#তবুও ভালোবাসি
#পর্ব_২৫
#রেজওয়ানা_রমা
(রহস্যভেদ পর্ব – ৪)
– কোথাও যাচ্ছেন?
-হুম। ছুটি শেষ বলেছিলাম না।
-এখনই চলে যাবেন?
-হুম
মেহুল অসহায় দৃষ্টি তে তাকিয়ে রয়। কিছু বলে না। একটু পরে বেলকানি তে চলে যায়। নিরবে চোখের জল ফেলছে। রিয়ানের চলে যাওয়া যে মেহুল কে বড্ড কষ্ট দিচ্ছে। রিয়ান কে ছেড়ে থাকবে কি ভাবে এটা ভেবেই মেহুলের চোখ দিয়ে দু’ফোটা পানি গড়িয়ে পড়ে। হঠাৎই রিয়ানের স্পর্শে চোখের পানি মুছে নেয়।
-আমাকে হাসি মুখে বিদায় দাও নীড়
– (মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে )
– তোমার চোখের পানি যে আমার সহ্য হয় না সেটা কি তুমি জানো?
মেহুল এবার রিয়ানের বুকে মুখ লুকায়। রিয়ান মেহুল পরম আদরেরসহিত জড়িয়ে নেয়। অতঃপর বলে,
-তোমাকে ছেড়ে থাকতে আমারও ভালো লাগে না। কি করবো বলো আমাদের জীবন টাই এমন। আজ এখানে তো কাল ওখানে।
– আমাকে নিয়ে চলুন আপনার সাথে
রিয়ান একটু হেসে উত্তর দেয়,
-নেবো। তোমাকে আমার সাথে নিয়ে যাবো। কিন্তু বাড়ির এমন অবস্থা। সব টা সামলে নেই নীড় তার পর তোমাকে নিয়ে যাবো। এখনো আমার অনেক কাজ বাকি যে। সেগুলো শেষ করি আগে
-হুম আপনার তো কাজ শেষ হবে না। আমার জন্য কি আপনার সময় হবে? গিয়ে তো ভুলেই যাবেন
– ভুলে থাকলে কি ছুটে আসতাম?
রিয়ানের বুক থেকে মাথা তুলে অসহায় সুরে বলে,
-আসলে কি আমাকে মনে রাখবেন? যদি কোনো ভুল করে ফেলি আমাকে ভুলে যাবেন তখন? নাকি তখনও আমাকে ভালোবাসবেন?
-তুমি একটা কেন হাজারো ভুল করো আমিও হাজারো বার ক্ষমা করে বলবো ভালোবাসি নীড়পাখি।
-যদি আমি আপনাকে কখনও ভালো না বাসি?
– আমি #তবুও_ভালোবাসি
-যদি আপনাকে ভুলে যাই? তখন কি আপনিও ভুলে যাবেন?
-না। তোমাকেও ভুলতে দেবো না।
-আচ্ছা ধরুন আ…..
– এই স্টপ। এতো কিছু ধরতে পারবো না। শোনো আমি বলছি, তুমি একবার নও বার বার আমাকে ছেড়ে যাও আমি ফিরিয়ে আনবো, আমাকে ভালোবাসা না দাও, এবং তুমি যদি আজ থেকে অনেক বছর পরেও আমাকে ভালো না বাসো আমি তোমাকে #তবুও_ভালোবাসি। বুঝেছো?
মেহুল আর কিছু বলে না। রিয়ান এমন কথাই মেহুল মাথা নিচু করে চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকে। রিয়ান আবারও বলে,
-আমি যে চলে যাচ্ছি যাওয়ার আগে কি কিছু পাবো?
-কি
-কিছু একটা
-কিছু একটা কি?
-এই যে ( ঠোঁটে হাত দিয়ে ইশারা করে)
-ধ্যাত ( মুখ ঘুরিয়ে)
-প্লিজ একবার দাও না ( আদুরে স্বরে)
-দেখুন,
-এখন দেখার সময় নেই। যেতে হবে দিবা তুমি?
-না
– ঠিক আছে গেলাম আমি
বলেই রিয়ান উল্টা ঘুরে চলে যেতে নিলে মেহুল হাত ধরে। রিয়ান পিছনে তাকিয়ে বলে,
-কি হলো?
মেহুল মাথা নিচু করে নরমসুরে বলে,
-আপনি কি না এর মাঝে হ্যাঁ বুঝেন না?
