#প্রেমের_রঙ
#পর্ব_১৮
#মোহনা_হক
‘পদ্মের পরীক্ষা শুরু হয়েছে ৪ দিন হলো। এর মাঝে দু’টো পরীক্ষা ও শেষ। খুব মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা করছে। কারণ ইজহান প্রতি রাতে কল দিয়ে হুমকি দেয় যদি কোনো সাবজেক্টে 80+ নাম্বার ছুটে যায় তাহলে ইজহান তাকে আর বাসায় নিবে না। জানে এগুলো মজা করে বলে তাও নিজের মান সম্মান শ্বশুড় বাড়ির কাছে রাখার জন্য ভালো করে পড়াশোনা করে একটা মান সম্মত রেজাল্ট করা লাগবে। যে করেই হোক। রোববার গণিত পরীক্ষা। সে হিসেবে পদ্ম দিন রাত অংক নিয়েই বসে আছে। এই এক বিষয় যেটাতে পদ্ম খুবই দূর্বল। শত মন দিয়ে চেষ্টা করলেও পারে না।’
‘পদ্ম পড়ার টেবিলে বসে আছে। তার মাথা আর কাজ করছে না। এই সাবজেক্ট টা নিয়ে আর পারে না। ইজহান কল করেছে। পদ্ম পড়ার টেবিল থেকে উঠে গিয়ে কল টা রিসিভ করলো।’
‘ইজহান শান্ত কন্ঠে বললো-‘
“কি করছো পদ্মফুল?”
‘পদ্ম চিন্তিত হয়ে বললো-‘
“আমার আর ভালো লাগছে না। এতো চিন্তা মাথায় নিতে পারছি না।”
‘পদ্মের কথায় ইজহান ভ্রু কুচকালো। কি এমন হয়েছে যে এমন কথা বলছে।’
“কি হয়েছে বলবে তো। না বললে কিভাবে বুঝবো?”
“আমি অংক পারছি না। আপনি তো আমাকে বলে দিয়েছেন যে প্রতি বিষয়ে ৮০ এর উপরে নাম্বার থাকতে হবে। আচ্ছা আপনিই বলুন আমি কি এতো ভালো শিক্ষার্থী যে এমন রেজাল্ট হবে আমার। সব বিষয় ঠিক আছে গণিত বিষয়টা কে একটু ছাড় দিলে হয় না।”
‘ইজহান পদ্মের কথা শব্দ ছাড়া হাসলো। এই মেয়ে এটার জন্য এতো টেনশন করছিলো। হাস্যকর ব্যাপার। পরক্ষণেই ইজহান গম্ভীর কণ্ঠে বললো-‘
“উহুম কোনো ছাড় দেওয়া যাবে না। আমি এতো ভালো মানুষ নই ম্যাডাম।”
‘পদ্ম রেগে গেলো। এই বিষয়ে একটু ছাড় দিলেও পারতো। বড্ড বাজে লোক একদম।’
“আপনাকে কে বলেছে আপনি ভালো মানুষ? পঁচা লোক। আপনি মোটেও ভালো মানুষ নন।
‘ইজহান এবার শব্দ করে হাসলো। ইজহানের হাসির শব্দ শুনে পদ্মের রাগ নিমিষেই চলে গেলো। সেও হাসছে।’
” আমার পদ্মফুলের রাগী কথাগুলো এতো মজা লাগে কেনো বলো তো?”
‘পদ্ম কথাটা শোনা মুহূর্তেই চোখটা বন্ধ করে ফেললো।’
‘পদ্ম উত্তর দিচ্ছে না দেখে ইজহান বললো-‘
“আচ্ছা তাহলে কলটা রেখে দেই আমি?”
‘পদ্ম সাথে সাথে বললো-‘
“না না। আচ্ছা আপনি এখন কি করছেন?”
“এক জায়গায় দাঁড়িয়ে আছি। যেখানে একজনের পারমিশন ছাড়া ভিতরে যাবো না।”
‘পদ্ম কথাটা বুঝলো না। ইজহান আসলে কি বলছে?’
