#প্রতিশোধে_প্রনয়
part : 3
writer : Mohona
(do not copy please)
.
শমসের : হ্যা। গতমাসের ১৩তারিখে ছেলেটার সাথে ওর বিয়ের কথা ছিলো। নিয়তির পরিহাস দেখো। বিয়ের এক সপ্তাহ আগে ছেলেটা স্ট্রোক করে মারা যায়। পাগলের মতো ভালোবাসতো। কথা বলা বন্ধ হয়ে গিয়েছিলো।
সাদিকুর : আমরা তো কিছু জানতামই না।
শমসের : সবই তো হারিয়ে ফেলেছে মেয়েটা। আমারও বয়স হয়েছে। কোনদিন ডাক আসে… ওর জন্য আমি নিজেকে সামলে রেখেছি।
আচ্ছা তুমি এদিকটা দেখো। আমি ওকে একটু মেরিনকে দেখে আসছি।
শমসের খান ভেতরে গেলেন মেরিনের কাছে।
সাদিকুর : আরে আপনারা… ভালো আছেন?
নিহাল : হামম।
সাদিকুর : আসুন। বসুন। ভেতরে চলুন। স্যার… স্যার…
নীড় : বেশ মজাদার কাহিনি তো।
নিহাল : ওভার হচ্ছে কিন্তু…
নীড় হাসলো। সাদিকুর শমসের খানকে নিয়ে এলো। শমসের চৌধুরীদের দেখলো।
প্রান্তিক : বলবাবা…
শমসের খান এগিয়ে গেলো।
শমসের : আমি অনেক খুশি হয়েছি যে তোমরা এসেছো। সোনাপাখি… ভালো আছো?
প্রান্তিক : হামম।
নীড় : আমাদের দাওয়াত করার সাইন্সটা বুঝলাম না।
শমসের : ছেলের মরদেহ কাধে তোলা যে বাবার জন্য কতোটা কষ্টের সেটা নিহাল বোঝে। জানাজায় এসে বন্ধুত্বের হাত বারিয়েছো তোমরা। সব হারিয়ে নিঃস আমি। তোমাদের হাত ফিরিয়ে কিভাবে দিতাম?
নিহাল : ওটা মানবিকতা ছিলো। বেশি আশার দরকার নেই।
শমসের : বেশ। এসো… ভেতরে এসো তোমরা।
শমসের সবাইকে ভেতরে নিয়ে গেলো। মেরিনের মামা আরিফ মাহমুদ ওর মাথায় হাত বুলিয়ে বোঝাচ্ছে। নীড় প্রান্তিককে নিয়ে সবার পেছনে। এগিয়ে গেলো। আরিফ মাহমুদ সরে যেতেই নীড় মেরিনকে দেখতে পেলো।চোখে পানি। মুখটা একটু লাল হয়ে আছে। একটা সময় এই চেহারা চোখের নেশা হয়ে উঠেছিলো। এতোবছর ধরে ঘৃণা করে এসেছে। আজও ঘৃণা করে। কিন্তু মেয়েদের চোখের পানি ভয়ংকর হয়।
প্রান্তিক : চাচ্চু…
নীড় : ইয়েস লাভ…
প্রান্তিক : মামমাম কান্না করছে কেনো? নানাভাই নানুমনি কোথায়?
নীড় : নানাভাই , নানুমনি মামমামকে রেখে ট্যুরে গিয়েছে তো। তাই মামমাম কান্না করছে। এখন বুঝুক কেমন লাগে। তোমাকেও তো একাএকা পাঠিয়েছিলো।
প্রান্তিক : হামম হামম। কিন্তু মামমাম কান্না কললে আমাল ভালো লাগেনা…
নীড় : আমারো…
শমসের : দিদিভাই… দেখো কে এসেছে?
