#তোমার_সনে_বেঁধেছি_আমারও_প্রাণ
#মিমি_মুসকান
#পর্ব_৮
তনয়ার হাল বেহাল হয়ে যাচ্ছে। কেবল উষ্ণ স্যারের পিছন পিছন ঘুরতে ঘুরতে সে কাহিল। এই লোক যেখানেই যায় তখনই তার পিছন যেতে হয়। মনে হয় বয়স বেড়ে যাচ্ছে। তা তো যাচ্ছেই। শরীর দুর্বল লাগে! আগে তার টেবিলের পাশে পর পর দুই টেবিল পর তন্ময়ের টেবিল ছিলো। একটু আধটু গল্প করা যেত। আড্ডা দেওয়া যেত! এখন সেটাও হয় না। তার টেবিল এখন অনেক দূর। ওই দূরে! চোখ যায় না হাত তো দূরে থাক। কে যে বলেছিলো তাকে মার্কেটিং ডিপার্টমেন্ট সামলাতে। তন্ময় কে এখন চোখে হারায় সে। তবে কাল ছুটি আছে। তন্ময়ের সাথে ঘুরতে যাবার প্ল্যান করবে? মন্দ হয় না! ভাবতে ভাবতে টেবিলের উপর মাথা রাখল সে। হঠাৎ মনে হলো মাথায় হাত বুলাচ্ছে কেউ। এই হাত তার চেনা। গায়ের গন্ধ, এই অনুভূতি মিথ্যে হতে পারে না! এটা তন্ময়! তনয়া হাতটা ধরে ফেলল। তন্ময় হেসে বলল, “টার্য়াড?”
“অনেক! সেই লোকের পিছন পিছন ঘুরতে গিয়ে আমার কোমর ধরে গেছে!”
“আহারে! বান্ধবী আমার কতো কষ্ট করছিস!”
“ফাজলামি করছিস? তুই জানিস স্যারের সাথে আজ কতো জায়গায় হেঁটেছি। পা ব্যাথায় টনটন করছে। এই লোক এতো হাঁটে কি করে ভাই?”
তন্ময় এগিয়ে বলল, “পা টিপে দিই!”
“এই না দরকার নেই। কি সব বলছিস?”
তন্ময় হেসে উঠল। হাতটা ধরে বলল, “আয় চা খেয়ে আসি। ক্লান্তি দূর হয়ে যাবে!”
শরীর ম্যাচম্যাচ করছে। গেলেও মন্দ হয় না। তনয়া উঠে দাঁড়াল। হঠাৎ উপলব্ধি করল কেউ তাকে দেখছে! মনে হচ্ছে কেউ তাকে নজরে রাখছে। সে পিছন ফিরল। না! পিছনে তো কেউ নেই। পিছনে কেবল স্যারের কেবিন। তাও কেন মনে হচ্ছে এমনটা? তন্ময় আবারো ডেকে উঠল, “কিরে আয়!”
তনয়া মাথা দুলিয়ে এগিয়ে গেলো!
রেগে দেয়ালের উপর হাত রাখল উষ্ণ! তার বাঁকা হাসির রেখা দীর্ঘ হয়েছে। তাঁর তীক্ষ্ম দৃষ্টি থেকে তনয়া বাঁচতে পারবে না। কখনোই না! সম্ভব না!
