তোমাকে নিয়েই গল্প পর্ব-১২

0
1107

#তোমাকে_নিয়েই_গল্প
#পর্ব:১২
#জুনাইনাহ_তাসনিম_অরহা

৪ দিন পর ভাবিকে বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়।অন্তু ভাইরাও এসে গেছে।মা আর সৌরভ এই কয়দিন মামার বাড়িতেই ছিলো।আমি,আপু আর বাবা বাসায় চলে এসেছিলাম।কিন্তু বাবু নিয়ে ভাবি বাসায় পর আমরা আবার দেখতে আসি।অন্তু ভাইয়ার মেয়ের নাম রাখা হয়েছে অহনা।অনেক মিষ্টি পিচ্চিটা।দেখলেই কোলে নিয়ে আদর করতে ইচ্ছা করছে।

১৭.
২ সপ্তাহ পর নানিসহ মামাদের বাসার সবার জন্যে মা খাবার রান্না করেছে।বিকেলা বেলা আমায় জোর করে পাঠালো খাবার দিয়ে আসতে।আমি না না করেও শেষ পর্যন্ত নিয়ে গেলাম।আমাকে এতো খাবার নিয়ে যেতে দেখে মামি বলে ওঠে,
–সূচী তোমার মার এতো কষ্ট করার কি দরকার ছিলো বলো তো?শুধু একা হাতে এতোগুলো মানুষের রান্না করে পাঠালো।
–আরে অন্তুর মা পাঠায়ছে তো কি হয়েছে?ভালো হয়েছে আরো কতোদিন পর আমার বোনের হাতের রান্নাটা খেতে পারবো বলোতো।এই সূচী তুই রাতে খেয়ে যা বুঝলি।(মামা বলে)
–না না মামা।আমি গাড়ি নিয়ে আসিনি।আমি এখনি চলে যাবো।
–এই তুই গাড়ি নিয়ে আসিস তো কি হয়েছে?এই বাড়িতে কি গাড়ি নেই?তোর মামার কি গাড়ি নেই??যা বল্লাম তাই করবি।

আমি আর মামার কথা ফেলতে পারলাম না।মামি তাড়াতাড়িই আমাকে খেতে দিয়ে দিলো।রাত নয়টা বাজে।অন্তু ভাই আর আকাশ ভাই দুজন অফিস থেকে ফিরেছে একটু আগেই।তাই মামি বললো অভ্র ভাইয়ের সাথে যেতে।কিন্তু ওই সাদা বাদরটার সাথে যাওয়ার বিন্দু মাত্র ইচ্ছা নেই আমার।কারন আমি যখনই ওনার সাথে একা থাকি আমাকে হেনস্তা করবেই।তাও কিছু করার নেই বাধ্য হয়ে যাওয়াই লাগলো।

*
–এই তুমি যেন কিসে পড়ো??

–আমাকে বলছেন?(আমি বেশ অবাক হয়ে শুনলাম।কারন আধাঘন্টা/পনে এক ঘন্টা ধরে আমরা কেউ কোন কথা বলিনি।হটাত অভ্র কিসে পড়ি জিজ্ঞেস করায় অবাক হলাম কিছুটা)

–তোমার কি মনে হচ্ছে আমি ভূতের সাথে কথা বলছি??গাড়িতে কি অন্য কোন ব্যাক্তি আছে?তুমি কি দেখতে পারছো আর কাউকে?সে কি অশরীরি?কোথায় আছে আমাকে একটু দেখাবে??হাহাহহাহহাহাহহ….
(আমার প্রচন্ড রাগ হলো কিন্তু কিছু বললাম না।চুপ করে অন্যদিকে ঘুরে বসে রইলাম)
–কি হলো বললে না তো কোন ক্লাসে পড়ো??সেভেনে পড়ো কি??

–……………..

–বোবা হয়ে গেলে না কি আবার?হায় আল্লাহ আমি এখন ফুপিকে কি জবাব দেবো?ও ফুপি গো তোমার মেয়ে বোবা হয়ে গেছে।কি সর্বনাশ হলো গো তোমার ফুপি।

–উফফ এতো বেশি বকেন কেন আপনি?বাড়ির লোকের সামনে তো খুব ভালো।আর তাদের আড়ালে আস্ত শয়তান।

–এই তুমি আমাকে শয়তান বললে??পিচ্চি একটা মেয়ে তোমার সাহস তো কম না।

–দেখুন।আমি পিচ্চি না।

–সেভেনে পড়ো আবার বলো পিচ্চি না তাই না??

