নীরদ ক্লেশের অন্ত পর্ব-০৮

0
65

#নীরদ_ক্লেশের_অন্ত
[পর্ব-৮]
লেখিকা-নামীরা অন্তিকা

“রে’পি’স্টটা সব সত্য স্বীকার করে আ’ত্মহ’ত্যা করেছে! এতো সহজে? এতো সহজে আ’ত্মহ’ত্যা করার মতো লোক তো ওই রে’পি’স্ট নয় তাহলে?”

অবাক নয়নে টিভির দিকে তাকিয়ে বিড়বিড় করছে সারু। পুষণ ভৌমিক আ’ত্মহ’ত্যা করার মতো মানুষ নয় এটা সারু বেশ বুঝতে পেরেছিলো। পাপের রাজ্যে নিজেকে সবচেয়ে উপরে উঠিয়েছে পুষণ ভৌমিক, সে লোক এভাবে আ’ত্মহ’ত্যা করবে এটা কিছুতেই বিশ্বাস হচ্ছেনা সারুর। বিশ্বাস অবিশ্বাসের পর্ব চুকিয়ে সারু ভীষণ খুশি হলো, একটা অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েকে রে’ই’প করার শাস্তি পুষণ ভৌমিক পেয়েছে। তবুও কোথাও একটা সন্দেহ সারুর মনে গেঁথে রইলো। পাশে দেয়াল ঘড়ির দিকে তাকাল, পরীক্ষা কেন্দ্র দূরে পরেছে তার। যেতে কমপক্ষে ঘন্টাখানেক লাগবে। তাড়াতাড়ি তাকে বেরোতে হবে। সারুর শশুর নেহাল রায় টিভির হেডলাইনের দিকে এখনো তাকিয়ে আছেন। সারু নীরবে তার শশুরের দিকে চেয়ে রইলো, ধ্যান ভাঙলো তার শাশুড়ির ডাকে শাশুড়ি মায়ের গম্ভীর কণ্ঠস্বরে।

“নাস্তা তাড়াতাড়ি শেষ করো, তোমার হাতে সময় কম। পরীক্ষা কেন্দ্রের উদ্দেশ্যে দ্রুত বেরোতে হবে।”(গম্ভীর কণ্ঠস্বরে)

সারু একবার তার শাশুড়ি মায়ের দিকে তাকালো। মুখশ্রী গম্ভীর, এটা আর এমন কি গত কয়েক মাস ধরেই তাকে তার শাশুড়ির গম্ভীর মুখশ্রী দেখতে হচ্ছে। এমনকি তিনি ঠিকঠাক অব্দি কথা বলছেন না সারুর সাথে, যা টুকটাক বলেন গম্ভীর স্বরে। হয়তো খোঁ’চা দেওয়া কথা নয়তো অন্যকথা।
সারু ফোঁস করে নিঃশ্বাস ছাড়লো। দ্রুত খেয়ে নিলো, এরপর উঠে ঘরের উদ্দেশ্যে পা বাড়ালো।
পরীক্ষার প্রয়োজনীয় সকল কিছু নিয়ে তৈরী হয়ে নিলো যাওয়ার জন্য। তৈরী হয়ে বসার ঘরে আসতেই দেখতে পেলো বাড়ির সবাই একত্রে বসে আছে। পুষণ ভৌমিকের আ’ত্মহ’ত্যার ব্যাপারে আলোচনা করছে। সারুর নজরে আসলো তার শাশুড়ি মায়ের অসহায় মুখশ্রীর কান্না। স্নিগ্ধার সাথে ঘটা এই ঘটনায় তিনি বেশ আ’ঘা’তপ্রাপ্ত হয়েছেন। ওনার কোনো মেয়ে নেই, শেরহাম একমাত্র ছেলে ওনার। স্নিগ্ধাকে নিজের মেয়ে ভেবে এসেছেন, মেয়ের এমন করুন পরিস্থিতি কল্যাণীর মতো ওনার মস্তিস্ককেও প্রভাব ফেলেছে। কল্যাণী শক্ত হলেও উনি নিজেকে শক্ত করতে পারছেন না। অনবরত কান্না করে যাচ্ছেন।

