প্রণয়ী পর্ব-১০

0
149

#প্রণয়ী
লেখনীতেঃ #ঈশিতা_ইশা
|১০.|
(লেখা কপি করা নিষেধ)
………..

সকাল বেলা নাশতা খেতে খাবার টেবিলে উপস্থিত সবাই শুধু জাইন অনুপস্থিত। রমিজউদ্দিন বারবার জাইনের কক্ষের দরজার দিকে তাকাচ্ছে যা মিসেস পারুলের নজর এড়ায় না। তিনি হটপট থেকে আরো একটা পরোটা তুলে রমিজউদ্দিনের পাতে দেন।

রমিজউদ্দিন অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করে,’কি ব্যাপার আজকে দুইটার বেশি পরোটা খেতে দিচ্ছো? নিশ্চয়ই কোনো ঘাপলা আছে।’

‘ঘাপলার কি আছে। প্রতিদিন বায়না করেন ভাবলাম আজকে দেই। শত হলেও আমি অতো পাষাণ না।’

‘তুমি না আমাকে খোঁটা দাও আমার ভুঁড়ি নিয়ে? আজকে হঠাৎ এতো দয়ালু হলে কীভাবে?’

‘আমি গরীবদের ক্ষেত্রে বরাবরই দয়ালু।’

‘তুমি কি আমাকে কিছু বললে?’

‘চোরের মন পুলিশ পুলিশ। আমি ভুঁড়ি নিয়ে কিছু বলিনি আর শেষের কথাটাও কাউকে বলিনি কিন্তু যার গায়ে লাগার লেগেছে।’

‘দেখো ভুঁড়ি মানে উচ্চ বংশের প্রতীক। গ্রামের মানুষদের এতো সুন্দর ভুঁড়ি থাকে না। আমরা যে খানদানি লোক তা ভুঁড়ি দেখে লোকে চিনবে।’

‘জমিদাররা খেটে খাওয়া মানুষ তাদের ভুঁড়ি থাকে না।’

‘কি লাভ জমিদারের নাতনী হয়ে সেই তো ভুঁড়িওয়ালার সাথেই সংসার করা লাগতেছে।’

‘আপনার মতো ভুঁড়িওয়ালার চাঁদ কপাল আমার মতো লক্ষী, সুন্দরী,জমিদারের নাতনী বউ হিসেবে পাইছেন।’

মিসেস পারুলের কথা শুনে রমিজউদ্দিন হো হো করে হেসে দেন। রমিজউদ্দিন একাই হাসলো আর কেউ সাহস করলো না। সকাল সকাল খাবার টেবিলে কারো ইচ্ছে হয়নি মিসেস পারুলের ঝারি খাওয়ার।

হাসতে হাসতে রমিজউদ্দিন বলে,’কৌতুকটা ভালো ছিলো।’

রমিজউদ্দিনের কথা শুনে মিসেস পারুল শান্ত থাকলেন। এখন সে চেতলে সমস্যা। দ্রুত রমিজউদ্দিনকে বাহিরে পাঠাতে হবে। সে যতক্ষণ বাসায় থাকবে জাইনের খোঁজ করবে। আর খোঁজ করলেই বিপদ। সকাল সকাল ছেলেটাকে বকবে। আর হাতে ব্যান্ডেজ দেখলে নানান প্রশ্ন করবে। রাতের ঘটনা এখনো তার কানে যায়নি।

মিসেস পারুল বলে,’আমি ঘটক লাগিয়েছি জারিফ তুই কিন্তু এ মাসে যশোরে থাকবি।’

জারিফ বলে,’কিন্তু মা পরশু ফিরতে হবে আমার। গুরুত্বপূর্ণ কাজ আছে।’

মিসেস পারুল বলে,’এলি দু’দিন হলো আবার এতো জলদি চলে যাবি? এবার তোর জন্য মেয়ে পছন্দ করে কথা পাকা করবো তারপর তুই যাবি।’

‘না মা কাজ আছে।’

‘তা থাকবি কেন। যদি বাসায় বউ থাকতো তাহলে ঠিকই থাকতি। এই জন্য বারবার বলি বিয়েটা করে ফেল।’
কথাগুলো বলে মিসেস পারুল মুখ কালো করে ফেলে।

