#নেশাক্ত_ভালোবাসা
#লেখিকাঃ Tamanna Islam
#পর্বঃ ২০ {বোনাস🍂}
সকাল ১১ঃ৩০ ~~
সূর্যের আবছা আলো জানালার পর্দা ভেদ করে আইরাতের মুখের ওপর আছড়ে পরছে। আইরাত এতোক্ষন গভীর ঘুমে তলিয়ে ছিলো। মুখের ওপর তীর্যক ভাবে আলো আসাতে চোখ-মুখ খানিক কুচকে ফেলে। মিটমিট করে চোখ মেলে তাকায়। ঘুমের রেশ টা এখনো কাটে নি তার। তবুও আড়মোড়া ভেঙে উঠে পরে। দুই হাত দিয়ে চোখ গুলো ডলছে। হাত-পা গুলো কেমন লেগে গেছে। হয়তো অতিরিক্ত আর বেকায়দায় ঘুমানোর ফল এটা। বিছানাতে উঠে বসে পরে। ছোট ছোট হাই তুলছে। চুল গুলো এলোমেলো হয়ে আছে প্রচুর। চুল গুলো হাত দিয়েই কোন রকমে ঠিকঠাক করে নেয়। ছোট ছোট চোখে নিজের আশে পাশে দেখে। কিন্তু সবকিছু খেয়াল করতেই যেন আইরাতের মাথায় আকাশ ভেঙে পরে। এই কোথায় সে?এটা কার ঘর? আইরাত নিজের দিকে খেয়াল করে। এবার আরো বেশি অবাক সে । একটা বড়োসড়ো সাদা ধবধবে বিছানাতে রয়েছে সে৷ তার ওপরে সাদা চাদর। পুরো রুমটা বেশ আকর্ষণীয়। সামনে একটা ছোট ফায়ার ওয়াল্ক আছে। সেখানে হয়তো রাতের সময় আগুন লাগানো হয় কিন্তু বর্তমানে সেখানে রয়েছে কিছু শুকনো কাঠ। অন্যান্য দিকে আরো অনেক জিনিস রয়েছে। আইরাত তার বাম পাশে তাকায়। দেখে বা পাশে বেশ বড়ো বড়ো দুটো থাই গ্লাস। আইরাত ঝট করে উঠে পরে। উঠেই থাই গ্লাস টা কিছুটা জোরেই ধাক্কা দেয়। সেটা সরে যায়। আইরাত বাইরে চলে যায়। বাইরে গিয়ে আইরাতের মুখ আপনা আপনিই হা হয়ে যায়। বাইরে করিডর। অর্থাৎ আইরাত যেখানে শুয়ে ছিলো সেটা রুম আর রুমের পাশেই থাই গ্লাস, সেটা সরালেই করিডর৷ খোলা মেলা মন মাতানো বাতাস এখানে। বাতাসে আইরাতের চুল গুলো অনেক উড়ছে। করিডরের রেলিং এ দাঁড়িয়ে আইরাত নিচের দিকে তাকায়। দেখে বেশ উঁচু তার মানে সে কোন এক ওপরের তালায় আছে। একদম নিজের সামনের দিক তাকাতেই সব কেমন গুলিয়ে যায়। নিজের সামনে যতদূর চোখ যায় ততদূর শুধু সমুদ্র আর সমুদ্র। সমুদ্রের পাশে সাদা বালি,, বালি গুলোর ওপর সূর্যের আলো পরে কেমন চিকচিক করছে। আর মাঝে মধ্যে সমুদ্রের স্রোত এসে বালি গুলোর ওপর আছড়ে পরছে। মানে কি..! এটা তো কোন হোটেল বলে মনেই হচ্ছে না। তাহলে কি এটা কোন এক রিসোর্ট। কিন্তু গতকাল রাতেই তো সে হোটেলে ছিলো সবার সাথে তাহলে ঘুম থেকে উঠতেই এখানে কীভাবে এলো। আইরাতের মাথায় কিছুই ঢুকছে না। এলোমেলো চুল গুলো তে হাত বুলাতে বুলাতেই আইরাত রুমের ভেতরে এসে পরে। মনে করার চেষ্টা করছে যে গতকাল রাতে আসলে হয়েছিলো কি। পরক্ষণেই আইরাতের মনে পরে যে আব্রাহাম রায়হান কে অনেক মেরেছিলো কাল। আইরাতের হাত কেটেছিলো। তারপর রুমে এসে আব্রাহাম তার হাতে ব্যান্ডেজ করে দেয়। তারপর একটা জুস খেতে দেয় ব্যাস শেষ তারপরই তো আর কিছুই মনে নেই। জুসে কিছু মেশানো ছিলো। ঘুম, হ্যাঁ ঘুমের মেডিসিনই মেশানো ছিলো৷ আইরাত এগুলো নিজের মনে মনেই আওড়িয়ে নেয়। নিজের হাতের দিকে তাকালেই দেখে কাল রাতের হাতের সেই ব্যান্ডেজ টা, আব্রাহাম যে করে দিয়েছিলো। তাহলে কি আব্রাহাম তাকে এখানে নিয়ে এসেছে নাকি..!
