# তোমার_জন্য
Writer: জুঁই
পর্ব: সাত
.
.
হঠাৎ ইচ্ছের সামনে গাড়ি ব্রেক করাতে…
ইচ্ছে অনেকটা ভয় পেয়ে যায়…!!
পরিচিত কারো কন্ঠের আওয়াজ পেয়ে কিছুটা স্বাভাবিক হয়….
আশিস: হোয়াইট পরি হেটে কেনো..? স্কুটি কোথায়..?.[ গাঢ়িতে বসা অবস্থায় ]
ইচ্ছে: অসুস্থ তাই রেস্ট নিচ্ছে…!
আশিস: কে অসুস্থ?? [ অবাক হয়ে ]
ইচ্ছে: আরে আমার স্কুটি…!
আশিস..ওওওও….Whatttt???
ইচ্ছে: হুমম এতে What এর কি আছে…?
আশিস: না কিছু নাই তো…[ এর সাথে বকবক করে লাভ নাই..মনে মনে ]
তোমার আপত্তি না থাকলে আমি তোমা……
আশিস কে থামিয়ে দিয়ে….!
ইচ্ছে: No thanks….
আশিস: Thanks for what…?
ইচ্ছে: আমাকে বাড়ি পৌছে দিতে চেয়েছেন তাই….
আসি স্যার… বাই…!
আশিস: হুমম বাই…
কি মেয়েরে বাবা..কি attitude বস্তা বস্তা…এই আশিসের গাড়ি তে আশিসের পাশে বসার জন্য কতো মেয়ে পাগল…! আর এই মেয়ে সেই চান্স পেয়েও আমায় ইগনোর করলো….?
আশিস আর কিছু না ভেবেই গাড়ি স্টার্ট দিলো….
.
,
.
বাড়ি ফিরতেই আশিস সারপ্রাইজড তার নানুমনি কে দেখে…
যেই নানুমনিকে জড়িয়ে ধরার জন্য পা বাড়ালো…হঠাৎ কোথা থেকে যেনো ঝড়ের গতিতে কেউ এসে জড়িয়ে ধরলো আশিস কে…
আশিসের মেজাজ খারাপ হয়ে গেলো…কারন এমন চিপকে টাইপের মেয়ে তার একমাত্র মামাতো বোন ইশা ছাড়া আর কেউ না…
ইশা কে নিজের থেকে ধাক্কা দিয়ে ছাড়িয়ে দিলো আশিস…
এক ধাক্কাতে দু তিন কদম পিছিয়ে গেলো ইশা…!
ইশা: ওফফফ আশিস তোমায় যা লাগছে না…কি কিউট..কি attitude..কি style…বারবার আমি তোমার লুকে ফিদা…!
আশিস: Shut your mouth…আর আমি কি তোর থেকে বয়সে ছোট.. যে আমায় আশিস বলে ডাকিস…ভাইয়া ডাকবি আমায়…
ইশা: কি যে বলো না..আজ বাদে কাল আমাদে…
ইশাকে বলতে না দিয়ে…
নানুমনি: ইশা থামবি তুইই…! কেবল আমার নানা ভাই অফিস থেকে আসলো…আর তুই বকবক শুরু করে দিলি…!
আশিস: nonstop radio…!
নানুমনি তুমি কেমন আছো..? [ নানুমনিকে জড়িয়ে ধরে ]
নানুমনি: আমি খুব ভালো আছি…তুমি কেমন আছো নানা ভাই…!!
আশিস: তোমাকে দেখলে কি খারাপ থাকা যায়….!
ইশা: কি বাজে choice…ওই বুড়ি কে দেখে নাকি খারাপ থাকা যায় না…তাহলে আমার দিকে তাকালে তো তুমি পৃথিবীর সবার থেকে বেশি ভালো থাকবে..কিন্তু কি আর করার তোমার কপাল খারাপ..আমার দিকে তো তেমন ভাবে তাকাও না…
অবশ্য এতে তোমার কোন দোষ নেই..এভেন আমারো কোনো দোষ নেই…দোষ তো আমার রূপের…সবাই তাকানোর সাহস পাই না [ মনে মনে আকাশ কুসুম ভেবে চলছে ইশা ]
হঠাৎ কারো তুরির শব্দে নিজের ভাবনা থেকে ফিরলো ইশা….
