গোধুলির শেষ বিকেলে তুমি আমি পর্ব-০৭

0
88

#গোধুলির_শেষ_বিকেলে_তুমি_আমি
#পর্ব৭
#Raiha_Zubair_Ripti

ভার্সিটির মাঠে কৃষ্ণচূড়া গাছের নিচে চেয়ারে বসে আছে নেহাল, রোহান আর কিছু ছেলেপেলে। নেহাল ফোন স্ক্রোল করছে আর রোহান কৃষ্ণচূড়া গাছে থাকা লাল টকটকে ফুলের দিকে তাকিয়ে আছে। নেহালের ফোন বেজে উঠলো। ফোনের উপর নীতি নাম টা দেখে মৃদু হেঁসে উঠলো নেহাল। রিসিভ করে কানে নিলো। ওপাশ থেকে নীতি বলে উঠল-
-“ হ্যালো ভাইয়া আমি ট্রেনে উঠে গেছি। তুমি ঠিক টাইমে কিন্তু স্টেশনে থেকো।
নেহাল উত্তর দিলো-
-“ চিন্তা করিস না। ট্রেন থামার আগেই আমি স্টেশনে এসে দাঁড়িয়ে থাকবো। নিশ্চিন্তে আয়।

নেহাল ফোন কেটে দিলো। রোহানের দিকে তাকিয়ে বলল-
-“ আমি আসছি রোহান। পরে দেখা হবে।
রোহান ভ্রু কুঁচকালো।
-“ কই যাস তুই?
-“ নীতি কে আনতে।
নীতি নামটা শুনেই বিরক্তিতে চোখ মুখ কুঁচকে আসলো রোহানের। মেয়েটা আবার আসছে এই শহরে! জ্বালিয়ে ছাড়বে যে রোহান কে।
-“ চট্টগ্রামের সভায় কি তাহলে যাবি না আজ রাতে? নাকি একাই চলে যাব আমি?
-“ না না যাব তো তোর সঙ্গে। একদম রেডি হয়ে আসবো তোর বাড়ির সামনে। তিনদিনের ব্যাপার তো?
-“ হুমম। আর শোন একটা কথা।
-“ হুমম বল।
-“ তোর বোন কয়দিন থাকবে এই শহরে?
-“ একেবারে চলে আসছে।
রোহান বসা থেকে উঠে দাঁড়ালো।
-“ খবরদার ভুলেও পার্মানেন্ট নীতি কে এই শহরে রাখবি না। আমাকে বিরক্ত করে শেষ করে দিবে। ওর প্যারা আমি নিতে চাই না। প্লিজ বোঝ আমার দিক টা।
নেহাল মুচকি হাসলো।
-“ মাস খানেক থাকবে। তারপর আবার হোস্টেলে চলে যাবে। মাস খানেক সহ্য করে নে ইয়ার।
-“ বিয়ে দিয়ে পারমানেন্ট এই শহর থেকে বিদায় কর নীতি কে। যা জ্বালানোর জামাই কে গিয়ে জ্বালাক। আমি রিলিফ থাকতে চাই। বিচ্ছু একটা মেয়ে। তোর আর নীতির মাঝে আকাশপাতাল তফাৎ। আন্টি নিশ্চয়ই নীতি কে কোনো ব্রিজ এর নিচ থেকে কুড়িয়ে এনেছে।

নেহাল আর কথা বাড়ালো না। যে ছেলে বুঝেও বুঝে না কেনো নীতি তাকে এতো জ্বালায় তার সাথে তর্কে যাওয়াটাই বৃথা। নেহাল চলে গেলো স্টেশনের দিকে নিজের ছোট বোন নীতি কে আনতে।
রোহান নিজেও বাসার দিকে হাঁটা ধরলো। আজ রাতে চট্টগ্রাম যেতে হবে তিনদিনের জন্য। ছাত্রলীগের এক সভায় তার উপস্থিত থাকতে হবে। যাওয়ার আগে অবশ্যই রুয়াতের কন্ঠস্বর টা শুনে যাবে।

