#পারবোনা_আমি_ছাড়তে_তোকে
#লেখনীতে_ইশিতা_ইসলাম
#পর্বঃ ৪
~ইরফান, রোহান আর ফাহাদ তিনজন এক সাথে বসে আছে এর মধ্যে সাব্বির আর নিরব আসলো ওরা ইরফান এর ফ্রেন্ড ফাহাদ এর সাথে ও ভালো সম্পর্ক ফাহাদ ইরফান এর সকল ফ্রেন্ড কেই ইরফান এর মতো বড় ভাই বলেই সম্মোধন করে। ফাহাদ কোনো কাজ করে না বাবা কাকা রা অনেক বার বলেও তাকে অফিসে পাঠাতে পারে নি। ইরফান বাবা কাকা দের বলেছে ওকে যেনো কোনো রকম জোরজবরদস্তি না করেন ওর যখন ইচ্ছে হবে তখন ও নিজেই যাবে অফিসে এখন ছোট মানুষ চিল করতে দাও।
“ইরফান USA থাকতেই চেয়েছিলো ফাহাদ কে বাইক কিনে দিতে” ফাহাদ বলেছিলো ভাইয়া আগে তুমি আসো এরপর দুইভাই একসাথে বাইক কিনবো তুমি তো কিছুদিন পরেই আসছো…।
~~দুইভাই একসাথে বাইক কিনে এখন সবাই মিলে বাসার কাছে বসে বসে আড্ডা দিচ্ছে ‘ এমন সময় নিরব বললো।
গাইস “আজকে এতো বছর পড়ে ইরফান দেশে আসছে ” আবার দুইভাই একসাথে বাইক কিনেছে এখন তো একটা ট্রিট নিতেই হয়.!
ইরফান গম্ভীর কণ্ঠে জ্ববাব দিলো, বাইক কিনেছি, বিয়ে তো করিনি।
এবার নিরোব আর রোহান দুজন মিলেই বলা শুরু করলো “আমাদের ট্রিট দিতে হবে দিতেই হবে।
ইরফান কানে এক আঙুল ঘষে বললো “আরে ভাই আস্তে বল.কান তালা লেগে যাচ্ছে। আচ্ছা চল কি খাবি আজ তোদের আমার তরফ থেকে ট্রিট।
সাব্বির বলে ” তোরা যা আমার একটু দরকার আছে আমি আজ উঠি..!
ফাহাদ ও ওদের উদ্দেশ্য করে বলে ” তোমরা ইরফান ভাইয়ার সাথে যাও ” আমার ও একটু দরকার আছে.. “সাব্বির ভাইয়া চলো তোমাকে ও এগিয়ে দিয়ে আসি।
ইরফান ফাহাদ কে আস্বস্ত করে বললো, আচ্ছা তোরা দুজন যা আমি ওদের নিয়ে রেস্টুরেন্টে যাই।
ইরফান বাইক নিয়ে টান দিলো গলির মোড় দিয়ে” পেছনে আরেকটা বাইকে রোহান আর নিরব চললো।
~ফাহাদ এর বাইকে উঠে বসলো সাব্বির।
_নিরব কে এগিয়ে দিয়ে আসার সময় ফাহাদ এর নজরে পড়লো একজন পরিচিত মেয়ের মুখ।
ফাহাদ গম্ভীর কণ্ঠে ডাকলো, এই মেয়ে এতো রাতে একা একা এখানে কি করছো…?
হটাৎ করে পুরুষালি এক গর্জনে কেপে উঠলো রাইসা..! পেছনে ঘুরে লোকটাকে দেখে লম্বা এক সস্থিরশ্বাস ফেললো রাইসা।
“ফাহাদ কিছুটা রাগ দেখিয়ে বললো ” কি হলো কি “,কি করছো এখানে “..?
রাইসা এতো রাতে এখানে ফাহাদ কে দেখে একটু খুশি হলেও ” সে ভয় পাচ্ছে। ফাহাদ মাহি কে সব সময় শাসন করে সাথে রাইসা কেও। রাইসা ভেবে পায় না মাহি ওর বোন তাই ওকে শাসন করতেই পারে ফাহাদ কিন্তু রাইসা কে ও কেন চোখে চোখে রাখে।
রাইসা কাঁপা কাঁপা গলায় বললো, না মানে আ..আমি ( একটু আমতা আমতা করে বললো রাইসা)
ফাহাদ গম্ভির গলায় বললো “কি..?
