প্রতিশোধে প্রনয় পর্ব-০৪

0
656

#প্রতিশোধে_প্রনয়
part : 4
writer : Mohona
(do not copy please)

.

মেরিন : একদম… দেখো তোমার সামনে দারিয়ে আছি।
প্রান্তিক মেরিনের গালে চুমু দিলো।
প্রান্তিক : মামমাম… তুমিও আমাল সাথে চাচ্চুল বাসায় চলো।
নীড় : প্রান… ওটা চাচ্চুর বাসা নয়। তোমার বাসা।
প্রান্তিক : হামম হামম। মামমাম তুমি আমাদেল সাথে আমাদেল বাসায় চলো।
মেরিন : সেটা কিভাবে হবে বলো? ওটা তো মামমামের বাসা নয়। তোমাকে দেখতে ইচ্ছা হলেই আমি এখানে চলে আসবো।
প্রান্তিক : আল আমাল তোমাকে দেখতে ইচ্ছা কললে!
মেরিন : তুমি কল করে আমাকে বলবে। আমি দেখা করতে চলে আসবো।
প্রান্তিক : সত্যি?
মেরিন : সত্যি।
তখন প্রান্তিকের এক টিচার ওকে ডাক দিলো। ও গেলো।
নীড় : আজকের পর থেকে প্রান কখনো তোমাকে দেখতে চাইবেনা । আই উইল মেইক সিওর দ্যাট।
মেরিন : হু নেভার নো…
নীড় : গেট লস্ট…
মেরিন : আই অ্যাম লাইক অ্যা শ্যাডো। আই উইল বি ব্যাক। বাই…
মেরিন চলে গেলো।
নীড় : আমি চাইলেই তুমি ব্যাক করতে পারবে।
প্রান্তিক এলো।
প্রান্তিক : মামমাম কোথায়?
নীড় : চলে গিয়েছে।
প্রান্তিক : বাই না বলেই চলে গেলো!
নীড় : ইয়েস লাভ..
প্রান্তিকের মনটা খারাপ হয়ে গেলো। নীড় হাটুগেরে ওর সামনে বসে ওর গালে হাত রাখলো।
নীড় : সবাই চলে যাক। আমি চাচ্চু সবসময় তোমার সাথে আছি।
বলেই ওর কপালে চুমু দিলো। ও নীড়কে জরিয়ে ধরলো। নীড়ও ওকে বুকে জরিয়ে নিলো।
নীড় মনেমনে : দিস ইজ কলড লাক। আমাকে কিছু করতেই হলোনা।থ্যাংকস প্রান সোনা। আমি তোমার মনে বিষ ঢালতে চাইনি। কিন্তু যা হবার সেটা তো হবেই।
প্রান্তিক : চাচ্চু… বাসায় চলো।
নীড় : হ্যা বাচ্চা চলো। কালকে আমরা বেরাতে যাবো।
নীড় প্রান্তিককে নিয়ে বাসায় ফিরলো।

.

মেরিন : ফার্স্ট স্টেপ ডান। নিহাল আহমেদ চৌধুরী দুর্বল গুটি। থ্যাংকস চৌধুরী সাহেব।
শমসের : যদি সে সরল হয়ে থাকে তাহলে কি তার মন নিয়ে খেলা জরুরী?
মেরিন : দাদুভাই… এই কথাটা কি তোমার মুখে সাজে? নিহাল আহমেদ চৌধুরী বর্ষন ভালো কোন দিক দিয়ে? যখন আদালতে ওই লুজারটা আপুর চরিত্র নিয়ে মিথ্যা কথা বলছিলো তখন ওই নিহাল আহমেদ চৌধুরী শুনছিলো। প্রতিবাদ করেনি। প্রতিবাদের কথা কেনো বলছি আমি? লুজারটা নিজের মাবাবার সাথে মিলেই তো প্ল্যানটা করেছিলো। ছেলেকে তো নিষেধ করেনি। তাহলে কোন দিক দিয়ে ভালো হলো? হামম? নেক্সট টাইম থেকে এমন কথা আর বলবেনা।
শমসের : আজকেও বলতাম না। তোমার মনোবল দেখার জন্য বললাম।
মেরিন : দাদুভাই… মেরিন বন্যা খান যদি একবার কিছু একটা ঠিক করে নেয় তাহলে সেটা করেই ছারে। সেটা তুমি বেশ ভালো ভাবেই জানো। সন্দেহ রেখো না।
শমসের : পরের পদক্ষেপ কি?
মেরিন : জেনে যাবে।

.

