প্রতিশোধে প্রনয় পর্ব-৩৩+৩৪+৩৫

0
455

#প্রতিশোধে_প্রনয়
part : 33
writer : Mohona
(do not copy please)

.

বোরকা পরে দরজায় নক করছে। সখিনা বিবি বলে ডাকছে তাও মহিলা কন্ঠ করো।
মেরিন মনেমনে : কে ডাকছে সখিনা বিবি বলে? লিপিদের কারো কন্ঠ তো নয়।
মেরিন গান লোড করে কোমড়ে গুজে রাখলো।
টাইগার মনেমনে : মনির বোরকা পরে এলো। এসে ওই ঘরে কেনো নক করছে।
মনির : ও সখিনা বিবি…
মেরিন মুখ ঢেকে দরজা খুলল । সালাম দিলো। মনির সালাম নিলো।
মেরিন : আপনি কে?
মনির : আমি তোমার মাদরাসার খালামনি। মনিকা।
মেরিন মনেমনে : মাদরাসার খালামনি আবার কে? আমি তো মাদরাসায় যাই-ইনি।
মনির : কি হলো? চুপ করে রইলে কেনো?
মেরিন : আমার মাদরাসায় তো কোনো খালামনির নাম মনিকা নয়।
মনির : আমি নতুন এসেছি। ইমাম স্যার আমাকে পাঠিয়েছেন তোমার বিষয়ে তথ্য নিতে।
মেরিন মনেমনে : এটা কে হতে পারে?গোয়েন্দা কেউ? দুশমন পার্টি? লিও? না না না লিও নয়।
মনির : ভেতরে আসতে বলবেনা সখিনা বিবি?
মেরিন : আসুন…
মনেমনে : আয় আয়… দেখ তোর কি করি।
মনির ভেতরে ঢুকলো। মেরিন টাইগারকে দেখে ফেলল।
মেরিন মনেমনে : ওই ঘোষের বউ ওখানে লুকিয়ে আছে কেনো? ওদের প্ল্যান?
মনির : ঘরের মধ্যেও মুখ ঢেকে রাখো?
মেরিন : দরজা খুলতে গেলাম বলে মুখ ঢেকেছি। যদি কেউ বাহিরে থাকে তাই মুখ ঢেকেই খুলেছি। অন্যান্য ভাড়াটিয়ারা আছে। এই বাড়ির বাড়িওয়ালা চাচা আছেন। মনির চাচা।
মনির : সে তো বাবা সমতুল্য।চাচা। সে খুব ভালো মানুষ।
মেরিন মনেমনে : মনিরের এতো তারিফ করছে কেনো? মনির লোকটা তো অতোটাও ফেমাস না।
মেরিন শরবত বানিয়ে সামনে ধরলো। মনির শরবতের গ্লাস নেয়ার বাহানায় মেরিনের হাত স্পর্শ করলো।
মেরিন মনেমনে : আহা আহা আহা… এটা কোনো মেয়ের স্পর্শ তো নয়। ছেলের স্পর্শ। মনিরের এতো তারিফ করছে। মনির নয়তো?
মনির কিছু কথাবার্তা বলে চলে গেলো। মেরিনের মুখ দেখতে পারলোনা। ভেতরে ঢুকে দরজা লাগিয়ে দিলো।
টাইগার মনেমনে : কথা তো নরমালই ছিলো। সখিনা বিবি তো স্বাভাবিকভাবেই কথা বলল। ওই মনির বরং গোয়েন্দা টাইপ কথা বলছিলো। দেখিতো কি করে।
মনির : অসহ্যকর… দেখতে পারলাম না সখিনা বিবির চেহারা। হয়তো অনেক সুন্দর। ইশ… কন্ঠটা কি সুন্দর! ওকে বিয়ে করতে পারতাম।
টাইগার মনেমনে : আল্লাহ… কি অবস্থা? এই লোকটা তো সাংঘাতিক। তিনটা বউ তারপরও বিয়ে করতে চায়। কথা বলার ছলে বারবার ওই সখিনা বিবির শরীরে হাত দিচ্ছিলো। মেরিন হলে অ্যালাউ করতোনা। আর এটাও বুঝে যেতো যে এটা একটা ছেলে। লাড্ডু নিয়ে যাই। দেখি ঘরে কিছু দেখতে পাই কিনা।
টাইগার দরজায় নক করলো। মেরিন দরজা খুলল।
টাইগার : আদাব সখিনা বিবি।
মেরিন : আদাব।
টাইগার : আমার নাতি পরীক্ষায় ভালো ফল করেছে। তাই লাড্ডু দিচ্ছি সবাইকে। লাড্ডু আমার ঘরেও নেইনি। তুমি নিলে খুব খুশি হবো মা। আমার নাতির জন্য আশীর্বাদ করো।
মেরিন : আসুন কাকিমা ভেতরে আসুন। না এলে কিন্তু আমার মন খারাপ হবে।
টাইগার মনেমনে : আমিও তো এটাই চাই।
টাইগার ভেতরে ঢুকলো। মেরিন শরবত বানাতে গেলো , ফল কাটতে লাগলো। তখন টাইগার সারাঘরে চোখ বুলিয়ে নিলো। মেরিন সেটা লক্ষ্য করলো।
মেরিন মনেমনে : মামনি… আমি জানতাম যে তুমি গোয়েন্দাগিরি করতে এসেছো।
মেরিন দরজাটা লাগিয়ে দিলো। মুখটা খুলল।
মেরিন : কাকিমা খেয়ে নিন।
টাইগার : বউমা… ঘরটা কি সুন্দর পরিষ্কার করে রেখেছো। গুছিয়ে রেখেছো।
মেরিন : পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ইমানের অঙ্গ কাকিমা।
টাইগার শরবত ফল খেয়ে বেরিয়ে গেলো। মেরিন দরজা লাগিয়ে দিলো। প্রতিটি লাড্ডু ভেঙে দেখলো যে কোনো চিপ আছে কিনা।
মেরিন : কোন পক্ষ তুমি সেটাই বুঝতে পারছিনা। আজকে তৃতীয় দিন। এই দুদিনে অনেক কিছু হতে পারে।

.

নিহাল : আরে বাবা বললাম তো ওরা বলেছে যে ওরা এখানে নেই। চট্টগ্রাম আছে।
নীলিমা : আমি আমার ছেলেকে চিনি। প্রানকে ফেলে ও যাবেনা। এখানের কোথায় আছে জানার চেষ্টা করো না। আমি প্রানকে নিয়ে ভালো স্বপ্ন দেখিনি। নীড় থাকলে ভরসা পেতাম। ও আশেপাশে কি না জানোনা।
নিহাল : তুমিই জিজ্ঞেস করো তোমার ছেলেকে। আমাকে তো বলছে না।
নীলিমা কান্না করতে লাগলো।
নিহাল : উফফ… আবার কাঁদছো কেনো?
নীলিমা : তুমি কি বুঝবে মায়ের মনের খবর?

.

■ : আমরা এখানে চলে তো এলাম। কিন্তু কি করবে? কিভাবে করবে?
□ : প্রানকে তুলে নিবো। কেন্দ্রবিন্দু ও। আল্টিমেটলি আমার জয় হবে।
■ : কাজটা কি সহজ হবে?
□ : কোনো কিছুই সহজ হয়না। আর সহজ পথে চলে যেটা পাওয়া যায় সেটা মূল্যবান হয়না। মূল্যহীন হয়।
■ : এতো দামি হোটেল রুম নেয়ার কি প্রয়োজন ছিলো?
□ : তো কি কোনো চিপ জায়গা নিতাম?
■ : নিরাপত্তাও তো বেশি ছিলো। আইকার্ড দেখাতে হয়েছে ।
□ : ডুপ্লিকেট বানানো হয়েছে তো।

.

নীড় : এই রাত করে কেনো গোসল করবে?
মেরিন : এসি লাগিয়ে দাও।
নীড় : কিসের মধ্যে কি? বললাম গোসলের কথা বলছো এসির কথা।
মেরিন : আজকে কি গরম পরেছে দেখেছো? জান বেরিয়ে যাচ্ছে।
নীড় : আসলেই অনেক গরম। তবে বিপদ তো আমার বেশি। আমার বউটা হট। তাহলে ভাবো আমার কথা।
মেরিন : ইয়াক। এই টাইপের ইয়াক টাইপ ডাউনমার্কেট পিকআপ লাইন কোনো কলেজের স্টুডেন্টকে গিয়ে শোনাও। আমার চেয়ে দূরে থাকো।
মেরিন ওয়াশরুমে গেলো।নীড় বসেবসে প্রান্তিকের মাইক্রোচিপের সাহায্যে ওই জায়গার কথা শোনার চেষ্টা করছে। হাচির শব্দ পেয়ে চোখটা ওই দিকে গেলো।
নীড় : কি দরকার ছিলো গোসল করার? গরম ঠান্ডা লেগে যাবে তো।
মেরিন : তোমার অতো চিন্তা করতে হবেনা। কিছু শুনতে পেলে?
নীড় : তেমন কোনো গুরুত্বপূর্ন কিছুনা। শোনো , কালকে আর বাসায় থাকতে হবেনা। বের হবে আমার সাথে।
মেরিন : আমাকে মেরে দিবে অমন কলিজা কারো নেই।
নীড় : রিস্ক থাকুক না থাকুক। আমি তোমাকে একা রেখে যাবোনা।
মেরিন : এতো দরদ আমি কোথায় রাখবো?
নীড় : নিজের কাছেই রাখো তবে একটা কথা মনেরেখো , তোমার বিপদের কারনও কেবল আর কেবল আমি হবো। তোমার ওপর কেবল আমার অধিকার।
মেরিন : কিনে নিয়েছো আমাকে?
নীড় : ভালোবাসি তোমাকে। কিন্তু আফসোস… তুমি আমাকেও চাইছোনা আমার ভালোবাসাকেও চাইছোনা।
মেরিন : আমি ঘৃণায় তুষ্ট হওয়া মানুষ। ভালোবাসায় আমার পুষাবেনা।
নীড় মেরিনের চোখের দিকে তাকিয়ে আছে।
মেরিন : এখন কি আমার চোখের তারিফ করা হবে?
নীড় : আহা… তোমার নিচের ঠোঁটের ঠিক মাঝখানের তিলটার তারিফ করবো। তবো ওটা গভীরভাবে দেখতে গেলে দুর্ঘটনা ঘটে যাবে। বসো মাথা মুছে দিচ্ছি।
মেরিন : আমার হাত আছে।
নীড় মেরিনকে বিছানায় বসালো।
নীড় : সজনী তুমি যে আমার কতো প্রিয়া সেটা তোমাকে কিভাবে বোঝাবো? চুপটি করে বসে থাকো।

.