ডিউটি শেষ হবার পর তন্ময়ের বাইকে করে তনয়া ফিরল। তাদের পিছন পিছন আরেকটা গাড়িও ছিলো। তাঁরা কেউ খেয়াল করল না। পুরোটা রাস্তা তনয়া কেবল বকবক করেই যাচ্ছিল। পিছনের গাড়িতে উষ্ণ নজরে রাখল সবটা। তনয়া কোন বাসায় ঢুকল উষ্ণ স্যার সেটাও দেখে নিল। খুব ভালো করেই চিনে রাখল। আশপাশ ও ভালো করে দেখল। তন্ময় বাইক নিয়ে এবার তাঁর বাসায় দিকে যাচ্ছে। উষ্ণ স্যার আবারো গাড়ি ট্রার্ট দিলো। রাস্তা ফাঁকা! গাড়ির যাতায়াত তেমন নেই। বাইকের পিছনেই উষ্ণ চৌধুরীর গাড়ি। একবারের জন্যও চোখের আড়াল করল না। হঠাৎ তন্ময় বাইক থামিয়ে দিল। কেউ ফোন করছে বোধহয়। তন্ময় রিসিভ করে মাথার হেলমেট খুলে ফোনে কথা বলছে। পিছনের গাড়িটাও থেমে গেছে। উষ্ণ চৌধুরীর হাতে গাড়ির হ্যান্ডেল। সে ভাবছে! অনেক ভাবছে! রাস্তা নির্জন নিরব! আশপাশ তেমন কেউ নেই। বেশ কিছুক্ষণ নিজের ঠোঁট দংশন করে এবার গাড়ি স্টার্ট দিলো। গতি বাইরে নিল। ঠান্ডা মাথায় গাড়ি চালাতে লাগল। গাড়ি আসছে খুব স্পিডে। কেমন অনুভূতি হচ্ছে! তন্ময় ফোনটা রেখে আঁতকে উঠে পিছন তাকাল। তার পাশ বেয়ে খুব জোরে একটা গাড়ি গেল। খুব ভয় পেয়ে গেলো সে। আরেকটু হলেই যেন তাকে ধাক্কা মেরে দিত। বাপরে! মনকে শান্ত করালো। হেলমেট মাথায় পরে আবারো বাইক চালাতে লাগল।
গাড়ি চলছে দ্রুত গতিতে। উষ্ণ চৌধুরী মাথার চুলগুলো ছেড়ে দিল। এক হাতে ড্রাইভ করছে অন্য হাত জানালার বাইরে। জোরে হাওয়া বইছে! তার চুলগুলো উড়ছে। হাত দিয়ে ঠেলে বার বার চুলগুলোকে পিছনে ঠেলে রাখছে সে। চোখ দুটো ছোট ছোট করে কেবল ভাবছে। অনেক কিছুর ভাবনা তার। হুট করে মন আনচান করে উঠল। ভেতরে ভেতরে অস্থিরতা কাজ করছে। গাড়ি ইউট্রান নিয়ে সেই পিছন ফেলা আসা পথে এগিয়ে যাচ্ছে। সত্যি সত্যি যদি এমন পিছানো যেত! পিছিয়ে গিয়ে অতীতের অনেক কিছুই সে ঠিক করে ফেলতো! আফসোস! আমরা মানুষ কখনো অতীতে ফিরতে পারি না। সেই উপায় নেই। আমরা জন্মেছি কেবল সামনে এগিয়ে যাবার জন্য!
৭ তলা ভবনের এই বাড়ির ৩ তলায় তনয়া থাকে। এতোটুকু জানতে উষ্ণ চৌধুরীর বেশি সময় লাগল না। তার গাড়ির রাস্তার এপারে পার্ক করা। গাড়ির জানালা দিয়ে তনয়ার বাসায় খুব ভালোই নজর রাখা যায়। এদিকে কোন বেলকনি নেই কেন? থাকলে তনয়া নিশ্চয় বেলকনিতে আসতো। কিছুক্ষণ এখানে একা দাঁড়িয়ে থাকত। উষ্ণ চৌধুরী তখন প্রাণভরে তাকে দেখতে পারত। সময় গড়িয়ে যাচ্ছে। তনয়ার রুমের মধ্যে এখনো আলো জ্বলছে। খোলা জানালা বন্ধ করতে তনয়া এলো। সেকেন্ড কিছুক্ষণের জন্য হলেও উষ্ণ চৌধুরী তার মুখখানি দেখতে পেলো। হাতড়ে গেলো আবারো! ইশ্! আরেকটু যদি দেখা যেত। গাড়ির জানালার উপর হাত দিয়ে চোখ দুটো বড় বড় পুরো মনোযোগ রাখছে বন্ধ জানালার দিকে। জানালা বন্ধ! আর খুলবে না। কিছুক্ষণ পর আলো নিভিয়ে নিল। উষ্ণ চৌধুরীর মনে যেই আগুন জ্বলছিল তাও নিভে গেল। দীর্ঘ নিঃশ্বাস ছেড়ে ড্রাইভিং সিটে হেলান দিয়ে বসে পড়ল সে। তীক্ষ্ণ দৃষ্টি এখনো বদ্ধ জানালার উপর! অথচ এখানে অপেক্ষা করা বৃথা। সে আর আসবে না। বেলা ফুরিয়ে গেছে। রাত ঘনিয়ে গাঢ় হচ্ছে। সে আর আসবে না!