নীড় : পিটার… তুমি সিওর তো যে এটাই মেরিন বন্যা খানের ফিওনসে ছিলো?
পিটার : ইয়েস স্যার। লিভ ইনে ছিলো।
কথাটা শুনে নীড়ের বড্ড রাগ হলো। ছবিটা দুমরেমুচরে নিচে ফেলল। এরপর আগুন লাগিয়ে দিলো।
পিটার : ছেলেটার নাম হ্যারি। মেরিন বন্যা খান ওকে পাগলের মতো ভালোবাসতো। ছেলেটা হয়তো লোভী ছিলো। আনফরচ্যুনেটলি অর ফরচ্যুনেটলি মারা যায়। মারা না গেলেও আজ না হয় দুদিনপর মেরিন বন্যা খানের হাতে ঠিক মরতো। মেরিন বন্যা খান জেনেই যেতো যে হ্যারি তাকে ধোকা দিচ্ছে।
নীড় : এই মেরিন বন্যা খানের মতো মেয়েরা হ্যারির মতো ছেলেই ডিজার্ভ করে। থ্যাংকস পিটার। তুমি এখন আসতে পারো পিটার।
পিটার বেরিয়ে গেলো। নীড় হাতের গ্লাসটা ছুরে মারলো। আবারও পিটারকে ডাক দিলো। পিটার ছুটে এলো।
পিটার : ইয়েস স্যার…
নীড় : আই নিড অ্যা গার্ল। এমন মেয়ে চাই যার স্ট্যান্ডার্ড আছে।
পিটার : স্যার… আমি আপনার কথা বুঝতে পারছিনা।
নীড় : ল্যাটিন ভাষায় বলেছি কি?
পিটার : না মানে স্যার… আপনিতো মেয়েদেরকে ঘৃণা করেন।
নীড় : আমি মেয়ে ভালোবাসার জন্য চাইছিনা। রাত কাটানোর জন্য চাইছি। ২ঘন্টা সময় আছে তোমার কাছে। অ্যারেঞ্জ করো।
পিটার : স্যার… মিস ইজাবেলা প্রায় ২মাস ধরে আপনাকে ডিনার অফার করে যাচ্ছেন। আপনি ইগনোর করে যাচ্ছেন। তাকে হ্যা করে দেই। ডিনার ডেট অ্যারেঞ্জ করি?
নীড় : গো ফর ইট।
পিটার : ওকে স্যার।
বলেই পিটার বেরিয়ে গেলো। নীড় কল্পনা করছে যে মেরিন-হ্যারি একে অপরের খুব কাছাকাছি আছে। হ্যারি মেরিনকে এলোমেলোভাবে স্পর্শ করছে। নীড় এবার নিজের কোট টা খুলে ছুরে ফেলল। ইচ্ছা করছে সবকিছু ধ্বংস করে দিতে।
নীড় : মেয়েদের মধ্যে থেকেই অধিক জাহান্নামী হবে। কথাটা একেবারেই সঠিক। বর্তমানে মেয়েদের মধ্যে ভালো কিছু নেই বললেই চলে। মেরিন বন্যা খান টাইপ মেয়েরা তো জাস্ট জঘন্য।

.

মেরিন : হাহাহা… জন… চমৎকার একটি খবর শুনিয়েছো। রাতের ঘুমটা খুব ভালো হবে।
জন : কিন্তু ম্যাম… আপনি কিভাবে জানতে পারলেন যে নীড় আহমেদ চৌধুরী আপনার বয়ফ্রেন্ড সম্পর্কে খোঁজ নিবেন?
মেরিন : যে ব্যক্তি এমন ঘটনা ঘটিয়েছে সে ব্যক্তি আমার সম্পর্কে খোঁজ নিবে সেটাই স্বাভাবিক। অভিনয়ে দাদুভাই ছক্কা মেরেছে। সেদিন মিস্টার রহমানের সাথে দারুন অভিনয় করেছিলো।
জন : বুঝলামনা ম্যাম। সাদিকুর রহমান মানে আপনাদের ম্যানেজারের সাথে অভিনয় করেছে! তাহলে চৌধুরীরা কিভাবে ঘায়েল হলো?
মেরিন : দাদুভাই চৌধুরীদের চোখ পর্দা দেয়ার জন্যই মিস্টার রহমানকে টার্গেট করে। যদি কখনো তাকে তুলে নিয়ে গিয়ে টর্চার করে সত্য বের করতে চায় তবুও লাভ হবেনা। সে নিজেই মিথ্যাটাকে সত্যি হিসেবে জানে। তাই তাকে মেরে ফেললেও মিথ্যাটাই বের হবে।
জন : ম্যাম আপনি না ভীষন দুষ্টু। আচ্ছা ম্যাম হ্যারিকেই কেনো সিলেক্ট করলেন?
মেরিন : হ্যারি আমার ভালো বন্ধু ছিলো। ওর অরিজিন অস্ট্রেলিয়ায়। অ্যাক্সিডেন্টে মারা গিয়েছে। বেচারা…

