#নৈঃশব্দ্যের_প্রেমালাপ
#পর্ব৬
#মহুয়া_আমরিন_বিন্দু
নিশি দৌড়াতে দৌড়াতে হাঁপিয়ে পড়েছে,বেচারি শেষে আর তাল সামলাতে না পেরে দরজায় উ”ষ্টা খেয়ে পড়ে গেলো।
চেঁচিয়ে বলে উঠলো–,,বাবা গো মা গো আমার কোমর খানা গেলো গো!
আভা দৌড়ে বেরিয়ে আসলো বারান্দা থেকে নিশি কে টেনে তুলতে তুলতে জিজ্ঞেস করলো–,,বইন কোন মেরাথ”ন রেই”স জে’তার জন্য দৌড়াচ্ছিলি শুনি?
কমই তো খা’স এতো ভারি হইলি কেমনে!
নিশি নাক টেনে বললো–,,যাদের জন্য করলাম চু”রি তারাই বলে চো’র।
আভা বলে উঠলো –,,তোরে বরফ আনতে কে কইছে?
নিশি উঠে গিয়ে বসলো খাটে, বিরক্ত হয়ে বললো–,,তৃধার বাচ্চা যে হারে চিল্লা’পাল্লা করছে, ওর মাথা তো গরম হওয়া স্বাভাবিক তাই বন্ধু হিসাবে আমার একটা দায়িত্ব আছে না?পরে যদি তাপমাত্রা বেড়ে মাথাটা ফে’টে যাইতো তখন কি হইতো? তাই তো চার তলা বেয়ে নেমে গিয়ে বরফ আনছি, তোরা কেউ কদর করলি না আমার!
তৃধা,নোভা ভিতরে আসলো,তৃধা এসে বললো– ভালো করছিস বইন,দে দে বরফ টা দে, মাথা টা সত্যি অনেক গরম আমার।
তৃধা আভার হাত থেকে বরফ এর বাটি টা নিয়ে মাথার উপর রেখে দিলো।নোভা টুপ করে ছবি তুলে নাদিম কে পাঠিয়ে দিলো।
নাদিম সঙ্গে সঙ্গে ভিডিও কল করলো, এতোক্ষণ তৃধা কে সামলাতে ব্যস্ত থাকলেও এবার ভীষণ হাসি পাচ্ছে নোভার,বান্ধবী তার ফা’টা বাঁশের চি”পায় ভালা মতো পড়ছে।
নাদিম ফোনের ওপাশ থেকে হো হো করে হেসে বললো–,কি রে কি হইছে?পে’ত্নী টার মেজা’জ আকাশে উড়ে কেন?
তৃধা মুখ বাকালো,নোভা সব ঘটনা খুলে বললো নাদিম কে, নিশি বলে উঠলো–,,আমার কষ্টের কেউ কদর করলো না।
নাদিম বলে উঠলো–,,তুই টা’কলা জামাই পাবি দোয়া করে দিলাম।
আভা বলে উঠলো–,,টা’কলা জামাই খারা’প না,টাকা পয়সা বেশি থাকে!
নাদিম ভ্রু কুঁচকে বললো–,,দুনিয়ায় পোলার অভাব পড়ছে নাকি?তোরা বে’ডি মানুষ গুলা ক্রাশ খাবি গিয়া টা’কলা, টোক’লা,গা'”ঞ্জা খোর গো উপরে,ভালা ভদ্র পোলা গুলার দিকে চোখই যায় না,এতো সুন্দর হইয়া কি লাভ যদি রুচি হয় ডাস্ট”বিনের মতো,ধুর ধুর আর ফোন করবি না তোরা!
তৃধা নাক মুখ কুঁচকে বললো–,,এই পোলার যে কি হয় মাঝেমধ্যে, লাল নিল পানি খায় মনে হয় ইদানীং!
নোভা বলে উঠলো–,,আমি তো অন্য রকম গন্ধ পাচ্ছি।
নিশি বলে উঠলো–,,তোর নাকে সমস্যা গন্ধ ছাড়া আর কি পাবি!