অশিস: কি রে ননস্টোপ রেডিও..চুপ কেনো…!
নানুমনি : নানা ভাই তুমি গিয়ে ফ্রেস হয়ে রেস্ট নাও….
.
,
.
ইচ্ছে: মা ও মা বাবা আসবে কখন??
ইচ্ছের মা : এই নিয়ে কইবার জিঙ্গেস করলি বল তো…
ইচ্ছে: না মানে আমার স্কুটি ঠিক হয়ে যাবে তো…?
ইচ্ছের মা: স্কুটির কি করোনা হয়েছে যে এতো চিন্তা করছিস…কারো করোনা হলেও মনে হয় চিন্তা করেনা…
ইচ্ছে: কিসব বলছ…ভালো লাগেনা…!
,
.
,
আশিস ফ্রেস হয়ে টাওয়াল দিয়ে মুখ মুছতে মুছতে বের হয়ে আরেক দফা অবাক হলো…
কারন ইশা কফির মগ হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে…!
আশিস: এখানে কি চাই….??
ইশা: তোমাকে…
ঘোর লাগা চোখে আশিসের দিকে তাকিয়ে…
আশিস: কিইই? [ চেচিয়ে ]
ইশা: না আসলে তোমাকে কফি দিতে এসেছিলাম…..
আশিস : সার্ভেন্টরা কি সবাই ছুটিতে..?
ইশা: কই নাতো…
আশিস: তাহলে তুই কেনো কফি নিয়ে এলি…?
ইশা:আমি তোমার জন্য নিজের হাতে কফি বানিয়ে এনেছি…প্লিজ খাও…
আশিস: আমায় কি পাবনা ফেরত পাগল পাইছোস…তোর বানানো কফি খাবো আমি…কি করি..কি করি…হুমম আইডিয়া…[ মনে মনে ]
আচ্ছা খাবো..তুই কি চেক করে এনেছিস কফি..সব ঠিক আছে তো…?
ইশা: না চেক করি নাই…তবে আমি 110% সিওর যে সব ঠিক আছে…
আশিস: কেমনে সিওর হলি…জাদু টাদু জানিস নাকি..?
ইশা: কি যে বলো না…যদি জাদু জানতাম তাহলে কি আর তুমি আমি এতো distance এ দাঁড়িয়ে থাকতাম…!!
আশিস: হুমম তাতো ঠিকি বলেছিস…তাহলে তো আমার গলায় ঝুলে থাকতি [ মনে মনে ]
তুই একটু খেয়ে দেখ সব ঠিক আছে কিনা…
ইশা তো হেব্বি খুশি আশিসের কফি থেকে কফি খেয়ে দেখতে বলছে তাও আবার আশিস নিজে…!
ইশা কফিতে এক চুমুক দিতেই মুখটা বাংলার সাত বানিয়ে ফেলেছে…যা বাদিয়ে রাখার মতো…
আশিস অনেক কষ্টে নিজের হাসি সংযত করে…
কি রে তোর মুখটা এতো কিউট হলো কেনো… নিশ্চয় কফিটা খেতে টেস্টি হয়েছে…হবেই না বা কেনো..তুই তো ভালোবেসে বানিয়েছিস কফিটা ….!
ইশা আর এক মূহুর্ত না দাঁড়িয়ে কফির মগটা নিয়ে চলে গেলো….
আশিস হেসে অস্থির কারন যা মুখ বানিয়েছিল ইশা…দেখার মতো….!!
.
,
.
,
পরের দিন সকালে আশিস রেডি হয়ে সিড়ি দিয়ে নিচে নামছে …
ইশা তো হা করে আছে…! এবং কি বাসার সব সার্ভেন্টরাও…..!!
