#পূর্ণিমায়_বিলীন_চন্দ্র
#সাদিয়া_আক্তার
#পর্ব_৪৭
ফজরের আজান কানে যেতেই ঘুম ভাঙে নড়াচড়া করতে যেয়েও পারে না। পিটপিট করে চোখ জোড়া খুলে দেখে চন্দ্র তার উপর সম্পূর্ণ ভাড় দিয়ে ঘুমিয়ে আছে।। বলিষ্ঠ দেহী চন্দ্রকে সরাতে বেশ কসরত করতে হয় তার বাতাসী পুনমের সম্পূর্ণ গা ব্যাথা হয়ে গেছে ফ্লোরে পা দিতে গিয়ে বুঝে পা ঝিনঝিন ধরে গেছে।
কতক্ষণ থম মেরে বসে থেকে নামে — উফফ হাতি একটা পুরো শরীর ব্যাথা বানিয়ে দিয়েছে।
— এইটুকু ভাড় সামলাতে পারিস না বাকিটা কিভাবে সামলাবি
পিছন থেকে চন্দ্রের বেফাঁস কথার উত্তর না দিয়ে কাপড় নিয়ে ছুটে যায় ওয়াশরুমে। বাষি কাপড় পাল্টে অযু করে একেবারেই বের হয় চন্দ্রকে হাত পা ছড়িয়ে শুয়ে থাকতে দেখে তার সামনে দাড়িয়ে বলল — না ঘুমিয়ে উঠেন নামাজে যান,,
— যথা আজ্ঞা জোহরা,,, ওয়াশরুমের দিকে যেতে যেতে বলল — একসাথেই আজ ফজরের সালাত আদায় করব ওয়েট কর।
পুনম মুচকি হেসে জায়নামাজ রেডি করে। চন্দ্রের টা আগে নিজেরটা পরে বিছিয়ে ওয়েট করে চন্দ্রের। চন্দ্র বের হতেই পুনম বলল — ইমামতি করতে হবে কিন্তু!!
উত্তরে চন্দ্র পুনমের কপালে হ্যা সূচক সম্মতি দিয়ে জায়নামাজে দাড়ায়। দুইজন একসাথে নামাজ আদায় করে — চা খাবেন
— বাইরে আসছি আজকের চা আমার তরফ থেকে,,,,
পুনম মাথা নাড়িয়ে চলে যায় কাল রাতে জৈন ভিজানো পানি নিয়ে চলে যায় বাবার কাছে। যেয়ে দেখে বিছানায় পূর্ব ঘুম রোজিনা বেগম এখনো জায়নামাজে বসে।
বাবাকে না পেয়ে বিছানায় বসে পুনম কিছুক্ষণ পরেই পারভেজ সাহেব ঘরে ঢুকে।
— আসসালামু আলাইকুম আব্বু আজ এতো দেরী,,
পানির গ্লাস হাতে দিতে দিতে বলল পুনম। পারভেজ সাহেব পানি তিন ঢোকে পান করে সালামের জবাব দিয়ে বলল — ভাইজানের সাথে একটু হাটতে গিয়েছিলাম
পারভেজ সাহেব পুনমের কপালে চুমু দিয়ে বলল
— আম্মাজান কি বাবার উপরে রাগ,,
অবাক হয় পুনম — কেনো আব্বু??
— চন্দ্রের সাথে বিয়ের ব্যাপারে,,
পুনম আমতা আমতা করে মাথা নিচু করে চন্দ্রের কুকীর্তী জানায়। পারভেজ সাহেব উচ্চস্বরে হেসে ওঠে রোজিনা বেগম হতভম্ব ছেলেটা কি পাজি আবার এটাও ভাবে কতটা ভালোবাসলে এতোটা ধৈর্য্য ধরা সম্ভব। মনে মনে চন্দ্রের ভালোবাসার উপর পুলকিত হলো রোজিনা বেগম।
বাবার উচ্চস্বরে হাসি শুনেই পুনম লজ্জা পায় লাজ রাঙা আদলে সেখান থেকে প্রস্থান করে।।
পুনম নিচে নেমে রান্নাঘরে উকি মেরে দেখে চন্দ্র ব্যস্ত হাতে চন্দ্র ব্রেডে মেয়োনিজ লাগাচ্ছে। ঢুকতে গেলেও মা চাচীকে আসতে দেখে সেদিকে যায় না মুক্তির পাশে বসে আজ সবাই লনে চা খেতে খেতে সূর্য উদয় দেখবে সেটাই ঠিক করে।
লনে একটা ট্রেতে করে চা আর কিছু স্যান্ডউইচ বানিয়ে মিনি সহ নিয়ে আসে। মিনি নাক কুচকে চন্দ্রের পিছনে পিছনে আসে রেনু উঠেনি সে এতো সকালে উঠে না।
টেবিলে ট্রে রেখে মিনু পুনমের পাশে নিচে বসে।
— এই মিনু উপরে বস
বলেই পুনম মিনুকে উপরে বসায়। মিনু পুনমের কথায় বেশ খুশী পুনমের কানে কানে বলল