.

নীড় ইজাবেলার সাথে বসে আছে।
ইজাবেলা : আই কান্ট বিলিভ দিস যে তোমার সাথে ডিনার ডেটে এসেছি । কতোদিন ধরে এই সময়টার অপেক্ষা করেছি। ইউ আর লুকিং সো হট।
নীড় : হোপ আমিও এই কথাটা বলতে পারতাম। কিন্তু পারলামনা। রেড ওয়াইন কালারটা তোমার জন্য নয়।
ইজাবেলা : সরি। আচ্ছা , তোমার প্রিয় রং কি?
নীড় : সেটা তোমার জানার বিষয়না।
ইজাবেলা নীড়ের হাতের ওপর হাত রাখলো।
ইজাবেলা : তোমার এই রাগের প্রেমে পরেছি হ্যান্ডসাম।
নীড় ওর গাল চেপে ধরে কাছে টেনে নিলো। ইজাবেলা বিভোর হয়ে নীড়কে দেখছে।
নীড় : এভাবে আমার দিকে তাকাবেনা। এই দৃষ্টি আমার পছন্দ নয়।
ইজাবেলা নীড়ের এক হাত নিজের কোমড়ে রাখলো এবং অন্য হাত নিজের কাধে রেখে স্লিভটা নামিয়ে দিলো। নীড়ের আরো কাছে গেলো।
ইজাবেলা : ওকে… যেমনটা তুমি চাইবে হ্যান্ডসাম।
নীড় : ইউ নো ওয়াট? আই জাস্ট হেইট গার্লস।
বলেই ইজাবেলাকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিলো। এরপর টেবিলটাকে লাথি দিয়ে ফেলে দিয়ে বেরিয়ে যেতে লাগলো।
ইজাবেলা : নীড়… তুমি এভাবে চলে যেতে পারোনা। তুমি প্রমিস করেছো আমায়। তুমি নিজে থেকে আমার কাছে এসেছো। আজকের সন্ধ্যাটা , মায়াবী রাতটা আমাকে দিতে চেয়েছো। তাই তুমি যেতে পারোনা।
নীড় দারালো হাসলে।
নীড় : আজকে তোমার প্ল্যান ছিলো রোম্যান্টিক একটি রাতের। রাইট?
ইজাবেলা : ইয়েস। তুমিও হিন্টস দিয়েছো।
নীড় : লেটস ডু সামথিং ইন্টরেস্টিং… হট হট নাইট।
নীড় ইজাবেলার হাত টেনে নিয়ে বিছানায় ফেলল। ওর হাত বেধে দিলো। এরপর বিছানার চারদিকে শ্যাম্পেইন ফেলল।
ইজাবেলা : ককি করছো কি?
নীড় : একটু ওয়েট করো।
বলেই আগুন লাগিয়ে দিলো।
ইজাবেলা : ননীড়… আগুন।
নীড় : বলেছিলাম না হট হট নাইট। বাই…
বলেই নীড় চলে গেলো।
ইজাবেলা : দারাও নীড়… যেওনা। স্টপ। নীড়… নীড়…
একটু চেষ্টা করতেই ওর হাতের বাধন খুলে গেলো। ইজেবেলা চাদর , বালিশের সাহায্য এক দিকে একটু আগুন নিভিয়ে বেরিয়ে এলো।
ইজাবেলা : মাই গুডনেস। নীড় কি সাংঘাতিক!

.

