#তুমি_শুধু_আমারই_হও
লেখনীতে- অরনিশা সাথী
|২৮|
অফিস থেকে মাত্রই বের হলো অর্নব। আজ একটু তাড়াতাড়ি-ই বাড়ি ফিরছে। হাতে কাজ নেই তেমন, তাই ভাবলো অফিসে বসে থেকে লাভ নেই তার থেকে ভালো বাড়ি চলে যাক। যেই ভাবা সেই কাজ। পার্কিং থেকে গাড়ি বের করে সবেমাত্র অফিস এরিয়া ছাড়িয়েছে এমন সময় দেখতে পেলো একটা ফুচকা দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে ফুচকা খাচ্ছে টায়রা। সাথে একটা ছেলেও আছে। টায়রা ফুচকা খাচ্ছে আর হাত নাড়িয়ে কথা বলছে ছেলেটার সাথে। মাঝে মধ্যে আবার হাসছে। ছেলেটাও ক্ষণে ক্ষণে হাসছে টায়রার কথা শুনে। গাড়ির স্টিয়ারিংয়ে জোরেশোরে হাত বাড়ি মারলো অর্নব। ঘন্টা দুই আগেও টায়রার সাথে কথা হয়েছে ওর। কই টায়রা তো একবারের জন্যও বললো না বের হবে ও আজ। অর্নব এক সাইডে গাড়ি পার্ক করে এগিয়ে এলো টায়রার দিকে। টায়রা পাশে কারো উপস্থিতি টের পেয়ে তাকিয়ে অর্নবকে দেখে প্রথমে ক্ষানিকটা অবাক হলো। তারপর হেসে বললো,
–“তুমি এখানে?”
টায়রার প্রশ্নের জবাব না দিয়ে অর্নব একই প্রশ্ন করলো টায়রাকে,
–“ভুলে যেও না এটা আমার অফিস এরিয়ার মধ্যেই পড়ে। তুমি কি করছো এখানে? সাথে ছেলেটা কে?”
প্রশ্নটা করে চোয়াল শক্ত করে নিলো অর্নব। টায়রা হাসিমুখে বললো,
–“ও হচ্ছে আমার কাজিন আয়ান ভাইয়া, সিঙ্গাপুরে ওদের বাসাতেই___”
আর কিছু শোনার প্রয়োজন মনে করলো না অর্নব। রাগ হচ্ছে প্রচুর ওর। টায়রা ওর খালামণির বাসায় যাওয়ার পর এই আয়ানকে নিয়েই ঝামেলা হয়েছিলো ওদের। টায়রাকে বারবার বলেছিলো ওর থেকে দূরে থাকতে। প্রয়োজনের বাইরে কথা না বলতে। কিন্তু সেই ওকে নিয়েই আজ বেরিয়েছে টায়রা। অর্নবকে জানায়নি অব্দি। অর্নব টায়রার হাত শক্ত করে চেপে ধরে পা বাড়াতেই আয়ান বললো,
–“কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন ওকে? আর ওর হাত___”
–“শি ইজ মাই উডবি ওয়াইফ।”
কথাটা বলে টায়রাকে টানতে টানতে গাড়ির কাছে নিয়ে গিয়ে হাত ছাড়লো। দাঁতে দাঁত চেপে বললো,
–“গাড়িতে উঠো।”
টায়রা অর্নবের হাত ধরে বললো,
–“তুমি এরকম করছো কেন অর্নব? আয়ান ভাইয়া কি ভাবছে বলো?”
অর্নব উচুঁস্বরে কথা বলতে গিয়েও আশেপাশে তাকিয়ে থেমে গেলো। কিছু মানুষ উৎসুক দৃষ্টিতে দেখছে ওদের। অর্নব গলার স্বর নিচু করে দাঁতে দাঁত চেপে বললো,
–“বলিনি আয়ানের থেকে দূরে থাকতে? বলেছি কিনা?”
–“ব্ বলেছিলে।”
–“তাহলে ওর সাথে এখানে কি করছো?”
–“আয়ান__”
–“সিনক্রিয়েট করতে চাইচি না এখানে। সুতরাং তুমিও বাধ্য করো না আমায় এই পাবলিক প্লেসে উলটাপালটা কিছু করতে। চুপচাপ গাড়িতে উঠে বসো।”
টায়রা বাধ্য মেয়ের মতো মাথা নিচু করে গাড়িতে উঠে বসলো। অর্নব শব্দ করে দরজা বন্ধ করে দিয়ে নিজেও গিয়ে ড্রাইভিং সিটে বসে গাড়ি স্টার্ট দিলো।
বাসায় এসেও টায়রাকে টানতে টানতে নিজের ঘরে নিয়ে দরজা বন্ধ করে দিলো অর্নব। মিসেস অদিতি বেশ কয়েকবার ডাকলো কিন্তু অর্নব জবাব দেয়নি। বাধ্য হয়েই দরজায় কড়া নেড়ে জিজ্ঞেস করলেন,
–“অর্নব কি হয়েছে? টায়রাকে এভাবে___”
আর কিছু বলার আগেই দরজা খুললো অর্নব। মাকে বললো,
–“তোমার ভাইজির সাথে কথা আছে আমার। তুমি ঘরে যাও।”
–“এভাবে টানতে টানতে নিয়ে আসলি কেন? আর ও কাঁদছে কেন?”