আভা বলে উঠলো –,,ওইদিন জানি কোন ছেলের কথা বললো ওই রাদিফ ছেলেটা।
নোভা উৎসাহ নিয়ে বলে উঠলো–,,হ্যাঁ হ্যাঁ আমিও ওইটাই বলতে চাচ্ছিলাম।এই না হলে তুই আমার জমজ,ঠিক বুঝে গেলি!
তৃধা বলে উঠলো-,,ঝেড়ে কাশ তো বাপু।
নোভা বিছানায় আয়েসি ভঙ্গিতে বসে বললো–,,বাতাসে প্রেমের গন্ধ।
নিশি বিরক্ত হয়ে বললো–,,আবার গন্ধ?
আভা বলে উঠলো–,,গন্ধ সমাচার!
নোভা চেঁচিয়ে বলে উঠলো–,,তোদের কে কিছু বলবোই না আর।
তৃধা হাই তুলে বললো–,, তাই ভালো,তোর মুখ থেকে যা বের হয় তা কু’ফা মার্কা কথাই হয়।তোর জন্য এখন জোছনা আপা আমার জীবনে সিড’র হয়ে এন্ট্রি মার’তেছে!
নোভা নাক ফুলিয়ে বললো–,,সব দোষ নন্দ ঘোষ!আমার কথা শুনলি না তো পরে যদি কিছু হয় না তখন বুঝবি।
নিশি বলে উঠলো–,, বল বল আমি শুনবো।
–,,রাদিফ হা”বলু টা নিশি কে পছন্দ করে,তাই এখন ভাব জমানোর জন্য আসছে,আর নাদিমের সাথেও ভাব জমিয়েছে!
তৃধা মাথা থেকে বাটি সরিয়ে নড়েচড়ে বসলো, চোখ ছোট ছোট করে বললো–,,এই শা’লার প্রেম পি’রিতি ছাড়া কি আর কিছু চোখে দেখে না মানুষ? সুন্দর সুশীল জীবন টা ন’ষ্ট করতে এতো উঠে পড়ে লাগে কেন?জা’নের প্রতি কোনো দয়া মায়া নাই,সমাজ টা গেলো রসাতলে!
আভা বলে উঠলো–,,তুই গিয়া ঘুমা বইন,তুই এখন মা’নসিক ব্য”মো তে আ”ক্রান্ত!
তৃধা রেগেমেগে বাথরুমে চলে গেলো সত্যি একদিন পা’গল হয়ে যাবে এই বিয়ের চক্করে!
—————-
ভার্সিটি তে এসেছে ঠিকই ক্লাস করার ইচ্ছে নেই একজনের ও।
পড়াশোনা চা’ঙ্গে তুলে কাল থেকে ভাবছে কি করে বুড়ো তিনটা কে সামলানো যায়।ভার্সিটি তে আসার পর আদাভানের মুখ দেখতে হয়নি তাই অনেকটা খুশি তৃধা,লোকটা কে দেখলেই মেজা’জ বিগড়ে যায়!আবার নাকি সপ্তাহ খানে একই রুমে এর সাথে থাকা লাগবে, মগের মুল্লুক পেয়েছে নাকি,এ যেনো বিয়ে বিয়ে খেলা অ”সহ্য!
নাদিম, নোভা,আভা হাসাহাসি করছে নিশি বইয়ে মুখ গুঁজে বসে আছে,তৃধা গালে হাত দিয়ে বসে।ক্লাস চলছে আপন গতিতে তারা ভেতরে যায়নি,নিশি যেতে চাইলেও তাকে ধরে বেঁধে নিজেদের সাথে রেখে দিয়েছে আভা।কারন তাদের বন্ধু হয়ে কেনো টিচারের ব’কা খাওয়া থেকে বঞ্চিত হবে?
