#গোধূলি_রাঙা_আলোয়
#শেষ_পর্ব
আতিয়ার ছুটি দ্রুত ফুরিয়ে গিয়েছে। বিয়ে উপলক্ষে সাত দিন ছুটি নিয়েছিল। বিয়ের পরদিন সকালেই রত্না বাচ্চাদের নিয়ে বাবার বাড়ি চলে গিয়েছে। হামিদও রত্নার সাথে শ্বশুর বাড়ি গিয়েছে, সেখান থেকেই অফিস করছে। জাহনারা বেগমও ছোটো মেয়ে হেলেনের বাসায় চলে গিয়েছিলেন। ফলে বিয়ের পরদিন থেকেই সংসারটা বলতে গেলে টোনাটুনি আতিয়া আর মিসবাহর ছিল। হাসান বাড়িতে ছিল ঠিকই, তবে সারাদিন বাসায় থাকে না। মিসবাহ যেহেতু দোকানে কম সময় দিবে কয়েকদিন, তাই দোকানের দিকটা হাসান দেখছে। মোনা এসে এসে সময়ে সময়ে দেখে যায় আতিয়াকে, সংসারের কোনটা কোথায় আছে বুঝিয়ে দিয়ে যায়। মিসবাহ বাজার এনে দেয়, আতিয়া নিজের মতো রান্নাবান্না করে। এর মাঝে একদিন বাইরে গিয়েও খেয়ে এসেছে। সংসারের শুরুটা স্বাভাবিক না। তবু মোনার কথাই ঠিক মনে হয় আতিয়ার। মোনা বলে সংসারে একটা মেয়ের জন্য সবার আগে স্বামী, স্বামী পাশে আছে মানে সব আছে। বাকি সম্পর্কগুলো তাকে মানলো কী মানলো না তা তখন আর ততটা কষ্ট দেয় না। তাছাড়া এই বাড়ির মূল কর্তা মিসবাহ। যে যতই অসন্তুষ্ট হোক, মিসবাহর স্ত্রীর সাথে সরাসরি খারাপ ব্যবহার করবে না। হয়তো খোঁচা দিবে, কটু কথা শুনিয়ে বলবে। কিন্তু তারজন্য নিজেদের সম্পর্ক খারাপ করতে না। বিয়ের পরদিন সকালে মোনা বাসায় এসে দেখে আতিয়ার মন খারাপ। মিসবাহও বাসার সবাই চলে যাওয়ায় কেমন বিমর্ষ। তখন আতিয়াকে মোনা বলে,
“ভাবী, আমি বয়সে তোমার ছোটো। কিন্তু সংসার করায় তোমার সিনিয়র। তাই দুটো কথা বলি। আম্মা রাগ করে গিয়েছে, রত্না ভাবী রাগ করে চলে গিয়েছে এখন তাদের কিভাবে মান ভাঙাতে হবে! কিভাবে পলিনের মা হতে পারবা তা প্রমাণ করতে হবে! এসব কোনটা নিয়েই চাপ নিও না। কিছু সম্পর্কে এত চাপ নেওয়া, এত ভাবাটাই ভুল। আমার বিয়ে হয়েছে ঊনিশ বছর বয়সে, তখন শুধু চিন্তা করতাম আর ভয় করতাম। শ্বশুরবাড়ির সবার মন রক্ষা কিভাবে হবে তাই নিয়ে অস্থির ছিলাম। কেননা আম্মাও তাই শিখাতেন। সবার মন রক্ষা করে চলতে বলতেন। শাশুড়ি থেকে শুরু করে বাড়ির কাজের লোকটার মন পর্যন্ত পড়ার চেষ্টা করতাম। এত মন পড়তে গিয়ে যা হলো, সবার মন রক্ষা করতে করতে নিজের মন নাই হয়ে গিয়েছিল। এখন আমি কাউকে খুশী করার চেষ্টা করি না। দেরিতে হলেও বুঝেছি যে আমরা ভাবী প্রেম ভালোবাসা দিয়ে সব জয় করে ফেলবো ভাবলেও এটা ভুল। প্রেম ভালোবাসার সাথে শক্ত ব্যক্তিত্বও লাগে। না হলে ঐ প্রেম ভালোবাসার দাম কেউ দেয় না।”
“মোনা, তোমার কথাগুলো কী চমৎকার! তোমার মতো ননদকে ভালোবাসা না দিয়ে পারা যায়?”
