#পারবোনা_আমি_ছাড়তে_তোকে
#লেখনীতে_ইশিতা_ইসলাম
#পর্বঃ ১৫
~_ঘুম থেকে উঠতে বেশ অনেক টাই দেরি হয়েছে মাহি “হবার কথাই সারা রাত ” অহনা, মাহি, ও ফাইজা তিনজন মিলে গল্প করে গভীর রাতে ঘুমিয়ে ছিলো রাত তখন প্রায় ০৩:৩০ মিনিট। এরপারে যে যার রুমে গিয়ে শুয়ে পড়ে “মাহি সিঁড়ি দিয়ে নিচে নেমে সদর দরজার কাছে যেতেই ইরফান এর ডাক শুনে দাঁড়িয়ে পড়ে পেছনে ঘুরে তাকালো ” কিন্তু ইরফান এর চোখের দিকে তাকানোর সাহস পেলো না মাহি ”
“ইরফান বেসিনে হাত ধুতে ধুতদ বললো..খাবার খেতে আসেন।
_ মাহি চিবুক নামিয়ে একটু ইতস্তত করে বলে..” না “মানে ” সময় অল্প।
~ইরফান মোলায়েম কণ্ঠে বললো “আমি বুঝে নেবো ” আপনি আসেন।
মাহি নিশ্চুপ “গিয়ে খাবার টেবিলে বসেছে ” রাবেয়া বেগম এসে দুজন কে খাবার পরিবেশন করতে লাগলো “মাহি কোনোমতে খাওয়া শেষ করে উঠে আসতেই ” ইরফান হাত ধুয়ে টিস্যু দিয়ে হাত মুছতে মুছতে বললো”
হাত ধুয়ে তারা তারি বাইরে আসেন “অপেক্ষা করছি ”
“মাহির এবার অস্থিরতা তৈরি হয়েছে ” ইরফান ভাই নিয়ে যাবে “রাজশাহী যাওয়ার পর থেকে ” মাহি গাড়ী করেই চলে যায় কলেজ “ইরফান আজ আবার ইরফান ভাইয়ের সাথে যেতে হবে ” অন্য দিন থেকে আজকে আরো বেশি অন্যরকম লাগছে বিষয় টা “আজকাল ইরফান ভাই এর কাছা কাছি থাকলে মাহি কেমন যেনো এক ঘোর এর মধ্যে থাকে ”
“ইরফান ভাই কি জানে অষ্টাদশীর হৃদযন্ত্র কিভাবে দামামা বাজায় ” অষ্টাদশীর হৃদয়ের ব্যাকুলতা বুঝে কি..??
হয়তো বোঝে না “।
ইরফানভাইয়ের এর সুক্ষ চাহনী যে অষ্টাদশীর হৃদয়ে তোলপাড় শুরু করে সেটাও বুঝে না!
বাইকের হর্নের আওয়াজ কানে যেতেই ” মাহি সোফা থেকে নিজের ব্যাগটা নিয়ে বেড়িয়ে গেলো”সারা~
_বাইক চলছে দূর গতিতে দুজনের মধ্যে কনো কথা হচ্ছে না “আজ মাহির প্রতিদিনের থেকেও একটু বেশি অস্থিরতা অনুভব হচ্ছে ” আজ দুজনেই কালো রঙে আবৃও “মাহির ফরসা ধপধপে রঙের সাথে কালো রঙের গাউনে বেশ উজ্জ্বলতা ফুটে ওঠে মুখশ্রী তে ” ঠিক যেনো সন্ধ্যা রাতের আধার রূপে দেখা যায় চাঁদ।
“কিন্তু শ্যাম বর্ণের ইরফান কেও কালো কালো রঙ টায় বেশ মানায় “এই যে একটা সাদা টিশার্ট এর উপরে একটা কালো রঙের শার্ট পড়নে কি অদ্ভুত ভালো লাগছে বলে বুঝানোর মতো নয় ” ইরফানের শার্টের বোতাম গুলো খোঁলা হাতা গোটানো ” বাইকের বেগের সাথে বাতাস বইছে “সে বাতাসে ইইরফানের খোঁলা শার্ট টা হাওয়ায় উরছে ”
না চাইতেও বিষয় টা মাহির নজরে এলো ” মাহি আনমনে বলে ওঠে ”
“~এখানেই তুই শেষ মাহি..!
” মাহি কে কলেজ নামিয়ে দিয়ে “ইরফান নিজ গন্তব্যে পৌঁছাল ” দুইদিন পড়ে ইরফান এর কোম্পানি চালু হবে ” এখন অনেক কাজ ” কিছু দিন পড়ে চালু করবে ভেবেছিল কিন্তু সব কাজ তারাতারি শেষ হয়ে যাওয়াতে দুদিন পরেই উদ্বোধন টা সেরে ফেলবে “যতো দ্রুত সম্ভব ইরফান নিজের কাজ গুছিয়ে ফেলতে চায় ”
“বাইরের সকল কাজ ফাহাদ কে বুঝিয়ে দিয়ে ইরফান আফিস রুমে প্রবেশ করে কাগজ পএ গুলো সব চেইক করে নিলো ”
~মাহি ও রাইসা বসে আছে, “এর মাঝেই তাঁদের সাথে এসে বসলো ” নিপা ও আদিবা ” রাইসা বেশ আগ্রহ নিয়ে মাহির দিকে তাকিয়ে আছে “কিন্তু মাহি নিশ্চুপ ” তা দেখে নিপা বলে ওঠে ”
কিরে কি হয়েছে তোদের..??