নিয়ম মেনে আজ শিকদার বাড়িতে রুয়াতের গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান করা হয়েছে৷ বাড়ির বাহিরে কোনো রঙবেরঙের আলোর ছিটেফোঁটা ও নেই। বাড়ির ভেতরটা হাল্কা পাতলা সাজানো হয়েছে। বাহির থেকে কেউ বলতেই পারবে না এ বাড়িতে বিয়ের উৎসব লেগেছে। রুয়াত হলুদের শাড়ি টা পড়ে বাসাতেই নিজ নিজ সেজেছে। যেহেতু সে নিজেই সাজের কাজ টা ভালো পারে সেজন্য আর টাকা খরচ করে পার্লারে যায় নি সাজতে।

আয়নার সামনে বসে নিজেকে দেখছে। ও বাড়ি থেকে সানজিদা আর সাদমান এসেছে। সানজিদা রুয়াতের রুমের বিছানায় বসে তার দিকে তাকিয়ে আছে।
-“ হলো তোমার ভাবি?
রুয়াত ঘাড় বেঁকিয়ে তাকালো। মৃদু হেঁসে বলল-
-“ হ্যাঁ।
-“ তাহলে চলো।
সানজিদা রুয়াত কে নিয়ে ড্রয়িং রুমে চলে গেলো।
রজনী আজ বাসন্তী কালারের শাড়ি পড়েছে। চুল গুলো হাত খোঁপা করা। মুখে কোনো প্রসাধনীর ব্যাবহার নেই। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে দেখে নিলো। দু বছর পর আজ শাড়ি পড়লো রজনী। রজনী কে শাড়িতে ভীষণ পছন্দ করতো নওফিল। কথাটা ভাবনায় আসতেই বুক ফেটে কান্নার দলা গুলো বেরিয়ে আসতে চাইলো। রজনী সংযত করে নিলো। অতঃপর শাড়ির কুঁচি গুলো ধরে নিচে আসলো।

সাদমান শিকদার বাড়িতে আজ প্রথম এসেছে। সেজন্য হেঁটে হেঁটে দেখছে পুরো বাড়ি। বাড়ির ভেতর টা দেখে বোঝায় যায় এ বাড়ির লোক গুলো বেশ সৌখিন। এই বাড়িতে ছোট্ট একটা লাইব্রেরি আছে। সেখানে বুক সেলফে হরেক রকমের দেশি বিদেশি বইয়ের সমাহার। সাদমানের লাইব্রেরি টা বেশ পছন্দ হলো। লাইব্রেরি থেকে বের হয়ে মাথা উঁচু করতেই সাদমানের হৃৎস্পন্দন থেমে গেলো। মিস সিনিয়র শাড়ি পড়েছে। মুখে সাজের ছিটেফোঁটা ও নেই৷ তবুও কি সুন্দর লাগছে তাকে!

রজনী ড্রয়িং রুমের এক কোনায় গিয়ে বসলো। সোফায়,কবির শিকদার, সামিরা শিকদার, রজনীর ফুপি,সানজিদা আর রুয়াত বসে আছে।
সাদমান এগিয়ে আসলো। সামিরা শিকদার তাড়া দিলো হলুদ গায়ে ছোঁয়ানোর জন্য। কবির শিকদার প্রথম ছুঁইয়ে দিলো হলুদ,তারপর সামিরা শিকদার, তারপর রুয়াতের ফুপু আর সানজিদা ছুঁইয়ে দিলো। এবার পালা রজনীর। রজনী দৃষ্টি নত রেখে বোনের দিকে এগিয়ে গেলো। টেবিলের উপর থেকে একটু হলুদ নিয়ে ছুঁইয়ে দিলো গালে। রজনীর পেছনে এসে দাঁড়ালো সাদমান। রজনী ঘুরে যাবার সময় সাদমানের বাহুর সাথে তার বাহুর স্পর্শ হয়। সাদমান চোখ বন্ধ করে ফেলে। কিছু একটা ফিল হয় তার। অতঃপর রুয়াতের গালে হলুদ ছুঁইয়ে দেয়।

এদিকে রোহান একের পর এক রুয়াত কে ফোন দিয়েই চলছে। খালি রুমে বালিশের তলায় ফোন টা বেজেই চলছে। প্রায় দশ টা কল দেওয়ার পর ও যখন ফোন রিসিভ হলো না তখন আর ফোন দেওয়া ছেড়ে দিলো। মনে মনে ঠিক করে ফেললো চট্টগ্রাম থেকে ফিরে সে রুয়াত কে তার মনের কথা বলে দিবে। রাত ৯ টা বেজে উঠায় রোহান ব্যাগ নিয়ে বের হলো বাড়ির বাহিরে নেহাল অপেক্ষা করছে,চট্টগ্রাম যেতে হবে তাদের।