“আমাকে দাও সমস্যা নাই। যে তোমাকে ভালোবাসা দিবে, তাকে তুমিও দিবা। যে দিবে না, তার ভালোবাসার জন্য উতলা হওয়ার কিছু নাই, লুটানোরও কিছু নাই। অপেক্ষা করো। আগে আমি কেউ রাগ করলে মান ভাঙাতে এমনই পেরেশান হতাম। এখন বলি চুলায় যাক। আমি তো অন্যায় কিছু করি নাই। যখন মান ভাঙার ভাঙবে। তুমিও পেরেশান হইয়ো না যে আম্মার মন কিভাবে জয় করবা। জয় যখন হওয়ার এমনিতেই হবে। এখন তুমি আর ভাইয়া যত বুঝাতে যাবা, তত আম্মা ভাব নিবে। এখন সুন্দর মতো ভাইয়াকে দিয়ে আম্মাকে ফোন দেওয়াও। ভাইয়া আম্মাকে বলুক আসতে। যত রাগই হোক, মায়েরা ছেলে বলতে অজ্ঞান। কিন্তু তুমি ফোন দিয়ে কথা বলতে যেও না। দশটা কথা শোনাবে। তোমারও মন খাট্টা হবে। ভাইয়াকে দিয়েই আম্মা আর হেলেনকে ফোন দেওয়াবা। কয়েকদিন ভাব নিবে এরপর চলে আসবে। আম্মা বাড়ি ছেড়ে কোথাও থাকতে পারে না। হেলেনও যত ভাব নিয়ে আম্মা আর পলিনকে নিয়ে গিয়েছে, ততটাই অস্থির হয়ে দিয়েও যাবে। ও জীবনেও এত কিছু কাঁধে নিবে না। আর রত্না ভাবীর জন্য কিছু করার দরকার নাই। তার ভাই অপরাধ করছে, শাস্তি পাচ্ছে। সে কিসের জোরে রাগ দেখায়! আম্মা আর হেলেন নরম হোক, রত্নাও নরম হবে। এই ঘরবাড়ির অধিকার ছেড়ে দিবে এত বোকা রত্না না। ঠিকই চলে আসবে।”
“ধন্যবাদ মোনা। তুমি এসে মনটা ঠান্ডা করে দিলা।”
“হইছে হইছে। এখন আমার ভাইটার মন ঠান্ডা করো।এত যুদ্ধ করে প্রেম করে বিয়ে করলো। অথচ কেমন দেবদাসের মতো মুখ করে বসে আছে। তুমি তো ভাবী ভাগ্যবান। বিয়ের পরদিনই কী সুন্দর ফাঁকা বাসা পেয়ে গিয়েছ। কোথায় রোমান্স করবা জামাইয়ের সাথে, তা না! যাও আজ রান্নাবান্না কিছু করা লাগবে না। আমি হাসানকে দিয়ে পাঠিয়ে দেব। দোকানও হাসান দেখবেনে।”
***
মিসবাহ প্রতিদিন নিয়ম করে মা, ভাই বোন সবাইকে ফোন দিয়েছে। হালচাল জিজ্ঞেস করেছে। কিন্তু কাউকেই বাড়ি ফিরে আসার জন্য অতিরিক্ত পীড়াপীড়ি করেনি। শুধু বলেছে নিজের বাড়ি কার উপর রাগ করে ছেড়ে গিয়েছে! তাতে কার কী ক্ষতি হবে! তাই রাগ না করে চলে আসতে।