রাইসা কপাল চাপরে বলছে সেটাই তো জানতে চাচ্ছি “মাহি কিছু বল ” সেই কলেজ এসেছি তখন থেকে জিজ্ঞেস করছি “বল না কি হয়েছে ” আমার কিন্তু এবার অনেক টেনশন হচ্ছে..!
” সবাই কে চমকে দিয়ে মাহি বলে ওঠে “আমি মনে হয় ইরফান ভাই কে ভালোবেসে ফেলেছি “বলেই বড় বড় শ্বাস ফেলছে মাহি চোখ দুটো খিচে বন্ধ করে নিয়েছে ”
~রাইসা বেশ অবাক চোখে তাকিয়ে মাহি কে এক পলক পর্যবেক্ষন করল ”
” তুই মজা করছিস না তো..?? এটা কিভাবে সম্ভব..! রাইসা এক ভারি শ্বাস ফেলে জবাব দিলো।
~না রে আমিও বুঝতে পারছি না “কিন্তু তার সামনে গেলেই আমার হৃদয় তোলপাড় শুরু করে ” আমি কিছু একটা ফিল করি “আমি কি করবো আমার কি করা উচিত কিছু বুঝতে পারছি না!
__এতক্ষণ যাবৎ নিপা ” আর আদিবা ও মাহির কথা মনোযোগ সহকারে শুনলো ”
~মাহি নিজের মাথা টা রাইসার কাধে এলিয়ে দিলো “রাইসাও যত্ন সহকারে মাহির মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বলে” দেখ মাহি তোর ভতরের অনুভূতি গুলো কে আমি পশ্রয় দিতে বাধ্য “কিন্তু তোদের জয়েন ফ্যামিলি তার উপর ইরফান ভাই তোর চাচাতো ভাই এটা নিয়ে অনেক প্রবলেম হতে পারে সেই সমস্যার সম্মুখীন হবার সাহস থাকলে তবেই এই পথে তুই পা বাড়াস ” আমি তোর পাশে থাকবো..!
~কিন্তু ইরফান ভাই কি আমায় ভালোবাসে বা কখনো ভালোবাসবে ….??
মাহি কাতর কণ্ঠে বলা কথা টা রাইসার মনে উঁকি দিচ্ছে নানা ধরনের প্রশ্ন!
~মুখে এক চিলতে হাঁসি নিয়ে রাইসা বলে”তোকে ইরফান ভাইয়ের জীবনে এখনো পর্যন্ত কেউ যদি না থাকে তাহলে আমাদের মাহি কে উপেক্ষা করা তার পক্ষে অসম্ভব।
“চিন্তিত ভংগিমার নিপা বলে ওঠে ” কিন্তু যদি ইরফান ভাই এর মনে যদি অলরেডি অন্য কেউ থাকে “তাহলে কি হবে। আগে জানতে হবে তার মনে অন্য কেউ আছে কিনা ”
~মাহি ঠোঁট জোড়া হালকা ফুলিয়ে ভ্রু জোরা এক করে বলে” সেটা আমি কিভাবে জানবো…??
~আদিবা উচ্চস্বরে বলে “আমার কাছে একটা বুদ্ধি আছে…”
~মাহি “রাইসা ও নিপা সকলে চোখাচোখি করে এক সঙ্গে বলে ওঠে
” কি শুনি..?
~চার বান্ধবী গোল হয়ে বসল “আদিবা বলতে লাগলো ” দেখ আমাদের মধ্যে কেউ কল দিয়ে ইরফান ভাই কে প্রেমের প্রস্তাব দিবে “তাতে ইরফান ভাই এর মনে যদি অন্য কেউ থাকে তার নাম বলে দিতে পারে ।
~” কিন্তু কল টা দিবে কে “মাহির নির্লুপ্ত জ্ববাব ”
~নিপা বেশ আগ্রহ নিয়ে বলে আমি দেবো “আর proposal Accept করলে কিন্তু ইরফান ভাই এর সাথে আমিই লাইন মারা শুরু করবো ” এমনিতেও আমার ইরফান ভাই কে আমার বেশ ভালো লাগে “অনেক হ্যান্ডসাম ”
~আমার ইরফান ভাই এতো সস্তা না যে যারতার proposal Accept করবে “আর তুই আমার ইরফান ভাই এর দিকে একদম নজর দিবি না বলে দিলাম ” আদিবা তুই কল দিবি ইরফান ভাই কে “(রাগে ফোসফোস করে হুংকার দিয়ে কথা গুলো বলে মাহি)
~ মাহির কাছ থেকে নাম্বার নিয়ে আদিবা কল দিলো ইরফান এর মোবাইলে ” একবার রিং হয়ে কল কেটে গেলো Response না পেয়ে আবার কল দিলো “কল রিসিভ হতেই আদিবা সালাম দিলো ”
“আসসালামু আলাইকুম ”
“ওয়ালাইকুম আসসালাম ” কে..??
“আমি..!
” ইরফান বেশ রাগী স্বরে বললো “আমি কে…???
~অনেক নরম স্বরে জ্ববাব দিলো আদিবা ” দিনরাত আপনার ভাবনায় ডুবে আছি “,রাতে ঘুম হয় না আপনাকে দেখার পর থেকে পাগল হয়ে আছি ” আমি আপনাকে ভালোবাসি ” Do you love me..??
