চারুকাব্য পর্ব-০৬

0
230

#চারুকাব্য ৬
লেখা : #azyah_সূচনা

নির্ঘুম এক রজনী কেটেছে।কাব্যর চোখজোড়া এক পলক ফেলেনি সারারাত।মনের মাঝে একটাই শঙ্কা ছিলো।সে ঘুমিয়ে পড়লে যদি চারুর কিছু প্রয়োজন হয়।মেয়েটি ভুল করেও তাকে ডাকবে না।কাব্যর প্রতি তার আক্রোশকে নিজের অসুস্থতার চেয়ে বড় করে দেখবে।তাইতো আস্ত একটা নিশি পাড় করে দিলো প্রেয়সীর কদমে হাত রেখে।

ভার ভার মনে হচ্ছে মাথাটা। পিঠটাও একাধারে ব্যথায় কুঁকড়ে যাচ্ছে।চোখ জ্বলছে ব্যাপক মাত্রায়।ধীরে সুস্থে চোখ খুলে তাকায় চারু। মস্তিষ্ক সজাগ হতেই বুঝতে পাড়ে তার শরীরটা ভালো না।জানতো ভিজলেই জ্বর চেপে বসবে।তারপরও ভিজেছে।মধ্যকার উত্তপ্ত শিখাকে নেভাতে।সামান্য মাথা তুলতেই দেখা মেলে কাব্যর।বসে আছে পা ভাঁজ করে ঠিক তার পায়ের কাছে।মাথা ঝুঁকিয়ে।সে কি বসে বসে ঘুমোচ্ছে?এভাবে পায়ের কাছে বসে ঘুমোনোর মানে কি?চারু পা সরিয়ে নেওয়ার সময় ছোট স্টিলের পাত্র থেকে তেল গড়িয়ে পড়লো সাদা চাদরে।খানিকটা আতকে উঠে চারু। কাব্যর কাচা ঘুমটাও ভেঙে গেছে।চোখ খুলে বিচলিত হয়ে উঠলো।

বললো, “কি হয়েছে চারুলতা?খারাপ লাগছে তোমার?জ্বর কমেছে? খাবে কিছু?নাস্তা আনি?….আমি আনছি দাড়াও”

আহাম্মকের মতন কাব্যর যাওয়ার পানে চেয়ে চারু।এতগুলো প্রশ্ন করলো!উত্তরের প্রয়োজন অনুভব করেনি।যেহেতু নিজের ইচ্ছে মতই করবে তাহলে জিজ্ঞেসই করলো কেনো?পায়ে তেল ছিপছিপ করছে।করছিলো কি সে এই তেল নিয়ে?

“আমজাদ!”

“আবার ডাক্তার ডাকবো?” ভোঁতা মুখে প্রশ্ন করে আমজাদ।

“নাহ নাহ।ভেতরে এসো ফাস্ট!”

লম্বা নিঃশ্বাস ছাড়লো আমজাদ। সৃষ্টিকর্তা জানে আবার নতুন কি কাহিনী শুরু করবে ভেতরে ডেকে?ভোর ছয়টায় নিশ্চয়ই সমাদর করার জন্য ডাকছে না?পিছু নিয়েছে।এসে থামলো কিচেনে।টিশার্ট এর হাত ফোল্ড করে নিলো।

বললো, “নাস্তা বানাবো।আর তুমি আমাকে হেল্প করবে”

ব্যাস! এইদিনটা দেখারই বাকি ছিলো। ফান্দে পড়িয়া বগা কান্দে না প্রেমে পড়িয়া কাব্য আফনান গাঙ্গে।কেনো যেনো এই লোকের কাজের কথা শুনলো মাথায় আগুন ধরে যায়।তারপরও রয়ে গেছে এর সাথে।নিজে বিয়ে শাদি করে সাংসারিক হচ্ছে অথচ আমজাদের দিকে কোনো নজর নেই।এইতো কিছুদিন আগে সাতত্রিশ শেষ করে আটত্রিশ বছরে পদার্পণ করেছে।তার কি ইচ্ছে হয়না বিয়ে করতে।যেই অদ্ভুত প্রকৃতির মানুষ সে বিয়ে না দিয়ে সোজা দুনিয়া থেকে আউট করে দেবে।

ক্যাবিনেটে হাত রেখে কোমড় বেকিয়ে রেখেছে কাব্য। নিশিত দৃষ্টি ভাবুক আমজাদের দিকে।যতটুকু সময় নিয়ে সে ভেবেছে কাব্যও দেখে ভাবছে। হঠাৎ কাব্যকে চেয়ে থাকতে দেখে নড়েচড়ে উঠে আমজাদ।

বলে, “স্যার কি বানাবেন?”