“হু বুঝিনি! কি বলছেন?”
‘ইজহান একটা নিঃশ্বাস ছাড়লো।’
“তোমার আমাকে এখন এই মুহুর্তে দেখতে মন চাচ্ছে?”
‘পদ্ম ঠোঁট কামড়ে ভাবলো কি বলবে।’
“দেখতে মন চাইলে আপনি কি আসবেন নাকি? আর এখন তো আসাও সম্ভব না কতো দূরের পথ।”
“আমি বলেছি তোমার এখন আমাকে দেখতে মন চাচ্ছে কিনা? আর তুমি কি বলছো আসবেন নাকি কতো দূরের পথ। আমি যেটা জিগ্যেস করেছি সেটা বলো। অতিরিক্ত কথা বলা পছন্দ না।”
‘পদ্মের তো মনে মনে ঠিকই মন চাচ্ছে কিন্তু ইজহান কে কথাটা বলবে কিভাবে?’
‘পদ্ম কথা বলছে না দেখে ইজহান ধমক দিলো।’
“কথা বন্ধ কেনো? দু দু’বার জিগ্যেস করছি। আমার কথা কি গায়ে লাগছে না তোমার?”
‘পদ্ম আমতা আমতা করে বললো-‘
“হু ভিষণ মন চাচ্ছে।”
‘ইজহান হাসলো।’
“তাহলে দরজা খুলো।”
‘পদ্ম অবাক হয়ে গিয়েছে দরজা খুলবে কেনো?’
“দরজা কেনো খুলবো? এখন রাত প্রায় ১২ বাজে। আমার তো ভয় লাগছে।”
‘ইজহান বিরক্ত হলো। এ কি আসলেই কিছু বুঝতে পারছে না?’
“কলটা কেটো না। যাও দরজা খুলো। একটা সারপ্রাইজ ওয়েট করছো তোমার জন্য।”
‘পদ্ম কিছু বললো না। ইজহানের কথা মতো কলটাও কাটলো না। আস্তে আস্তে গিয়ে দরজা খুলছে। যদিও ভয় কাজ করছে কারণ এতো রাতে দরজা খুলবে। কাউকে ভয় না পেলেও ভূত কে তো ভয় পায়। যদি হঠাৎ দরজা খুলতেই সামনে এসে পড়ে। ঠিক এই কথাগুলো মনে করে পদ্মের পা চলছে আবার চলছে না। পদ্ম আল্লাহ আল্লাহ করতে করতে গিয়ে দরজা খুলছে।’
‘পদ্ম দরজা খুলে ৪০৪ ভোল্টেজের শক খেলো। এ দেখি ইজহান দাঁত দেখিয়ে হেসে দাঁড়িয়ে আছে। পদ্ম অবাক হয়ে পিছনে ফিরলো। ভেবেছে এটা মিথ্যে আবার ইজহানের দিকে ফিরে তাকালো। এটা স্বপ্ন নয় তো। তাড়াতাড়ি নিজের হাতে একটা চিমটি কাটলো। না এটা স্বপ্ন আসলেই ইজহান দাঁড়িয়ে আছে।’
‘পদ্মের রিয়্যাকশন দেখে ইজহান হাসছে। নিশ্চয়ই সে খুব বড় করে অবাক হয়েছে। ইজহান হেসে পদ্মকে জড়িয়ে ধরলো। পদ্মের মাথায় হাত বুলিয়ে বললো-‘
“পদ্ম আমি ইজহান। এতো অবাক হওয়ার কিছু নেই।”
‘পদ্ম অবাক হয়ে তার কথা বন্ধ হয়ে গিয়েছে।’
“সত্যি এটা আপনি তো?”
‘ইজহান হেসে দিলো।’
“হ্যাঁ এটা আমি
“অবিশ্বাস্য। কিন্তু আপনি এখন এখানে কেনো?”
‘ইজহান ভ্রু কুচকালো। পদ্মকে ছেড়ে দিলো।’
“ওকে তাহলে আমি চলে যাচ্ছি।”
‘পদ্মের চোখ বড় হয়ে গেলো।’
“এই না যাবেন না।”
“তাহলে এখন কি করবো?”
