গোধুলির শেষ বিকেলে তুমি আমি পর্ব-১৯

0
204

#গোধুলির_শেষ_বিকেলে_তুমি_আমি
#পর্ব১৯
#Raiha_Zubair_Ripti

সাঝ সন্ধ্যায় শিকদার বাড়ির দোরগোড়ায় এসে হাজির সাদমান। হাতে এক প্যাকেট মিষ্টির বক্স। সামিরা শিকদার সাদমান কে দেখামাত্রই তড়িঘড়ি করে দরজা থেকে সরে দাঁড়ালো সাদমান কে ভেতরে আসতে দেবার জন্য। সাদমান মিষ্টির বক্স টা সামিরা শিকদারের হাতে ধরিয়ে দিয়ে সোফায় বসলো আয়েশ করে। সামিরা শিকদার সাদমান এর আপ্যায়ন এর জন্য তোড়জোড় করতে নিলে সাদমান থামিয়ে দেয়। নিজেকে কিছুটা ধাতস্থ করে বলে-
-“ আন্টি রজনী বাসায় আছে?
সামিরা শিকদার সোফায় বসতে বসতে বলল-
-“ হ্যাঁ নিজের রুমে।
-“ আমি একটা কথা বলতে এসেছি।
-“ হ্যাঁ বলো বাবা। কি বলতে এসেছো।
-“ আসলে কাল ভোরে আমি আর সানজিদা শাফায়াত ব্রো এর দাদু বাড়ি যাচ্ছি। তো ব্রো আর রুয়াত বললো রজনী কে সাথে করে নিয়ে যেতে।
-“ আচ্ছা রজনী কে বলে দেখি যাবে কি না।
-“ আচ্ছা।
সামিরা শিকদার সাদমান কে বসার ঘরে রেখেই রজনীর রুমে আসলো। রজনী বিছানায় আধশোয়া হয়ে হুমায়ুন আহমেদের মেঘ বলছে যাব যাব বই টি পড়ছে। সামিরা শিকদার কে নিজের রুমে ঢুকতে দেখে শোয়া থেকে উঠে বসলো। বইটা পাশে রাখতেই সামিরা শিকদার রজনীর পাশে বসলো।
-“ কিছু বলবে মা?
রুয়াতের মা উপর নিচ মাথা ঝাকালো।
-“ কি বলবে বলো।
-“ সাদমান এসেছে৷ রুয়াত বলে পাঠিয়েছে কাল যে রুয়াতের দাদা শ্বশুর বাড়ি তোকে সাথে করে নিয়ে যায়। গ্রাম্য পরিবেশ ভালো লাগবে গেলে।
-“ ওর শ্বশুর বাড়ি আমি গিয়ে কি করবো মা। আর তাছাড়া আমি বেশি মানুষজনের সাথে মিশতে পারি না।
-“ রুয়াত আছে তো। ছেলেটা বসার ঘরে বসে আছে। বলি গিয়ে তুই যাচ্ছিস?
-“ না গেলে হয় না?
-“ হয়। তবে রুয়াত খুব করে বলেছে তোকে যেতে।
-“ ঠিক আছে যাব।
সামিরা শিকদার রুম থেকে বের হয়ে সাদমান কে বলল রজনী যাবে। সাদমান খুশি হলো। তবে রজনীর দেখা না পাওয়ায় মনটা বেজার হলো। আর কোনো কাজ নেই বলে বসা থেকে উঠে সাদমান বলল-
-“ আজ তাহলে আসি আন্টি। ভোরে চলে আসবো। রজনী কে রেডি হয়ে থাকতে বলবেন।

