প্রণয়ের সুর পর্ব-১৯

0
17

#প্রণয়ের_সুর
#পর্ব১৯
#মহুয়া_আমরিন_বিন্দু
সকাল সাতটা ট্রেন এসে থামলো যথাস্থানে।ফুরফুরে বাতাস বইছে। রেল স্টেশন মানুষে পরিপূর্ণ। একে একে সবাই নেমে আসলো, বাড়ির গাড়ি এসে অপেক্ষা করছে, নেহার পা ব্যাথায় টন টন করছে ভালো করে হাঁটতে পারছে না,গতকাল সামান্য আ’ঘাত মনে হলেও সারারাত পর এখন যখন হাঁটতে শুরু করেছে তখন বুঝলো নেহা,কয়েক কদম হেঁটেই খুঁড়াতে হচ্ছে এখন।
কোনো রকম নেমে এসেছে লাগেজ হাতে।সাব্বির এসে নেহার লাগেজ নিজে নিয়ে সামনে চলে গেলো।

স্টেশন থেকে চার মিনিটের পথ পাড়ি দিয়ে গাড়ির কাছে যেতে হবে,নেহা পর পর কয়েকটা ঢোক গিললো ট্রেন থেকে নামতেই পায়ের ব্যাথায় দাঁত কিড়মিয়ে ধরলো।চোখ বন্ধ করে নিজেকে সামলাতে চাইলো তার পরও মানুষের সাহায্য নিবে না ও।

হুট করে নিখিল এসে ওকে কোলে তুলে নিলো,নেহা প্রথমে বুঝতে না পেরে ভয়ে কলার চেপে ধরেছে।
নিজেকে নিখিলের কোলে দেখে হকচকিয়ে গেলো কি অদ্ভুত লোক সব মানুষ কিভাবে তাকিয়ে আছে রাস্তাঘাটে এভাবে কোলে নেওয়ার মানে কি!
নেহা মৃদু চেঁচিয়ে বললো–,,নামান বলছি,কি করছেন, দেখুন সবাই তাকিয়ে আছে।আমি একা যেতে পারবো!

নিখিলের কানে যেনো নেহার কথা গুলো পৌঁছাচ্ছে না।নেহা লজ্জায় মুখ লুকিয়ে রেখেছে।গাড়ির ভিতর এনে রাখলো নিখিল নেহা কে, কিন্তু একবার ও নেহার সাথে কথা বলছে না।নেহা এবার বিরক্ত হলো, একটা সামান্য কারনে এতো বেশি রাগ করাটা কি আদো ও ঠিক?নিখিল বারাবাড়ি করছে কেনো এতো। রাগ হলে বকে দিলেও তো পারে কিন্তু না এই লোক কাল থেকে মৌনতা পালন করছে।

গাড়ি ছুটে চললো পিচঢালা রাস্তার উপর দিয়ে বাড়িতে পৌঁছাতে বেশি সময় লাগেনি রাস্তায় ট্রাফিক ছিলো সহনীয় পর্যায়ে।

সকালে ব্যস্ত হাতে নাস্তা তৈরি করছেন বাড়ির গৃহিণীরা।ছেলে মেয়েরা আজ কতো দিন পর বাড়ি ফিরছে,ওদের ছাড়া বাড়িটাি প্রাণ শূন্য মনে হচ্ছিলো। সেতারা বেগম নামাজের পর বিছানায় আর যায়নি নাতি নাতনিদের সাথে দেখা হয় না কয়েকদিন মাত্র তবুও মনে হচ্ছে কতো বছর যেনো দেখেন না।

কলিং বেলের আওয়াজ শুনে ছুটে আসলে তাহমিদা বেগম,হাতের কাজ শেষ করে আসলেন হামিদা, ও সাহারা।সেতারা বেগস সোফায় বসে আছেন।
দরজা খুলতেই সব গুলাতে গিয়ে জড়িয়ে ধরলো তাহমিদা বেগম কে।সবাই একসাথে বলে উঠলো

–,,মিস ইউ ছোট মা।অনেক বেশি মনে পড়েছে তোমাকে!
হামিদা বেগম,সাহরা বেগম এসে বললো–,,শুধু ছোট মাকেই সবার মনে পড়েছে বড় আপা আমরা মনে হয় ভেসে এসেছি!
সবাই হেসে গিয়ে দুজন কে জড়িয়ে ধরে বললো –,,সবাইকেই তো মিস করেছি।

সেতারা বেগমের কাছে গিয়ে বসলো সবাই।নেহা ছিলো পেছনে,হামিদা বেগম সাদা বেন্ডেজ দেখেই আত”ঙ্কিত হয়ে বললো–,,নেহা কি হয়েছে তোর হাত পায়ে বেন্ডেজ কেনো?