লিও : তুমি নিশ্চিত?
টাইগার : ইয়েস বস। ওর চেহারা আমি নিবিরভাবে পর্যবেক্ষন করেছি।
লিও : হামম। তবে এটা বুঝতে পারছিনা যে মনির মেয়ে সেজেই এসেছিলো। কিন্তু ওর সামনে মুখ খুলেনি তোমার সামনে কেনো খুলল?
টাইগার : বস… মনির মনিকা সেজে এসেছিলো। চিনতে পারেনি। সেটা ভেবেই হয়তো এমনটা হতে পারে। মানে সম্ভবত।
লিও : যুক্তি আছে তোমার কথায়। তবুও নজর রেখে যাবে।
টাইগার : সেটাতো অবশ্যই বস।
লিও : ২দিন… যা করার এই দুদিনে করতে হবে। শোনো… রয়্যাল হোটেলে দুজন চেকইন করেছে। খোজ নাও যে ওরা নীড়-মেরিন কিনা।
টাইগার : ওকে স্যার। এখনই বের হচ্ছি।
লিও : গুড ডিসিশন।
টাইগার বেরিয়ে গেলো।
লিও : টাইগার নিজের মতো করে ইনভেস্টিগেট করেছে। আমিও করবো। আজই করবো। কিন্তু ঘরটাতে যাবো কিভাবে? গভীর রাত এখন। কালকে দুপুরে প্রানকে তুলতে হবে।

২ঘন্টা পর টাইগার হোটেলের তথ্য নিয়ে ফিরে এলো। এসে জানালো যে দুজনকে ও চিনেনা।

.

পরদিন…
নীড়ের ঘুম ভাঙলো পানির ছিটাতে। চোখ মেলে দেখে লালপরী। লালরঙের সুতি কাপড় পরেছে মেরিন। মাথায় তোয়ালে পেচানো।
নীড় : খুন করতে ইচ্ছা হলে মাথা বরাবর গুলি করলেই তো পারো।
মেরিন : ঘু্মন্ত ব্যক্তির ওপর আক্রমন আমি করিনা। কাওয়ার্ড আমি নই।
নীড় উঠে দারালো ঠিক মেরিনের পেছনে। ওর মাথা থেকে তোয়ালে খুলে ফেলল। ওর চুলে মুখ ডুবালো।
মেরিন : নীড়… লিভ…
নীড় বেশ একটা ঘোরের মধ্যে আছে। এই ঘোর থেকে ও বের হতে চাইছেনা।
মেরিন : ননীড় তুমি কিন্তু লিমিট ক্রস করছো।
নীড় : আমি লিমিট সেট করি।
বলেই মেরিনকে কোলে তুলে নিলো।
মেরিন : নীড় নামাও বলছি। নামাও…
নীড় ওকে বসিয়ে ওর চুল মুছে দিতে লাগলো। ওর কপালে ভাঁজ পরলো।
নীড় : এমন রোম্যান্স আমি করিনা। তবে সারপ্রাইজ অবশ্যই দিবো জান।
বলেই ওর কানে আলতো কামড় দিলো। এরপর দুজন বের হলো।

.

প্রান্তিক : ধ্যাত…. ভালোই লাগছেনা। মামমামের কথা , চাচ্চুর কথা ভীষন করে মনে পরছে।
জন : তাহলে কি আসতে বলবো ম্যামকে নাকি যাবে তুমি ঢাকা?
প্রান্তিক : যাবোনা। মামমামকে যদি এখনই দেখা যেতো তাহলে কতো ভালো হতো!
পিটার : শুধু কি মামমামের কথা মনে পরছে? চাচ্চুর কথা মনে পরছেনা?
প্রান্তিক : দুজনের কথাই মনে পরছে।
পিটার : তাহল চোখ বন্ধ করে ৩০ থেকে ১ পর্যন্ত কাউন্ট করো। চোখে মেলে দেখবে যে মামমাম এবং চাচ্চু চোখের সামনে।
প্রান্তিক : সত্যি!
জন-পিটার : সত্যি সত্যি সত্যি।
প্রান্তিক : আমি এক্ষনি করছি।
প্রান্তিক চোখ বন্ধ করলো।
লিও ; প্রান চোখ বন্ধ করলো কেনো? ভালোই হয়েছে । এই অবস্থায় ওদের দুজনকে আঘাত করে দিবো। ছেলেরা…
ওর দুজন লোক বাঁশিতে ফু দিলো তাও জন-পিটারকে নিশানা করে। বাঁশিতে থাকা ছোট্ট ইনজেকশন ২টা গিয়ে লাগলো জন-পিটারের ঘাড়ে। এতোটাই শক্তিশালী ছিলো যে ওরা পেছনে ঘুরতে ঘুরতে জ্ঞান হারিয়ে ফেলল। লিও রবীন্দ্র ঘোষ সেজেই এখানে এসেছে। দ্রুত গিয়ে প্রান্তিকের নাকের সামনে রুমাল ধরলো। ও জ্ঞান হারালো। ওকে কোলে তুলে নিলো।
লিও : প্রান এখন আমার।
নীড়-মেরিন : প্রান…
লিও পেছনে ঘুরলো। দেখে লালশাড়ি পরে মেরিন এবং ফরম্যাল পোশাকে নীড় দারিয়ে আছে। ছুটে আসছে ওরা। লিও দৌড় দিলো। ওপর দিয়ে হেলিকপ্টার উড়ে এলো।লিও কিছুটা দূরে যেতেই হেলিকপ্টার ওর মাথার ওপর ঘুরঘুর করতে লাগলো। ওপর থেকে রোপ ল্যাডার ফেলে দিলো।
লিও : নীড়-মেরিন অনেক পেছনে আছে। দ্রুত উঠে যেতে হবে।
লিও প্রানকে কাধে ফেলে ওপরে উঠছে। নীড় নিজের বিএমডব্লিউটা সর্বোচ্চ বেগে এসেছে। কিভাবে কোন পথ দিয়ে আসছে সেটা নীড় জানেনা। মেরিনের দুই হাতে দুইটা রিভলবার। গাড়ির শব্দে লিও পেছনে ঘুরলো। মেরিন গুলি করলো লিওর দিকে কিন্তু সাবধানে। কারন প্রান্তিক আছে ওর কোলে। লিও বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট পরাতে কাজ হলোনা। হেলিকপ্টারের ওপরে বসা একজন মেরিনের দিকে গুলি করলো। মেরিন নিচু হয়ে গেলো। এরপর ধাধা করে ওপরের জনকে গুলি করে দিলো। সে মুখ থুবরে নিচে মারলো।
নীড় : নো মার্সি…
মেরিন : প্রান আছে ওর কোলে। লেগে যাবে।
নীড় : আই নো ইউর এইম। সো ফোকাস।
মেরিন : আরে বুলেটপ্রুফ পরে আছে সম্ভবত। পায়ে করলে প্রান নিচে পরতে পারে। একটু ওপরে উঠে আছে।
নীড় : কিচ্ছু হবেনা প্রানের। ট্রাস্ট মি… শ্যুট হিম।
মেরিন : টাইমিং সামলে নিও।
নীড় : আই উইল। বাট জান… কি লাগছো। লালশাড়িতে পিস্তল হাতে।
মেরিন : শাট আপ।
মেরিন লিওর পায়ে গুলি করলো। বেসামাল হয়ে গেলো তবুও প্রান্তিককে ছারলোনা।
লিও : টাইগার… হেলিকপ্টার মুভ করাও।
টাইগার : বাট স্যার… এটা রিস্কি। পরে যাবেন তো।
লিও : যেটা বলেছি করো।
টাইগার : ওকে।
নীড় গাড়ি নিয়ে অনেক কাছে চলে এসেছে। মেরিন লিওর দুই হাতে দুইটা গুলি করে দিলো। প্রান্তিক ওর কাছ থেকে পরে গেলো। নীড় হেলিকপ্টার পর্যন্ত পৌছে গিয়েছে। মেরিন প্রান্তিককে নিয়ে নিলো। লিও নিচে পরে গেলো।
মেরিন : নীড় ক্যাচ হিম।
নীড়ের গাড়ির বেগ বেশি থাকাতে লিওকে ক্রস করে সামনে চলে গিয়েছে। তাই গাড়িটা পুরো ১৮০° ঘুরিয়ে নিলো। ততোক্ষনে ২-৩টা বাইক চলে এসেছে। লিওকে তুলে নিয়েছে। নীড় ওদেরকে ফলো করছে। এক হাত দিয়ে ড্রাইভ করছে অন্য হাত দিয়ে শ্যুট করছে।
নীড় : নিচু হয়ে থাকো প্রানকে নিয়ে।
মেরিন প্রানকে নিজের পায়ের ওপর বসানোর মতো রেখে মুখটা হাটুর সাথে হেলান দিয়ে রেখে শ্যুট করছে।
নীড় : আরে তোমার অসুবিধা হবে। ওভাবে শ্যুট করতে হবেনা।
মেরিন : নিজের কাজ করো।
ওরা দুজন অনেক চেষ্টা করলো কিন্তু লিওকে ধরতে ব্যর্থ হলো।
নীড় : ড্যাম ইট।
মেরিন : ঘোষই লিও।
নীড় : হামম।
মেরিন মনেমনে : লিও ওই মনির হোসেনের বাড়িতে ছিলো। বাই চান্স যদি ডিএনএ স্যাম্পল পাওয়া যায় তাহলে তো হলোই।
নীড় : প্রানের কি খবর?
মেরিন : ভালোই। তবে হসপিটালে নিলে ভালো হয়। এক কাজ করো ওকে নিয়ে হসপিটালে যাও। আমি আসছি।
নীড় : তুমি যাবেনা?
মেরিন : আমিও যাবো। তবে জরুরী কাজ আছে।
নীড় : কিন্তু…
মেরিন : প্লিজ নীড় বোঝার চেষ্টা করো। ওকে হসপিটালে নিয়ে যাওয়া জরুরী। গাড়ি থামাও।
নীড় গাড়ি থামালো। চলে গেলো। মেরিন গাড়ি ঠিক করে পৌছালো মনির হোসেনের বাসায়। মেরিনকে এভাবে দেখে লিপি , হেলেনা এবং রোজিনা তো অবাক হয়ে গেলো।
লিপি : সখিনা বিবি তুমি এই রূপে!
মেরিন কোনো কথা না বলে লিওদের ঘরের দিকে গেলো। দেখে দরজায় তালা ঝুলছে। মেরিন গুলি করলো তালা বরাবর। ওরা ৩জন তো ভয় পেয়ে গেলো। মনির হোসেন ছুটে এলো ঘর থেকে।
মনির : কি হলো?
লিপি : সখিনা বিবি বোরকা ছারা । হাতে পিস্তল। গুলি করেছে তালা বরাবর।
মনির এগিয়ে গেলো। লালশাড়ি , লালচুরি , লাল টিপ , লাল লিপস্টিক। চুলগুলো খোলা। এক হাতে পিস্তল। আরো একটা পিস্তল কোমড়ে গোজা। মনির হা করে দেখছে।
মনির : সখিনা বিবি এতো সু্ন্দর!
মেরিন : এই ঘরের ঘোষেরা এখানে তালা গিয়েছে নাকি আপনি দিয়েছেন?
মনির হা করে দেখছে।
মেরিন : কি বলছি শুনতে পাননি?
মনির : সখিনা তুমি এতো সুন্দর! বউ হবা আমার?
মেরিন ওর কলার ধরে পিস্তল মাথায় ঠেকালো।
মেরিন : মেরিন… মেরিন বন্যা খান আমি। এই দৃষ্টিতে তাকালে দুই চোখ বরাবর গুলি করবো। জিভ টেনে হাতে পেচিয়ে দিবো। যেটা বলছি সেটার উত্তর দাও।
লিপি : কি করছো কি তুমি? ছারো ওনাকে।
মেরিন : চুপ। শ্যুট করে দিবো।