আইরাত বিছানার ওপর বসে বসে এসব ভাবনাতেই মগ্ন ছিলো। তখনই আব্রাহাম রুমের দরজা খুলে ভেতরে আসে। হাতে তার গরম গরম দুই কাপ কফি, একদম ধোঁয়া ওঠা। আব্রাহাম এসেই দেখে আইরাত চিন্তামাখা মুখ নিয়ে বেডে বসে আছে। আব্রাহাম আইরাতকে দেখে মুচকি মুচকি হাসে।
আব্রাহাম;; Wish you a very very good morning dear ❣️….
আব্রাহাম একটা মিনি টেবিলের ওপর কফির কাপ দুটো রাখে। তারপর একটা সাদা কালারের সিটিং টুলে বসে পরে। আইরাত সরু দৃষ্টি তে আব্রাহামের দিকে তাকিয়ে আছে৷ তার পাশাপাশি আব্রাহাম কে খেয়ালও করছে। আব্রাহাম একটা সাদা কালারের পেন্ট আর রেইনবো কালারের টি-শার্ট পরে আছে, হাতে সিলভার কালারের ওয়াচ। অন্যান্য দিনের থেকে বেশ ভিন্ন লুকে সে। মানে রিফ্রেশিং একটা লুক দিচ্ছে। আইরাত কে নিজের দিকে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে আব্রাহাম বলে ওঠে….
আব্রাহাম;; এভাবে তাকিয়ে থাকার কি আছে। নজর দিও না তো। কখনো দেখো নি নাকি?
আইরাত ভেবাচেকা খেয়ে যায় তার এমন কথায়। সে মোটেও আব্রাহামের দিকে নজর দিচ্ছিলো না।
আইরাত;; আমরা এখানে কি করে এলাম। মানে এক রাতের মাঝেই জায়গা কি করে পালটে গেলো?
আব্রাহাম;; যাক জায়গা যে চেঞ্জ হয়েছে সেই ধ্যান টুকু তো আছে তোমার৷
আইরাত;; একদম কথা ঘুড়াবেন না। যা জিজ্ঞেস করি তার জবাব দিন।
আব্রাহাম;; আগে এট খাও।
আব্রাহাম এক গ্লাস পানি নিয়ে আর কিছু মেডিসিন নিয়ে আইরাতের কাছে যায়।
আইরাত;; এগুলো আবার কি?
আব্রাহাম;; মেডিসিন আফ কোর্স।
আইরাত;; কিন্তু কেন, মানে কিসের মেডিসিন?
আইরাত বেডে বসে ছিলো। তার এমন একটার পর একটা প্রশ্ন শুনে আব্রাহাম আইরাতের দুই পাশে হাত রেখে দিয়ে একদম তার দিকে ঝুকে পরে। কেমন এক নেশাক্ত নয়নে আইরাতের দিকে তাকিয়ে আছে। আইরাত তো মুখ ফুলিয়ে আব্রাহামের দিকে তাকিয়ে আছে। আব্রাহাম ক্রমশ আইরাতের মুখের কাছে এগিয়ে আসতে থাকে। আইরাত ভেবেছে আব্রাহাম হয়তো এখনই কিছু করে বসবে তাই সে ভয়ে চোখ খিচে বন্ধ করে নেয়। আব্রাহাম হেসে দেয়। একদম স্লো ভয়েসে আইরাতের কানের কাছে গিয়ে ফিসফিস করে আব্রাহাম বলে ওঠে…
আব্রাহাম;; বেবিগার্ল, এখন যদি তুমি এই মেডিসিন গুলো না খাও তাহলে তোমার কনসিভ করার সম্ভাবনা প্রায় 99.9%।
আব্রাহামের এমন খাপছাড়া কথায় আইরাতের চোখ গুলো রসগোল্লার ন্যায় বড়ো হয়ে গেলো। কিসব বাজে বকছে আব্রাহাম.! আব্রাহাম এই কথা বলেই আস্তে করে উঠে এসে সোজা হয়ে দাঁড়ায়। কিন্তু আইরাত তো ফাটা নয়নে তাকিয়ে আছে। আব্রাহামের দিকে তাকিয়ে দেখে সে দুই হাত ভাজ করে মুখে বাকা হাসি ঝুলিয়ে রেখেছে। আব্রাহাম কেন জানি আইরাতের দিকে তাকিয়ে মিটিমিটি হাসছে। আইরাত নিজের দিকে তাকায়৷ সাথে সাথেই তার আক্কেলগুড়ুম। মাথা শূন্য হয়ে গেলো। আইরাতের ড্রেস চেঞ্জ। রাতে শাড়ি পরা ছিলো আর এখন হাটু অব্দি একটা পেন্ট আর সাদা শার্ট। আইরাত ছোট খাটো একটা চিৎকার দিয়ে বিছানার চাদর টা আবার নিজের ওপরে নিয়ে নেয়। তাহলে কি কাল রাতে আব্রাহাম আর তার মাঝে কি কিছু হয়েছে নাকি। মানে কোন খারাপ কিছু হয় নি তো৷ আর কনসিভ করবে মানে। আইরাত এগুলো ভেবেই হুহু করে কেদে ওঠে। আর এখন বেশ ভালো করেই বুঝতে পারলো যে কেন আব্রাহাম তার দিকে তাকিয়ে হাল্কা হাল্কা হাসছিলো। আইরাত তো বেশ জোরে সোরেই কেদে দিয়েছে। তা দেখে আব্রাহাম তড়িঘড়ি করে বলে দেয়।
আব্রাহাম;; আরে আরে হেই ওয়েট এভাবে কাদছো কেন?