নেহা মুখে হাসি ঝুলিয়ে খুড়িয়ে কোনো রকম এগিয়ে এসে বললো–,,তেমন কিছু না তো বড় মা।

তাহমিদা বেগম রেগে বললো–,,তা তো দেখতেই পাচ্ছি,নিশ্চিত লাফালাফি করেছিস।রৌফ টা তো তোর থেকে ছোট তা ও ওর কিছু হয়নি শান্ত থাকা শিখ একটু ওর থেকে,বয়স বাড়ছে আর বাচ্চা হয়ে যাচ্ছে দিন দিন।

নেহা ঠোঁট উল্টে ফেললো–,,মা একটুই তো কে’টেছে তাই বলে এভাবে বকা দিতে হবে তোমায়?
তোমরা কেউ আমাকে ভালোই বাসো না যখন দেখো শুধু বকা দেও।
নেহা হেঁটে চলে যাচ্ছে রুমের দিকে যেতে পারছে আর কই,নিখিল বাহির থেকে এসে বললো–,,এই দাঁড়া আমি দিয়ে আসছি তোকে!

হামিদা বেগম বললো–,,নেহা খেয়ে একবারে উপরে যা মা!আবার নামতে কষ্ট হবে তো।

নিখিল রাগী কন্ঠে বললো–,,যে ব্যক্তি পন্ডিতি করে হাত পা কা’টতে পারে তাকে এতো বেশি আদিখ্যেতা দেখাবে না তোমরা কেউ।আদর পেয়ে পেয়ে বাঁদ”র হয়ে গেছে। মাথায় তুলবে না আর এটাকে তোমরা।খাওয়া লাগবে না ওর,যদি খিদে পায় আবার হেঁটেই আসতে পারবে, একাই পারে সব!
নেহা একবার তাকালো নিখিলের দিক,মুখ ঘুরিয়ে হাঁটা দিলো আবার।

হামিদা বেগম ছেলেকে ধ’ম কে বললো–,,ছোট মানুষ এভাবে বকা দিচ্ছিস কেনো।যা গিয়ে রুমে দিয়ে আয় ওকে,আর একবার ও কিছু বলবি না মেয়েটাকে!

নিখিল গিয়ে নেহার সামনে দাঁড়ালো, কোলে তুলতে নিলে নেহা সরে গেলো।মুখ বাঁকিয়ে বললো
–,,লাগবে না আপনার সাহায্য!

সাব্বির, জেরিন,বৃষ্টি বিরস মুখে দেখলো,একদিনের ভিতর আবার ঝ’গড়া লেগে গেছে এরা,এদের দ্বারা শুধু এই একটা জিনিসই হবে বাকি সব কিছু শত চেষ্টা করেও সম্ভব না।ইগো একদম নাকের ডগায় দুইটার!

কপাল চাপড়ালো সাব্বির।রান্না ঘর থেকে খাবার এনে টেবিলে রাখতে লাগলো তিন জা তে মিলে।

সেতারা বেগম বলে উঠলো–,,নেহা বইন রাগ করে না, যাও ঘরে যাও স্বামী গুরুজন তার কথা মানতে হয়তো!

সাব্বির বলে উঠলো–,,আর গুরুজন যে হারে চুল টানাটানি করে এরা দাদী আর বলো না,এদের দ্বারা স্বামী স্ত্রীর মতো সম্পর্ক কখনো হয় কিনা দেখো।আমি দ্বিধায় ভুগছি এদের দেখে বিয়ে করার সখ চলে গেছে।পরে যদি নেহা বইনের মতো একটা বউ আমার ভাগ্য পড়ে জীবন তো তেনা তেনা হইয়া যাইবো!

সেতারা বেগম বলে উঠলো–,,চুপ থাক হারাম”জাদা!
আমার নাতনি রে কোন দিক দিয়া খারাপ মনে হয় তোর,যা গিয়ে হাত মুখ ধুইয়া আয়, ওদের টা ওরা বুঝবো।

নিখিল জোরজবরদস্তি করে নেহা কোলে দিলো নেহা হাত পা ছুড়ছে আর বলছে–,,নামান বলছি।কথা শুনিয়ে আবার দয়া দেখাতে আসেন কেনো?

নিখিল এবার বিরক্ত হয়ে বলে –,,সত্যি নামিয়ে দিবো।একদম কিন্তু ফেলে দিবো!

নেহা দ্বিগুণ বিরক্তি নিয়ে বললো–,,ফেলে দেন আপনাকে কে নিতে বলেছিলো!

