প্রাণনাশিনী পর্ব-০৬

0
12

#প্রাণনাশিনী
#পর্ব_০৬
#সুহাসিনি_মিমি

শিউলির বিস্মিত মুখশ্রী দেখে এক মুহূর্তের জন্য নাওফিকের ভিতরে ধৈর্যের বাঁধ যেন টলমল করে উঠলো। পরক্ষণেই নিজেকে সংবরণ করে পরিস্থিতির তাগিদে নিজেকে শান্ত রাখতে বাধ্য হলো সে। আজকের দিনটা যেন তার নিজের প্রতি ঘৃণার আরেকটি উপলক্ষ হয়ে উঠেছে। হাঁটুর বয়সী এক মেয়ের সাথে এভাবে কথাবার্তা চালাতে হচ্ছে ভাবতেই একরাশ বিরক্তি গলার নিচে জমে ওঠে দলা পাকিয়ে উঠতেই তপ্ত এক নিঃশ্বাস বুক চিরে বেরিয়ে আসে।

এই শিউলি মেয়েটা তার আন্দাজের থেকেও বেশি চতুর,দুরন্ত। ভেবেছিল সহজেই সামাল দিতে পারবে কিন্তু প্রতিটা মুহূর্তে যেন পাল্টা প্রশ্ন করতে পিছুপা হচ্ছেনা মেয়েটা।

শিউলি তখনও ভাবুক ভঙ্গিতে ঠায় দাঁড়িয়ে। চোখে-মুখে কী যেন এক গভীর চিন্তার রেখা! কিছু একটা বুঝে উঠতে পারার আনন্দে হালকা করে মাথা দুলিয়ে দেয় তৎক্ষণাৎ। সেই অনড় ভঙ্গিতে যেন স্বস্তির রেখা ছড়ায় নাওফিকের বুকে।

— “কিন্তু, নাওফিক ভাই… আপনি হঠাৎ এত কিছু দিচ্ছেন কেন? মানে… আজ কি কোনো বিশেষ দিন?”

নাওফিক দাঁতে দাঁত চাপে। এই মেয়ে একটু বেশিই কথা বলে! তার জায়গায় অন্য কেউ হলে কিছু দেয়া তো দূর বরং দু চারটা চর লাগিয়ে লাগিয়ে রাজি করাতো তাকে।

একবার দূরে দাঁড়িয়ে থাকা সুবহার দিকে তাকালো নাওফিক। মেয়েটা জড়োসড়ো হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। বারবার রাস্তার এদিক ওদিক তাকাচ্ছে। কাকে খুঁজছে কে জানে? যাকে খুঁজার কথা, মন ভরে দেখার কথা, যার উপস্থিতি উপলব্ধি করার কথা তার দিকে তো ভুলেও তাকাচ্ছে না। কালোর মিশেলে কি মেয়েটাকে আজকে একটু অন্যরকম লাগছে না দেখতে? অনেকটা বড় বড়ও তো লাগছে!স্কুলের ড্রেসের সেই পিচ্চি মেয়েটা হঠাৎ করেই এতো বড় হয়ে গেলো কিভাবে? বোরকা পরিয়ে সে আবার উল্টো নিজের জন্য বিপদ টেনে আনলো নাতো নিজ হাতে?

— “নাওফিক ভাই!”

শিউলির ডাকে ধ্যানচ্যুত হয় নাওফিক। চমকে উঠে আবারও চোখ ফেরায় তার দিকে। কণ্ঠে একরাশ অযাচিত বিরক্তি নিয়ে ঠান্ডা গলায় বলে ওঠে,

–“ধরে নে, খুব শীঘ্রই তুই একখান খুশির খবর শুনবি। সেই আনন্দেই আমার তরফ থেকে তোর জন্য ছোট্ট এক উপহার!”

নাওফিকের মুখে এমন কথা শুনে শিউলি থমকে যায়। বিস্ময়ে চোখ কপালে তুলে চেঁচিয়ে ওঠে,

–“কি বলেন নাওফিক ভাই! তার মানে সামনে আপনার বিয়ে-শাদি লাগবো নাকি? একদম ফাটাফাটি খবর তো!”