–“কিছু না তো আম্মু, ঘরে যাও তুমি। চিন্তা করো না, তোমার ভাইজিকে মেরে টেরে ফেলবো না।”
কথাটা বলেই আবারো ধরাম করে দরজা লাগিয়ে দিলো অর্নব। টায়রা কেঁপে উঠলো ক্ষানিকটা। একদম দেয়ালের সাথে মিশে আছে ও। ওর সামনেই রাগী চক্ষু নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে অর্নব। মৃদু চিৎকার করে বললো,
–“কেন বেরিয়েছিলে আয়ানের সাথে? বলিনি ওর থেকে দূরত্ব বজায় রাখতে?”
টায়রা মাথা নিচু করে চোখের পানি ফেলছে। অর্নব খুব শক্ত করে ওর হাত চেপে ধরে রেখেছে। যার দরুন বেশ ব্যথা পাচ্ছে হাতে। অর্নব আবারো বললো,
–“এর আগেও আয়ানকে নিয়ে ঝামেলা হইছে আমাদের, তারপরও ওর সাথেই কেন মিশছো বারবার? ফুচকা খাওয়ার এত ইচ্ছে হলে আমায় বলতে আমি নিয়ে যেতাম। জানো না আয়ান কোন চোখে দেখে তোমায়?”
–“আয়ান ভাইয়া জানে আমাদের এনগেজমেন্ট__”
–“তো? জেনেশুনেও তো প্রপোজালটা দিয়েছে তোমায়। দেয়নি? আমি যেহেতু বলেছি ওর থেকে দূরে থাকতে তোমার উচিত ছিলো না আমার কথাটা শোনার?”
–“ভাইয়া বাসায় নেই, আয়ান ভাই আশেপাশে ঘ্ ঘুরে দেখতে চেয়েছিলো অনেকদিন পর দেশে এসেছে তাই আম্ আম্মু বললো আমায়___”
–“ওমনি নাচতে নাচতে বেরিয়ে গেলে?”
–“ভুল বুঝছো তুমি।”
এবার অর্নব টায়রার গাল চেপে ধরলো, দাঁতে দাঁত চেপে বললো,
–“আয়ান যতদিন তোমাদের বাসায় আছে তুমি ও বাসায় থাকবে না।”
–“মানে কি অর্নব? তাহলে কোথায় থাকবো?”
–“আমাদের বাড়ি।”
–“আমাদের এখনো বিয়ে হয়নি, ভুলে যাচ্ছো কেন সেই কথাটা?”
–“এটা তোমার হবু শ্বশুর বাড়ির আগে তোমার ফুপ্পির বাড়ি। সেটাই তুমি ভুলছো কি করে?”
–“আমি__”
–“কোনো কথা হবে না। তুমি এখানে থাকছো মানে এখানেই থাকছো। আমি আম্মুকে বলে দিচ্ছি মামীর সাথে কথা বলতে।”
কথাটা বলেই হনহনিয়ে দরজা খুলে বেরিয়ে গেলো অর্নব। এদিকে অর্নবের যাওয়ার দিকে ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে আছে টায়রা। এই ছেলের মাথায় কখন কি খেলে আল্লাহ জানেন। বড্ড হিংসুটে একটা ছেলে।
–
–“তুই না অর্নিকে ভালোবাসতি?”
অভ্রের কথায় ওর দিকে তাকালো নিহাল। মৃদু হেসে বললো,
–“বাসতাম না, এখনো ভালোবাসি।”
–“তাহলে ছেড়ে দিলি কেন? ওর সাথে তো তোর এনগেজমেন্ট হয়েই গেছিলো।”
মুচকি হাসলো নিহাল। বেশ কিছুক্ষণ নিরব থেকে বললো,
–“হ্যাঁ তা হয়েছিলো বটে, তবে আমাদের দুজনের মধ্যে ভালোবাসার সূচনা হয়নি কখনো। যা হয়েছিলো আমার দিক থেকে, একতরফা। আর উৎসব অর্নি দুজন দুজনকে ভালোবাসে। উৎসবের চোখে আমি অর্নির জন্য এক আকাশ সম ভালোবাসা দেখতে পেয়েছিলাম। অর্নিকে হারানোর ভয় ছিলো উৎসবের চোখে। অর্নির প্রতি উৎসবের ভালোবাসাটা ছিলো সমুদ্রের থেকেও গভীর।”
–“তাহলে কি বলতে চাচ্ছিস, তোর ভালোবাসাটা গভীর ছিলো না?”