সারু দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো। কল্যাণী, শেরহাম এখনো ফেরেনি হসপিটাল থেকে। বাড়ির ড্রাইভার ছুটি নিয়েছে গতকাল, সারুর শশুর ড্রাইভিং করার মতো অবস্থাতে নেই। অজ্ঞতা সারুকে একাই যাওয়া লাগবে। নিচু স্বরে শাশুড়ি মায়ের উদ্দেশ্যে বলে উঠলো,,

“মা আমি আসছি, আশীর্বাদ করবেন।”(নিচু স্বরে)

সারুর শাশুড়ি মিতালি কিছু বললেন না। সারু তার দুই পিসি শাশুড়ির থেকে আশীর্বাদ নিলো। তার শশুরের কাছে আসতেই তিনি বললেন,,

“তোমার পরীক্ষা ভালো হোক সেই কামনা করি। সাবধানে যেও, শেরহামও বাড়িতে নেই। থাকলে তোমাকে নিয়ে যেতে পারতো। আমিও ব্যর্থ তোমাকে নিয়ে যেতে পারবোনা। এই টাকাটা রাখো। সাবধানে যেও। (ক্লান্তিমাখা স্বরে)

“বাবা আমার কাছে পর্যাপ্ত টাকা আছে, এটা লাগবেনা।”(নিচু স্বরে)

নেহাল রায় সারুর কথা শুনলেন না, জোর করে সারুর হাতে দিলেন। সারু ছোট করে একটা শ্বাস ফেলে বের হলো বাড়ি থেকে। বাড়ির সামনে একটা কালো গাড়ি দাঁড় করানো ছিল। গাড়িটা দেখে সারুর ভ্রু কুঁচকে এলো, গাড়িটাকে এড়িয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যে পা বাড়াতেই গাড়ির দরজা খুলে গেলো। ড্রাইভিং সিটে আদিত বসে আছে। চোখ মুখ লাল হয়ে আছে, চুল উস্কখুস্ক। সারুর নজরে আসলো আদিতের বাহুতে র’ক্ত লেগে আছে। সারুর অদ্ভুত ভাবে আদিতের দিকে তাকিয়ে ভাবতে লাগলো। ভাবনার মাঝেই আদিতের গম্ভীর কণ্ঠস্বর শুনতে পেলো।

“শেরহাম বলেছে তোমাকে পরীক্ষা কেন্দ্রে দিয়ে আস্তে। উঠে বসো।”

সারু দিক বেদিক ভাবনা চিন্তায় নিজেকে ডুবালো। অতঃপর উঠে বসলো গাড়িতে। আদিত গাড়ি স্টার্ট দিলো। সারুর নজর না চাইতেও বারবার আদিতের ওই র’ক্ত’মাখা বাহুর দিকে গেলো। সাদা শার্টের বাহুতে র”ক্ত টকটকে লাল দেখাচ্ছে।
হাজারো ভাবনা চিন্তার পর সংকোচবোধ নিয়ে সারু মিনমিনে স্বরে বলে উঠলো,,

“দাভাই, আপনার বাহুতে র’ক্ত লেগে আছে কেনো?”(মিনমিনে স্বরে)

আদিত উত্তর করলোনা, সময় কিছু অতিবাহিত হলো। অত্যান্ত গম্ভীর স্বরে আদিত বলে উঠলো,,

“রে’পি’স্ট পুষণ ভৌমিকের রক্ত।”(গম্ভীর স্বরে )

সারু চমকে উঠলো। পুষণ ভৌমিকের র’ক্ত আদিতের বাহুতে কিভাবে লেগেছে! অবিশ্বাস্য স্বরে সারু বলে উঠলো,,

“মানে? কিভাবে? ওই জা’নোয়া’রের র’ক্ত আপনার শরীরে কিভাবে লাগলো?”(অবিশ্বাস্য স্বরে)

আদিত একবার পাশ ফিরে সারুর দিকে তাকালো, সারু আদিতের সেই লাল চোখের শক্ত চাহনি দেখে কিঞ্চিৎ ভয় পেলো। নজর সরিয়ে ঢোক গিললো। আদিত ফের কণ্ঠে গম্ভীরতা বজায় রেখে বলে উঠলো,,