রাতের ডিনার টা করে তারপর সানজিদা আর সাদমান চলে যায়। যাওয়ার আগে রুয়াতের সাথে তারা পিক তুলে নেয়। ভাই কে দেখাতে হবে যে।

শাফায়াতের হলুদের অনুষ্ঠান শেষ হয়েছে রুয়াতের আগেই। হলুদের অনুষ্ঠান শেষ হতে না হতেই শাফায়াত ওয়াশরুমে ঢুকে গোসল করে ফ্রেশ হয়ে নেয়। গোসল না করলে তার যে রাতে ঘুম হবে না অস্বস্তিতে। একটা নেভি ব্লু কালারের টি-শার্ট আর টাওজার পড়ে বসে আছে রুমে। সাদমান বাসায় ফিরেই সোজা শাফায়াত এর রুমে ঢুকে। শাফায়াত কে বিছানায় বসে থাকে দেখে সাদমান এগিয়ে এসে শাফায়াত এর পাশে বসে। গলা ঝেড়ে বলে-
-“ ব্রো তোমার জন্য সারপ্রাইজ আছে।
শাফায়াত ভ্রু কুঁচকালো।
-“ কিসের সারপ্রাইজ?
-“ হোয়াটসঅ্যাপ চেক করো আর নিজেই দেখে নাও।
শাফায়াত ড্রেসিং টেবিলের উপর থেকে ফোনটা নিয়ে হোয়াটসঅ্যাপ চেক করলো। সাদমান রুয়াতের ছবি পাঠিয়েছে । ছবিটা এক নজর দেখেই ফোন টা বন্ধ করে দিলো।
-“ দেখেছো ব্রো?
-“ হু।
-“ কেমন লাগলো?
-“ কি কেমন লাগবে?
-“ ভাবি কে।
-“ ভালো।
সাদমান গাল ফুলিয়ে বলল –
-“ শুধুই ভালো?
-“ তো কি?
-“ আশ্চর্য হই আমি ব্রো। নিজের হবু বউ কে নিয়ে প্রশংসা করতেও কিপ্টেমি করছো তুমি!
-“ জাস্ট শাট-আপ সাদু৷ রুমে থেকে বের হ, ঘুমাবো।
-“ হ্যাঁ পারোই তো শুধু এটা। রুমে আসলেই বের হয়ে যেতে বলো। ভাবির পিক তুলে হোয়াটসঅ্যাপে পাঠিয়ে ভাবলাম তুমি হয়তো খুশি হবে আমাকে থ্যাংকস জানাবা। তা না করে খুশি হয়েছো নাকি অখুশি বুঝতেই পারছি না। কৃতজ্ঞতা বলতে কিছুই নেই তোমার কাছে ব্রো।

সাদমান চলে গেলো। শাফায়াত রুমের লাইট বন্ধ করে শুয়ে পড়লো। চোখ বন্ধ করে এপাশ ওপাশ করতে লাগলো। ঘুম রা চোখে ধরা দিচ্ছে না। পায় ঘন্টা খানেক হাসফাস করে ঘুমাতে সফল হলো।

————————-

সকালের সূর্যের রশ্মি চোখে পড়তেই ঘুম ভেঙে যায় রুয়াতের৷ আড়মোড়া ভেঙে বিছানা থেকে উঠেই নিজেকে খেয়াল করতেই দেখে পড়নে সেই হলুদ শাড়ি। শরীরে হলুদ লেগে আছে। মখমলে বিছানা ছেড়ে নেমে ওয়াশরুমে চলে যায় গোসল করতে। হোয়াইট কালারের কুর্তি পড়ে বেরিয়ে আসে। রাত থেকে ফোন টা চেক করা হয় নি। তাই সময় দেখার জন্য বালিশের নিচ থেকে ফোন টা বের করে সময় দেখার জন্য স্কিনে চোখ বুলাতেই রুয়াতের চোখ ছানাবড়া। দশ টা মিসড কল উঠে আছে। নম্বর টা খেয়াল করতেই দেখে রোহানের নম্বর। রুয়াত সোজা নম্বর টা ব্লক লিস্টে ফেলে রাখলো। এসব রাজনীতি করা ছেলপেলের থেকে যত দূরে থাকা যায় ততই ভালো। এরা খুব একটা ভালো হয় না।

