#প্রতিশোধ
#শিখা
#পর্ব_১১
আমরা বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দেই, সারা রাস্তা শুভ একটা কথা বলে না, আমি বুঝানোর চেষ্টা করি কিন্তু শুভ আমার একটা কথা বিশ্বাস করে না…
বাসায় পৌঁছে শুভ আমাকে রুমে নিয়ে যায়, আমাকে বসিয়ে শুভ তার মাকে ডেকে নিয়ে আসে..
শুভ: তুমি চট্টগ্রাম গিয়েছিলে??
শুভর মা আমার দিকে তাকিয়ে থেকেই না বলে..
শুভ রাগে করছিল খুব,শুভ রাগে আমার গায়ে হাত তুলতে নেবে, কিন্তু আমি চোখ মুখ বন্ধ করে ফেলি ভয়ে।
শুভ সাথে সাথে পিছিয়ে যায় এরপর রুম থেকে বাহিরে চলে যায়
শাশুড়িঃ শিখা তোমার সাথে আমার কিছু কথা আছে, আমার সাথে একটু আসবে আমার রুমে।
আমিঃ ঠিক আছে মা, আপনি যান আমি আসছি..
আমি আমার শাশুড়ির পিছন পিছন তার রুমে গেলাম, শাশুড়ি মা নিজের আলমারি খুলে কিছু বের করছিলো..
আমিঃমা কি হয়েছে কিছু বলবেন আমায়?
শ্বাশুড়ি মা ঘুরে একটা বাঁকা হাসি দেয় আমার দিকে তাকিয়ে, সাথে সাথে আমার পিছন থেকে কেউ বাড়ি দেয়, আমি পিছনে ফিরে তাকাকেই দেখি আমার শশুর পিছনে দাঁড়িয়ে..
আমি: বাবা আপনি এটা কেন করলেন?
এটা বলতে বলতে আমি জ্ঞান হারাই,..
জ্ঞানফিরতেই আমি নিজেকে একটা রুমে বন্দি পাই, এই রুমটা আমার ছিল না,
আমি এই রুমটা এর আগে কখনো দেখিনি। কিন্তু কথা হচ্ছে আমাকে বেঁধে রাখা হয়নি, আর আমার শ্বশুর-শাশুড়ি এমনটা করলেই কেন আমার সাথে? এই সবই ভাবছিলাম তখনই দরজা খুলে ভিতরে আসে..
লোকটাকে দেখে আমি থমকে যাই, এটা আর কেউ নয় শুভ
শুভ আমার পাশে এসে বসে, মাথা নিচু করে বসেছিল আমার খুব রাগ হচ্ছিলো.
আমি: আপনারা এমনটা করছেন কেন? আমি কি করেছি আপনাদের? বলেন আপনার মা বাবা আমার সাথে এমন কেন করলো? আর এটা কোথায় আমি
শুভ কিছু বলে না চুপচাপ বসে থাকে, তখনই শুভ ওর বাবা-মা দুজন আসে..
শুভর মা হাসতে হাসতে আমার কাছে আসে..
শাশুড়ি আমি কারো মা না আমার নাম সুবর্না শুভ আমার ছেলে না, আর না এই লোক আমার স্বামী..
আমিঃ কি বলতে চান আপনি? তাহলে কে আপনি শুভ কি হয় আপনাদের? আর আমাদের এতদিন মিথ্যা বললেন কেন?
সুবর্ণা এসে আমার মুখ চেপে ধরে। আমি ব্যথায় কুকরে উঠি
কারণ আমার টাকা লাগবে? আর তোর কাছে অনেক টাকা আছে এই যে দেখতেছিস না তোর স্বামী ও যে এভাবে কত মেয়ের জীবন নষ্ট করেছে নিজেও জানে না , কিন্তু তুই আসার পর সব চেঞ্জ হয়ে গেছে..
শুভ কিছু বলে না চুপচাপ মাথা নিচু করে বসে আছে, আমি অবাক হয়ে শুধু দেখছিলাম তাহলে এতদিন সব অভিনয় ছিল, আমার সাথে শুভ প্রথম প্রথম যখন আমাকে মারধোর করতো তখনই ঠিক ছিল, কিন্তু এই মায়া আমি কিভাবে কাটাবো..
আমার শ্বশুর তখন মুখ খুলে শুধু টাকা আমরা তো টাকা চাই, কিন্তু শুভ ওতো মেয়েদের টর্চার করতে ভালোবাসে, মেয়েদের রক্তের ঘ্রান নাকি ওকে আনন্দ দেয়..
এসব বলে তারা বের হয়ে যায় আমি ভয়ে ভয়ে শুভর দিকে তাকাই
শুভঃ তুমি আজ থেকে এখানে থাকবে, তোমার প্রয়োজনের সব জিনিস আমি এখানে এনে দিবো..
আমি শুভর কলার চেপে ধরি আমার ধৈর্যের সীমা শেষ হয়ে গেছে এখন, আমি কাঁদতে কাঁদতে শুরু করি এগুলো কি সত্যি? আপনি সত্যি কি মেয়েদের সাথে এমন করেছেন?
আমি কি দোষ করেছিলাম আমি তো সত্যি সত্যি আপনাকে ভালোবাসি, আমার সবটা দিয়েছি আপনাকে, আপনার প্রতিটা অত্যাচার আমি মসফ করে দিয়েছিলাম, টাকা লাগলে আমায় বলতেন আমার সবকিছুই তো আপনার..
শুভ কিছু বলে না, আমার হাত ছাড়িয়ে বের হয়ে চলে যায় দরজা লাগিয়ে। আমি চুপচাপ বসি পরি এমন লাগছিল আমার মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়েছে। এই মানুষটাকে আমি এত বিশ্বাস করলাম, এত ধোকা দেওয়ার পর এত আঘাত করার পর কিন্তু আজ জানতে পারলাম সব মিথ্যা ছিল সব ধোকা..
বসে বসে কান্না করছিলাম আর বলছিলাম না এবার আর চুপ থাকবো না, সব সহ্য করতে পারবো কিন্তু এই আঘাত, আমাকে ভালোবেসে মিথ্যা বলার আঘাত। এ আবেগ সব কিছু মিথ্যা আমি কখনো মাফ করতে পারবো না..
বসে কান্না করছিলাম হঠাৎ করে কারো চিৎকারের আওয়াজ শুনতে পাই, বুঝা যাচ্ছিল একটি মেয়ে ছিল, মেয়েটার সাথে হয়তো প্রচুর অত্যাচার চলছে,বলতেছিলো প্লিজ আমাকে মারবেন না, প্লিজ আমার সব টাকা নিয়ে যান তাও আমাকে মারবেন না..
হুট করে আওয়াজ বন্ধ হয়ে যায় ভয়ে আমার গলা শুকিয়ে আসে , আমি দরজার কাছে গিয়ে দরজা ধাক্কা দিতে থাকি, বারবার ডাকি শুভকে কিন্তু কারো কোন সাড়াশব্দ নেই..
ভিতরেই ফ্লোরে বসে কানা করতে করতে কখন জানি ফ্লোরে শুয়ে ঘুমিয়ে পড়ি…
..চলবে..?
(কোন ভুল হলে হ্মমার দৃষ্টিতে দেখবেন)