“হৃদয়ের রেললাইনে একটাই ট্রেন চলে ” আর সেটার সিট বুকিং ” সরি আন্টি দয়া করে আপনি অন্য জায়গায় ট্রাই করেন ” হয়তো অন্য কোথাও সিট খালি পেলেও পেতে পারেন। বলেই কল কেটে দিলো ইরফান ”
” ইরফানের মুখে আন্টি সম্বোধন শোনার পর আদিবা অপমানিত বোধ করলো “নিপা রাইসা ও মাহি হেসে ফেললো ”
~কিন্তু প্রশ্ন থেকেই গেলো “তাহলে কি ইরফান ভাই অন্য কাউকে ভালোবাসে নাকি ” ইরফান ভাইয়ের ~কিছু বুঝে ওঠার আগেই “ইরফান মাহি কে নিতে এসেছে ” মাহি চুপচাপ বাইকে বসলো “ইরফান মাহি কে নিয়ে বাসার দিকে না গিয়ে উল্টো দিকে চললো ” মাহি মনে মনে ভাবছে কোথায় নিচ্ছে ইরফান ভাই এটা তো বাড়ির রাস্তা না “কিন্তু কিছু বলা সাহসে কুলালো না।
” রাইসা রিক্সায় করে যাচ্ছিলো এমন সময় ফাহাদ এসে রিক্সা থামিয়ে রিক্সা ওয়ালা মামা কে ভাড়া দিয়ে রাইসা কে বাইকে নিয়ে বাসায় পপৌঁছে দিলো “ফাহাদ এর এমন কর্মকাণ্ডে রাইসা বিরক্ত হলেও কিছু বলতে পাড়ে না মানুষ টা বড় ঘাড়ত্যাড়া কিছু বললেও শোনে না।
” ইরফান নিজের অফিস মাহি কে ঘুড়িয়ে দেখালো “ইরফান এর কেবিন দেখালো ” সাথে একটা রুম খুব সুন্দর করে সাজানো গোছানো ইরফান সব কিছু দেখালো পুরো অফিস টা ভালো করে দেখালো “ইরফান মাহি কে জিজ্ঞেস করল..”
অফিস টা পছন্দ হয়েছে…??
মাহি সাহসা তাকালো এক মিষ্টি হাঁসি হাসলো এরপর বললো “খুব সুন্দর হয়েছে।
ইরফান এক বাকা হাঁসি দিয়ে মাহি কে নিয়ে বেড়িয়ে এলো।
” অনেক জায়গায় ঘুরলো মাহিকে নিয়ে রেস্টুরেন্টে খাবার খেলো “এরপর বাসায় ফিরলো ”
আজকের দিন টা মাহির কাছে বেশ ভালো লাগ্লো । এক মুহুর্তের জন্য মাহি সব ভুলে গেলো।
নিজের অনুভূতি গুলো কে চাঁদরে মুড়িয়ে ঢেকে রাখলো।
ইরফান রুমে গিয়ে বালিশে মুখ গুজে বিড়বিড় করে বললো ”
পরন্ত বিকেলে নীল আকাশে মেঘেরা যেভাবে ছুটে বেড়ায় ”
আমিও তোমায় নিয়ে হারিয়ে যাবো কোনো এক গোধুলী বেলায় ”
চলবে………….?
#পারবোনা_আমি_ছাড়তে_তোকে
#লেখনিতে_ইশিতা_ইসলাম
#পর্বঃ ১৬
~প্রতিটি সকাল নতুন সম্ভাবনার দরজা খুলে দেয়, আমাদের জীবনে আশার আলো ছড়িয়ে দেয়। ঘুম থেকে উঠে যখন আমরা সূর্যের উষ্ণ আলোর স্পর্শ পাই, তখন মন ভরে ওঠে এক অদ্ভুত প্রাণের স্পন্দনে।তেমনি এক সকালে মাহি তৈরি হচ্ছে “হালকা লিপ্সটিক ও একটু কাজল দিলো চোখে ” একটা বেবি পিংক কালারের গাউন পড়নে “ড্রেস এর দিকে তাকাতেই মাহির মনে পরলো গতকাল রাতে ইরফান ভাই যখন বাসায় ফিরে ঘড়ির কাঁটা প্রায় ১ টা ছুঁই ছুঁই ” কিন্তু মাহির ঘুম আসছিলো না “ঘুম না আসার কারন টা অজানা মাহির তবুও বুঝা গেলো ইরফান ভাই এর দেখা না মিলতে মাহির ঘুম আসবে না তাই মাহি বেলকুনিতে বসে ছিলো ” ফেছবুকে গিয়ে ইরফান ভাই এর আইডি তে ঢুকে মাহি ইরফান ভাই এর সব পিকচার গুলা ঘেটে দেখছে ” আইডি তে মাএ অল্প কয়টা পিকচার আছে সাথে কিছু ক্যাপশন, মাহি সব গুলা পড়লো মাহির কাছে সব থেকে বেশি ভালো লাগলো যে ক্যাপশন টা তা হলো…….?
রহস্যে ঘেরা পৃথিবীতে রহস্যময়ী হয়ে
রহস্য উদঘাটন করিলে…..
রহস্যেরও রহস্য মিলিবে..!