— আফামনি আমনে এই খ্যাক খ্যাক করা বেডার লগে থায়েন কেমনে,, আমারে ঘুম থাইকা উঠাইছে মনে হয় কথা দিয়া ঠাসস কইরা একটা বাড়ি মারছে,,
মিনুর কথায় পুনম ফিক করে হেসে চন্দ্রের দিকে তাকায় চন্দ্র পুনমকে চোখ মেরে চুমু ইশারা করে। নিজের চায়ের কাপে চুমুক দেয়। কাশি উঠে যায় পুনম চন্দ্র এমন বিহেব করে যেনো কিছুই হয়নি।। সকলে তড়িঘড়ি করে পুনমের কাছে আসে।।
— সাট সাট,, আফা নিঃশ্বাস নেন।। পুনমের মাথায় ফু দিয়ে মিনু বিড়বিড় করে বলল — শয়তান বেডা হের লাইগা আমার বালা আফাডায় একটু শান্তিও পায় না।
কামরুল সাহেব পুনমকে পানি দিতে পুনম থামে। পুনম থামে দেখে চন্দ্র স্বস্তির নিঃশ্বাস ছেড়ে পুনমের পাশ থেকে সরে।
____________________
পুনম আজ ভার্সিটি যাবে। তাই ব্রেকফাস্ট করার পরপরই রেডি হতে ঘরে যায় চন্দ্র একেবারে রেডি হয়ে নিচে নামে তাই উপরে উঠার দরকার নেই তবুও পুনমকে ঘরে যেতে দেখে নিজেও পুনমের পিছে সুরসুর করে চলে যায়।
ঘরে ঢুকে দেখে পুনম হিজাবের পিন লাগাচ্ছে।
— এই কি ফ্রক ট্রক পড়েছিস,, তুই যে বিবাহিত মহিলা ভুলে গেছিস,,
চন্দ্রের আকস্মিক অ্যাটাকে ভরকে যায় পুনম। অনেক প্রায় চারদিন পর এমন গম্ভীর চন্দ্রকে দেখে ঢোক গিলল পুনম
— ততো শাড়ি পড়ে ভার্সিটি গেলে কেমন দেখাবে না,,,, কন্ঠে জোর এনে বলল — আর শাড়ি পরেই বা যাব কেনো শাড়ি পরি কামিজ পরি আমি যে বিবাহিত তার সিলমোহর সাথে আছে
বলে হাত উচু করে হাতে চিকন চুরি ও নাকের দিকে ইশারা করে নাকফুলের দিকে দেখায়।। চন্দ্র তৎক্ষণাৎ পুনমের কোমর পেচিয়ে নিজের কাছে অনেক হাস্কি ভয়েজে বলে — আমার নামের আরেকটি সিলমোহর তাহলে সাথে করে নিয়ে যা,,,, চন্দ্র পুনমের দিকে এগিয়ে যেতে পিছিয়ে যায় পুনম দাত কিড়মিড় করে চন্দ্র গম্ভীর স্বরে বলে — রোমান্সে ডিস্টার্ব করবিনা একদম,,
— আপনার যখন তখন শুরু হয় যায়। আমার যে ভার্সিটি ইম্পর্ট্যান্ট ক্লাস আছে সেটা সরেন এখন কিচ্ছু না
— ওওও জোহরা বিবি,, একটা দিতে দাও
— উহু না
বলেই দ্রুত ব্যাগ নিয়ে বের হয়ে যায়। চন্দ্র রাগী মুড নিয়ে বের হয়। পুনমের দিকে একবার তাকিয়ে গ্যারাজ থেকে বাইক বের করতে চলে যায়।
পুনম মিটিমিটি হাসে। চন্দ্র বাইক এনে সামনে দাড়িয়ে গম্ভীর স্বরে বলে উঠতে পুনম দূরত্ব বজায় রেখে উঠে বসে
— আমি কি পরপুরুষ যে দশ মাইল দূরে বসেছিস,,
পুনম এবার চন্দ্রর কাধে হাত রেখে বলল — এর বেশী পারব না,,,
চন্দ্র কথা না বাড়িয়ে টান দেয় বাইকে। পুনমকে নামিয়ে দেয় ভার্সিটির গেইটে যেখানে মিহি আগে থেকেই দাড়িয়ে ছিল
— খেয়াল রেখো বোন
— আচ্ছা ভাইয়া আপনি টেনশন করবেন না,,
চন্দ্র এবার পুনমের দিকে তাকিয়ে বলল — কোনো সমস্যা হলেই আমাকে কল করবে
পুনম মাথা নাড়িয়ে মিহিকে নিয়ে চলে যায়। চন্দ্র চলে যায় ক্যাম্পাসের অন্য দিকে শিহাব ও রিশানকে কল করে ডেকে আনে।। একেবারে পুনমকে নিয়েই ফিরবে!!