হাসলো নিহাল। টেবিল ছেড়ে উঠে দাঁড়ালো। জানালার পাশে দাঁড়িয়ে বাইরে দৃষ্টি রেখে বললো,
–“আমার ভালোবাসা গভীর ছিলো না তা বলবো না। ওই যে অর্নিও উৎসবকে ভালোবাসে। অর্নি যদি উৎসবকে ভালো না বাসতো তাহলে এনগেজমেন্ট কিছুতেই ভাঙতাম না আমি। অর্নি আমারই হতো।”
অভ্র গিয়ে নিহালের কাঁধে হাত রাখলো। নিহাল চোখের কোনে জমা পানি মুছে অভ্রের দিকে ঘুরে দাঁড়ালো৷ অভ্র বললো,
–“কি করে পারলি নিজের ভালোবাসাকে অন্যকারো হাতে তুলে দিতে? আমি হলে কক্ষনো পারতাম না।”
–“আমি অলওয়েজ চাই আমার ভালোবাসা ভালো থাকুক। আর অর্নি উৎসবের কাছেই ভালো আছে, ভালো থাকবে। অর্নি আর উৎসব যেখানে একে-অপরকে ভালোবাসে সেখানে আমি আমার একতরফা ভালোবাসা নিয়ে অর্নির সামনে দাঁড়াতে পারি না ওকে আটকানোর জন্য।”
অভ্র কিছু না বলে জড়িয়ে ধরলো নিহালকে। নিহালও আলতো হেসে হাত রাখলো অভ্রের পিঠে৷ নিহাল ওকে জাপ্টে ধরেই বললো,
–“সত্যিই তোর মতো মানুষ হয় না রে। আই এম প্রাউড দ্যাট ইউ আর মাই বেস্ট ফ্রেন্ড।”
–
রাতের খাবার খেতে বসেছে উৎসবের বাড়ির সকলে। খাওয়ার সময় উৎসবের বাবা নিলয় আবরার উৎসবকে উদ্দেশ্য করে বললো,
–“বিয়ের তো কয়েকমাস হলো, আর এখন তো অফিসে কাজেরও তেমন একটা চাপ নেই, তাই ভাবছিলাম অর্নিকে নিয়ে কোথাও থেকে ঘুরে আসো কয়েকদিনের জন্য।”
নূর খুশিতে আপ্লূত হয়ে বললো,
–“ভাইয়া আর অর্নি হানিমুনে যাবে? বাহ বেশ___”
নূরের কথা শুনে বিষম খেলো অর্নি। উৎসব পানির গ্লাস এগিয়ে দিলো অর্নিকে। অর্নি এক পলক উৎসবের দিকে তাকিয়ে চোখ সরিয়ে নিলো। নিলয় আবরার ধমকে উঠলেন মেয়েকে। কঠোর স্বরে বললেন,
–“অর্নি এখন তোমার বড় ভাইয়ের বউ সুতরাং ভাবী হয় তোমার। এখানে আমি তোমার ভাই উপস্থিত আছি, সবার সামনে ওর নাম ধরে ডাকছো কেন?”
ধমক খেয়ে নূর ঠোঁট উল্টালো। অর্নি আমতা আমতা করে বললো,
–“সমস্যা নেই বাবা, আমরা তো একসাথেই পড়াশোনা করি আর ও আমার বেস্ট___”
–“পাশাপাশি তুমি ওর বড় ভাইয়ের বউ অর্নি। এভাবে উৎসবের সামনে ওর নাম ধরে ডাকাটা শোভা পায় না।”
উৎসব নিলয় আবরারকে বললেন,
–“সমস্যা নেই আব্বু, নূর অর্নির নাম ধরেই ডাকুক। অর্নি আমার বউ হওয়ার কয়েক বছর আগে থেকেই নূরের বেস্ট ফ্রেন্ড।”
প্রত্যুত্তরে নিলয় আবরার এ বিষয়ে আর কোনো কথা বললো না। উনি আবারো হানিমুনের প্রসঙ্গে বললেন,
–“তাহলে কবে যাচ্ছো আর কোথায় যাচ্ছো জানিয়ে দিও আমাকে, আমি সব ব্যবস্থা করে রাখবো।”
উৎসব খেতে খেতেই বললো,
–“আপাতত কোথাও যাচ্ছি না। আগে বিয়ের অনুষ্ঠান হোক, তারপর এ বিষয়ে ভাবা যাবে।”
শায়লা বেগম এতক্ষণে মুখ খুললেন,
–“সে কিরে কেন?”
