#প্রতিশোধে_প্রনয়
part : 24
writer : Mohona
(do not copy please)
.
নীড় : প্লিজ ইমান…
ইমান : কিসের প্লিজ?
নীড় : নিউজ তো দেখিস। চিনিস তো আমাকে। নো ওয়ান্ডার যে বুঝতে পেরেছিস কিভাবে বিয়েটা হয়েছে?
ইমান : আল্টিমেটলি ভাগ্যে ছিলো তাই বিয়েটা হয়েছে।
আকাশ : তোর ভালোবাসা পূর্নতা পেয়েছে।
নীড় : ভালোবাসা মাই ফুট। ও আমার ভালোবাসা না। ভুল ছিলো। ভালোবেসে ভুল করেছিলাম। ভালোবাসা বিষয়টাই ভুল।
ইমান : ভালোবাসা ভুল কিনা জানিনা। তবে তোর ভালোবাসা গভীর ছিলো। অল্প সময়ে তোর ভালোবাসা এতোটাই গভীর হয়ে গিয়েছিলো যে আজও সেই গভীরতা থেকে বের হতে পারিস নি। তোর ভালোবাসায় জোর ছিলো। তোর ভাগ্যে ছিলো যে তুই তোর ভালোবাসা পাবি। অতঃপর তুই ভাগ্যবান। তাই নিজের ভালোবাসা পেয়েছিস।
নীড় : শাট আপ। বোস তোরা।
আকাশ : বসবোনা। তোদের বাসায় যাবো। ভাবিকে দেখবো।
নীড় : কিসের ভাবি? ও কেবল কাগজের বউ। দ্যাটস ইট… না ও নিজেকে আমার বউ মানে আর না আমি মানি।
আকাশ : ওকে ওকে মানলাম। তাহলে দিয়ে দে আমাকে…
নীড় ও ইমান রেগে আকাশের দিকে তাকালো।
ইমান : তুই কি কমপ্লিট স্টুপিড?
আকাশ : আমি কমপ্লিট সিঙ্গেল তাই বললাম। মেরিন তো দেখতে সুন্দর।
ইমান : যা। গিয়ে বন্দুকের গুলি খেয়ে আয়। সুন্দর একটা বউয়ে হাতে মরে যাওয়া ভালো।
নীড় : ওকে স্টপ।
ইমান : তুই হয়তো জেলাস হলি।
নীড় : কি বলছিস বল তো?
ইমান : আকাশ কিন্তু জাস্ট মজা করছে। তবুও তোর চেহারাটা দেখ।
নীড় : এই চুপ থাকতো।
আকাশ : বাসায় নিয়ে চল। প্রান , ভাবির সাথে মিট করা। ভয় নেই। নজর দিবোনা তোর বউয়ের দিকে।
ইমান : বাদ দে… ওটা তোর ব্যাপার। মেরিন এখনো অমনই রাগিই আছে। তোদের কি রোম্যান্স হয় নাকি যুদ্ধ হয়?
নীড় : চল চল বাসায় চল।
ইমান : এভোয়েড করলি মনেহয়।
নীড় : কি এভোয়েড করবো?
ইমান : আমার প্রশ্নটা?
নীড় : তোর কি মনেহয় যে আমাদের মধ্যে রোম্যান্স হতে পারে?
আকাশ : হলেও হতে পারে ও…
নীড় : চুপ করে থাক। চল বাসায় চল।
.
প্রান্তিক মজা করে গাছে পানি দিচ্ছে। মেরিন অফিস থেকে ফিরলো।
মেরিন : কি করছো বাচ্চা…
প্রান্তিক পেছনে ঘুরলো। পানিতে মেরিন ভিজে গেলো।
প্রান্তিক : সরি মামমাম…
মেরিন : দুষ্টু ছেলে…
মামমামকে আবারো শাওয়ার নিতে হবে।
প্রান্তিক : হিহি…
মেরিন ঘরে গেলো। গোসল টোসল করে বের হলো। মাথায় এখনো তোয়ালে পেচানো। তোয়ালেতে হাত দিলো আর তখনই প্রান্তিক জোরেজোরে মেরিনকে আর নীলিমাকে ডাক দিতে লাগলো। নীড়ও ইমান আকাশকে নিয়ে পৌছে গিয়েছে বাসার নিচে। প্রান্তিকের চিৎকার শুনে দৌড়ে ভেতরে ঢুকলো। তাও গান লোড করে। মেরিনও ছুটে নিচে নামলো।
নীলিমা : কি হয়েছো দাদুভাই?
মেরিন : কি হয়েছে বাচ্চা?
নীড় : কি হলো লাভ?
প্রান্তিক : দেখো দেখো আমি একটি ড্রাগনফ্লাই ধরেছি। কতো সু্ন্দর…
সকলেই চিন্তামুক্ত হলো।
মেরিন : ভয়ই পেয়ে গিয়েছিলাম বাচ্চা।
দৌড়ে নামার সময় তোয়ালেটা মেরিনের মাথা থেকে খুলে গিয়েছে। টুপটুপ করে মাথা থেকে পানি পরছে।
ইমান : হাই মেরিন… উফস… ভুল হলো। ভাবি। কেমন আছো ভাবি?
মেরিন ইমান ও আকাশকে চেনে।
মেরিন : ভালো। তোমরা ভালো আছো?
মেরিনকে বড্ড আকর্ষনীয় লাগছে। ভেজা চুল থেকে টুপটুপ করে পানি পরছে , চোখের পাপড়ি গুলোও ভেজা। নীড় বারেবারে আকাশের দিকে তাকিয়ে ওর অভিব্যক্তি দেখছে।
আকাশ : আমরাও ভালো আছি। তোমাকে দেখে আরো ভালো লাগছে। তুমি কিন্তু আরো সুন্দর হয়ে গিয়েছো।
মেরিন : থ্যাংকস।
নীড় দাঁত কিটমিট করছে।
নীলিমা : তোমরা মেরিনকে আগে থেকেই চেনো?
ইমান : হ্যা আন্টি। ইন্ডিয়ায় ও আমাদের জুনিয়র ছিলো। কয়েকমাসের মধ্যেই আবার অন্যকোথাও চলে যায়।
মেরিন : ফিনল্যান্ড গিয়েছিলাম।
ইমান : ওহ।
নীলিমা মনেমনে : নিহাল তাহলে সত্যি কথাই বলছিলো।
মেরিন : তোমরা…
নীড় মেরিনকে কথা শেষ করতে না দিয়ে টেনে রুমে নিয়ে গেলো।
মেরিন : কি হলো? এভাবে নিয়ে এলে কেনো?
নীড় : মাথা মুছতে পারোনা? ড্রায়ার নেই ঘরে?
মেরিন : এই টোনে কথা বলছো কেনো?
নীড় : কোন টোনে কথা বলবো তোমার সাথে?
মেরিন : তুমি কোনো অবলা নারীর সাথে কথা বলছোনা।
নীড় : ড্রেসটার পেছনটা ভিজে গিয়েছে।
মেরিন : তো?
নীড় : চেইঞ্জ করে এরপর নিচে আসবা।
মেরিন : আশ্চর্য্য তো।
নীড় কোনো কথা না বলে মেরিনের পোশাকের পেছনের দিকটা আবারো টেনে ছিরে ফেলল। মেরিন দেয়ালে পিঠ ঠেকিয়ে দারালো।
মেরিন : আমার ড্রেসে ব্যাকের সাথে তোমার কি দুশমনি?
নীড় : আমার কথা না শুনলে এমনই হবে।
বলেই নীড় চলে গেলো।
মেরিন : জেলাসি… যাইহোক…শুনে নিলাম তোমার কথা রেসপেক্টিভ লুজার। কিছু বড় পাওয়ার জন্য ছোটছোট অর্ডার ফলো করাই যায়।
.
আকাশ : ওই দেখ আসছে।
ইমান : আরো লেগপুল করবো।
নীড় ওদের সামনে এসে দারালো।
ইমান : তু…
নীড় : একদম লেগপুল করার চেষ্টা করবিনা।
আকাশ : তার মানে তুই রেগে যাচ্ছিস। তাইনা?
নীড় : তোরা তো জ্বালিয়ে মারবি।
ইমান : আচ্ছা… চল সবাই মিলে কোথাও ঘুরে আসি।
নীড় : মাত্র সিঙ্গাপুর থেকে ফিরলাম। তাই এখন সম্ভব হবেনা রে।
আকাশ : তুই আমার ভয়ে যাবিনা তাইনা?
নীড় : টেনে দিবো এক চড়।
আকাশ হাসতে লাগলো।
ইমান : চল গার্ডেনে একটু হাটি।
আকাশ : চল চল।
তিন বন্ধু হাটছে। ইমান নীড়ের কাধে হাত রাখলো।
ইমান : নীড়… বউ বউই হয়। বউয়ের প্রতি আকর্ষন থাকবেই। আসলে বউয়ের প্রতি আকর্ষণ থাকেনা। থাকে ভালোবাসা , থাকে মায়া , থাকে টান।
আকাশ : একদম ঠিক।
ইমান : তোর কি বিয়ে হয়েছে?
আকাশ : না।
ইমান : তাহলে চুপ করে থাক।
আকাশ : ওকে।
ইমান : দেখ মে…
নীড় : মেরিনের বোন আমার ভাইয়ার খুনী। কেবল খুনীই নয় ওর বোন আমার ভাইয়াকে ধোকাও দিয়েছে।আমার পরিবারের সুখ শান্তি শেষ করে নিয়েছে।
ইমান-আকাশ : এটাতে মেরিনের দোষ কোথায়?