পরদিন…
জন : ম্যাম…
মেরিন : ইয়েস।
জন : নীড় চৌধুরী কালকে ইজাবেলা নামের একটি মেয়ের সাথে ডিনার ডেটে গিয়েছিলেন। দেন দ্যাট টার্নড ইনটু রুমডেট।
মেরিন : পারফেক্ট নিউজ। মেয়েবাজ। রেকর্ড দ্যাট। কবে , কখন এবং কোন মেয়ের সাথে দিন কাটাচ্ছে বা রাত কাটাচ্ছে সব রেকর্ড রাখবে। কোর্টে কাজে লাগবে।
জন : ইয়েস ম্যাম। ম্যাম… সাদিকুর রহমান আপনার সাথে আজকে দেখা করতে এসেছেন।
মেরিন : পাঠিয়ে দাও।
জন সাদিকুর রহমানকে পাঠালো।
মেরিন : কি খবর মিস্টার রহমান?
সাদিকুর : ভালো ম্যাম। ম্যাম… আপনি অফিসে কবে থেকে বসবেন?
মেরিন : আমার অফিসে বসাটা কি খুব জরুরী?
সাদিকুর : ম্যাম… এভাবে অফিস কিভাবে চলবে? শৃঙ্খলা কিভাবে বজায় থাকবে?
মেরিন : দাদুভাই আছে তো।
শমসের : আমার থাকা না থাকার চেয়ে তোমার উপস্থিতি বেশি গুরুত্বপূর্ন।
মেরিন : কবির ফয়সাল খানের অফিস আমি কেনো সামলাবো দাদুভাই?
শমসের : এগুলো কবির ফয়সাল খানের নিজের করা প্রোপার্টি না। এগুলো ওর একার নয়। আর এগুলো সবকিছুর একচ্ছত্র মালকিন তুমি?
মেরিন : আমি নিজের ইনকামে রাজত্য করাতে বিশ্বাসী।
শমসের : এগুলোও তোমারই। তোমাকেই এগুলো সামলাতে হবে। রানী তুমি। ইউ আর দি কুইন।
শমসের গিয়ে মেরিনের কাধে হাত রাখলো। হাতে একটা ফাইল দিলো।
শমসের : আমি সিগনেচার করে দিয়েছি। অফিশিয়ালি এমডি তুমি। তোমাক সিগনেচার বাকি কেবল। ডু ইট। Reign in your kingdom।
মেরিন : দাদুভাই…
শমসের : রিকুয়েস্ট করছি। আমি কখনো তোমার কাছে রিকুয়েস্ট করিনি। প্রথমবার করলাম।
মেরিন : ফাইন। প্রথমবার বলে অনুরোধ রাখলাম। দ্বিতীয়বার রাখা হবেনা।

.