“অমলেট করি?সাথে ব্রেড ওর রুটি?”

“স্যার রুটি বানাতে পারেন?”

“না”

“তাহলে ব্রেডই ভালো অপশন”

“কেনো?তুমি রুটি বানাতে পারো না?”

“না স্যার”

“তুমি একটা অধম আমজাদ!”

___

আঠারো তলা বিশিষ্ট ভবনের নবম তোলা থেকে ইতালির মিলান শহরের চাকচিক্য দৃশ্যমান।রেড ওয়াইনের গ্লাসটাও অর্ধ পান করা। ফোনে মহা ব্যস্ত সে।ক্ষোভ জমছে ফোনের অন্যপাশ থেকে আসা কিছু কথা কর্ণপাত হতেই।

চেচিয়ে বলে উঠেন,

“লাভ হয়নি?লাভ হয়নি না!এতটুকু একটা ছেলেকে তোমার মতন একজন লোক ম্যানেজ করতে পারলে না।কি পারো প্রমোদ?”

“অনেক চেষ্টা করেছি স্যার।কাব্যকে নাড়ানো সম্ভব না।”

“তাহলে তুমি আমার সাথে আছো কি করতে?যাও!আজ থেকে আমাদের পথ আলাদা।কোনো প্রয়োজনে আমাকে কল করবে না বলে দিচ্ছি।”

বিন্দুবিন্দু ঘাম জমলো প্রমোদের কপালে।আচ্ছা ফেঁসেছে। একদিকে সে,অন্যদিকে কাব্য।উভয় দিকেই বিপদ। ভুলিয়ে ফুঁসলিয়ে চেষ্টা করেছিলো কাব্যকে নিজের দলভুক্ত করার।কোনো লাভইতো হলো না।

“স্যার আমি কাব্যর ভাবসাব বুঝি না।যে লোকটা আমাকে কাব্যর খোঁজ দিয়েছিলো তার নিজেরই কোনো খোঁজ নেই আর।গুম করা হয়েছে তাকে।একেতো লুকিয়ে ছাপিয়ে থাকে নিজে।অনেক চেষ্টায় তার সাথে কথা বলার সুযোগ পেয়েছি।আমি নাহয় আবার চেষ্টা করবো”

“তুমি সুযোগ পাওনি।তোমাকে সুযোগ দেওয়া হয়েছে।”

কথার অর্থ না বুঝে প্রমোদ ফোনের অপরপ্রান্তে প্রশ্ন ছুড়ে দিল, “মানে?”

“তুমি কাব্যকে চেনো?ঠান্ডা মাথার খেলোয়াড় ও। ও নিজেই চেয়েছিলো তুমি ওর সাথে দেখা করো।নাহয় তুমি কেনো তোমার আব্বারও ক্ষমতা নেই গিয়ে ওর সামনে বসার।”

আব্বারও ক্ষমতা নেই?কথাটি গায়ে লেগেছে প্রমোদের। ক্ষমতালোভী মানুষগুলো যেমন ক্ষমতায় দেখাতে পছন্দ করে ঠিক তেমনি নিজেকে বাঁচাতে অন্যের গালমন্দ শুনেও চুপ করে থাকতে হয়। মিলান শহরে বসে নাচিয়ে যাচ্ছে তাকে।কথার খেলাফ করার সাহস নেই।নাই আছে তর্ক করার সাধ্য।তাই চুপ রইলো।

“এখন কি করবো স্যার?”