‘পদ্ম ইজহানের হাত ধরলো।’
“ভিতরে আসুন।”
‘ইজহান পদ্মকে বললো দাঁড়াতে। সে নাকি গাড়ির চাবি রেখে আসছে। ইজহান চাবি নিয়ে আসছে সাথে আরও কিছু ব্যাগ ও। পদ্ম ব্যাগ গুলোর দিকে তাকালো।’
“এগুলো কি?”
‘ইজহান ব্যাগ গুলো রাখলো ভিতরে এনে।’
“তোমার যে ডেঞ্জারাস বোন আছে বাবারে। সে জানি কখন আবার কি বলে অপমান করে ফেলে। তার কথা গুলো খুবই জঘন্য। দুলাভাই হিসেবে একদিন ও ভালো কথা বলে নি। এমনিই দেখা হলে অপমান করে। এখন যদি জানে খালি হাতে শ্বশুড় বাড়িতে এসেছি, আমার ইজ্জত পানি পানি করে দিবে।”
‘পদ্ম হেসে দিলো ইজহানের কথা শুনে। এই দু মানুষের কখনো মিল হয়নি। ভবিষ্যতে হবে কিনা সন্দেহ আছে।’
“আচ্ছা এগুলো এখানে থাকুক। আপনি ভিতরে যান আমি আসছি।”
“কোথায় যাবে? শুনো কাউকে এখন বলার দরকার নেই। সবাই ঘুমে আছে। যদি বলেছো তো তাহলে আমি চলে যাবো কিন্তু।”
“আচ্ছা বলবো না। কিন্তু আপনি কি কিছু খাবেন না?”
“আমি খেয়ে এসেছি। রুমে চলো এখন।”
‘পদ্ম ইজহানের সাথে রুমে আসলো। ইজহান ওয়াশরুমে গেলো ফ্রেশ হতে। এই ফাঁকে পদ্ম ইজহানের জন্য এক কাপ চা বানিয়ে নিয়ে আসলো। বলেছে খেয়ে আসছে তাই বলে এখন কি তাকে কিছু খেতে দিবে না নাকি? এজন্য চা বানিয়ে আনলো। পদ্ম চা ওতো বেশি পছন্দ করে না তাই আর নিজের জন্য বানালো না।’
‘ইজহান শার্ট চেঞ্জ করে এখন টি-শার্ট পড়েছে। দেখে মনেহচ্ছে গোসল করেছে। কারণ চুল থেকে বিন্দু বিন্দু পানি গড়িয়ে পড়ছে।’
“আপনি গোসল করেছেন?”
‘ইজহান মাথা নাড়লো। পদ্ম ইজহানের সামনে চা নিয়ে দাঁড়ালো।’
“চা বানিয়েছো কেনো?”
“আপনাকে কি না খাইয়ে রাখবো নাকি?”
“চা খেলে আমার পেট ভরবে বলে তোমার মনে হয়?”
‘পদ্ম অসহায় দৃষ্টিতে তাকালো ইজহানের দিকে।’
“আপনি না খেয়ে এসেছেন?”
‘ইজহান পদ্মের অধরে হাত রাখলো।’
“আমার মন তো অন্য কিছু খেতে মন চাচ্ছে।”
‘পদ্ম সরে আসলো ইজহানের থেকে।’
“দেখুন এখন এসব ভালো লাগছে না। আপনি চা খান।”
“দাও।”
‘ইজহান চা টা মুখে দিয়ে চেহেরাটা বিকৃতি করে ফেললো। পদ্ম ভড়কে গেলো। চা মনেহয় ভালো হয়নি।’
“ভালো হয়নি?”
“চিনি দাও নি তো একটুও। বিশ্বাস না হলে খেয়ে দেখো।”
‘পদ্ম খেলো ঠিকই চিনি দেয়নি। একদম পানির মতো লাগছে চা। পদ্ম ইজহানের হাত থেকে চায়ের কাপ টা নিয়ে নিলো।’
“থাক আপনার আর চা খেতে হবে না। আপনি ঘুমিয়ে পড়ুন। জার্নি করে এসেছেন।”
‘ইজহান তার হাত দিয়ে সামনের চুল গুলো পিছনে নিলো।’
“তোমার না ম্যাথে প্রবলেম?”