আইরাত;; আপনি খুব বেশির থেকেও বেশি বাজে। আপনি এটা আমার সাথে করতে পারলেন? একটা বারও বাধলো না আপনার। আপনি একটা মেয়ের পারমিশন ছাড়া এটা কীভাবে করলেন?
আইরাতের যেন নাকের পানি আর চোখের পানি এক হয়ে গেছে। আব্রাহাম বোকা বনে গেলো।
আব্রাহাম;; আরে প্লিজ থামো বেইব। তুমি যেমন টা ভাবছো তেমন কিছুই হয় নি। আরে আমি তো মজা করছিলাম শুধু। কিছুই হয় নি। আমি কিছু করি নি তোমার সাথে। আর এখানকার একজন মেয়ে স্টাফ কে দিয়ে তোমার কাপড় চেঞ্জ করিয়ে দিয়েছি পাগল মেয়ে। প্লিজ স্টপ ক্রাইং।
আইরাত;; এহহ সত্যি 🥺…!
আব্রাহাম;; তিন সত্যি। আর মেডিসিন গুলো হচ্ছে ব্যাথার। কাচের চুড়ি দিয়ে হাত কেটেছে আর হাতের ব্যাথায় রাতে জ্বর এসে পরেছিলো তোমার। হিতে বিপরীত যেন না হয় তাই মেডিসিন। এবার প্লিজ খাও। আর হ্যাঁ যা দেখার আমি কাল রাতেই দেখে নিয়েছি এতো ঢাকা ঢাকির কিছুই নেই।
আইরাত;; কিইইইইই?
আব্রাহাম;; আরে বাবা মানে এই ড্রেসাপে কাল রাতেই দেখেছি তো আর সকালেও দেখেই ফেলেছি তো বাদ দাও। মেডিসিন খাও।
আব্রাহাম মেডিসিন গুলো আইরাতকে খাইয়ে দেয়। আব্রাহাম আইরাতের দিকে তাকিয়ে দেখে আইরাতের পুরো মুখে কেমন একটা স্নিগ্ধতা ভাব।
আব্রাহাম;; যতোটা বড়ো আর ম্যাচিউর তোমাকে ভেবেছিলাম আসলে ততোটা নও তুমি।
আইরাত;; মানে?
আব্রাহাম;; বডি তে অনেক কিছুর চেঞ্জ আসে। কেউ যদি ফিজিকালি ইনভলভ্ হয় কারো সাথে তাহলে নিজের ভেতরের চেঞ্জ টা সে নিজেই বুঝতে পারে। ছোট তুমি অনেক।
আইরাত;; হয়েছে হয়েছে। আর আমরা এখানে কি করে আর কেনোই বা এলাম বলুন না।
আব্রাহাম;; কাল রাতে তোমার জুসে আমিই স্লিপিং পিল মিক্স করেছিলাম। আসল কারণ ছিলো দূরে চলে আসা সেই হোটেল থেকে। তোমাকে বললে তো হাজার টা প্রশ্ন করে বসতে। আর এছাড়াও অনেক কাজ ছিলো আমার তাই। রাতেই এই রিসোর্ট বুক করি। গাড়ি নিয়ে এসে পরি। আর এছাড়াও সেখানে রায়হান ছিলো। And I just don’t want to see his ugly face again… (বিরক্তি নিয়ে)
আইরাত;; কিন্তু আমিই কেন? আমাকে নিয়ে এলেন কেন এখানে?
আব্রাহাম;; ওহহ হ্যালো মিস. আমার পিএ কে?
আইরাত;; 😑।
আব্রাহাম;; উঠে পরো বেবিগার্ল তুমি পুরো ১৩ ঘন্টা ঘুমিয়েছো।
আইরাত;; হুয়াট? ১৩ ঘন্টা।
আব্রাহাম;; ডোজ নিয়েছিলে তো তাই অবাক হবার কিছুই নেই। আর হ্যাঁ রেডি থেকো। আমরা বাইরে বের হবো।
আইরাত;; বাইরে মানে?