মেরিন তাকালো। মনেমনে হাসলো।
মেরিন মনেমনে : ওয়ান্স অ্যা লুজার অলওয়েজ অ্যা লুজার।
ও প্রান্তিকের দিকে এগিয়ে গেলো। প্রান্তিককে স্পর্শ করতে গেলে নীড় একপা পিছিয়ে গেলো। মেরিন হাত বারিয়েও নামিয়ে দিলো। নীড়ের দিকে তাকালো।
নীড় মনেমনে : কিছু তো আছে চোখের পানির আড়ালে।
মেরিন মনেমনে : পানির পেছনে আগুন আছে। শীঘ্রই আমার জায়গায় তুমি থাকবে মিস্টার লুজার।
নীড় মনেমনে : আমি সেই নীড় নই মিস খান। তোমার নাটক বেশ বুঝতে পারছি।
মেরিন মনেমনে : কি কি অপেক্ষা করছে সেটা তুমি কল্পনাও করতে পারবেনা।
প্রান্তিক : মামমাম… তুমি কান্না কলোনা। নানাভাই আর নানুমনি তালাতালি আসবে। তোমাকে সাথে নিয়ে আবাল যাবে।
মেরিন : সেটা যেনো হয় বাচ্চা…
বলেই মেরিন ওপরে চলে গেলো ।
নিহাল মনেমনে : ইশ… মেয়েটার জন্য খারাপই লাগছে। এই বয়সে এতোএতো ট্রাজেডি।
শমসের মনেমনে : দিদিভাইয়ের প্ল্যান মতো ওরা এখানে চলে তো এলো। কিন্তু মুভমেন্টতো চোখে পরছেনা।
শমসের : তোম…
চাদনী : স্যার … স্যার… মেরিন ম্যাম…
শমসের : কি হলো? হাপাচ্ছো কেনো?
চাদনী : মেরিন ম্যাম…
শমসের : কি হয়েছে?
চাদনী : মুখ দিয়ে লালা… নাক দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে।
শমসের খান ছুটে ওপরে গেলো। ওপরে উঠতেউঠতে তিনি পা পিছলে পরে যেতে নিলে জন ধরে ফেলল। তাকে দার করিয়ে নিজে ওপরে গেলো। পেছনেপেছনে শমসের খানও গেলো।
প্রান্তিক : চাচ্চু চাচ্চু।। মামমামেল কি হয়েছে?
নীড় : কিছু হয়নি। বাবা চলো.. বাসায় চলো।
নিহাল : নীড়…
নীড় : পিটার… এই বাসাটা নো নেটওয়ার্ক জোন। দ্রুত প্রান এবং মামনি বাবাকে নিয়ে জায়গা ত্যাগ করো।
পিটার : স্যার আপনাকে ছেরে…
নীড় : বললাম তো। গো গো গো।
পিটার তিনজনকে নিয়ে বেরিয়ে গেলো। নীড়ও বের হলো। মেরিনকে হসপিটালে নেয়া হলো। নীড়ও পৌছালো। ডক্টর মেরিনের চিকিৎসা করছে।
নীড় : অসুস্থতা নাকি নাটক? শুনেছিলাম কবির ফয়সাল খানের ছোটমেয়ে সাইকো… নাটক করছে না তো?
পিটার পৌছালো নীড়ের কাছে।
নীড় : পিটার…
পিটার : স্যার…
নীড় : মেরিনের ফিওনসের খবরটা চাই । সেটার সত্যতাও চাই। মৃত্যুর খবরটাও চাই। ডেড সার্টিফিকেটটাও চাই।
পিটার : ইয়েস স্যার। চলে আসবে।
নীড় : গুড বয়। ওরা সেইফ তো?
পিটার : স্যার… বাসায় আছে। আমি নিজে রেখে এসেছি।
নীড় : এন্ড আই ট্রাস্ট ইউ।
.
৩ঘন্টাপর…
ডক্টর রায় : ককারা তোমরা?আমাকে কেনো তুলে আনা হয়েছে?
তখন লাইট জ্বলে উঠলো।
ডক্টর রায় : নীড় আহমেদ চৌধুরী…
নীড় : ইয়েস ইয়েস ইয়েস। ইটস মি। হাও আর ইউ?
ডক্টর রায় : আআমাকে কেনো তুলে আনা হয়েছে? ককি করেছি আমি?
নীড় হাতে থাকা পিস্তল দিয়ে পিটারের দিকে ইশারা করলো। সাথেসাথে পিটার তার মাথায় বেবি অরেঞ্জ রাখলো।
ডক্টর রায় : আমার মাথায় কি রাখা হলো?
নীড় : বেবি অরেঞ্জ।
ডক্টর রায় : ককেনো স্যার…
নীড় : শ্যুটিং প্র্যাক্টিস করবো।
ডক্টর রায় : আমার সাথে এমন কেনো করছেন স্যার?