–“এমনি।”
তরী অর্নিকে ফিসফিস করে জিজ্ঞেস করলো,
–“আপু মন খারাপ হলো ভাইয়া না করাতে?”
অর্নি ভ্রু কুঁচকে তাকালো তরীর দিকে। অর্নি কিছু বলার আগেই নিলয় আবরার বললেন,
–“তোমার একা মতামতে কিছু হবে না। এখানে অর্নিরও একটা ইচ্ছে আছে। অর্নি যেতে___”
অর্নি নিচু স্বরে বললো,
–“আমার কোনো ইচ্ছে নেই বাবা। আপনার ছেলের যে রকম ইচ্ছে সেরকমই হবে।”
–“ঠিক আছে, সবকিছুই তোমাদের ইচ্ছে।”
কথাটা বলে নিলয় আবরার খাওয়ায় মনোযোগ দিলো। খাবার টেবিলে আর কোনো কথা হলো না। খাবার শেষ করে নিলয় আবরার ঘরে চলে গেলেন। নূর সোফায় বসে টিভি অন করলো৷ অর্নি শায়লা বেগমের হাতে হাতে সবকিছু গোছগাছ করছিলো। তরী চেয়েছিলো সাহায্য করতে অর্নি আর শায়লা বেগম বারণ করে ওকে। তাই তরী গিয়ে নূরের পাশে বসে পড়লো। শায়লা বেগম অবশ্য তরীর পাশাপাশি অর্নিকেও বারণ করেছিলো। অর্নি শোনেনি। উৎসব ঘরে যাওয়ার আগে অর্নিকে উদ্দেশ্য করে বললো,
–“অর্নি, হাতের কাজ সেরে ঘরে আসো দ্রুত।”
তারপর আর এক মিনিটও না দাঁড়িয়ে দোতালায় নিজের ঘরে চলে গেলো উৎসব৷ শায়লা বেগম বললো,
–“ঘরে যা তুই, এদিকে তো কোনো কাজ নেই এইটুকু আমিই করে নিতে পারবো।”
শায়লা বেগম কথা শেষ করার পরই নূর বললো,
–“ভাবী যাও ঘরে যাও। ভাইয়া অপেক্ষা করছে তো৷ ডাকলো যে ঘরে যাওয়ার জন্য?”
নূরের কথায় তরী শব্দ করে হেসে দিলো। শায়লা বেগমও মুচকি হাসলেন। অর্নি চোখ রাঙিয়ে তাকিয়ে বললো,
–“একদম ভাবী বলবি না। কোনো ভাবী-টাবী না, আমরা বেস্ট ফ্রেন্ড ছিলাম আর সেরকমই আছি।”
কথাটা বলে অর্নি আবারো গোছগাছে হাত লাগালো। অতঃপর সবকিছু গুছিয়ে নূরের পাশে গিয়ে বসলো অর্নি। গল্প করার ধান্দায় উৎসবের কথা একদমই ভুলে গেছে অর্নি৷ উৎসব যে ওকে ঘরে যেতে বলেছে হাতের কাজ সেরে সেটা একদমই মাথায় নেই৷ উৎসব চেঁচিয়ে বললো,
–“অর্নি? ঘরে আসতে বললাম না? আসছো না কেন এখনো?”
উৎসবের ডাকে টনক নড়ে অর্নির। দাঁত দিয়ে জিহ্বা কেটে বললো,
–“এইরে, একদম ভুলে গেছি। এখন না জানি আবার রাগে দুই/চারটা ধমক লাগিয়ে দেয়।”
বলেই দৌড় লাগালো অর্নি। ওদিকে তাকিয়ে নূর আর তরী শব্দ করেই হেসে দিলো। শায়লা বেগমও মুচকি হেসে বললো,
–“পাগল ছেলে আমার।”
চলবে~
#তুমি_শুধু_আমারই_হও
লেখনীতে- অরনিশা সাথী
|২৯|
দরজা আটকে লাইট অফ করে গুটিশুটি মেরে বিছানায় শুয়ে পড়লো অর্নি। উৎসব অর্নিকে টেনে বুকের উপর নিলো। উৎসব সাদা রঙের স্যান্ডো গেঞ্জি পড়া ছিলো। অর্নি একহাতে উৎসবের বুকের কাছ দিয়ে গেঞ্জি খামচে ধরে আছে৷ স্যান্ডো গেঞ্জি পড়ায় উৎসবের বুক কিছুটা উম্মুক্ত হয়ে আছে৷ ফর্সা গায়ে ঘন কালো লোমগুলো দেখতে বেশ ভালো লাগছে অর্নির। অন্যহাতে উৎসবের উম্মুক্ত বুকে আঁকিবুঁকি করছে অর্নি। উৎসবের শরীরের স্মেল অর্নির নাকে এসে বারি খাচ্ছে। উৎসবের সংস্পর্শে এলে যেন অর্নি অন্য জগতে হারিয়ে যায়। এই যে এখন যেমন ওর শরীরের স্মেলে অর্নির হারিয়ে যেতে ইচ্ছে করছে। উৎসব অর্নির চুলে বিলি কাটতে কাটতে বললো,
–“এতক্ষণ কি করছিলে নিচে?”