দুপুর বারোটা ভার্সিটির গেইটের বাহিরে গেলো তৃধা,বাকিরা ভেতরে আসতে চেয়েছিলো তৃধাই বলেছে সে একাই নিয়ে আসতে পারবে। রাস্তার অপর পাশে দোকান,যা গরম পড়েছে কোল্ড”ড্রিংক ছাড়া যেনো চলেই না।
তৃধার মুখোমুখি এসেই থামলো একটা গাড়ি,গাড়ির কালো রঙটা সূর্যের আলোতে চক চক করছে।
তৃধা বিরক্ত হলো অনেকটা, গাড়ি আছে দেখে কি অন্যের মুখের সামনে এনে থামাতে হবে?
তৃধা পাশ কাটিয়ে যেতেই নিয়েছিলো ভেতর থেকে একটা কন্ঠস্বর শোনা গেলো–,,তৃধা তালুকদার?
তৃধা থামলো পিছু ফিরে তাকালো গাড়ির দিকে,গাড়ি থেকে নেমে আসলো সুদর্শন এক যুবক।তৃধা এক নজর তাকিয়ে ভ্রু বাঁকালো।
যুবকের মুখে চওড়া হাসি,বেশ মানিয়েছে তাকে। নিঃসন্দেহে জেন্টেলম্যান!
তৃধার কৌতূহলি চাহনি, ছেলেটি হাত এগিয়ে দিয়ে বললো–,আমি মাহির!
তৃধা হাত বাড়ানো তো দূর উল্টো কিছুটা কঠিন কন্ঠে বলে উঠলো–,,তাতে আমার কি?
মাহির হেসে নিজের চুল গুলো ঠিক করতে করতে বললো–,, ইন্টারেস্টিং!
তৃধা হাত ঘড়ির দিকে তাকিয়ে বললো–,,যা বলার দ্রুত বলুন!
–,,বেশ তাড়া মনে হচ্ছে।
–,,হুম।তাড়া না থাকলেও অপরিচিত কারো সাথে বেশি কথা বলাটা আমার পছন্দ নয়।
–,,কথা বললেই তো পরিচিত হওয়া যাবে।যাই হোক বন্ধু হতে পারি?আদাভানের থেকে কোনো অংশে কম কিন্তু নই আমি!
তৃধা রেগে বললো–,,আপনার বন্ধুত্ব আপনি আপনার পকেটে রাখুন,একে তো ওই লোকটা কে আমার পছন্দ না তার উপর আপনাকে আরো বেশি বিরক্ত লাগছে এখন।আপনি কার মতো তা জেনে আমার লাভ নেই,নিজের রাস্তা মাপুন।
তৃধা হনহনিয়ে চলে গেলো, কোথা থেকে এসে পাগ’ল হাজির হয় আল্লাহ মালুম!
আদাভান গেইট থেকে বেরিয়ে তৃধা কে কারো সাথে কথা বলতে দেখে আগালো,মাহির কে এতো বছর পর দেখে ও চিনতে ভুল হলো না ওর।
আদাভান গম্ভীর কন্ঠে বললো–,,এখানে কি করছিস তুই?আর তৃধার সাথে কিসের এতো কথা!
মাহির হেসে বললো–,,তৃধা কে বেশ মনে ধরেছে আমার।সোনালির থেকেও বেশি সুন্দর, যদিও গায়ের রঙ এতোটা ফর্সা না তবে যা ফি’গার মাই’রি!চোখে মুখে উবছে পড়া জৌলুশ,রূপের কি বাহার,তোর কপাল খানা একবার দেখা তো এরিশ, কি কপাল নিয়ে এসেছিস তুই তোর কপালে যে যে মা”ল জুটে সব গুলাই অস্থি”র!
আদাভানের পায়ের র”ক্ত মাথায় উঠে গেছে একদম,এর নোং”রা নজর তৃধার উপর ও পড়েছে?রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারলো না আর স্ব জোরে বসিয়ে দিলে একটা।
মাহির যেনো প্রস্তুতই ছিলো ঠোঁটের কোন মুছে বললো–,,তবে যাই বলিস সোনালির মতো সহজ সরল নয় এটা, পটা’তে বেগ পেতে হবে বলে মনে হচ্ছে!