ইশা: What a look…. again crushed…
আশিস মুচকি হেসে টেবিলে গিয়ে বসলো…নানুমনির সাথে ব্রেকফাস্ট করে অফিস জন্য রওনা হলো….
আসার আগে ইশার মাথায় হালকা টুকা দিয়ে…
কিরে স্টাচো হয়ে আছিস কেনো…? খেয়ে নে…হা করে থাকলেই খাবার উড়ে উড়ে মুখে যাবে না…!
অফিসের সবাই নিজেদের কাজ বাদ দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে…অফিসে ঢুকার মেন ডোরের দিকে…
ইচ্ছে: কি ব্যাপার সবাই এতো সাইলেন্ট কেনো…? এই সময় তো ওই রাক্ষস টা আসবে তাই হয় তো…
…..Good morning everyone…..
ইচ্ছে পিছনে তাকিয়ে অবাক থেকে অবাকের চূড়ান্ত পর্যায়…
নিজের চোখকে আজ সন্দেহ হচ্ছে তার…তাই নিজের হাতে নিজেই চিমটি কাটলো….
ইচ্ছে: এটা কি করে সম্ভব….!
চলবে…….!!
# তোমার_জন্য
Writer: জুঁই
পর্ব: আট
.
.
ইচ্ছে: এটা কি করে সম্ভব…
আদরিত রহমান আশিস তাও আবার এই লুকে…আয়য়য় হায়য় কি লাগছে….
না না এসব আমি কি ভাবছি…আমার তো অন্য কোনো ছেলের দিকে তাকানো টা যায়েজ না…[ মনে মনে ]
আশিস: Hello guys…এভাবে তাকিয়ে আছো কেনো?….আই নো আমি দেখতে স্মার্ট..হ্যানসাম.. ক্রাস বয়…
তাই বলে এভাবে নজর দিবে আমার দিকে..
ইচ্ছের সামনে এসে আশিস…
Are you okk…?
ইচ্ছে: হুমম…
আশিস মুচকি হেসে নিজের কেবিনে চলে গেলো….!
.
.
সবাই আশিসের দিকে এমন অবাক হয়ে তাকিয়ে ছিলো… কারন আশিস পিংক কালালের শার্ট পরেছে.. এই প্রথম কালো কালার বাদে কোনো ড্রেস পরেছে…আশিসের ড্রেস.. wrist-watch ( হাতঘড়ি )…সানগ্লাস…ইভেন গাড়ি টাও কালো…সব কিছুতে কালো থাকবেই থাকবে…!
আর ইচ্ছে যে দিন থেকে অফিস জয়েন করছে..আশিসকে কালো কালার ছাড়া অন্য কোনো কালারের ড্রেস পরতে দেখেনি…!
ইচ্ছে: মিস ম্যাচিং আজ থুরি মিস্টার ম্যাচিং আজকে পিংক কালারে…একদম ফাটাফাটি লাগছে…!!
.
.
,
শান্ত: আসতে পারি স্যার??
আশিস: ফাজলামির একটা লিমিট থাকে শান্ত…তোকে কত বার বলেছি নো ফরমালিটি….আমাদের সম্পর্কটা শুধু বন্ধুত্বের…[ একটু রেগে ]
শান্ত: Just kidding…আর হবেনা sorry…!
আশিস: ঠিক আছে…দাড়িয়ে আছিস কেনো..? বসার জন্য কি ইনভিটিশন কার্ড পাঠাতে হবে…?
শান্ত: পাঠালে মন্দ হয় না…[ হেসে ]
আজ কি দিনের বেলায় ভুল করে চাদ উঠছে নাকি…?
হঠাৎ শান্তর এমন কথায় আশিস confused হয়ে যায়…
আশিস: মানে…?? কি সব আবোল তাবোল বকছিস…
শান্ত: তোকে একদম পিংক চার্ম লাগছে….তোর ওই কালো কালারে তোকে কেমন জানি রাগি মুডি লাগতো…
তা হঠাৎ কালার চেন্জ…??
আশিস: এমনিই আরকি.. তোর অবস্থা তো দিনে দিনে নাজেহাল হচ্ছে…!