সামিরা শিকদার মেয়ের খাবার টা রুমে দিয়ে গেলো। রুয়াত খাবার টা খেয়ে নিলো। দশটা বাজতেই পার্লারের লোক এসে রুয়াত কে সাজিয়ে দিলো৷ খুবই সিম্পল সাদামাটা সাজ দিয়েছে রুয়াত। লাল টকটকে বেনারসির সাথে বেশ মানিয়েছে। সকাল থেকে রজনীর দেখা মিলেনি এখনও রুয়াতের। বোন কে দেখার জন্য মনটা হাসফাস করছে। সেজন্য ফুপাতো ভাই রাব্বি কে ডেকে বলল রজনী কে গিয়ে বলতে রুয়াত ডাকছে তাকে। রাব্বি ছুট লাগালো রজনীর ঘরে। রজনী তখন নিজের রুমের বেলকনিতে দাঁড়িয়ে আছে। রাব্বি গিয়ে বলল-
-“ রজু আপু রুয়াত আপু ডাকে তোমায়।
আকস্মিক রাব্বির কথার আওয়াজ শুনে চমকে গেলো রজনী। কারন সে বেলকনিতে দাঁড়িয়ে কিছু ভাবছিলো। রাব্বির দিকে তাকিয়ে মৃদু হেঁসে বলল-
-“আসছি আমি,তুই যা।
রাব্বি চলে গেলো। রজনী আরো কিছু সময় বেলকনিতে থেকে রুয়াতের রুমে দিকে হাঁটা ধরলো। রুয়াতের রুমের কাছে আসতেই কবির শিকদার এর সাথে দেখা হয়ে যায়। কবির শিকদার একবার মেয়ের মুখের দিকে তাকায় কিন্তু কিছু বলে না। রজনী বাবা কে দেখামাত্রই দৃষ্টি নত রেখেই নীরবে পাশ কাটিয়ে চলে যায়।

রুয়াতের রুমের দরজার সামনে এসে দাঁড়িয়ে যায় রজনী। লাল টুকটুকে বেনারসি তে কি সুন্দর লাগছে তার ছোট বোন টাকে। মনে পড়ে গেলো চার বছর আগের এক ঘটনা। সেদিনও তো সে এমনই সজে রাঙিয়েছিলো নিজেকে। সেই দিনটায় নিজেকে পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী ভাগ্যবতী লাগছিলো। কিন্তু আজ! আজ তো পৃথিবীর সবচেয়ে অসুখী, অসহায় লাগছে।
চোখের কার্নিশ বেয়ে গড়িয়ে পড়া অশ্রু টুকু সন্তপর্ণে মুছে রুয়াতের দিকে আগালো। রুয়াত কে এক হাতে জড়িয়ে মাথায় চুমু খেয়ে বলল-
-“ মাশা-আল্লাহ খুব সুন্দর লাগছে আমার বোন টাকে।
রুয়াত লজ্জা পেলো। দৃষ্টি নত করে তাকালো ফ্লোরে।
-“ কখন থেকে অপেক্ষা করছিলাম তোমার থেকে কমপ্লিমেন্ট শোনার জন্য অথচ এলে এখন!
রজনী মৃদু হাসলো।
-“ আজকের পর থেকে তো রোজ কমপ্লিমেন্ট করবে এমন কাউকে পেয়েই যাচ্ছিস। বোন কে কি ভুলে যাবি রুয়াত?
রজনীর কন্ঠ কাঁপছিল। রুয়াত বোনের দিকে ঘুরে দাঁড়ালো। বোনের গালে আলতো করে হাত রেখে বলল-
-“ তোমার সুখ তোমার কাছে ফিরিয়ে দিতেই আমার এই বিয়ে আপু। তোমার জীবনের অপূর্ণতা কে আমি নিজের দ্বারা পূরণ করে দিব। তুমি কিছু চেয়েছো আর রুয়াত দিবে না এমনটা কখনও হয়েছে?
রজনীর চোখ মুখ খুশিতে জ্বলে উঠলো।
-“ কথা দিচ্ছিস?
-“ হুমম।
রজনী কৃতজ্ঞতার প্রকাশ করলো বোন কে জড়িয়ে ধরে।
-“ আমি অপেক্ষায় আছি সেই দিনটার।
-“ তার আগে কথা দাও আমি চলে যাওয়ার পর ঠিক মতো মেডিসিন খাবে। আর বাহিরের মানুষরের সামনে যথা সম্ভব নিজেকে ঠিক রাখবে।
-“ আমি ভীষণ চেষ্টা করি রুয়াত নিজেকে ঠিক রাখার। কিন্তু চোখের সামনে ওমন নরম তুলতুলে দেহের প্রাণ দেখলে নিজেকে সামলাতে পারি না।
-“ সামলাতে হবে আপু৷ বাঁচতে হবে তো সুস্থ ভাবে।
দু বোনের কথার মাঝেই সামিরা শিকদার আসে রুয়াত কে নিয়ে যেতে। কারন শাফায়াত রা চলে এসেছে। রজনী পেছন পেছন আসলো বোনের।
ড্রয়িং রুমে সাদা পাঞ্জাবি পড়ে বসে আছে শাফায়াত। পাশেই, সানজিদা, সাদমান,শারমিন বেগম। কবির শিকদার কাজির পাশে বসে আছে।
রুয়াত কে নিয়ে সামিরা শিকদার শাফায়াত এর পাশে বসিয়ে দিলো। শাফায়াত ভুলেও রুয়াতের দিকে তাকায় নি। কাজি সাহেব শারমিন বেগমের দিকে তাকিয়ে বলল-
-“ দেনমোহর কত ধার্য করিবো?
সাদমান পাশ থেকে বলল-
-“ আঙ্কেল দিয়ে দিন না বিশ পঁচিশ লাখ। আমার ব্রো বিয়ে করছে কি ছেড়ে দেওয়ার জন্য নাকি।
শাফায়াত কেশে উঠলো। বিশ পঁচিশ লাখ কি মুখের কথা! কাজি সাহেব সাদমানের দিকে তাকিয়ে বলল-
-“ এটা ছেড়ে দেওয়ার জন্য না। এই দেনমোহর পরিশোধ না করলে মেয়ে কে ছুঁতে পারবে না তোমার ভাই।