নীড় : ওকে চিনিস তোরা? ওই মেয়ে কতোটা ভয়ংকর ভেবে দেখেছিস? নিজের রেপ কেইস সাজিয়েছে।
ইমান : দেখ… প্রথমত , হলেও হতে পারে যে তুই এই ঘটনা ঘটিয়েছিস। কারন তুই নিজেই বলেছিস যে তোর কিছু মনে নেই। আর দ্বিতীয়ত , তুই যেটা করেছিস সেটাও অন্যায়। নীলা ভাবি মৃত। তার নামে মিথ্যা অপবাদ দিয়েছিস। সেটাও ভুল ছিলো। তারওপর মাবাবা একসাথে মারা গিয়েছে। মেরিনের মতো একটা মেয়ে প্রতিশোধ নেয়ার চেষ্টা করবেই। আর এখন সবচেয়ে বড় কথা হলো এই যে ও এখন তোর বউ।
নীড় : ও লিভইনে ছিলো। জানিস সেটা?
ইমান-আকাশ : মূল সমস্যাই এটা।
নীড় : এমন করে বলার কি আছে?
ইমান : জেলাসির জন্যই সবটা হচ্ছে। তুই মেনে নিতে পারছিস না যে তোর মেরিন অন্যকারো সংস্পর্শে ছিলো। কাউকে ভালোবাসতে। আর এসবের সাথে তোকে রিজেক্ট করার কারন তো আছেই।
নীড় : তোরা বেশি ভাবছিস।
ইমান নীড়ের হাত ওর বুকে রাখলো।
ইমান : বুকে হাতে রেখে বল তো যে তুই জেলাসির জন্য সম্পর্কটাকে আগে বারাচ্ছিস না।
নীড় : আরে বোঝার চেষ্টা কর… কখনো ও আমার পেছনে গান নিয়ে তাড়া করে কখনো আমি করি। আবার কখনো দুজন দুজনের দিকে তাক করি।
ইমান : শত্রুতাটাকে ভালােবাসায় পরিনত কর।
নীড় : কিছু জিনিসকে চাইলেও জোরা লাগানো যায়না।
ইমান : ভালোবাসিস না মেরিনকে?
নীড় : না।
ইমান : মিথ্যা কথা। জেলাসি আছে ভালোবাসা নেই সেটা মেনে নিবোনা। মুগ্ধতা আছে ভালোবাসা নেই সেটাও বিশ্বাস করবোনা। না দেখার ব্যকুলতা আছে এবং দেখার আনন্দ আছে কিন্তু ভালোবাসা নেই সেটাও মেনে নিবোনা। তুই নিজের মনের ভেতর ঢুকে দেখ। ঠিক জেনে যাবি যে আজও ভালোবাসিস। ইগোর নিচে চাপা পরে আছে। মানলাম ও লিভইনে ছিলো। কিন্তু সেটা ওর অতীত। সেটা জেনেই ওকে বিয়ে করেছিস। ও কোনো লুকোচুরি খেলেনি। তুই আরো একটা গেইম খেলে ওকে বিয়ে করেছিস।
নীড় : ডিভোর্স দিয়ে দিবো।
ইমান : পারবিনা। নিজেকে জি…
মেরিন সকলের জন্য চানাস্তা নিয়ে এলো।
আকাশ : ওই তো বিউটিফুল চলে এসেছে।
তিনজন মেরিনের দিকে তাকালো।
মেরিন : রূপা… এগুলো টেবিলে রাখো।
ইমান : ভাবি বসো।
মেরিন : মেরিন বা বন্যা বললেই খুশি হবো। ভাবি নট অ্যালাউড।
ইমান : ওকে ওকে মেরিন বলেই ডাকবো। খুশি?
মেরিন : হামম। বসো তোমরা।
আকাশ : তাহলে তোমাকেও বসতে হবে ভাবি।
মেরিন : তোমাকে কি আলাদাভাবে বলতে হবে মেরিন বলে ডাকতে?
আকাশ : সরিসরি। তুমিও বসো।
.
সকালে…
মেরিন প্রান্তিকের বুকের ওপর হাত রেখে ঘুমিয়ে আছে। নীড়ের ঘুম ভাঙলো। উঠে বসলো। প্রতিদিন সকালের মতো করে প্রান্তিকের কপালে চুমু দিলো। চোখ পরলো মেরিনের দিকে। ইমানের বলা কথাগুলো কল্পনা করতে লাগলো। ও জানে মেরিন আকর্ষণীয় , ও জানে মেরিন ওর চোখের নেশা , ও জানে মেরিনকে দেখে ও মুগ্ধ হয় , ও জানে যে মেরিনকে যন্ত্রণায় ও দেখতে পারেনা। এরপরেও প্রতিবার নিজের মনের বিরুদ্ধে গিয়ে নিজের ঘৃণাটাকেই সামনে দার করিয়েছে। অনেক অনেক কারন আছে। মেরিনকে দেখলে ভালোবাসা , ঘৃণা এবং অভিমান একসাথে কাজ করে। সব রকমের অনুভূতি একসাথে জেগে ওঠে। মেরিনকে চরিত্র নিয়ে কথা বললে ওর যথেষ্ট কষ্ট হয়। তবুও সেটাকে সায় দেয়না।
নীড় মনেমনে : স্টিল আই হেইট ইউ।
নীড়ের চোখের পানি গরিয়ে মেরিনের গালে পরলো। নীড় নিজেও জানেনা যে ওর চোখে পানি। মেরিনের ঘুম ভেঙে গেলো। নীড় সরে এলো। মেরিন গালে হাতে দিলো।
মেরিন : গালে পানি কোথায় থেকে এলো? তুমি কি আমার ওপর পানি ছিটিয়েছো?
নীড় : তোমাকে নিয়ে পানিতে ছেরে দেয়ার দলে আমি। পানি ছিটানোর মতো ছোট কাজ আমি করিনা।
বলতে বলতে নীড় ফোনটা চার্জ দিতে গিয়ে ইলেকট্রিক শক খেলো।
মেরিন :কি হলো?
নীড় ; বৈদ্যুতিক তারটা আমার হাতে চুমু খেলো।
মেরিন উঠে নীড়ে কাছে এলো।
মেরিন : শক খেয়েছো?
নীড় : তোমার জানার বিষয় না। আর শক খেলে তো তুমি খুশিই হবে। মরে গেলে তো সবচেয়ে খুশি।
মেরিন : নট অ্যাট অল। দুশমন তো আমার অনেক আছে। কিন্তু এতোটা জঘন্য দুশমন কেউ নেই। তাই তোমার সাথে দুশমনি করে আমি সন্তুষ্ট। আর তাছারাও আমার প্রতিশোধ এখনো নেয়া হয়নি। তাই তোমাকে মরতে দিতে পারিনা।
নীড় : রিয়েলি?
মেরিন : রিয়েলি। হাতটা দাও। মাসাজ করে দিচ্ছি।
নীড় : নো থ্যাংকস।
মেরিন নীড় হাতটা নিয়ে মাসাজ করতে লাগলো।
মেরিন : দুশমনির খেলায় দুটি পক্ষকেই শক্তিশালী হতে হয়। দুশমনি করার জন্য সুস্থ থাকা প্রয়োজন। বুঝলে?
নীড় : হামম বুঝলাম। তো প্রতিশোধ কিভাবে নিবে?
মেরিন : যেকোনো ভাবেই নিতে পারি। সেটা আমার মুডের ওপর নির্ভর করে।
নীড় : তোমার দৃষ্টি বুঝতে পারছিনা। হাতটা ছারো।
মেরিন : কেনো? আমার স্পর্শে ভয় পাচ্ছো নাকি?
নীড় : এক্সকিউজ মি! কি বললে তুমি? তোমার স্পর্শে আমি ভয় পাবো? আর ইউ ম্যাড? আমার স্পর্শে তোমার ভয় পাওয়া উচিত । তোমার স্পর্শে আমি কেনো ভয় পাবো?
মেরিন : নারীর স্পর্শ পৃথিবীর সবচেয়ে ভয়ংকর অস্ত্র। নারী সব করতে পারে। নারী গড়তেও পারে , নারী ধ্বংসও করতে পারে। তাই ভয় পাচ্ছো প্রতিশোধে পরিনয় না হয়ে যায়।
নীড় হেসে মেরিনকে কাছে টেনে বেডে ফেলল। ওর ওপর ভর ছেরে দিলো।
নীড় : প্রতিশোধে পরিনয় হলে তোমারও হবে। আমার একার হবেনা।
মেরিন : আমার মধ্যে ঘৃণা ছারা কোনো অনুভূতি নেই। না কখনো ছিলো। তাই পরিনয় সম্ভব নয়।
নীড় : অনুভূতি সৃষ্টি করতে প্রখর।
মেরিন : চেষ্টা করে দেখতে পারো। টিনেজার টাইপ অসভ্যতামো করা শেষ হলে উঠে দারাও। প্রানের ঘুম ভাঙার সময় হয়ে গিয়েছে।
নীড় : বউ তুমি আমার। নও কি?
মেরিন : সরো…
নীড় : টিপিকাল ওয়াইফের মতো বললে সরো।
মেরিন : হাতপা চালিয়ে তোমাকে সরাতে পারি। সেটা তুমি জানো। তবে সেটাতে প্রানের ঘুম ভাঙার তীব্র সম্ভাবনা রয়েছে।
নীড় সরে এলো।
নীড় : কোনো একদিন প্রানের অনুপস্থিতিতে হিসাবটা করে নেয়া যাবে।
মেরিন উঠে বসলো।
মেরিন : আমি কিন্তু সেই মেরিনই আছি। স্পর্শ করতে ঘৃণা করলোনা?