৩দিনপর…
নীড় : মামনি… প্রানের খেয়াল রেখো।
বলেই নীড় বেরিয়ে গেলো।
নীলিমা : দাদুভাই… খাবারটা শেষ করো।
প্রান্তিক : দীদু…
নীলিমা : হ্যা সোনামনি।
প্রান্তিক : চাচ্চুল মামনি আছে , বাবা আছে। মামমামেলও আছে। আমাল ক্লাসেল সবাল আছে। তাহলে আমাল মামনি বাবা নেই কেনো?
নীলিমা বাকরুদ্ধ হয়ে গেলো।
প্রান্তিক : ও দীদু… বলোনা। আমাল নেই কেনো?
নীলিমা : আমারও তো নেই। তোমার দাদুভাইয়েরও তো নেই। তাইনা?
প্রান্তিক : তা ঠিক। কিন্তু আমাল বন্ধুদেল তো আছে।তাই আমালও মামনি-বাবা চাই।
নীলিমা : খাবার শেষ করো ময়না।
প্রান্তিক : সেটা তো আমি কলবোই। কিন্তু আমাল মামনি বাবাও চাই। আজকে চাচ্চু এলে বলবো আমাল জন্য যেনো মামনিবাবা নিয়ে আসে। জানো আমার ফ্লেন্ডদেল মামনিলা ওদেলকে কতো আদল কলে?
নীলিমা : আমি, চাচ্চু , দাদুভাই কি তোমাকে আদর করিনা? হামম?
প্রান্তিক : কলো তো। কিন্তু আমালও মা চাই। বাবাও চাই। আমাকে একটু মনে কলিয়ে দিও কিন্তু।
নীলিমা : আচ্ছা ময়না দিবো। এখন খাবারটা শেষ করো।
প্রান্তিক : হামম হামম। আমাল যে কি মজা হচ্ছে দীদু… আমালও মাবাবা হবে। ইয়ে… ইয়ে…
নীলিমা মনেমনে : আবার এই কথা কেনো ঢুকলো ওর মাথায়? এর আগে ঢুকেছিলা অল্প একটু। আজকে তো গভীর ভাবনা মনেহচ্ছে। এখন কি হবে? কিভাবে ঢুকলো? কেনো ঢুকলো? অবশ্য ঢুকবেই তো। শত হলেও মাবাবার কথা তো সন্তানের মনে পরবেই। কি হবে বুঝতে পারছিনা। চাচ্চু তোকে সব দিতে পারলেও মাবাবা যে দিতে পারবেনা সোনা। যেদিন এটা বুঝবে সেদিন খুব কষ্ট পাবে।
প্রান্তিক : ও দীদু… আমি আল খেতে পাচ্ছিনা।
নীলিমা : আচ্ছা। চলো এখন ঘুমাবে চলো। স্কুল থেকে এসে আর ঘুম দাওনি। চলো চলো চলো…
প্রান্তিক : তাহলে গল্প শোনাবে বলো।
নীলিমা : অবশ্যই।
নীলিমা প্রান্তিককে ঘুম পারালো এরপর নিহালকে কল করে সবটা বলল।
নিহাল : কি বলছো কি?
নীলিমা : হ্যা… নীড় এলে কি হবে ভাবছি। ও তো রেগে যাবে।
নিহাল : ভয় নেই। রাগটা প্রানের ওপর পরবেনা।
নীলিমা : প্রানের ওপর মানলাম নাই পরলো। কিন্তু কোথাও না কোথাও তো গিয়ে পরবে।
নিহাল : তা ঠিক। এক কাজ করো , ওকে ভুলিয়ে ফেলার চেষ্টা করাে। কোনোক্রমেই যেনো নীড়কে কথাটা না বলে।
নীলিমা : বিষয়টা কি এতো সহজ? তোমাদের বংশ বলে কথা।
নিহাল : এই হলো তোমাদের মানে মহিলাদের দোষ। কোনো না কোনো ভাবে স্বামীদের বংশ তুলে কথা বলবে এবং দোষ দিবে।
নীলিমা : তো আমি ভুল কি বললাম?
নিহাল : না না। তোমরা তো ভুল কিছু বলতেই পারোনা। স্ত্রীরা সবসময়ই রাইট। তো বেগম সাহেবা… অনুরোধ করছি। প্রানকে ভুলিয়ে ফেলবেন।
নীলিমা : চেষ্টা করবো। রাখছি।
নীলিমা রেখে দিলো।

নিহাল : মাবাবা… প্রানকে মাবাবা তো দেয়া সম্ভব নয়। নীড় চাচ্চু হয়ে থাকবেনা বরং ছায়া থাকবে। ভবিষ্যতেও এমনটাই থাকবে বলে আমি আশা করি। চাচ্চু বাবা হতে পারবেনা সেটা ঠিক। কিন্তু নীড় প্রনয়ের চেয়ে কম ভালোবাসাও হয়তো দিবেনা। কিন্তু মা… মায়ের ভালোবাসার অভাব কিভাবে পূরন হবে? নীড় তো বিয়ে করতে রাজিই হয়না। যদি রাজি হয়েও যায় তাহলে কি হবে? যে নীড়ের বউ হয়ে আসবে সে কি মায়ের মতো করে প্রানকে ভালোবাসবে? কেউ কি সেটা করতে পারবে? কোনো নারীর পক্ষে কি সেটা করা সম্ভব? আজ নাহয় কাল নীড় বিয়ে তো করবেই। এখন যতোই না বলুক। বিয়ে তো করবেই। প্রানের জীবনটা নষ্ট হয়ে যাবে। প্রানের কথা ভেবে নীড়ের ভবিষ্যৎ তো নষ্ট করতে পারিনা। কি যে করি… কি এমন করলে সব দিক রক্ষা হবে? কি করলে নীড়ও ভালো থাকবে আবার প্রানও ভালো থাকবে? উফফ… আমার সুন্দর পরিবারটা কিভাবে যে নষ্ট হয়ে গেলো। সব সাজানো গোছানো ছিলো।

.