–এই এই এই আমি সেভেনে পড়ি আপনাকে কে বলেছে হ্যা?আমি অনার্স সেকেন্ড ইয়ারে উঠবো এবার.

–কিসে?

–অনার্স সেকেন্ড ইয়ার।

–তার মানে তুমি এখনো ফার্স্ট ইয়ারের নিব্বি।হাহহাহাহহাহহহাহাহহাহাহহহ,ঠিকই আছে এই জন্যেই এমন পিচ্চি।কথা শুনেই বোঝা যায়।

আমার প্রচুর রাগ হলো ইচ্ছা হলো কিছু কথা শুনিয়ে দিই কিন্তু না আমি যতো কথা বাড়াবো উনিও তো বাড়বেন তাই চুপ থাকাই ভালো।নভেম্বর এর মাঝামাঝি সময় এখন তাই চারিদিকে হালকা হালকা ঠান্ডা।আমি বিকালে এসেছিলাম তাই গায়ে জড়ানোর মতো সেরকম কিছু আনা হইনি।দুই হাত দিয়ে নিজেকে জড়িয়ে ধরলাম।রাস্তা দেখে মনে হচ্ছে বাসার বেশ কাছেই আর ১০ মিনিট মতো হবে বড় জোর।হটাত গাড়ি থেমে গেলো।এরকম হুট করে ওনার গাড়ি থামানো দেখে আমার সেদিনের কথা মনে পড়ে গেলো যেদিন উনি আমাকে গাড়ি থেকে নামিয়ে দেন আর তারপরে হাসপাতালের সারা রাস্তা আমাই হেটে যাওয়া লাগে মা কে দেখতে।আজ আবার এরকম কিছু করে কিনা আল্লাহই ভালো জানে।

–নামো।
–কেন?(ওনার নামো বলা শুনে আমার ভয় লেগে যাই।আজ আবার নামতে বলছে কেন এই সাদা বাদরটা)
–ভুট্টা খাবো।
–না না আমি খাবো না।আমি খাবো না।
–আমি খাবো।
–হ্যা তা যান নিজে কিনে আনুন আমি যাবো না(আমি তো আজ যাবোই না।আগের বার ও এইভাবেই আমাকে আইস্ক্রিম কিনতে পাঠিয়েছিলো তারপর তো সব জানায় আছে সবার)
–ঠিক আছে ঠান্ডায় বসে থাকো।আমি যাই গরম গরম ভুট্টা খেয়ে আসি।

উনি কথাটা বলে গাড়ি থেকে নেমে যায়।আমি কিছুটা অবাক হয়।আজ কি সত্যিই তাহলে আমাকে আর একা রেখে যেতো না নাকি?!!ধুর গেলেও তো ভালো হতো গরম গরম ভুট্টা খেতে বেশ ভালোই লাগতো এখন।এসবই ভাবছিলাম হটাত গাড়ির জানালায় টোকা পড়লো।আমি তাকিয়ে দেখি অভ্র ভাই।আমি গ্লাস নামালাম।
–শেষ বারের মতো বলছি যাবে কি যাবে না??
–…………..
–ঠিক আছে থাকো।আমি চললাম।
–এই না না আমি যাবো।

আমি তাড়াতাড়ি গাড়ি থেকে নেমে ওনার পিছু হাটা শুরু করলাম।হালকা ঠান্ডায় বেশ মজা লাগছে ভুট্টা খেতে।দুজন দুজনের মতো ভুট্টা খাচ্ছিলাম সেই সময় কয়েকটা ছেলে আসলো।সবারই বয়স ২২-২৫ হবে।দেখেই বোঝা যাচ্ছে অসভ্য সবগুলো।যেভাবে আমার দিকে বাজে নজর দিচ্ছে,বেয়াদব ।আমি ওতো পাত্তা দিলাম না ভুট্টা খেতে লাগলাম।কিন্তু একটা ছেলে বেশিই বাড়াবাড়ি করে ফেললো,ঠিক আমার গায়ের মধ্যে চলে এলো।তারপর বাজে ভাবে কথা বলতে লাগলো।
–একা একাই খাচ্ছো যে সুন্দরি আমাদেরও একটু দাও।আমরাও একটু চেখে দেখি।
(ছেলেটার সাথে সাথে অন্য ছেলেগুলোও হেসে উঠলো।আমি দুরে সরে গেলাম)
–আরে সুন্দরি দুরে দুরে যাচ্ছো কেন?একটু কাছে থাকলে হয় হ্যা?এদিকে হালকা হালকা ঠান্ডা পড়াও শুরু হয়েছে একটু কাছাকাছি থাকবা।দুজন একসাথে ভুট্টা খাবো তোমার হাতে।তারপর একই চাদরে…..
–দেখুন ভদ্রভাবে কথা বলুন।
–আরে সুন্দরি রাগ করছো কেন?আমরা কি এমন বাজে কথা বললাম বলো তো??তোমার ও বয়স কম আমাদের ও।জমে যাবে কিন্তু পুরো(অন্য আরেকটা ছেলে বলে উঠলো)