সাদমান নুইয়ে গেলো। আমতাআমতা করে বলল-
-“ তাহলে আর কি সবচেয়ে কম টাকা দেনমোহর করেন।
শারমিন বেগম সাদমান কে ধমক দিয়ে চুপ করিয়ে বলে-
-“ দু লাখ করেন কাজি সাহেব।
কাজি সাহেব শারমিন বেগমের কথা মতই দু লাখ টাকা ধার্য করলেন দেনমোহরে। এবার রুয়াতের কবুল বলার পালা। রুয়াত কে কবুল বলতে বললে রুয়াত বোনের দিকে তাকায়। বোনের মুখে আগাম পেতে যাওয়া কিছুর আনন্দ এখনই চোখ মুখে উপচে পড়ছে। যখন হাতে পাবে তখন তাহলে খুশির সীমানা টা কোথায় গিয়ে ঠেকবে ভাবতেই রুয়াতের মুখে হাসি ফুটলো। বোনের দিকে পূর্ণ দৃষ্টি রেখেই কবুল বলে উঠল রুয়াত। কাজি সাহেব শাফায়াত কে কবুল বলতে বললে শাফায়াত আড় চোখে এক ঝলক তাকায় তার জীবনসঙ্গী হতে যাওয়া রুয়াতের দিকে৷ দৃষ্টি তার দিকে রেখেই কবুল বলে দিলো।
সাদমান রজনীর দিকে তাকালো। মেয়েটাকে দেখে মনে হচ্ছে মেয়েটা বোনের বিয়ে উপলক্ষে এক্সট্রা যে সাজ বা নতুন জামাকাপড় পড়ার সেটা তার মধ্যে নেই। অথচ চোখ মুখে এতো আনন্দের খেলা দেখে মনে হচ্ছে বোনের বিয়েতে সবচেয়ে খুশি রজনী। মিস সিনিয়ার কে অদ্ভুত লাগে সাদমানের কাছে। যেনো তেনো অদ্ভুত না ভীষন অদ্ভুত। অন্যান্যদের থেকে অনেক টাই আলাদা এই মেয়ে৷ কিছু একটা আছে এর মাঝে। কিন্তু কি আছে?

#চলবে?