পরোটা চিবুতে চিবুতে রমিজউদ্দিন বলে,’আমি প্রধানমন্ত্রী হলে সকল ছেলেদের উদ্দেশ্যে ঘোষনা দিতাম বিয়ে না করার। সারাজীবন সিঙ্গেল থাকতে বলতাম। সাথে সিঙ্গেল ভাতা দিতাম। খালি খাবে আর নিশ্চিন্তে ঘুমাবে।’

মিসেস পারুল বলে,’সেইজন্যই আপনি আলু পটল ব্যবসায়ী।’

‘খবরদার পারুল আমাকে ঐ নামে ডাকবা না। ফ্রেশ সবজি খাও তবুও এভাবে অপমান করছো?’

‘আপনি ছেলেটাকে বিয়ে করতে অনুৎসাহীত করেন কেনো? ছেলের বিয়ের বয়স গেলে কেউ মেয়ে দিবে? তারপর কি আপনার মতো বুড়ো বয়সে বিয়ে করবে?’

‘বাবা হিসেবে আমার দায়িত্ব আছে না? আমি শুধু যে কাজ করলে জীবন নষ্ট সেই কাজ না করতে বলি।’

‘তার মানে বলতে চান বিয়ে করলে জীবন নষ্ট হয়?’

নুহাশ হুট করে বলে,’না মা বাবা বলতে চায় তোমায় বিয়ে করে বাবার জীবন নষ্ট।’

নুহাশের কথা শুনে মিসেস পারুল কটমট চোখে তাকায়।

রমিজউদ্দিন নিচু গলায় বলে,’এতো সত্যি বলতে হয় না বাপ। বাসায় কিন্তু খাবার জুটবে না।’

মিসেস পারুল আর কিছু না বলে হনহনিয়ে নিজের কক্ষে চলে যান। কেউ বুঝতে পারলো না ঘটলো কি। কারণ এভাবে চুপ থাকার পাত্রী মিসেস পারুল নন। তাহলে চুপ রইলেন কেনো? তার কি আর ঝগড়া করতে ইচ্ছে করছে না? নাকি শরীর খারাপ? সব থেকে বেশি চিন্তায় পড়ে গেলো রমিজউদ্দিন। পরোটা মুখে পুরে দিয়ে সে মিসেস পারুলের পিছনে ছুটে।

নুহাশ হাসতে হাসতে বলে,’বাবা পুরাই বউ পাগল।’

জারিফ প্রশ্ন করে,’রাতে জাইন কখন ফিরেছে?’

নিহারিকা আর নুহাশ চুপ হয়ে যায়।

জারিফ আবারো বলে,’কি হলো একজনও উত্তর দিচ্ছিস না কেনো? নিহারিকা তুই তো জানিস নিশ্চয়ই।’

নিহারিকা উত্তর দেয়,’আসলে জাইন ভাইয়া ভোর বেলা ফিরেছে।’

জারিফ শুধু ‘ওহ’ বলে চুপ হয়ে যায়। সে ব্যবসার কাজে সারা বছর খুলনা থাকে তাই বাড়িতে কি ঘটে তা তার অজানা। জাইনকে নিয়ে রমিজউদ্দিন একেকদিন একেক বিচার দেয় তার কাছে। সে আশ্বাস দেয় বুঝাবে। কিন্তু সেটা বলা পর্যন্তই শেষ। জারিফ কল দিলে জাইনকে তেমন একটা কলে পায় না। যখন জাইন কল ব্যাক করে তখন আবার জারিফ ব্যস্ত থাকে। মাসে একবার কি দু’বার যশোর এসে সকলকে দেখে যায় জারিফ। মিসেস পারুল অনেক কান্নাকাটি করে জারিফকে এখানে রাখতে কিন্তু সে অনেক বুঝিয়ে চলে যায়। তবে এবার নতুন করে তার বায়না জারিফকে বিয়ে করাবে। জারিফ এবার কীভাবে মাকে বুঝাবে সেটাই ভাবনা।

…….

‘ঐ তোর আঙ্কেলের কি খবর?’