“ভাবতে দাও।আর হ্যাঁ কাপুরুষের মতন ময়দান ছেড়ে পালাবে না।তোমার একটা ভুল সিদ্ধান্ত আমাদের সবাইকে ডোবাবে।”

“জ্বি আচ্ছা”

___

“দ্রুত নাস্তা করে ফেলো। ডাক্তার মেডিসিন দিয়ে গেছে।খেতে হবে”

ব্রেড আর অমলেট সাজিয়েছে সাদা প্লেটে। ডেকোরেশনও করেছে।ধনেপাতা কুচি দিয়ে।যেনো কোনো রেস্টুরেন্টের শেফ।তার রন্ধন শিল্পকে ফুটিয়ে তোলে?ঠিক তেমনি।এসব চারুর পেটে যায় না।গরম ভাত আর মায়ের হাতে বানানো সাদা রুটিতে প্রশান্তি।বড়লোকি খাবারে বিতৃষ্ণা যেমনটা কাব্যর জন্য।কাব্যর নিঃশ্বাসকেও ভনিতা মনে হয়।তার অল্পস্বল্প ভালো কাজও অপছন্দের। অসন্তোষ সম্পূর্ণ মর্ম জুড়ে।

“আমি খাবো না।”

“খেতে হবে”

“আমি আপনার কথা শুনতে বাধ্য নই”

হয়তো আবহাওয়া পাল্টালো কাব্যর মেজাজের।ধমকের সুরে বলে উঠে,

“আজ তোমার কোনো ধরনের বাড়াবাড়ি চলবে না।খাবার দিচ্ছি চুপচাপ খাও।আমি কথাটা রিপিট করবো না চারু!”

এই তিন চারটে দিনে বোধহয় আজই প্রথম উচু স্বরে কথা বলেছে চারুর সাথে।এতদিন যাবৎ ঠান্ডা মাথায়ই নিজের কার্য সিদ্ধ করেছে।চারুর মুখে ভীতির ছাপ দেখা গেলো না।নাক ফুলিয়ে কাব্যর হাত থেকে প্লেট নিয়ে খাওয়া শুরু করে।

কাব্যর ফোনে মেসেজ আসায় দ্রুত বেরিয়ে গেলো।কোনো সুযোগ পেলো না প্রতিক্রীয়া দেওয়ার।আমজাদ দরজার বাহির থেকে বার্তা পাঠিয়েছে।জরুরি দরকার।নাহয় তার এত দুঃসাহস?

“কি হয়েছে আমজাদ?”

দরজায় দাড়িয়ে প্রশ্ন করে কাব্য।মেলে থাকা দরজার ভেতরে শায়লাকে দেখা যাচ্ছে। আরচোখে তাদের দিকেই চেয়ে।কান খাঁড়া।আমজাদ বললো,

“স্যার একটু বাহিরে আসবেন?”

শায়লার কান অব্দি পৌঁছেছে আমজাদের কথা।কাব্য বেরিয়ে দরজা ভিড়িয়ে নিলো।শায়লা এক মুহুর্ত দেরি করলেন না।হাত মুছতে মুছতে শব্দবিহীনভাবে এগিয়ে গেলেন দরজার দিকে। উদ্দেশ্য কান পেতে শুনবেন।কি এমন আলোচনা তাদের মধ্যে? সন্দেহজনকতো অবশ্যই!

দুয়েক কদম আগেই পূনরায় কাব্য দরজা খুলে উকি দিয়ে বললো,

“আপনার কাজের কথা না এসব।কান পেতে শুনে কি করবেন?এরচেয়ে ভালো চারুলতার কাছে গিয়ে বসুন।”

আত্মা উড়ে গেলো শায়লার।এভাবে ধরা পড়বে?তাও আবার চুরি করার পূর্বেই?কল্পনাও করতে পারেনি।তেজ দেখিয়ে বললেন,

“বয়েই গেছে আমার তোমার মতন লোকের কথা কান পেতে শুনবো?আমি দরজা বন্ধ করতে আসছিলাম।”

“আমিতো বাহিরে যাচ্ছি না শাশুড়ি মা ”