.

নীড় : কিছুতো আছে। মেরিন কোথায় গেলো? কোথায় যেতে পারে? বাবা…
নিহাল : প্রান কেমন আছে?জ্ঞান ফিরেছে?
নীড় : ভালো আছে। না জ্ঞান ফিরেনি। থাকো তুমি ওর কাছে। রকি ওরা আছে। আমি গেলাম।
নিহাল : কোথায় যাচ্ছো? মেরিন কোথায়?
নীড় : আছে। যেতে হবে আমাকে।
নীড় বেরিয়ে গেলো। নিহাল প্রান্তিকের পাশে বসলো।
নিহাল : এতোটুকু প্রান নিয়ে কি সব ঘটছে। আল্লাহ রহম করো বাচ্চাটার ওপর।

☆ : ঠিক জানতাম যে এই মেরিন এখানে এসেছে। কিন্তু এমন জায়গাতে যে আসবে ভাবতেও পারিনি। ওখানে এমন অবস্থা দেখে ঠিক আন্দাজ করেছিলাম যে ওখানে নীড়-মেরিন আছে। ফলো করে চলে এসেছি। এখন এখানে নীড় নেই মেরিন। কে বাঁচাবে তোমাকে?
মেরিন পাগলের মতো খুজছে পুরো ঘরে। দেখলো এক জায়গায় একটি সিগারেটের অংশ পরে আছে। মেরিন হাসলো।

.

চলবে…

#প্রতিশোধে_প্রনয়
part : 34
writer : Mohona
(do not copy please)

.

মেরিন হাসলো।
মেরিন : সিগারেট। দুজন ছিলো এই ঘরে। লিও এবং আরো একজন। কােনো একজন তো এই সিগারেটটা পান করেছে। হেউ ইউ মনির হোসেন এখানে এসো।
মনির : আমি?
মেরিন : হ্যা।
মনির এগিয়ে এলো।
মেরিন : টুইজার আছে?
মনির : অ্যা… কি?
মেরিন : ডিজগাস্টিং।
মেরিন ঘরে গিয়ে ব্যাগটা নিয়ে এলো। সিগারেটটা তুলে নিয়ে ছোট্ট একটি বক্সে রাখলো।
হেলেনা : বরকত মিয়া তোমাকে এভাবে দেখলে হার্টফেল করে মরে যাবে।
মেরিন : কে বরকত? ও নীড় আহমেদ চৌধুরী বর্ষন।
☆: এবার তোমার খেল খতম।
সে ছুরি বের করলো।
☆ : তোমার হৃদয় বরাবর লাগাবো মেরিন বন্যা খান। এই ছুড়ির আঘাতে না মরলেও ছুড়িতে লাগানো বিষে অবশ্যই মরবে।
মেরিন কথা বলছে। সে ছুড়িটা ছুরে মারলো। মেরিন একটু ঘুরে গেলো। ছুড়িটা গিয়ে লাগলো মেরিনের বাম হাতে।
মেরিন : আহ…
সে দ্রুত বেরিয়ে গেলো। নীড়ও এলো । কাউকে ছুটে যেতে দেখলো। ও নিজের তাড়ায় ছিলো বলে তার দিকে বেশি খেয়াল দিলোনা। ভেতরে ঢুকলো।
নীড় : মেরিন…
মেরিন ছুড়িটা বের করলো। চোখে ঝাপসা দেখছে। সাধারন একটু ক্ষতে এমন হওয়ার কারন খুজে পায়না।
নীড় : এতো সাহস? কার সাহস হয়েছে আমার মেরিনকে ছুড়ি মারার? শেষ করে দিবো সকলকে।
মেরিন : ননীড় ওরা কিছু কর…
মেরিন পরে গেলো। জ্ঞান হারায়নি তবে দারিয়ে থাকা সম্ভব হলোনা।
নীড় : মেরিন… মেরিন…
নীড় ছুড়িটা নাকের সামনে নিয়ে ঘ্রাণ নিলো।
নীড় : ড্যাম ইট।
নীড় ওকে কোলে তুলে নিলো।
মেরিন : পপার্স নীড়…
নীড় : পার্সটা তুলে দিন তো।
পার্সটা নিয়ে নীড় আর দেরি করলো না। গাড়িতে বসিয়ে ছুটলো হসপিটালের দিকে।
নীড় : মেরিন… চোখ খোলা রাখো… চোখ বন্ধ করবেনা। প্লিজ মেরিন… প্লিজ।
মেরিনের খুব কষ্ট হচ্ছে চোখ খুলে রাখতে।

.

☆ : শেষ… মেরিনের গল্প শেষ। ছুড়ি মেরিনের বুকে না লাগলেও হাতে লেগেছে।আঘাত করেছে। বিষটা ওরা শরীরে ভেদ করেছে। ১ঘন্টার মধ্যে এন্টিবায়োটিক না দিলে মেরিন শেষ। নীড় আছে প্রানের কাছে। ও তো ভাবতেও পারেনি যে ওর প্রিয়তমা বউয়ের সাথে কি ঘটেছে। হাহাহা। নীলাকে এই সুখবর না দেয়া পর্যন্ত শান্তি নেই। ফিরতে হবে আজই। নীলাকে জানাতে হবে। প্রানপ্রিয় নীলা আমার। হাহাহা… ওর মানসিক ভারসাম্য থাকলে ভালো হতো। কষ্টটা অনুভব করতো। কি আর করার? যতোটুকু কষ্ট পাবে ততোটুকু নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হবে।

.