রিমির প্রশ্নের বিরক্ত হয় প্রিয়তা। প্রতিদিন রিমি একই প্রশ্ন করে।

প্রিয়তা বিরক্তি নিয়ে বলে,’সর তো একই প্রশ্ন করিস আর আমি একই উত্তর দেই,জানি না।’

রিমি প্রিয়তার কথায় পাত্তা না দিয়ে বলে,’তোর কি কাউকে পছন্দ না? তোর বাসা থেকে অমন আঙ্কেল টাইপ পাত্র কেন আনে?’

প্রিয়তা উত্তর দেয়,’আমি বিয়ে করলে পরিবারের পছন্দে করবো।’

‘শোন তুই সারা জীবন কুমারী থাক তবুও অমন আঙ্কেলকে বিয়ে করিস না। ওরে দেখলেই বুঝা যায় চরিত্র ভালো না।’

রিমির কথার শুনে প্রিয়তা অদ্ভুত দৃষ্টিতে তাকায়।

হৈমন্তী বই থেকে মুখ তুলে বলে,’রিমি এখন একটু মুখে স্কচটেপ মার প্লিজ। আমার প্রেজেন্টেশন আছে একটু পড়ছি।’

রিমি বলে,’জানিস আমার কাজিন আমাকে প্রপোজ করেছে।’

রিমির কথা শুনে প্রিয়তা আর হৈমন্তী অবাক হয়ে তার দিকে তাকায়।

হৈমন্তী বলে,’এটা তুই যদি ঐ কাজিনকে এনেও বলাস তাও বিশ্বাস করি না। তোর মতো বাচালকে ক্যান কোনো সুস্থ মানুষ নিজের ঘাড়ে চাপাবে?’

‘আরে আরে তুই দেখি আমাকে অবিশ্বাস করিস। আমার কাজিনের বয়স আট বছর। ও বলছে বড় হয়ে আমাকে বিয়ে করবে।’

রিমির কথা শুনে হৈমন্তী গম্ভীর দৃষ্টিতে তাকায়। দেখেই বুঝা যাচ্ছে বেচারি চেতে গেছে। এই মূহুর্তে মশকরা করাতে সে বিরক্ত। প্রিয়তা আস্তে করে উঠে আরেক চেয়ারে বসে। হৈমন্তী পড়াশোনা নিয়ে অনেক বেশি সিরিয়াস। পড়ার সময় বিরক্ত করাটা একদমই অপছন্দ তার।
দু’জন ছেলে নিজেদের মধ্যে বলাবলি করছিলো যা প্রিয়তার কান এড়ায় না।

‘গতকালকে কমিশনারের ছেলেকে মে রে ছে জান ভাই। শুনেছিস?’

‘শুনলাম তো কাহিনী কি?’

‘আরে আসল কাহিনী তো কেউ বলে না। একেক জন একেকটা বলে।’

‘এমনিতেও উনি কারণ ছাড়া কাউকে ধোলাই দেয় না। নিশ্চয়ই কাহিনী আছে।’

এরপর আর শোনার আগ্রহ পেলো না সে। ব্যাগ তুলে ক্লাসের দিকে হাঁটা দিলো সে। ক্লাস শুরু হতে অনেকটা সময় বাকি কিন্তু এখানে বসে থাকার চেয়ে ক্লাসে বসাটা তারা কাছে শ্রেয় মনে হলো। রিমিও তার পিছন পিছন ক্লাসের দিকে যায়।

………

সকাল সকাল দুই বালতি কাপড় নিয়ে ছাদে এসেছে প্রিয়তা। এই কাজটা তার মা মিসেস মাসুমা করেন কিন্তু আজকে তাকে পাঠিয়েছে কারণ ভোরবেলা প্রিয়তার খালা এসেছে গ্রাম থেকে। মিসেস মাসুমা নিজের বোনের সাথে খোশগল্পে ব্যস্ত। তাই প্রিয়তাকে পাঠিয়েছেন ছাদে কাপড় মেলতে। আজকে ভার্সিটিতে প্রিয়তার ক্লাস নেই তাই তো বাসার কাজে মাকে সাহায্য করছে সে। এক এক করে কাপড় গুলো ঝেরে দড়িতে মেলে দিচ্ছিলো সে।
কাপড় মেলা শেষ করে ওড়নায় হাত মুছে নেয়। চিন্তা করে একটু পর নিচে যাবে। এমনিতেও মাসুদাকে তার তেমন একটা ভালো লাগে না। সারাক্ষণ বিয়ে নিয়ে কথাবার্তা বলে। মাথায় ওড়না টেনে ছাদের কিনারায় গিয়ে আশেপাশে দেখতে শুরু করে। এপাশ থেকে অপাশ চক্কর দিয়ে রাস্তার মানুষজনকে দেখতে থাকে। হঠাৎ কয়েকটা বাইক একত্রে যেতে দেখে। মাঝের বাইকে বসা ছেলেটাকে চেনাচেনা লাগে। তখনই ছেলেটা ছাদের দিকে তাকায়। চোখ থেকে সানগ্লাস খুলে সে হাসি দেয়। প্রিয়তা সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে পিছনে ঘুরে যায়। কি বোকার মতো একটা কাজ করলো সে। ভেবেই তার গা জ্বলে যাচ্ছে। বালতি দু’টো তুলে হাঁটা দেয় সে।