রাত নয়টা,, নদীর তীরে বালিতে বসে আছে রুয়াত শাফায়াত। সাতটার দিকে এসেছে তাঁরা একাকী সময় কাটানোর জন্য। আশেপাশে আছে ছড়িয়ে ছিটিয়ে কয়েক গুটি যুগলবন্দী প্রেমিক প্রেমিকারা। সেদিকে নজর নেই রুয়াত শাফায়াত এর৷ তাদের দৃষ্টি ঐ সুদূর আকাশে থাকা চাঁদের দিকে। ইয়া বড় চাঁদ, সেই চাঁদের আলোয় সমুদ্রের পানি গুলো চকচক করছে৷ শান্ত নীরব সাগর খানাও যেনো মৌনব্রত করেছে রুয়াত দের সঙ্গে। তাই তো গর্জে উঠা সাগর আজ নিশ্চুপ। শাফায়াত রুয়াতের পিঠে এক হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরার মতো ধরে বলে-
-“ আর কতক্ষণ চাঁদ দেখবে রুয়াত? রিসোর্টে ফেরা উচিত। কাল ভোরে দাদুর বাড়ি তে রওনা হতে হবে।
-“ আর একটু থাকি না।
-“ আর দশ মিনিট মাত্র।
-“ ওক্কে।
রুয়াত শেষ দশ মিনিট টা শাফায়াত এর কাঁধে মাথা রেখে বসে কাটিয়ে দিলো। রুয়াত সমুদ্র সৈকত থেকে যাওয়ার আগে পেছন ফিরে শেষবার সমুদ্র টাকে দেখে মুচকি হেঁসে বলল-
-“ আবার ফের দেখা হোক সমুদ্র তোমার সাথে আমার। সেই দেখায় যেনো দুই থেকে তিনে এসে ঠেকি। ভালো থেকো অনুভূতি এক আস্ত ভাণ্ডার।

শাফায়াত রুয়াত রিসোর্টে এসে ফিরে। সোজা নিজেদের রুমে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। ভোর হলেই শাফায়াত রেডি হয়ে সাইফুল ইসলাম এর রুমে আসে জানাতে যে সে রুয়াত আর নাইমুর চলে যাচ্ছে। নাইমুর আসতে চায় নি। কিন্তু যখন শুনলো সানজিদা আসছে মুহূর্তে রাজি হয়ে গেলো।

রোহান ঘুম থেকে উঠে ব্রেকফাস্ট করে রেডি হয়ে নেয়। তারাও আজ ঢাকা ব্যাক করবে। সকাল থেকে রুয়াত শাফায়াত দু’জনের একজন কেউ দেখতে পায় নি রোহান। সেজন্য বাসে উঠার আগে নেহাল কে বলে-
-“ রুয়াত আর স্যার কে দেখছি না কেনো সকাল থেকে? তাদের কি মাথায় নেই যে আজ ঢাকা ফেরার কথা? বউ নিয়ে কই ঘুরতে গেছে? বাস চলে গেলে তখন কি করবে?

নেহাল জানালার পাশের সিটে বসতে বসতে বলে-
-“ আহারে সোনা বন্ধু টা আমার রুয়াত কে দেখতে না পেয়ে অক্সিজেন ঠিকঠাক সাপ্লাই দিতে পারছে না। তা বলছি কি। তোর সে চিন্তা করা লাগবে না। ওরা এই রিসোর্টের আশেপাশে কোথাও নেই। চলে গেছে।
রোহান অবাক হয়ে বলে-
-“ চলে গেছে মানে?
-“ মানে সিম্পল। তারা জামাই বউ একাকী থাকার জন্য কোথাও চলে গেছে। যেখানে তোর ছায়াও যেতে পারবে না।
-“ কই গেছে?
-“ এখন সব খুলে বলতে হবে তোকে? নতুন বিয়ে করছে বউ কে নিয়ে একাকী কই যেতে পারে বল? তোরে মামু ডাকানোর ব্যবস্থা করতে গেছে।
-“ অসভ্য।
নেহাল মুখ বেঁকিয়ে বলে-
-“ ওরে আইছে আমার সভ্য ছেলে। এখন বস। সারা রাস্তা ভাবতে ভাবতে যা তর লায়লা আর তার মজনু কই গেছে।

ভোরের আলো না ফুটতেই সাদমান এসেছিল রজনীদের বাসায় সানজিদা কে নিয়ে। কিন্তু এখন অলরেডি সূর্যের আলো ফুটে গেছে। অথচ রজনীর রেডি হওয়া হয় নি। সাদমান এবার বিরক্ত হয়ে উঠতে নিলে রজনী রুম থেকে বেরিয়ে আসে। সাদমান থমকে যায়। রজনী বোরকা পড়েছে সাথে মাথায় হিজাব। ফাস্ট টাইম এমন বেশে দেখছে সাদমান। রজনী ল্যাগেজ টা নিয়ে এগিয়ে এসে বলে-
-“ সরি খুব দেরি করিয়ে ফেললাম।
সাদমান মুচকি হেঁসে বলে-
-“ তা তো করিয়েছেনই। এবার যাওয়া যাক তাহলে?
-“ শিওর।
সাদমান সানজিদা আর রজনী কে নিয়ে বের হলো।

