনা নিয়ে তোর মতো এত হাসতে পারবে না।

-তুমি নিশ্চয় ভেবেছিলে এই মহিলা আমাকে কোথায় যেতে বলে। আচ্ছা আমি যদি কন্ঠস্বর পালটে কথা বলতাম তাহলে তুমি আমাকে চিনতেই পারতে না।

-খুশবু হাসি বন্ধ কর। তুই কানের কাছে খিকখিক করতে থাকলে অ্যাক্সিডেন্ট করে দু’জনই হাসপাতালে যাবো।

-সেটাও ভালো হবে। আমি জীবনে কোনদিনও অ্যাক্সিডেন্ট করিনি।

খুশবুর কথা শেষ হওয়ার আগেই স্মরণ বাইক থামিয়ে দিল। খুশবু কপালে ভাজ ফেলে বলল,

-দাঁড়ালে কেন?

-আমি দাঁড়াইনি। আমার বাইক দাঁড়িয়ে পড়েছে।

-মানে?

-মানে নাম তুই।

-আমি কেন নামবো? একটু হেসেছি দেখে তুমি আমাকে বাইক থেকে নামিয়ে দিবে! নামবো না আমি।

এটা বলে খুশবু স্মরণকে আরও শক্ত করে ধরে বসল। স্মরণ হতাশ গলায় বলল,

-ওরে গাধা তোকে মাঝ রাস্তায় নামিয়ে আমি চলে যাব না। আমার বাইকে সমস্যা দিয়েছে।

-ওহ। এটা আগে বলবে তো। আমি আরও ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম।

খুশবু বাইক থেকে নেমে দাঁড়াল। স্মরণও নেমে দেখছে বাইকের কী সমস্যা হয়েছে।
খুশবু কতক্ষণ চুপ করে দাঁড়িয়ে থেকে বলল,

-কী সমস্যা হয়েছে স্মরণ ভাই?

-বুঝতে পারছি না।

-তোমার বন্ধু তোমাকে একটা নষ্ট বাইক দিয়েছে। এটাকে ফেরত দিয়ে নতুন একটা বাইক কিনো তো।

-এটাও আমার টাকাই কিনেছি।

খুশবু অবাক হয়ে বলল,

-তোমার টাকায় কিনেছ! এতদিন কি তাহলে সবাইকে মিথ্যে বলেছ যে, এটা তোমার বন্ধুর বাইক। তুমি মাঝে মাঝে এনে চালাও।

-তোর মা আর বড় আব্বার জন্য সত্যি কথা বলার উপায় আছে?

-এত টাকা তুমি কোথায় পেয়েছ?

স্মরণ ভাব নিয়ে বলল,

-আমার টাকাপয়সায় অভাব হয়না।

-তুমি তো তাহলে অনেক বড়লোক। আমাকে এক লাখ টাকা ধার দাও না।

স্মরণ ঝট করে খুশবুর দিকে তাকাল। খুশবু মজা করছে না। ওকে সিরিয়াস দেখাচ্ছে।

-এত টাকা দিয়ে কী করবি তুই?

-বিজনেস।

-কিসের বিজনেস? আর্টসের ছাত্রী হয়ে বিজনেসের কী বুঝবি তুই?

-আমার অনেকদিনের স্বপ্ন আমি একটা ফুচকা স্টল দিল। আমাদের কলেজের সামনে ফুচকা ওয়ালা মামাদের সাথে কথাও বলেছি। এই ব্যবসায় হেভী লাভ।

-পাগলের ছাও! আমার টাকা তো তুমি এসব গু-গোবর খেয়েই উড়াও। আজকের পর থেকে এক টাকাও পাবি না তুই।

🌸

মাহিয়া ভাইয়ের মুখের দিকে তাকাতে পারছে না। সান রেগে আছে নাকি মন খারাপ বোঝা যাচ্ছে না। ওর ভাইটা না এলে খুশবুকে সে যেভাবেই হোক রেখে দিত। বেচারা তার ভাইটা কত প্ল্যান করে এতকিছু করেছিল। সব বেকার গেল। সান পার্টি ছেড়ে চলে যেতে চাইলে ওর বন্ধুরা বলল,