শিউলির কথায় নাওফিক কোনো সরাসরি জবাব দিলো না। চোখ এখনো দূরে দাঁড়িয়ে থাকা সুবহার দিকেই নিবদ্ধ। দৃষ্টিতে একরকম অপলকতা। কণ্ঠটা নরম করে ওদিকে চেয়েই জবাব দেয়,

–“ধরে নে, এমন কিছুই। এখন বল, রাজি তুই?”

শিউলির চোখে খেলে যায় একরাশ দুষ্টু হাসি। স্বভাবসুলভ ছটফটে ভঙ্গিতে বলে ওঠে,

–“আরেহ রাজি মানে! আমি কি বলদ নাকি? এমন চান্স কেউ ছাড়ে বলেন?”

নাওফিক হালকা করে একপাশে তাকিয়ে মৃদু হাসে। দৃষ্টি তার এখনো সুবহাতেই আটকে।

–“ঐ হরিনের বাচ্চা টাকে ডেকে আনতো!

–“কাকে?”

শিউলি চোখ কুঁচকে প্রশ্ন করে।

–“তোর সাথেরটাকে। ডেকে আন!”

নাওফিকের কথা শুনেই শিউলি পিছন ফিরে একবার তাকায় বান্ধবী সুবহার দিকে। কপাল কুঁচকে খানিকটা চমকে গিয়ে বলে ওঠে,

–“ওরেও? ট্রিট দিবেন নাকি, নাওফিক ভাই?
এই মাইয়া তো আপনারে দেখলেই কাঁপে রীতিমত! ও মনে হয়না রাজি হইবো। ওরে নাহয় স্কুলে পাঠাইয়া দেই আমি। ”

নাওফিক বিরক্তি চোখে তাকায় শিউলির দিকে। পরপর উত্তর করে,

–এতো বেশি পেচাল পারোস কেন তুই? ডাকতে বলসি ডেকে নিয়ে আয় যা!

শিউলি অপ্রতিরোধ ভঙ্গিতে এগিয়ে এলো বান্ধবীর দিকে। সামনে এসে দাঁড়িয়ে হঠাৎ করেই বলে উঠল,

–“তোকে নাওফিক ভাই ডাকছে। আয়, আমার লগে।”

বলেই সুবহার হাত শক্ত করে চেপে ধরল শিউলি। সুবহা কাঁচুমাচু ভঙ্গিতে হাত ছাড়ানোর আপ্রাণ চেষ্টা করল। তবে ব্যর্থ হলো সে। শিউলি সরাসরি তাকে টেনে নিয়ে এলো নাওফিকের সামনে।

–“এই যে হাজির! বেচারি আপনারে কেন যে এত ভয় পায়, আল্লাহ মাবুদই জানে!”

নাওফিক চোখ তুলে সরাসরি তাকাল সুবহার দিকে। তারপর শিউলিকে উদ্দেশ্য করে বলল,

–“তোর এই বান্ধবীটা মনে করে আমি বুঝি জঙ্গলের কোনো বাঘ! একলা পাইলে খেয়ে ফেলব!”

পরপর বেঙ্গাত্মক সরে আওড়ালো,

–“ওর এত্তটুকুন পুটি মাছের মতন একটা শরীর! বল তো, এমন একটা পুটি মাছ খাইলে কি আমার পেট ভরবে রে শিউলি? হজমই তো হইব না!”

শিউলি হেসে গড়াগড়ি খাওয়ার অবস্থা! ঠোঁটে উৎফুল্লতার জোয়ার বজায় রেখে বললো,

–“আমাদের কখন নিয়া যাইবেন, নাওফিক ভাই?”

শিউলির অবাঞ্ছিত প্রশ্নে বিরক্ত হয় নাওফিক। আচানক একটা ইশারা করতেই বটগাছের আড়াল থেকে বেরিয়ে আসে তানভীর। তানভীরকে দেখে শিউলি কুন্ঠিত ভঙ্গিতে তাকায় তার দিকে। নাওফিক কিছু একটা ইশারা করতেই তানভীর শিউলিকে উদ্দেশ্য করে বলে,

–“তুমি আমার সাথে এসো, ছোট বোন।”

শিউলি বিস্মিত চোখে নাওফিকের দিকে তাকায়।

–“আপনি আমাদের নিয়া যাইবেন না?”