আব্রাহাম;; এটা অনেক বড়ো একটা রিসোর্ট। পুরো টা ঘুড়ে দেখতে হলে কমপক্ষে দুই দিন সময় লাগবে।
আইরাত;; ওহহ।
আব্রাহাম;; সামনের রুম টাই আমার। যদিও আলাদা রুম নেবার কোন ইচ্ছেই আমার ছিলো না কিন্তু আমি বাধ্য। আমি গেলাম কিছুক্ষন পর ড্রেস পাঠিয়ে দিবো আমি। রেডি হয়ে বাইরে এসো।
আব্রাহাম বাইরে চলে যায়। আর এদিকে আইরাত যেন হাফ ছেড়ে প্রাণে বাচে। আব্রাহাম বাইরে গিয়ে ফোনে কথা বলতে থাকে। আসলে হোটেলে কেউই জানে না যে আব্রাহাম এসে পরেছে একমাত্র রাশেদ বাদে। রাশেদ সেইদিক টা হ্যান্ডেল করে নিবে।
।
।
বিকেলের দিকে আব্রাহাম আর আইরাত বাইরে বের হয়। সমুদ্রের পাড়ে। এখানে অনেক মানুষ আছে। অনেকে ড্রিংকস শপের পাশে দাঁড়িয়ে আছে আবার অনেকে মিউজিকের তালে তালে নাচছে। আবার অনেকে সমুদ্রে ভেসে বেড়াচ্ছে। আইরাতের কোন ইচ্ছেই ছিলো না এখানে আসার কিন্তু আব্রাহাম এক প্রকার জোর করেই এনেছে। আইরাতের কেমন যেন লাগছে এটা। মেয়েরা অনেক ছোট ছোট ড্রেস পরে চারিপাশে ঘুড়ছে। আর আব্রাহাম কে দেখেই পিক ক্লিক করার জন্য পাগল হয়ে যাচ্ছে। এগুলো যেন আইরাতের বিরক্তি টা আরো দ্বীগুণ মাত্রায় বাড়িয়ে দিচ্ছে। যখনই কোন একদম ছোট ড্রেস পরা মেয়ে কে আইরাত দেখছে তখনই নিজের জামার হাতা গুলো টেনে টেনে আরো বড়ো বানাচ্ছে। আইরাত একটা পেন্ট আর হাটু সমান লম্বা জামা পড়ে আছে। আইরাতের এমন কান্ড দেখে আব্রাহাম হাসছে। আব্রাহাম তার চোখ থেকে সানগ্লাস টা খুলে দুই হাত পকেটে ভরে আইরাত কে বলে ওঠে…
আব্রাহাম;; এখানে এমনই। বিচ সাইড।
আইরাত;; হুম বুঝেছি।
আব্রাহাম আইরাত কে নিয়ে একটা জায়গায় বসে। তখনই একটা ওয়েটার এসে তাদের দিকে দুটো জুস এগিয়ে দেয়। আব্রাহাম একটা জুস হাতে নিয়ে আইরাত কে দেয়। কিন্তু আইরাত তার চোখ গুলো একদম ছোট ছোট করে আব্রাহামের দিকে তাকিয়ে থাকে। আইরাতের এমন চাহনি দেখে আব্রাহাম বলে।
আব্রাহাম;; আরে বাবা এভাবে তাকিয়ে থাকার কিছুই নেই। মিশাইনি কিছুই এতে। এটা ঠিক আছে খেয়ে নাও।
আইরাত জুস টা হাতে নিয়ে নেয়। বেশ কিছু সময় সেখানে থেকে যে যার যার রুমে চলে যায়। তবে আব্রাহাম এবার বসে আছে তার রুমে। সামনে বড়ো একটা কাগজ নিয়ে স্টেম্পে লাগিয়ে রেখে দিয়েছে। নিজের হাতে রঙ তুলি নিয়ে বসে আছে। পেইন্টিং আকছে আইরাতেরই অবশ্যই। পেইন্টিং এ আইরাত নিজের গালের সাথে একটা লাল গোলাপ ঠেকিয়ে আবেশে চোখ গুলো বন্ধ করে রেখেছে। এত্তো বড়ো একটা পেইন্টিং ১৭ মিনিটে একেছে সে। ছোট বেলা আকাআকির অনেক শখ ছিলো। আব্রাহামের এই শখ টা এতোদিন কোথায় যেন গায়েব ছিলো কিন্তু আইরাতের সাথে দেখা হবার পর আবার উঁকি দিয়ে বসেছে শখ টা।
আব্রাহাম;; আমি তোমাকে ভালোবাসি আইরাত। তুমি আমার। আমার ছিলে আর থাকবে। আমার থেকে দূরে যেতেই দিবো না আমি তোমাকে। আই রেলি ভেরি লাভ ইউ আইরাত৷ আই নিড ইউ বেডলি বেবিগার্ল ।