“হিটম্যান কাদেরকে বলে নিশ্চয়ই জানো? না জানলে বলছি, যারা টাকার বিনিময়ে খু’ন করে তাদেরকে। কানাডা থাকাকালীন নিজেকে হিটম্যান হিসেবে গড়ে তুলেছি, প্রায় দু বছরের কাছাকাছি খু’নের সাথে জড়িত ছিলাম। টাকার বিনিময়ে যেখানে মানুষকে খু’ন করতাম, সেখানে নিজের বোনকে যে রে’ই’প করেছে তাকে ফুর্তিতে কিভাবে বাহিরে ঘুরতে দেই? মে’রে ফেলেছি, ওই রে’পি’স্ট আ’ত্মহ’ত্যা করেনি। আমি খু’ন করেছি।”(গম্ভীর স্বরে)

আদিতের কথা শুনে সারুর মাথা ঘোরানো শুরু করেছে। সেই সাথে আদিতের মুখোভঙ্গি সারুর মনে অজানা ভয়ের সৃষ্টি করেছে। সারু বড় বড় শ্বাস নিতে ও ফেলতে শুরু করেছে। আদিত পাশ ফিরে সারুর অবস্থান লক্ষ্য করে কিঞ্চিৎ হাসলো, ড্রাইভিংয়ে মনোযোগ বজায় রেখে আবারো বলে উঠলো,,

“প্রথমে ড্রাগস দিয়েছি ‘ও’কে এরপর ও আমার বোনকে রে’ই’প করেছে এই সত্য ওর মুখে স্বীকার করিয়ে ভিডিও করেছি। এরপর ইচ্ছেমতো ওকে আ’ঘা’ত করেছি। প্রতিটা আ’ঘা’তে আমার মানসিক শান্তি অনুভূত হয়েছিল। যখন প্রায় মৃ’ত্যুর দ্বারপ্রান্তে ছিল তখন ওর শা’রী’রি’ক চাহি’দা গোড়া থেকে উ’পড়ে ফেলেছি। এরপর ফ্যা’নের সাথে ঝু’লিয়ে দিয়েছি। পুলিশ অফিসার অবশ্য বুঝতে পেরেছে এটা আ’ত্মহ’ত্যা নয় খু’ন, তবে তিনি পুষণ ভৌমিকের এমন মৃ’ত্যুই আশা করেছিলেন। তাইতো এটাকে প্রেস মিডিয়ার সামনে আ’ত্মহ’ত্যা বলে আখ্যায়িত করেছেন। বাকি রইলো ডাইরির কথা, ঐটাও আমি লিখেছি। নিজেকে পারফেক্ট হিটম্যান তৈরী করতে হ্যান্ড রাইটিং কপি করাটাও শিখে নিয়েছিলাম।”

সারুর গলা শুকিয়ে চৌচির অবস্থা। গাড়িতে এসি থাকার পরেও ঘেমে নেয়ে অবস্থা খারাপের দিকে সারুর। কোনোমতে তোতলাতে তোতলাতে বলল,,

“প.. পোস্টমর্টেম রিপোর্ট?”(তোতলাতে তোতলাতে)

“পোস্টমর্টেম রিপোর্ট পাল্টাতে কতক্ষন?”(মৃদু হেসে)

আদিতের কথার পর সারু আর একটা কথাও বললোনা। আদিত নিজের মতো দ্রুত ড্রাইভিং করতে লাগলো। এদিকে সারু ভাবনার রাজ্যে পদার্পন করছে, আদিতকে সে সোজা সরল একটা মানুষ ভেবেছিলো, কোনোদিনও ভাবেনি যে আদিত একজন হিটম্যান! সে টাকার বিনিময়ে মানুষকে খু’ন করতো, এমনকি গতকাল রাতেও সে খু’ন করেছে। যদিও একজন রে’পি’স্টকে খু’ন করে সমাজ থেকে সরিয়ে ফেলাটা দোষের নয়। কারণ এরা খোলামেলা ভাবে ঘুরে বেড়ালে আবারো কোনো ভাইয়ের, মায়ের ফুলকে কলঙ্কিত করবে। বেলী ফুলের মতো ঝরে যাবে দমকা হাওয়ায়। এদিকে জেলে তো রে’পি’স্ট গুলো যাবেই কিন্তু টাকার জোরে সততা হেরে গিয়ে কিছুদিনের মধ্যেই বেরিয়ে আসবে আর আবারো কোনো নিষ্পাপ মেয়েকে কলঙ্কিত করবে। তাই এদেরকে নিশ্চুপে সরিয়ে ফেলাটাই সারুর কাছে শ্রেয় মনে হলো। আরেক হলো সমাজ! এই ভদ্র সভ্য সমাজ সম্পর্কে আর কি বলা যায়! এরা সামনাসামনি দুঃখ প্রকাশ করবে ধ’র্ষি’ত মেয়েটার প্রতি, কিন্তু আড়ালে বলবে মেয়েটা নিজেকে বিকিয়ে দিয়েছে রে’পি’স্টটার কাছে।