এছাড়া ফাঁকা বাসার আনন্দ পুরোটাই নিয়েছে মিসবাহ আর আতিয়া। আতিয়ার যত্ন আর ভালোবাসায় বুঁদ হয়েছিল মিসবাহ। নিজের প্রথম বিয়েতে পায়রার সাথে বিয়ের পরপরই এতটা কাছাকাছি আসা হয়নি কখনো। সারাদিন সেভাবে কাছে আসার সুযোগই পেত না। কিন্তু এখন যেন এই মধ্যবয়সে এসে প্রেম, বিয়ের এক অন্যরকম পরিপূর্ণতায় ধরা দিয়েছে। আতিয়াকে যখন তখন কাছে টানেতে বাঁধছে না, আতিয়াও মিসবাহর সঙ্গ উপভোগ করছে। যতই মানুষ না না করুক, শরীরের একটা আলাদা ভাষা থাকে। শরীর দিয়ে শরীরের যে ভাব বিনিনয় হয়, তার সাথে মন মিলে গেলে সুখটুকু পরিপূর্ণ হয়। তা সে যে বয়সী মানুষই হোক না কেন। বৃষ্টির ফোঁটা তপ্ত ধরার বুকে পড়লে তা যেমন শুষে নেয় প্রাণভরে, তেমনই ভাবেই মিসবাহর ভালোবাসার আলিঙ্গনে, আহ্বানে সাড়া দিয়েছে আতিয়া।
দেখতে দেখতে সাতদিন শেষ। দুপুরের ভাতঘুমের পর হঠাৎ জেগে ওঠা শরীরের পরিপূর্ণ মিলন শেষে পরিতৃপ্তি নিয়ে চোখ বুজে আছে মিসবাহ। তার চওড়া বুকে মাথা রেখে আঙ্গুল দিয়ে আঁকিবুঁকি করে আতিয়া।
“মিসবাহ, আলোর আর কোন খোঁজ কি পাব না? কতদিন হয়ে গেল। আর কিছু জানায় না পুলিশ। একবার কি একটু থানায় খোঁজ নিবে?”
“আজই নেব। আলো বেঁচে আছে আতিয়া। না হলে এতদিনে লাশ পেতো পুলিশ। এখন শুধু ও কোথায় আছে খুঁজে পেলে ওকে নিয়ে আসা যাবে। তোমার আম্মার জন্য অন্য কোথাও বাসা নিতে হবে। যেখানে কেউ আলোর ব্যাপারে কিছু জানবে না। ও এসএসসি দিবে আগামীবার। নতুন করে জীবন শুরু করবে। কত মেয়েরা স্বেচ্ছায় দুটো টাকার জন্য নিজেকে বিলিয়ে দিয়েও সমাজে বুক ফুলিয়ে চলে। সেখানে আলো তো পরিস্থিতির শিকার। ও কেন পারবে না!”
“আলোকে সত্যি ফিরে পাব! তাই যেন হয়। আচ্ছা কাল থেকে আমার ডিউটি। ছুটি কি বাড়াবো? আম্মা, রত্না কেউ তো আসলেন না।”
“আমি জানিয়েছি তোমার ছুটি শেষ। দেখি আম্মা আসবেন হয়তো। নরম মনে হলো আজ কথা বলে। আর না আসলেও তোমার ছুটি নেওয়ার দরকার নাই। আমিও দোকানে নিয়মিত বসতে হবে। তোমাকে হাসপাতালে নামিয়ে দেব আমি। ডিউটি শেষে ফোন দিও, বাসায় নিয়ে আসবো।”
“আরে ও সমস্যা নেই। আমি একাই আসা যাওয়া করতে পারি।”
“তা পারো। কিন্তু আমি আমার বৌকে একটু মোটরসাইকেলের পেছনে বসাতে পারি না বুঝি?”