“হু।”
“চলো দেখি কোথায় প্রবলেম।”
“এখন অংক করবো না।”
‘ইজহান ধমক দিলো।’
“করতে হবে।”
‘ইজহান পদ্মের হাত ধরে টেনে এনে টেবিলে বসালো। পদ্মের পাশের চেয়ার টেনে নিজেও বসলো। ইজহান পদ্মের এই অবস্থা দেখে যা বুঝলো সে কিছুই পারে না। ভেবেছিলো পদ্ম অনেক ভালো স্টুডেন্ট এখন দেখি ঘোড়ার ডিম সে। প্রায় ৫টা অংক করে দিলো ইজহান। এখন পদ্মকে প্রচন্ড ঘুমে ধরেছে চোখ মেলে তাকাতে পারছে না একটুও।’
“আমার ঘুম আসছে চলুন না ঘুমাতে যাই।”
‘ইজহান পদ্মের কথামতো ঘুমাতে গেলো। পদ্ম ওদিক ফিরে শুয়ে পড়লো। যেটা ইজহানের সহ্য হলো না। পিছন থেকে পদ্মকে জড়িয়ে ধরলো। পদ্মের ঘাড়ে মুখ লুকাল। এবার শান্তি লাগছে ইজহানের।’
“এতোদিন এটাই মিস করতেছিলাম পদ্মফুল।”
‘পদ্ম চিমটি কাটলো ইজহানের হাতে। ইজহান আরেকটু গাঢ় করে জড়িয়ে ধরলো।’
“একটু ভালোবাসার কথা ও বলতে পারবো না?”
‘সকাল ৫টা।’
‘পদ্ম তাড়াতাড়ি উঠে পড়লো। কারণ তার মাকে বলতে হবে ইজহান এসেছে। তার জন্য নাস্তা বানানো লাগবে। এখন যদি না বলে তাহলে তার মা তাকে ইচ্ছেমতো বকবে। পদ্ম আস্তে করে ইজহানের হাত এক পাশে রাখলো। হাত দিয়ে চুলে খোঁপা করে, দরজা খুলে বেরিয়ে গেলো।
‘রুবিনা খাতুন খুব রাগ করলেন কারণ কেনো তাকে কিছু বলা হয়নি। আরও ইজহান ও কিছু খায়নি শুনে তিনি পদ্মকে হাজারটা বকা দিলেন। রুবিনা খাতুন এখন ইজহানের জন্য নাস্তা বানাচ্ছে। পদ্ম তার মায়ের পাশে বসে আছে।’
‘৯টা।’
‘পদ্ম ইজহানকে ঘুম থেকে উঠানোর জন্য রুমে আসলো। ইজহান আগেই উঠে বসে আছে। ফোন নিয়ে ঘাটাঘাটি করছে। পদ্ম ঠিক ইজহানের সোজাসুজি দাঁড়ালো।’
“ফ্রেশ হয়েছেন?”
“হু। তুমি কোথায় ছিলে এতক্ষণ? ঘুম থেকে উঠে পায়নি কেনো তোমায়?”
“আমি মায়ের কাছে গিয়েছিলাম। মা খুব বকেছে কেনো জানায় নি। আচ্ছা খেতে আসুন এখন।”
“আগে তো স্পেশাল কিছু পাই তারপর খাবো।”
“স্পেশাল কিছু কি আবার?”
“উফ তুমি এতো বোকা কেনো পদ্মফুল? আমার মনের ভাষা বুঝতে পারো না? কেনো তুমি বড় হলে না?”