“– নানু বাসায় গিগেছিলাম আম্মুর সাথে ” নানু খুব অসুস্থ তাই আম্মু আস্তে পারেনি। বাসায় আপা একা আছে তাই রিক্সা করে বাসায় যাচ্ছিলাম “রিক্সা টা রাস্তায় কিছু একটা সমস্যা হচ্ছিল তাই রিক্সাওয়ালা মামা নামিয়ে দিয়ে চলে গেলো।
ফাহাদ রাগান্বিত কন্ঠে বললো “মাঝ রাস্তায় নামিয়ে দিয়ে গেলো ” ওই শালা কে পেলে ওর ঠেং ভেঙে হকিস্টিক খেলবো আমি…?
রাইসা হতোবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো ফাহাদ এর দিকে.. “রিক্সা নষ্ট হতেই পারে এতে রিক্সাওয়ালা মামার কি দোষ। ” কিছু বলতে পারলো না ভয়ে ”
ফাহাদ : এতো রাতে একা রাস্তায় দাঁড়িয়ে না থেকে আমাকে কল দিলে ও তো পারতে।
~~রাইসা অবাক হয়ে তাকিয়ে বললো৷ আ… আপনাকে..!
” হুমমমম..”কেনো আমার নাম্বার নেই তোমার কাছে
–” ইয়ে মানে.. না নেই
তুমি বোনের কেমন বান্ধবী “তার ভাইয়ের নাম্বার নেই।
তোমার ফোন টা দেও।
চোখ দুটি সজল করে রাইসা বললো, এএ”
— হ্যা দেও ”
এর পর রাইসার ফোন টা নিয়ে নিজের নাম্বার টা তুলে দিয়ে বললো.. “নাম্বার টা সেভ করে রাখো “, যেকোনো সময়ে অসময়ে “, প্রয়োজনে, অপ্রয়োজনে কল করতে পারো।
রাইসার মাথার উপর দিয়ে সব গেলো। অফ হোয়াইট রঙের গাউন এর সাথে বেনি করা চুল কোমর পর্যন্ত নেমেছে ” ল্যাম্পপোস্ট এর আলো হালকা এসে সুন্দর মুখশ্রি তে পড়ে মায়াবিনি লাগছে।
রাইসা “মোবাইল টা নিয়ে নাম্বার টা সেভ করলো, ফাহাদ ভাই। ফাহাদ কিছুক্ষণ পড় গলা খাঁকারি দিয়ে বললো..
” বাইকে উঠো…।
“: না ভাইয়া আমি চলে যেতে পারবো।
ফাহাদ চোখ বুঝে কিছু একটা হজম করার মতো একটা লম্বা ঢোক দিলে একটু তেজ নিয়ে আবার ও বললো.. বাইকে উঠে বসতে বলেছি বসো..!,
রাইসা চুপচাপ বাইকে বসলো এই লোক এর কথা অমান্য করার সাহস তার নেই।খুব ভয় পায় ” ছোট বেলা থেকে চেনে আর এই রাস্তায় একা একা যাওয়া ও বিপদ জনক। তাই ফাহাদ এর সাথে যাওয়াই নিজেকে নিরাপদ মনে করলো
ফাহাদ একটু অনুনয়ের সাথে বলে “ধরে বসো “..
রাইসা ফাহাদ এর কাধে হাত রাখতে একটু সংকোচ বোধ করে.. পেছনে সিট ধরে বসলো।
~ফাহাদ বুঝতে পেরে আর কিছু না বলে বাইকে টান দিলো..!
চলবে…..?