.
আজ ছুটির দিন। তন্ময়ের সাথে ঘুরার প্ল্যান করেছিলো কিন্তু হলো না। তন্ময় আজ তার বাবার সাথে দেখা করতে গেছে। এটাও মন্দ না। তন্ময়ের জন্য তো ভালোই হলো। তার ভালো হলে সেও খুশি। একা একা ঘরে বসে থাকতে ভালো লাগছে না। মৌ কে অনেক আবদার অনুরোধ করে ছাদে নিয়ে এলো তনয়া। বিকেল থেকে সন্ধ্যা টুকু এখানে থাকা যাক। ছাদের এক কোনে সে দাঁড়িয়ে। খুব জোরে বাতাস বইছে। তনয়া চুলগুলো ছেড়ে দিল। হাওয়ায় ভাসছে চুলগুলো। চোখ বন্ধ করে বাতাসকে অনুভব করতে লাগল। মৌ এসে তার গায়ের সাথে ঠেসে দাঁড়াল। কোন কারণ ছাড়াই হেসে উঠল দুজন! তনয়ার মুখে হাসি দেখে উষ্ণ চৌধুরী ঠোঁটের কোণে হাসির রেখা টানল। মুখ ফিরিয়ে সেই আগন্তুক কে দেখল। হাতে ছোট একটা দূরবীন। তনয়ার বাসা থেকে ভালোই দূরে এই বাসা। এখানকার ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়েছে সেই আগন্তুক। এখান থেকে সারাক্ষণ তার নজর থাকে তনয়ার উপর। উষ্ণ চৌধুরী এগিয়ে গিয়ে তার পিঠ চাপড়ে বলল, “তুমি আসলেই কাজের লোক। ভালো কাজ করছো!”
বসের মুখে তারিফ শুনে আগন্তুক খুশি হলো। চোখে মুখে হাসি রেখে মাথা দুলাতে লাগল। উষ্ণ আবারো দূরবীনে চোখ রেখে ওদিক ফিরল। তনয়া এখন কথা বলছে। তাঁর ঠোঁট জোড়া নড়ছে। কারো সাথে দিব্যি গল্প করে যাচ্ছে সে। উষ্ণ চৌধুরী গালে হাত দিয়ে তাকে দেখছে। কি আশ্চর্য! ক্লান্ত লাগছে না! স্বস্তি মিলছে! এতো বছর ধরে এই স্বস্তি কোথায় ছিলো? জানা নেই? উত্তর নেই! জানতে চায় না সে। কেবল দৃষ্টি ওপারের কন্যার দিকে। এই রমনী তার হৃদয় চুরি করে নিয়েছে। তার সমস্ত আবেগ অনুভূতি নিয়ে গেছে! তাকে ছাড়া আর কিছু অনুভব করতে পারে না সে। এই যেন প্রাণ ছাড়া দেহখান। সে আসলেই দেহে প্রাণ ফিরে! কি আশ্চর্য!
.
সপ্তাহের একটি দিনই ছুটি থাকে। ছুটির দিন ও যেন খুব তাড়াতাড়ি ফুরিয়ে যায়। তনয়ার ছুটির দিন ও ঘুম দিয়ে ফুরিয়ে গেল। কি যে করল ভেবে পেলো না। শুয়ে বসে গোটা দিনটা নষ্ট করল। বিছানার উপর বসে ভাবছে। ঘড়ির দিকে নজর আটকাচ্ছে। ৫ মিনিটের মধ্যে বিছানা ছেঁড়ে না উঠলে অফিসের জন্য সত্যিই লেট হয়ে যাবে। দুই হাত উপরে তুলে হামি ছাড়ল। চোখ ঢলল! না এবার উঠা উচিত! হঠাৎ ফোনটা বেজে উঠল। তনয়া ভালো করে চেয়ে দেখল। আননোন নাম্বার! এতো সকাল সকাল কে আবার ফোন করল তাকে? রিসিভ করে হ্যালো বলতেই ওদিক থেকে ভেসে এলো গম্ভীর কণ্ঠস্বর, “২৫ মিনিটের মধ্যে রেডি হয়ে নিচে নামো। গাড়ি তোমার জন্য অপেক্ষা করছে। গাড়িতে চড়ে সোজা বাসায় আসো আর হ্যাঁ সাথে করে আজকের মিটিয়ের কাগজপত্র নিয়ে আসবে! আন্ডারস্ট্যান্ড!”