-তোর বার্থডে তুই-ই চলে যাবি দোস্ত? আমরা তো ভেবেছিলাম আজ ফুল নাইট এনজয় করবো।

এরা তার বন্ধু! এদের মধ্যে একটাও কি তার বার্থডে কবে মনে রেখেছে? সান শীতল দৃষ্টিতে কতক্ষণ বন্ধুদের দিকে তাকিয়ে থেকে বলল,

-আমি চলে গেলেও তোদের মজা নষ্ট হবে না। বিল নিয়ে টেনশন করিস না। তোরা এনজয় কর।

সানের পেছন পেছন মাহিয়াও আসছে। বেচারা দুঃখ পেয়ে পার্টি ছেড়েই চলে যাচ্ছে।

-স্যরি ভাইয়া। খুশবুর ভাই ওকে নিতে চলে আসবে জানতাম না। স্মরণ ভাই না এলে আমি ওকে জোর করে হলেও রেখে দিতাম।

-খুশবুর ভাইয়ের নাম স্মরণ?

-হুম।

-কেমন ভাই?

-কাজিন।

-কী করে?

-কিছু করে না।

সান মাহিয়াকে বাসায় পৌঁছে দিয়ে নিজেও বাসায় চলে এলো। মিসেস সুলতানা ছেলের ফেরার অপেক্ষায় ছিলেন। সানকে সোজা রুমের দিকে যেতে দেখে পেছন থেকে আর ডাকলেন না। তবে তিনি এটা ভাবছেন আজকে তার জন্মদিন না তারপরও সান কেন জন্মদিনের পার্টি রেখেছিল। ছেলের বিষয়ে তাকে কি আরও ভালো করে খোঁজ নিতে হবে? মিসেস সুলতানা কাউকে কল করলেন। ফোনে মানুষটাকে আদেশ করলেন এখন থেকে যেন চব্বিশ ঘণ্টাই সানের উপর নজর রাখে।

🌸

খুশবুর প্রথম বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষা শুরু হয়ে যাওয়ায় দিনদুনিয়া সব ভুলে বইয়ে ডুবে থাকল। সারা বছরের পড়া দু-চার দিনে কোনভাবেই শেষ করা সম্ভব না। খুশবু দোয়া করছে টেনেটুনে যেন পাস করতে পারে। পরীক্ষার ঝামেলায় এটাও জানা হলো না বাড়িতে কী চলছে। গতকাল বাড়িতে কদু ঘটক এসেছিল। এই ব্যাটাকে মানুষ কদু নামে ডাকতে ডাকতে আসল নামই হয়তো ভুলে গেছে। ঘটকদের কখনও খবর দিতে হয় না। এরা এমনিতেই জানে কোন বাড়িতে বিবাহযোগ্য মেয়ে আছে। মানছুরা এমনিতে এই লোককে দেখতে না পারলেও কাল অনেকক্ষণ কথা বলেছে। এটা নিয়েই আজ শোয়ার সময় পরী বানু কথা তুললেন,

-কদু ঘটক কেন আইছিল?

-বাড়িতে মেয়ে আছে। ঘটক আসবেই।

-খুশির বিয়ার লাইগা ঘটক লাগবো কেন?

-ঘটক ছাড়া পাত্রের সন্ধান কে করবে?

-পাত্র তো চোখের সামনেই আছে। আর খোঁজাখুঁজি করুন লাগত না৷ স্মরণের লগে খুশির…

-এই কথা আজ বলেছেন আম্মা। কিন্তু ভবিষ্যতে আর কখনও বলবেন না।

-কেন কইতাম না? তুমি খুশিরে অন্য জায়গাত বিয়া দিবা নাকি!

-হ্যাঁ।

-কেন? তুমি কি কিছু বুঝো না। পোলা মাইয়া দুইডা..

-আমার মেয়ের বিয়ে আমি যেখানে খুশি দিবো। মেয়েকে আমি পেটে ধরেছি। ওকে মানুষও আমি করেছি। আমার মেয়ের উপর কারো অধিকার নেই।

পরী বানু হতবাক চোখে মানছুরাকে দেখছেন। স্মরণ খুশিকে পছন্দ করে এটা একটা অন্ধ মানুষও বলতে পারবে। কিন্তু তার বউমা কেন পারছে না। নাকি সব জেনেও খুশির বিয়ে অন্যত্র দেওয়ার চেষ্টা করছে।