নাওফিক শান্ত গলায় উত্তর করে,

–“এক বাইকে দুইজন কেমনে নিয়া যাই? তুই বরং তানভীরের সাথেই যা। আমি তোর বান্ধবী হরিণের বাচ্চা টাকে নিয়া আসতেছি।”

এদিকে শিউলি আর তার সামনে দাঁড়িয়ে থাকা মানবের কথাগুলো যেন একদম মাথার উপর দিয়ে চলে যায় ছোট্ট সুবহার। তারা কোথায় যাচ্ছে? কী নিয়ে কথা বলছে কোনোটাই তার মাথায় ঢুকলো নাহ। শুধু বুঝতে পারলো এই শিউলি মেয়েটা এক কথায় একটা বিপদ! আস্ত এক আপদ! সবসময় তাকে ফাঁসায়!

সুবহা এবার শিউলির হাত শক্ত করে ধরে চেপে ধরলো। চোখে জেদ সে আজ কোথাও যাবে না ভয় পেয়ে। আর না এই মেয়েটাকে যেতে দিবে কোথাও! কণ্ঠে কপট তেজ নিয়েই আচানক বলে উঠলো,

–“আমি আপনার সাথে কোথাও যাবো না। আমাদের স্কুলে যেতে হবে। দয়া করে যেতে দিন আমাদের।”

সুবহার এই হঠাৎ সাহসী উচ্চারণে উপস্থিত সবাই হকচকায়। নাওফিক বিস্মিত চোখে তাকিয়ে রইল তার দিকে। তানভীর নীরবে বাইকে গিয়ে বসলো।

তানভীর এই গ্রামেরই ছেলে। শিউলি তাকে চিনে বলেই তার সাথে যেতে আপত্তি নেই। তাছাড়া বিগত দুদিন যাবৎ সুবহার ক্লাস মিস করায় জামাল স্যারের পড়া কিছুই মাথায় ঢুকেনি তার। বাসায় পড়তেও বসেনি। ক্লাসে গিয়ে জামাল স্যার এর হাতের বাড়ি খাওয়ার থেকে ভালো আজকে নিজের সব উইশ লিস্ট পূরণ করবে সে। যা যা সামনে পাবে তাই কিনবে। নাওফিক কে শিউলি চিনে। বন্ধুকের গুলি মিস হলেও এই লোকের কথার কখনো হেরফের হয়না। সুবহার কাছ থেকে হাত ছাড়িয়ে নেয় শিউলি। বান্ধবীর দিকে তাকিয়ে তাকে ভরসা জুগিয়ে আসস্থ করে বলে,

–“আরে ভুন্দি! নাওফিক ভাইয়ের মন আজ অনেক ভালো। সামনে ভাইয়ের বিয়ে, সেই উপলক্ষে আমাগো ট্রিট দিতেছে। ডরাইস না, এমন সুযোগ আর এই জন্মে পাবি না।”

**

সুবহা কাঁচুমাচু হয়ে দাঁড়িয়ে। চোখ মাটির দিকে। মাথা নিচু। নিঃশ্বাস যেন আটকে আছে ফুসফুসের ভেতর। একটু সাহস করে তাকাতেই চোখে পড়ে নাওফিকের পায়ের নিচে পড়ন্ত ছায়া। কালো থ্রি কোয়াটার প্যান্টের নিচে হলদেটে ফর্সা ত্বক, রোদের আলোয় ঝলমল করছে।

মুহূর্তেই দৃষ্টি সরিয়ে নেয় সে। হৃদপিণ্ডটা হঠাৎ করেই অকারণে ধুকপুক করতে শুরু করে। বুকের ভেতরটা কেমন অস্থির লাগে। ঠিক তখনই শুনতে পায়,

–“বোরকা পড়েছিস ভালো। তা মুখ আটকাস নি কেন? ”

সুবহা জবাব দেয় না। শুধু কাঁধটা একটু কুঁচকে যায়। হাত দুটো চেপে ধরে বোরকার কোনা।
নাওফিকের চোখে পড়ে সে অস্বস্তি।

–“কিরে চড়ই পাখি কথা বলছিস না কেন? বোরকা পরে মুখোশ না আটকালে বোরকা পড়েছিস কেন? চেহারা দেখাতে?