মিসেস মাসুমা তার বড় বোন মাসুদার সাথে গল্প করছেন আর সবজি কাটছেন।

প্রিয়তা ফ্ল্যাটে ঢুকে সোজা বাথরুমে চলে যায় বালতি দুটো রাখতে।
পান মুখে পুরে মাসুদা বলেন,’এতো ডাঙ্গর মাইয়া ঘরে রাইখা দিসোস মাইয়া কি নিকা দিবি না?’

মিসেস মাসুমা জবাব দেন,’দিমু তো কিন্তু ওর বাপে মাইয়ার লেখাপড়া শেষ হলে এরপর বিয়া দিবে।’

মিসেস মাসুমার কথা শুনে মাসুদা মুখ বাঁকায়।
‘শোন মাইয়ারা কুড়িতে বুড়ি। সেইখানে তোর মাইয়ার বয়স কুড়ি পাড় হইছে বহুত আগে। আমগো গ্রামের একটা মাইয়াও আবিয়াইত্তা নাই সব গুলার চৌদ্দ হইতেই বিয়া দেওয়া শ্যাষ আর পোনরো ষোলতে বাচ্চা পয়দাও করা শ্যাষ।’

‘আপা তা তো আর প্রিয়তার বাপে বুঝে না। ওনার ইচ্ছা পোলার মতো মাইয়ারেও শিক্ষিত করবে।’

‘তুই চুপ আছোস ক্যান? কইতে পারোস না কিছু? মাইয়ারে লেহাপড়া করাইয়া জর্জ বেরিস্টার বানাবি নাকি? আমি বাপু মাইয়া মাইনষের কামাই খাওনের আশা করি নাই কোনো দিন। পোলা জন্ম দিছি পোলাই খাওয়াইবো।’

‘আশা করবেন কীভাবে? আপনার মেয়ে তো ক্লাস সেভেনে উঠেই মুদি দোকানদারের হাত ধরে পালায়। আরেক মেয়ে তো একেক বার একে জনের সাথে প্রেম করতে গিয়ে ধরা খায়। যতদূর শুনেছি আপনার একমাত্র ছেলে বিয়ে করে আপনাদের খোঁজ নেয় না। আপনার মুখে এমন কথা মানায় না খালা।’
হঠাৎ প্রিয়তার এমন বিস্ফোরণ মূলক মন্তব্যে মাসুদা বেশ লজ্জা পায় সেই সাথে চোখেমুখে রাগ দেখা যায়। মিসেস মাসুমা বোনের চেহারা দেখে বুঝে ফেলে। মেয়ের এমন সোজাসাপটা জবাবে সে কিছুটা খুশি বলা চলে। তার বোন প্রতিবার আসে আর তার সংসারে নাক গলানোর চেষ্টা করে। বড় বোন হওয়াতে সে কিছু বলতে পারে না। প্রতিবার তার বাসা থেকে যাওয়ার পর গ্রামের মানুষদের কাছে তার ছেলে মেয়েকে নিয়ে নানান কথা রটায়। একবার তো রটিয়েছিলেন প্রিয়তার সাথে নাকি বদ জ্বি ন আছে তাই ওর বিয়ে হচ্ছে না।

‘তোর মেয়েরে লাই দিয়ে মাথায় তুলছিস এখন দেখি আদব কায়দা ভুলে গেছে। ভাবছিলাম মাইয়াডা ভদ্র এখন দেখি চরম অভদ্র।’