নীলিমা : তুমি আগে কেনো আমাকে জানাওনি বলো তো? প্রানের কি অবস্থা… আল্লাহ…
নিহাল : রিল্যাক্স নীলি রিল্যাক্স। ঠিক আছে প্রান।
নীলিমা : ঠিক থাকলে হসপিটালে কেনো?
নিহাল : ওকে অজ্ঞান করা হয়েছে। ছোটমানুষ বলে নীড় হসপিটালে নিয়ে এসেছে।
নীলিমা : নীড় কোথায়? ওকে দেখতে পাচ্ছিনা কেনো? ও ঠিক আছে তো?
নিহাল : ও একদম ঠিক আছে। কোথায় যেনো বের হলো।
নীলিমা : ওকে কল করো। ওকে নিজের চোখে না দেখা পর্যন্ত আমার শান্তি নেই।
নিহাল : দিচ্ছি দাড়াও।
নীলিমা : মেরিন ঠিক আছে তো?
নিহাল : তুমিও মেরিনের কথা ভাবো!
নীলিমা : যা তা একেবারে। আমি কি মানুষ নই? মে…
ওরা নীড়ের চিৎকার শুনতে পেলো। নীড় মেরিনকে কোলে নিয়ে ছুটে এলো।
নীড় : ডক্টর… ডক্টর…
নিহাল-নীলিমা এগিয়ে গেলো।
নিহাল : মেরিনের কি হয়েছে নীড়?
নীড় : ডক্টর… ওকে পয়জন দেয়া হয়েছে। প্লিজ ডু সামথিং।
ডক্টর : সুইসাইড কেইস?
নীড় : নো নো। এই ছুড়িতে বিষ লাগানো আছে। আমি সাথে করে নিয়েছি।
ডক্টর : আমরা দেখছি কি করা যায়।
নীড় : দেখি টেখি বুঝিনা। আমি মেরিনকে সুস্থ চাই। না হলে সবাইকে অসুস্থ করা হবে।
মেরিনকে ভেতরে নেয়া হলো।
নিহাল : কি হয়েছে নীড়? মেরিনের এই অবস্থা হলো কিভাবে? কে বিষ দিয়েছে?
নীড় : সেই যে বাসায় দেয়ার চেষ্টা করেছিলো।
নিহাল : কিহ?
নীড় : হ্যা।
নীড় নীলিমার সামনে গিয়ে দারালো।
নীলিমা : তুমি ঠিক আছো তো বাবা?
নীড় : তুমি কখন এসেছো হসপিটালে?
নীলিমা : অনেকক্ষন। কেনো?
নীড় : এখানে আসার আগে কোথায় ছিলে?
নীলিমা : কোথায় ছিলে মানে কি?
নীড় : কোথায় ছিলে?
নীলিমা : হোটেলে।
নীড় : মনির হোসেনের বাসায় যাওনি?
নীলিমা : কে মনির হোসেন?
নিহাল : কি হয়েছে নীড়? কি বলতে চাইছো?
নীড় : এটাই বলতে চাইছি যে মামনি মেরিনকে হত্যার চেষ্টা করেছে।
নিহাল : নীড়…📢
নীলিমা : তুমি এই কথা বলতে পারলে আমাকে…
নীড় : হ্যা পারলাম। কারন তুমি আমাকে এবং ভাইয়াকে পাগলের মতো ভালোবাসো। তাই আমাদের জন্য সব কিছু করতে পারো।
নীলিমা : আমি আসলেই তোদের জন্য সবকিছু করতে পারিরে। কিন্তু এমন নিকৃষ্ট কাজ করবো? তারওপর তুই ওকে ভালোবাসিস।
নীড় : তুমি যদি না করে থাকো তাহলে সেটাই তোমার জন্য ভালো।
নীলিমা : নাহলে কি মেরে ফেলবে আমায়? হামম?
নীড় : জান নেয়া ছারাও আরো অনেক পদ্ধতি আছে শাস্তি দেয়ার। তোমার ছেলে তোমার কাছে অদৃশ্য হয়ে যাবে। মনে রেখো।
নীলিমা : এসব শোনার জন্যই বেঁচে ছিলাম।
বলেই নীলিমা কাঁদতে কাঁদতো বেরিয়ে গেলো।
নিহাল : নীলি…
নিহাল নীলিমার পিছুপিছু গেলো। নীড় রেগে দেয়ালে ঘুষি মারলো।
নীড় : কে সে? কার এতো সাহস যে মেরিনকে বিষ দেয়? এই নিয়ে দুবার হলো। সে নিশ্চয়ই আবারো চেষ্টা করবে। তৃতীয়বারের আগেই তাকে ধরে ফেলতে হবে।

.

■ : কি বলছো কি?
□ : হ্যা।
■ : মরে গিয়েছে মেরিন?
□ : হসপিটালে নিয়ে গিয়েছে মেরিন।
■ : ঘটনা কি বলো তো?
□ : লিও প্রানকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। নীড়-মেরিন বাঁচিয়ে নেয়। এরপর মেরিন কোথাও যায় একা। সেখানে কেউ ছুড়ি মারে ওর দিকে। পয়জন লাগানো ছিলো।
■ : কে করলো?
□ : জানিনা। তবে নীড় সন্দেহ করছে নিজের মা কে।
■ : কিসের ভিত্তিতে?
□ : জানিনা। আপাদত এই পর্যন্তই খবর আছে। বাকি খবর জোগাড় করতে হবে।

.

পরদিন…
প্রান্তিককে ঘুমন্ত অবস্থাতেই ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয়েছিলো। ঘুম থেকে উঠে বসলো।
পিটার : এতোক্ষনে ঘুম ভাঙলো বাবা পাখর?
প্রান্তিক : গুড মর্নিং আংকেল।
পিটার : গুড মর্নিং।
প্রান্তিক : আমি এতো ঘুম দিলাম যে সকাল হয়ে গেলো!
পিটার : ইয়েস ইয়েস।
প্রান্তিক : কিন্তু আমি তো কাউন্ট করছিলাম।
জন : হ্যা হ্যা কাউন্ট করছিলে। কিন্তু কাউন্ট করতে করতে ঘুমিয়ে পরেছিলে।
প্রান্তিক : মামমাম আর চাচ্চুকে দেখতে পারবোনা!
পিটার : বিকালে ঢাকার জন্য রওনা হবো সকলে। তুমি মামমাম এবং চাচ্চুর সাথে ফিরবে।
প্রান্তিক : সত্যি!
জন : একদম সত্যি।
প্রান্তিক : ভালো হয়েছে। মামমাম আর চাচ্চুর সাথে মজা করতে করতে যেতে পারবো।
পিটার : হামম। এখন গিয়ে ফ্রেন্ডদের সাথে মজা করো।
প্রান্তিক বন্ধুদের সাথে খেলতে চলে গেলো।

.

মেরিন : ভক্ষক হয়ে রক্ষক সাজার চেষ্টা তুমি করছো না কি অন্যকেউ সেটার অংক মিলাতে পারছিনা।
নীড় : মিলাতে হবেনা।
মেরিন : আমার পার্স।
নীড় : আমি তো ভক্ষক। তোমার কি মনেহয় এটার মধ্যে যা ছিলো সেটা আছে?
মেরিন : আমার পার্স।
নীড় : সিগারেটের অবশিষ্ট অংশ কি ঘোষের ঘর থেকে পেয়েছো?
মেরিন : নিশ্চয়ই ধ্বংস করে ফেলেছো?
নীড় পকেট থেকে বের করে মেরিনের হাতে দিলো।
মেরিন : কে জানে কি হেরফের করেছো।
নীড় : হের ফের করার জন্য এটা তেমন কিছুনা। তুমি লিওকে ভাইয়া ভেবে ডিএনএ টেস্ট করানোর চেষ্টা করছো। আমি আমার ভাইয়াকে নিজে কবরে নামিয়েছি। কাধে করে কবরস্থান পর্যন্ত নিয়ে গিয়েছি। তাই এই ভুল ধারনা আমার হতে পারেনা। তাই প্রমান লোপাট করানোর চেষ্টা করার প্রশ্নই ওঠেনা।
মেরিন : প্রশ্ন না ওঠাই ভালো। ভালো রেস্টুরেন্ট আছে? থাকলে বুক করো। ক্ষুধা লেগেছে।
নীড় : ৪৮ ঘন্টার আগে তরল খাবার ভিন্ন অন্য খাবার তোমার খাওয়া নিষেধ।
মেরিন : আমি কোনো নিষেধের ধার ধারিনা।
নীড় : শাট আপ। তোমার জন্য স্যুপ আনিয়েছি রেস্টুরেন্ট থেকে। চুপিচুপি খেয়ে নাও।
মেরিন : বিষটিষ নেই তো?
নীড় : আছে। পৃথিবীর সব রকমের বিষ আছে। হা করো এবার।
নীড় মেরিনকে খাইয়ে দিলো।
মেরিন : প্রান আমাদের সাথেই যাবে তো?
নীড় : হামম।
মেরিন : কথা হয়েছে ওর সাথে? দেখা হয়েছে?
নীড় : ওকে বিষয়টা জানানো হয়েছে। কিন্তু দেখা করিনি।
মেরিন : কেনো?
নীড় : দুজন একসাথে দেখা করবো বলে যাইনি দেখা করতে। চলো এবার যাবো।
মেরিন : তোমার পরবর্তী পরিকল্পনা আমি বুঝতে পারছিনা।
নীড় : খুব সহজ। তোমার সাথে বুড়ো হতে চাই।
মেরিন : ভালো। এবার যাওয়া যাক ক্যাম্পে? নাকি হসপিটালে ঘর সংসার করার ইচ্ছা আছে?
নীড় : হসপিটালে ঘরসংসার করলে মন্দ হয়না। নিয়মিত যাওয়া আসা তো আছেই।
মেরিন : ইডিয়ট।
ওরা ২জন ক্যাম্পে পৌছালো। এরপর প্রান্তিককে সাথে নিয়ে ঢাকা ফিরলো।

.