‘ইজহান পদ্মকে টেনে তার কোলে বসালো। পদ্ম হকচকিয়ে গেলো। পদ্মের গালে সুন্দর করে চুমু বসিয়ে দিলো। পদ্ম ইজহানের হাত খামচে ধরলো।’
‘তাদের এই মুহূর্তে পুষ্পের আগমন ঘটলো।
“আপু মা ডাকছে।”
‘দূর্ভাগ্যবশত পুষ্প দেখে ফেললো। সাথে সাথে পুষ্প ওদিক ফিরে গেলো।’
“ছি ছি কি দেখে ফেললাম।”
‘পদ্ম জোর করে ইজহানের থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়েছে। ইশ এমন টা না হলেও পারতো। এখন পুষ্পের সামনে মুখ দেখাবে কি করে?’
‘ইজহান শান্ত কন্ঠে বললো-‘
“ছি ছি করো না দোষটা তোমারই ছিলো। তুমি ভুল সময়ে এসে পড়েছো। এগুলো আবার কারো কাছে বলতে যেও না।
#চলবে….
#প্রেমের_রঙ
#পর্ব_১৯
#মোহনা_হক
‘ইজহান পুষ্প কে তার গাড়ি দিয়ে ইচ্ছেমতো ঘুরিয়েছে। এখন পুষ্পের কোনো রাগ নেই ইজহানের প্রতি। বরং ইজহান যদি গ্রামে আসে তাহলে সবচেয়ে বেশি পুষ্প খুশি হয়।’
‘দেখতে দেখতে পদ্মের পরীক্ষাও শেষ হয়ে গেলো। আজ সে আবারও ঢাকা শহরে দ্বিতীয় বারের মতো পা রাখবে। এ যেনো এক অদ্ভুত অনূভুতি। প্রথম বার যেমন লেগেছিলো এবারও ঠিক ওরকমই লাগছে। পদ্ম তার ব্যাগ গোছাচ্ছে আর মুচকি মুচকি হাসছে। পদ্মের হাসি দেখে পুষ্পের রাগ হলো ভীষণ। পদ্ম চলে যাবে দেখে সে মন খারাপ করে বসে আছে আর এইদিকে পদ্ম হেসেই যাচ্ছে। এক প্রকার রাগ হয়ে পুষ্প পদ্মের সাথে কথা বলছে না। রুবিনা খাতুনের ও মনটা খারাপ হয়ে আছে তার মেয়ে এতোদিন ছিলো আজ চলে যাবে।’
‘পদ্ম এবারও গ্রাম থেকে আসার সময় কান্না করেছে। যেটা দেখে ইজহান খুব বিরক্ত হয়েছে। এখনও গাড়িতে বসে ক্রমাগত চোখের পানি ফেলছে।’
“তোমার আসলে সমস্যা কি বলো তো?”
‘পদ্ম ইজহানের দিকে তাকালো।’
“কোন সমস্যার কথা বলছেন?”
“এই যে তুমি গ্রামে যাওয়ার সময় কাঁদো আবার আসার সময়ও ঠিক একই কাজ করো, সেটাই জিগ্যেস করছি তোমার সমস্যাটা আসলে কোন জায়গায়?”
‘পদ্ম মুখ ফিরিয়ে নিলো। সমস্যা মানে কি সে জানে না? গ্রাম থেকে চলে আসার পর যে তার কষ্ট হচ্ছে। সব সময় উল্টো পাল্টা কথা শুধু।’
“কথা বলছো না কেনো?”
“কি বলবো আমি?”