নীড় : নো ওয়ারি। আমার এইম ভীসন ভালো। একেবারে ফার্স্টক্লাস। নিশানা কখনো মিস হয়না যদিনা আমি চাই। আমার কিছু প্রশ্নের উত্তর ঠিকঠিক পেলে আমিও ঠিকঠাক নিশানা করবো।
ডক্টর রায় : যা জিজ্ঞেস করবেন আমি সব বলে দিবো। আমাকে মারবেন না। আমি তো দূর্নীতিও করিনা।
নীড় : প্রশ্নের উত্তরের ওপর নির্ভর করছে। মেরিন বন্যা খান কে?
ডক্টর রায় : কোন মেরিন বন… মেরিন বন্যা খান! পেশেন্ট পেশেন্ট। আজকেই অ্যাডমিট হয়েছিলো।
নীড় শ্যুট করলো। ডক্টর রায় ভয়ে চিৎকার করে উঠলো।
নীড় : ইউ আর অ্যালাইভ। পিটার।
পিটার দ্বিতীয় কমলা রাখলো।
নীড় : দ্বিতীয় প্রশ্ন। সত্যি না বললে গুলি করবো না। খাওয়াবো। মেরিন বন্যা খানের কিছুই হয়নি। সে ড্রামা করে হসপিটালে অ্যাডমিট হয়। তাইনা?
ডক্টর রায় : ননা। প্যানিক অ্যাটাক থেকে এমন হয়ে যায়।
নীড় ডক্টর রায়ের মুখে পিস্তলের মাথা ঢুকিয়ে দিলো।
নীড় : সত্যি বলতে বলেছিলাম তো। তাইনা? মিথ্যা কেনো বলছিস?
ডক্টর রায় মাথা নেরে না করছে। বলতে চাইছে যে সে মিথ্যা কথা বলেনি। ভয়ে তার হাতপা কাপছে।
নীড় : আরো একটি সুযোগ দিচ্ছি। সত্যি করে বল। মেরিন বন্যা খানের কিছু হয়েছিলো কি হয়নি?
ও পিস্তল বের করলো।
ডক্টর রায় : সসত্যি বলছি স্যার… প্যানিক অ্যাটাক থেকেই এমন হয়েছে।
নীড় তার নাকের মধ্যে ঘুষি মারলো।
নীড় : কিছুক্ষন পর ছেরে দিও।
পিটার : কিন্তু স্যার ও তো…
নীড় : সত্যি কথা বলছে।
পিটার : মানে মেরিন বন্যা খান সত্যিসত্যি অসুস্থ হয়েছিলো?
নীড় : হতেই পারেনা।
পিটার : তাহলে আপনি কেনো বলছেন যে ডক্টর সত্যি কথা বলছে?
নীড় : সেখানেই তো প্রশ্নটা। মিস্ট্রিটাই তো এখানে।
পিটার : স্যার… এমনো তো হতে পারে যে মেরিন বন্যা খান সত্যিসত্যিই অসুস্থ হয়েছিলেন।
মেরিন : গাট ফিলিংস বলছে যে না। আমার অভিজ্ঞতাও তাই বলছে । মেরিন বন্যা খান কান্না করার মতো মেয়ে নয়। বরং কান্না করানোর মতো মেয়ে।
পিটার : ট্রাজেডিযে ঘটে চলেছে তার জীবনে সেটাও তো সত্যি।
নীড় : দেখি নেক্সট মুভটা কি? তোমাকে যে ইনফরমেশন কালেক্ট করতে বলেছিলাম সেটার কি হলো?
পিটার : কালকের মধ্যে চলে আসবে।
.
শমসের : কি প্রয়োজন ছিলো এমন ড্রাগটা নেয়ার।
মেরিন : দাদুভাই… অসুস্থ হওয়াটা প্ল্যান ছিলো।
শমসের : অভিনয়ও করা যেতো।
জন : ম্যাম…
মেরিন : বলো ।
জন : ডক্টর রায় কিডন্যাপড।
মেরিন হাসতে লাগলো।
জন : ম্যাম… কি হলো?
মেরিন : দাদুভাই বলছিলো যে ড্রাগ নেয়ার কি প্রয়োজন ছিলো? নাটক করলেই তো হতো। দাদুভাই , এখন উত্তরটা পেলে তো?