নীড় : তোমার প্রতিশোধ যেমন মুডের ওপর নির্ভর করে তেমনটা আমারও।
.
২দিনপর…
জন : ম্যাম… ওই ঘরে মোটা ১১জনের ফিঙ্গারপ্রিন্ট পাওয়া গিয়েছে। নিহাল আহমেদ চৌধুরী , নীলিমা চৌধুরী , প্রনয় আহমেদ চৌধুরী , নীড় আহমেদ চৌধুরী , নীলা ম্যাম এবং কাজের মেয়ে রূপার ফিঙ্গারপ্রিন্ট ম্যাচ খেয়েছে।
মেরিন : বাকি ৫জন?
জন : খোজ করছি । আসলে কেবল ফিঙ্গারপ্রিন্ট আছে। এমন কেউ নেই যার ওপর সন্দেহ করতে পারি। সন্দেহর ভিত্তিতে ফিঙ্গারপ্রিন্ট মিলানো যেতো।
মেরিন : কার্পেন্টারদের ফিঙ্গারপ্রিন্ট থাকতে পারে।
জন : ঘরের কাজ যারা করেছে তারা গ্লাভস পরে করেছে।
মেরিন : চৌধুরী এবং খানদের আলাদা আলাদা দুশমনদের নামের তালিকা করো। খান ও চৌধুরীদের কমন শত্রুদেরও চিহ্নিত করো। থানাতে বা উপজেলাতে ভোটারদের ফিঙ্গারপ্রিন্টের সাথে মিলিয়েও দেখতে পারো।
জন : বিষয়টা সময়সাপেক্ষ ম্যাম।
মেরিন : লাগুক সময়। সময়ের জন্য আমি আর হার মানবোনা।
.
পিটার : স্যার… এই পিডিএফে সকল ইনফরমেশন আছে।
নীড় : হামম।
পিটার : স্যার… মেরিন ম্যাম খারাপ হতে পারে কি…
নীড় : পিটার… বিয়ের বয়স প্রায় দুই মাস। এর মধ্যে আমি কখনো অ্যালাউ করিনি ওর বিরুদ্ধে কোনো বাজে কমেন্ট করার। খারাপ ওয়ার্ডটা কেনো ইউজ করছো?
পিটার : সরি স্যার। আসলে আমি ওভাবে বলতে চাইনি। আপনি তো সম্পুর্ন কথা শুনলেনই না। ম্যামকে যতোটা খারাপ ভাবেন ততোটা খারাপ তিনি নন।
নীড় : লিভ।
পিটার চলে গেলো।
চলবে…
#প্রতিশোধে_প্রনয়
part : 25
writer : Mohona
(do not copy please)
.
পিটার চলে গেলো। নীড় পিডিএফটা অন করলো। সবটা দেখলো। নীড় রেগে ল্যাপটপটা ধপাস করে বন্ধ করলো। দুই আঙ্গুল দিয়ে ভ্রু কুচকে ধরলো। নিজের বলা কঠোর কথাগুলোর কথা ভাবছে।
নীড় : খুব বাজে কথা বলে ফেলেছি।এগুলো ও ডিজার্ভ করেনা। তবুও ওর লিভইনের কথার জন্য আমি ওকে কি না শুনিয়েছি? সিঙ্গাপুরে প্রেগনেন্সির রিপোর্টের কথা ভেবে… ছিঃ… উফফ। ওর বাকি সব অভ্যাস নিয়ে কথা বলতে পারতাম। বারবার চরিত্র নিয়ে কথা বলা ঠিক হয়নি। প্রানের ছুটির সময় হয়ে গিয়েছি।
নীড় প্রানের স্কুলে পৌছালো। জ্যামের জন্য একটু দেরি হয়ে গিয়েছে। গিয়ে দেখে প্রান্তিক নেই। জানতে পারলো মেরিন নিয়ে গিয়েছে। মেরিনকে কল করলো বন্ধ বলছে। বাসায় কল করে জানতে পারলো বাসায় পৌছায়নি। চিন্তায় পরে গেলো। ও বাসায় পৌছালো। ততোক্ষনেও মেরিন পৌছায়নি।
নীলিমা : মেরিন প্রানকে নিয়ে চলে যায়নি তো?
নীড় : আহ মামনি… তুমি অযথা চিন্তা করছো।
নীড় বাসা থেকে বের হলো। চিন্তাতো ও করছে। কিন্তু নীলিমাকে বুঝতে দিলোনা। মেরিনকে কল করলো। এবার রিং হলো। মেরিন রিসিভ করলো।
মেরিন : হ্যালো…
নীড় : ফোন বন্ধ করে রেখেছো কেনো? কোথায় পালিয়েছো প্রানকে নিয়ে?
মেরিন : চিল… গতরাতে যে প্রানের ক্যারাটে টিচারের কল এসেছিলো ভুলে গিয়েছো? আজকে আর্লি ছিলো ক্লাস।তাই ওকে নিয়ে এখানে এসেছি ।
নীড় : আমাকে ইনফর্ম করার প্রয়োজনবোধ করোনি?
মেরিন : ম্যাসেজ করেছিলাম। দেখোনি? চোখ নেই?
নীড় : ফোন বন্ধ রেখেছিলে কেনো?
মেরিন : তোমাকে জবাব দিতে বাধ্য নই।
নীড় : আসছি আমি।
মেরিন রেখে দিলো। নীড় গাড়িতে উঠলো। অচেনা নাম্বার থেকে কল এলো।
নীড় : হ্যালো… কে বলছেন?
লিও : নামে কি এসে যায়? আপনার ওয়েল উইশার। মেরিন বন্যা খান আপনার প্রানকে নিয়ে পালাচ্ছে।
নীড় : মুখ সামলে কথা বলুন। মেরিন আমার ওয়াইফ। ও প্রানকে নিয়ে ওর ক্যারাটে স্কুলে আছে।
লিও : আছে আছে। সেটাও একটি নাটক। ওখানে কিছুক্ষনের জন্য গিয়েছে। আপনার চোখে ধুলো দিতে। ওখান থেকেই প্রানকে নিয়ে পালাবে। হাহাহা।
লিও রেখে দিলো। ফোন বন্ধ করে ফেলল। নীড় কল করেও আর পেলোনা।
লিও : আমার ঘূর্নিপাকে পরে গিয়েছো। আজকে হয় একজন শেষ হবে না হয় দুজন।
নীড় : কে ছিলো এটা? কি বলল এসব? যদি এটা সত্যিই হয় তাহলে প্রানকে আর পাবোনা। আর দেরি করা ঠিক হবেনা।
ও দ্রুত পৌছালো প্রান্তিকের ক্যারাটে স্কুলে। দেখে স্কুলের বাহিরে মেরিনের গাড়ি দার করানো। টায়ার পাংচার। দেখতে পেলো যে মেরিন প্রান্তিকের হাত ধরে ছুটে যাচ্ছে। নীড়ও দৌড় লাগালো। মেরিন-প্রান্তিক অনেকটা দূরে।
নীড় : মেরিন দারাও… তুমি এভাবে প্রানকে নিয়ে যেতে পারোনা। স্টপ মেরিন…
প্রান্তিক : মামমাম চাচ্চু…
মেরিন : কিপ রানিং।
মেরিন ছুটতে ছুটতে পেছন ফিরলো। নীড়কে দেখতে পেলো। ওদের পেছনে ছুটছে এবং ওদেরকে দারাতে বলছে।
মেরিন : নীড় তো দারাতে বলছে। আমরা তো এখনো ক্যারাটে স্কুলের ১৫০ফিটের মধ্যেই আছি। দৌড়াতে থাকি। নীড়ও দৌড়ে আসবে।
মেরিন প্রান্তিককে নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছে।
নীড় : তুমি যদি না দারাও মেরিন তাহলে আমি তোমাকে গুলি করতে বাধ্য হবো।
মেরিন নীড়ের কথা কানে নিলোনা। নীড় গান লোড করলো।
নীড় : মেরিন আই সেড স্টপ। আমি তোমাকে প্রানকে নিয়ে যেতে দিবোনা। আই সেড স্টপ। লাস্ট ওয়ার্নিং।
মেরিন নীড়ের কথা শুনলোনা। নীড় দেখলো যে একটি হেলিকপ্টার উড়ে আসছে। ওর মনে হলো যে এটা মেরিনের আনানো। নীড় নিজের মনের বিরুদ্ধে গিয়ে মেরিনের পিঠের দিকে গুলি করলো। মেরিনের পা থেমে গেলো।
প্রান্তিক : মামমাম… কি হলো?