পুনম মিহি নির্ধারিত স্থানে বসতেই তাদের পাশে বসা মেয়েটি পুনমকে দেখে বলল — ও মাই গড পুনম তুমি বিয়ে করে ফেলেছো,,,
পুনম মুচকি হেসে মাথা নাড়ায়। — তা কে সে এক্ষুনি বরের ছবি দেখাও আর আমরা কেউ দাওয়াত ও পেলাম না,,;
— ঘরোয়া ভাবে হয়েছে ইনশাআল্লাহ রিসিপশনে দাওয়াত পাবে,,
বরের ছবির কথাটা এড়িয়ে অন্য কথা উঠায় পুনম। এমন ভার্সটির কাউকে না জানানোর মনোভাব করে। এরমধ্যেই প্রবেশ করে বতর্মান ফ্যাকল্টি হেড নাওয়াজ শেখ।
পুরো ক্লাস পিনপতন নিরবতায় ডুবে যায়। রোল কল করে পুনমের নাম ডাকতেই সে প্রেজেন্ট করে
— আপনি গত দুই দিন ক্লাসে অনুপস্থিত ছিলেন হোয়াই??
— স্যার হঠাৎই আমার বিয়ে ঠিক হয়ে যায় তাই,,,
আর কিছু বলতে না দিয়ে বলল — লিভ অ্যাপলিকেশন দিয়ে যাবেন।
পুনম মাথা নেড়ে বসে পড়ে স্যার রোল ডাকা শেষে পড়ানো শুরু করে। পরপর চারটা ক্লাস শেষে পুনমরা বের হয় ক্লাস থেকে তখনই চন্দ্র কল করে পুনমকে — আর ক্লাস করা লাগবে না এর পরের ক্লাস গুলো অতটা জরুরী না চলে আয় গেইটের সামনে বাসায় যাবি।।
পুনম ও সুবোধ বালিকার মতো চলে যায় মিহির থেকে বিদায় নিয়ে। পুনমকে বাসায় পৌঁছে দিয়ে চন্দ্র চলে যায় কোচিং সেন্টারের উদ্দেশ্যে। পুনম ঘরে গিয়ে আগে ঢোকে ওয়াশরুমে গোসল সেরেই বের হয়।
দুপুরে চন্দ্র বাসায় আসবেনা তাই মা চাচীদের সাথে খেয়ে পূর্বকে নিজের কাছে রাখে মুক্তি কলেজের থেকে এখানো আসেনি বেলা গেছে স্কুলে সেখান থেকে ট্রান্সফার নিবে ততদিন সেখানেই থাকবে শুধু উইকেন্ডে এখানে আসবে।।
পুনম পূর্বর সাথে খেলতে শুরু করে খেলতে খেলতে ঘুমিয়ে পড়ে। পুনমও তার পাশে ঘুমিয়ে পড়ে। পুনমের ঘুম ভাঙ্গে নিঃশ্বাস না নিতে পেরে।
ঘুমের ঘোরে নিঃশ্বাসের ঘাটতি হওয়ায় হাত পা ছুটাছুটি করে চন্দ্র হাত একসাথে করে উপর পিন করে। পুনম চোখ মেলে দেখে মোহগ্রস্থ চন্দ্র যখন ডুবে আছে তা জোহরার নেশায়
অপর পাশ থেকেও সমান তালে তাল মেলাচ্ছে পুনম।
তখনই পূর্বের চিৎকার কানে যায়। পুনমের ঘোর ভাঙে নিজেকে ছাড়াতে চেয়েও পারে না পূর্বের চিৎকার জোরালো হলে পুনম মুখ ঘুড়িয়ে হাপাতে হাপাতে বলল — পূর্ব কাদছে
— পূর্ব নেই এখানে
বলেই বিনা নোটিশে আবারও অ্যাটাক করে পুনমের অধরে। পুনম আবার ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে বলে — পূর্ব কাদছে দদেখে আসি,,,
বলেই চন্দ্রকে ধাক্কা দিয়ে এক দৌড়ে চলে গেলো। পুনমের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে চন্দ্র বিড়বিড় করে বলল — ছ্যাহ এই চাচাতো ভাই শালা এতোদিন প্রেমে ব্যাঘাত দিতো এখন রোমান্সেও ব্যাঘাত দেয়।।
#চলবে
#পূর্ণিমায়_বিলীন_চন্দ্র
#সাদিয়া_আক্তার
#পর্ব_৪৮
একসপ্তাহ পর,,
দুপুর বেলা বাসায় দুই জা ছাড়া আর কেউ নেই। তখনই কোথা থেকে নিশা এলোমেলো অবস্থায় হতদন্ত হয়ে বাসায় ঢোকে।। পূর্বকে খাওয়াচ্ছিল দেড় মাসের পূর্বকে খাওয়াচ্ছিল রোজিনা বেগম।।
— আআম্মুহ
কারো ডাকে দুইজনই পিছন ফিরে। এলোমেলো অবস্থায় নিশাকে দেখে অবাক হয় দুই জা রোজিনা বেগম চাদনী বেগম ছুটে আসে নিশার কাছে। নিশা ঝাপিয়ে পড়ে রোজিনা বেগমের বুকে
— কি হয়েছে নিশু মা,, তোর এমন অবস্থা কেনো??