–“গল্প করছিলাম তিনজনে।”
–“আমি তো বলেছিলাম হাতের কাজ সেরে ঘরে আসতে, গল্প করতে বলিনি।”
–“খে্ খেয়াল ছিলো না।”
–“আচ্ছা ঘুমাও।”
কথাটা বলেই চুমু খেলো অর্নির কপালে। অর্নি বিস্মিত নয়নে তাকিয়ে আছে উৎসবের দিকে। লোকটা আজ কিছু বললো না যে? এতটা সময় লেট করে ঘরে এসেছে, তবুও এত শান্ত কি করে আছে? অন্যদিন হলে তো কি ধমকটাই না দিতো। আজ ব্যাতিক্রম হলো কেন? এরকম আকাশকুসুম ভাবছে অর্নি। উৎসব বললো,
–“এখনো চোখ বন্ধ করছো না কেন?”
–“আচ্ছা আজ কি হলো যে কিছু বলছেন না আমায়? এর আগে তো বেশ কয়েকবার ঝাড়ি মেরেছেন দেরী করে ঘরে আসাতে, আজ ব্যাতিক্রম যে?”
উৎসব গভীর ভাবে ধরলো অর্নিকে। বললো,
–“তুমি কি চাও তোমায় ধমকে কথা বলি?”
–“একদম না। আমি তো চাই আপনি আমায় অনেকটা ভালোবাসবেন, আদ___”
এইটুকু বলে থেমে গেলো অর্নি। কি বলতে যাচ্ছিলো ও? লজ্জা সরমের মাথা খেয়েছে নাকি?উৎসব বাঁকা হাসলো। অর্নির কোমড়ে স্লাইড করতে করতে বললো,
–“থামলে কেন? কথা শেষ করো।”
উৎসবের এমন স্পর্শ পেয়ে জমে বরফ হয়ে যাচ্ছে অর্নি। উৎসবকে ঠেলে নিজের থেকে সরিয়ে উল্টো ঘুরে শুয়ে পড়লো। উৎসব মুচকি হেসে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে চুলে মুখ গুজলো। কিছু সময় পর বললো,
–“এদিকে ঘুরো, ঘুমাবো আমি।”
–“ঘুমান, আমি কি বারণ করেছি?”
–“বউকে বুকে নিয়ে না ঘুমালে ঘুম হবে না আমার।”
কথাটা বলে উৎসব নিজেই অর্নিকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে বুকে টেনে নিলো। অর্নির তবুও ঘুম আসছে না। ও উৎসবকে কিছু বলতে চায়৷ আর সেজন্যই এরকম হাঁসফাঁস করছে। উৎসব বুঝতে পেরে জিজ্ঞেস করলো,
–“কি হয়েছে? ঘুমাচ্ছো না কেন? কিছু বলবে?”
অর্নি মাথা উপর-নীচ ঝাকিয়ে সম্মতি জানালো। উৎসব বললো,
–“কি বলবে?”
–“বাসায় যাবো আমি।”
ভ্রু কুঁচকে ফেললো উৎসব। জিজ্ঞেস করলো,
–“হঠাৎ? কেন?”
–“এ বাসায় এনেছেন পর একবারের জন্যও যেতে দিয়েছেন আমাদের বাড়ি? ভাইয়া আম্মু এত করে বলেছিলো, আপনি কোনো না কোনো অজুহাতে ঠিকই নাকোচ করে দিতেন।”
–“যেতে দিইনি, আর দিবোও না।”
অর্নি কাঁদোকাঁদো চেহারায় বললো,
–“কিন্তু কেন?”
–“তোমাকে ছাড়া ঘুম হয় না আমার।”
–“টায়রা আপু এসেছে, আমাকে কাল বাসায় দিয়ে আসবেন প্লিজ?”