মেরিন প্রান্তিকের দিকে তাকালো। এমন রক্তাত্ব অবস্থায় ওকে দেখলে আবারো প্রানের ছোট মনে আঘাত লাগবে , ভয় ঢুকবে। প্রান্তিক নীড়ের দিকে দেখলো। গান দেখতে পেলো। মেরিন ধপাস করে নিচে পরলো। পিঠ থেকে রক্ত বের হচ্ছে ।
প্রান্তিক : মামমাম…
নীড় ছুটে আসছে। হঠাৎ পেছনে বোম্ব ব্লাস্টের শব্দ। নীড় পেছনে তাকালো। ছারখার হয়ে গিয়েছে ক্যারাটে স্কুল এবং সেটার আশেপাশের জায়গায়। অবস্থার ভয়াবহতায় ভয় পেয়ে প্রান্তিক জ্ঞান হারালো। নীড়ের কাছে এখন সবটা ক্লিয়ার। হয়তো লিও-ই ওকে কল করেছিলো , লিও-ই বোম্ব ব্লাস্ট করিয়েছে , লিও-ই মেরিনের গাড়ির চাকা পাংচার করিয়েছে। উদ্দেশ্য ছিলো মেরিনকে বা ওদের দুজনকেই মেরে ফেলা। মেরিন হয়তো বোম্বের কথা জানতে পেরেছিলো। গাড়ির চাকা পাংচার হওয়ার কারনে ও দৌড় লাগায় প্রানকে নিয়ে। নীড় ছুটে গেলো।
নীড় : প্রান… মেরিন…
ভীর জমে গিয়েছে আবার মানুষজন ছুটাছুটিও করছে। নীড়ের মনেহচ্ছে সময় স্থির হয়ে গিয়েছে। কি করবে বুঝতে পারছেনা। স্নায়ুতন্ত্র নিজের কার্যকলাপ হয়তো বন্ধ করে দিয়েছে।
.
হসপিটালে…
সকলে হসপিটালে এসেছে।
নীলিমা : প্রান কোথায়? কি হয়েছে ওর?
নিহাল : মেরিন কেমন আছে? প্রান কোথায়? ডক্টর কি বলেছে?
শমসের : কে বোম্ব রেখেছিলো? কে গুলি করেছে আমার নাতনিকে? প্রানের কি অবস্থা ? কথা বলছোনা কেনো?
নীড় : লিও বোম্ব রেখেছিলো। প্রান এমন ঘটনা দেখে ভয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছে। ওকে ঔষধ দিয়ে ঘুম পারিয়ে রাখা হয়েছে।
জন : ম্যামকে গুলি কে করেছে?
নিহাল : জবাব দাও নীড়।
নীড় : আমি গুলি করেছি ওকে।
নিহাল : কিহ?
নীড় : হ্যা। আমি ভেবেছিলাম যে মেরিন প্রানকে নিয়ে পালাচ্ছে। ওকে দারাতে বলি। পরে গুলি করি।
কথাটা শেষ করতে না করতেই শমসের খান ওকে থাপ্পর মারলো।
শমসের : এই থাপ্পরটা বড্ড কম। আজকে আমি নিজের ভুল সংশোধন করবো।
বলেই সে নিজের পকেট থেকে পিস্তল বের করলো। লোড করতে নিলে পিটার এসে তার হাত ধরলো। জন এসে পিটারকে ধরলো। পিটার এবং জনেক মধ্যে ধস্তাধস্তি শুরু হলো।
নিহাল : কি হচ্ছে কি পিটার-জন? থামো দুজনে। এটা বক্সিং রিং নয়।
নিহাল কোনোরকমে দুজনকে থামালো। থামিয়ে নীড়ের সামনে গিয়ে দারালো।
নিহাল : তুমি আমার ছোটছেলে , আমি তোমার বাবা। তবুও আমার তোমাকে ভয় পেয়ে চলতে হয়েছে। মেরিনের সাথে মারাত্মক অন্যায় করেছো , সেই অন্যায়টাকে বৈধ প্রমান করতে অন্যায় ভাবে বিয়ে করেছো। আর এখন এটা… মেরিন খারাপ কি ভালো আমি বুঝিনা। কিন্তু তুমি ওর সাথে যা করেছো সেটা কেউ করেনা। এখন তো আমার নিজের সন্দেহ হচ্ছে যে তুমি সত্যিই কখনো মেরিনকে ভালোবেসেছিলে কিনা? যদি কখনো ভালোবাসা থেকে থাকে তাহলে এমন আচরণ তো করা সম্ভব নয়।
শমসের : ভালোবাসা ছিলো… ভালোবাসা নিয়ে কি সব বলছো?
নিহাল চুপ করে রইলো।
শমসের : কি হলো নিহাল? চুপ করে আছো কেনো? কি বলছো এসব?
নিহাল : ইন্ডিয়ার ভার্সিটিতে পড়ার সময় নীড় মেরিনকে ভালোবেসে ফেলেছিলো।
শমসের নীড়ের দিকে তাকালো। তার কপালে ভাজ পরলো।
সিস্টার : প্রান্তিকের জ্ঞান ফিরেছে।
নীলিমা-নীড় প্রান্তিকের কাছে গেলো ।প্রান্তিক নীড়কে দেখে ভয় পাচ্ছে। নীলিমা প্রান্তিকের পাশে বসলো।
নীড় : লাভ…
প্রান্তিক ভয় পেয়ে নীলিমাকে জরিয়ে ধরলো। নীলিমা একটু অবাক হলো।
নীলিমা : দাদুভাই… কি হয়েছে? ভয় পাচ্ছো কেনো?
নীড় : প্রানসোনা…
প্রান্তিক : দীদু…
প্রান্তিক ভয়ে কাঁপছে।
সিস্টার : মিস্টার চৌধুরী… আপনি বাহিরে যান। আপনাকে দেখে বাচ্চাটা ভয় পাচ্ছে।
নীড়ের চোখ থেকে পানি গরিয়ে পরলো। প্রান্তিক নীলিমার আঁচলে মুখ লুকিয়ে রেখেছে। সিস্টার-নীলিমা প্রান্তিককে সামলানোর চেষ্টা করছে। শমসের এসে প্রান্তিককে দেখে গেলো। নীড় গিয়ে অপারেশন থিয়েটারের সামনে গিয়ে দারালো।
.
একটুপর…
ওটির আলো নিভে গেলো। ডক্টর বেরিয়ে এলো। নীড় এগিয়ে যেতে নিলে শমসের ওকে বাধা দিয়ে নিজে এগিয়ে গেলো।
শমসের : ডক্টর… আমার নাতনি কেমন আছে? ঠিক আছে তো?
ডক্টর : আউট অফ ডেঞ্জার।
স্ট্রেচারে করে মেরিনকে বের করা হলো।
শমসের : দিদিভাই…
মেরিনকে রিকভারি রুমে নিয়ে যাওয়া হলো।
নীড় : ডক্টর… মেরিনের জ্ঞান কখন ফিরবে?
ডক্টর : বলতে পারছিনা। তবে সময় একটু বেশি লাগবে।
নীড় : এটা কেমন কথা?
ডক্টর : অ্যানেসথেসিয়া ইফেক্ট করছিলোনা। তাই বেশি মাত্রায় প্রয়োগ করতে হয়েছে। তাই জ্ঞান ফিরতে একটু সময় লাগবে।
নীড় : ওর ব্রেইনে ইফেক্ট পরতে পারে তো।
ডক্টর : আমাদের কিছু করার ছিলোনা। এক্সকিউজ মি।
ডক্টর চলে গেলো। নীড় গিয়ে রিকভারি রুমের বাহিরে গিয়ে দারালো। কাঁচটুকু দিয়ে মেরিনকে দেখছে। কাঁচের ওপর হাত রাখলো। আজকে কয়েকবছর নীড়ের চোখে পানি এলো। হসপিটাল থেকে বেরিয়ে গেলো।
.
শমসের : এসব কি মেরিনের প্ল্যান ছিলো?
জন : আমার জানামতে না স্যার।
শমসের : এমনভাবে বলছো যেনো তোমাকে না জানিয়ে করবেনা। যদি রেইপ কেইসের মতো এটাও তোমাদের প্ল্যান হয় এবং পরবর্তীতে আমাকে জানানো হয় তাহলে কিন্তু আমি খুব রাগ করবো।
জন : স্যার… আমি ৯০% নিশ্চিত যে এটা ম্যামের প্ল্যান নয়। কারন এটাতে প্রান জরিয়ে আছে। এই সম্পুর্ন ঘটনা প্রানের ওপর খুব খারাপ প্রভাব ফেলেছে। তাই ম্যাম এই কাজ ভুলেও করবেনা। আর রেইপ কেইসটা এমন ছিলোনা। সেটা কেবল ম্যামের ওপর ছিলো। তাই বিপজ্জনক হলেও প্রানের সাথে সম্পর্কযুক্ত ছিলোনা।
শমসের : ওরা ছারা আমার আর কে আছে জন? একটার পর একটা বিপদের সম্মুখীন ওরা হয়েই যাচ্ছে।
জন : সব ঠিক হয়ে যাবে স্যার।ম্যাম একদম ঠিক হয়ে যাবে। আপনি ভেঙে পরবেন না। আপনি অসুস্থ হয়ে পরলে ম্যামকে আমি কি জবাব দিবো বলুন তো? আপনি নিজেকে সামলান।
.
প্রান্তিক : না না না। আমি মামমামের কাছে যাবো। তোমরা মিথ্যা কথা বলছো।
নিহাল : না দাদুভাই। সত্যি কথা বলছি। মামমাম মিটিং এর জন্য বাহিরে গিয়েছে।
প্রান্তিক : না না মিথ্যা কথা। চাচ্চু মামমামকে শ্যুট করেছে। মামমামের পিঠ থেকে রক্ত পরছিলো। আমি মুভিতে দেখেছি যে গুলি খেলে মানুষ মরে যায়। আমি মামমামের কাছে যাবো যাবো যাবো।
নীলিমা : ও দাদুভাই… শোনো আমার কথা শোনো…
প্রান্তিক : মামমামের কাছে যাবো।
শমসের : চ্যাম্প…
প্রান্তিক : বড়বাবা… বড়বাবা মামমাম কোথায়?