“যদি বলতেই না পারো তাহলে কাঁদবে না। মেয়ে মানুষ যে এতো কাঁদতে পারে তোমাকে না দেখলে জানতামই না। যদি আর একবার কাঁদো তাহলে তোমাকে এখানেই রেখে আমি চলে যাবো।”
‘পদ্ম কিছু বললো না। মাথাটা হেলিয়ে দিলো সিটে। চোখ জ্বলছে। একটু ঘুমালে ভালো হতো। পদ্ম ঘুমিয় গেলো। অনেক্ক্ষণ পদ্মের পাশ থেকে কোনো সাড়াশব্দ আসছে না বলে ইজহান পদ্মের দিকে তাকালো। পদ্ম ঘুমাচ্ছে দেখে ইজহান মনে মনে বললো ‘সারাদিন কাঁদবে আর ঘুমাবে এই কাজ তার।’
‘ইজহান পদ্মকে নিয়ে শেখ ভিলায় আসলো। এখানে কিন্তু আজ থাকবে না হঠাৎ ইজহানের মন চাচ্ছিলো তার মা বাবার সাথে পদ্মের দেখা করানোর দরকার আছে। তারউপর ইজনিয়া বলেছিলো পদ্মের পরীক্ষা শেষ হলে পদ্মকে নিয়ে সর্বপ্রথম যেনো এখানেই আসে।’
‘পদ্ম ইজহানের আগে তড়িঘড়ি করে বাসার ক্রলিং চাপ দিলো। ইজনিয়া দরজা খুললো। পদ্মকে দেখে সুন্দর করে হাসি দিলো।’
“কেমন আছো ভাবি?”
“ভালো আছি আপু। তুমি কেমন আছো?”
“আমিও ভালো আছি।”
‘তাদের দু’জনের আলাপে ইজহান আসলো। তার মেজাজটা চটে গিয়েছে। দরজার সামনে দাঁড়িয়ে আবার কিসের কথা? ভিতরে গিয়েও তো বলতে পারে।’
“ইজনিয়া সর সামনে থেকে। তুই যেভাবে দাঁড়িয়ে আছিস মনেহচ্ছে আমাদের ভিতরে ঢুকতে দিবি না। আর এখানে দাঁড়িয়ে কিসের কথা?”
‘ইজনিয়া সরে আসলো। ইজহান দ্রুত পায়ে উঠে উপরে উঠে নিজের রুমে চলে গেলো। পদ্ম ইজনিয়ার সাথে কথা কথা বলতে মুনিরা শেখের কাছে যাচ্ছে।’
‘মুনিরা শেখ পদ্মকে জড়িয়ে ধরলো।’
“কেমন আছো পদ্ম?”
“ভালো আছি মা। আপনি কেমন আছেন? বাবা কি বাসায় নেই?”
‘মুনিরা শেখ হাসলো।’
“আমিও ভালো আছি। না সে কি আর বাসায় থাকে বলো? আচ্ছা তুমি এতো দূর থেকে এসেছো ফ্রেশ হতে যাও। পরে নাহয় কথা বলা যাবে।”
‘পদ্ম রুমে আসলো। ইজহান রেডি হচ্ছে হয়তো কোথাও যাবে।’
“কোথাও যাচ্ছেন?”
“হু। একটু বাহিরে যাচ্ছি।”
“কেনো?”
“সেটা আপাতত আপনার না জানলেও চলবে ম্যাডাম। যান গিয়ে আগে ফ্রেশ হোন।”
‘পদ্ম ফ্রেশ হতে চলে গেলো। এই লোকের সাথে কথা বলাই বেকার। আসল কথা তো বলবে না জানা আছে পদ্মের।’
‘পদ্ম এসে দেখে ইজহান এখনো বসে আছে।’
“যাননি এখনো?”
‘ইজহান পদ্মের দিকে তাকালো।’
“যাবো। তুমি আসার জন্য ওয়েট করছিলাম।”
“ওহ।”
‘ইজহান উঠে পদ্মকে ভিজা চুলে হাত রাখলো।’
“আসছি আমি। তুমি সাবধানে থেকো।”
‘পদ্ম মাথা নাড়লো। ইজহান চলে গিয়েছে। পদ্ম ইজনিয়ার রুমে আসলো। কারণ একা একা রুমে ভালো লাগছে না। একা কি থাকা যায় নাকি?’
‘পদ্ম ইজনিয়ার রুমে সামনে দাঁড়ালো।’
“আপু আসবো?”
‘ইজনিয়া এতক্ষণ বই পড়ছিলো। পদ্মের ডাকে মাথা তুলে তাকালো।’
“ওহ ভাবি তুমি?”
“জ্বী আপু।”
“আরে আসো আসো বাহিরে দাঁড়িয়ে আছো কেনো।”
‘পদ্ম ইজনিয়ার সোজাসুজি বসলো।’
“বই পড়ছিলে আপু?”