রোজিনা বেগম মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে বলল।
— আম্মু আমার সব শেষ সবব লোকটা আমাকে ধোকা দিয়েছে সে আমাকে বলেনি সে আগেও আরেকটি বিয়ে করেছে,,,
নিশার কথা শুনে অবাক দুইজা একজন আরেকজনের দিকে তাকিয়ে আবার নিশার দিকে তাকায় রোজিনা বেগম নিশাকে সোফায় বসায় মিনুকে বলে পানি দিতে মিনু পানি নিয়ে আসতেই ঢকঢক করে খেয়ের পানির গ্লাস খালি করে।
ফের কেদেঁ দেয়।
— আআআম
কিছু বলতে নিলে তাকে থামায় চাদনী বেগম।
— আচ্ছা সব কথা পরে শুনব এখন চল রেষ্ট নিবি বলেই নিশাকে গেষ্ট রুমে নিয়ে যায়।।
রোজিনা মেয়েকে ফ্রেশ করিয়ে খাইয়ে বের হয়।
— ভাবী এখন কী করব রুপশার বাবাকে ফোন দিব
— হ্যা সাথে চন্দ্রের বাবাকেও ফোন দেই সবাই আসুক ওর কাছ থেকে শুনুক তারপর ঠিক করা হবে,,,
তারা কথা মতোই কাজ করে চাদনী বেগম পারভেজ ও কামরুল সাহেবকে ফোন দেয়। তারা জানায় এখনি বের হচ্ছে তারা ফোন কাটতে না কাটতে হাজির হয় নিশার স্বামী রাশেদ।
মেয়ের পরপরই মেয়ের জামাইকে দেখে অবাক তারা দুইজন। রাশেদ এসে মাথা নিচু করে কিছু বলতে নিলে চাদনী বেগম থামায় বলল
— কিছুক্ষণের মধ্যেই তোমার শশুর এসে পৌছাবে তখনই নাহয় সব কথা শুনব এখন এসেছো বসো,,,
বলেই রান্নাঘরে চলে যায় যতই হোক জামাই মানুষ। শাশুড়িরা কখনও জামাই আদরে কৃপনতা করে না সে তার মেয়ে সুখে থাকুক আর না থাকুক।
দশ মিনিট পরেই চন্দ্র মুক্তি ও পুনমকে নিয়ে প্রবেশ করে। সোফায় বসা রাশেদকে দেখে অবাক হয়না কারণ একটু আগেই চাদনী বেগম তাদের ডেকে পাঠিয়েছে জরুরী তলপে। সাথে রিশান শিহাব ও এসেছে।
চন্দ্র শিহাব রিশান ঈগল চোখে রাশেদের দিকে তাকিয়ে আছে।
— রাশেদ ভাই ছাদে চলেন,,,
রিশান রাশেদকে নিয়ে ছাদে যায়। — মামলাটা কি বুঝলাম না
ঢোক গিলল রাশেদ। ছা পোশা মানুষ রাশেদ মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে চাকুরী করে আচরণে জেন্টেলম্যান। বয়সে ছোট হলেও এদের সাথে কথা বলতে ভয় পাচ্ছে
রিশান শিহাব বুঝে অভয় দেয় সব খুলে বলার
— ভাই আমার কোনো দোষই নেই পরসু পযর্ন্ত নিশা ভালোই ছিলো কাল সকালে হঠাৎই জানতে পারি ও প্রেগনেন্ট ছিলো তাও কয়েকদিন আগে এবোর্শন করিয়ে এসেছে। জিজ্ঞাসা করলে রেগে চিল্লাচিল্লি করলে আমারও রাগ উঠে তাই দিছি এক চড় সেই জন্যই উল্টাপাল্টা কথা বলে চলে এসেছে। কোথা থেকে নাকি শুনেছে আমি বিবাহিত ছিলাম এখন আগের বউয়ের জন্য ওকে অবহেলা করি।।
রাশেদ করুন স্বরে বলল — বিশ্বাস করেন ভাই আমি এর আগে কোনো বিয়েশাদী করিনি।
রিশাদ ও শিহাব চন্দ্র ভ্রু কুচকে তাকিয়ে আছে
— আপনি কি ভেবেছেন আমরা কোনো খোঁজ খবর না নিয়ে চুপচাপ থেকেছি। আমরা সবসময়ই খোঁজ খবর রেখে নিশা ভালো আছে জেনেই চুপ থেকেছি,, আর টেনশ্যন করবেন না মামারা আসুক দেখী কি করা যায়।
ঘন্টা খানিকের মধ্যেই সকলে এসে পৌঁছে যায় সাথে রুপশা ও লিমনও আছে।।
নিশাকে ডাকে কামরুল সাহেব নিশা বাইরে এসে রাশেদকে দেখে তার দিকে তেড়ে যায়