☆ : মারতে পারলামনা তোর বোনকে। বেঁচে গেলো। বেঁচে গেলো মেরিন। এর শাস্তি তোকে পেতে হবে। বুঝতে পেরেছিস? তোকে পেতে হবে শাস্তি পেতে হবে।
নীলা : আচ্ছা। তুমি কি মেরিনের কথা বলছো? মেরিন না খুব রাগী। ও রেগে গেলে না আম্মুবাবারও আতঙ্ক উঠে যায়। হিহিহি।
সে নীলাকে ২-৩টা থাপ্পর মেরে বেরিয়ে গেলো।
নীলা : খালি মারে খালি মারে। প্রনয় আসুক একবার। ওর কাছে তোমার নামে বিচার দিবো। তখন বুঝবে মজা। হুহ… কিন্তু তুমি এমন কেনো হয়ে গেলে!

.

টাইগার : ওই নীড় মেরিনকে শেষ করে দিবো। ওদের জন্য বসের আজকে এই অবস্থা। চলো। উড়িয়ে দিবো। চলো।
প্যান্থার : দারাও টাইগার। দারাও।
টাইগার : প্যান্থার বস আপনি!
প্যান্থার : হ্যা আমি।
টাইগার : বসে বাঁচামরা অবস্থা। আপনি যেতে না করছেন?
প্যান্থার : হ্যা করছি। কারন তাদের সবাইকে বস নিজের হাতে শেষ করবে। এই অধিকার সে আমাদের দেয়নি।
টাইগার : বসের কি ক্ষতি করেছে ওরা?
প্যান্থার : চুপ করে থাকো।

.

২দিনপর…
মেরিন : জন… ডিএনএ টেস্ট করাও।
জন : ওকে ম্যাম।
মেরিন : ঘাবরে গেলে মনে হচ্ছে?
জন : না মানে ম্যাম…
মেরিন : জন… কেবল ফিঙ্গারপ্রিন্ট দিয়ে ৪জনকে খুজে বের করেছো। আর এটাতো ডিএনএ স্যাম্পল। বেশি জটিল হবেনা।
জন : হামম।
মেরিন : এটা হলো প্রানের ডিএনএ স্যাম্পল। দেখবে এটার সাথে ম্যাচ করে কিনা।
জন : ওকে ম্যাম। আচ্ছা ম্যাম যদিই ম্যাচ না করে?
মেরিন : না করলে নেই। সেটা ঘোষের নয় বরং ঘোষের বউ সেজে থাকা লোক অথবা মহিলার হবে।
জন : হামম। ম্যাম একটি তথ্য জানতে পেরেছি।
মেরিন : বলো।
জন : হয়তো আপনি বিশ্বাস করবেননা।
মেরিন : বলো জন ডার্লিং।
জন : জানতে পেরেছি যে প্রনয় চৌধুরী নীলা ম্যামকে খুব ভালোবেসে ফেলেছিলেন। একেবারে পাগলের মতো। তাই হয়তো তাকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। বা মেরে ফেলা হয়েছে।
মেরিন হাসলো।
জন মনেমনে : ম্যাম হাসলেন! রেগে গিয়ে হাসলেন বোধ হয়।
মেরিন : জন আমার সিক্সথ সেন্স আরো নিশ্চিত হলো যে ওই লিও টাই হলো প্রনয়।
জন : বুঝতে পারলামনা ম্যাম।
মেরিন : যদি প্রনয় চৌধুরী সত্যিই আপুকে ভালোবেসে থাকে তাহলে সে নিজের ভালোবাসা হারানোর ক্ষোভে চৌধুরী এবং খানদেরকে শেষ করতে চাইছে।
জন অবাক হয়ে গেলো।
মেরিন : অবাক হওয়ার কিছু নেই জন। থাকেনা কিছু টাইপের ভালোবাসা যার জন্য সবকিছু ধ্বংস করতে পারে। তেমন… হাহাহা।
জন : ম্যাম আপনি কি তবে প্রনয় আহমেদ চৌধুরীর জন্য আপনার রাগ শেষ?
মেরিন : না না না। হুট করে জাগ্রত হওয়া ভালোবাসা কোনো ভালোবাসাই নয়। ভালোবাসা বলে তো কিছুই নেই। শুরুতে আপুর জীবন বরবাদ করেছে। পরে মরে যাওয়ার পর ভালোবাসা বেরে গিয়েছে? নো নো নো… আমি মানিনা। শাস্তি পেতে হবে। যদিই লিও বেঁচে যায় তাহলে ফাঁদ পেতে নিবো। আপুর ডুপ্লিকেট চাই জন।
জন : কেনো?
মেরিন : বললাম না ফাঁদ পাতবো আমার প্রান প্রিয় দুলাভাইয়ের জন্য।
জন : আপনি নিশ্চিত যে ওটাই প্রনয়?
মেরিন : নিশ্চিত হওয়ার জন্যই তো ফাঁদ পাতা হবে জন ডার্লিং। যাইহোক , চলো দাদুভাইয়ের সাথে দেখা করতে যাবো।
জন : স্যার আপনার সাথে একটু রেগে আছেন।
মেরিন : চলো যাই। দেখি কতোটুকু রেগে আছে?

.

নীড় : নো পিটার নো। কিছু তো গন্ডগোল আছে মামনির মধ্যে। যে দৌড়ে যাচ্ছিলো তার উচ্চতা মামনির সমান।
পিটার : কেবল এতোটুকুর জন্য ম্যামের ওপর সন্দেহ?
নীড় : না। মামনির চোখে আমি মেরিনের জন্য ঘৃণা দেখেছি। মামনির ওপর নজর রাখো। সাথে আরো কয়েকজনের খোঁজ করতে হবে।
পিটার : কাদের?
নীড় : আমাদের সবচেয়ে বড় শত্রু , আমাদের সবচেয়ে বড় বন্ধু , খানেদের সবচেয়ে বড় বন্ধু , খানেদের সবচেয়ে বড় শত্রু , চৌধুরী-খানদের কম বড় বন্ধু এবং শত্রু। এই ৬জন ব্যক্তির খোঁজ চাই। চাই মানে চাই। পাতালে থাকুক , আকাশে থাকুক ,পানিতে থাকুক যেখানেই থাকুক খুজে বের করা চাই।
পিটার : আজকে থেকেই খোঁজ শুরু করবো।
নীড় : শুরু করো। সময় ব্যাপার নয়। সময় একটু বেশি লাগুক কিন্তু চাই ওদেরকে।
পিটার : আমি ১০০০% চেষ্টা করবো।
নীড় : আই ট্রাস্ট ইউ। আর শোনো , মেরিনের ওপর নজর রাখবে। মানে ওর ওপর যেনো কোনো বিপদ না আসে। আমার মনেহয় যে আসল মাস্টারমাইন্ডের পরবর্তী কাজ হবে আমার এবং মেরিনের মধ্যে ভুল বুঝাবুঝি তৈরি করা। আমাদেরকে আলাদা করার চেষ্টা করাই হবে প্রধান উদ্দেশ্য। আমার মনে তো সন্দেহ ঢুকাতে পারবেনা। কিন্তু আমার মনে সন্দেহ ঢুকানোর জন্য মেরিনের কোনো ক্ষতি করুক বা ওকে কেউ টাচ করুক সেটা আমি চাইনা।
পিটার : ম্যাম যদি সন্দেহ করে?
নীড় : ও হাজার হাজার কারনে আমাকে সন্দেহ করে। সময় সব সন্দেহর জবাব দিবে। আমি কোনো সাফাই দিবোনা।

.

পরদিন…
মাস্টারমাইন্ড কিবরিয়া : নীড়-মেরিন দুজনেরই এখন একটাই উদ্দেশ্য। সেটা হলো আমি পর্যন্ত পৌছানো। এরা দুই পরিবার মারামারি করে একে অপরকে ধ্বংস করে দিতো। কিন্তু ওই লিও। ওই লিও নামের প্রানীটা সব খেলা নষ্ট করে দিলো। শুরুতে কবির-কনিকাকে শেষ করলো। এরপর নীড়-মেরিনকে শেষ করার চেষ্টা করলো। কাজের কাজ কিছুই হলোনা। এখন নিশানা হয়ে গেলাম আমি। প্রনয় বুঝে গিয়েছিলো ওকে শেষ করেছি। বেচারা মরতেমরতেও জানতে পারলোনা যে ওর খুনী কে? নীলাও কিছুটা খেলা বুঝে গিয়েছিলো। তাই ওকে ক্যারেক্টারলেস বানানো হলো। গুম করার আগে কে যে ওকে খুন করে দিলো আল্লাহ জানে। কিবরিয়া আমি। ৯বছর ধরে কোমায় আছি। আমি পর্যন্ত পৌছাতে দিবোনা। পৌছাতে পারবেনা। খুন করলে বহু আগেই সবাইকে খুন করতে পারতাম। কিন্তু ওদেরকে আমি একবারে মৃত্যু দিতে চাইনা। আমি আমার হাতে ওদের রক্ত লাগাতে চাইনা। আমি আজমল কিবরিয়া চাই ওরা একে অপরকে মারুক। দুই দুশমন হয়েও যেমন একত্রিত হয়ে আমার বাবার বিরুদ্ধে স্বাক্ষী দিয়ে ফাঁসিতে ঝুলিয়েছিলে সেই শাস্তি এই দুই পরিবারকে পেতেই হবে। আমি কিছু ভুলিনা। নীড়-মেরিন নামক চুনোপুটি আমার প্রতিশোধের মাঝে আসতে পারবেনা। আমার চেহারার যে বিছানায় পরে আছে তাকে তো হাজার চেষ্টা করলেও উঠবেনা। তাই আমি পর্যন্ত আসা সম্ভব না। আসে আসো দুজনই আসো। সহজেই আসো আমি পর্যন্ত। হারবে যখন দ্রুতই হারো। সময় নিয়ে কেনো হারবে? আমি আবার কাউকে অপেক্ষা করাই না। কতো ভালো মানুষ আমি! হাহাহা…

.