#পারবোনা_আমি_ছাড়তে_তোকে
#লেখনিতে_ইশিতা_ইসলাম
#পর্বঃ ৫
☆সকালে ঘুম ভাঙলে মাহি বুঝতে পারে আজও দেরি হয়ে গেছে ঘুম থেকে উঠতে “সে দ্রুত ফ্রেশ হয়ে নিচে নামলো এটা তার রোজকার অভ্যাস দেরি তে ঘুম থেকে উঠে, খাওয়ার সময় পায় না মাহি না খেয়ে কলেজ যাওয়াটা ওর অভ্যাস হয়ে গিয়েছে। নিচে নামতেই রাবেয়া বেগম বললেন বস আমি খাবার দেই… ”
~ মাহি : না.. না মা সময় নেই..!
রাবেয়া বেগম : না খেতে খেতে কংকংকাল হয়ে যাচ্ছিস দিন দিন..!খেয়ে যা বলছি।
মাহি : মা এমনিতেই দেরি হয়ে গেছে… “খেতে বসলে আরো দেরি হয়ে যাবে।
এমন সময় ইরফান নিচে নামতে নামতে বললো কি হয়েছে কাকিয়া..?
~মাহি পেছনে ঘুরে তাকিয়ে দেখলো পড়নে সাদা শার্ট “…ফুল হাতার শার্টের কনুই পর্যন্ত গুটানো..! এক হাত পকেটে অন্য হাতে মোবাইলটাতে কিছু একটা দেখতে দেখতে ওদের দিকে না তাকিয়েই প্রশ্ন টা করেছে ইরফান… ”
রাবেয়া বেগম : দেখ না প্রতিদিন না খেয়ে কলেজ যাওয়াটা ওর অভ্যাসে পরিণত হয়েছে…।
ইরফান : তুমি কিছু বলো না কেনো…!
রাবেয়া বেগম : “আমি কিছু বললে শুনে নাকি.. ” দুই ভাই বোন এর কেউ আমার কথা শুনে না “,তোর ভাই বোন তুই সামলা..!
ইরফান : আচ্ছা, আমি দেখছি।
রাবেয়া বেগম : হে আমি যাই আমার অনেক কাজ আছে.।
মাহি : আমিও যাই আমার ও দেরি হয়ে যাচ্ছে….
~বলেই মাহি হাটা শুরু করলেই ইরফান আস্তে করে বললো দাড়া… মাহি চুপচাপ দারিয়ে রইলো।
ইরফান : তোকে যেতে বলেছি…?
মাহি : না..(কাপা কাপা গলায় বললো)
ইরফান : চুপচাপ খেতে বসবি নাকি অন্য ব্যবস্থা করবো..?
এবার মাহির পুরো শরীলটা ভয়ে জমে গেলো কিছু বলার সাহস টা পেলো না” এইদিকে দেরি হয়ে যাচ্ছে… চুপচাপ গিয়ে টেবিলে বসলো ইরফান ভাইয়ার উপরে সে খুবই বিরক্ত সব সময় তার সাথে এমন করে।
~মাহি টেবিলে বসলে ইরফান নিজে গিয়ে মাহি কে খাবার তুলে দেয় ” মাহি কিছু না ভেবেই খাওয়া শুরু করে “,তারাতারি খেতে হবে দেরি হয়ে গেছে অনেকটা।
ইরফান : আস্তে খা…গলায় বাধবে তো..!
মাহি খেয়েই চলেছে ইচ্ছে করছে না খাবার শেষ করতে ” কিন্তু কি করার ইরফান ভাইয়া সামনে, জোর করে হলেও খেতে হবে।
ইরফান ফোনে কিছু একটা করছে আর কিছু ক্ষন পর পর মাহি কে দেখছে।
স্কাইব্লু গাউন পরিহিতা মেয়েটি এক অপরুপ সৌন্দর্যের অধীকারিনি “এতো সুন্দর চেহেরাটা ভয়ে ভৃত হয়ে যাওয়াটা চোখে পড়ার মতোই। চিকন চিকন ঠোঁট জোড়া যেনো গোলাপের ন্যায় সচ্ছ “ও কোমল।
~মাহি খাওয়া শেষ করে বেসিং থেকে হাত ধুয়ে এসে দেখলো ইরফান ভাইয়া নেই ” মাহি কিচেনে থাকা রাবেয়া বেগম কে উদ্দেশ্য করে বললেন মা যাচ্ছি বলেই বের হলো।
~বের হয়েই মাহি দেখলো ইরফান ভাইয়া বাইক নিয়ে দরজার সামনে দারিয়ে আছে ”
ইরফান : বাইকে উঠে বস..!