ছেলেগুলো একের পর এক বাজে কথা বলছে কিন্তু অভ্র ভাইয়ের এদিকে কোন পাত্তায় নেয়।তিনি ভুট্টা খাওয়ায় ব্যস্ত।আমি ওনার কাছে চল গেলাম,বেশ রাগই হলো আমার।
–ওরা এরকম বাজে বিহেভ করছে আপনি কিছু বলছেন না কেন??
–…………..(উনি ভুট্টা খাচ্ছেন)
–আমাকে এতো গুলো বাজে কথা শুনাচ্ছে আর আপনি খাচ্ছেন?
–আরে ওদের কাজই তো ওটা।মেয়ে দেখলে এরকম একটু করে।তাই বলে ওদের সাথে মুখ লাগাতে হবে নাকি?চুপচাপ খাও।
–মানে?ওরা যা না তাই বলবে আর তা চুপচাপ মেনে নিয়া লাগবে??
–আরে ধুর খাও তো।
–আপনিই খান।
আমি আমার হাতের ভুট্টাটা ওনার গায়ে ছুড়ে মেরে ওই অসভ্য ছেলেগুলোর কাছে গেলাম।পায়ের জুতোটা হাতে নিলাম।
–আরেকটা বাজে কথা বললে এই জুতার বাড়ি খাবি সবগুলো।
–ও মা গো!এ মেয়ে করে কি আমি তো ভয় পেয়ে গেছি(একটা ছেলে ভয় পাওয়ার নাটক করে বলে)
–আরে আমরাও তো।হহাহহাহহহ(সবগুলো হেসে দেয়)
–দেখ আমাকে ভীতু ভাববি না।বেশি বাড়াবাড়ি করলে আমার এই জুতার বাড়ি কিন্তু একটাও তোদের পিঠ ছাড়া বাইরে পড়বে না।
–তোমার হাতে জুতার বাড়ি খাওয়াও তো সৌভাগ্য গো সুন্দরি(ছেলেটা আমার হাত ধরে নেই)
–এই হাত ধরলেন কেন?হাত ছাড়ুন।
ছেলেটা আমার হাত ছাড়লো না উল্টা সবাই মিলে আমাকে ঘিরে ধরেছে।বাজে বাজে কথা বলতে লাগলো আর বিশ্রী ভাবে হাসতে লাগলো।তখনি অভ্র ভাই আসলো।
–ছাড়ো ওকে।
–এই তুই আবার কে রে?এই মামুন এই মা*ল টা আবার কে রে?এই সুন্দরির প্রেমিক নাকি(ছেলেটা হাসতে হাসতে বলে)
–দেখো ভাই আমি কোন ঝামেলা চাই না।তাই ওরে ছেড়ে দাও।(অভ্র ভাই ছেলেটার গায়ে হাত দিয়ে বলে)
–এই তুই কে রে আমার গায়ে হাত দিয়ার সাহস কয় পায়ছিস?