আদাভান রাগে দাঁতে দাঁত চেপে বললো–,,আরেকটা বা’জে কথা বললে বেশি ভালো হবে না মাহির!
–,,বউ কে বলছি তাই গায়ে লাগছে বুঝি?তোর মধ্যে কি এমন আছে বলতো? সব সুন্দর রমনী এসে শুধু তোর কাছেই ধরা দেয়।সোনালি ছে”কা দেওয়ার পর যে কোনো দিন সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারবি এটাই আশা করিনি আমি,কিন্তু হায় এখানে তো দেখছি অন্য কাহিনি একটা কচি মেয়েকে ঠিক ফাঁ’সিয়ে বিয়ে করে নিয়েছিস?শোন একটা টিপস দেই,ভার্সিটিতে তো তুই ক্রাশ বয় ছিলি তাও তোর গালফ্রেন্ড টিকলো না এখন তো বয়স হয়েছে এখন এরকম একটা কচি মা’ল সামাল দিতে পারবি তো?মেয়ে মানুষের মন,,,,
আর বলতে পারলো না মাহির,আদাভান এলোপা”তাড়ি মার”তে শুরু করলো তাকে,রাগে পুরো শরীর কাঁপছে আদাভানের,তৃধা হোক কিংবা অন্য কোনো মেয়ে তাদের নিয়ে এরকম খারা’প মন্তব্য শুনে কোনো কালেই চুপ থাকার মতো পুরুষ আদাভান নয়!মাহির যে কি পরিমান চরি”ত্রহীন এটা আদাভান ছাড়া আর কে ভালো করে জানে।
হাতাহা”তির এক পর্যায়ে আদাভানের মাথায় আঘা”ত লাগলো।মাহির ও ভালোই ব্যাথা পেয়েছে।
নাদিম,নোভা,আভা,নিশি,রাদিফ তো গেইটের সামনে এসে হা হয়ে গেছে,স্যার কারো সাথে মাঝরাস্তায় দাঁড়িয়ে মারা”মরি করছে?
তৃধার হাতে ছয়টা বোতল গাড়ির আড়ালে থাকায় কিছুই দেখতে পায়নি সে,সামনে এগিয়ে এসে নাদিম কে বললো-,,তোরা আসতে গেলি কেনো?আর বলিস না কি যে ভিড়,নে তো ধর!
নাদিম এখনো সামনে তাকিয়ে, তৃধা দৃষ্টি লক্ষ্য করে তাকালো,তৃধার চক্ষু চড়কগাছ এই বে’ডা ডিসু”ম ডাসু”ম করতে ও পারে!
স্টুডেন্টরা বের হতে শুরু করবে কিছু সময়ের মধ্যে যদি এটা কে এখন না থামানো হয়,কারোই মানসম্মান থাকবে না আর।
তৃধা অনেকটা সাহস সঞ্চয় করলো,মনে তার তীব্র অনিহা তবুও আদাভানের হাত ধরে চেঁচিয়ে বলে উঠলো–,,স্যার কি করছেন কি?এটা রাস্তা!
আদাভানের হাত থেমে গেলো পিছু ফিরে তৃধার দিকে অ”গ্নি দৃষ্টি নিক্ষেপ করলো,তৃধা কিছুটা ভড়কালো চোখ না আর কিছু, সে নিজের হাত আস্তেধীরে সরিয়ে নিলো।
মাহির নিজের কলার ঠিক করতে করতে বললো–,,তোকে তো আমি পরে দেখে নিবো।
আদাভান এগিয়ে গিয়ে বললো–,,কেনো? পরে কেনো?এখন দেখ পরে দেখান জন্য তোর ওই চোখ আস্ত রাখবো না আমি!
নাদিম এগিয়ে এসে বললো–,,স্যার প্লিজ থেমে যান স্টুডেন্ট রা দেখলে কি মনে করবে?