‘ইজনিয়া হেসে উত্তর দিলো।’
“হুম। নিজের মেইন সাবজেক্ট গুলো পড়ে শেষ করতে পারি না, কিন্তু এই উপন্যাসের বই ছাড়াও আবার থাকতে পারি না। অভ্যাস হয়ে গিয়েছে।”
“আপু তুমি না মেডিক্যালে পড়ছো? তুমিও কি তার মতো ডাক্তার হবে?”
“হুম ভাইয়ের বোন যদি ভাইয়ের মতো না হই তাহলে তো আর মান সম্মান থাকবে না। তবে ভাইয়ার মতো এতো ভালো স্টুডেন্ট না আবার খারাপ ও না।”
“ওহ আচ্ছা আপু ওনি কি অনেক ভালো স্টুডেন্ট ছিলেন?”
“হ্যাঁ ভাইয়া তো মেডিসিন স্পেশালিষ্ট। যারা মেডিসিন স্পেশালিষ্ট তারা সব রোগের ঔষধ দিতে পারে।”
“আচ্ছা যারা এমনি ডাক্তার তারা কি সব রোগের ঔষধ দিতে পারে না?”
“যে যেটা নিয়ে পড়াশোনা করে মানে যার এসসিপিএস যেটা সে সেই বিষয়েরই ডক্টর। বুঝেছো?”
“ওহ তাহলে ইজহান ভাইয়া তো অনেক ভালো স্টুডেন্ট। তুমি তো তাও মেডিক্যালে পড়ছো। আমি তো সেটাও পারবো না। মাথায় নেই কিছু।”
‘ইজনিয়া হাসছে পদ্মের কথা শুনে।’
“তুমিও তাহলে ভাইয়াকে ভাইয়া ডাকা শুরু করেছো?”
‘পদ্ম মুচকি মুচকি হাসছে। ইজহানকে একবার ভাইয়া বললে কি যে শান্তি লাগতো তার। ইশ একদিন সে ভাইয়া বলেই ছাড়বে। আচ্ছা পদ্ম যখন ভাইয়া বলবে তখন ইজহানের চেহেরাটা ঠিক কেমন দেখতে হবে? নিশ্চয়ই ইজহান রেগে যাবে পদ্মের কথা। ইজহানকে রাগানোর একমাত্র উপায় পেয়ে গিয়েছে।’
‘অনেকক্ষন ইজনিয়া আর পদ্ম কথা বললো। এক সময় পদ্মের ঘুম চলে এসেছে। পদ্ম ইজনিয়ার রুমেই ঘুমিয়ে গেলো।’
‘পদ্মের ঘুম ভাঙ্গলো যখন একটু আধটু সন্ধ্যা হয়ে এসেছে তখন। বাসায় অনেক মানুষের আওয়াজ শোনা যাচ্ছে। পদ্ম তড়িঘড়ি করে ঘুম থেকে উঠলো। ইজনিয়া নেই রুমে। ইজনিয়ার রুমের পাশ দিয়ে একটা বাচ্চা ছেলে দৌড় দিয়ে যাচ্ছে। পদ্ম চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে এই ছেলে আবার কোথায় থেকে এসেছে। কখনো এ বাসায় দেখেনি এই বাচ্চা কে। পদ্ম হড়বড় করে উঠে ছেলেটা কে ধরলো।’
“তুমি কে? এখানে এসেছো কিভাবে?”
‘বাচ্চাটা ভয় পেলো পদ্মকে দেখে।’
“ছালো আমালে।”
‘পদ্ম আরও বাচ্চাটার হাত চেপে ধরে বললো-‘
“আগে বলো এখানে কিভাবে এসেছো? কার সাথে এসেছো? তোমাকে আগে আমি দেখিনি কেনো?”