অর্নির কন্ঠে কাতরতা। বাসায় যাওয়ার জন্য ব্যাকুল হয়ে আছে। উৎসব কিছু একটা ভেবে বললো,
–“রেডি থেকো সকালে, কাল অফিস যাওয়ার সময় দিয়ে আসবো।”
অর্নি খুশিতে আটখানা হয়ে জাপ্টে ধরলো উৎসবকে। উৎসব বললো,
–“এত খুশি হওয়ার কিছু নেই, অফিস থেকে ফেরার সময় আবার নিয়ে আসবো তোমায়।”
অর্নির হাসিখুশি ভাবটা মূহুর্তেই বিলীন হয়ে গেলো। উৎসব আবারো বললো,
–“সারাদিন অফিস শেষে বাড়ি ফেরার পর তোমার মুখ না দেখলে ভালো লাগে না কিছু। রাতে বাড়ি ফেরার তোমাকে আমার চাই। সুতরাং তোমাদের বাসায় যাবা ভালো কথা, সকাল থেকে সারা সন্ধ্যা থাকবে আমি অফিস থেকে আসার সময় তোমাকে সাথে করে নিয়ে আসবো। রাজি থাকলে যাবা নয়তো আ’ম স্যরি। ছাড়বো না তোমাকে।”
–“কয়েকটা দিনই তো প্লিজ। যাই না।”
–“যেতে বারণ করিনি, আমার কন্ডিশন মেনে যেতে চাইলেই যেতে পারবা।”
–“আচ্ছা বেশি না মাত্র দুদিন? প্লিজ? টায়রা আপু যেতে বলছে বার বার, আম্মু আর ভাইয়াও ফোন করেছিলো।”
–“একরাতও না।”
–“তাহলে আপনিও চলুন সাথে। আপনি যেহেতু আমাকে ছাড়া থাকতেই পারবেন না। তাহলে আপনিও থাকবেন আমি যে কয়দিন থাকবো।”
উৎসব ভ্রু কুঁচকে তাকালো তপ্ত শ্বাস ফেলে বললো,
–“আমি যেভাবে বলেছি সেভাবে যেতে চাইলে যাবা নয়তো না। এখন ঘুমাও চুপচাপ।”
কথাটা বলেই উৎসব চোখ বন্ধ করলো। অর্নি মন খারাপ করে রইলো৷ লোকটা এমন কেন? দুইটা রাত থাকতে দিলে কি এমন হতো? উৎসব চোখ বন্ধ রেখেই বললো,
–“মন খারাপ করে লাভ নেই, রাত থাকার হলে আমি যেতে দিচ্ছি না।”
–
উৎসব আর অর্নি আজ অর্নিদের বাসায় যাবে। মিসেস অদিতি শায়লা বেগমের কাছে ফোন করে ওদের যেতে বলেছিলেন। শায়লা বেগম অনেক বুঝিয়ে শুনিয়ে রাজি করিয়েছে উৎসবকে। তবে উৎসব জানিয়েছে একরাতের বেশি থাকবে না৷ তাতেই মেনে যান শায়লা বেগম। কিন্তু মন খারাপের রেশটা অর্নির মাঝে থেকেই যায়। এতদিন পর বাড়ি যাবে তাও মাত্র একদিনের জন্য? এটা মানা যায়? কিছুতেই না। তাই অর্নি জেদ ধরে বসেছিলো একদিনের জন্য হলে যাবে না ও। কিন্তু উৎসব খুবই শান্ত গলায় অথচ ভয়ানক এক হুমকি দিয়ে বললো,
–“আজ না গেলে আর কোনোদিনও যেতে পারবে না ও বাড়ি।”
তাই ভয়ে ভয়েই যেতে রাজি হয়েছে অর্নি। পাছে উৎসব যদি সত্যি সত্যিই আর কখনো যেতে না দেয়? উৎসবের এই একটা কথাতেই সুরসুর করে রেডি হতে চলে যায় অর্নি। তা দেখে উৎসব মুচকি হাসে।
উৎসব, নূর আর তরী ড্রয়িংরুমের সোফায় বসে অপেক্ষা করছে অর্নির জন্য। অর্নির জোড়াজুড়িতেই নূর আর তরী রাজি হয়েছে অর্নিদের বাসায় যাওয়ার জন্য। ওদিকে রুশানও যাবে বলেছে। উৎসবের এবার বিরক্ত লাগছে অর্নি এখনো নিচে না নামায়। গলা ছেড়ে ডাকলো উৎসব,
–“অর্নি আর কতক্ষণ লাগবে তোমার?”