আব্রাহাম হাজারো কথা আইরাতের পেইন্টিং এর সামনে বসে বসেই বলছে। একটা সময় পেইন্টিং কমপ্লিট হয়ে গেলে আব্রাহাম তা খুব যত্নের সাহায্যে রেখে দেয়। এখন আইরাতের কাছে যেতে হবে তার, আইরাতকে জ্বালাতে হবে নয়তো তার রাতের ঘুম হবে না। যেই ভাবা সেই কাজ আব্রাহাম চলে যায় আইরাতের কাছে। প্রথমে আইরাতের রুমে চলে যায়। কিন্তু সেখানে গিয়ে আইরাতকে পায় না। তারপর আবার ছাদে চলে যায়। গিয়েই দেখে ছাদে খোলা বাতাসে আইরাত এক কিণারে দাঁড়িয়ে আছে। আব্রাহাম আলতো পায়ে আইরাতের কাছে এগিয়ে যায়।
রুমে ভালো লাগছিলো না দেখে আইরাত ছাদে চলে আসে৷ এখানের পরিবেশ আর এমন মনোমুগ্ধকর বাতাসে মেজাজ টা কেমন ফুরফুরে গয়ে গেলো। তবে নিজের কোমড়ে কারো শীতল স্পর্শ পেয়ে আইরাত চমকে পেছন ঘুড়ে তাকায়৷
।
।
।
।
চলবে~
#নেশাক্ত_ভালোবাসা
#লেখিকাঃ Tamanna Islam
#পর্বঃ ২১
নিজের কোমড়ে কারো শীতল স্পর্শ পেয়ে আইরাত চমকে গিয়ে পেছন ঘুড়ে তাকায়। তবে সম্পূর্ণ তাকাতে পারে নি। আব্রাহাম তাকে আগেই পেছন থেকে জড়িয়ে ধরেছে। আব্রাহাম রীতিমতো আইরাতের কোমড়ে স্লাইভ করে যাচ্ছে। আর তার এমন কান্ডে আইরাতের শরীরে বয়ে যাচ্ছে এক অজানা শিহরণ। সে শুকনো কিছু ঢোক গিলে সামনের দিকে তাকিয়ে আছে।
আইরাত;; আ আপ আপনি…
আব্রাহাম;; হুশশশশশ..! তুমি জানো বেবিগার্ল আমি তোমাকে কত্তো খুঁজে বেড়াচ্ছি। আর তুমি কিনা এখানে এসে একা একা দাঁড়িয়ে আছো।
আইরাত;; না মানে
আব্রাহাম;; আমার সাথে থাকতে বলেছি না সবসময়।
আইরাত;; আমি কীভাবে থাকবো স্যার। মানে আপনার যখন দরকার পরবে আপনি ডাক দিবেন। আমি চলে যাবো।
আব্রাহাম;; দরকার পরবে মানে লিসেন তোমাকে আমার রাতদিন চব্বিশ ঘন্টাই দরকার পরে। আর শুনো ফর গড সেক এই স্যার ট্যার ডাকা অফ করো। মানে অফিসে থাকলে সবার সামনে ডেকো ঠিক আছে বাট প্লিজ এখানে না।
আইরাত;; এহহহহ আমার বয়েই গেছে স্যার ডাকতে হাহ। আসছে রে আমি আব্রাহাম ই ডাকি। (মনে মনে) হুমম হুমম।
আইরাত কিছুটা মোচড়ামুচড়ি শুরু করে দিলো। আব্রাহামের যেন এটা মোটেও ভালো ঠেকলো না।
আইরাত;; ছাড়ুন।
আব্রাহাম;; কেন ছাড়বো?
আইরাত;; আরে মানে কি আপনি যখন তখন এভাবে হুট হাট করে জড়িয়ে ধরেন কেন বলুন তো। ছাড়ুন
আব্রাহাম বেশ বিরক্ত হচ্ছে। তবে পরমুহূর্তেই আব্রাহামের মাথায় শয়তানি বুদ্ধি এলো।
আব্রাহাম;; আহাম, আহাম। জানপাখি..!
আইরাত;; আইরাত নাম আমার।
আব্রাহাম;; বলছিলাম কি যে নিচে তাকিয়ে দেখো না কত্তো উচুউউউউউউউ।
আইরাত;; 😳।
আব্রাহাম;; উঁচু দেখে না তুমি ভয় পাও।
আইরাত;; আব,, না না আমি যাই না মানে আমি রুমে যাই ছাড়ুন।
আব্রাহাম;; হুম এখন আর একটা বাড়তি প্যাচাল পারলে আমি কি করবো বলতো জানপাখি..!?