তনয়া ভীষণ বিভ্রান্ত! সাথে বিব্রত ও বটে। এমন ভাবে কে তাকে অর্ডার দিচ্ছে। বিরক্ত কণ্ঠে বলে উঠল, “এই কে আপনি?“
“তুমি আমায় চিনতে পারছো না?”
“আপনি ভুল নাম্বারে ফোন দিয়েছেন? আমি আপনাকে চিনি না!”
“এটা কি মিস তনয়ার নাম্বার?”
তনয়া চোখ মুখ কুঁচকে বলল, “হ্যাঁ!”
“আমি তার স্যার বলছি। শেহনেওয়াজ উষ্ণ চৌধুরী! আপনি কি এবার চিনেছেন?”
তনয়া দাঁত দিয়ে হাত কামড়ে ধরল। ফোনের নাম্বার আবারো চেক করল। এটা স্যারের নাম্বার! আহম্মকের মতো হাসতে হাসতে বলল, “ওহ স্যার আপনি? জি বলুন!”
“যা বলার বলে দিয়েছি। এখন রাখছি!”
বলেই ধপ করে ফোন কেটে দিল। তনয়া কিছু জিজ্ঞেস করতেও পারল না! আরে আশ্চর্য তো! কি বলল ফরফর করে কিছুই তো শুনলো না ঠিক করে। গাড়ি আসবে বলল না? কিন্তু তাঁর বাসা স্যার কি করে চিনলো? এখানে গাড়ি আসবে কি করে? আর স্যার নাম্বার পেলো কি করে? মাথায় কিছু ঢুকছে না!
তবুও বিছানা ছেড়ে নেমে চটপট তৈরি হয়ে নিল সে। নিচে নামতে নামতে ৩৫ মিনিট হয়ে গেল। গাড়ি সত্যিই এসেছে। তনয়া বাকরুদ্ধ! তাঁর বিস্মিত চাহনি সরছেই না। ড্রাইভার বলল, “ম্যাম ১০ মিনিট ধরে অপেক্ষা করছি!” তনয়া ফ্যাল ফ্যাল করে চেয়ে রইল। সত্যিই তাহলে স্যার ফোন দিয়েছিল। হায় আল্লাহ!
গাড়ি এসে থামল বাড়ির সামনে। বিশাল এই বাড়ি দেখে তনয়ার চোখ কপালে! এতো অবাকের কারণ ছিলো না। স্যার যে বড়লোক এটা সে জানেই। তাও! এতো বড় বাড়ি! বাব্বাহ! স্যারের পছন্দ আছে বলতে হয়। গাড়ি ছেঁড়ে নামল তনয়া। একজন সার্ভেন্ট তখনি ছুটে এলো তার কাছে। তাকে শুধায়, “মিস তনয়া?”
তনয়া মাথা নাড়ে। সার্ভেন্ট তাকে নিজের সাথে আসতে বলে। তনয়া মিটিমিটি পায়ে তাকে অনুসরণ করছে। বিরাট বড় এই বাড়িতে সে প্রবেশ করল। তার চোখ সরছেই না। এতো সুন্দর করে সাজানো প্রতিটা জিনিস! কি সুন্দর করে গোছানো! দেখলেই দেখতে ইচ্ছে করে। হাঁ করে দেখছিলো সে। এমন সময় হঠাৎ কারো কণ্ঠ তার কানে ভেসে এল। এটা তার চেনা। তনয়া পাশ ফিরে তাকাল!
তার বড় বস! মানে শেহনেওয়াজ জাওয়াদ চৌধুরী টেবিলে নাস্তা করছেন। তনয়া কে দেখে তিনি খানিকটা অবাক বটে। তার পাশেই শাড়ি পরে সেজেগুজে দাঁড়িয়ে এক রমনী! তিনি কি স্যারের স্ত্রী! খুব সম্ভবত তাই! পাশে আরেকটা ছেলেও নাস্তা করছে। তনয়া বস কে দেখেই সালাম দিলো। জাওয়াদ চৌধুরী চিনতে পারলেন না ঠিক করে। তনয়া বিস্তারিত বলল। জাওয়াদ চৌধুরী “ওহ” বলে একটি শব্দ করলেন মাত্র। তার স্ত্রী তিলোত্তমা বেগম আড়চোখে তনয়া কে দেখল। এবার সার্ভেন্ট কে ইশারা করল। তারা সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠছে। তিলোত্তমা বেগম চাঁপা স্বরে স্বামী কে বলছে, “স্টাফদের বাসায় ডাকার মানে কি? তুমি কি জানো না আমি এসব একদম পছন্দ করি না। একটা অচেনা মেয়ে এভাবে বাসায় আসা যাওয়া করবে এটা আমার একদম পছন্দ না!”