মেহুলের এমন কথায় রিয়ান মুচকি হাসে। অতঃপর মেহুলের কাছে এগিয়ে যায়। মেহুলের একদম কাছে চলে যায়। দুইজনের মধ্যে একটুও ফাকা নেই। মেহুলের গালে দুই হাত রেখে কপালে ঠোঁট ছুইয়ে দেয়। অতঃপর দুই গালে ঠোট ছুইয়ে মেহুলের গলায় মুখ ডুবিয়ে দেয়। গভীর ভাবে কিস করছে রিয়ান। রিয়ানের স্পর্শে মেহুল ফ্রিজ হয়ে দাড়িয়ে আছে। নিশ্বাস ভারি হয়ে আসছে। এবার মেহুল খামচি দিয়ে রিয়ানের শার্ট ধরে। রিয়ান মেগুলের গল থেকে মুখ তুলে মেহুলের ঠোঁটের দিকে যায়। অতঃপর মেহুলের ওষ্ঠো জোড়া নিজের দখলে নিয়ে নেয়। প্রায় ১৫ মিনিট পরে মেহুল কে ছেড়ে দেয়। মেহুল কোনো কথা বলছে না। মাথা নিচু করে দাড়িয়ে আছে। রিয়ান বলে উঠে,
– দেখলে তোমার জন্য এখন আমার দেরি হয়ে গেল। বেশ যাচ্ছিলাম তুমি কি সব উলটা পালটা শুরু করলে
-কিহ আমি? আমি উলটা পালটা করেছি? নাকি আপনি করেছেন? নিজে পুষিয়ে নিয়ে এখন আমার দোষ তাই না
– হুম। তোমার ই তো দোষ। কি আছে বলো তো তোমার মাঝে? নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারি না
-আপনার না দেরি হচ্ছে?
-হুম হচ্ছেই তো। কিন্তু আমার নীড় কে একটু জড়িয়ে ধরতে ইচ্ছা করছে যে
– ইচ্ছে যখন করছে পূরণ করুন
বলেই মেহুল রিয়ান কে জড়িয়ে ধরে। রিয়ান ও মুচকি হেসে জড়িয়ে নেয় তার নীড় কে। অতঃপর রিয়ান নিচে চলে আসে। সাথে মেহুল ও। বাড়ির সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে রওনা দেয় রিয়ান।
রিয়ান চলে যাওয়ায় মেহুলের মন টা খারাপ তাই সে নিজের রুম থেকেই আর বের হয় নি।
অপর দিকে রাইয়ান সাহেব আর রেহানা বেগম ভাবছেন আদি কে কিভাবে ফিরিয়ে আনবে। তখন রেহানা বেগম বলেন,
– রিয়ান ফোনে কার সাথে যেন বলছিল আনাদের আদি কাকে নাকি খুন করেছে
-কি বলছো? আদি খুন করেছে?
– হ্যাঁ সেটাই তো শুনলাম। রিয়ান আদি কে নিজের কাছে রেখেছে। কিছু একটা করো। আদি কে যদি পুলিশের কাছে ধরিয়ে দেয়
– না না এটা করবে না। কিন্তু আদি খুন করল? আমাদের আদি খুনি?
– হ্যাঁ। আমাদের আদি খুনি। আর আজ এই সব কিছুর জন্য তুমি দায়ী।
-আমি দায়ী?
-হ্যা হ্যাঁ তুমি। তুমি দায়ী। না সেদিন তুমি ওকে মারতে,না আদি আমাদের থেকে আলাদা থাকত, আর না আজ আদি খুনি হতো। আমাদের পরিবার টা আজ এক সাথেই থাকত। ( কাদতে কাদতে)
-দেখো রেহানা আমি ইচ্ছা করে মারি নি। এটা একটা এক্সিডেন্ট
– হ্যাঁ তোমার সেই এক্সিডেন্টের মাশুল বুনছে আজ আমার আদি। তুমি তো আদি কে বলি দিয়েছো নিজে বাচার জন্য আজ আদি কাকে বলি দেবে নিজেকে বাচানোর জন্য?
-চুপ করো। এগুলো কথা কেউ জানলে কি হবে বুঝতে পারছো?
– কি হবে?
কেউ একজন পিছন থেকে বলে। রেহানা বেগম আর রাইয়ান সাহেব ভয় পেয়ে যান পিছনে তাকিয়ে দেখেন,
#চলবে