২দিনপর…
পিটার নীড়কে এবং জন মেরিনকে জানিয়েছে যে আজমল কিবরিয়া দুই পরিবারের মারাত্মক শত্রু। জানতে পারলো যে আজমল কিবরিয়া কোমায় আছে। কিন্তু দুজনের একজনও বিশ্বাস করতে পারলোনা। তাই আজমল কিবরিয়ার পরিবারের খোঁজ এবং বাসার ঠিকানা নিয়ে পৌছালো ওই বাসায়। দুজনের গাড়ি মুখোমুখি হয়ে থামলো। নীড়-মেরিন একে অপরকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে দেখলো।
জন : চলুন ম্যাম।
মেরিন : হামম চলো।
ওরা ৪জন বাসার ভেতরে ঢুকলো। ওদেরকে বাধা দিলো বাসার গার্ডরা। পরিবারের সদস্যরা। কিন্তু নীড়-মেরিন একত্রে গিয়েছে আটকায় কার সাধ্য? ওরা চলে গেলো আজমল কিবরিয়ার বেডরুম পর্যন্ত। শুয়ে আছে বিছানার ওপর। আছে বিভিন্ন মেশিন , মনিটর। নীড় মেরিন একে অপরের দিকে তাকালো। এক সেকেন্ডও দেরি না করে নিজনিজ গান লোড করে কিবরিয়ার মাথার কাছে , হাত , পা , পেটের, বুকের কাছে ধা ধা করে গুলি করলো। কোনো হেলদোল নেই নকল কিবরিয়ার। লোকটা তো আসলেই কোমায়।

.

চলবে…

#প্রতিশোধে_প্রনয়
part : 35
writer : Mohona
(do not copy please)

.

লোকটা তো আসলেই কোমায়। দুজন এগিয়ে গিয়ে গভীরভাবে ডুপ্লিকেট আজমল কিবরিয়াকে দেখছে।
আজমল কিবরিয়ার বড় ছেলে আমির বলল : আপনারা কি মানুষ? কিভাবে অসুস্থ মানুষটার দিকে গুলি করছেন?
মেরিন : ভুল হয়ে গিয়েছে। তাইনা? আমার অপরাধবোধ হচ্ছে । এখনই শুধরে নিচ্ছি।
বলেই আমিরের গলায় ছুরি ঠেকালো।
মেরিন : সন্তান নাকি মাবাবার প্রিয় হয়। তাই সন্তানের গলা কেটে বাবাকে কোমা থেকে তুলবো।
আমির : ককি করছেন কি?
মেরিন : ডোন্ট মুভ। একাএকাই গলা কেটে যাবে।
আমির : আমার বাবা সত্যিই কোমায়। ৯বছর ধরে কোমায়। বিশ্বাস না হলে মেডিকেল হিস্ট্রি দেখুন।
মেরিন : চোখের দেখা সবসময় সত্যি হবে কেনো? তোমার গলা কাটবো। উঠতে হবে আজমল কিবরিয়াকে। আমি হেল্প করছি আপনার বাবাকে তুলতে।
আমিরের গলাতে সামান্য একটু কেটে গেলো। রক্ত বের হতে লাগলো।
আমির : আহ…

আজমল : মেরিন… আমার ছেলের রক্ত ঝরালে? এর জবাব দিতে হবে তোমাকে। ছেরে কথা বলবোনা। তবে একটু সবুর করবো। এতো বছরের খেলা আমি তারাহুড়োতে ভুল করবোনা।

নীড় দেখলো আজমলের হেলদোল নেই।
নীড় : জান… লিভ দিস বেচারা। আমার কাছে আরো একটি উপায় আছে। ওয়াচ মি।
নীড় বিছানার চারদিকে অ্যালকোহল ছরিয়ে দিলো। এরপর লাইটার বের করলো।
আমির : কি করছেন কি আপনি? এমনটা করবেন না। প্লিজ…
আমির যেতে নিলে পিটার ওকে শক্ত করে ধরে রাখলো। নীড় বাকা হাসি দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে দিলো। বিছানার চারদিকে দাউদাউ করে আগুন জ্বলছে। নীড়-মেরিন দারিয়ে তামাশা দেখছে। ধোয়ার জন্য উপস্থিত সকলের কাশি চলে এলো। রাগে নীড়-মেরিনের মাথা ফেটে যাচ্ছে।
জন : ম্যাম… মনেহয় সত্যিই এই কিবরিয়া কোমায় আছে।
পিটার : চলুন স্যার। বাই হুক অর বাই ক্রুক আমি বের করবো যে কিবরিয়া কোমায় নেই। চলুন আমার সাথে।
আমির : যদি আমার বাবার কিছু হয় তাহলে কাউকে ছেরে কথা বলবোনা।
নীড় রেগে ওর মাথায় পিস্তল ঠেকালো।
নীড় : আমাকে হুমকি দিচ্ছিস? তোকে তো…
মেরিন নীড়ের পিস্তলে মাথায় হাত রেখে নামিয়ে দিলো।
মেরিন : লেটস গো।
বলেই নীড়ের হাত ধরে টেনে নিয়ে গেলো।
নীড় : নিয়ে এলে কেনো আমাকে?
মেরিন : গাড়িতে ওঠো। ফিরতে হবে।
নীড় : প্রথম তুমি আমার হাত ধরে নিজের সাথে নিয়ে এলে।
মেরিন : প্রিয় স্বামী গাড়িতে উঠবেন কি?
নীড় : জনপিটার.. অন্য গাড়িতে এসো। বসো জান।
দুজন গাড়িতে বসলো। নীড় গাড়ি চালাচ্ছে মেরিন পাশে বসে আছে।
নীড় : কিসের হিসাব করছো মেরিন?
মেরিন : এখন তো একটাই হিসাব। কিবরিয়া উঠলো না কেনো?
নীড় : ২টা কারন হতে পারে। প্রথম , হয়তো কিবরিয়া আমাদের আসার খবর জানতে পেরেছিলো। তাই এমন কোনো ড্রাগ নিয়েছে যেটা কিছুক্ষনের ওকে স্থির করে রেখেছে।
মেরিন : দ্বিতীয় কারন কি?
নীড় : হয়তো এটা কিবরিয়া-ই নয়।
মেরিন নীড়ের দিকে তাকালো।
নীড় : ওভাবে তাকিও না প্রিয় ড্রাইভ করছি। দুর্ঘটনা ঘটে যাবে।

.

ওরা বাসায় পৌছালো। ওরা পৌছাতেই নীড়ের খালাতো বোন নামিরা নীড় বলে ছুটে গিয়ে ওকে জরিয়ে ধরলো।
নীড় : তুমি কখন এলে?
নামিরা : অনেকক্ষন। এসে থেকে তোমার অপেক্ষা করছি।
নীড় : মিট মাই বিউটিফুল ওয়াইফ মেরিন।
নামিরা : হাই মেরিন।
মেরিন : হ্যালো।
নামিরা : আমার জানটাকে তুমি কেরেই নিলে।
মেরিন : কি করবো বলো? জান কেরে নিতে আমার খুব ভালো লাগে বেবি।
নামিরা : মানে?
নামিরা নীড়ের কাধে হাত রাখলো। বলল : কি বলছে তোমার বউটা?
মেরিন : বললাম যে জান কেরে নিতে আমার খুব ভালো লাগে।
বলেই মেরিন ওপরে চলে গেলো।
নামিরা : কাকে বিয়ে করেছো নীড় তুমি?
নীড় : নিজের সমান কাউকে। যে আমার পাশে দারানোর যোগ্য। আর মামনি… যেটা করেছো সেটা ঠিক করোনি।
নীলিমা : আমি আবার কি করলাম?
নীড় : সেটা তুমি জানো।
নীড় নিজের ঘরে চলে গেলো।
নামিরা : কি হয়েছে খালামনি? নীড় তোমাকে কেনো দোষ দিয়ে গেলো?
নীলিমা : জানিনা। আজকাল ও সবকিছুতে আমার দোষ দেয়।
নামিরা : মেরিন বুঝি ওর কান ভরছে?
নীলিমা : অমন নিচু কাজ মেরিন করেনা। অমন মানসিকতা ওর নেই। ওর আমাকে কিছু বলার হলে নিজেই বলবে। নীড়ের মাধ্যমে বলানোর কোনো প্রয়োজন নেই।
নামিরা : ওহ। তারমানে বউমা হিসেবে বুঝি মেরিন খুব ভালো?
নীলিমা : ও বউমা হওয়ার চেষ্টা এখনো করেনি। যেদিন বউমা হয়ে উঠবে বা ওঠার চেষ্টা করবে সেদিন বলা যাবে যে ও ভালো বউমা নাকি খারাপ।
প্রান্তিক : দীদু… দীদু দীদু দীদু…জানো আজকে আমি ২টা ছয় মেরেছি।
নীলিমা : এটা তো ফাটাফাটি নিউজ।
প্রান্তিক : নামুরা ফুপ্পি… কেমন আছো তুমি?
নামিরা : ভালো। কিন্তু নামুরা না নামিরা ফুপ্পি।
প্রান্তিক : ওই একই । জানো ফুপ্পি আমি না ক্যারাটে শিখছি।
নামিরা : ওয়াও… এটা তো দারুন।
প্রান্তিক : হামম হামম। দীদু… মামমাম এসেছে?
নীলিমা : হ্যা।
প্রান্তিক : আমি এখনই মামমামকে বলে আসছি।
নীলিমা : খেলাধুলা করে এসেছো। রুমে যাওয়ার আগে হাতমুখ ধুয়ে নাও।
প্রান্তিক : ওকে।

.