জাওয়াদ চৌধুরী জবাব দিলেন, “ও দরকারেই এসেছে! থামো!”
“তবুও… বলেই তিনি থেমে গেলেন। মুখটা কালো করে বসে পড়লেন। তনয়ার কানে কিছু কিছু কথা এলো। নিজেকে খুব অপমানিত মনে হচ্ছিল তার। সে ছটফট করতে লাগল। কখন এই বাড়ি ছেড়ে বের হওয়া যায়। এই বাড়ি যত বড় আর সুন্দরই হোক না কেন? বাড়ির মানুষগুলোর মন ততোটাই ছোট!
সার্ভেন্ট দরজা অবধি এলো। এরপর তাকে ভেতরের দিকে যেতে ইশারা করল। তনয়া বলল, “স্যারের রুম!”
সার্ভেন্ট মাথা নাড়ল। এদের কি কথা বলা নিষেধ! মেয়েটা এতোক্ষণে একটা কথাও বলেনি তার সাথে। কি আশ্চর্য! তনয়া উঁকি ঝুঁকি মারছে। ঘরে ঢুকবে না ঢুকবে না ভাবছে। সাদা রঙের পর্দা ভেদ করে অবশেষে ঘরে পা রাখল সে। মৃদু স্বরে ডাকতে লাগল, “স্যার! স্যার!”
কোনো সাড়াশব্দ নেই। স্যার গেলো কোথায়? “উষ্ণ স্যার!” তবুও জবাব নেই। পুরো ঘর দেখে তনয়া তাজ্জব বনে গেলো। এতো বড় স্যারের ঘর! এই ঘরে এই ভাদাইম্যা লোকটা একা থাকে। বাপের টেকা থাকলে কতোকিছুই হয়। বিছানার উপর সেই সাদা কালো ছবিটা তনয়ার চোখে বাঁধল। ছোট ছোট চোখ করে দেখছে সে! এটা স্যার! চেনাই তো যায় না। সামনে থেকে ছবিতে মনে হয় বেশি সুন্দর লাগে। সামনে ড্রেসিন টেবিলের উপর বড় আয়নার দিকে তার নজর গেলো। তনয়া ভ্রু উঠিয়ে একেক জিনিসপত্র দেখছে। হঠাৎ কানে শব্দ গেলো। স্যারের গলা মনে হচ্ছে, “তুমি এসে গেছো!” বলেই সে এগিয়ে আসছে। আচমকা এসে পেছন থেকে তনয়া জড়িয়ে ধরল। আকস্মিক ঘটনায় তনয়া কিৎকর্তব্যবিমূঢ়! সে বিমূঢ় চিত্তে চেয়ে রইল কেবল! তার মুখ দিয়ে কথাবার্তা বের হচ্ছে না। একদম নিস্তব্ধ সে! এদিকে উষ্ণ স্যার তাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরিয়ে আছে। তার পারফিউমের তীব্র গন্ধ নাকে লাগছে। উষ্ণ স্যার নেশাভরে কণ্ঠে ফিসফিস করে বলছে, “এতোক্ষণ লাগে আসতে? কতো অপেক্ষা করালো তুমি জানো। আর ছাড়ছি না তোমায়!”
বলেই তার গলার কাছে চুমু খেল। তার গভীর চুমুতে তনয়ার পুরো শরীর শিউরে উঠল। দমবন্ধ করে রাখল সে। হাতের ফাইলগুলো ধপ করে নিচে পড়ে গেল। আয়নাতে চেয়ে আছে অপলক দৃষ্টিতে। উষ্ণ স্যার তার কোমর জড়িয়ে ধরে আছে। চোখ বন্ধ করে তার গলার চুমু খাচ্ছে! কি আশ্চর্য ঘটনা! লোমহর্ষক ঘটনায় তনয়া হতবাক! বাকরুদ্ধ!
#চলবে