— এই এই তোমাকে না বলেছি আমার পিছু পিছু আসবে না এই তোমারে না বলেছি ডিবোর্স পেপার পাঠাতে,,,,
— নিশা
বড় চাচার গম্ভীর স্বরে নিশা থেমে যায় — এখানে বড়রা আছে সেই সহবত করো। যাই হোক রাশেদ তুমি বলো কি বলবে,,,,
রাশেদ শুরু থেকে আবার সব বলল। সব শুনে রোজিনা বেগম চাদনী বেগম অবাক নিশা তাদের উল্টো কথা বলেছে বাঘীনির মতো তেড়ে আসে নিশা — এই এই আপনি আগে বিবাহিত ছিলেন না
— তোমার কাছে আছে তার কোনো প্রমান দিতে পারবে,,,
রাশেদের কথায় নিশা খানিকটা দমল। ফের বলল
— আমি কি করব না করব তার কইফিয়্যত নিশ্চয়ই আপনাকে দিব না,,
এবার রাশেদ ঠাসসস করে নিশার গালে একটা থাপ্পড় মারে উপস্থিত সবাই অবাক পারভেজ সাহেব কামরুল সাহেব এগিয়ে আসতে নিলে রাশেদ আঙ্গুল উঠিয়ে বলে — এগোবেন না আমার বউ কথা শুনেনি তাই আমি মেরেছি।
নিশার দিকে তাকিয়ে বলে — অনেক উড়েছ এবার ডানা ছাটার সময় হয়েছে বয়স কম দেখে ছাড় দিয়েছি আর না এবার চলো
বলেই স্তব্দ হয়ে গালে হাত দিয়ে থাকা নিশাকে টানতে টানতে নিয়ে গেলো।।
রাশেদ নিশাকে নিয়ে যেতেই রিশাদ শিহাব উচ্চস্বরে হেসে দিলো। চন্দ্র ভাবলেসহীন। পুনম চন্দ্রর দিকে চায় এই লোকই নিশ্চয়ই কিছু করেছে নাহলে রিশান ভাই শিহাব ভাই এতো হাসাহাসি করত না।
— এই তোরা এমন পাগলের মতো হাসছিস কেনো,,??
— আরে বড় মামা ঐ হাটু কাপা বেটারে এই আঙ্গুল উচু করার ট্রেনিং দিতে পাক্কা দশ মিনিট লেগেছে। দেখলে না তোমাদের দিকে আঙ্গুল তোলার সময় থরথর করে কাপছিল ঐ ব্যাটা।
— এইটা করাটা কি ঠিক হলো??
পারভেজ সাহেবের কথায় চন্দ্র গম্ভীর স্বরে বলল
— সব ঠিক শশুর আব্বা! নিশা একদম বেয়াদব হয়ে গেছে ওর কতবড় সাহস না হলে একা একা এবোর্শন করে আসে। ওকে ঐ লোক সামলাতে পারে না বেপরোয়া হয়ে যাচ্ছিল তাই একটু চাপে রাখার ট্রেনিং দিলাম। কয়েকদিন চাপে থাকলে ঠিক হয়ে যাবে আমার শাশুড়ি আম্মা তো এরে একেবারে ছাড় দিয়ে আসমানে উঠায় রাখছে,,,
চন্দ্রের গম্ভীর স্বর শুনে কিছু বলার সাহস পায়না রোজিনা আসলেই দোষটা তার সে এই দুই মেয়েকে আদর ভালোবাসা দিয়ে রেখেছে তাই বড়টা কোনরকম সামলে থাকলেও নিশাটা একদম বেপরোয়া হয়েছে। আর যাকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করেছে সেই এখন সবার চোখের মনি ভালো বউ,,,।
___________________
পুনমের গলায় ছোট ছোট চুমু কাটছে চন্দ্র সেই সাথে মৃদু দংশন ও চলছে। পুনম খামচে ধরে চন্দ্রর টিশার্ট এবার চন্দ্রর হাত শাড়ি সরিয়ে উন্মুক্ত উদরে যেতেই পুনম চন্দ্রর পিঠ খামচে ধরল।
— একটা কথা বলি,,,, কাপা কাপা স্বরে বলল পুনম,,
— উহু মুড নাই পরে
বলেই পুনমের ওষ্টপুট দখলে চলে গেলো চন্দ্রের। নিজের খায়েশ মিটিয়ে যখন ছাড়ল তখন পানি ছাড়া মাছের মতো পুনমের অবস্থা
— রাক্ষস একটা,,,
— তুমি তার বউ রাক্ষসী
বলেই পুনমের গলায় মুখ ডুবায় মিনিটের মধ্যেই তলিয়ে যায় গভীর ঘুমের অতলে। পুনম ছোট ছোট বিলিকাটে তার চুলে আরামে আরো ঝাপটে ধরে চন্দ্র পুনম মুচকি হেসে কপালে চুমু খায়। চন্দ্র কপাল কুচকে আবার ঘুমিয়ে যায় এবার আর কিছু করে না পুনম কাল রাতে বেচারা ঘুমাতে পারেনি,, ভিডিও এডিটিং করে সেটা ছেড়ে ঘুমাতে ঘুমাতে তখন রাত তিনটা। তাই এখন দ্রুত ঘুমালো নাহলে এই লোক এতো দ্রুত ঘুমানোর লোক না।।