বেলা ১২ টার দিকে শাফায়াত রুয়াত আর সাদমান কে নিয়ে পৌঁছায় শাফায়াত তার দাদু বাড়ি। দুতলা বিশিষ্ট তিন খানা বাড়ি তিন দিকে আর সামনে বাড়ির গেট। মস্ত বড় উঠান। একপাশে গরু রাখার ঘর। বাড়ির ঠিক সামনেই বড় পুকুর। তার পাশেই চাষের জমি। সেখানে সবজি লাগানো আছে। শাফায়াত রুয়াত কে নিয়ে বাড়ির ভেতরে ঢুকতেই বাড়ির উঠানে কিতকিত খেলতে থাকা তেরো বছরের রুনা শাফায়াত কে দেখে খেলা বাদ দিয়ে ভূত দেখার মতো চমকে উঠে। মুখে দু হাত দিয়ে চিৎকার করে ডেকে উঠে-
-“ মা ও মা দেহো কেরা আইছে৷ শাফায়াত ভাই আইছে ভাবিরে লইয়া। কই গো তোমরা, তাড়াতাড়ি বাহিরে আহো।

রুনার ডাক শুনে রুনার মা সাইদা বেগম ছুটে বেরিয়ে আসে। পাশের বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসে শাফায়াত এর ফুপি জবেদা আর ছোট কাকি মরিয়ম। সাইদা বেগম এগিয়ে এসে শাফায়াত আর রুয়াতের সামনে দাঁড়িয়ে বলে-
-“ এই টা তোমার বউ শাফু?
শাফায়াত উপর নিচ মাথা ঝাকায়। সাইদা বেগম রুয়াতের থুতনি খানায় চুমু খেয়ে বলে-
-“ মাশা-আল্লাহ ভীষণ মিষ্টি দেখতে তোমার বউ। আসো ভেতরে আসো। তোমার সাথে এটা কে?
শাফায়াত নাইমুরের দিকে তাকালো।
-“ আমার বন্ধু কাকি।
-“ ওহ্ বাবা নাম কি তোমার?
নাইমুর জবাবা দিলো-
-“ নাইমুর জাকারিয়া।
-“ বেশ সুন্দর নাম তো। এই রুনা তর ভাই ভাবি আর নাইমুর রে রুমে নিয়ে যা। আমি রান্নার ব্যবস্থা করি।
রুনা দৌড়ে রুয়াত এর হাত খানা ধরে বলে –
-“ মিষ্টি ভাবি চলো ভাইয়ের রুমে নিয়ে যাই।
রুনা রুয়াত কে নিয়ে চলে গেলো। শাফায়াত নাইমুর কে নিয়ে অন্য রুমে গেলো। যেটায় নাইমুর থাকবে। শাফায়াত নাইমুর কে তার রুমে ফ্রেশ হতে বলে নিজের রুমে চলে আসে। রুনা এখনাও রুয়াতের সাথে। ভীষণ মিশুক একটা মেয়ে। শাফায়াত রুনার মাথায় গাট্টা মে’রে বলে-
-“ রুয়াত কে এখনও ফ্রেশ হতে দিস নি কেনো?
রুনা দাঁতে কামড় দিয়ে বলে-
-“ সরি ভাই। আমি ভুলেই গেছিলাম। ও মিষ্টি ভাবি তুমি ফেরেশ হও আমি পরে আসমু নি।
-“ ওটা ফেরেশ না রুনা ফ্রেশ বলতে শিখ। স্কুলে কি যাস এসব ভুলভাল ইংলিশ শিখতে?
-“ একটু একটু ভুলে যাই। আমি কি তোমার মতো বড় নাকি যে মনে থাকবে। ব্রেন ছোট মাথাও ছোট এতো শব্দ মনে রাখা যায় এই ছোট্ট ব্রেন মাথায়, মিষ্টি ভাবি তুমিই কও।
-“ ঠিক ই তো বলছে রুনা।
শাফায়াত চোখ পাকিয়ে তাকালো। রুয়াত পাত্তা দিলো না। রুনা চলে গেলো। রুয়াত ল্যাগেজ থেকে জামা বের করে ফ্রেশ হয়ে নিলো। রুয়াত বের হলে শাফায়াত ঢুকে ফ্রেশ হতে। রুয়াত বিছানায় পা ঝুলিয়ে বসে ভেজা চুল টাওয়াল দিয়ে মুছতে থাকে। এমন সময় দরজা শব্দ করে ধাক্কায় দিয়ে খুলে কেউ ভেতরে ঢুকে। রুয়াত ঘাড় বেঁকিয়ে তাকায়। লাল সেলোয়ার-কামিজ পড়া এক সুন্দরী মেয়ে। মেয়েটা রুমে ঢুকেই এদিক ওদিক তাকিয়ে কিছু খুঁজতে থাকে। রুয়াত বসা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে বলে-
-“ কাউকে খুঁজছেন আপু?
মেয়েটার দৃষ্টি এবার রুয়াতের দিকে নিবন্ধ হলো। রুয়াতের পা থেকে মাথা অব্দি দেখে গম্ভীর কন্ঠে বলল-
-“ শাফু কোথায়?
-“ উনি তো ওয়াশরুমে গিয়েছে ফ্রেশ হতে। কিন্তু আপনি কে আপু?
-“ শাফু রুম থেকে বের হলে বলবে জবা এসেছিল। সে যেনো দেখা করে জবার সাথে।