মাহি ঠিক বিশ্বাস করতে পারলো না মাহি কে বাইকে উঠতে বলছে ইরফান ভাইয়া. …?
ইরফান : কিরে কথা কানে যায় না “উঠে বস.. তোর নাকি দেরি হয়ে যাচ্ছে, গাড়িতে গেলে দেরি হবে বাইকে ওঠ তোকে নামিয়ে দিয়ে যাই।
মাহি চুপচাপ উঠে বসলো…, “মাহি এই প্রথম বার বাইকে উঠলো তাই কেমন যেনো এক ভয় কাজ করছে..আবার অনেক আনন্দ লাগছে।
ইরফান : ধরে বস পরবি তো..!
মাহি কাপা কাপা হাতে ইরফান এর ডান হাতের বাহু তে হাল্কা করে ধরে বসলো.. ”
~ইরফান মাহির ছোট হাতের স্পর্শে বুঝতে বাকি রইলো না মাহি কাপছে।
~বাইক চলছে রাস্তা দিয়ে মাহির খোলা চুল গুলো উরছে বাতাসের সাথে “ঢাকা শহরের ওলি গলি পথ দিয়ে যাচ্ছেএক অষ্টাদশী তার ইরফান ভাইয়ার সাথে। অষ্টাদশীর মনে যেনো কিসে এক আওয়াজ হচ্ছে। চলতি পথে কোলাহল এর শব্দ বাতাস এর শো শো শব্দে যেনো ঢেকে রেখেছে এই অষ্টাদশীর হৃদয়ের আওয়াজ।
☆কিন্তু এমন টা কেনো হচ্ছে জানা নেই মাহির। হটাৎ বাইক থামাতে মাহির ভাবনার বিঘ্ন ঘটে।
ইরফান : একটু ও দেরি হয়নি ….(মেকি স্বরে)
মাহি কিছুটা সময় ইরফান এর দিকে তাকিয়ে থাকে এর পর বিরবির করে বলে এতো সুন্দর ভাবে সব সময় কথা বললেই তো পারেন… ”
ইরফান : কিছু বললি..?(এবার একটু গম্ভীর কণ্ঠে বলে)
মাহি : না.. না আমি আবার কি বলবো.. “!
~রিক্সা থেকে নামতে নামতে রাইসা মাহি কে দেখতে পেয়ে ওর কাছে এগিয়ে আসলো।
<<মাহি রাইসা কে দেখেই রাইসার কাছে গিয়ে দারালো " ইরফান কে দেখে চিনতে পারলো না রাইসা আগে কখনো দেখেনি তবে মাহির থেকে শুনেছে মাহির "বড় কাকার ছলে দেশে আসছে তাহলে কি এটাই সে ইরফান ভাইয়া। রাইসা : ইরফান কে উদ্দেশ্য করে সালাম দিলো আসসালামু আলাইকুম। ইরফান : ওয়ালাইকুম আসসালাম." তুমি রাইসা ..এম আই রাইট.! রাইসা : জি... রাইসা এবার মাহি কে উদ্দেশ্য করে বললো ভালো লাগলো আজকে অন্তত সঠিক টাইমে ক্লাসে এসেছিস ইরফান : এর পর থেকে তোমার ফ্রেন্ড প্রতিদিন টাইম মতোই আসববে.. তোমারা ভেতোরে যাও। রাইসা ভেতোরে যেতে যেতে মাহি কে বললো "কিরে এটাই তোর ইরফান ভাইয়া...? মাহি : হুম "..! রাইসা : তুই যে বলতি সে অনেক রাগি কই দেখে তো মনে হয় না। মাহি : বাইরে থেকে দেখছিস তাই বুঝতে পারছিস না.. যাক বাদ দে তোর কাছে ভালো লাগলে ভালো.! ★ক্লাস শেষ ড্রাইভার আংকেল আসেনি আজ মাহি অপেক্ষা করছে রাইসা ও মাহির সাথে ছিলো মাহি রাইসা কে বলে তুই চলে যা পরে গাড়ি পাবি না আমি ওয়েট করি হয়তো রাস্তায় জ্যাম অনেক তাই আংকেলের দেরি হচ্ছে। রাইসা : না আমি থাকি আংকেল আসুক তার পর যাই " মাহি : তোর দেরি হচ্ছে তো তা ছাড়া আমাকে তো নিতে আসবেই তুই চিন্তা করিস না আমি এখানেই থাকবো। রাইসা : কিন্তু "... মাহি : যা ওরে আমার জান রে বেইবি রে আমি ছোট না তুই ও আমার থেকে বড় না..