“গেলেতো একটু শান্তিতে থাকি” বিড়বিড় করতে করতে সেখান থেকে চলে গেলেন শায়লা।

শায়লা বেগমের চলে যাওয়া নিশ্চিত করে আমজাদের সামনে পকেটে হাত গুজে দাড়ায় কাব্য। সঙ্গেসঙ্গে আমজাদ কল রেকর্ড ছেড়ে দিলো কাব্যর সামনে।ফোনটা এগিয়ে দিয়েছে যেনো শুনতে অসুবিধে না হয়।ভিনদেশী নম্বর আরেকটি নিজ দেশীয়।দুটো কন্ঠ শোনা যাচ্ছে।দুটোই পরিচিত মনে হলো কাব্যর কাছে।এরমধ্যে একজন প্রমোদ।শাসানো হচ্ছে তাকে।কেনো কাব্যকে হাত করতে পারেনি।জানতে চাইছে কঠিনভাবে। রহস্যময় হাসে কাব্য।খানিকটা পরাজিত হয়ে কতটা ছটফট করতে পারে তারা।সেটাই জানতে উশখুশ করছিলো।আমজাদ আসলেই কাজের লোক।তাকে সকালে অধম বলাটা একদম ঠিক হয়নি।

“স্যার পরপর দুবার কথা হয়েছে তাদের মধ্যে।আরেকটি কল রেকর্ড আছে”

“শোনাও দেখি”

‘শুনেছি স্বপুরুষ বিয়ে করেছে?তাও সহজ সরল একটা মেয়েকে।কাব্য একটা মেয়ের পেছনে ফেঁসে গেলো?ওর কালো ছায়ায় মেয়েটাও না অকালে প্রাণ হারায়।’ হাসি নিমিষেই উধাও।দাতে দাত চেপে ফেলে। হতভম্ব আমজাদও।এই ইনফরমেশন লিক হলো কি করে?

শক্ত স্থির মুখে মৃদু গর্জন তুলে কাব্য বলে উঠে,

“আমজাদ!”

“স্যা.. স্যার।আমার মনে হয় সেদিন আপনাকে..ভাবীর সাথে”

ভাবি শব্দে উচ্চারণে কাব্যর চক্ষু প্রসারিত হয়। আমজাদ দ্রুত বেগে শব্দ পরিবর্তন করলো।বললো,

“ম্যাডাম!ম্যাডামের সাথে বেরিয়েছিলেন তার ভাইকে স্কুলে দিতে।আমার মনে হয় সেদিনই হয়তো কেউ দেখেছে।”

“আর ইউ শিওর?”

“হ্যা.. হ্যা স্যা..র।”

“তোতলাবে না আমজাদ!স্পষ্ট বলো!”

“প্রমোদ আপনার পেছনে লোক লাগাবে না এটা হতেই পারেনা।সেদিন সন্দেহভাজন লোকদুটো এই এরিয়াতে ঘোরাফেরা করছিল যে….”

গলার তেজ বাড়িয়ে প্রশ্ন ছুড়ে দেয়,

“তাদের ব্যবস্থা তুমি করোনি?”

“করেছি স্যার।কিন্তু আমার মনে হয় আগেই ইনফরমেশন পৌঁছে গেছে।”

থরথর কাপছে সর্বাঙ্গের অঙ্গপ্রতঙ্গ।রাগে, জেদে!শুরু থেকেই ভুল সে।আর এতবড় একটা ভুলের জন্যেও সে নিজেই দায়ী।শান্ত নেই আমজাদও।সাদা টিসুর সাহায্যে কাব্যর চোখের অগোচরে ঘাম মুছে নিলো।তার চোখতো সাদা সচ্ছ ফ্লোরের দিকে।চোয়াল শক্ত করে ফোঁসফোঁস করে নিঃশ্বাস ছাড়ছে। এহেন পরিস্থিতিতেও আমজাদ জানে তার জন্য বড়সড় একটা আদেশ আসবে।কেমন ধরনের আদেশ আসবে সেটাও জানে।নিজের মস্তিষ্কে আনমনে ছক আঁকছে।নিজেকে পূর্ব থেকেই প্রস্তুত করতে গলা ভেজালো।

আমজাদকে অবাক করে দিয়ে কাব্য মুখ খুলে, “কবির সাহেবকে ফোন লাগাও!”