“অবশ্যই পারো।”
****
বিকেলে কোন রকম খোঁজ খবর না দিয়ে জাহনারা বেগম নিজ থেকেই চলে এসেছেন। হেলেনের বাসায় আর থাকতে ভালো লাগছিল না ওনার। পলিনকেও নিয়ে এসেছেন। পলিনের পড়ালেখা নষ্ট হচ্ছিল। তাছাড়া পলিন কান্নাকাটিও করছিল। সকালে খেলতে গিয়ে ফুপাতো বোনের পুতুল ভেঙে ফেলার অপরাধে ফুপা ধমক দিয়েছেন সবার সামনে, ফুপি হেলেনও দুটো কথা শুনিয়ে দেন, বলেন যে এই স্বভাবের জন্য বাবার বাড়িতে জায়গা হয়নি পলিনের। কথাগুলো জাহনারা বেগমেরই ভালো লাগেনি। কিন্তু জামাইয়ের সামনে কিছু বলতেও পারেননি। এই ছোটো জামাই ওনার আদরের। কিন্তু বোঝা যাচ্ছে জাহনারা বেগমের হঠাৎ আগমনে তিনি শুরুতে খুশি হলেও তিনদিন পর থেকে কেমন বিরক্ত। সুযোগ পেলেই মিসবাহকে নিয়ে সস্তা রসিকতা করছে। অথচ মিসবাহ বিয়ে করেছে, পরকীয়া না! মেয়ের সংসারে অশান্তি হবে বলে কিছু বলতে না পারলেও ছেলের নামে এসব কথা শুনতে ওনার ভালো লাগছিল না। হেলেনটাও কেমন স্বামীর ভালোমন্দ সব কথায় তাল মেলাচ্ছে। ধনী স্বামী পেয়ে চোখে পট্টি পড়েছে। বিরক্ত হোন জাহনারা বেগম। শেষমেশ পলিনকে বকাবকি করায় জাহনারা বেগমের খুবই কষ্ট লাগে। নাতনিটাকে কেউ এমন তাচ্ছিল্য করুক তা তিনি চান না। সৎ মাকে তবু শাসন করা যাবে ভাবেন, কিন্তু ফুপু চাচা চাচী অবহেলা করলে কিভাবে শাসন করবেন। এসব ভেবেই চলে আসেন। হেলেনও মাকে জোর গলায় মানা করে না। জাহানারা বেগম এসে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেন। আতিয়া মিসবাহর হাতে শরবত বানিয়ে পাঠায়। কিছুক্ষণ পর রত্নাকে নিয়ে হামিদও বাড়িতে আসে। একটু পর আতিয়া আর রত্নাকে ডেকে নেন জাহনারা বেগম,
“শুনো আতিয়া তোমার সাথে আমার কোন শত্রুতা নাই। এই বাড়ির বৌ যখন হইছো তখন মেজো বৌ রত্নার সাথে মিলামিশা থাকবা। তারেও আমি বিষয়টা বুঝায়ে দিব। অন্ততঃ যে কয়দিন আমি বাইচ্চা আছি কেন অশান্তি চাই না। হাসানেরও বিয়া দিমু। মরার আগে পুরা পরিবার একসাথে দেইখ্খা মরতে চাই। আমার মরার পর সম্পত্তি ভাগ কইরা যে যে আলাদা থাইক্কো। কিন্তু ভাইয়ে ভাইয়ে সম্পর্ক নষ্ট কইরো না অনুরোধ থাকলো। তোমার বইনের কী হইছে না হইছে, রত্নার ভাই কী করছে এসব বিচার কোর্ট কাচারি করবো। ঘরের ভিতর এই নিয়ে অশান্তি চাই না। রত্না, কামকাজ ভাগ কইরা নিবা। হাসানের বৌ আসা পর্যন্ত রান্নার কাজ দুই বৌকে ভাগ কইরা দিমু। আতিয়া তুমি চাকরি করবা কী করবা না তোমার সিদ্ধান্ত। কিন্তু রত্নার সাথে সংসারে কাজ ভাগ করতে হইবো। এই নিয়ে কোন ক্যাচাল ঝগড়া চলবো না।”
আতিয়া মাথা নাড়ে। অনেককিছুই তার জন্য সহজ হবে না জানে। কিন্তু জীবনে সে কোন কিছুই সহজে পায়নি। আগে তো একাই লড়াই করেছে। এখন তো ওর সাথে মিসবাহ আছে। ইশারায় মিসবাহকে কিছু বলতে না করে।
“জ্বি আম্মা, বুঝেছি। আপনি যেভাবে কাজ ভাগ করে দিবেন করবো। আমার ডিউটির আগে পরে সময় মিলিয়ে নেব।”