এতো সিরিয়াস হতে হবে না। রাইসা : আচ্ছা তো থাক যাই, আমি। ~ইরফান বাইক থামালো মাহির কাছে এসে " সানগ্লাস টা টা খুলে বুকে শার্ট এর সাথে গুজে বললো.. ইরফান : বেশি দেরি হয়েছে...? মাহি : উহু..! ইরফান : বস..। মাহি বাইকে উঠে বসার সময় পেছন থেকে একটা ছেলে মাহির দিকে ইশারা করে বললো " উফফ ভাই করা মাল তাকালেই কারেন্ট লাগে...! মাহি কপাল কুচকে চোখ বুজে রইলো.. অসভ্য লোক কথা কার আল্লাহ ইরফান ভাইয়া আবার শুনেনিতো..?( মনে মনে ভাবলো) "ইরফান লুকিং গ্লাসে একবার দেখে বাইক স্টার্ট দিলো..। চলবে...? #পারবোনা_আমি_ছাড়তে_তোকে #লেখনিতে_ইশিতা_ইসলাম #পর্বঃ ৬ ~ক্লাসে বসে মাহি আনমনে কিছু একটা ভাবছে "বিষয় টা খেয়াল করতে পেরে রাইসা বললো এই মাহি তোর কি হয়েছে বল তো তখন থেকে কি ভাবছিস এতো "? মাহি উষ্ণ স্বরে বললো, কাল তুই চলে যাওয়ার পর ইরফান ভাইয়া আসছে আমাকে নেওয়ার জন্য। রাইসা ভাবলেশহীন ভাবে জ্ববাব দিলো, তো কি হয়েছে " ইরফান ভাইয়া হয়তো ড্রাইভার আংকেল কে গাড়ি নিয়ে আসতে নিষেধ করেছে "তাই আসে নি ইরফান ভাইয়া এইদিক দিয়ে যাচ্ছিলো তাই তোকে, সাথে করে নিয়ে গেছে " ব্যাপার টা এমন ও তো হতে পারে,! এটা নিয়ে এতো চিন্তা করার কি আছে..? মাহি শক্ত কন্ঠে বললো, আমি এটা নিয়ে ভাবছি না "আসলে ব্যাপার টা অন্য। রাইসা ভ্রু জোরা এক করে মাহির দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলো তাহলে ব্যাপার পার টা কি শুনি..? --আমি যখন বাইকে বসছিলাম তখন " পেছন থেকে একটা ছেলে, আমায় উদ্দেশ্যে করে একটা বাজে কথা বলেছে "ফাহাদ ভাইয়া হলে ছেলেটার অবস্থা খারাপ করে দিতো ওখানেই " কিন্তু ইরফান ভাইয়া কিছু বললো না....!(এক মনে কথা গুলো বললো মাহি) রাইসা ভাবুক স্বরে জিজ্ঞেস করলো, ইরফান ভাইয়া "কি শুনেছে...? -- ঠোঁট উল্টে জ্ববাব দিলো মাহি " জানি না। রাইসা মাছি তাড়ানোর মতো করে বললো "হয়তো শুনেই নি " তুই শুধু শুধু এতো ভাবছিস "যাই হোক ইরফান ভাইয়া মানুষ টা কিন্তু " ভালো আছে। --মুখ ভেংচি কেটে বললো মাহি " ওনার রাগ সম্পর্কে তোর কোনো আইডিয়া নেই "তাই ভালো বলছিস। " ওরা দুজন কথা বলছে ক্লাস থেকে স্যার চলে গেলে ওদের আরো দুটো ফ্রেন্ড নিপা ও আদিবা " ওদের দিকে এগিয়ে এসে বসে ওদের পাশে। নিপা চোখ ছোট ছোট করে মাহি ও রাইসার দিকে তাকিয়ে বলে কি কথা বলা হচ্ছে দুই বান্ধবী মিলে শুনি। রাইসা