যদিও লাইনটার কিছু মাহি অবুঝ মনে বা মস্তিষ্কে ঢোকে নি তবুও স্বাভাবিক ভাবে দেখতে গেলেও অসম্ভব সুন্দর একটা বাক্য। এতোক্ষণে মাহি একটা জিনিস খেয়াল করে দেখলো ইরফান ভাই এর প্রতিটি ছবি তেই সাদা কালো শার্ট অথবা টিশার্ট এই দুইটা রঙের বাইরে একটা ছাই রঙের টিশার্ট ছাড়া মাহি আজ পর্যন্ত ইরফান ভাই কে অন্য কনো রঙ গায়ে লাগাতে দেখেছে বলে মনে হয় না। ভাবতে ভাবতে বাইক এর আওয়াজ কানে আসতেই মাহি উঠে দাঁড়ায় “রেলিং এর ফাকা দিয়ে উঁকি দিয়ে দেখলো এক নজর। এর পর রুমে চলে আসলো ” মাহি বেশ বুঝতে পারে ইরফান ভাই এর প্রতি মাহির অনুভূতি গুলো অন্যরকম “মাহি একা একা মুচকি হেঁসে লজ্জা পেলো। পরপর এই মাহির দরজার টোকা পড়লো ” মাহি ওড়না টা নিয়ে গলায় পেচিয়ে দরজা খুলে দিলো ” দরজা খুলতেই সুন্দর পুরুষালি এক ঝাজালো পারফিউম এর সুভাসে মাহির চারোদিকে মোমো করছে মাহির মনের প্রজাপতি গুলো উরছে মনে হয় ”
ইরফান ভাই আপনি……!
হুম “এতো রাত হয়েছে এখনো ঘুমাস নি কেনো..??
” এমনি ঘুম আসছিল না.. “মনে মনে মাহি বিড়বিড় করলো ‘আপনাকে না দেখা পর্যন্ত ঘুম আসছিলো না তা কিভাবে জানবো আপনাকে ইরফান ভাই “!
” আপনি কিভাবে জানলেন আমি এখনো ঘুমাইনি..! ”
~ তুই কি করিস না করিস সব জানি আমি “আমার থেকে সাবধান মাহি ” তোর প্রতিটা নিশ্বাস আমার গুনা আছে “।
” মাহি এক লম্বা ঢোক গিলে আর চোখে তাকালো ইরফান এর দিকে “মাহির খোলা চুল গুলো উড়ছে ” ইরফান এক পলক দেখে চোখ নামিয়ে নিলো “ইরফান মাহির হাতে একটি শপিং ব্যাগ দিয়ে বললো কাল আমার জীবনের স্পেশাল একটা দিন ” দোয়া করিস যেনো জীবনের প্রতি টা অপূর্ণ ইচ্ছে এভাবেই পূরণ করতে পারি।ইরফান চলে যেতেই মাহি দেখতে পেলো একটা সুন্দর বেবি পিংক কালার এর ড্রেস ”
“ফাইজা মাহির রুমে এসে বলে ” আপু আমি রেডি , মাহি হেঁসে জ্ববাব দিলো আমিও রেডি “ফাইজা মাহির দিকে তাকিয়ে বললো ” wow আপু তোমাকে অসাধারণ লাগছে “মাহি এক চিলতে হাঁসি দিয়ে বললো তোকেও মাশাল্লাহ অনেক সুন্দর লাগছে।
” আজ চৌধুরী পরিবার এর সবাই বাসায় আছে “মাহির ছোট চাচ্চু ও বাসায় এসেছে ” কারণ আজ ইরফান এর কোম্পানির উদ্বোধন “সবাই উদ্বোধনে যাবে বলে তৈরি হয়েছে “অহনা ” মাহি ফাইজা ও লিসা এক গাড়ি তে বসেছে “গাড়ি চালাচ্ছে ইরফান ” ফাহাদ বসে আছে ইরফান এর পাশে “বাড়ির বড় রা অন্য গাড়ি তে করে আসছে।
” উদ্বোধন কাজ শেষ হলে “অফিসে সবার খাবারের আয়োজন করা হয়েছে ” সবাই গোল হয়ে চেয়ারে বসে কথা বলছে এমন সময় তাদের সামনে উপস্থিত হন “জামসেদ শেখ ” USA তে তার ৫ টা কোম্পানি আছে “বাংলাদেশে ও তার ২ টা শাখা আছে ” ইরফান সবার সাথে জামসেদ শেখ এর পরিচয় করিয়ে দিয়ে বললো “ইনি হচ্ছে লিসার বাবা ” লিসা ও অনেক দিন পড়ে বাবা কে দেখে দৌড়ে এসে ঝাপটে ধরে বাবা কে “জামসেদ শেখ আলতো করে মেয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে আদর করলেন ” ইরফান সম্মানের সহিত একটি চেয়ার এগিয়ে দিলো জামসেদ শেখ এর দিকে “সবিনয়ে বসতে বললেন ” ইরফান এর বাবা কাকা সবার সাথেই কথা বললেন লিসার বাবা। ইরফানের ফুপু সবার সামনে লিসার বাবা কে বললেন “লিসা কে আমার খুব ভালো লেগেছে আপনি যদি অনুমতি দেন ভাইজান তাহলে লিসা আম্মু কে আমার ঘরের বউ করে নিয়ে যেতে চাই। আমার ছেলে সিয়াম কে তো আপনি চেনেন যদিও ওরা দুজন দুজন কে পছন্দ করে।
” মাহি ও ফাইজার চোখ ছানা বড়া হয়ে গেলো “এটা কি করে সম্ভব লিসা আপু তো একজন কে পছন্দ করে।