শমসের : তুমি কি বলতে চাইছো যে নীড় কিডন্যাপ করিয়েছে?
মেরিন : এটা ফ্যাক্ট।
শমসের : ডক্টর যদি বলে দেয় যে ড্রাগস ইফেক্ট তাহলে?
মেরিন : ব্লাড টেস্ট ছারা ডক্টরের বাবারও ক্ষমতা নেই সেটা সম্পর্কে জানার।
শমসের : ব্লাড টেস্ট রিপোর্ট এলে কি হবে?
জন : স্যার… সেটার ব্যবস্থাও হয়ে গিয়েছে।
শমসের : প্ল্যান টা কি?
মেরিন : দাদুভাই… তুমি খুব স্মার্টলি চৌধুরীদের কে শোনানোর জন্য মিস্টার রহমানকে আমার মিথ্যা দুঃখের গল্প শুনিয়েছো। প্রাউড অফ ইউ।
শমসের : তাহলে এই ড্রামাটার কি প্রয়োজন ছিলো?
মেরিন : জন বলেছিলো যে লুজার চৌধুরী নাকি সাইকো। কারো কথা বিশ্বাস করেনা। তাই স্টেপটা নিতে হলো।
জন : সন্দেহ কি দূর হলো নীড় চৌধুরীর?
মেরিন : জানিনা। তবে চৌধুরীদের থেকে কেউ না কেউ তো কোনো ইঙ্গিত দেবেই।
তখন জনের ফোনটা বেজে উঠলো। কথা বলল।
জন : ম্যাম…
মেরিন : ইয়েস জন ডার্লিং।
জন : নিহাল আহমেদ চৌধুরীকে হসপিটালের নিচে দেখা গিয়েছে।
মেরিন : দাদুভাই… ঘুঘু ফাঁদে পা দিয়েছে হয়তো। ন্যাচারাল অভিনয় চাই।
শমসের : অফকোর্স।
জন বাহিরে গেলো। দরজার সামনে দারিয়ে রইলো।
নিহাল : এক্সকিউজ মি!
□ : জী বলুন।
নিহাল : মেরিন বন্যা খানকে এখানে অ্যাডমিট করা হয়েছে। রাইট?
□ : জী।
নিহাল : কি হয়েছে ওর?
□ : প্যানিক অ্যাটাক।
নিহাল : কেমন আছে এখন?
□ : এখন তো ভালোই আছে। কিন্তু যখন আনা হয়েছিলো তখন অবস্থা ভালো ছিলোনা।
নিহাল : হামম। কোথায় আছে?
□ : ৭০২ নাম্বার রুমে।
নিহাল : থ্যাংকস।
মনেমনে : এরমানে সত্যিসত্যিই অসুস্থ হয়েছিলো। প্রানকে গিয়ে শান্ত করতে হবে। ছোটবাচ্চাটা অস্থির হয়ে আছে। কিন্তু ও কি আমার কথা মেনে নিবে? কি করা যায়?
নীড় : বাবা…
নিহাল : নীড়… তুমি এখানে?
নীড় : তুমি এখানে কেনো?
নিহাল : প্রানের জন্য। ও অস্থির হয়ে উঠেছে মেরিনের জন্য। কান্না করেই যাচ্ছে।
নীড় : ছোটমানুষ শান্ত হয়ে যাবে।
নিহাল : নীড়… শান্ত হতে সময় লাগবে। ততোক্ষন ওর কান্না কিভাবে সহ্য করবো বলো?
নীড় : আমি তো আসছিলামই। তোমার জন্যই আমাকে এখানে আসতে হলো। চলো। বাসায় চলো
নীড় নিহালকে নিয়ে গেলো।
জন : ম্যাম… নীড় আহমেদ চৌধুরী তার বাবাকে নিয়ে চলে গিয়েছে।
মেরিন : নো প্রবলেম। দুর্বলকে চিহ্নিত তো করা গেলো।
.
প্রান্তিক : মামমাম সুস্থ আছে তো? মামমামেল কি হয়েছে?
নীড় : তোমার মামমামের কিছুই হয়নি লাভ। একদম ঠিক আছে।
প্রন্তিক : আমি মামমামেল কাছে যাবো।
নীড় : কেনো লাভ?