আইরাত;; ফেলে দিবেন এখান থেকে 😒
আব্রাহাম;; একদম ঠিক ধরেছো। সো চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকো।
আইরাতের মাথা টা আব্রাহামের থুতনিতে পরে। মানে আইরাত আব্রাহামের থুতনির সমান। আব্রাহাম তো তার গাল টা আইরাতের মাথার সাথে লাগিয়ে রেখেছে। ছাদ থেকে সামনে তাকালেই দেখা যায় মস্ত বড়ো খোলা এক জায়গা। সমুদ্রের পাড়ে এখন তেমন কোন মানুষ নেই। জায়গা টা নিরব। যার ফলে সেখানে স্রোতের ঢেউ খেলানো শব্দ টাও কানে এসে বাজছে। আকাশের তারা গুলো কেমন জ্বলজ্বল করছে। আব্রাহাম তার আইরাতকে নিয়ে মুগ্ধ নয়নে জায়গা টা উপভোগ করছে কিন্তু আইরাত, সে তো নিরুপায় হয়ে এখানে দাঁড়িয়ে আছে। আব্রাহাম যে তাকে হুমকি দিয়েছে যে দাঁড়িয়ে না থাকলে ফেলে দিবে।
এভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে হঠাৎ আব্রাহামের ফোন বেজে ওঠে। শেষ পুরো মুড টাই নষ্ট করে দিয়েছে। আব্রাহাম আইরাতকে ছেড়ে দাঁড়ায়। তারপর ফোন টা পিক করে। সাইডে গিয়ে কথা বলতে থাকে। আর আইরাত এই ফাকে দেয় ভো দৌড়। আব্রাহাম কথা বলা শেষ করে তার পেছন দিকে ঘুড়ে তাকাতেই দেখে আইরাত নেই।
আব্রাহাম;; পালিয়েছে।
আব্রাহাম দাঁড়িয়ে থাকে সেখানেই। রুমে কিছুক্ষন পর যাবে। এদিকে আইরাত ছুটে এসে ঠাস করে রুমের দরজা লাগিয়ে দেয়।
আইরাত;; আল্লাহ রে কি আপদ একটা। ধুর আর বাইরেই যাবো না।
আইরাত বিছানাতে গিয়ে উপুড় হয়ে ফোনে গেমস খেলতে লাগলো। তখনই আইরাতের ফোন বেজে ওঠে। দেখে রোদেলার ফোন…
আইরাত;; হ্যাল রোদেলা কেমন আছো?
রোদেলা;; আরে আমার কথা রাখো তুমি কোথায়?
আইরাত;; আমি কোথায় মানে? কেন তুমি জানো না?
রোদেলা;; আরে আমি কি করে জানবো। আব্রাহাম স্যার নেই তুমি নেই কোথায় তোমরা আর কাউকে জিজ্ঞেস করলে কিছু বলছেও না।
আইরাত;; আমরা তো রিসোর্টে আছি। আর কেন আব্রাহাম স্যার বলে নি কিছুই সবাইকে এই ব্যাপারে? (কপাল কুচকে)
রোদেল;; না তো। এমনকি আমার সাথে সাথে বাকি রাও জানেন না। আর তোমাকে আমি কাল রাত থেকে ফোনে ট্রাই করছি কিন্তু পাচ্ছি না। এইমাত্র পেলাম।
আইরাত;; হুম, আচ্ছা আমরা রিসোর্টে আছি আর কালই স্যার আমাকে সাথে নিয়ে এখানে এসেছেন।
রোদেলা;; ওহহ আচ্ছা। কিন্তু শোনো এখানে অনেক ঝামেলা হয়েছে।
আইরাত;; মানে?
রোদেলা;; রায়হান স্যার যে আছে না উনি তো খুব চটে আছেন। আর উনার অবস্থাও ভালো না বেশি।
আইরাত;; যে ঘুষি গুলো মেরেছে। আমি তো ভেবেছিলাম আজ এখানেই ইন্না-লিল্লাহ। ভাগ্য ভালো বেচে আছে।
রোদেলা;; আচ্ছা যাই হোক,, থাকো তাহলে।
আইরাত;; আচ্ছা শুনো শুনো।
রোদেলা;; হ্যাঁ
আইরাত;; আচ্ছা আমাদের অফিস থেকে তো টাইম দিয়েছিলো চার দিন তাই না…!
রোদেলা;; চারদিন দিয়েছিলো কিন্তু আমরা কালই চলে যাচ্ছি।
আইরাত;; মানে কি তাহলে আমরা কবে যাবো?