মাগরিবের আজানের শব্দে ঘুম ভাঙে চন্দ্রের। দেখে সে এখনো পুনমের বুকেই ঘুমিয়ে আছে চন্দ্র উঠতেই পুনম পাশ ফিরে শুলো।
— জোহরা,,,
পুনমের গালে নাক ঘসে তাকে ফিসফিসিয়ে ডাকে চন্দ্র — উমমমম
— উঠো আজান দিয়েছে নামাজ পরবেনা
— মাত্র ই তো আসরের আজান দিয়েছে আরেকটু ঘুমাই,,,
— এখন মাগরিব
বলতেই পুনম তড়াক করে চোখ মেলল। লাফ দিয়ে উঠে ওয়াশরুমে যেতে যেতে বলল আরো আগে ডেকে দিবেন না আসরের নামাজটা কাযা গেলো।।
চন্দ্র ভ্রু কুচকে বারান্দার সিড়ি বেয়ে উপরে যেয়ে ফ্রেশ হয়ে এসে চলে যায় নামাজের উদ্দেশ্যে।।
#চলবে
#পূর্ণিমায়_বিলীন_চন্দ্র
#সাদিয়া_আক্তার
#পর্ব_৪৯
চন্দ্রদের মাষ্টার্সের রেজাল্ট দিয়েছে চন্দ্র শিহাব রিশান তিন জনেই বেশ ভালো রেজাল্ট করেছে। চন্দ্রের সিজিপি এ 3. 60 এসেছে আবার জাবির ছাত্র হিসেবে বেশ ভালো বলা চলে ক্লাস টপার তাই ভার্সিটি কতৃপক্ষ থেকেই অফার অ্যাসিসট্যান্ট প্রফেসর পদে নিযুক্ত হবে তবে ফর্মালিটি হিসেবে একটা ভাইবা দেয়া লাগবে যা আর কিছুদিন পরেই।
চন্দ্রদের এই অ্যাচিভমেন্ট হিসেবে সবাই তিনজনের উপলক্ষ্যে ছোট্ট একটা গেট টুগেদার পার্টির আয়োজন করেছে। রিশানরা,, রুপশারা,, সবাই মিলে একসাথে খাওয়া দাওয়া করবে সাথে মুক্তির হবু শশুর বাড়ির লোকজনদের দাওয়াত করা হয়েছে একসাথে বসে বিয়ের ডেট টাও ঠিক করা যাবে।
সকাল থেকেই রান্নাঘরে ব্যস্ততায় কাটছে তিন রমনীর। আজকের রান্নার লিষ্ট বেশ লম্বা আবার দুপুরের দাওয়াত তাই তিন রমনী ব্রেকফাস্টের পরপরই রান্নাঘরে ঢুকেছে।
পুনম বিরিয়ানির জন্য গোশটা মেরিনেট করে সিলভার পেপার দিয়ে ঢাকতেই টিং করে একটা আওয়াজ হলো। পুনম হাত মুছে চেক করতেই দেখে — দেখ জোহরা বিবি পাচঁ মিনিটের মধ্যে আসবা নাহলে খবর আছে অর ইফ আই কাম ইয়্যু আর ফিনিশড
চন্দ্রের এমন হুমকি স্বরূপ মেসেজ দেখে মুখ বাকায় পুনম তৎক্ষণাৎ উপর থেকে গর্জন আসে চন্দ্রের
— দেখ তো মা কি জন্য চিল্লাচিল্লি করছে যা তো,,,
চাদনী বেগমের কথায় পুনম নাক কুচকে বলল
— মা তোমার ছেলে শান্ত থাকে কখন
পুনমের বলা শেষ হতেই আরেকবার ডাকা হয়ে গেলো।
— যা পুনম নাহলে ঐ শের তার গর্জনেই আজ তোর কান ঝালাপালা করে ফেলবে।
— কিরে যা পুনম,, এখানের অনেক কাজই এগিয়ে গিয়েছে চিন্তা করিস না
মায়ের কথায় ধ্যান ভাঙ্গে পুনমের। মাথা নাড়িয়ে প্রস্থান করে নিজের কক্ষের উদ্দেশ্যে,,,,,,
— কি সমস্যা আপনার বাসায় হাজারো কাজ এর মধ্যে আপনার ডাকাডাকিতে অতিষ্ট আমি,,,
চন্দ্র হ্যাচকা টানে পুনমকে বুকে জড়ায়। পুনম চন্দ্রের বুকের উপর আছরে পরতেই পুনমের খোপা খানা খুলে দেয় চন্দ্র নিমিষেই কান ভেদ করে কপালের দিকে আসে কয়েকটি চুল সেগুলো শাহাদাত আঙ্গুল দিয়ে সরাতে সরাতে ঘোর লাগা কন্ঠে বলল — সকাল থেকে এনার্জি ড্রিংকস পাইনি সেটি দিয়ে যাও,,,