প্রান্তিক : জন আংকেল কেমন কলে যেনো বলছিলো। বলবাবা ওপলে যাচ্ছিলো। আমি মামমামেল কাছে যাবো।
নীড় : কেনো? বললাম তো মামমাম সু্স্থ আছে।
প্রান্তিকের মন খারাপ হয়ে গেলো। সেটা নীড় খেয়াল করলো। ও প্রান্তিককে কোলে নিলো।
নীড় : মামমামকে দেখতে যাবে?
প্রান্তিক মাথা নেরে হ্যা বলল।
নীড় : ফাইন… এখন তো রাত হয়ে গিয়েছে। কালকে তোমাকে আমি নিয়ে যাবো। স্কুল ছুটি ১২টাতে। স্কুল থেকে আমি তোমাকে নিয়ে যাবো। ওকে?
প্রান্তিক : প্লমিস?
নীড় : প্রমিস মাই লাভ। এখন ঘুমিয়ে পরো। কাম কাম।
নীড় প্রান্তিককে ঘুম পারিয়ে দিলো।
নীড় মনেমনে : প্রানক স্কুলে দিয়ে মেরিন বন্যা খানের সাথে আলাদাভাবে মিটিং করতে হবে।
.
ভোর ৬টা…
মেরিন : ওহ গড… ড্রাগটার জন্য উইকনেস চলে এসেছে। ব্যাপারনা। ঠিক হয়ে যাবো। কিসের আওয়াজ?
মেরিন হাত থেকে স্যালাইনটা একটানে খুলে আড়াল হয়ে গেলো। নীড় ভেতরে ঢুকলো।
নীড় : আই নিউ ইট। কিছুই হয়নি। তাই নেই এখানে…
তখন নীড়ের মনেহলো যে ওর পেছনে কেউ আছে। দ্রুত গান লোড করে পেছনে ঘুরলো। দেখে মেরিন। ওর হাতেও গান। দুজন দুজনের দিকে পিস্তল তাক করে রেখেছে। নীড় দেখে মেরিনের হতে রক্ত। টান দিয়ে পুরো ক্যানোলা খুল ফেলাতে রক্ত পরছে।
মেরিন : ইটস ইউ…
নীড় : পিস্তল নামাও।
মেরিন : তুমি নামাও।
নীড় : তুমি তাক করে রেখেছো আর আমি নামাবো সেটা ভাবলে কিভাবে? হাউ কুড আই ট্রাস্ট ইউ?
মেরিন : দেন হাউ কুড আই?
নীড় : হামম। অবশ্য দৃশ্যটা বড্ড মনোরম । পেশেন্ট দেখতে এলাম। এসে দেখলাম পেশেন্ট পিস্তল হাতে দারিয়ে আছে।
মেরিন : তোমার দিকের দৃশ্যটাও মনোরম। পেশেন্ট দেখতে কেউ পিস্তল হাতে এতো ভোরে আসে সেটাও তো নিদারুন। নয় কি? একসাথে হোক। লেটস ডু ইট।
দুজন একসাথে নামালো।
নীড় : তোমার হ…
মেরিনের মাথা চক্কর দিলো। ধপাস করে বসে পরলো বেডের ওপর।
নীড় : নাইস ড্রামা।
মেরিন : থ্যাংকস…
মেরিন ক্যানোলা হাতে নিয়ে সেটা লাগাতে নিলে নীড় নিয়ে নিলো।
নীড় : এটা তোমার কাজ নয়। মেরিন : আর এটা আমাকে বলাও তোমার কাজ নয়। সো গিভ মি দ্যাট।
নীড় : কথাতো আমাকে বলতেই হবে। তুমি যে অভিনয়টা করছো সেটার প্রভাব আমার ভাতিজার ওপর পরছে।
মেরিন : প্লিজ গেট লস্ট।
নীড় : এই হসপিটালটা খানেদের সম্পত্তি না।
মেরিন : এই কেবিনটা মেরিন বন্যা খানের নামেই বুকড।
নীড় : সবকিছু হারিয়েও অহংকার কমেনি।
মেরিন : অহংকারটা আমাদের বংশগত। জানোই তো ঐতিহ্যবাহী বংশ আমাদের।
নীড় : প্রানের স্কুল ছুটির ওকে নিয়ে আসবো তোমার কাছে। দেখা করাতে।
কথাটা শুনে মেরিন অবাকও হলো আবার খুশিও হলো।
মেরিন : ওকে আমার সাথে দেখা করাতে আনবে? ওকে স্পর্শ করতে দিবে! কোলে নিতে দিবে? আদর করতে দিবে?