–“এই তো আসছি, হয়ে গেছে প্রায়।”
উৎসব পকেট থেকে ফোন বের করে ব্যস্ত হয়ে পড়লো। বেশ কিছুক্ষণ বাদে নূর উৎসবের কাঁধ ধরে ঝাকায়৷ উৎসব ফোন থেকে মুখ তুলে তাকায় নূরের দিকে। নূর ইশারা করে সিড়ির দিকে তাকাতে। উৎসব সিড়ির দিকে তাকিয়েই হা হয়ে যায়৷ অর্নির দিকে দৃষ্টি রেখেই বসা থেকে উঠে দাঁড়ালো। অর্নি আজ শাড়ি পড়েছে। তাও আবার লাল টুকটুকে শাড়ি। চুলগুলো ছেড়ে দেওয়া। দুহাত ভর্তি রেড এবং গোল্ডেন কম্বিনেশনের চুড়ি। ঠোঁটে ডার্ক রেড লিপস্টিক। নিচ দিকে তাকিয়ে শাড়ির কুচি ঠিক ঠিক করতে নামছে অর্নি। ব্যাস! এতটুকুই যথেষ্ট ছিলো উৎসবকে আবারো ঘায়েল করার জন্য। আবারো নতুন করে নতুন ভাবে অর্নির প্রেমে পড়লো উৎসব। ওদের বিয়ের পর আজ প্রথম উৎসব অর্নিদের বাড়িতে থাকার উদ্দেশ্যে যাচ্ছে। এর আগেও অবশ্য গেছিলো কিন্তু কিছু মূহুর্তের জন্য, অর্নিকে নিয়েই চলে এসেছিলো। উৎসবকে নিয়ে অর্নিরও এই প্রথম শ্বশুর বাড়ি থেকে বাবার বাড়ি যাওয়া। তাই ভাবলো আজ শাড়িই পড়বে। যেই ভাবা সেই কাজ। অর্নি উৎসবের সামনে দাঁড়িয়ে বললো,
–“আমি রেডি, এবার চলুন।”
অর্নির কথায় উৎসবের হুশ ফিরে। দৃষ্টি সরিয়ে নিয়ে লম্বা দুটো শ্বাস নিলো। তারপর বললো,
–“হ্যাঁ চলো।”
কথাটা বলেই উৎসব আগে আগেই বেরিয়ে পড়লো। অর্নি শায়লা বেগমের থেকে বিদায় নিয়ে নূর ওদের সাথে বের হলেন বাসা থেকে। তরী বললো,
–“অর্নি আপু তোমাকে আজ যা লাগছে না? একদম অপ্সরাদের মতো।”
অর্নি মুচকি হাসলো। নূর বললো,
–“ভাইয়া তো তোর থেকে চোখই সরাচ্ছিলো না দোস্ত। কেমন হা করে তাকিয়ে ছিলো।”
অর্নি লজ্জা পেলো ক্ষানিকটা। নূর বাঁকা হেসে বললো,
–“লাল শাড়িতে তোকে একদম লাল টুকটুকে বউয়ের মতো লাগছে। অবশ্য তুই তো বউ-ই। এখন যদি দিন না হয়ে রাত হতো, আর তুই এভাবে সেজে ভাইয়ার সামনে যেতি তাহলে ভাইয়া তোকে একদম ছাড়তো না দোস্ত। হেব্বি আদর করতো, আ’ম সিয়র।”
কথাটা শুনে তরী মৃদু শব্দে হাসলো। অর্নি লজ্জায় নুইয়ে গেলো। পরক্ষণেই চোখ রাঙিয়ে নূরের দিকে তাকিয়ে বললো,
–“একদম উল্টাপাল্টা বলবি না। দিন দিন বড্ড বেয়াদপ হচ্ছিস, শান্ত ভাইয়ার কাছে পাঠানোর ব্যবস্থা করছি তোকে ওয়েট।”
কথাটা বলেই অর্নি দরজা খুলে গাড়িতে গিয়ে বসলো। নূর আর তরীও পেছনে বসলো। ওরা বসতেই উৎসব গাড়ি স্টার্ট দিলো। অর্নি পূর্ণ দৃষ্টিতে তাকালো উৎসবের দিকে। কালো জিন্স আর ধূসর রঙের শার্টে উৎসবকে দেখতে বেশ লাগছে ওর। এই সুদর্শন ছেলেটা অর্নির, একান্তই অর্নির। কথাটা ভেবে লাজুক হাসলো অর্নি। উৎসব একহাতে ড্রাইভিং করছে আর অন্যহাত আলগোছে অর্নির হাতের উপর রাখলো। উৎসবের স্পর্শ পেয়ে মৃদু কেঁপে উঠলো অর্নি। পরমূহুর্তে অর্নিও হেসে উৎসবের আঙুলের ভাজে নিজের আঙুল দিয়ে হাত মুঠো করে ধরলো। উৎসব সামনের দিকে দৃষ্টি রেখেই ধীর কন্ঠে বললো,
–“ইশ্ বউ! এই মূহুর্তে এভাবে না সাজলেই পারতে। আমার তো ইচ্ছে করছে তোমাকে এক্ষুনি কামড়ে কুমড়ে খেয়ে ফেলতে।”
উৎসবের কথা শুনে লজ্জায় অর্নির গাল দুটো লাল হয়ে গেলো। দ্রুত মাথা নিচু করে নিয়ে ঘন ঘন দুটো শ্বাস নিলো। উৎসবের কথা শুনে শ্বাস আটকে গেছিলো ওর। মনে হচ্ছিলো হৃদপিণ্ডে কেউ হাতুড়ি দিয়ে পেটাচ্ছে।