ছেলেটা অভ্র ভাইয়কে ধাক্কা দিয়ে বলে।অভ্র ভাই মাটিতে পড়ে যায়।ছেলেগুলো আমার সাথে আরো বাজে আচারন শুরু করে।কেউ আমার হিজাব ধরে টান দিতে যাচ্ছে তো কেউ ওড়না।কেউ আবার গালে হাত দিতে যাচ্ছে।আমি অভ্র ভাইয়ের দিকে তাকালাম উনি মাটিতে বসেই আছে কিন্তু উঠে এসে প্রতিবাদ করছে না।আমার খুব খারাপ লাগলো সাথে রাগ হলো ওনার ওপর।ছেলে গুলো আমার সাথে বাজে ব্যবহার করেই যাচ্ছিলো তখন পাশ দিয়ে হটাত পুলিশের গাড়ি গেলো।পুলিশের গাড়ি দেখে ভয়ে সব পালালো।আমি আর অভ্র ভাই গাড়িতে এসে বসলাম।আমি বাকি রাস্তাটুকু একটা কথাও বললাম না উনিও না।বাসায় এসে নিজের ঘর আটকে ওয়াশরুমে চলে গেলাম।ঠান্ডা পড়ছে তাও গিজার বাদে সাওয়ার ছেড়ে দিলাম।লাইফে এই প্রথমবার আমাকে এরকম কিছু ফেস করতে হলো।আমি কেঁদে ফেললাম এবার।হাওমাও করে কাঁদলাম।বেশি কষ্ট হলো অভ্র ভাইয়ের এই আচারনে।সেদিন রাতে আর ঘুম হলো না।

পরীক্ষার আর বেশিদিন নেই।এখন তাই ইম্পর্টান্ট ক্লাস হচ্ছে।কিন্তু ওই ঘটনার পর আমার কিছুই ভালো লাগে না।দুইদিন ঘরেই কাটিয়ে দিলাম।খাবার খেতেও বাইরে যায়নি।মা কারো হাত দিয়ে খাবার পাঠিয়ে দেই।অল্প কিছু খেয়ে রেখে দিই কোন কোন বেলা খেলামই না।মা বা বাড়ির কেউ সন্দেহ করেনি।ভাবছে পরীক্ষার টেনশনে হয়তো রুন থেকে বেরোই না,খাই না।তিন দিন পর মারিয়া এলো বাড়িতে।আমি তখন ঘুমাচ্ছিলাম।
–সূচী,এই সূচী।
ঘুমের মধ্যে কারোর ডাকার আওয়াজ পেয়ে কোনরকম চোখ খুলে দেখি মারিয়া।ওরে দেখে আমি উঠে বসি।আমার গায়ে হালকা থাপ্পড় মেরে মারিয়া বলে,
–এই বেয়াদব ভার্সিটিতে যাস না কেন?জানিস কতো ইম্পর্টান্ট টপিক ক্লিয়ার করে দিয়েছে টিচাররা।জাসনি কেন হ্যা?
–এমনিই।
–এমনি মানে??নিশ্চয় বাড়ি পড়ে ফাটিয়ে দিচ্ছিস তাই না?আমাকে বললিও না।একা একা রেজাল্ট ভালো করার ধান্দা।আমার সাথে এরকম করতে পারলি তুই সূচী?আমি না তোর বেস্ট ফ্রেন্ড সেই ছোটবেলা থেকে এক সাথে আছি দুজন।তাও তুই এইভাবে…
–থাম তো ভালো লাগছে না।(মারিয়ার কাঁদো কাঁদো সুরের ন্যাকামি গুলো সহ্য হলো না আমার)
–এই রাগ করছিস কেন??আচ্ছা বাবা বুঝলাম তুই কোন ব্যাপারে রেগে আছিস।আমি আর রাগাচ্ছি না।কিন্তু হয়েছে বলবি।
–কিছু না
–এই দেখো আমাকে না বলবে আমি বুঝবো কি করে যে কেন এতো রেগে আছিস?এদিকে তুই এইভাবে রেগে আছিস ভার্সিটিতে যাচ্ছিস না আমার কল রিসিভ করছিস না ওদিকে তোর মামার ছেলে কি যেন নাম হ্যা অভ্র।উনি গত তিন দিন ভার্সিটিতে এসে আমার কাছে তোর খোজ নিচ্ছে। কি হচ্ছে কিছুই তো মাথাই ঢুকছে না আমার।
–কি উনি ভার্সিটিতে গিছিলো?
–হ্যা।তিন দিন পর পর আসছে।এসে তুই আছিস কিনা শোনে।আমি না বললে চলে যায়।
অভ্র ভাইয়ের কথা শুনে আমার রাগ আবার বেড়ে গেলো।আমি খুব করে গালি দিলাম ওনাকে মারিয়াএ সামনে।মারিয়া তো কিছুই বুঝলো না,তারপর আমি মারিয়াকে সব ঘটনা বললাম সেদিন রাতের।মারিয়ার তো মাথায় হাত।
–সূচী বলিস কি?এতো কিছু ঘটে গেছে?কিন্তু ওনাকে দেখে তো ওরকম মনে হয় না যে উনি কিছু না বলে ওইভাবে চলে আসার লোক।
–ওনার হয়ে সাফাই দিতে আসবি না।উনি ওরকমি।মমনুষ্যত্বহীন একজন মানুষ।উনি শুধু নিজের দিকটা বোঝেন আর কিচ্ছু না।
আমাদের কথার মাঝেই আপু চলে আসে।তাই আমরা কথা ঘুরিয়ে ফেলি।মারিয়া চলে যাওয়ার সময় বলে যায় আমি যেন আগামী দিন অবশ্যয় কলেজে যায়।