কথা বলতে দেরি নিখিল নেহাকে কোল থেকে ফেলতে দেরি করেনি!
ধাম করে শব্দ হলো, হামিদা বেগম চেঁচিয়ে উঠে বলে
–,,কি হলো নেহা পড়লি কি করে?
বৃষ্টি স্পষ্ট দেখলো নিখিল ফেলে দিয়েছে নেহাকে!কি ভাই পেলো বললো দেখে ফেলতে হবে।
শক্ত মেঝেতে পড়ে গিয়ে নেহা ব্যাথাটাও পেয়েছে বেশি।নিখিল গটগট শব্দ করে রুমে চলে গেলো।নেহা দাঁত চেপে ধরে ব্যাথা হজম করে নিলো।মুখ থেকে বেরিয়ে আসলো–,,নির্দয় লোক!

বৃষ্টি এগিয়ে গিয়ে জিজ্ঞেস করলো–,,কিরে বেশি ব্যাথা পেয়েছিস?

নেহা ফিচলে হাসলো মাথা নাড়িয়ে না বুঝালো,ধীর কন্ঠে বললো–,,উঠতে সাহয্য কর!
নেহা কে রুমে দিয়ে বৃষ্টি চলে গেলো।নেহা রাগে চুল টেনে ধরলো–,,বেশি ভাব নিচ্ছে তো নিতে থাকুক নেহা ও দেখবে কতোদিন কথা না বলে থাকতে পারে,এরিয়ে চলতে পারে এই লোক।

সকালের নাস্তা নেহা কে এসে দিয়ে গেলেন তাহমিদা বেগম।গতকালের পড়া জামাটা এখনো পরিবর্তন করেনি নেহা বিছানায় শুয়ে পড়লো।

হঠাৎই মনে পড়লো ওর মোবাইলটা নিখিলের কাছে আছে,এখন আবার এই লোকের মুখ দেখতে হবে ভেবেই নেহা তপ্ত শ্বাস ছাড়লো।কিন্তু মোবাইল তো লাগবেই রাতে ঘুমিয়েছে অনেক এখন আর ঘুম আসবে না কিছুতে।

নেহা ধীর পায়ে এগিয়ে গেলো রুমের দিকে।দরজায় নক করলো,দরজা খোলা আলতো হাতে খুলে ফেললো দরজাটা,ভেবেই নিয়েছে নিখিল রুমে না থাকলেই হয় মোবাইল নিয়ে কেটে পড়বে কোনো রকম!

নেহা এক পা দিতে যাবে তখনই ভিতর থেকে ধম’ক দিয়ে উঠলো নিখিল।নেহা ভয় পেয়ে গেছে পুরো,,যখনই কিছু বলতে যাবে নিখিল রাশভারি কন্ঠে বলে উঠলো

–,,কেনো এসেছিস এখানে?একদম ফ্যাচফ্যাচ করতে আসবি না।তোর কথা শোনার মতো মুড নাই এখন,রুমে আসবি না!

নেহার মন খারাপ হয়ে গেলো,নিখিলের কাছে ওর কথা ফ্যাচ ফ্যাচ মনে হয়, নেহা কি বেশি কথা বলে নাকি যার জন্য নিখিল এতো বিরক্ত হয়?ছলছল করে উঠলো চোখ,কান্না আটকে রেখেছে নেহা।
জিব দিয়ে ঠোঁট ভিজিয়ে বললো–,,আসলে,,,!

–,,কি আসলে নকলে করছিস?

—,,ওই আমার মোবাইল টা আপনার কাছে ছিলো।ওটাই নিতে এসেছিলাম আপনা কে বিরক্ত করতে চাইনি আমি স্যরি!
নিখিল এবার পূর্ণ দৃষ্টি রাখলো নেহার উপর নিচের দিক তাকিয়ে আছে মুখটা একেবারে আষাঢ়ের আকাশ!
নিখিল ভালো করেই জানে নেহা কখন স্যরি বলে।

নিখিল শান্ত কন্ঠে বললো—,,ভিতরে এসে নিয়ে যা!