নীলিমা দুপুর থেকে ব্যস্ত আছে প্রান্তিকের মন ভোলানোর। হয়তো ভুলেও গিয়েছে।
নীলিমা মনেমনে : দেখে তো মনেহচ্ছে যে ভুলে গিয়েছে।
নিহাল এলো।
প্রান্তিক : দাদুভাই…
নিহাল : প্রানপাখিটা..
নিহাল ওকে কোলে নিলো।
প্রান্তিক : চাচ্চু কোথায়? এলোনা কেনো?
নিহাল : আসবে প্রানপাখি। একটু দেরি হবে চাচ্চুর ফিরতে।
প্রান্তিক : কিন্তু কেনো?
নিহাল : কাজ আছে পাখি।
প্রান্তিক : আমি ঘুমানোল আগে আসবে তো?
নিহাল : তা আসবে। কিন্তু যদিই না আসে তাতে কি হবে? দাদুভাই আছি… দীদু আছে।
প্রান্তিক : দীদু চাচ্চুল মতো কলে গল্প শোনাতে পালেনা। তুমি কি পালো?
নিহাল : তুমি তো দাদুভাইয়ের সাথে থাকোইনা। দাদুভাই তোমার চাচ্চুকে ছোটবেলায় গল্প শোনাতাম। তোমার বাবাকেও শ…
নিহাল থেমে গেলো। জিহ্বায় কামড় দিলো। নীলিমা কপালে হাত দিলো।
প্রান্তিক : বাবা… দাদুভাই আমাল বাবা নেই কেনো? মামনি নেই কেনো? তুমি বললে আমাল বাবাকেও গল্প শোনাতে। তাহলে আমাল বাবা কোথায়?
নিহাল : দাদুভাই তোমার শুনতে একটু ভুল হয়েছে। আমি বললাম যে আমার বাবাও আমাকে গল্প শোনাতো।
প্রান্তিক : মানে তোমালো বাবা আছে! সবাল বাবা আছে আমাল নেই কেনো? মামনিও নেই কেনো? আমি মামনি বাবা চাই চাই মানে চাই। চাচ্চুকে দ্রুত আসতে বলো।
নিহাল : চাচ্চুতো বাসাতেই তো আসবে। আমি ফ্রেশ হয়ে আসছি। এরপর তিনজন মিলে ডিনার করবো। আর সবশেষে মজারমজার গল্প শোনাবো।
প্রান্তিক : কিন্তু মাবাবা..
নিহাল : ওটাতো চাচ্চু আসলে হবে।
নিহাল-নীলিমাকে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হলো প্রান্তিককে ঘুম পারাতে। নীলিমা নিহালকে বকলো সাবধানে কথা না বলার জন্য। নীড় অনেক রাতে বাসায় ফিরলো। প্রায় ২টার দিকে।

.

পরদিন…
বেলা ১১টা। মেরিন ওদের কোম্পানির হয়ে ডিল সাইন করতে পৌছালো। কিন্তু এসে দেখলো প্রজেক্টটা ওরা পায়নি। পেয়েছে নীড়রা।
মেরিন : এটা কেমন মজা মিস্টার আতিক। এটা আমাদের প্রজেক্ট ছিলো? আপনি কিভাবে এটা অন্য কাউকে দিতে পারেন? আপনার এতো সাহস কিভাবে হলো? আপনার তো আপনার। কার এতো সাহস হলো খানদের প্রজেক্ট ছিনিয়ে নেয়ার?
নীড় : নীড় আহমেদ চৌধুরীর।
মেরিন পেছনে ঘুরলো। নীড় এগিয়ে এলো।
মেরিন : এটা আপনাদের সেক্টর নয় মিস্টার চৌধুরী। আপনাদের এক্সপোর্ট-ইমপোর্টের বিজনেস।
নীড় : নতুন বিজনেস শুরু করেছি। একটাতে তো টপে আছিই। অন্যগুলোতে ট্রাই করলে বা ইনভেস্ট করলে অসুবিধা কোথায়?
মেরিন : ইউ আর ওয়েলকাম। এন্ড ইউ মিস্টার আতিক , আপনার উচিত ছিলো আমাদেরকে জানানো। এরপর যা যা হবে সেটার দায়ভার আপনার।
নীড় : টক টু মি।
মেরিন : আমি কার সাথে কথা বলবো আর কার সাথে বলবোনা সেটা আমিই ঠিক করি।
নীড় : আমার সাথে কারা কথা বলবে সেটা আমি ঠিক করি। আমাকে প্রশ্ন করুন। না হলে আমার প্রশ্নের উত্তর দিন।
মেরিন : টক টু দ্যা ওয়ালস।
বলেই মেরিন চলে গেলো।
নীড় : এটাকেই হয়তো উফস মোমেন্ট বলে। বেচারী খান।

.

চলবে…