জবা! রুয়াত এর আগেও এই নাম টা শুনেছে। শাফায়াত এর ফুপির মেয়ে৷ কিন্তু জবা মেয়েটাক দেখার খুব ইচ্ছে তার। দেখবে কেমন সুন্দরী ঐ মেয়ে। যার প্রশংসার পঞ্চমুখ করেছিলো সবাই।
মেয়েটা চলে গেলো। শাফায়াত ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে রুয়াত কে গম্ভীর মুখ করে কিছু ভাবতে দেখে বলে-
-“ কি ভাবছো?
রুয়াত ঘাড় ফিরিয়ে তাকায়। গম্ভীর কন্ঠে বলে-
-“ কিছু না। এক আপু এসেছিল। বলল জবা এসেছিল৷ আপনাকে দেখা করতে বলেছে।

শাফায়াত ভেজা টাওয়াল টা রুয়াতের হাতে দেয়। রুয়াত সেটা বেলকনিতে মেলে দিয়ে আসে। শাফায়াত বলে-
-“ চলো দাদু আর দিদার সাথে দেখা করে আসি।
রুয়াত মাথায় ওড়না টেনে নিলো। শাফায়াত রুয়াতের হাত ধরে রুম থেকে বের হলো। রহমান আলি বিছানায় শুয়ে ছিলেন৷ শাফায়াত কো রুমে দেখে উঠে বসার চেষ্টা করে। শাফায়াত ধরে উঠে বসায়৷ পাশেই দিদা ময়না বেগম ঘুমাচ্ছে। দুজনেই ঠিকভাবে নড়াচড়া করতে পারে না। রহমান আলি স্ত্রী কে ডাকলো-
-“ ময়না দেখো কেরা আইছে। আমাগো শাফু আর নাত বউ আইছে।

ময়না বেগম চোখ মেলে তাকালো। কিন্তু উঠার চেষ্টা করলো না। কারন তিনি একদম বিছানায় পড়ে গেছে। মুখের এক পাশ প্যারালাইজড হয়ে গেছে। হাতের ইশারায় রুয়াত কে বললো কাছে আসতে। রুয়াত পাশে এসে বসলো। ময়না বেগম দু চোখ ভরে দেখলো নাত বউ কে। অতঃপর হাতে থাকা বালা টা খুলে রুয়াতের হাতে পড়িয়ে দিলো।

কিছুক্ষণ কুশলাদি করে শাফায়াত রুয়াত কে নিয়ে চলে আসলো।

উঠানে বসে ছিলো নাইমুর। শাফায়াত গিয়ে নাইমুরের পাশে বসে। আর রুয়াত রান্না ঘরের দিকে চলে যায়। সাইদা বেগম রুয়াত কে দেখে বলে-
-“ আরে বউ তুমি এনে কেনো? যাও রুমে যাও। কালি লেগে যাবে শরীরে।