তাহলে কি আমরা যাকে দেখেছিলাম সেই সিয়াম ভাইয়া…?? মাহি ও ফাইজা সিয়াম কে খুব ছোট বেলায় দেখেছিল তাই তার চেহেরাটা ও মনে নেই কারো ” প্রায় ১২ বছর হলো সিয়াম ভাইয়া USA গিয়েছে মাঝে একবার এর জন্য ও দেশে ফিরে নি “তখন মাহির বয়স বড়জোর ৬ বছর মাএ ফাইজা তো কুলের শিশু বলা যায়। এতো বছর এর মধ্যে সিয়াম ভাই এর একটা ছবি ও দেখেনি ওরা তাই হয়তো চিনতে পারে নি।
” মাহি ও ফাইজা অবাক হলেও অবাক নয় অহনা কারণ ইরফান ও ফাহাদ এর পড়ে সবার আগে সিয়াম ওর আদরের ছোট বোন অহনা কেই লিসার কথা বলে ” ইরফান ফাহাদ ও অহনা মিলে ফরিনা বেগম কে রাজি করান। প্রথমে ফরিনা বেগম এর একটু রাগ হলেও লিসা কে দেখার পড়ে ও কথা বলার পড়ে ফরিনা বেগম গলে গেলেন লিসা ভারী মিষ্টি একটা মেয়ে।
“এখানে এখন বড়রা কথা বলবে তাই ফাহাদ মাহি কে ইশারা দিয়ে বললো বাইরে যাওয়ার জন্য ” মাহি ফাইজা ও অহনা আপু কে নিয়ে বাইরে চলে গেলো।সাথে লিসা ও লজ্জায় লাল হয়ে ওদের সাথে বাইরে চলে গেলো।
“বাইরে এসে অহনা নিজের ওড়না টা দিয়ে লিসার মাথায় ঘোমটা দিয়ে বললো ” হেই ভাবিজান এতো লজ্জা পাচ্ছো কেনো বলোতো! ভেতরে সবাই এখন তোমাদের বিয়ের কথা বলছে “আর কিছুদিন পড়ে তুমি আমাদের ঘরের বউ হয়ে যাবে বুঝলে।লিসা আরো লজ্জায় ঘুরে দাঁড়ালো চিবুক নামিয়ে নিলো। অহনা এবার মাহি ও ফাইজা কে সব ঘটনা খুলে বলে ”
ইরফান ভাই প্ল্যান করে আজকের দিনে জামসেদ শেখ কে এখানে উপস্থিত করান ” জামসেদ শেখ মানে লিসার বাবা একজন সুনামধন্য ব্যাক্তি ” তার মেয়ে লিসা ও সিয়ামের ভালোবাসা প্রায় ৫ বছর যাবৎ জামসেদ শেখ তা জানতে পারে ৬ মাস আগে মেয়ের খুশির কথা চিন্তা করে সে মেনে নেয় কিন্তু তার ইচ্ছে ছিলো ছেলের বাবা বা মা এই বিয়ের প্রস্তাব তাকে দেবে “তাই ইরফান লিসা কে এতো আগে বাসায় নিয়ে আসে ” সাথে ফুপি কেও উদ্বোধন এর এতোদিন আগে থেকে বাসায় নিয়ে আসে যাতে ফুপি ও লিসার সম্পর্ক টা ভালো হয়। ফরিনা বেগম আসার পর থেকে লিসা ফরিনা বেগম এর আশে পাশে থেকে ফরিনা বেগম এর মন জয় করে ফেলে “ফরিনা বেগম এখন নিজেই পাগল লিসা কে ছেলের বউ বানানোর জন্য।
” বড়রা সিদ্ধান্ত নিয়ে লিসা ও সিয়াম এর বিয়ে ঠিক করলো “জামসেদ শেখ সন্ধ্যা ৬ টার ফ্লাইটে আবার USA ব্যাক করে ” লিসা কে সাথে নিতে চাইলে ফরিনা বেগম জামসেদ শেখ এর থেকে “অনুমতি নিয়ে লিসা কে রেখে দেয় ”
~আজকে সারাদিন রোহান অনেক বার চেষ্টা করেছে অহনার সাথে কথা বলার কিন্তু “মাহি ” ফাইজা, নয়তো লিসা কেউ না কেউ অহনার সাথে থাকায় আর অহনার সাথে কথা বলে ওঠা হয়নি।
“সবার চোখের আড়াল করে ইরফান ” কয়েক বার মাহির দিকে তাকায় “মাহির চোখে চোখ পড়লেই জ্বোর পূর্বক দৃষ্টি নামিয়ে নেয় ” মাহির চোখের নিচে দেওয়া কালো কাজলে বার বার ইরফানের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। ইরফানের কিনে দেওয়া ড্রেস টা মাহির গায়ে অপ্রকাশিত সুন্দর লাগলো “যেনো ড্রেস টা মাহির জন্যই বরাদ্দকৃত ছিলো ” এক অদ্ভুত রকমের ভালোলাগা ”
“আগামীকাল প্রথম রোজা বাসায় ফিরে তিন গিন্নী মিলে চলে গেলো সেহরির রান্নার আয়োজন করতে ”
রোজার দিন মানেই এক অদ্ভুত শান্তি “তাছাড়া ইরফান দেশে ফেরার পর ইরফান ভাই এর সাথে এই প্রথম রোজা ” মাহির মন টা প্রফুল্লতায় ভরে ওঠে।
“রুমে গিয়ে রাইসা কে কল দিয়ে লিসা আপু ও সিয়াম ভাইয়ার বিয়ে ঠিক হওয়ার সব ঘটনা বলতে থাকে ” রাইসা ও সব মনোযোগ সহকারে শুনলো ” যেকনো কথা রাইসার সাথে শেয়ার না করা পর্যন্ত মাহি ভালো লাগে না।
চলবে……..???
#পারবোনা_আমি_ছাড়তে_তোকে
#লেখনিতে_ইশিতা_ইসলাম
#পর্বঃ ১৭
গভীর ঘুমে আৎছন্ন মাহি “হঠাৎ ফোন এর রিংটোন এর আওয়াজে ঘুম ভাঙলো ঘুম ঘুম চোখে তাকিয়ে মাহি ফোন রিসিভ করলো ” ওপাশ থেকে শান্ত গলায় বলে ”
“ঘুম ভেঙেছে মহারানী…?