–,,লাগবে না!
নেহা এক প্রকার দৌড়ে সেখান থেকে চলে আসলো।নিখিল নিজের প্রতি বিরক্ত হলো, রাগটা বেশিই দেখিয়ে ফেলেছে।এবার এই মেয়ে কে কিভাবে মানাবে?
নিখিল পিছু ডাকলো–,,কথা শুনে যা নেহা
নিখিল নেহার পেছনে আসলো,নেহা রুমে ঢুকে দরজা আটকে দিলো।
নিখিল বার কয়েক দরজা ধাক্কালো।নেহা সারা শব্দ করলো না।
নিখিল হতাশ হয়ে ফিরে আসলো।
———
দুপুর গড়িয়েছে ঘুম থেকে উঠে নিচে নামলো জেরিন।
সেতারা বেগম সোফায় বসে পান চিবুচ্ছেন।

জেরিন পাশে গিয়ে বসতেই বললো–,,তোর ফুফু আসবো কয়েকদিনের ভিতর কাইল কথা হইলো!

জেরিন উৎফুল্লিত কন্ঠে বললো —,,সত্যি বলছো দাদী কতো বছর ফুপ্পি কে দেখি না সে যে বিদেশ গেলো একবারও আসলো না তোমার মেয়ে,একদম পর করে দিয়েছে আমাদের।
সাহারা এসে বললো-,,তা যা বলেছিস জেরিন।ফারহান,আর জেবা জানি কতো বড় হয়েছে ভিডিও কলে দেখা আর বাস্তবে দেখা কি আর এক।এবার আসুক বেঁধে রেখে দিবো একদম।

–,,ঠিকই বলেছো মেজো মা।

সাব্বির,বৃষ্টি হাই তুলতে তুলতে এগিয়ে আসলো।সাব্বির নিজের মায়ের উদ্দেশ্য বললো–,,মা এক গ্লাস সরবত করে দাও না।তা জেরিন কার কথা বলছিস?

–,,ফুপ্পি আসবে সাথে জেবা আর ফারহান ভাইয়া!

সাব্বির মুখ তেঁতো করে বললো–,,মিহির ভাইয়ের সতিন টা!

বৃষ্টি গুঁতো মেরে বললো–,,ভাইয়া কিসব বলো।ছেলেদের আবার সতিন হয় নাকি!
জেরিন নিজের চুল গুলো পেঁচিয়ে ধরে বললো –,,হ্যাঁ হ্যাঁ জেবাও আসছে তাই না রে বৃষ্টি!

–,,হুম জেবা আসলে কি সমস্যা,,,,!
জেরিন মুখ বাঁকিয়ে বললো–,,সাধে তোকে গা”ধি বলি।আসলেই বুঝবি।

তাহমিদা এসে বললো–,,তোরা সব এখানে নেহা কই?

–,,ঘুমাচ্ছে ছোট মা।তুমি জানো না তোমার মেয়ে কতো ঘুম কাতুরে।

নিখিল নেমে আসলো তখনই, শাহআলম সাহেব আসলো অফিস থেকে সকালে তাড়াতাড়ি বেরিয়ে যাওয়ায় একজনের সাথে ও দেখা করতে পারেনি।

সবাই শাহআলম চৌধুরীর সাথে আড্ডা দিতে বসে গেলো।সাহারা এসে বললো–,,শুরু তোদের বক বক ভাইজান আপনি যান তো ফ্রেশ হয়ে আসেন,পরে এদের কথা শুনতে পারবেন।

শাহ আলম চৌধুরী হেসে বললো–,,যাবো তো। তা আমার নেহা মা কই?

নিখিল গিয়ে খাবার টেবিলে বসলো।হামিদা এসে নেহার কথা জিজ্ঞেস করতে নিখিল বললো সে জানে না!

হামিদা বেগমের মেজাজ খারাপ হলো–,, এ কেমন কথা নিখিল, নেহা তোর সাথে নেই মানে?তোর বউ তুই ওর খেয়াল রাখবি না?

–,,দরজা আটকে নিজের রুমে গিয়ে ঘুমিয়েছে।এখানে আমি কি করতে পারি?

—,,ওহ! তাই তো তুই কি করবি।দোষ করলি নিজে,এখন মেয়েটা একটু রাগ ও করতে পারবে না।এবারই শেষ বলে দিচ্ছি তোকে,নেহার সাথে সুন্দর করে কথা বলবি,আর রুম আলাদা হলে আমার থেকে খারাপ কেউ হবে না।বিয়ে কোনো ছেলেখেলা না,যে এই আছে তো এই নেই।নেহা না হয় বুঝে কম কিন্তু তুই?নিখিল বিয়ে করেছিস তুই নেহাকে,তোকেই তো ওকে সামলে রাখতে হবে এখন।আর যেনো দুজন কে এভাবে লাগতে না দেখি আমি!