শান্ত: আর বলিস না দোস্ত…এই হেয়ার স্টাইল ওর পছন্দের…এই যে আমার গায়ে শার্ট দেখছিস এটাও ওর পছন্দের…কি বাঝে কালার…লাল কালার একদম আমার ভালো লাগেনা…এই লাল কালার মেয়েদের ঠোঠেই ভালো লাগে…আমার গায়ে না…! [ ন্যাকা কান্নার কন্ঠে ]
আশিস: তো বলতি লাল কালার ভালো লাগেনা…!!
শান্ত: বেশি পাম দিতে গিয়ে বাজে ভাবে ফেসে গেছি..
অাসলে কাল শালীনির সাথে দেখা করতে গিয়েছিলাম…
আমি ওকে বলছি…তোমায় খুব খুবইই সুন্দর লাগছে…তোমার চুল তোমার নাক,কান, গলা, হাত, পা, সব থেকে বেশি সুন্দর তোমার ওই লাল টুকটুকে ঠোঠ..
ইচ্ছে করে তোমার ওই লাল ঠোঠে…!
ব্যাসস আর কিছুই বলতে দিল না..আমার হাত ধরে শপিং এ নিয়ে গেলো…আর তার পরিনাম এই শার্ট..
আশিস: হেসে অস্থির…
শান্ত: তুই হাসছিস…
ধুরর ছাই..বললাম কি আর শালী বুঝলো কি…
আশিস রেগে তাকাতেই…
শান্ত: রিলাক্স… ওর নামটাকে শর্ট করতে গিয়ে শালীনি থেকে শালী হয়ে যায় মাঝে মাঝে…
আশিস: ওও তাই বল [ হাফ ছেড়ে নিশ্বাস নিয়ে ]
দুজনেই কমেডি [ মনে মনে ]
শান্ত: দেখছিস কাজের কথা বলতে এসে অকাজের কথাই বলে চলছি কখন থেকে…
আশিস: হুমম বল…
শান্ত: Next month এ SR কোম্পানির সাথে যে মিটিং আছে সেটা আমাদের presentation এর উপর নির্ভর করছে…
আর এই ফাইল গুলো দেখে নিস…
আশিস: হুমম..
.
,
.
ইচ্ছে ডেস্কে বসে কাজ করছিল…
আশিস ফোন দিয়ে ইচ্ছে কে নিজের কেবিনে ডেকে পাঠালো…
,
,
ইচ্ছে: স্যার ডেকেছেন আমায়…?
আশিস: হ্যাঁ…
ইচ্ছে:কেনো ডেকেছেন স্যার বলুন…
আশিস: আমার সামনে তোমায় বসিয়ে রাখবো তাই…কোনো আপত্তি আছে??
ইচ্ছে: মানে?? [ ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে ]
আশিস: Sit…
ইচ্ছে : পাগলে ধরছে নাকি… সত্যি সত্যিই নিজের সামনে বসিয়ে রাখবে নাকি..?
আশিস: আমাকে ধরে নাই তোমায় ধরছে..
ইচ্ছে: মানে?
আশিস: আমাকে কি ডিকশনারী ভাবো?…যে তোমার সব মানের উত্তর আমি দিব..
ইচ্ছে: কি ত্যারা রে বাবা..সোজা কথা সোজাসুজি বললেই তো হয়…[ মনে মনে ]
আশিস: বসতে বলেছিলাম?
ইচ্ছে: হুমম বসছি স্যার..[ ভয়ে ভয়ে ]
আশিস: এই নিন ফাইল গুলো চেক করেন..
ইচ্ছে: এই কথাটা আগে বললে কি হতো…[ মিনমিন করে ]
আশিস: আগেই বলতে চেয়েছিলাম..কিন্তু আপনিই ঘেটে দিয়েছেন সব…
ইচ্ছে: আপনি কি দই যে ঘেটে ঘোল করে দিয়েছি…
আশিস: এই মেয়ে তো আমায় পাগল বানিয়ে ছাড়বে..ওফফফ…..!
চলবে….!!