” মাহি হাত দিয়ে চোখ বুলিয়ে আবার তাকালো “ইরফান ভাই কল দিয়েছে ..??
প্রতি বছর সেহেরির সময় মাহির ঘুম ভাঙে ” হয়তো রাইসার কলে নয়তো ফাহাদ ভাইয়ার ডাকে এই প্রথম তা ব্যতিক্রম হয়েছে “ইরফান ভাই কল দিয়েছে মাহিকে ”
~মাহি দ্রুত গতিতে উঠে বসে “বললো ”
“হুমম ”
“ইরফান আধো আধো গলায় বললো ” ফ্রেশ হয়ে দ্রুত নিচে আসেন।
“আচ্ছা ”
“ইরফান ভাই এর অদ্ভুত সব আচারণ ” বিভিন্ন সময় আলাদা কিছু বলে সম্বোধন করে “অদ্ভুত কাহিনি ভাবতে ভাবতে মাহি ” ফ্রেশ হয়ে নিচে নামলো কেউ এখনো ড্রয়িংরুমে আসেনি সুধু মাহির বাবা “বড় বাবা ও ছোট চাচ্চু ছাড়া “নিচে নামতেই কাশেম চৌধুরী ” মধুর হাসি দিয়ে বললো ”
“এই তো আমার আম্মু এসেপরেছে
~ফরহাদ চৌধুরী তার পাশের চেয়ার টা মাহির দিকে এগিয়ে দিয়ে বলে ” এখানে বসো মা ”
“মাহি মনে মনে ভাবছে ইরফান ভাই আমাকে কল দিয়ে আসতে বলে নিজেই তো এখনো আসে নি।
“কিছুক্ষণ এর মধ্যেই ফরিনা বেগম, লিসা, ফাহাদ, অহনা ও ইরফান আসলো ” লিসা গিয়ে মাহির কাছে বসলো ”
“নাজিফা বেগম ” রাবেয়া বেগম ও মাহবুবা বেগম এসে বসলেন সুধু ফাইজা বাকি রইলো “ফাইজা কে ঘুম থেকে তোলার দায়িত্ব টা মাহির ছিলো ” কিন্তু ইরফান ভাই এর কল পেয়ে দ্রুত নিচে নেমে আসে ফাইজা কে তোলার কথা ভুলেই গেলো “মাহি দ্রুত গিয়ে ফাইজা কে ঘুম থেকে তুলে নিয়ে আসলে সবাই এক সাথে সেহেরি শেষ করে। বাবা কাকা রা সবাই ফজরের নামাজ এর জন্য রওনা হলো ” ইরফান রুমে গিয়ে একটা কালো পাঞ্জাবি পড়ে টুপি মাথায় দিয়ে ফাহাদ কে ডাক দিলো “ফাহাদ পাঞ্জাবি পড়ে না কখনো তাই শার্ট পড়েই টুপি হাতে নিয়ে বেড়িয়ে এলো দুই ভাই নামাজ এর জন্য মসজিদের দিকে রওনা দিলো ” অহনা ও মাহি সোফাতেই বসা ছিলো “মাহি ইরফান ভাই এর দিকে একবার তাকালো কালো রঙের পাঞ্জাবি টা পড়নে খুব সুন্দর লাগছে ”
মাহির বলতে ইচ্ছে করছে “ইরফান ভাই আপনাকে অনেক ভালো লাগছে ” পাঞ্জাবি তে আপনাকে বেশ মানায় “কিন্তু বলার সাহস নেই মাহির। রুমে এসে মাহি নামাজ শেষ করে ঘুমিয়ে পড়লো।
~আসরের নামাজ পড়ে ফাহাদ রাইসাদের বাসার পাশের দোকানে বসে রাইসা কে একটা কল দিলো ” রাইসা কল রিসিভ করেই ফাহাদ কে সালাম দিলো ”
“আসসালামু আলাইকুম ”
ওয়ালাইকুম আসসালাম “কেমন আছো ”
আলহামদুলিল্লাহ ভালো “আপনি কেমন আছেন।
আলহামদুলিল্লাহ ভালো ” একটু বাইরে আসবে…?
” মানে….!
“দরকার ছিলো ” বাইরে আসো।
“রাইসা একটু আমতা আমতা করে বললো ” এখন কিভাবে “! না মানে আপু….
” ফাহাদ বেখেয়ালি ভাবে গম্ভীর কণ্ঠে বললো
তুমি বাইরে আসবে নাকি আমি ভেতরে আসবো ”
“আসছি আমি।
” কল কেটে রাইসা বিড়বিড় করে বললো “হায় আল্লাহ এ কোন বিপদের মধ্যে পড়লাম কথায় কথায় ঝারি মারে ” কথায় কথায় জেদ ধরে বসে। গেইট এর বাইরে আসতেই দেখলো ফাহাদ সামনেই দাঁড়িয়ে আছে।
” ফাহাদ কিছুক্ষণ রাইসার কে চেয়ে রইলো “ফরসা মুখশ্রীতে বাম দিকের গালে একটা ছোট তিল আছে যার কারণে মুখের উজ্জ্বলতা দ্বিগুণ ফুটিয়ে তুলেছে ” বিনুনি করা চুল গুলো অর্ধেক টা ঢাকা পড়ে আছে একটি কালো ওড়নার আবৃত্তে।
~ফাহাদ একটা ছোট প্যাকেট এগিয়ে দিলো রাইসার দিকে ”
“এটাতে কি….?