খুশি অনেকক্ষণ যাবত জানালার পাশে দাঁড়িয়ে আছে। খুশবু বাচ্চাদের মতো ডাক পেরে পেরে পড়ছে। শব্দ করে না পড়লে তার পড়া মুখস্ত হয় না। পড়ার ফাঁকে মাঝে মাঝে বই থেকে মুখ তুলে খুশিকে দেখলেও ওদিকে মনোযোগ দিতে চাচ্ছে না৷ কিন্তু ঘরে অন্য মানুষ থাকলে কী মনোযোগ বইয়ে রাখা যায়। তাই পড়া থামিয়ে বলল,

-খুশি তুই কিন্তু আমার মনোযোগ নষ্ট করছিস। ঘর থেকে যা তো। আমার পড়া শেষ হলে আসিস।

অন্য দিন হলে খুশি কোন উত্তর করত। কিন্তু আজ কিছুই না বলে আগের মতোই দাঁড়িয়ে রইল। খুশবু ভ্রু কুঁচকে মনে মনে বলল,

-ঝগড়ুটে খুশি আজ এত ভালো হয়ে গেল কীভাবে? কিছুই বলল না!

-জানালা দিয়ে কাকে দেখা যায়? এক ঘন্টা ধরে মাথার উপর দাঁড়িয়ে আছিস।

এবারও খুশি কিছু না বললে খুশবু চিন্তায় পড়ে গেল। ভূত টুতে ধরেছে নাকি? কথা বলছে না কেন? বই বন্ধ করে খুশবু উঠে খুশির পেছনে এসে দাঁড়াল।

-কী হয়েছে রে? নাটক করছিস কেন?

খুশি দীর্ঘশ্বাস ফেলে খুশবুর দিকে তাকিয়ে শান্ত গলায় বলল,

-তুই পড়ছিস পড় না। আমি তো তোকে ডিস্টার্ব করছি না।

-করছিস দেখেই তো পড়া বন্ধ করে উঠে এসেছি।

-আমি তাহলে ঘর থেকে চলে যাই।

খুশবুর মাথায় কেউ লাঠি দিয়ে বারি দিলেও সে এতটা অবাক হতো না যতটা খুশির কথা শুনে হয়েছে। যদিও কারো ব্যাপারে নাক গলানোর তার কোন শখ নেই। কিন্তু খুশি তাকে নিজের নতুন শাড়ি পরতে দিয়েছিল। ইদানিং আগের মতো পায়ে পা দিয়ে ঝগড়াও করছে না। খুশি চলে যাওয়া ধরলে খুশবু ওর হাত ধরে ফেলে বলল,

-যদিও তুই একটা ঝগড়ুটে। আমাদের মধ্যে তেমন মিল নেই। কিন্তু তুই আমার বোন তো। সুখ দুঃখ একটু-আধটু শেয়ার করতেই পারিস। বল তোর কী হয়েছে?

-কিছু হয়নি।

-মিথ্যা বলছিস মুখ দেখেই বোঝা যায়। তাড়াতাড়ি সত্যটা বলে দে তো আমার পড়া নষ্ট হচ্ছে।

-তুই পড়তে বস না। আমি কি বারণ করেছি?

-বারণ করিস নি। কিন্তু এখন পড়তে বসলে সম্পূর্ণ মনোযোগ পড়ায় দিতে পারব না। তাই প্লিজ বল না রে খুশি।

-গতকাল কদু ঘটক এসেছিস।

-কেন?

খুশি কিছুটা বিরক্ত হলো। ঘটক কেন আসে এটাও কি বলে দিতে হবে? খুশির বলে দিতে হলো না খুশবু নিজে থেকেই বলল,

-ওহ, এইজন্য তোর চেহারায় বারোটা বেজে আছে! ঘটক শালা নিশ্চয় তোর ঘটকালি করে গেছে।

খুশবু হাসতে শুরু করেছে। ওকে হাসতে দেখে খুশির রাগ হচ্ছে। হাসতে হাসতে খুশবু বলল,

-মা তো কদু শালাকে দেখতেই পারে না। ওটার আনা সম্বন্ধে মা কখনও রাজি হবে না।

-এবার মা-ই সম্বন্ধ আনতে বলেছে।

-বলিস কী? সত্যি! মা তোর আগেই আমার বিয়ে দিতে চায়! এটা এতে পারে না। এই অন্যায় আমি মেনে নিবো না।

খুশি অবিশ্বাস্য চোখে খুশবুকে দেখছে। এমন একটা সময়েও খুশবু তার সাথে মজা করছে। কঠিন গলায় খুশি বলল,

-তুই কি আমার সাথে মজা করছিস?