নীড় : কেনো বেচারিকে কনফিউজড করছিলে?
মেরিন : ও লাকি যে ওকে কেবল কনফিউজ করেছি। যে জেলাসী গেইম প্ল্যান করে ওকে এনেছো সেটার জন্য যে ওকে মেরে ফেলেনি এটার জন্য ওর শুকরিয়া আদায় করা উচিত।
নীড় : এক মিনিট… তুমি এটা ভেবেছো যে আমি নামিরাকে এনেছি তোমাকে জেলাস ফিল করানোর জন্য?
মেরিন : ভাবার কিছু নেই। এটাই ফ্যাক্ট।
নীড় হাসছে। হাসতে হাসতে মেরিনের দিকে এগিয়ে গিয়ে ওর কোমড়ে হাত রেখে কাছে টেনে নিলো।
নীড় : না না না জান। অমন মেন্টালিটি আমার নেই। আমার বউ আর ৫টা সাধারন বউ নয় যে জেলাস হয়ে কষ্ট পাবে। আমার বউয়ের জেলাস হওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। আর যদি এমন রকমের জেলাসি হয় তাহলে সে ওই ব্যক্তিকে গুলি মেরে উড়িয়ে দেবে। আমি কেনো আমার খালাতো বোনকে আমার জানের হাতে মরতে দিবো?
মেরিন : খুব চালাক তাইনা? খুব মায়া খালাতো বোনের জন্য।
নীড় মেরিনের আরো কাছে গিয়ে ফিসফিস করে বলল : আমার বউটা কি জেলাস? কিউট লাগছে কিন্তু জেলাস তুমিকে।
মেরিন : দূরে সরো।

.

পরদিন…
শমসের : কোন পথে অগ্রসর হচ্ছো আমি বুঝতে পারছিনা।
মেরিন : আমি জানি দাদুভাই। আমি নিজের লক্ষ্যের দিকেই যাচ্ছি।
শমসের : কিন্তু ধাপগুলো যে ক্ষুদ্র।
মেরিন : বড় ধাপে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে কয়েক ধাপ পিছিয়ে গিয়েছি। তাই এবার ছোটছোট ধাপেই এগিয়ে যাবো।
শমসের : জয়ী হবে কি?
মেরিন : সময়ই বলে দিবে।
শমসের : নীড়ের সাথে কি হবে?
মেরিন : নীড়ের সাথে কি হবে মানে?
শমসের : ওর পরিনতি কি হবে?
মেরিন : আমার কাছে হেরে যাওয়াই ওর পরিনতি হবে।
শমসের : ওর বুক বরাবর গুলি করে প্রানকে নিয়ে আসার যে কথাটা ছিলো সেটার কি হবে?
মেরিন : প্রানকে নিয়ে আসার ক্ষেত্রে বড় বাধা নীড়। ওকে হারিয়েই তো প্রানকে নিয়ে আসবো। আর রইলো পর ওর বুক বরাবর গুলি করার কথা… যদি চলে আসার সময়ও ও যদি আবারও বাধার সৃষ্টি করে তখন গুলি করা হবে।
শমসের : তাছারা গুলি করবেনা? নীড়ের ওপর গুলি করতে পারবেনা বলে বুঝি বললে? এটাই তো কারন?
মেরিন : না। কারন না হলে আমি গুলি চালাইনা সেটা তুমি বেশ ভালো ভাবেই জানো।
শমসের : জানি। জানি বলেই বললাম। নীড়ের দিকে গুলি চালানোর কি যথেষ্ট কারন নেই? ভুলে গিয়েছো সব?
মেরিন : কিছুই ভুলে যাইনা।
শমসের : মাবাবা এবং বোনকে হারিয়েছো।
মেরিন : অনেক কষ্ট দিয়েছে ওরা আপুকে। প্রানকে হারিয়ে বেসামাল হয়েছিলো তোমার ছেলে এবং ছেলের বউ। দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছে। অপমানের বদলে অপমান , ছিনিয়ে নেয়ার বদলে ছিনিয়ে নেয়া , ছলনার বদলে ছলনা এবং খুনের বদলে খুনেই আমি বিশ্বাসী। আর তাছারাও খুনের চেয়ে বেশি অপমান হানীকারক।
শমসের : তা ঠিক। তবে তুমি দুর্বল হচ্ছো নীড়ের প্রতি। এই দুর্বলতা ভালোবাসায় না পরিনত হয়। নীড় তোমার রক্ষক হয়ে কাজ করছে। ভালোবাসার তো কারনও আছে।
মেরিন : প্লিজ দাদুভাই… মেজাজ গরম করোনা। আমার এখানে আসাটাই ভুল হয়েছে।
মেরিন রেগে বেরিয়ে গেলো। গাড়ি চালাতে চালাতে দাদুভাইয়ের বলা কথাগুলো ওর মাথায় ঘুরপাক খেতে লাগলো।

.

নামিরা দরজায় নক করলো।
নীড় : কাম।
নামিরা ভেতরে ঢুকলো প্রান্তিকের জন্য হট চকোলেট এবং নীড়ের জন্য ব্ল্যাক কফি নিয়ে।
নামিরা : ব্রেক টাইম। ব্রেকের পর লেখাপড়া।
প্রান্তিক : থ্যাংক ইউ ফুপ্পি।
প্রান্তিক খেতে লাগলো।
নামিরা : তোমার কফি।
নীড় : থ্যাংকস। বাট প্রয়োজন ছিলোনা।
নামিরা : প্রান তোমাদের রুমেই থাকে।
নীড় : আমাদের রুমেও থাকে। মামনি বাবার সাথেও থাকে। আমাদের সাথেই বেশি থাকে। কেনো কোনো সমস্যা?
নামিরা : না না। আমার সমস্যা কেনো থাকবে? সমস্যা তো তোমাদের রোম্যান্সে।
নীড় : আমার পার্সোনাল স্পেসে কথা বলার অধিকার আমি কাউকে দেইনি সেটা তুমি জানো।
নামিরা : প্রান…
প্রান্তিক : হ্যা ফুপ্পি?
নামিরা : দীদু তোমাকে ডাকছে। একটু গিয়ে শোনো তো।
প্রান্তিক : হামম।
প্রান্তিক দৌড়ে নিচে চলে গেলো।
নামিরা : তুম…
নীড় ; একটা নির্দিষ্ট দূরত্ব অবলম্বন করে কথা বলো।
নামিরা : আমরা কাজিন নীড়। ভুলে গেলে?
নীড় : ভুলে যাইনি বলেই তুমি এখনো আমার রুমে আছো।
নামিরা : মেরিন তোমাকে ভালোবাসেনা।
নীড়ের মেজাজ গেলো বিগরে। ঠিক তখনই প্রানকে কোলে নিয়ে মেরিন ঘরে ঢুকলো। নামিরা উঠে দারালো। মেরিন কিছু না বলে ঘরে ঢুকলো।
নামিরা : আসলে আমি প্রানের জন্য হট চকোলেট আর নীড়ের জন্য ব্ল্যাক কফি এনেছিলাম।
মেরিন : সাফাই গায় চোরেরা। আর আমি কি কিছু জিজ্ঞেস করেছি? আসতেই পারো। বাট তোমার হাতে যে কফিমাগটা আছে সেটা আমার। আর আমার জিনিসে কেউ হাত দিলে সেটা আমার ভালো লাগেনা।
নামিরা : সরি।আসলে আমি জানতাম না। আর কখনো আমি এটা ইউজ করবোনা।
মেরিন : আমি আর কখনো এটা ইউজ করবোনা।
বলেই মেরিন ফ্রেশ হতে গেলো। নামিরা ঘর থেকে চলে গেলো।
নীড় মনেমনে : হঠাৎ করে নামিরার আসা স্বাভাবিক তো নয়। মামনির কল রেকর্ড অনুযায়ী এরমধ্যে নামিরার সাথে কথাও হয়নি। তাহলে কে পাঠালো নামিরাকে? যেই পাঠাক তার উদ্দেশ্য আমার এবং মেরিনের মধ্যে ঝামেলার সৃষ্টি করা। সেটা আমি হতে দিবোনা। নামিরাকে কি লিও পাঠালো?

নামিরা : হ্যালো…
কিবরিয়া : কি অবস্থা ওখানে? মেরিন কি আজকে রিয়্যাক্ট করেছে?
নামিরা : হ্যা। মনে হলো রেগে গিয়েছে।
কিবরিয়া : গুড। চেষ্টা চালিয়ে যাও।
নামিরা : ঝামেলা হলে নীড় আমাকে শেষ করে দিবে।
কিবরিয়া : আমি আছি তো। বাঁচিয়ে নিবো। নীড়মেরিনের যে বন্ডিং তৈরি হয়েছে সেটা শেষ করতে হবে। প্রানকে নিয়ে যুদ্ধ লাগাতে হবে। যেভাবেই হোক আলাদা করতে হবে। ওদের মধ্যে কেবল শত্রুতা থাকবে। ভালোবাসা নয়।
নামিরা : চালিয়ে যাও নিজের কাজ।

.