বললো, আমি আর আমার জানু কি কথা বলি "তোকে বলবো কেন। প্রতিউত্তরে আদিবা বলে, হইছে " তোদের পারসোনাল কথা শুনতে ও আসি নাই "। মাহি এবার মুখ ভেঙচি কেটে বললো শুনতে চাইলেও কি শুনাতাম নাকি বলো জানু..! -- হুমম জানু " এবার নিপা বললো "হুহ হইছে ঢং বাদ দে ক্লাস শেষে ফুচকা খাবি "তাহলে সবাই এক সাথে বসে খাওয়া যাবে " অনেক দিন হলো খাই না। মাহি উল্লাসে চেচিয়ে উঠে বললো, হুমম খাবো তো "।" রাইসা ও এক ঝলক হাসি দিয়ে বললো, ঠিক আছে..। ____________✪_______________★__________________✪ মাহি, রাইসা, আদিবা ও নিপা চার বান্ধবী বসে ফুচকা খাচ্ছে এমন সময় একটা ছেলে এসে মাহির পায়ের কাছে বসে বলছে "আপা আমার ভুল হয়েছে মাফ করে দেন আপা " জিবনেও।এই ভুল হবে না আপা আপনি মাফ করে দেন প্লিজ আপনার পায়ে পরি আপা মাফ করেন। ~ওরা সবাই অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে "ছেলে টার মাথায় বেন্ডিস" এক চোখ মেলে তাকাতে পারছে না"নাকে পায়ে বেন্ডিস দেখে " মাহির কিছুক্ষণ সময় লাগলো চিনতে এটাই সে ছেলে যে কিনা কাল মাহি কে বাজে কথা বলেছে...!অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো এর এই অবস্থা কে করেছে...? তবে কি ইরফান ভাইয়া। কিন্তু কাল ইরফান ভাইয়া কে দেখে তো বোঝা গেলো না সে কিছু শুনেছে কিনা বা রেগে ছিলো কিনা। স্বাভাবিক ভাবেই সে বাইক চালাচ্ছিল। ~এতোক্ষনে রাইসা ও সব টা বুঝে গেলো বুঝতে পারলো না শুধু নিপা, আদিবা, ফুচকা ওয়ালা মামা আর চারিপাশের লোকজন গুলা। মানুষ ভির জমে যাচ্ছে দেখে রাইসা মাহি কে কিছু একটা ইশারা করলো। মাহি আৎকে উঠে বললো "সরুন আপনি কি হচ্ছে টা কি...! লোকটা বললো আগে বলুন আপনি ক্ষমা করে দিয়েছেন আমায়...? হ্যাঁ! হ্যাঁ করেছি ক্ষমা আপনি উঠুন..! এরপর লোক টা চলে গেলো "মাহি ভাবছে ইরফান ভাইয়া মাহির জন্য ওই লোক টা কে এমন ভাবে মারলো " এটা কি সত্যি...! মাহির ভাবনা কে সরিয়ে রাইসা মাহি কে বললো কিরে চল বাকি টা বাসায় গিয়ে ভাবিস "ড্রাইভার আংকেল যে চলে আসছে...! মাহি বলে " হুমম " শুন তোকে নামিয়ে দিয়ে যাবো আমি চল..। " রাইসা না সূচক মাথা নাঁড়ালো না.. তুই যা আমি রিক্সা করে চলে যাবো। উহুম "তুই আমার সাথেই যাবি " চল ফাহাদ ভাইয়া বলেছে নামিয়ে দিয়ে বাসায় যেতে দিন কাল ভালো না আবার তোর রিক্সা নাকি রস্তা ঘাটে নষ্ট হয়ে যায় "আয় আমরা এক সাথে যাবো। না... তুই যা ! "তুই বেশি বুঝিস..।" রাইসা জ্ববাব দিলো "হ্যাঁ বেশি বুঝি! "যা তুই বাসায় গিয়ে কল দিস কথা আছে..! রাইসা রিক্সায় বসে