‘শুনেন খালা আমি মিথ্যা কিছু বলিনি। আপনি যদি আমার বিয়ে কিংবা আমার মায়ের সংসার নিয়ে এতো খোঁচা মারা কথা না বলতেন তাহলে আমি সাহস পেতাম না এসব বলার। আপনিই আমাকে সাহস দিয়েছেন এসব বলার।’

মিসেস মাসুমা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে বলেন,’আপা ও ছোট মানুষ কি বলতে কি বলছে ওর কথা ধইরেন না। ঐ তুই তোর ঘরে যা।’

মায়ের আদেশে প্রিয়তা নিজের কক্ষের দিকে অগ্রসর হয়। কক্ষে এসেও মাসুদার বিলাপ শুনতে পায়। এই মহিলা সোজা হওয়ার না তা সে জানে। এতোদিন কিছু না বললেও আজকে নিজের মুখ বন্ধ রাখতে পারেনি প্রিয়তা। প্রতিবার আসবে থাকবে খাবে আর তাদের বদনাম করবে।

…….

সন্ধ্যার পর জাইন রফিকের পিছনে বাইকে উঠে বসে। হাতে ক্ষত থাকায় আজকে সে বাইক চালায়নি। রফিকই চালিয়েছে। ব্যাথা একটু কমলেই সে চালাবে।

শাকিল প্রশ্ন করে,’কিরে কই যাস?’

জাইন উত্তর দেয়,’কাজ আছে।’

‘তোর কি কাজ? এক ঘন্টা পর এখানে মিটিং বসবে আর তুই এখন এখান থেকে যাচ্ছিস এটা তো ঠিক না।’

‘এখনো অনেক সময়। থাক চলে আসবো।’

‘নিশ্চয়ই ঐ বাড়ির ছাদে যাবে। আচ্ছা একটা কথা বল এ যে যাচ্ছিস মেয়েটা কি আসে? আমার তো মনে হয় না। তাছাড়া মেয়েটা তোকে অপছন্দ করে। তুই ওর পিছনে ঘুরে সময় নষ্ট করছিস সেই সাথে নিজেকে ছেছড়া প্রমাণ করছিস। পছন্দ করিস বলে দে এভাবে রোড সাইড রোমিও এর মতো ঘুরে লাভ নেই বরং লস।’

‘একজনের চোখে না হয় হলাম ছেছড়া।’

জাইনের কথা শুনে মারুফ ওর কাঁধে চাপড় দিয়ে বলে,’সাব্বাস এই না হলো মজনুর মতো কথা। কে কি বললো কানে নিস না। লাইলী একদিন ঠিকই বুঝবে তোর ফিলিংস ততদিন চালিয়ে যা।’

শাকিল হতাশ হয় মারুফের কথা শুনে।
‘তুই কি চাইছিস? মেয়েটা রাজি হলে?’

শাকিলের প্রশ্ন শুনে জাইন ওর দিকে তাকায়।
‘বিয়ে করবো। ও শুধু একবার হ্যা বলুক তারপর আর দেরি করবো না।’

মারুফ হেসে বলে,’ব্যাটা হ্যা বলার জন্য তো প্রথমে প্রপোজ করতে হবে। তুই তো এখনো সেই ধাপে যাসনি।’

‘আগে ওর সাথে পরিচিত হয়ে বন্ধুত্ব করি তারপর করবো। বাকি মেয়েদের থেকে ও অনেক আলাদা তাই ওকে বাকিদের মতো ট্রিট করলে হবে না,স্পেশাল ট্রিট করতে হবে। আর আমি সেটাই চেষ্টা করছি।’

শাকিল বলে,’দেখিস এগুলা করতে করতে তোর লাইলীকে আবার হারিয়ে ফেলিস না।’

জাইন সানগ্লাসটা চোখে দিয়ে বলে,’এই জীবনে তা হচ্ছে না। ধরেছি যখন মৃত্যুর আগে হাত ছাড়ছি না।’

জাইনের কথা শুনে শাকিল চুপ হয়ে যায়। রফিক বাইক স্টার্ট দেয়। শো শো করে বাইক স্থান ত্যাগ করে।

……..
(চলবে..)