শমসের : মামমামকে অনেক বড় একটা স্পাইডার কামর দিয়েছে । তাই মামমামকে দ্রুত বাহিরের দেশে যেতে হয়েছে। ফ্লাইটে তো তাই কথা বলা সম্ভব না। ল্যান্ড করুর। এরপর কথা বলবে।
প্রান্তিক : মামমামকে স্পাইডার কামর দেয়নি। শ্যুট করেছে চাচ্চু। চাচ্চুর হাতে গান ছিলো।
শমসের : আচ্ছা গান ছিলো মানলাম। কিন্তু চাচ্চুকে কি শ্যুট করতে দেখেছো?
প্রান্তিক চুপ হয়ে গেলো।
শমসের : কি হলো বলো তো? দেখেছো?
প্রান্তিক মাথা এপাশওপাশ করে না করলো।
শমসের : তাহলে?
প্রান্তিক : চাচ্চুর হাতে গান ছিলো। পেছনে অনেক বড় বুম হলো। এরপরে আগুন। ভয়…
প্রান্তিক আবারো ভয়ে যেনো কেমন হয়ে গেলো। সকলে মিলে ওকে সামলানোর চেষ্টা করলো। নীড় তো এখানে আসবেনা। ওকে দেখলে প্রান্তিক আরো ভয় পেয়ে যাবে।
.
২০ঘন্টাপর…
মেরিনের জ্ঞান ফিরলো। নীড় বাহিরে থেকে দেখলো। ওর মুখে হাসি ফুটলো।
নীড় : সিস্টার… সিস্টার… ওর জ্ঞান ফিরেছে। ডক্টর…ডক্টর…
ডক্টর-নার্স ভেতরে ঢুকলো চেকআপ করে এলো।
নীড় : কেমন আছে মেরিন?
শমসের খান ছুটে এলো।
শমসের : ডক্টর আমার নাতনির জ্ঞান ফিরেছে? ও কেমন আছে?
ডক্টর : জ্ঞান ফিরেছে। ভালো আছে।
শমসের : দেখা করতে পারি ওর সাথে? কথা বলতে পারি?
ডক্টর : না। ও এই জাগবে এই ঘুমাবে। তাই এখন দেখা করতে পারবেন না।
নীড় : ডক্টর… আমি একটু ভেতরে গিয়ে ওকে দেখতে পারি? ডিস্টার্ব করবোনা। কোনো শব্দ করবোনা
ডক্টর : হামম।
শমসের : তুমি যাবেনা আমার নাতনির কাছে।
নীড় : দাদুভাই… বউ ও আমার। দেখতে তো আমি যাবোই। আটকাতে পারবেনা আমাকে।
শমসের নীড়ের হাত ধরলো।
শমসের : আমিও বলেছি যে তুমি যাবেনা। কেইস কিন্তু এখনো করা যায়।
নীড় : করো। হাতটা ছারো।
বলেই শমসেরের হাতটা ছারিয়ে নিয়ে ভেতরে ঢুকলো। দেখছে মেরিনকে। মেরিনের নিভুনিভু চোখ। এই হুশ থাকছে আবার এই থাকছেনা।
নীড় মনেমনে : ঘৃণার খেলায় আমি হেরে গিয়েছি মেরিন। সম্পুর্নভাবে হেরে গিয়েছি। অপ্রয়োজনীয় ঘৃণায় অকারনে জরিয়ে ছিলাম। বয় এবং ম্যানের মধ্যে পার্থক্য থাকে। সেই পার্থক্যটা আমি বুঝিনি। ছাত্র সময়ে তোমার আঘাত পেয়েছিলাম। সেটা পুষে রেখে ঘৃণায় লিপ্ত ছিলাম। না শোনার অভ্যাস ছিলোনা। তাই তোমার না আমি মেনে নিতে পারিনি। ক্যাম্পাসে সবার সামনে তুমি না করেছিলে। সেই ক্ষোভটা ছিলো। বড্ড অপমানজনক ছিলো সেটা। তুমি রাগী , বদমেজাজী , জেদি ছিলে আমি জানতাম। তারপরও সকলের সামনে প্রপোজ করার রিস্কটা আমি নেই। তাই তুমি কাজটা করেছিলে। সেটা তোমার স্বভাব ছিলো। যাইহোক , অতীত নিয়ে আর ঘাটবোনা। তোমার সামনে আমি আমার কোনো অন্যায়কে জাস্টিফাই করার চেষ্টা করবো না। এতোদিন সাইকোর মতো কারন ছারা ঘৃণা করেছি। এখন থেকে সাইকোর মতো ভালোবাসবো।
নীড় মেরিনের কপালে চুমু দিয়ে বেরিয়ে এলো।
নিহাল : মেরিন কেমন আছে?
নীড় : ভালো আছে। প্রানের কি অবস্থা?
নিহাল : ভয়ে আছে এখন।
নীড় : ওকে আনন্দে দিয়ে রেখো।
নিহাল : বাসায় যাবেনা?
নীড় : মেরিনকে নিয়ে একবারে ফিরবো। প্রানকে কেবল দেখে রেখো।
নিহাল : হামম। এরপর থেকে ভেবে চিন্তে কাজ করো। প্রানের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলেছে।
নীড় : মেরিন সুস্থ হয়ে উঠুক। দুজন মিলে প্রানকে সুস্থ করে তুলবো।
নিহাল : মেরিন সুস্থ হলে কি অপেক্ষা করছে ভেবে দেখেছো?
নীড় : আমি আছি তো। সামলে নিবো।
নিহাল : ও মেরিন বন্যা খান। ললিপপ খাওয়া কোনো বাচ্চা নয়।
নীড় : তবুও সামলে নিবো।
নিহাল চলে গেলো। শমসের পেছনে দারিয়ে সবটা দেখলো এবং শুনলো।
.
পরদিন মেরিনকে বেডে শিফ্ট করা হলো। সবাই দেখা করতে গেলো। নীলিমা নেই। ও প্রান্তিকের কাছে আছে।
শমসের : কেমন লাগছে দিদিভাই?
মেরিন : ভালো। প্রান কোথায়? কেমন আছে ও?
শমসের : ভালো আছে।
মেরিন : ও জানেনা তো যে আমি হসপিটালে?
শমসের : ওকে বোঝানো হয়েছে সবটা। চিন্তা করােনা।
মেরিন : কিভাবে চিন্তা করবোনা বলো তো? ঘটনা ওর সামনে ঘটেছে।
শমসের : বললাম তো চিন্তা করোনা। সামলানো হয়েছে।
নিহাল : তোমার কাছে কিভাবে ক্ষমা চাইবো সেটা আমি বুঝতে পারছিনা।
মেরিন নিহালের দিকে কয়েক সেকেন্ড তাকিয়ে থেকে
বলল : বাবা… আপনি আমার গুরুজন… আপনি এভাবে কথা বললে হয়?
নিহাল : আসলে দূর থেকে সবটা দেখতে যেমন লাগে কাছ থেকে তেমনটা লাগেনা। তুমিই সেটার বাস্তব প্রমান। তোমার জন্য অনেক অনেক শুভ কামনা। দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠো।
ডক্টর এসে সবাইকে বের হতে বলল। চেকআপ করবে। সবাই বেরিয়ে গেলো। ডক্টর চেকআপ করে বের হলেন। সিস্টারকে বলল খেয়াল রাথতে।
নীড় : কি অবস্থা এখন ওর?
ডক্টর : ভালো।
ডক্টর চলে গেলো। নীড় ভেতরে ঢুকলো। মেরিন চোখ বন্ধ করে শুয়ে আছে। আভাস পেয়ে চোখ মেলল। দেখে নীড়। আবারো চোখ বন্ধ করে নিলো।
.
২দিনপর…
নার্স : ম্যাম…
মেরিন : হামম?
নার্স : আপনার ব্যান্ডেজ পাল্টাতে হবে।
মেরিন : হামম।
নীড় মেরিনকে বসতে সাহায্য করলো। নীড় বেরিয়ে যেতে নিলো।
নার্স : আপনি কোথায় যাচ্ছেন?
নীড় : বাহিরে।
নার্স : আপনি কেনো বাহিরে যাবেন? আপনি হেল্প করবেন।
নীড় : অন্য একজন সিস্টারের হেল্প নিন।
নার্স : আশ্চর্য্য তো! আপনি তো এনার হাজবেন্ড।
নীড় কোনো কথা না বলে বেরিয়ে গেলো। অন্য একজন নার্সকে পাঠালো।
নার্স : আপনার স্বামী অদ্ভূত প্রানি তো। আপনাদের মধ্যে কি মান অভিমান পর্ব চলছে?
মেরিন : আপনি প্রশ্ন না করে নিজের কাজ করুন।
নার্স আর কোনো কথা বারালো না। নিজের কাজ করে বেরিয়ে গেলো।
মেরিন : কিছু তো চলছে নীড়ের মাথায়। চলুক… তার লক্ষ্য যেমন স্থির তেমন আমার লক্ষ্যও স্থির আছে।।
.
রাতে…
এক কাত হয়ে শুয়ে থেকে পিঠটা ব্যথা হয়ে গিয়েছে। ঘুমটাও ভেঙে গিয়েছে। নীড় বসেবসে ঘুমাচ্ছে। মেরিন উঠে বসার চেষ্টা করলো। তখন কারো স্পর্শ পেলো। নীড় ওকে বসতে সাহায্য করলো।
নীড় : ডাক দিলে ছোট হয়ে যেতে না।
মেরিন : কে তুমি? তুমি আমার হত্যার চেষ্টা করেছিলে। ভুলে যাইনি আমি।
নীড় : ভুলে যাওয়ার মতো কাজও নয় এটা। কিন্তু প্রানকে নিয়ে আমরা দুজনই কঠোর। তাই কিচ্ছুটি বলবোনা।
মেরিন : রাজনীতি করছো আমার সাথে?