বলেই চন্দ্র এগিয়ে আসতে নিলে তাকে থামায় পুনম — এখন এনার্জি নেয়ার সময় না ছাড়েন,,
চন্দ্র পুনমকে নিয়ে গড়াগড়ি খায়ে পাল্টি দিয়ে পুনমকে চন্দ্রের বুকের নিচে নিয়ে আসে পুনমের কানে ফিসফিসিয়ে বলে — এই যে এই বুকের নিচে পিসে ফেলব তোমাকে। আমার নিচ,,,
বলতে না দিয়ে পুনম বলল — চুপ নির্লজ্জ পুরুষ,,
— উহু জোহরার শের “এ আলীর কাছে একটা বিজনেস অফার আছে সে যদি রাজি থাকে,,
পুনম মধ্যমা আঙ্গুল খানা চন্দ্রের দিকে ঠেকিয়ে বলল — আপনার প্রতি আমার একটুও ইন্টারেষ্ট নাই নাতো আপনার এই বিজনেস অফারে।। আমাকে হাসিল এতো সহজ না
— আমি শের “এ আলী জোহরার শের “এ আলী জোহরাকে কিভাবে হাসিল করতে হয় খুব জানা আছে
বলেই ফাজিল হাসল। সেই হাসিতে পুনম বুঝল এখন ছাড় পাবে না — আরে মুক্তি আপু,,
তড়াক করে সেদিকে তাকায় চন্দ্র তার সুযোগ নিয়ে পুনম বাধন ছুটাতে চাইলেও পারে না।।
— কি ভেবেছিলে ছুটতে পারবে,, শের “এ আলীর বাধন তার জোহরার জন্য আজীবন থাকবে।
এবার পুনমই চন্দ্রর গলা জড়িয়ে ধরে চন্দ্রের চোখের দিকে তাকিয়ে বলে — এই কালো রুপহীন মেয়েটার প্রতি এতো ভালোবাসা কেনো শের “এ আলী সাহেব,,??
— এই কালো মেয়েটা আস্তো এক নেশা। কৃত্রিম নেশার মতো রং গুন বিবেচনা না করে যেমন নেশাক্ত হওয়া যায় তেমনি এই কালো মেয়েটা কি জানে তার হাটার মধ্যেও আমি নেশাক্ত হই। এই যে তার ঘামার্ত মুখস্রিতেও আমি মাদকতায় ডুবে যাই।
মাথা নাড়ে পুনম না সে জানে না। বাকা হাসে চন্দ্র জানিয়ে দেই বলেই ডুব দেয় অমৃত সুধায়। যে প্রেম সুধা পানে সদা সচেষ্ট চন্দ্র উরফ শের “এ আলী।।
পুনম ও বেশামাল আজ চন্দ্রকে বাধা দেয়ার জায়গায় আরো আকরে ধরে চুলে খামচে ধরে এগিয়ে আনে। তবে তাদের এই কাঙ্খিত মুহুর্তে অনাকাঙ্খিত হাড্ডি হিসেবে অলওয়েজ হাজির রাসমিক আহমেদ পূর্ব।। তবে আজ সে একা না সাথে আছে মুক্তি ও রুপশা,,,,
— এই পূর্ণ মরলি নাকি দ্রুত গেট খুল,,, ঐ পূর্ণ
রুপশা মুক্তির দরজা ধাক্কা ধাক্কির ঢেলায় চন্দ্রের রোমান্স টাইমে ব্যাঘাত পরায় সে বেজায় বিরক্ত।
— এরা আর সময় পায়না আমার রোমান্স টাইমেই এদের আসতে হবে,,,
— আপুদের কি দোষ তারা তো আর জানে না তাদের ভাই অলওয়েজ রোমান্স মুডে থাকে,,,,
মুখ বাকিয়ে বলে উঠে দরজা খুলে পুনম।।
— কিরে এতক্ষণ লাগে দরজা খুলতে??
— ঐ আপু ওয়াশরুমে ছিলাম
আমতা আমতা করে বলল পুনম। মুক্তি পুনমকে টেনে বলল — ভাই পুনমকে নিয়ে যাই,,
— হ্যা নিয়ে যা আমার রেজিস্ট্রি করা বউ এখন তোদের সম্পদ,, বিড়বিড় করে বলেই বালিশে মুখ গুজে ঘুমানোর চেষ্টা করল।।
_____________________
দুপুরে খাওয়া দাওয়া শেষে আজ আবার সবাই বসেছে চন্দ্রের সেই চিলেকোঠায়। সাথে আছে আজ ইহান,, কাইফি,,,
— চন্দ্র আপনার চিলেকোঠা বেশ সুন্দর,,, বেশ সুন্দর সাজিয়েছেন,,
— ধন্যবাদ ভাই তবে এবারের ডেকোরেশন আমি করিনি
এতোক্ষণ সবাই রিডেকোরেট করা চিলেকোঠাটা দেখছিল তবে চন্দ্রের কথায় তার দিকে তাকায়।।
— তাহলে কে করেছে??