ভাবনা চিন্তার পরিসমাপ্তি ঘটলো আদিতের কণ্ঠস্বরে। আদিত দৃষ্টি সামনের দিকে রেখে বলে উঠলো,,

“পরীক্ষা কেন্দ্রে এসে গিয়েছি। শুভকামনা তোমাকে, ভালো মতো পরীক্ষা দিও। আমাদের মাঝে যা কথা হয়েছে, যা তুমি জেনেছ সবটা ভুলে যেও। নিশ্চিন্তে পরীক্ষা দিও।”

সারু একবার আদিতের দিকে তাকালো। আদিতের মুখশ্রী কেমন ভয়ঙ্কর লাগছে তার কাছে। খু’নের বর্ণনা শোনার সময় সারুর শরীরে লোম দাঁড়িয়ে গিয়েছিলো। সারু বিনা বাক্যতে গাড়ি থেকে নেমে কেন্দ্রে প্রবেশ করলো।

“পুষণ ভৌমিকের আ’ত্মহ’ত্যাটা আ’ত্মহ’ত্যা নয় ম্যাডাম, এটা খু’ন। পুষণ ভৌমিকের মতো একটা চরিত্রহীন ল’ম্পটের এই শাস্তিই আশা করি। তাই প্রেস মিডিয়ার সামনে বিবৃতি দিয়েছি পুষণ ভৌমিক অনুতপ্ত তাই আ’ত্মহ’ত্যা করেছে।”(ব্যাঙ্গাত্মক স্বরে)

পুলিশ অফিসার এস কে আহাজীবের কথায় মৃদু চমকালেন কল্যাণী। স্নিগ্ধার পাশেই বসে ছিলেন সারাটা রাত কল্যাণী। শেরহাম তার সাথে ছিল, কিন্তু শেরহামের একটা কাজ পড়ে গিয়েছিলো তাই সে বাহিরে গিয়েছে। সকাল সকাল হসপিটালে অফিসারকে দেখে অবাক হয়েছিলেন কল্যাণী, এরপর ওনার মুখোনিঃসৃত বাণী শুনে পিলে চমকালেন তিনি।

“আপনার কেনো এই আ’ত্মহ’ত্যাকে খুন বলে মনে হয়েছে?”

অফিসার এস কে আহাজীব হাসলেন, কল্যাণীর দিকে পূর্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে। দৃষ্টি সরিয়ে বললেন,,

“চাকুরী জীবনে অনেক কেসের তদন্ত করা হয়েছে আমার। কোনটা আ’ত্মহ’ত্যা, কোনটা খু’ন বেশ বুঝে এসেছে। যে এই খু’ন টা করেছে বেশ ঠান্ডা মাথাতে অনেক ক্ষোভ নিয়েই করেছে। গোপনা’ঙ্গ কে’টে ফেলা হয়েছে। অনেক টর্চার করেই খু’ন করেছে।সাইকো কিলার বলা চলে খু’নিকে।”

কল্যাণী দীর্ঘশ্বাস ছাড়লেন। তিনি চেয়েছিলেন আইন দ্বারা পুষণ ভৌমিককে শাস্তি দিবেন। কিন্তু অজ্ঞাত এক ব্যাক্তি দ্বারাই নিজের পাপকর্মের শাস্তি পেলো পুষণ ভৌমিক। অফিসার এস কে আহাজীব বলে উঠলেন,,

“আপনার মেয়ে বিচার পেলো, ধন্যবাদ জানান ওই ব্যাক্তিকে। আসি তাহলে।”

অফিসার এস কে আহাজীব কক্ষ থেকে বেরিয়ে গেলেন। কল্যাণী মলিন মুখে স্নিগ্ধার দিকে চেয়ে রইলেন।
অফিসার এস কে আহাজীব কক্ষ থেকে বের হতেই সামনাসামনি হলেন শেরহাম ও আদিতের। প্রথমেই অফিসারের নজরে আসলো আদিতের বাহুতে লেগে থাকা র’ক্ত। তিনি ভালো করে আদিতের মুখশ্রী পর্যবেক্ষণ করলেন, আদিতের মুখশ্রীতে নির্ঘুম রাত কাটানোর ছাপ স্পষ্ট ফুটে আছে। আদিতের থেকে নজর সরিয়ে অফিসার শেরহামের দিকে তাকালো। মৃদু হেসে পকেট থেকে একটা ওয়াচ ঘড়ি বের করলেন তিনি, শেরহামের দিকে এগিয়ে দিতে দিতে বলে উঠলেন,,