নীড় : তোমার সাথে প্রেম করবো। রাজনীতি নয়।
মেরিন : দিবাস্বপ্ন দেখছো কি?
নীড় : এখন তো রাত।তাই দিবাস্বপ্ন দেখছিনা। জেগে স্বপ্ন দেখছি।
.
চলবে…
#প্রতিশোধে_প্রনয়
part : 26
writer : Mohona
(do not copy please)
.
নীড় : জেগে স্বপ্ন দেখছি। এন্ড ট্রাস্ট মি… আমি আমার সকল স্বপ্ন পূরন করি।
মেরিন : আমাকেও স্বপ্ন বানিয়ে নিলে নাকি?
নীড় : তুমি তো স্বপ্নই। কখনো ভালো স্বপ্ন আবার কখনো খারাপ স্বপ্ন।
মেরিন : ইটস হাই টাইম নীড়… ডিভোর্সের সময় চলে এসেছে। আগুনে আগুনে দাবানল হয়ে যাবে। শত্রুতা শেষ হবার নয়। কিন্তু একসাথে থেকে শত্রুতা করার চেয়ে দূরে থেকে শত্রুতা করা ভালো।
নীড় : কোনটা ভালো আর কোনটা মন্দ সেটা আমি ডিসাইড করবো যদি আল্লাহ সহায় হয়। তোমাকে বিয়ে করা আমার সিদ্ধান্ত ছিলো। ডিভোর্স দেয়ার হলেও সেটা আমারই সিদ্ধান্ত হবে। তোমার কথার ভিত্তিতে আমি তোমাকে ভালোবাসাও দিবোনা আর ডিভোর্সও দিবোনা।
মেরিন : তোমার চোখে আজকে ঘৃণা নেই।
নীড় : ভালোবাসা আছে কি?
মেরিন : ভালোবাসার ভাষা আমার জানা নেই। তাই বলতে পারলাম না। তবে তোমার চোখের ভাষা ভালোবাসার হতে পারেনা। এটা আমাকে ডিসট্র্যাক্ট করার পরিকল্পনা।
নীড় : হতে পারে। তবে তোমাকে নিজের থেকে আলাদা করার আগে ভালোবাসার ভাষা শিখিয়ে দিবো।
মেরিন হাসলো।
নীড় : আমাকে কিছু বলার নেই?
মেরিন : কোন বিষয়ে?
নীড় : শ্যুট করা নিয়ে।
মেরিন : ইউ আর নট দ্যাট ইমপোরটেন্ট।
নীড় : আই নো। তবুও কিছুই কি বলার নেই? শাউট করলেনা। টন্ট মারলেনা। মেরিন বন্যা খান টাইপ গর্জন করলেনা। শান্ত হয়ে রইলে। কেনো?
মেরিন : নীড়… আমরা শত্রু। আমরা একে অপরের কাছে গুলি খাওয়াই এক্সপেক্ট করি চুমু খাওয়া নয়। তুমি আমাক গোলাপ দিলে অস্বাভাবিক হতো। বরফের কাছ থেকে গরম , আগুনের কাছে থেকে ঠান্ডা এবং শত্রুর কাছ থেকে লাল গোলাপ পাওয়া হলো পৃথিবীর সবচেয়ে অবাস্তব ঘটনা। এমন আশা করা হলো বোকামি। এন্ড ট্রাস্ট মি… আমি বোকা নই।
নীড় : সুরটা ঠান্ডাই লাগছে। প্রেমে পরলে নাকি আমার? ভালোবাসা হোক অথবা ঘৃণা সেটা মন থেকে হওয়া উচিত। তুমি শত্রুতা যথাযোগ্যভাবে পালন করেছো। তাই আমি খুশি। ইমপ্রেসড।
নীড় হাসলো।
মেরিন : পেছন থেকে ছুরি মারবো কিন্তু।
নীড় : ওকে। এটাও চেষ্টা করে দেখো।
.
পরদিন…
শমসের : কেমন লাগছে এখন?
মেরিন : ভালো। পরশু থেকে তোমার মুখ কেমন যেনো লাগছে। কি হয়েছে? প্রান সুস্থ আছে?
শমসের : নীড়ই যে সেই ছেলে আগে বলোনি কেনো?
মেরিন : কোন ছেলে?
শমসের : ইন্ডিয়ার।
মেরিন : ওহ। বলার মতো কোনো কথা ছিলো কি?
শমসের : কিছুই না এটা বলার মতো?
মেরিন : না।
শমসের : এসব ঘটনাও কি তোমার প্ল্যান?
তখন নীড় রুমের বাহিরে এসে পৌছালো। শমসের খানের প্রশ্নটা শুনতে পেলো।
মেরিন : দাদুভাই… আমি একা থাকলে এমন কেনো এরচেয়ে আরো ভয়ংকর পরিকল্পনাও করতাম। কিন্তু সাথে প্রান ছিলো। এমন কিছু ভাবার কল্পনাও আমি করতে পারিনা। ক্যারাটে স্কুলে পৌছানোর কিছুক্ষন পর নীড়ের কল আসে। এরপর অচেনা নাম্বার থেকে কল আসে। বলে যে ক্যারাটে স্কুলে বোম্ব আছে। বিশ্বাস করিনি। কিছুক্ষনপর থেকে বিপ সাউন্ড শুরু হয়ে। আবার কল আসে। বলে দেড়শ ফিটের মধ্যে সব শেষ হয়ে যাবে। চিৎকার করে কথা বলি। সবাই গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে যায়। আমার গাড়ির টায়ার পাংচার করা ছিলো। দৌড়ানো ছারা আমার কোনো উপায় ছিলোনা। নীড় আসে… কি ভেবে কি না ভেবে শ্যুট করে জানিনা।
শমসের : পুলিশকে কিছু বললেনা কেনো?
মেরিন : পুলিশ দিয়ে কি হবে?
নীড় নক করে ভেতরে ঢুকলো।
নীড় : তোমার লাঞ্চ টাইম হয়ে গিয়েছে। লাঞ্চের পরে মেডিসিন আছে।
মেরিন : হামম। দাদুভাই ডিসচার্জ কবে করা হবে? হসপিটালে থাকা আর সম্ভব নয়।
নীড় : আরো দুদিন থাকতে হবে হসপিটালে।
মেরিন : অসম্ভব । দাদুভাই… কালকের মধ্যে ডিসচার্জের ব্যবস্থা করো।
শমসের : কিন্তু দিদিভাই…
মেরিন : বলে দিয়েছি তো… আমি আর কোনো কথা শুনতে চাইনা। প্রানের কাছে যাওয়াটা জরুরী।
শমসের : আচ্ছা আমি কথা বলে নিচ্ছি।
নীড় : দাদুভাই… কথা বলা শেষ।কালই ডিসচার্জ। আমি ওর সাথে মজা করছিলাম কেবল। আর তাছারাও ওর অফিশিয়াল গার্ডিয়ান তো আমি। তাই তোমার কথায় নয়। আমার কথায় কাজ হবে।
.
পরদিন…
প্রান্তিক : না আমি যাবোনা। চাচ্চু চলে আসবে।
নীলিমা : সারপ্রাইজ আছে তো। আর চাচ্চুকে ভয় পেলে হবে? চাচ্চু না তোমাকে কতো ভালোবাসে।
প্রান্তিক : চাচ্চু শ্যুট করেছে মামমামকে। আমাকেও শ্যুট করে দিলে?
নিহাল : চাচ্চুকে কি তুমি শ্যুট করতে দেখেছো? মামমামকে যে স্পাইডারটা কামড় দিয়েছে সেটাকে ভয় দেখানোর জন্যই চাচ্চু গান বের করেছিলো।
প্রান্তিক : না আমি যাবোনা…
নিহাল : মাত্র জ্বর থেকে উঠলো। জোর করতে হবেনা আর।
নীলিমা : ওকে দেখলে ও এমনিতেই ঠিক হয়ে যাবে।
প্রান্তিক : কাকে দেখলে!
নীলিমা : সেটা তো সারপ্রাইজ।
প্রান্তিক : মামমাম আসছে!
নিহাল : ইয়েস…
প্রান্তিক : ইয়ে… মামমাম…
বলেই প্রান্তিক দৌড় দিলো নিচে।
নীলিমা : প্রান আস্তে। দৌড়ায় না। পরে যাবে। অসুস্থ তুমি।
কে শোনে কার কথা? প্রান্তিক তো দৌড়ে নিচে চলে এলো। নিহাল-নীলিমাও এলো। নীড়ের গাড়ি এসে থামলো। নীড়কে দেখে প্রান্তিক নীলিমার পেছনে গিয়ে দারালো। নীড় দৃশ্যটা দেখলো। ও মেরিনের জন্য দরজা খুলে দিলো। মেরিন গাড়ি থেকে নেমে এলো।
প্রান্তিক : মামমাম…
প্রানও মেরিনের দিকে ছুটলো মেরিনও এগিয়ে এলো। হাটুগেরে বসে প্রানকে জরিয়ে ধরলো।
প্রান্তিক : মামমাম…
মেরিন : বাচ্চা…
প্রান্তিক মেরিনের সারামুখে চুমু একে দিলো। মেরিনও ওর কপালে চুমু দিলো।
প্রান্তিক : আমি তোমাকে এই এতোগুলো মিস করেছি।
মেরিন : আমি তারচেয়েও বেশি। কিন্তু এটা বলো তো তোমার মুখ এমন লাগছে কেনো? খাওয়া দাওয়া করোনি ঠিক মতো? অসুস্থ লাগছে কেনো? মামনি… কি হয়েছে?