নাওফিকের প্রশ্নে তীব্র বিরক্ত হয় সুবহা। একে তো শিউলি প্রতিবারের মতো এবারও ফাঁসিয়ে দিয়ে গা ঢাকা দিয়েছে তার উপর এই লোকটার এমন কটাক্ষপূর্ণ, কটকটে ব্যবহার! মাথার ভেতর যেন চাপা আগুন জ্বলে উঠে তার।
তবে এইবার আর না! মনে মনে এক কঠিন প্রতিজ্ঞা নেয় এই শিউলির সঙ্গে আর কোনো সম্পর্কই রাখবে না সে।

সুবহা মাথা নিচু করে করে রুক্ষ কণ্ঠে বলে উঠলো,

–“দেখুন, আমি এসব পড়তে পারিনা। তাও সেদিন আপনার কথা রাখতে গিয়া আব্বার কাছে কতটা কাকুতি-মিনতি করে এই বোরখাটা কিনেছি জানেন?”

সুবহার কণ্ঠের ক্ষোভ মিশ্রিত সুরে এক মুহূর্তের জন্য থমকায় নাওফিক। পা ঠেলে বাইকের স্ট্যান্ডে ভর দিয়ে আরাম ভঙ্গিতে দাঁড়ায় সে। অতঃপর সিরিয়াস ভঙ্গিতে চেয়ে নির্লিপতে সুধায়,

–“কি বলিস! তাই নাকি?তো শুনি দেখি চাচাকে এমন কী বললি যে একটা না চাচা সোজা পাঁচটা বোরখা কিনে দিলো তোকে?”

সুবহা থমকালো। মাথা তুলে চমকে তাকালো নাওফিকের দিকে। এই লোক জানলো কীভাবে? ইশ! মনের ভেতর চাপা আর্তনাদ এর সৃষ্টি হলো সুবহার।জীবনে প্রথম একটা মিথ্যে বলতে এসেছিল সে আর এতেই ধরা পড়ে গেল ! ছি! এই লজ্জা কোথায় রাখবে সে?

চোখের দৃষ্টি দুলে ওঠে সুবহার। গাল রাঙা হয়ে ওঠে অনিচ্ছায়। মাথা নিচু করে রইলো পুরোপুরি। নাওফিক যেন এমন দৃশ্যেরই অপেক্ষায় ছিল। মেয়েটাকে এভাবে বিভ্রান্তিতে ফেলে সেই মজা পাচ্ছে সে।

–“কি হলো? থম মেরে গেলি কেন? আমিও তো শুনি বল বল, কী এমন কৌশলে চাচাকে রাজি করালি যে এক ধাক্কায় পাঁচ-পাঁচটা বোরখা কিনে দিলো?”

সুবহা বিমূঢ় ভঙ্গিতে আটষাট হয়ে দাঁড়িয়ে রইলো। লজ্জায় মাথা নুইয়ে রেখেছে। সুবহা কে এভাবে থম মেরে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে ব্রু কুচকিয়ে ফির বলে উঠলো নাওফিক,

–“আজকাল দেখি মিথ্যা বলাও শিখে গেছিস! বাহ্! তো চাচাকে জানাবো যে আজকাল তার মেয়ে যে রাস্তায় রাস্তায় মিথ্যা রটে বেড়ায়?”

সুবহার তব্দা খেলো। মনে মনে দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করলো আর কখনো মিথ্যা বলবে না বলে । এর পাশাপাশি আরেকটা সিদ্ধান্ত নিলো। সেই এক কঠোর সিদ্ধান্ত। এখানে আর এক মুহূর্ত ও নাহ। মনে মনে এমন পরিকল্পনার ছক আঁকতেই না আঁকতেই পুনরায় শুনতে পেল,

–“একদম এখান থেকে পালানোর কথা মাথায় ও আনবি নাহ। একপা ও নড়ালে সোজা পা ভেঙে হাতে ধরিয়ে দিবো।”

বলেই বাইকে উঠে বসে নাওফিক। পরপর আদেশ করে,

–“উঠে বস।

সুবহা হকচকালো। চারোপাশে ইনিয়ে বিনিয়ে তাকালো। নাহ! দূর দূরান্ত পর্যন্ত কাউকে চোখে পড়ছে না তার। বিপদ এর সময় কাউকেই খুঁজে পাওয়া যায়না। নাকি সেই পায়না কে জানে!