— আমার মিসেস,, এগুলো সব পেইন্টিং প্লাস্টিক পেইন্টিং করেছে পুনম আর ফার্নিচার সবই এভরিথিং ওর পছন্দ,,,
— ওয়াও পুনম আপনার তো বেশ গুন
কাইফির কথায় আগুন চোখে তাকায় চন্দ্র। পুনম বিব্রত বোধ করে তবুও মুচকি হাসে,,,
— নুডুলস খাবি শিহাব,,,
— উরিম্মা চাদঁ মামার হাতের নুডুলস ছাড়া যায় নাকি,,,
— কি কাইফি সাহেব চলবে নাকি আজ তো আপনি আমাদের মেহমান,,,
— অবশ্যই তবে হালকা ঝাল,,,,,
চন্দ্র বাকা হাসে রান্নাঘরে যেতে যেতে পুনমকে ইশারা করে তার সাথে যেতে পুনম এখন আর অমান্য করার সাহস পায় না। এই খ্যাপা ষাড় খেপে আছে তাই তার কথা মানাই উত্তম।
রান্না বান্না শেষে সবারটা একে একে আনে পুনম চন্দ্র কাইফির হাতে নুডলস এর বাটি ধরিয়ে দিয়ে তার সামনে ধীরে ধীরে বলল — বাড়ির মেহমান দেখে আজ আপনি স্রেফ হালকার উপর ঝাটকা পাবেন তবে সাবধান ভবিষ্যতে আই ইইল নট ফরগিভ ইয়্যু,,,,
চন্দ্র সরে গিয়ে পুনমের পাশে বসে।
কাইফি ভ্রু কুচকে কাটা চামচ ডাবিয়ে নুডলস নিয়ে মুখে দিতেই ঝটকা খায়। তার মনে হচ্ছে এক খাবলা মরিচের গুড়া সে মুখের মধ্যে ঢুকিয়ে দিয়েছে।।।
— ইহান ভাই নুডলস কেমন হয়েছে??
চন্দ্রের কথায় ইহান মুচকি হেসে বলল — সেরা চন্দ্র আপনি এতো ভালো রাধতে পারেন জানা ছিলো নাতো,,,
— আরে ভাই আমাদের চন্দ্র বেশ গুনী আরে কাইফি সাহেব খাচ্ছেন না কেনো??
লিমন তারা দিলো কাইফিকে কাইফি ঠোট চেপে কোনো রকম ঢোক গিলল। নুডলস যেদিক দিয়ে যাচ্ছে মনে হচ্ছে জ্বলে যাচ্ছে।। সকলের সামনে ফেলতেও পারছেনা। কাইফি চন্দ্রর দিকে তাকায় তার চোখের জ্বলন্ত ভাষা বুঝতে সময় লাগে না যে চন্দ্র কাইফির মুখে তার বউয়ের প্রশংসা পছন্দ করে নাই,,,
তবে কাইফিও ধীরে ধীরে নুডলস শেষ করে নিরব উত্তর দেয় সে আরো প্রশংসা করবে পুনমের।
বাকা হাসে চন্দ্র।
— আরে কি হয়েছে আজ মেহফিল এতো চুপচাপ কেনো জমজমাট করো,, শুরু করো মুক্তিরে দিয়ে,,
লিমনের কথায় মুক্তি বেশ লজ্জা পায়। তার বিয়ে ঠিক হলেও সে এই লোকটা সাথে হাতে গোনা কয়েকদিন কথা বলেছে তাই খুব একটা ফ্রি হতে পারেনি,,
মুক্তিকে চুপ থেকে ইহান বলল — মুক্তি তো চুপ করে আছে আমিই বলি,,
হইহই করে উঠে লিমন রূপশা। মুক্তি লজ্জায় মাথা নিচু করে বসে আছে আর অন্যদিকে পুনম চন্দ্র ফিসফিসিয়ে কথা বলছে। চন্দ্র পুনমের সাথে এমন ভাবে মিশে বসে আছে যেনো পারলে তাকে কোলে নিয়েই বসে থাকতো,,
— নেন কোলে নিয়েই বসে থাকুন অসভ্য লোক,,
ফিসফিসিয়ে বলল পুনম চন্দ্র ও সেভাবেই বলল
— আমার কোনো সমস্যা নেই কোলে নিয়ে বসে থাকতে তবে তুমি লজ্জা পাবে পরে আমার দোষ দিবে বলেই হাত দ্বারা মিশিয়ে অপর হাত রাখে উন্মুক্ত উদরে।।
শিরশির করে উঠে পুনমের সমস্ত কায়া। ওদের কথা বার্তার ফাকে মুখ গুজে পুনমের গলদেশে।
কেউ এদিকে তাকানোর আগেই পুনম তড়াক করে সরে যায়। চন্দ্র সবার দিকে তাকিয়ে বলল
— ভাই দুপুরে ভাত খেয়েছো এখন একটা ঘুম দাও দেখবে মন প্রান দুটোই চাঙ্গা,,,
— তা চন্দ্র মিয়া তোমার কি চাঙা হবে মন নাকি প্রান,,,
লিমনের কথায় হাসির রোল পড়ল সবার মাঝে পুনম লজ্জায় মাথায় নিচু করে তবে বেলাজ চন্দ্রের তাতে হুশ নেই সে তার জোহরার লাজে রাঙ্গা আদল দেখতে ব্যস্ত যা তার কাছে অতীব জরুরি।।
#চলবে