প্রান্তিক : আমার না জ্বর এসেছিলো। অনেক বেশি।
মেরিন : সে কি? কেউ আমাকে কিছু বলেনি কেনো? নীড়… তুমিও তো বলতে পারতে।
নিহাল : মেরিন… শান্ত হও। ঠিক আছে এখন। আল্লাহর রহমতে এখন ও সুস্থ।
মেরিন প্রানকে কোলে নিয়ে উঠতে নিলে পিঠটা ব্যথা করে উঠলো। নীড় এসে দুজনকে ধরে ফেলল।
নীড় : তুমি কি পাগল?
প্রান্তিক : মামমাম…
প্রান্তিক ভয় পেয়ে মেরিনকে শক্ত করে ধরলো। মেরিন বিষয়টা বুঝতে পারলোনা। নীড় প্রান্তিকের মাথায় হাত রাখতে গিয়েও হাত গুটিয়ে নিয়ে পিছিয়ে গেলো।
নিহাল : প্রান সোনা… মামমামকে স্পাইডার কামড় দেয়ার কারনে মামমাম একটু অসুস্থ। আমার কোলে এসো।
মেরিন : ইটস ওকে বাবা।
নীড় : বাবা…
নীড় ইশারা দিয়ে নিহালকে বলল প্রানকে কোলে নিতে। নিহাল ওকে কোলে নিলো।
নীলিমা : মেরিন… যাও গিয়ে আরাম করো। প্রান একটু আমাদের সাথে থাকুক।
মেরিন : অসুবিধা নেই। ঠিক আছি আমি।
নীড় : মেরিন… ফ্রেশ হতে হবে। হসপিটাল থেকে এসেছো।
মেরিন : আরে হ্যা আমার তো খেয়ালই নেই। প্রানকেও ধরে ফেললাম। মামনি ওকে গোসল করিয়ে দাও।
নীড় মেরিনকে ধরেধরে ঘরে নিয়ে গেলো।
মেরিন : কি হয়েছে নীড়? প্রান তোমাকে দেখে ভয় পাচ্ছে কেনো?
নীড় : তোমাকে শ্যুট করতে দেখে নিয়েছিলো। তারওপর ব্লাস্ট। সব মিলিয়ে অমন প্রভাব ফেলেছে।
মেরিন : হামম।
নীড় : চলো ফ্রেশ হয়ে নিবে চলো।
মেরিন : আমি একা যেতে পারবো।
নীড় : পারবে জানি। কিন্তু আমি হেল্প করবো। তোমার পিঠের ব্যান্ডেজটাও পাল্টাতে হবে। ৬ঘন্টা পরপর পাল্টাতে হবে।
মেরিন : এক্সকিউজ মি… আই ক্যান ম্যানেজ।
নীড় : তুমি ভুলে গেলে আমার প্রিয় কাজ কি?
মেরিনের কপালে ভাঁজ পরলো।
নীড় : মনে করিয়ে দিচ্ছি।
বলেই মেরিনের জামার পেছনের দিকটা ছিরে দিলো। মেরিন দেয়াল পিঠ দিয়ে দারালো।
নীড় : ব্যান্ডেজ পাল্টাতে হবে প্রিয় বেগম।
বলেই মেরিনের কোমড় ধরে নিজের সাথে জরিয়ে নিয়ে সরে এলো।
মেরিন : নীড় ছারো। তুমি কিন্তু বারাবারি করছো।
নীড় : বউয়ের ব্যান্ডেজ পাল্টানো যদি বারাবারি হয় তাহলে করছি।
নীড় মেরিনকে বসালো। ওর ব্যান্ডেজ পাল্টাতে লাগলো। মেরিন কেঁপে উঠলো।
নীড় : দি গ্রেটেস্ট মেরিন বন্যা খানও লজ্জা পায়?
মেরিন উঠে যেতে নিলে নীড় ওকে বসালো। ব্যান্ডেজ পাল্টে দিলো।
.
বিকালে প্রান্তিকের ঘুম ভেঙে গেলো। চোখ মেলেই মেরিনকে দেখতে পেলো পাশে। মেরিনকে দেখেই একটা হাসি দিলো। মেরিন ওর নাকে নাক ঘষে দিলো। প্রান্তিক মেরিনের কোলে মাথা রাখলো।
মেরিন : বাচ্চা… ফ্রেশ হয়ে নাও। নিচে যাবো। সবাই মিলে লুডো খেলবো আর সমুচা খাবো।
প্রান্তিক : না না। নিচে চাচ্চু আছে।
মেরিন : তো কি হয়েছে?
প্রান্তিক : শ্যুট করে দেয় চাচ্চু। আমার চাচ্চুকে খুব ভয় করে।
মেরিন : বোকা নাকি? চাচ্চুকে কেউ ভয় পায়? আর কে বলেছে চাচ্চু আমাকে শ্যুট করেছে? চাচ্চুর কাছে যে গানটা আছে সেটা ইনসেক্টস এন্ড অ্যানিমেলদের জন্য। ক্যারাটে স্কুলে বিশাল বড় একটি স্পাইডার চলে এসেছিলো। জায়ান্ট টাইপ। সেটাই তো আমাদের গাড়ির চাকা পাংচার করে দেয় । তাইতো তোমাকে নিয়ে দৌড়াচ্ছিলাম। কিন্তু স্পাইডারটা লম্বালম্বা পা দিয়ে আমার পিঠে আঘাত করে। চাচ্চু ওটার জন্যই গান বের করে। পেয়ে গিয়ে ওই স্পাইডারের ওখানে ব্লাস্ট করায়। বুম করে শব্দ হয় মনে আছে?
প্রান্তিক : হামম হামম।
মেরিন : সেটা তো চাচ্চুই করিয়েছিলো স্পাইডারটাকে মারার জন্য।
প্রান্তিক : সত্যিসত্যি!
মেরিন : হ্যা… সত্যিসত্যি।
প্রান্তিক : তাহলে কি চাচ্চু সুপারহিরো?
মেরিন : বাবা-চাচ্চুরা না সুপার হিরো হয়। আর তুমি না আমার ব্রেইভ বয়। কথায় কথায় এতো ভয় পেলে হয়? কিছু ঘটলেই ভয় পেয়ে যাও। নট ডান। এতো ভয় পেলে হয়?
প্রান্তিক চুপ করে রইলো।
মেরিন : ক্যারাটে স্কুলে যাচ্ছো। সবাই মিলে ঘুরছি ফিরছি। সবাই তোমার সাপোর্ট হয়ে আছি তবুও ভয় পাচ্ছো। এটা তো শেইম শেইম হয়ে গেলো।
প্রান্তিক : শেইমে শেইম!
মেরিন : হামম। স্ট্রং তো তুমি আছোই। তাই সাহসীও হতে হবে। তাই ভয় পাওয়া যাবেনা।
প্রান্তিক : তোমরা কেউ ভয় পাওনা?
মেরিন : আমি ভয় পাইনা , চাচ্চু ভয় পায়না। বড়বাবা ভয় পায়না। দাদুভাই-দীদুও ভয় পায়না। সিংহ যদি ভয় পেতো তাহলে রাজা হতে পারতো বলো?
প্রান্তিক মাথা নেরে না করলো।
মেরিন : তাহলে কি প্রান আর ভয় পাবে?
প্রান্তিক : না না না।
মেরিন : প্রান কি আর ঘরে বসে থাকবে?
প্রান্তিক : না না না।
মেরিন : তাহলে হোক দৌড় মামমামের সাথে?
প্রান্তিক : চলো…
মেরিন প্রান্তিকে নিয়ে দৌড় লাগালো। মাথা ঘুরে পরে যেতে নিলো। নীড় এবং প্রান্তিক ধরে ফেলল।
প্রান্তিক : মামমাম…
নীড় : ছুটাছুটি কেনো করছো?
প্রান্তিক : তুমি কি অসুস্থ মামমাম? তুমি ঠিক আছো?
মেরিন : হামম।
নীড় ভাবলো যে এখনো প্রান্তিক ভয়ে দৌড় দিবে। কিন্তু ও সেটা করলোনা। নীড় একটু অবাক হলো।
প্রান্তিক : মামমাম… বসো বসো তুমি। আমি আদর করে দিচ্ছি।
নীড় মেরিনকে ধরেধরে বসালো। প্রান্তিকের দিকে তাকিয়ে আছে। প্রান্তিক মেরিনের হাত ধরে রেখেছে।
মেরিন : তোমার মুখ দিয়ে কি কথা বের হয়না?
নীড় : আমাকে বলছো?
মেরিন : লুজার কোথাকার। চলো বাচ্চা… নিচে চলো।
প্রান্তিক : চলো।
নীড় : কোথাও যাবেনা। এখন ঘরে যাবে। লাভ… মামমাম একটু অসুস্থ। তাই মামমামক রেস্টে থাকতে হবে। আমার কথা তো শুনবেনা তাই তোমাকেই কিছু করতে হবে।
প্রান্তিক : মামমাম অসুস্থ চাচ্চু!
নীড় : হামম। স্পাইডারটা কামড় দিয়েছিলো না !