রোদেলা;; সেটা তো ডিপেন্ড করে আব্রাহাম স্যারের ওপরই।
আইরাত;; হায়রে। আচ্ছা বুঝেছি।
রোদেলা;; রাখলাম তাহলে ভালো থেকো। আল্লাহ হাফেয
আইরাত;; আল্লাহ হাফেয।
আইরাত তো ফোন কেটে দিলো। এবার তার আব্রাহামের ওপর মেজাজ খারাপ হচ্ছে প্রচুর। আব্রাহাম তাকে বলেছে যে তাকে নিয়ে এসে পরেছে। কিন্তু এটা বলে নি যে কাউকে না জানিয়েই এসে পরেছে। মানে কেউ যেন জানতে না পারে তার জন্যই তাকে অজ্ঞান করে তারপর এখানে আনা হয়েছে।
আইরাত;; ওহহ আচ্ছা বাচ্চু তাই না। এখব সব ক্লিয়ার হলো আমার কাছে। এই পোলা নিজেও পাগল সাথে সাথে আমাকেও বানাবে পাগল।
আইরাত তো এসে পরেছে অনেক সময়ই হবে। এখন হয়তো আব্রাহাম তার রুমে। এই ভেবে আইরাত ফোন টা বিছানার ওপর রেখে আব্রাহামের রুমে পা বাড়ায়।
আইরাত;; এখন শুধু রুমে একবার যাই তারপর আছে।
আইরাত মুখ টা ফুলিয়ে আব্রাহামের রুমের দিকে যাচ্ছে। আব্রাহামের রুমে যাওয়ার আগে একটা গ্লাস আছে। মানে দরজার সাথে ছোট একটা জানালা আছে। আর জানালতে গ্লাস লাগানো সেখান দিয়ে সবই প্রায় দেখা যায়। আইরাত তো এক প্রকার তেড়েই আব্রাহামের কাছে যাচ্ছিলো কিন্তু রুমে ঢোকার আগেই আইরাতের পা আপনা আপনিই থেমে যায়। রুমে গিয়েও আবার উলটো ঘুড়ে তাকে এসে পরতে হয়। আইরাত জানালার পাশে দাঁড়িয়ে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। কেননা আব্রাহাম এক পায়ের ওপর আরেক পা তুলে বসে আছে কিন্তু তার সামনে রিভলবার, গান, বুলেটস, নাইফ, এই সবকিছুর এক রকম ছড়াছড়ি। আইরাতের এগুলো একসাথে দেখে ভয়ে আত্না শুকানোর উপক্রম।
আইরাত;; আমি কেন আইছিলাম এইখানে। কেন এই পোলার পিএ হইতে গেছিলাম। এগুলা ভয়ানক ভয়ানক জিনিস দেখবার জন্যে। সারাজীবনেও এগুলা দেখি নাই। কখন কাকে খুন করে বসে আল্লাহ মালুম। রাগের মাথায় আবার আমাকেই না মেরে বসে। ইয়া আল্লাহ বাচাও। (মনে মনে)
আইরাত এক নয়নে তাকিয়ে ছিলো আর এগুলা বকবক করছিলো। তখনই একজন বয়স্ক লোক আব্রাহামের কাছে আসে। সে আর আব্রাহাম মিলে কথা বলছে। কিন্তু আসলে ঠিক কি কথা বলছে তা কিছুই শোনা যাচ্ছে না। তবে আব্রাহামের চোখ মুখ দেখে মনে হচ্ছে যে সে বেশ রেগে গেছে। এভাবে কিছুক্ষন থাকতে থাকতেই আব্রাহাম এক ঝটকায় উঠে সেই বয়স্ক লোকটির হাতে ছুরি দিয়ে এক ঘা বসিয়ে দেয়। রক্ত ছিটকে যায়। লোকটি ব্যাথায় কুকড়ে যায়। রক্ত ঝড়ছে কিন্তু আব্রাহাম না ই লোকটিকে সেখান থেকে উঠতে দিচ্ছে আর না ই নিজে কিছু করছে রক্ত থামানোর জন্য। আব্রাহাম উলটো খুব শান্ত শিষ্ঠ একটা মুখ করে আবার আগের জায়গায় গিয়ে বসে। হাত থেকে চাকু টা টেবিলের ওপর রেখে দেয়। তবে এগুলো দেখে আইরাতের হাত দুটো আপনা আপনিই তার মুখে চলে যায়। কি মানুষ রে বাবা একটা বয়স্ক লোককেও ছাড়লো না। হঠাৎ কেন যেন আব্রাহামের মনে হলো যে দরজার পাশে কেউ আছে।
আব্রাহাম;; কে ওখানে? (গম্ভীর গলায়)