~জিলেপি ”
“কিন্তু৷ ~
~কোনো কিন্তু না ” তোমার বান্ধবী তোমার জন্য পাঠিয়েছে তোমার নাকি পছন্দ “আমি জানি না তুমি না নিলে মাহি কষ্ট পাবে ” তুমি কি চাও তোমার বান্ধবী কে কষ্ট দিতে!
~ফাহাদ এর এমন কথায় রাইসা ভড়কে গেলো “কি করবে বুঝতে পারলো না ” তবু্ও মাহির কথা চিন্তা করে প্যাকেট টা নিতে হলো “!
~ফাহাদ এক ঝলক বাকা হাসলো ” সচারাচর ফাহাদ কে রাইসা খুঁব একটা হাসতে দেখে নি “তাই হঠাৎ এই জিনিস টা আজ মিস করলো না রাইসা বেশ আগ্রহ নিয়ে তাকিয়ে থাকলো ফাহাদ এর দিকে ” ফাহাদ এর চোখে চোখ পড়তেই চোখ নামিয়ে নিলো রাইসা।
“আচ্ছা তাহলে এবার যাই।
” শুনো রাই.. ”
“জ্বী বলুন.. ”
মুখ টা খুব শুকনো লাগছে “ঠিক মতো খাবার খেও।
” ঠিক আছে ”
~আচ্ছা যাও।
~মাগরিবের আযানের আর মাএ ৩০ মিনিট বাকি “লিসা, অহনা ও মাহি ইফতারে প্লেট সাজাচ্ছে ” ফাইজা শরবত বানাচ্ছে “ফাহাদ সোফায় বসে ওদের কাণ্ড দেখছে ”
“ফাইজা ফাহাদ কে বললো ” ভাইয়া আমি তো রোযা তাহলে শরবতে লবণ হয়েছে কিনা কিভাবে বুঝবো ”
~ফাহাদ ফাইজার কথা শুনে হাসবে না কাদবে বুঝে ওঠার আগেই “লিসা ” অহনা “ও মাহি হেসে ফেললো ” অহনা ফাইজা কে বলবো ”
“পিচ্চি বোন আমার শরবতে লবণ দেওয়া লাগে না ”
“ওওও আসলে আমি এই প্রথম বার বানাচ্ছি তো তাই ”
~ইরফান ভেতরে এসে সবাই কে দেখে টেবিলে একটা প্যাকেট রেখে উপরে উঠে নিজের রুমে চলে গেলো “অহনা প্যাকেট খুলে দেখলো প্যাকেট ভর্তি বুরিন্দা।
” ফাইজা মাহির দিকে তাকিয়ে বললো..
“মাহি আপু দেখো ইরফান ভাই তোমার পছন্দের বুরিন্দা এনেছে ”
“খুশিতে মাহির মুখখানা জ্বলজ্বল করে ওঠলো ” রমজান মাসে ইফতারি আইটেম এর মধ্যে মাহির সব থেকে পছন্দের খাবার বুরিন্দা “কিন্তু ইরফান ভাই কি করে জানলো তা। এটা কি সত্যি আমার জন্য এনেছে নাকি এমনিতেই ” মাহি বেশ অবাক হলো।
~ফরহাদ চৌধুরী বাইরে থেকে এসেই মাহির হাতে বুরিন্দার প্যাকেট টা দিলো “প্রতি বছর এই ফরহাদ চৌধুরী মাহির জন্য বুরিন্দা কিনে এনে দেয় ” কিন্তু এবার ইরফান আগেই নিয়ে এসেছে “তারপর ও মাহি হাসি মুখে বড় আব্বুর হাত থেকে প্যাকেট টা নিয়ে বললো ” এটার কথা তুমি কখনো ভুলো না বড় আব্বু…?
“আমার বড় মা এর সব থেকে প্রিয় খাবার আমি কি করে ভুলি বলো তো মা।
কিন্তু এবার তোমার আগেই ” ইরফান নিয়ে এসেছে যে “এক গাল হাসি নিয়ে নাজিফা বেগম বললেন।
” ইরফান ফ্রেশ হয়ে নিচে নামলো ” মাহির দিকে এক নজর দেখলো “হাত খোপা করে মাথায় লম্বা এক ঘোমটা টেনে নিলো মাহি ” ইরফানের ঠোঁট জোড়া সজল হলো “বিস্ময়কর এক হাসি দিলো।
” তারাবি নামাজ শেষ করে ” ফাহাদ ও ইরফান বাসায় ফিরলো “সাথে করে রোহান কে নিয়ে এলো তিনজন এক সাথে বসে ইরফানের রুমে আড্ডা দিলো অনেকক্ষণ রোহান চলে যাওয়ার উদ্দেশ্য নিচে নমবে এমন সময় দেখলো ” অহনা ফোনে কথা বলতে বলতে ছাদের দিকে যাচ্ছে “রোহান এর মনে এক ধাক্কা লাগে ” এই রাগীনি কার সাথে কথা বলছে “কনো ছেলের সাথে নয়তো ” ভার্সিটি পড়ুয়া মেয়ে বয়ফ্রেন্ড থাকলেও থাকতে পারে “কিন্তু তাহলে রোহান এর কি হবে রোহান যে প্রথম দেখাতেই এই রাগী মেয়েটাকে কে মন প্রাণ দিয়ে বসে আছে ” রোহান নিচে না নেমে ছাদে চলে গেলো “কারো পার্সোনাল কথা শোনা উচিত নয় তা রোহান জানে তবুও কান পেতে শোনার চেষ্টা করলো কার সাথে কথা বলছে অহনা..”