প্রান্তিক : হ্যা। মামমাম চলো তো চলো। তুমি রেস্ট করবে।
প্রান্তিক মেরিনকে টেনে নিয়ে যেতে লাগলো। টেনে ঘরে নিয়ে গেলো। বিছানায় বসালো।
নীড় : ঘুম পারিয়ে রাখতে হবে। ঘুম পারানি গান গাইতে হবে অথবা গল্প শোনাতে হবে।
প্রান্তিক : আমি তো ঘুম পারানি গানও গাইতে পারিনা আর গল্পও শোনাতে পারিনা। একটু একটু পারি। সেটাই বলে দিবো। শুয়ে পরো তো মামমাম শুয়ে পরো।
মেরিন : বসে থাকি বাচ্চা।
নীড় : লাভ এই মেডিসিনগুলোও খাওয়াতে হবে। আমি খাইয়ে দিবো নাকি তুমি দিবে?
প্রান্তিক : আমিই দিবো। দাও তো দাও। আমি ব্রেইভ গার্ল তাই আমিই খাইয়ে দিবো।
.
রাতে ১টা…
প্রান্তিক নিহাল-নীলিমার কাছে ঘুমিয়েছে।
নীড় : মেরিন… ব্যান্ডেজটা পাল্টানোর সময় হয়ে গিয়েছে। আশা করি তৃতীয়বারের মতো না করার বোকামি করবেনা।
মেরিন আর কিছু বললনা। ও ব্যান্ডেজটা পাল্টে দিলো। মেরিন শুয়ে পরলো। নীড় ওর পাশে শুয়ে ওকে নিজের সাথে মিশিয়ে নিলো।
মেরিন : কি করছো কি? ছারো আমাকে… ছারো…
নীড় : চুপটি করে থাকো। যেটা করছো সেটা করলে তুমি পিঠেই আঘাত পাবে। ছুটতে পারবেনা।
মেরিন : তুমি কিন্তু নিজের লিমিটক্রস করছো।
নীড় : আমি লিমিট সেট করি।
নীড় মেরিনের মাথায় চুমু দিলো।
নীড় : মেরিন… মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছি। ঘুম দাও…
মেরিন : আমি তোমার কাজকর্ম বুঝতে পারছিনা।
নীড় : বুঝতে হবেনা। চুপটি করে থাকো। ঘুম দাও।
নীড় ওকে আরো শক্ত করে জরিয়ে ধরলো।
মেরিন : নীড় আমি পিঠে ব্যথা পাচ্ছি।
নীড় নিজের বাহুর বাধন হালকা করলো।
.
২দিনপর…
মেরিন : হ্যালো জন… কাজ কতোদূর? নাকি আমি অসুস্থ হয়ে পরেছিলাম বলে কাজটাই বন্ধ করে রেখেছো? ভেবেছো আমি মরে যাবো।
জন : ম্যাম… আপনিও না কি সব বলছেন। ম্যাম চৌধুরী এবং খানদের কমন শত্রুদের তালিকা আমার কাছে চলে এসেছে।
মেরিন : ফিঙ্গারপ্রিন্ট মিলিয়েছো?
জন : এখানেই তো সমস্যা ম্যাম। তাদের ফিঙ্গারপ্রিন্ট কিভাবে জোগার করবো? তারা কোথাও শিফ্ট হয়েছে।কোথায় শিফ্ট হয়েছে।
মেরিন : কেউ-ই কি নেই দেশে?
জন : যারা দেশেই ছিলো তাদেরকে হত্যা করা হয়েছে।
মেরিন : কে বা কারা হত্যা করেছে?
জন : সেটা জানিনা। কিন্তু হত্যার ধরন একই রকম। সম্ভবত একজনই করেছে।
মেরিন : সম্ভবত নয়। একজনই করেছে হত্যা।
জন : কার দিকে সন্দেহ ম্যাম?
মেরিন : দুজনের ওপর সন্দেহ আছে আমার।একজন আমার কাছে সম্পুর্নই অচেনা।নাম টাম কিছুই আন্দাজ করতে পারছিনা। কিন্তু অন্যজন হলো প্রনয় আহমেদ চৌধুরী।
জন : প্রনয় আহমেদ চৌধুরী!
মেরিন : ইয়েস। যে প্রনয় আহমেদ চৌধুরী হয়ে ছিলো সে তো অন্য কেউ। তারমানে আসল প্রনয় আহমেদ চৌধুরী অন্য কোথাও ছিলো বা আছে। যদি সে বেঁচে থাকে তাহলে সেই খুনী।
জন : আর যদি সে বেঁচে না থাকে?
মেরিন : না থাকলে সম্পুর্ন অচেনা ব্যক্তিই খুনী। যাইহোক , এনাকে পরে খোজা যাবে। ৫জনের ফিঙ্গারপ্রিন্ট পাওয়া জরুরী। জনের থেকে কারোটাই কি পাওনি?
জন : একজন হলো আপনার কাজিন সিমলা। মানে আপনার খালাতো বোন।
মেরিন : ও এই ঘরে কি করছিলো? আচ্ছা আর কারোটা পেলে?
জন : নীলা ম্যাম এবং প্রনয় আহমেদ চৌধুরীর কমন ফ্রেন্ড নাবিলের ফিঙ্গারপ্রিন্ট পাওয়া গিয়েছে।
মেরিন : তুলে নাও দুজনকে। থার্ড ডিগ্রি দাও। জিজ্ঞাসাবাদ আমি করবো।
জন : ইয়েস ম্যাম।
মেরিন : রাখছি।
বলেই মেরিন রেখে দিলো। মোবাইলটা হাতে নিয়ে ভাবতে ভাবতে এগিয়ে যাচ্ছে তখন নীড়ের বুকের সাথে ধাক্কা খেলো। ও নীড়কে দেখতে পায়নি।
মেরিন : আমি নাহয় না দেখে হাটছিলাম। তুমি তো দেখেই আসছিলে। সরে যেতে।
নীড় : কেনো সরে যাবো? আমি তো আমার সুন্দরী বউটার সাথে বারেবারে সংঘর্ষ চাই।
মেরিন : পথ ছারো। অফিসে যাবো।
নীড় : তোমাকে এই বাসার বাহিরে পা রাখতে দিবোনা আর তুমি বলছো অফিসে যাবে?
মেরিন : বন্দি করে রাখতে চাইছো? হামম?
নীড় : একদম না। তুমি সুস্থ হও এরপর অফিস যাবে। এখন না। আজকে তো একদমই না।
মেরিন : জরুরী কাজ আছে তাই আমি যাবোই।
মেরিন বেরিয়ে সিড়ি পর্যন্ত চলে গেলো। নীড়ও গেলো। মেরিন কাধে তুলে ঘরে নিয়ে এলো। নীলিমা নিচ থেকে এই দৃশ্যটা দেখলো।
নীড় মেরিনকে বিছানায় রাখলো।
নীড় : জান… যা বলবো একবারই বলবো। মিনিমাম আরো তিনদিন বাসায় আরাম করবে। এর আগে বাসা থেকে বের হওয়ার কথা মাথাতেও এনোনা ডার্লিং। শেকল পরিয়ে রেখে দিবো। বেডরুম টু ওয়াশরুম ভিন্ন কোথাও যেতে পারবেনা। যা কাজ আছে তোমার প্রিয় জনকে দিয়ে করাও।
.
লিও : বেঁচে গেলো। নীড়-মেরিন দুজনই বেঁচে গেলো। বোম্বা ব্লাস্টের হাত থেকে নীড় বেঁচে গেলো। আর নীড়ের হাতে গুলি খাওয়ার পরও মেরিন বেঁচে গেলো। কিচ্ছু ভালো লাগছেনা আমার। ওদিকে নীড়ের আচরণও ভালো লাগছেনা। ও দুর্বল হচ্ছে মেরিনের ওপর। ভালোবেসে ফেললে? না না না… আমার সব পরিকল্পনা ব্যর্থ হচ্ছে ।কি করবো আমি? নীড়ের সফ্ট কর্নার তৈরি হচ্ছে। মেরিনের দিক থেকেও তেমনটা হলে? মেরিন নীড়ের প্রতি দুর্বল না হলে গুলি খেয়েও কেনো চুপ করে আছে? লেপার্ড… লেপার্ড…
লেপার্ড : ইয়েস বস?
লিও : খান বাড়িতে ঢোকার ব্যবস্থা করো। ওই শমসের খানের পেটের ভেতর থেকে কথা বের করতে হবে।
লেপার্ড : ওই বুড়ো তো সাংঘাতিক। যদিই কিছু না বলে?
লিও : সময়ের বেশি সময় ধরে বুড়োটা বেঁচে আছে। কথা বের করলে ভালো। না হয় মেরে দিবো। একেবারে জানে মেরে দিবো। ব্যবস্থা করো।
লেপার্ড : ওই বাড়িতে ঢোকা সহজ হবেনা মেরিন বন্যা খান কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা করে রেখেছে। ওই খান প্রোপার্টির দুই কিলোমিটারের মধ্যে গেলেও নটিফিকেশন চলে যাবে মেরিন বন্যা খানের কাছে।
লিও : হামম বুঝতে পারলাম। ভয় আছে মেরিন বন্যা খানের নিজের দাদুভাইকে নিয়ে। দাদুভাইয়েরও ভয় আছে মেরিনকে নিয়ে। বের করে আনবো শমসের খানকে।
লেপার্ড : কিভাবে?
লিও হাসলো।
.
চলবে…