মেরিন ঘুমানোর জন্য বিছানা ঠিকঠাক করছে। নীড় এসে ওকে পেছন থেকে জরিয়ে ধরে ওর ঘাড়ে মুখ ডুবিয়ে দিলো।
মেরিন : নীড় বিহেভ। ছারো।
নীড় : নো জান। আজকে আমি খুব হ্যাপি। আজকে তুমি জেলাস হয়েছো। উফফ কি যে খুশি আমি আজকে।
মেরিন : ইউ আর অ্যা ডে ড্রিমার।লিভ মি।
নীড় ওকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে ওর দুই কাধে হাত রাখলো।
নীড় : তুমি জেলাস হওনি?
মেরিন : না।
মেরিন চলে যেতে নিলে নীড় বাধা দিলো।
নীড় : তুমি জেলাস।
মেরিন : না বললাম শুনতে পাওনি? ছারো আমার হাত। তোমাকে না বলেছি নিজের সীমার মধ্যে থাকতে।
নীড় মেরিনের মাথার পেছনে হাত রেখে চুলের গোছা ধরে সামনে এনে ওর ঠোঁটের ওপর আঙ্গুল রাখলো।
নীড়: কিছু জায়গায় কিছু কথা সাবধানে বলবে প্লিজ।ইগো হার্ট করোনা। আমি লিমিটেই আছি। আর এই কথাটা বারবার বলছি। আমি আশায় আছি তোমার ভালোবাসার। এমন কোনো কথা বলোনা যেটা তোমার ওপরই ভারী পরে। নিজের অনুভূতি মেনে নেয়া ভুলের কিছুনা। নিজের কথা দিয়ে তোমাকে হার্ট করেছি বলে তোমার কথা ইগোতে লাগলেও ইগনোর করি। কিন্তু কতোদূর ইগনোর করতে পারবো জানিনা।
নীড় খেয়াল করলো যে মেরিনের চোখে পানি ভাসছে। এটা যে রাগ নিয়ন্ত্রন করার চেষ্টা সেটাও ও বেশ বুঝতে পারছে। ও মেরিনকে বুকে জরিয়ে ধরলো।
নীড় : আমি সত্যিই তোমাকে ভালোবাসি মেরিন… অনেক বেশি।
প্রান্তিকের আসার আভাস পেয়ে দুজন সরে দারালো। শুয়ে পরলো তিনজন। মেরিনের মাথায় নীড়র কথাগুলো ভাসছে। ভাসছে তো শমসের খানের কথাও। ঘুমও আসছেনা। উঠে গাড়ির চাবি নিয়ে বেরিয়ে গেলো।

[
শমসের : কি?
মেরিন : হ্যা হ্যা হ্যা। তুমি দেখলে তোমারও হোশ উড়ে যেতো।
শমসের : এমন হুট করে প্রেমে পরে গেলে?
মেরিন : আরে আরে প্রেম না প্রেম না। ভালো লাগা বলতে পারো। কি তার অ্যাটিটিউট। আহাহা…
শমসের : এখান থেকেই ভালোবাসার শুরু হয়। ভুলের শুরু হয় । তোমার বয়স এখনো কম।
মেরিন : উফফ দাদুভাই… আমি অমন মানুষ নই যে নিজের ওপর ভালোবাসার প্রভাব পরতে দিবো। ভালোবাসাকে নিয়ন্ত্রন করার মানুষ আমি। ভালো হলে তুলে নিয়ে আসবো। না হলে রিজেক্ট।
শমসের : তোমার বয়স দেখেছো?
মেরিন : উফফ বয়স বয়স করো না তো। আমি কি ভালোবেসেছি নাকি? ভালোবাসলে এতোক্ষনে প্রপোজ করে দিতাম।
শমসের : আর রিজেক্ট করে দিলে?
মেরিন : তুলে নিয়ে আসতাম। আফটার অল আমি মেরিন বন্যা খান। আমার যেটা চাই সেটা চাইই।

অতঃপর মেরিন একদিন জানতে পারলো ছেলেটি একটি জঘন্য কাজে জরিত। গার্লস হোস্টেলের মেয়েগুলো রাতের আধারে জোর করে বিশেষ বিশেষ ব্যক্তিবর্গের কাছে পাঠানো হয়। প্রমান খুজতে গেলে প্রমান পায়না। শমসের খান জোর করে সরিয়ে নিয়ে যায় ওকে। ভালোবাসার আন্দোলন শুরু হতেহতে শেষ হয়ে যায়।
]

মেরিন গাড়িতে ব্রেক মারলো। স্টিয়ারিং এ ঘুষি মারলো।
মেরিন : মেরিন… তুই মেরিন। এটা ভালোবাসা বা তোর নিজের অতীত নিয়ে ভাবার সময় না। তুই একটা যুদ্ধে আছিস। সেটাতেই ফোকাস করতে হবে।

.

৩দিনপর…
জন : ম্যাম…তাহমিদ হোসেন নামের ব্যাক্তির প্লাস্টিক সার্জারি করানো হয়েছিলো। তাকেই প্রনয় চৌধুরীর রূপ দেয়া হয়েছিলো।
মেরিন : ভিত্তি কি? সূত্র কি? কিবরিয়ার মাধ্যমে পাওয়া গিয়েছে কি?
জন : না ম্যাম। কিবরিয়ার চিরশত্রু অর্জুন রায়ের বাসায় কাজেরলোক সেজে গত সপ্তাহে আমাদের একজন গিয়েছে। বিভিন্ন চেষ্টা চালিয়ে সে জানতে পেরেছে।
মেরিন : নাইস। কোথায় হয়েছিলো এই সার্জারি?
জন : সেটা এখনো জানা যায়নি ম্যাম। তবে জেনে নিবো ম্যাম চিন্তা করবেনা।
মেরিন : হামম। আরাফাত কি লিওর কোনো খবর দিলো? কেমন আছে লিও?
জন : জানা যায়নি ওর খবর।
মেরিন : আর আমি যে ল্যাটেক্স মাস্কের কথা বলেছিলাম সেটা কতোদূর?
জন : ১০দিনের মধ্যে হাতে চলে আসবে।
মেরিন : মাস্ক এলে চলবেনা। এমন কাউকে খুজতে হবে যার শারীরিক গঠনও কিছুটা আপুর মতো হবে।
জন : ওকে ম্যাম হয়ে যাবে।

.

পিটার : স্যার , নীলিমা ম্যাম যেসব জায়গায় মুভ করেছে সেসব জায়গার ছবি এবং ভিডিও ফুটেজ এখানে আছে।
নীড় : খোজ নিয়ে দেখেছো সেসব জায়গার?
পিটার : চিরুনী তল্লাশি চালানো হয়েছে। অস্বাভাবিক কিছুই ছিলোনা। তবুও আপনি নিজে ফুটেজগুলো দেখতে পারেন। আপনার চোখে কিছু অস্বাভাবিক ধরা পরলে পরতেও পারে।
নীড় : হামম।
জন : আসছি স্যার।
নীড় : ওকে।
জন : ওহ স্যার… আরো একটা কথা। সেটা তেমন অস্বাভাবিক কিনা জানিনা। তবে নীলিমা ম্যাম আপনার বাসার আন্ডারগ্রাউন্ডে যেতে দেখা গিয়েছে কয়েকবার।
নীড় : ভাইয়ার একটা বিশেষ রুম আছে ওখানে। ছোটবেলাতে ভাইয়া খুব গোয়েন্দা গল্প পড়তো। সেগুলো থেকে ইন্সপায়ার হয়েই ওই রুমটা বানাতে বলেছিলো। ভাইয়ার ছোটবেলার সব স্মৃতি আছে ওখানে।
পিটার : ওহ।
পিটা চলে গেলো। নীড় সবগুলো ভিডিও দেখলো। কিছুই অস্বাভাবিক পেলোনা।
নীড় : কোনো কারন ছারা মামনি এসব জায়গায় গিয়েছিলো কেনো? আন্ডারগ্রাউন্ড নিয়ে সেন্টিমেন্টাল হলে চলবেনা। গিয়ে একবার দেখতে হবে। রাতে যাবো।

.

রাতে…
সবাই খাবার টেবিলে এসে বসলো।
নিহাল : এ দেখি এলাহি কান্ড। এতো রান্না , এতো আয়োজন! কোনো বিশেষ কারন আছে নাকি নীলি?
নামিরা : জবাব আমার কাছে আছে আংকেল। রান্না আজকে আমি করেছি।
মেরিন ওর দিকে তাকালো।
প্রান্তিক : ওয়াও ফুপ্পি! তুমিও মামমামের মতো এতো কিউট কিউট রান্না করতে পারো!
নামিরা : তোমার মামমামের মতো কিউট হয়েছে কিনা জানিনা তবে চেষ্টা করেছি। সবার পছন্দের রান্না করেছি। মেরিন… মানে আমার প্রিয় ভাবি তোমার পছন্দের রান্নাও আছে। প্রানের কাছ থেকে জেনে নিয়েছি তোমার পছন্দ।
মেরিন : থ্যাংকস।
নীড় : প্রয়োজন ছিলোনা নামিরা। এটা তোমার কাজ নয়।
নামিরা : জানি জানি। এটা খালামনির কাজ এবং মেরিনের কাজ। এখন মেরিন তো ডিজিটাল বউমা। তাইনা? আম…
নীড় উঠে দারালো।
নীড় : আমার সামনে দারিয়ে আমার ওয়াইফকে টন্ট মারা হচ্ছে ? হামম?
নামিরা : না না। আমি টন্ট মারছিলামনা। আমিতোত এমনি।
নীড় টেবিলম্যাট ধরলো সেটা টেনে সব ফেলে দেয়ার উদ্দেশ্যে। মেরিন ওর হাত ধরলো। কারন প্রান্তিক বসে আছে।
মেরিন : তোমাদের ভাইবোনের খুনসুটিতে আমার প্রান কেনো ক্ষুধায় কষ্ট করবে? পরে ঝগড়া করে নিও। নামিরা… রান্না যখন করেছো তখন সার্ভও করে দাও।
নামিরা : অবশ্যই মেরিন।

.

চলবে…