“খু’ন করলে একটা চুলও প্রমাণ হিসেবে রেখে আশা উচিৎ নয়। সেখানে তো আপনি একটা ঘড়ি ফেলে এসেছেন শেরহাম রায়।”(মৃদু হেসে)

শেরহাম খানিকটা বিচলিত হলো। নিজের হাতের দিকে চাইলো। পুষণ ভৌমিকের বাড়িতে শেরহামও উপস্থিত ছিল। আদিতের পাশাপাশি সেও নিজের মনের ক্ষোভ মিটিয়েছে পুষণ ভৌমিকের উপর তার ফুলকে কলঙ্কিত করার জন্য, হ্যান্ড গ্ল্যাভস পড়ার সময় ঘড়িটা মনের ভুলে পুষণ ভৌমিকের ঘরে ফেলে এসেছে সে। বেরিয়ে আসার অনেকক্ষন পর মনে পরেছে কিন্তু ততক্ষনে পুলিশ সেখানে হাজির হয়ে গিয়েছিলো বিধায় আর গিয়ে আনা সম্ভব হয়নি। পুলিশকে তারাই ইনফর্ম করেছে, পুষণের ফোন দিয়ে পুষণের সত্য স্বীকার করা ও আ’ত্ম’হ’ত্যা করার ভিডিওটা আদিত পাঠিয়েছিল অফিসার এস কে আহাজীবের ফোনে।

শেরহামের ভাবনার মাঝেই অফিসার এস কে আহাজীব শেরহামের বাহুতে হাত রেখে বলে উঠলেন,,

“এতো ভাবনার কিছু নেই। পুষণ ভৌমিক আ’ত্মহ’ত্যা করেছে সেটা শিউর করবো পোস্টমর্টেম এর পর। তা পোস্টমর্টেমে আ’ত্মহ’ত্যার কারণ কি দেখাবো? যেই বীভৎস ভাবে খু”ন করেছেন।”

শেরহাম অফিসারের কথায় মুচকি হাসলো। আদিতের দিকে চেয়ে বলে উঠলো,,

“মিষ্টার হিটম্যান, কি কারণ দেখতে চাও পোস্টমর্টেম রিপোর্টে?”

আদিত খানিকক্ষণ নিশ্চুপ হয়ে চেয়ে রইলো অফিসারের দিকে। অফিসারের মুখে মৃদু হাসি লেপ্টে রয়েছে। পুষণ ভৌমিকের এই পরিণতি তিনি হাসিমুখে সাদরে গ্রহণ করছেন। আদিত ভাবনা বাদ দিয়ে নীরবতা ভেঙে বলে উঠলো,,

“ওই রে’পি’স্ট এর লা’শের কোনো ছবি তুলেছেন?”

“আমার ডিপার্টমেন্টের প্রতিটা মানুষ ওই পশুটার এই পরিণতিতে খুশি হয়েছে। সকলের মতে পশুটার এমন মৃ’ত্যুই প্রাপ্য। লা’শের যেই বীভৎস নকশা করেছেন, মিডিয়ায় এই ছবি প্রকাশ পেলে নির্দ্বিধায় সকলে বুঝে যাবে এটা খু’ন। তাই আমি মানা করার পরে কেউ কোনোরকম ছবি তুলেনি আর না মিডিয়াকে তুলতে দিয়েছে।”

আদিত পুষণ ভৌমিকের সেই মুখশ্রী মনে করলো, ঠোঁটের কোণে মৃদু হাসি ফুটে উঠলো তার। খুশ মেজাজে উৎফুল্ল স্বরে বলে উঠলো,,

“এইচআইভি পসিটিভ, অতিরিক্ত চিন্তিত ছিল এবং অতিরিক্ত ড্রাগস নেওয়ার ফলে আ’ত্মহ’ত্যা করেছে। বুঝতেই পেরেছেন ঘটনা কিভাবে সাজাবেন।”(উৎফুল্ল স্বরে)

চলবে,,?