“আরে তুই চিন্তা করিস না আমরা কাল দিনাজপুর চলে আসবো ” ইরফান ভাইয়ার উদ্বোধন শেষ সিয়াম ভাইয়ার বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে ঈদ এর পরে ভাইয়া দেশে ফিরলেই বিয়ে। বান্ধবী তুই শুধু এসাইনমেন্ট গুলা রেডি করে রাখ আমি এসে লিখবো।
ওপাশ থেকে কি কথা হলো বুঝা গেলো না কিন্তু রোহান বুঝতে পারলো অহনা ওর বান্ধবীর সাথে কথা বলছে “যাক একটু শান্তি লাগলো ” কোনো ছেলের সাথে কথা বললে তো প্রেম শুরু হওয়ার আগেই ব্রেক -আপ হয়ে যেতো ”
“অহনা কথা শেষ করে পেছনে ঘুরে একটু এগোতেই দেখলো কেউ দাঁড়িয়ে আছে ” অন্ধকারে ভালো করে দেখা যাচ্ছে না “মোবাইল এর ফ্ল্যাশ অন করতেই রোহান কে দেখে অহনার মাথা ১০০ ডিগ্রি গরম হয়ে গেলো ”
কি ব্যাপার শুনি যেখানেই যাই সেখানেই আপনি কেনো “হ্যাঁ…?
~শোনো মেয়ে তুমি যেখানে যাও সেখানে আমি না ” আমি যেখানে সেখানে তুমি “আর এতো রাতে ছাদে কি ” হুম “ভয় নেই তোমার “!.
” সেটা নিয়ে আপনার মাথা ব্যাথা না হওয়াই ভালো “আর আমি কোথায় কেনো আসবো “তার কৈফিয়ত কি আপনাকে দিতে হবে নাকি ”
~জীবনের অনেক দুঃখ আছে তার মধ্যে সব থেকে বড় দুঃখ হলো তোমার মুখে একদিন মিষ্টি কথা শুনলাম না ” বলি কি সকালে ঘুম থেকে উঠার পর কি “আন্টি তোমাকে করলার জুস খাওয়ায় নাকি ” মিঠা কথা জানো না…?
~ কথা রাও মানুষ দেখে পালায় ওরাও জানে।কখন কার সামনে কি বলতে হয় ”
“কাল চলে যাবে বুঝি…??
~তার মানে আপনি আড়ি পেতে শুনছিলেন…?? চোখ বড় বড় করে বললো অহনা..!
রোহান একটু রসিকতার স্বরে বললো…
~আরে এভাবে তাকিয়ে আছো কেন আড়ি পাতে শোনার কি আছে ” তুমি যেভাবে কথা বলছিলে পুরো এলাকার মানুষ ও শুনে ফেলার সম্ভাবনা আছে..!
“কি বললেন আপনি…!
~আরে মজা করলাম ”
~অহনা নিচে নেমে গেলো “রোহান বোকার মতো তাকিয়ে রইলো ~এই মেয়ের মাথা সব সময় এতো গরম থাকে কেনো ” কপালে দু আঙুল ঘষে বলে ” এরকম করতে থাকলে আমাদের বিয়ে টা হবে কিভাবে ”
★✰★✰✪★★✪✰✰★✪✰☆★
~দেখতে দেখতে ৭ টা রোযা কেটে গেলো ” ফুপি রা চলে গেছে ৫ দিন হলো “লিসা অহনার সাথে ফোনে কথা বলছে সোফায় বসে ” রোযার মাস উপলক্ষে মাহি দের কলেজ বন্ধ দিলেও ১ ঘন্টার জন্যে কোচিং ক্লাস চালু হয়েছে “কোচিং থেকে মাহি কে নিয়ে এসে ইরফান উপরে নিজের রুমে চলে যায় ” মাহি এসে লিসার পাশে বসে অহনা আপুর সাথে কথা বলা শুরু করেছে “এখন ওদের বেশির ভাগ কথাই চলে লিসা আপু ও সিয়াম ভাইয়ার বিয়ে নিয়ে ” বিয়ে তে কে কি করবে কে কি পড়বে তা নিয়ে “।বেশ কিছুক্ষণ পর ইরফান নিচে নেমে বাইরে যাওয়ার জন্য উদ্দত্ব হলে লিসা জিজ্ঞেস করলো “কোথায় জাচ্ছিস…??
~ফাইজা কে নিয়ে আসি ” ড্রাইভার আংকেল একটু অসুস্থ “তাই তাকে যেতে নিষেধ করেছি ” বলেই ইরফান বেরিয়ে গেলো “।রোযা উপলক্ষে সবাই বন্ধ পেলে ও ফাইজা দের এখনো বন্ধ দেওয়া হয়নি SSC পরিক্ষার পিপারেশন চলছে তাই ” সামনে টেস্ট পরিক্ষা। ফাইজা কে বাসায় দিয়ে গিয়ে ইরফান জোহরের নামাজ আদায় করে ” “NR ইন্ডাস্ট্রি ইইরফানের নিজস্ব অফিসে গেলো ” যেটা চালু হয়েছে “৮ দিন হলো।
~ইফতারের ২০ মিনিট আগে ইরফান অফিস থেকে ফেরার পথে ” মাহির জন্য বুরিন্দা নিতে ভুললো না।বাসায় ফিরে বুরিন্দার প্যাকেট টা মাহির হাতে দিয়ে “আইসক্রিম বক্স টা ফাইজার হাতে দিলো ” ফাইজা ছোট মানুষ মন খারাপ যাতে না হয় “সেটা ইরফান বরাবরই মনে রাখার চেষ্টা করে।
চলবে…….?