আইরাতের বুকে ধপাস ধপাস শুরু হয়ে গেছে। সে সোজা সেখান থেকে উড়া ধুরা দেয় এক দৌড়৷ দৌড় দিয়েই সোজা নিজের রুমে। আব্রাহাম দরজা খুলে বাইরে এসে দেখে কেউ নেই। কিন্তু সে সিওর কেউ তো ছিলো এখানে। যাই হোক আব্রাহাম আবার তার রুমে চলে যায়। গিয়ে সেই বয়স্ক লোকটির সামনে কপাল কুচকে বসে।
আব্রাহাম;; আপনি আমার বাবার বয়সী। এতোদিন যথেষ্ট সম্মান করতাম কিন্তু এই সম্মানের যোগ্য আপনি নন। বাবা নামে কলঙ্ক আপনি।
বয়স্ক লোকটি নিজের হাত ধরে কাতড়াচ্ছে। আব্রাহামের সেদিকে কোন ভ্রুক্ষেপই নেই।
আব্রাহাম;; মা-বোন তো আপনারও ছিলো অবশ্যই। নিজের একটা মেয়েও আছে। তাহলে অন্যের মেয়ের সাথে কেন এমন হবে। আজ আপনার ছেলে একটা মেয়ে কে রেপ করেছে। আপনি কোথায় আপনার ছেলে কে শাসন করবেন তা না। এখানে আপনার ছেলে কে কীভাবে জেলে যাওয়া থেকে বাচানো যায় আপনি সেই সুপারিশ নিয়ে এসেছেন আমার কাছে। আপনার ছেলে ফাসবে অবশ্যই ফাসবে। রেপ & মার্ডার কেসে। শালার ওপর এমন কেস দিবো যেন জীবনের তরে বের হতে না পারে। মন তো চাইছে যে আপনার ছেলের সাথে সাথে আপনাকেও এখানেই মেরে রেখে দেই। কিন্তু কি করবো বলেন নিজের ছেলে কর্মফল ভোগ করবে আর আপনি দেখবেন না এমন টা হয় নাকি?! তাই বাচিয়ে রাখলাম আপনাকে 😊। এবার চোখের সামনে থেকে দূর হন। ভাগ্য ভালো আপনাকে এখনো আপনি বলে সম্বোধন করছি নয়তো তুই-তুকারি লেভেলের আরো ওপরে যেতে পারি আমি।
আব্রাহামের এমন শান্ত সুরে থ্রেইট টা যেন বয়স্ক লোকটি আর হজম করতে পারলেন না। তাই কাটা স্থানটা আরেক হাত দিয়ে চেপে ধরে হুড়মুড় করে রুমের বাইরে বের হয়ে পরলেন।
আব্রাহামের মাথা প্রচুর গরম এখন। মানুষ কি পরিমাণ বিবেকহীন হলে নিজের ছেলের এইসব কুকীর্তি লুকাতে সাহায্য চাইতে আসে৷ This is just ridiculous…
অন্যদিকে আইরাতের চোখ দিয়ে সত্যি পানি বের হয়ে পরেছে। ভয় লাগছে। এভাবে যদি একটা সাইকোর সাথে রাতদিন সবসময় থাকতে হয় তাহলে ভয় পাওয়া টা স্বাভাবিক। আইরাত দুই হাত দিয়ে মাথা চেপে ধরে।
আইরাত;; আমি কাল ই এখান থেকে সোজা বাসায় চলে যাবো আর থাকবো না এখানে।
আইরাত গিয়ে ঢকঢক করে দুই গ্লাস পানি খেয়ে ফেলে। হঠাৎ আইরাতের কানে কারো পায়ে হেটে আসার শব্দ আসে। ঠক ঠক ঠক৷ আইরাত পানি খাচ্ছিলো হঠাৎ তার পানি খাওয়াই থেমে যায়। চোখ বড়ো বড়ো হয়ে যায়৷ এটা আব্রাহামের আসার শব্দ। আইরাত দাঁড়িয়ে ছিলো।
আর তখনই আব্রাহাম সোজা আইরাতের রুমের দরজা খুলে এসে পরে। আইরাতকে এভাবে ভয়ে জমে থাকতে দেখে আব্রাহাম বলে ওঠে…
আব্রাহাম;; কি করছো?
আইরাত;; আব.. না না কি কিছুই না কিছুই না।
আব্রাহাম;; আমরা পরশু দিন এখান থেকে বের হয়ে পরবো।
আইরাত;; হুম হুম।
আব্রাহাম চলে আসতে নেয় কিন্তু আবার উলটো ঘুড়ে আইরাতকে বলে ওঠে..
আব্রাহাম;; আর হ্যাঁ অন্যের রুমে উঁকি ঝুকি কম করে দিয়ো। এটা বেড মেনার্স বেবিগার্ল।
আব্রাহাম এই বলেই চলে যায়। আর আইরাত তো টাস্কি। তার মানে এই আব্রাহাম আইরাতকে দেখে ফেলেছে। আইরাতের মন চাইছে নিজের মাথা নিজেই ফাটিয়ে দিক এখন। এত্তো চালাক মানুষ হয় কি করে।
আইরাত বকতে বকতে অফিসের কিছু ফাইল চেক করতে বসে আর আব্রাহাম লেগে যায় তার আরেক কাজে।
।
।
।
।
চলবে~