আদাভান কিছুটা শান্ত হলো মাহিরের গাড়িটা সাঁই সাঁই শব্দ তুলে ছুটে গেলো।
তৃধা চি”বিয়ে চিবি’য়ে বললো–,, এতোদিন তো অস”ভ্য ভাবতাম এখন তো দেখছি গু”ন্ডা পা”ন্ডার বাতাস ও লেগে আছে গায়ে!
আদাভান আচমকা তৃধার হাত চেপে ধরলো,টেনে নিয়ে গেলো কিছু দূরে পার্কিং করা নিজের গাড়ির দিকে।
তৃধা তো বেজায় ক্ষেপে গেছে হাত ছাড়ানোর চেষ্টা করে বললো–,,কি সমস্যা টানাটানি করছেন কেনো?ছাড়ুন বলছি ছাড়ুন আমার হাত!
নাদিম,নোভা,আভা এগিয়ে আসলো।স্যারের এমন আচরণ দেখে কৌতুহলে রাদিফ ও এগিয়ে আসলো।রাদিফ তো প্রশ্ন করে বসলো-,,স্যার তৃধা কে এভাবে কোথায় নিয়ে যাচ্ছে?
নিশি বিরক্ত হয়ে বললো–,,আমরা জানবো কি করে?আমরা তো তোমার সাথেই দাড়িয়ে ছিলাম নাকি?
আভা বলে উঠলো –,,আহা তুই আবার চে”তিস না তো।
আদভান গাড়ির কাছে গিয়ে থামলো,দাঁতে দাঁত চেপে গম্ভীর কন্ঠে বললো–,,গাড়িতে গিয়ে বসো চুপচাপ!
–,,যাবো না আমি কি করবেন আপনি?
আদাভান তৃধা কে ধাক্কা দিয়ে গাড়ির সাথে মিশিয়ে ফেললো,তৃধা চোখ মুখ খিঁচে বন্ধ করে ফেললো।
আদাভানের উপস্থিতি আরো কিছুটা আগাতেই তৃধা চোখ খুলে তাকালো,আদাভান এবার নিজের দু হাত দিয়ে তৃধাকে আঁটকে ফেললো।
তৃধা এবার ভয় পাচ্ছে, আদাভান এর আগে কতোবারই তো রেগে গিয়েছিলো এরকম তো কখনো করেনি আজ কি এমন হলো?
তৃধার কন্ঠনালি কাঁপছে, নিজেকে শান্ত রাখার চেষ্টায় বিফল হচ্ছে বার বার।তৃধার কপালে ঘাম জমলো বিন্দু বিন্দু।তৃধা জিজ্ঞেস করলো–,, এতো কাছে এসেছেন কেনো?কি সমস্যা আপনার!
আদাভানের এই মুহুর্তে ভীষন হাসি পাচ্ছে,যাক অবশেষে শয়’তানের নানি টাকে একটু হলেও ভয় পাওয়াতে পেরেছে!
আদাভান কে নিজের দিকে আরো ঝুঁকে আসতে দেখে তৃধা জোরে চিৎকার করে বললো–,,না…!
নাদিম উল্টো দিকে ঘুরে বলে উঠলো –,,আসতাগ”ফিরুল্লাহ!
নোভা,আভা,এদিকে ওদিক তাকালো,নিশি বিরবির করে বললো–,, স্যারের কি অধঃপতন শেষ মেষ কিনা রাস্তায়!
কিছু সেকেন্ড অতিবাহিত হলো তৃধা বুঝলো তার সাথে কিছুই হয়নি তখন স্বাভাবিক হলো কিছুটা, চোখ খুলে দেখলো আদাভান ঠিক আগের মতোই ওর দিকে ঝুঁকে তাকিয়ে আছে।তৃধা আরো কিছুটা মাথা নিচু করে ফেললো।
আদাভান মৃদু হেসে ফিসফিসিয়ে বললো–,,ভয় পেলেও তোমাকে বেশ সুন্দর লাগে,মাঝেমধ্যে একটু আধটু ভয় পেলেও তো পারো মেয়ে!
তৃধা বোকার মতো বলে উঠলো–,,কি?