রুয়াত পাশে বসে বলে-
-“ ভরলে সাবান দিয়ে পরিষ্কার করে নিব। এখন আমাকে বলে দিন কি কি করতে হবে। আমি করে দিচ্ছি।
-“ কিছু করতে হবে না মা। তুমি রুমে যাও।
-“ একা একা কাজ করছেন কষ্ট হচ্ছে না? আমাকে বলুন আমি কিছুটা করি। তারপর চলে যাব।
-“ আচ্ছা তাইলে তুমি বরং ডাইনিং টেবিল টা গুছাও গিয়ে। আমার রান্না প্রায় শেষের দিকে।

রুয়াত আচ্ছা বলে চলে গেলো। নাইমুর ফোন স্ক্রোল করতে করতে বলে-
-“ সাদমান রা আসবে কখন?
শাফায়াত পকেট থেকে ফোন টা বের করে সাদমান কে কল লাগায়। সাদমান কল রিসিভ করলে শাফায়াত জিজ্ঞেস করে কতদূর তারা। সাদমান জানায় বাড়ির কাছাকাছি তারা।

শাফায়াত সাবধানে আসতে বলে ফোন টা কাটতেই সামনে তাকিয়ে দেখে জবা দাঁড়িয়ে আছে।
শাফায়াত এর ভ্রু কুঁচকে আসলো। নাইমুর জবা কে দেখে বলে-
-“ আরে জবা যে কেমন আছো?
জবা শুঁকনো মুখে বলল-
-“ আপনার ফ্রেন্ড যেমন টা রেখে গেছে তেমন টাই আছি।
শাফায়াত এর বিরক্ত ভাব চলে আসলো জবা কে দেখে। তাই বসা থেকে উঠে চলে যেতে নিলে জবা বলে উঠে –
-“ চলে যাচ্ছ কেনো? বিরক্ত লাগছে আমাকে? লাগবেই তো। বউ যে আছে এখন তোমার।
খুব ভালোবাসো বুঝি বউ কে?
শাফায়াত সামনের দিকে ফিরেই জবাবে বলল-
-“ বউ মানুষটাকে ভালোবাসার জন্যই আল্লাহ জীবনে পাঠিয়েছে। তাকে ভালোবাসবো এটাই তো স্বাভাবিক।
-“ অন্যের বুকে আগুন জ্বালিয়ে সুখী থাকবে ভেবেছো?
-“ যেচে কেউ আগুন জ্বালায়ি কষ্ট পেয়ে বদদোয়া দিলে,,কথাটা মিলে যাবে— শকুনের দোয়ায় গরু ম’রে না।
-“ শকুনের সাথে তুলনা করছো আমাকে?
শাফায়াত এবার ফিরে তাকালো। তাচ্ছিল্য নিয়ে বলল-
-“ যদি ভেবে থাকো তুলনা করেছি তাহলে তাই।

শাফায়াত চলে গেলো। জবা রাগে শাফায়াত এর যাওয়া দেখে জায়গা প্রস্থান করলো। নাইমুর কিছুই বুঝলো না এদের কথার।

দুপুরের দিকে সাদমান চলে আসে,,রুয়াত বোন কে দেখলামত্রই ছুটে আসে। রজনী জড়িয়ে ধরে বোন কে রুয়াত রজনী আর সানজিদা কে নিয়ে ভেতরে ঢুকে। নাইমুর আড়চোখে সানজিদা কে দেখে নিলো৷ সানজিদা ভুলেও তাকালো না এই পুরুষটির দিকে। সাদমান সান গ্লাশ টা শার্টের পকেটে ঢুকিয়ে চুল গুলো পেছনে ঠেলে দিয়ে বলে-
-“ সেকেন্ড টাইম আসলাম ব্রো তোমার দাদু বাড়ি। বাড়িটা আগের মতোই আছে।
-“ হ্যাঁ চল রুমে। ফ্রেশ হয়ে নিবি। দুপুরের খাবার এখনই খাই নি।
সাদমান নাইমুরের দিকে তাকিয়ে বলল-
-“ হেই ব্রো এর ফ্রেন্ড ব্রো চলো রুমে গিয়ে ফ্রেশ হবো।
নাইমুর সাদমান কে নিয়ে চলে গেলো রুমে। ফ্রেশ ট্রেশ হয়ে সবাই মিলে এক সাথে দুপুরের খাবার টা খেয়ে নেয়।

#চলবে?