নিখিল নিজের মায়ের দিক তাকালো চোখ ছোট করে।কি মা হলো ছেলে কে রেখে ছেলের বউয়ের পক্ষ নিচ্ছে!
——,,
সাব্বির কন্ঠ খাদে নামিয়ে বললো–,,আর বলো না বড় আব্বু তোমার ছেলেটা একটা নিরামিষ। কি হলো কি বলবো,এদের তো ঝগ”ড়া করাই থামেনি।প্ল্যান পুরোপুরি সফল না হলেও অর্ধেক হয়েছে।তোমার ছেলের মুখ থেকে বেরিয়ে সে তোমার আদরের বউমা কে ভালোবাসে!

কিন্তু,,,
শাহআলম চৌধুরী ভ্রু বাঁকিয়ে জিজ্ঞেস করলো–,,কিন্তু আবার কি?
বৃষ্টি বিরক্তি নিয়ে বললো–,,আসার সময় আবার লেগেছে,এখন পারলে কেউ কারো মুখ দেখবে না!আবার তোমার গুনধর ছেলে রাগে কোল থেকে ফেলে দিয়েছে।
শাহআলম চৌধুরী মুখ ছোট করে বললো–,,এই ছেলে কার মতো হলো।সন্দেহ হচ্ছে রে আমার।ছেলে হইছে তার শ্বশুরের মতো কি বিপ’দ। দ্বারা নতুন আইডিয়া ভাবতে দে!দুটোকে কয়েক দিনের জন্য একটু আলাদা রাখতে হবে, তাহলে টান অনুভব করবে!

জেরিন বললো–,,আব্বু কিন্তু কি ভাবে করবে?তোমার ছেলে যত চোট”পাটই দেখাক বউ না দেখে তো দুই মিনিট থাকতে পারে না মুখে বলে তুই দূরে যা নেহা মনে মনে বলে তুই গেলে আমার শ্বাস আট’কে আসে!

সাব্বির বলে উঠলো–,,ধুর তোর ভাইয়ের কথা বাদ দে।বড় আব্বু তুমি বলো কি ভাবে কি করবে?

–,,অফিসের কাজে সিলেট পাঠিয়ে দিবো বা’দর টাকে!
এক সপ্তাহের জন্য পাঠাবো নাকি আরো বেশি?

বৃষ্টি বললো–,,এক সপ্তাহই ঠিক আছে।না হয় দু দিকে দুইটা বেহুঁ”শ হয়ে পড়ে থাকবে!
সবাই এক সাথে মাথা নাড়লো।হামিদা বেগম এসে রেগে বললো–,,এই তুমি বাচ্চাগুলার সাথে কি ফুসুরফাসুর করো?বাচ্চা হয়ে যাচ্ছো নাকি দিন দিন।যাও গিয়ে ফ্রেশ হও।এই তরা খেতে বস।

শাহআলম চৌধুরী উঠে গিয়ে বললো–,,শোনে ওগো বৃষ্টি মা বয়স আমার বেশি না চুল কয়টা পেকে গেছে বাতাসে!

শাহআলম চৌধুরীর কথায় হু হা করে হেসে উঠলো সবাই!নিজের বাপের কথায় খাওয়া রেখে ভ্রু কুঁচকে তাকালো নিখিল।এই লোক কোন দিক দিয়া তার বাবা হয়,উল্টো এটা কে নেহার বাপ বললে বেশি ভালো হতো!
———–
সন্ধ্যা নেমে এসেছে নেহা এখনো দরজা খুলেনি কথাটা শুনেই চিন্তিত হলো সবাই।
আবার কিছু হয়ে যায়নি তো।একে একে সবাই হাজির দরজার সামনে, নিখিলের অবস্থা এমন পারলে দরজা ভেঙ্গে ভিতরে ঢুকে।

বেশ সময় ডাকাডাকির পর ঘুমো ঘুমো চোখে দরজা খুললো নেহা সবাই কে এভাবে দেখে ঘুম জড়ানো কন্ঠে জিজ্ঞেস করলো—,,কি হয়েছে তোমরা সবাই,,

নেহার কথা শেষ হওয়ার আগেই নিখিল গিয়ে সবার সামনেই শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো নেহা কে।বেচারি টাল সামলাতে না পেরে দু পা পিছিয়ে গেলো!

এদিকে নির্লজ্জ ছেলের কান্ডে লজ্জায় শেষ হয়ে যাচ্ছেন বাড়ির তিন গৃহিণী তড়িঘড়ি করে বেরিয়ে গেলেন রুম থেকে!

সেতারা বেগম বলে উঠলো–,,দাদু ভাই কিছু তো লজ্জা শরম কর সবার সামনে তুই!

নিখিল নির্লিপ্ত কন্ঠে বললো–,,আমার বউ যা খুশি করবো। তোমরা চোখ বন্ধ রাখো!
চলবে?