পরেরদিন কলেজ শেষে বাসায় ফিরবো দেখি অভ্র ভাই দাড়িয়া।আমাকে দেখে কথা বলতে আসে কিন্তু আমি কথা বলি না।গাড়িতে উঠে বাড়ি চলে আসি।দেখতে দেখতে আমার পরীক্ষা চলে এসেছে,এতোদিনে আমি বেশ কিছুটা নরমাল হয়ে গেছি।পরীক্ষার দিন ভোর বেলা উঠে রিভাইস দিয়ে নিলাম বইটা।রেডি হয়ে নিচে যেয়ে দেখি মা কার সাথে যেন কথা বলছে।আমি মাকে খাবার দেয়ার জন্যে ডাকলাম।
–মা খেতে দাও।
–সূচী তুই এসে গেছিস।যা টেবিলে বস আমি আসছি।

আমি ডাইনিং টেবিলের দিকে যেতে লাগলাম পিছন থেকে আওয়াজ এলো,
–অভ্র তুই ও আয় খেয়ে নিবি।
মায়ের মুখে অভ্র নামটা শুনে আমি পিছু ঘুরতেই দেখি অভ্র ভাই সোফায় বসে আছে।আমার দিকে আড়চোখে তাকালো।ওনাকে আমার বাড়িতে দেখে খুব মেজাজ খারাপ হলো কিন্তু মায়ের সামনে রিয়াক্ট করলাম না।টেবিলে দুজন খাচ্ছি তখন ড্রাইভার এসে জানলো গাড়ির টায়ার নাকি লিক হয়ে গেছে।কাল রাতেও ঠিক ছিলো কিন্তু এখন নাকি দেখে লিক।আমি মা কে বললাম,
–মা আমি রিক্সা নিয়ে চলে যাবো।
–আজকে পরীক্ষা আর তুই রিক্সা নিয়ে যাবি?
–তা ছাড়া তো উপায় নেই।
–আচ্ছা সাবধানে যা।

আমি বেরোনোর আগেই।অভ্র ভাই বললেন,
–ফুপি আমাকে বেরতে হবে গো।একটু কাজ আছে বি.ইউ.পি তে।আমার এক বন্ধু পড়ে ওখানে,ওর সাথে অনেকদিন দেখা হয় না।তাই দেখা করতে যাবো।
–তুই সূচীদের ভার্সিটিতে যাবি??
–সূচী বি.ইউ.পি তে পড়ে??(এমনভাবে বললো যেন জানেই না)
–হ্যা।যাক ভালোই হলো।বাবা ওরে একটু নিয়ে যেতে পারবি??
–ওরে?
–হ্যা।রিক্সায় না যেয়ে তোর সাথে যাওয়া ভালো তো।
–ওকে।আমার কোন প্রবলেম নেই।
–কিন্তু আমার আছে।মা আমি যাবো না ওনার সাথে।রিক্সাতেই চলে যাবো।
–কেন প্রবলেম কোথায়?
–জানি না।তবে যাবো না মানে যাবো না।
–ফুপি ও না যেতে চাইলে আর কি করা।আমি বরং আসি।
–দাড়া অভ্র ও যাবে তোর সাথেই যাবে।
–কিন্তু মা…
–কোন কিন্তু না।তুমি অভ্রর সাথেই যাবে।

মায়ের জন্যে বাধ্য হয়ে আমার ওনার সাথে যাওয়া লাগলো।

চলবে……
(গল্পটা কেমন হচ্ছে জানাবেন.কোন ভূলত্রুটি হলে ক্ষমা করবেন
ধন্যবাদ)