“আমারে দজ্জাল শাশুড়ি ভাইবো না যে তোমারে খাটাইয়া মারুম। আল্লাহর রহমতে কামের লোক আছে। কিন্তু ঘরের রান্ধেন ঘরের বৌয়ের হাত না থাকলে বরকত হয় না। কামের বেটি কাজ আগাইয়া দিব, তুমি রাইন্ধা বাইড়া নিবা। যেদিন দুপুরের যোগাড় দিবা, সেদিন রাইতের খানা রত্না দেখবো। নাস্তার যোগাড় দুইজন মিলামিশা করবা। তোমার পথথম কাজ হইলো পলিনের যত্ন করা। মাইয়াটারে কষ্ট দিবা না। তোমার শত্রু ভাববা না। মনে রাইখো আমার চোখ কান খোলা।”
“পলিনকে আমি আদর দিয়ে বড়ো করবো। কিন্তু আমাকে শাসন করার অধিকারও দিতে হবে। না হলে শুধু আদর দিয়ে ওকে আমি মানুষ করতে পারবো না।আমার উপর বিশ্বাস রাখতে হবে যে আমি ওর খারাপ চাইবো না।”
পরিশিষ্ট –
আতিয়া হাসাপাতালের চাকরিটা আরও দুই বছর করেছিল। এরপর বেশি বয়সে গর্ভধারণ জটিলতার জন্য বেড রেস্টে থাকা প্রয়োজন হওয়ায় স্বেচ্ছায় জব ছেড়ে দিয়েছে। । যদিও মিসবাহ চেয়েছিল আতিয়া চাকরিটা নিয়মিত রাখুক। গর্ভকালীন সময়টা ছুটি নিয়ে নিক, এরপরও প্রয়োজন হলে ননপেইড লিভ নিয়ে আরও ছয়মাস চলতে পারতো। কিন্তু আতিয়া নিজেই ছেড়ে দিতে চাইলো। কখনো কখনো হয়তো প্রায়োরিটি বদলায়। আতিয়া সবসময় সবটুকু সময় দিয়ে গুছিয়ে সংসার করতে চেয়েছে, চাকরি করা ওর স্বপ্নের অংশ ছিলই না কখনো। তাই হয়তো ছাড়তেও মায়া লাগেনি। বরং এখন ওর চাকরি করার প্রয়োজন ফুরিয়েছে। আশিকের ভালো একটা চাকরি হয়েছে। সংসার খরচের জন্য আতিয়ার উপর আর নির্ভরশীল নয়। আতিয়া তার জুনিয়র সিস্টার সোনিয়ার সাথে আশিকের বিয়ে দিয়ে দিয়েছে। মা, আশিক আর সোনিয়ার সাথে ভালো আছে। আয়েশা আছে ওর মতোই। কখনো খুব ভালো, কখনো আবার অভিমান। আলোর খোঁজ পাওয়া গেলেও ওকে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়নি। শেষ পর্যন্ত রিসোর্টের ম্যানেজার ধরা পড়ে। আলোকে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে পাচার করে দেওয়া হয়েছে। এরপরের খবর আর জানে না ম্যানেজার। রাতুল ছাড়া পেয়ে গিয়েছে। সরাসরি পাচারে রাতুলের হাত পাওয়া যায়নি বলে সাজা কম হয়েছে। রত্নার সাথে আতিয়ার সম্পর্ক শীতলই। জাহানারা বেগমের মৃত্যুর পর হয়তো আলাদা হওয়াই নিয়তি। আর পলিন! পলিন কখনো আতিয়াকে বন্ধু হিসেবে দেখে, কখনো মা। তবু তাদের সম্পর্কেও উত্থান পতন আসে। বিশেষ করে যখন বাইরের কেউ পলিনের মাথায় আপন পর বিষয়টা ঢোকায়। তবে এর মাঝেও তাদের মাঝে একটা সুন্দর সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। মিসবাহও চেষ্টা করছে দু’জনের মাঝে যেন দেয়াল না তৈরি হয়। তবে সামনে এখন আরেক পরীক্ষা। মিসবাহ আর আতিয়ার নতুন সন্তানকে কিভাবে গ্রহণ করে পলিন তাই নিয়ে ভাবছে তারা। দু’জনই চেষ্টা করছে পলিনের ভেতর যেন কোন ইনসিকিউরিটি জন্ম না নেয়। তবে এই তো জীবন, সবকিছু সহজ হয়েও সহজ নয়।
(শেষ)