ভাবছে... কি ফালতু লোক ভাই বুঝি না মাহি কে আবার বলা লাগলো আমার রিক্সা মাঝ রাস্তায় নষ্ট হয়ে গিয়েছিলো...! সি সি ক্যামেরার মতো সারাক্ষণ নজরে রাখে খেয়ে দেয়ে কোনো কাজ নেই নাকি...! ~মাহি গাড়ি তে উঠে বসলে ড্রাইভার আংকেল বললো " মাহি মামনী তোমার বান্ধবী কোথায় ফাহাদ বাবা তাকে ও বাসায় নামিয়ে দিতে বলেছে আজ থেকে " ~"ও চলে গেছে! ~"ওওও তাহলে গাড়ি স্টার্ট দেবো..? ~",হুম. "চলুন। রোহান একটা কাজে দিনাজপুর এসেছে ৪ দিন এখানে থাকা পরবে "একটা ফটো কপি দোকানে যাচ্ছে কিছু কাগজ কপি করবে এমন সময় সামনে থেকে আসা একটা মেয়ের সাথে ধাক্কা লাগলে মেয়েটার হাতের সকল পেপার গুলো নিচে পড়ে যায় "মেয়েটা রেগে গিয়ে রোহান কে বললো " দেখে চলতে পারেন না বুঝি...! রোহান অপলক দৃষ্টি তে তাকিয়ে থাকে কিছুক্ষন এর "পর ভ্রন কাটলে জবাব দেয় " দেখেই তো চলি তবে মানুষ এর চলার পথে পরিরা চলাচল করলে তো আর দেখা যায় না। "সুন্দরী মেয়ে " হালকা ঢেউ খেলানো চুল গুলো কোমর এর নিচ পর্যন্ত পড়ে আছে খোলা চুলে দুপাশে ক্লিপ লাগানো নাকের ডগা টা রাগে লাল হয়ে গেছে "এই যে মিস্টার একে তো দেখে চলতে পারেন না তার ওপরে আবার বশি কথা বলেন " রোহান নরম স্বরে বললো, আরে "তুমি রেগে যাচ্ছো কেনো শুনি " আচ্ছা আমি পেপার গুলো তুলে দিচ্ছি তুমি দাড়াও... ~নাহ কোনো দরকার নেই আমি নিজেই তুলতে পারবো আপনি শুধু এরপর থেকে আগে পিছে দেখে হাটা চলা করবেন "এই বলে মেয়েটি পেপার গুলো তুলতে লাগলো। রোহান বিস্ময়কর ভাবে তাকিয়ে বললো "নাম কি তোমার...! মেয়েটি পেপার তুলতে তুলতে বললো মেয়ে মানুষ দেখলেই নাম ঠিকানা জিজ্ঞেস করতে মন চায় বুঝি...? রোহান এদিক ওদিক মাথা নাড়লো "না...না সবাই কে না তোমার দেখে নাম জানতে মন চাইলো "। " মেয়েটার বান্ধবী দূর থেকে ডাকছে "এই অহনা চল দেরি হয়ে যাচ্ছে তো..! অহনা ঘাড় ঘুড়িয়ে বলে, আসছি দাড়া...? পেপার গুলো তুলে অহনা চলে যাচ্ছে.."।" রোহান পেছন থেকে ডাকলো শুনো...? ~"অহনা কিঞ্চিৎ কপাল কুচকে বললো, ইভটিজিং করছেন নাকি...? __ ধুর মেয়ে তুমি খুব বোকা কোনটা ইভটিজিং আর কোনটা ভালোবাসা তাও বুঝো না...! অহনা অবাক চোখে তাকিয়ে বললো, প্রথম বার দেখলেন আমায় "আর বলছেন কিনা ভালো বাসা...।" আপনি কি পাগল..? ---এতো দিন তো ঠিকি ছিলাম। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে পাগল হয়ে যাবো! ~"একটি সিট বুকিং করে পাবনা চলে যান..! ~"একটা না নিলে দুটো সিট নিতে হবে..! ~ ~"চিন্তিত ভঙ্গিতে জিজ্ঞেস করলো অহনা, দুটো কেনো..? " চলবে.....?