নীড় : বাহ! এতো এক্সাইটমেন্ট! ভালো লাগলো। তবে মনে রেখো প্রান আমাদের সম্পত্তি। তাই ওর ওপর নিজের অধিকার দেখিওনা। ওর ওপর আমাদের অধিকার।
মেরিন : প্রান কোনো জড়বস্তু নয়। তাই ও সম্পত্তি হতে পারেনা।
নীড় : ফিলোসফি… নাইস নাইস। প্রানকে আমরা কি ভাবি আর কি ভাবিনা সেটা তোমাকে বলার প্রয়োজনবোধ করিনা। ওর কাস্টডি আমাদের । আর ও আমাদের বংশের। চৌধুরীদের ছেলে ও। খানদের নয়। তাই প্রানকে নিয়ে এলে পেশেন্টের মতোই থেকো।
মেরিন : প্রানকে হসপিটালে আনার প্রয়োজন নেই। ওকে প্রয়োজন ছারা আমি হসপিটালে নেইনা। আই মিন নিতামনা। তাই ওকে হসপিটালে আনার প্রয়োজন নেই।
নীড় : তুমি কি ভেবেছো যে তোমাদের বাসায় নিবো? নট অ্যাট অল। ওটা তোমাদের গুহা টাইপ। লিমিটেড নেটওয়ার্ক। তাই ওখানে তো আমি নিবোনা?
মেরিন : ভয়ে পেয়ে গেলে বুঝি? ভালো লাগলো। অন্যদের চেহারায় ভয় দেখার মজাটাই আলাদা।
নীড় : ভয় পা আমার জুতু। আমি ভাবছি প্রানের জন্য। আমি চাইনা ও কোনো বাজে ঘটনার স্বাক্ষী হোক।
মেরিন : আমি নিজেই হসপিটালে যাবো। ওর সাথে দেখা করতে যাবো। ওকে হসপিটালে আনার প্রয়োজন নেই। আর আমাদের বাসাতেও নেয়ার প্রয়োজন নেই।
নীড় : চেষ্টাটা ভালো। বাট ট্রাস্ট মি… নীড় আহমেদ চৌধুরীর সামনে কারো চেষ্টা চলেনা। যতো যাই করোনা কেনো প্রানকে আমাদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিতে পারবেনা।
মেরিন : ছিনিয়ে নেয়ার হলে কবেই নিয়ে নিতাম। নোংরা খেলা আমরা খেলিনা। তবে জবাব দিতে জানি।
নীড় : তুমি কি কি জানো আর কি কি জানোনা সেটা আমি জানি। আসছি। পেছন থেকে গুলি করো না যেনো। চোখ আমার পেছনেও আছে।
মেরিন : নো ওয়ারি। যেদিন তোমাকে শ্যুট করবো কপাল বরাবর করবো।
নীড় : সেইম টু মি।
মেরিন : তুমি আমাকে শ্যুট করতে পারবে তো? ক্রাশ আমি তোমার।
নীড় : ক্রাশ ছিলে।
মেরিন : ইয়াহ ইয়াহ। আমি রিজেক্টে করেছি তোমাকে।
নীড় : আমি প্রানকে কেরে নিয়েছি।
মেরিন হাহা করে হাসতে লাগলো।
মেরিন : তোমার কথা বড্ড হাস্যকর। লিভ।
নীড় বেরিয়ে গেলো।
মেরিন : লুজার…
.
প্রান্তিক ছুটির পর ক্লাসরুম থেকে বের হয়ে দেখে নীড় দারিয়ে আছে।
প্রান্তিক : চাচ্চু…
বলেই লাফিয়ে কোলে উঠলো।
নীড় : আমার কলিজাটা… আজকে সারপ্রাইজ আছে তোমার জন্য। ওই দেখো।
প্রাম্তিক দেখে মেরিন দারিয়ে আছে। ও মামমাম বলেই দৌড়ে মেরিনের কাছে গেলো। মেরিন ওকে কোলে নিলো।
প্রান্তিক : মামমাম… তুমি ঠিক আছো?
মেরিন : একদম…
.
চলবে…