আদাভান নিজে কে ঠিক করে ফেললো মুহুর্তেই,স্বাভাবিক ভাবে দাড়িয়ে আগের মতো গাম্ভীর্যতা বজায় রেখেই বললো–,,গাড়িতে উঠো,এখনই তোমাকে আমার সাথে যেতে হবে,দাদু, দাদী এসে পড়েছেন!কালকের মতো যদি আবার বেয়াদ’বি করেছো না চ’ড়িয়ে দাঁত সব কটা ফেলে দিবো আমি!
তৃধা চোখ বড় বড় করে তাকালো, কি খারা”প লোক ভাবা যায়!
আদাভান আবার বলে উঠলো–,,গাড়িতে উঠো।
তৃধা চাপা সুরে বললো–,,যাবো না!
আদাভান ভ্রু কুঁচকে বললো–,,ভেবে বলছো তো?একটু আগে তোমার মস্তিষ্কের ভাবনা টা সত্যি করে দিবো তাহলে?
তৃধার চোখ আপনা আপনি বড় হয়ে গেলো।সে দ্রুত গিয়ে বসে পড়লো গাড়িতে।কি সাং”ঘাতিক কথা বার্তা,তৃধার গা গুলি”য়ে আসলো অসম্ভব অসম্ভব এগুলা ভাবলেই কেমন পিলে চ’মকে উঠে আদাভানের দেওয়া চুমু?নাউজু”বিল্লাহ, আসতা”গফিরুল্লাহ!দুই গালে চাপ’ড় মে’রে তওবা পড়ে নিলো তৃধা।
নাদিম বলে উঠলো –,,এটা কি হলো?
নোভা বলে উঠলো–,,তোর দাদি কি চলে এসেছে নাকি?
নাদিম ভাবুক হয়ে বললো–,, তাই তো মনে হচ্ছে!
আভা বললো–,,তৃধা যেতে রাজি হয়ে গেলো?
রাফিদ বলে উঠলো–,,কার দাদী,কিসের রাজি হওয়া আমাকে কেউ কিছু বলবা প্লিজ?
নোভা বলে উঠলো–,,তুমি মুড়ি খাও!
নিশি বলে উঠলো–,,কার জন্য দোয়া করবো বুঝতে পারছি না,স্যারের জন্য নাকি তৃধার জন্য? দুজনই তো সু”নামি!
———————
তৃধা মুখটাকে বাংলার পাঁচ বানিয়ে রেখেছে,আদাভান দেখেও কিছু বলছে না।
গাড়ি থেকে নেমে আসলো আদাভান,তৃধার দিকের দরজা টা খুলে বললো–,,বের হন মহারানী ক’টক’টি!
তৃধা রেগে বললো–,,আমি ক’টকটি হলে আপনি সেনাপতি বিট”কেল!
আদাভান ফোঁস করে শ্বাস ছাড়লো,আপাতত ঝগ’ড়া করা যাবে না,বারান্দা থেকে রাস্তায় কি ঘটছে সব দেখা যায়, বলা তো যায় না দাদা দাদির নজরে যদি পড়ে যায়।
আদাভান গিয়ে দাড়িয়ে পড়লো দরজার সামনে তৃধা পেছনে ছিলো নিচু হয়ে ফোন চালাচ্ছিলো আর হাঁটছিলো,আদাভানের পিঠের সাথে এসে লাগলো ধা”ক্কা।
তৃধা মাথা চেপে ধরে বললো–,,গন্ডা”র একটা!
আদাভান বলে উঠলো–,,এর হিসাব পরে করছি এসে পাশে দাঁড়াও।
তৃধা বলে উঠলো–,,অসহ্য!
আদাভান নিজের হাত দুটি তৃধার দিকে বাড়াতেই তৃধা পিছিয়ে গেলো,আদাভান নিজেও এগিয়ে গেলো, তৃধার ওড়নার দুপাশ তুলে মাথায় ঘোমটা দিয়ে বললো–,,নাও পার্ফেক্ট!
চলবে……