“স্যার হাতজোড় করি!এই ভুল করবেন না।সব ঠান্ডা আছে ঠান্ডা থাকতে দেন।এখন আপনি একা না।চারু ম্যাডামের কথা ভাবেন।প্লিজ স্যার!”

কোনো রকমের তোয়াক্কাবিহীন কাব্য পূনরায় বলে, “কল হিম রাইট নাও!”

কল করার পরের আসন্ন বিপদের আভাস পেয়েই বারণ করেছে আমজাদ।সাহস দেখিয়ে।কাতর কন্ঠে।লাভ হয় নি।কল করা ছাড়া আর কোনো উপায় ছাড়েনি কাব্য। অগ্যতা বাধ্য হয়েই কল করলো।এগিয়ে দিলো কাব্যর কাছে মুঠোফোনটি।

.

“আমি জানতাম আপনি সুপথে আসবেন।কিন্তু এত দ্রুত আসবেন সেটা ভাবিনি।আর প্রমোদকে রেখে যে সরাসরি আমার কাছে আসবেন এটাতো স্বপ্নেও ভাবিনি ”

ব্যঙ্গাত্মক কন্ঠস্বর।ফোনের এপাশে কাব্যর লম্বাটে নিঃশ্বাসের আওয়াজ আবছা শোনা গেলো।হারেহারে চেনে তাকে।মুখে আনন্দের হাসি এটে আবার বললেন,

“চুপ হয়ে গেলেন কেনো?…ওহ হ্যা! অভিনন্দন।দুআ করি বৈবাহিক জীবনে অনেক…অনেকের চেয়েও একটু বেশি সুখে থাকেন।”

“কি চাই আপনার?”

“দেখেন আপনাকে দিয়ে নূন্যতম ভরসাতো অনেক বছর আগেই উঠে গেছে।এইযে মাত্র বললাম বৈবাহিক জীবনের সুখের কথা? সুখে থাকতে হলে আগের পথে ফিরে আসুন।আপনার আর কি নাম আপনার স্ত্রীর?চারু? হ্যা!আপনার আর চারুর ভালোর জন্য বলছি”

“ফেলে দেওয়া থুথু মুখে তুলি না আমি।আর যদি ভাবেন হুমকি দিয়ে নড়বড়ে করতে পারবেন আমাকে?চেষ্টা করে দেখেন।আপনাকেও এটাই বলতে কল করেছি।যদি আপনি, আপনার স্ত্রী ও ছেলেদের ভালো থাকতে চান।যেভাবে শান্তশিষ্ট আছেন সেভাবেই থাকুন।আপনার ভাগ্য ভালো হলে দেখা হবেনা কখনো। দুর্ভাগ্য হলে বারবার দেখা হবে।রাখছি।”

__

উত্তর নীল জলরাশি। আঁধারে নক্ষত্র বিলাসে মাতোয়ারা অখিল।মুক্তদানার মতন চিকচিক করা এই তারার মেলায় এক ভিন্ন সৌন্দর্যের অধিকারী অমৃতাংশু।সে দ্যুতিময় হীরের মতন।হিম হাওয়ার দাপটে এলোমেলো বৃক্ষ কায়া। মেটে রঙের বালির উপর হাতপা ছড়িয়ে এক প্রাণ।জীবন আছে তবে নিস্তেজ।পরনে পরিধেয় বিদ্ধস্ত এই মৃত্তিকায় লেপ্টে।চারিদিকে হাহাকার। শুধু ঝংকার তুলে ঢেউ উঠছে সমুদ্র বুকে।এই চাঁদ,এই তারা,এই সমুদ্র। নির্জীব ওরা আখি গেড়ে আছে উস্কোখুস্কো অবস্থায় পড়ে থাকা এক মানবের পানে। শশাঙ্ক তার আলো ছড়িয়ে উজ্জ্বল করছে তার মুখখানা।

“আমার মনো মত্ত এই সন্দীপে”

চলবে…