–“কিরে শুনতে পাস নি? উঠে আয় যলদি।

–ক কোথায় যাবো নাওফিক ভাই?”

কি সুন্দর শ্রুতি মধুর কণ্ঠেসর! নাওফিক তপ্ত শ্বাস ছাড়লো। মেয়েটা এতো সুন্দর করে তার নামটা উচ্চারণ করে শুনতেই কেমন প্রাণ টা জুড়িয়ে আসে তার। কিন্তু শেষে ভাই ডাকটা সেই সমস্ত শান্তিতে আগুন লেগে তোরাগ করে জ্বলে উঠে মস্তিস্ক।

–“গেলেই দেখতে পাবি। ”

সুবহা আর কথা বাড়ায় নাহ। ছোট ছোট কদমে এগিয়ে এসে বাইকের সামনে। পরপর উঠে বসে পিছনে। তবে দুজনের মাঝে যথেষ্ট দূরত্ব রেখেই বসেছে সে। যেহেতু শ্রেয়ান এর সাথে এর আগেও বহুবার বাইকে উঠেছে তাই ততটাও সমস্যা হয়না তার বাইকে উঠতে।

–ওড়না দিয়ে মুখ ডেকে বস! নাহলে আমার মত সুদর্শন হ্যান্ডসাম ছেলের পেছনে তোর মত তেতুল গাছের পেত্নী কে পিছনে বসা দেখলে আমার মান সম্মান যাবে।

সুবহা দাঁত চাপলো। একবার মন চাইলো রাস্তায় পরে থাকা বট গাছের শুকনো ডালটা দিয়ে এই লোকটার মাথায় একটা বারী মারতে। তাহলে হয়তো একটু শান্তি পেতো তার মনটা! যেভাবে বলছে যেন সে ইচ্ছে করে নাচতে নাচতে এসে বসেছে এই লোকের বাইকে!

**

প্রায় মিনিট বিশেক পার হলো গাড়িতেই। সুবহা নিজদের মধ্যে যথেষ্ট দূরত্ব রেখেই বসে এখনো। গ্রাম পেরিয়ে অনেকটা পথ পারি দিয়ে এসেছে তারা। সামনেই একটা মার্কেট এর মতন জায়গা। এই দিকটায় বেশি আশা হয়না সুবহার। মার্কেট এর এক পাশে দুতলা এক বিল্ডিং এর নির্মাণ কাজ চলছে। সিমেন্ট লাগিয়ে এখনো পুরোপুরি রং করা হয়নি বিল্ডিং টিতে। সেখানে এসে বাইক থামতেই নেমে যায় নাওফিক। সুবহা এখনো বসে। লোকটা বাইক থেকে নামতেই সুবহা কে আদেশ করে,

–“নেমে আয়!

সুবহা তাকায় চারোপাশে। আসে পাশে খুঁজে বান্ধবী নামের ওই বদজাত শিউলি টাকে। আশেপাশে কোথাও মেয়েটাকে দেখতে না পেয়ে যেন বুঁকের তা ভিতর অজানা শঙ্কায় আরষ্ট হয়ে উঠে তার। নরম সরে জিজ্ঞেস করে,

–“কোথায় যাবেন নাওফিক ভাই?

–” সামনে এতো বড় বোর্ড চোখে পড়ছে নাহ তোর?

সুবহা ভালো করে তাকায় সামনে। মাথার উপরে একটি জুলন্ত সাদা বোর্ড জুলছে। যেটায় বড় বড় অক্ষরে বাংলায় লিখা “কাজী অফিস “। সুবহা থমকায় পুরোপুরি। বিস্মিত নজরে তাকায় নাওফিক এর দিকে। লোকটা ভাবলেশহীন ভাবে ভিতরে ঢুকে যাচ্ছে পকেটে দু হাত গুঁজে।সুবহা আকস্মিক চমকে গিয়ে প্রশ্ন করে বসে,

–“এটা তো কাজী অফিস! কাজী অফিসে কি করবো গিয়ে নাওফিক ভাই?”

নাওফিক থেমে যায় মাঝ পথেই। টান হয়ে দাঁড়িয়ে সুবহার দিকে ফিরে পাল্টা প্রশ্ন জুড়ে বসলো,

–“কাজী অফিসে মানুষ কি করতে যায়?”

চলবে……