-মজা কেন করবো? আমার কি এখন মজা করার সময় আছে রে? মৃত্যু আমার মাথায় ঝুলছে।

খুশবু সত্যিই ভেবেছে মা তার বিয়ের কথা ভাবছে। এটা নিয়েই খুশি হাইপার হয়ে গেছে। খুশি কতক্ষণ অগ্নি দৃষ্টিতে খুশবুর দিকে তাকিয়ে থেকে বলল,

-আমার আগে মা তোর বিয়ে দিবে না। এটা জেনেও তুই কোন আক্কেলে আমার সাথে মজা করিস!

খুশবু অবাক হওয়া গলায় বলল,

-কিন্তু তোর জন্য মা পাত্র কেন খুঁজবে? তোর বিয়ে তো স্মরণ ভাইয়ের সাথে হবে। তোরা দু’জন দু’জনকে পছন্দ করিস এটা কে না জানে?

🌸

পরীক্ষা শেষ করে বের হয়ে মাহিয়া খুশবুকে খুঁজছে। এই খুশবু তার ভাইকে সহ তাকেও পাগল করে ফেলবে। মাহিয়া খুশবুকে পেলো ফুচকার দোকানের সামনে। সে পেছন থেকে এসে খুশবুর পিঠে চড় বসিয়ে দিয়ে বলল,

-একটু দাঁড়াতে পারলি না।

খুশবু পিঠ ডলতে ডলতে মুখ বাঁকিয়ে বলল,

-আগেভাগে এসে লাইন দিচ্ছিলাম গাধী।

-পরীক্ষা কেমন হয়েছে তোর? আমার অনেক খারাপ। ফেল করবো শিওর।

-আমিও।

-কী যে পরীক্ষা দিচ্ছি নিজেও বুঝতে পারছি না। ভবিষ্যতে কোন অফিস আদালতের দারোয়ানও হতে পারবো না।

-ভবিষ্যত নিয়ে এত চিন্তা করিস না তো। তোকে নিয়ে আমি বিজনেস চালু করবো।

-কিসের বিজনেস?

-প্রথমে ছোটখাটো কিছু করবো। পরে আস্তে আস্তে বিজনেস বড়ো করবো।

খুশবুর কথায় ভরসা পাওয়ার কোন কারণ নেই। কারণ এই মেয়ে সারাক্ষণ এসব পরিকল্পনা করতেই থাকে। তবে শেষ পর্যন্ত কোনটাই বাস্তবায়ন হয় না।

-পরীক্ষার পরে কী করবি?

-দুইটা ঘোড়া কিনে পালবো।

-মজা করিস না। কোথাও ঘুরতে টুরতে যাবি?

-আমি ঘোরাঘুরি বাড়ি থেকে কলেজ পর্যন্তই। তুই কোথায় যাবি?

-ইন্ডিয়া। এমাসেই যাওয়ার কথা ছিল। পরীক্ষার জন্য পিছিয়েছে।

খুশবু ফোঁস করে একটা দম ফেলে বলল,

-তোরই জীবন। ইন্ডিয়া চলে যাচ্ছিস। আমি এখন পর্যন্ত চিড়িয়াখানায়ও যেতে পারলাম না।

-তোকে দেশ বিদেশ ঘুরতে নিয়ে যাবে এমন কাউকে বিয়ে করে ফেল।

-এমন ছেলে কোথাও পাবো?

-আমার সন্ধানে একজন আছে।

খুশবু চোখ বাঁকিয়ে মাহিয়াকে দেখল। এই শালি তার জন্য ঘটকালি শুরু করে দিবে নাকি? খুশবু হতাশ গলায় বলল,

-বাড়িতে এমনিতেই বিয়ে নিয়ে ঝামেলা চলছে। এর মাঝে তুই আর বিয়ে বিয়ে করিস না।

খুশবু খুশির বিয়ে নিয়ে ঝামেলার কথা বলেছে। কিন্তু মাহিয়া ভেবে নিয়েছে খুশবুর বিয়ে নিয়ে হয়তো ঝামেলা চলছে। তাই সে সঠিকটা ভালোমতো না জেনেই এই কথা সানের কানে লাগিয়ে দিয়েছে।

চলবে