–
উৎসবরা এসেছে পর মিসেস অদিতি আর টায়রা একগাদা নাস্তা দিয়েছে ওদের। হালকা নাস্তা করতে করতেই সকলে একচোট আড্ডা দিয়ে উঠলো। মিসেস অদিতি কিচেনে রাতের রান্নার তোরজোর করছে। টায়রা হেল্প করছে মিসেস অদিতিকে। অর্নব বাজারে গেছে আরো কিছু বাজার সদাই করতে। অর্নি নূর রুশানদের উদ্দেশ্য করে বললো,
–“তোরা বসে গল্প কর, আমি চেঞ্জ করে আসছি।”
এইটুকু বলেই উঠে গেলো অর্নি। উৎসব ফোনে কিছু একটা করছিলো। অর্নির কথায় মাথা তুলে তাকায় ও। অর্নি যাওয়ার মিনিট দুয়েক পরই উৎসব উঠে দাঁড়ালো ঘরে যাওয়ার জন্য। অর্নি দরজা লাগিয়েছে তবে লক করেনি। ড্রেসিংটেবিলের সামনে দাঁড়িয়ে দুহাতের চুড়ি গুলো খুলে রাখলো প্রথমে। কাঁধ থেকে আঁচলের পিনটা খুলতেই আঁচল ফ্লোরে পড়ে গেলো। এমন সময় রুমে ঢুকে দরজা লক করে পেছনে ঘুরলো উৎসব। অর্নিও চমকে পেছনে ফিরে তাকায়। অর্নি ভেবেছিলো ওখানে যেহেতু চেঞ্জ করবে বলে এসেছে তাহলে এসময় আর কেউ রুমে আসবে না। কিন্তু কে জানতো উৎসবটা এসে পড়বে? অর্নিকে এ অবস্থায় দেখে উৎসব থমকে যায়। এক পা দু পা করে এগিয়ে যেতে থাকে অর্নির দিকে। উৎসব অর্নির মুখোমুখি দাঁড়িয়ে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে ওর দিকে। অর্নি উৎসবের দৃষ্টি অনুসরণ করে দ্রুত ফ্লোর থেকে শাড়ির আঁচল তুলে বুকে জড়িয়ে নেয়৷ উৎসব আরেক কদম এগোতেই অর্নি দ্রুতো উলটো দিকে ঘুরে যায়। উৎসব আলগোছে অর্নির কোমড় ধরে টেনে ওকে নিজের সামনে এনে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে। চুলগুলো কাঁধের একপাশে দিয়ে উম্মুক্ত ঘাড়ে সশব্দে চুমু খায়। ঈষৎ কেঁপে উঠে অর্নি। অর্নির ঘাড়ে থুতনি রেখে দুহাতে অর্নির পেট জড়িয়ে ধরে নেশালো কন্ঠে বললো,
–“বউ? বিকেল থেকে এসব কি রুপ দেখাচ্ছো আমায়? আমি তো নিজের মাঝে থাকছি না। কন্ট্রোল করতে পারছি না নিজেকে। তোমার মাঝে ডুব দিতে ইচ্ছে করছে।”
লাস্ট কথাটা অর্নির কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিস করে বললো উৎসব৷ অর্নি লজ্জা পেয়ে নিজেকে ছাড়াতে চাইলে ব্যর্থ হয়। উৎসব অর্নিকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে দুগালে হাত রেখে ঠোঁট জোড়া নিজের দখলে নিয়ে নেয়। অর্নি শক্ত করে দুহাতে নিজের শাড়ি খামচে ধরে চোখ বন্ধ করে রেখেছে। ঘনঘন শ্বাস নিচ্ছে। হৃদপিণ্ডটা প্রচন্ড গতিতে লাফাচ্ছে। নিজের মনমতো চুমু খেয়ে ক্ষানিক বাদে অর্নিকে ছেড়ে দিয়ে বা হাতের উল্টোপিঠ দিয়ে মুখ মুছে নিলো উৎসব। তাকালো অর্নির দিকে। ঠোঁটের লিপস্টিক এলোমেলো হয়ে আছে। একেক জায়গায় মুছে মুছে গেছে আবার। অর্নি তখনো জোরে জোরে শ্বাস নিচ্ছিলো৷ উৎসব বাঁকা হেসে বললো,
–“আপাতত এইটুকুতেই নিজেকে শান্ত করলাম, মিসেস সা’য়াদাত আবরার উৎসব। বাকীটুকু রাতের জন্য তোলা থাক।”
উৎসবের এমন কথা শুনে দ্রুত মাথা তুলে তাকালো অর্নি। বিছানা থেকে জামা নিয়ে এক দৌড়ে ওয়াশরুমে গিয়ে দরজা লক করে দিলো। ওয়াশরুমের দরজায় পিঠ লাগিয়ে দাঁড়িয়ে জোরে শ্বাস নিতে লাগলো।
চলবে~