‘বাচ্চাটা পদ্মের হাতে খুব জোরে কামড় বসালো। পদ্ম মুখ খিঁচে আছে। ছোট হলে কি হবে দাঁতের যে পাওয়ার। পদ্মের হাতে একদম দাগ বসে গেলো। পদ্ম যেহেতু ফর্সা বেশি তাই সাথে সাথে জায়গাটা লাল হয়ে গেলো।’
“কামড় দিচ্ছো দাও তাও ছাড়বো না তোমাকে।”
‘বাচ্চাটা পদ্মকে ছেড়ে দিলো।’
“আমাল মাম্মালের মালির বাসায় এসেছি।”
‘বাচ্চাটার কথা পদ্মের বোধগম্য হলো না। কি যে বলছে এই ছেলে। এ দেখি কথাও বলতে পারে না। আমাল সামাল কি বলছে।’
“বাবারে কিসব বলছো তোমাকে ধরে রেখে লাভ নেই। যাও দৌড় দাও।”
‘পদ্ম বেসিনে এসে মুখ ধুচ্ছিল। বাচ্চাটার দেওয়া কামড় দেখছে। কি ভয়ংকর ছেলে। একবারে কামড়ে লাল করে দিয়েছে। খুবই পাজি ছেলে একদম।’
‘পদ্ম রুম থেকে বের হয়ে সে রীতিমত অবাক হয়ে আছে। সোফায় কিছু মহিলা বসে আছে। পদ্ম এখনো বুঝলো না এরা কিভাবে এসেছে এখানে আর কেনোই বা এসেছে।’
‘পদ্ম রান্নাঘরে আসলো। মুনিরা শেখ রান্না করছে। তার পাশে দু’জন মহিলা দাঁড়িয়ে আছে। পদ্ম মুনিরা শেখের কাছে একদম ঘেঁষে দাঁড়ালো।’
‘মুনিরা শেখ পদ্মের দিকে তাকালো। পদ্মের হাত ধরে নিয়ে তার পাশে দাঁড়া করালো।’
“এই যে পদ্ম ইজহানের বউ। ও এতোক্ষণ ঘুমে ছিলো তাই তোমরা দেখতে পাওনি। পদ্ম ওনারা আমাদের খুব ঘনিষ্ঠ মানুষ হয়। একজন তোমার খালা শ্বাশুড়ি আরেকজন মামি শ্বাশুড়ি।”
‘পদ্ম হেসে তাদের সালাম দিলো। তাদের সাথে কথা বললো। মুনিরা শেখ একজন কে বললো-‘
“তুমি একটু এদিকটা দেখো। আমি পদ্মকে নিয়ে রুমে যাচ্ছি।”
‘অতঃপর মুনিরা শেখ পদ্মকে নিয়ে তার রুমে আসলো। একটা সুন্দর কালো কাতান শাড়ি বের করে দিলো পদ্মকে।’
“এটা পড়ে নিও বুঝেছো অনেক মানুষ আসছে আরও আসবে। তাড়াতাড়ি পড়ে নিচে আসো।”
‘পদ্ম শাড়িটার দিকে তাকালো। কেনো শাড়ি পড়বে?”
“মা শাড়ি পড়বো কেনো?”
“আজ ইজহানের জন্মদিন। পরশুদিন রাতে ইজহান শাড়িটা আমার কাছে এনে দিয়েছে আর বলেছে ওর জন্মদিনের দিন যেনো তুমি এটা পড়ো।”
‘পদ্ম অবাক হয়ে গিয়েছে। আজ ইজহানের জন্মদিন অথচ ইজহান একবারও তাকে বলেনি? এতোটাই পর ভাবে ইজহান। তার প্রতি প্রচুর অভিমান জন্মালো পদ্মের ক্ষুদ্র মনে।’
“ওনার জন্মদিন?”
“হ্যাঁ। আচ্ছা তুমি শাড়ি পড়ে রেডি হয়ে নিচে এসো। ইজহান কিছুক্ষণ পর চলে আসবে। সাথে ওর হসপিটালের অনেক লোকজন ও আসবে। আমি নিচে যাই অনেক কাজ পড়ে রয়েছে। ”
‘পদ্ম বসে রইলো। ইজহান একবার বলতেই পারতো তার আজ জন্মদিন। একবারও বলেনি। আজ আসুক একটু কথা বলবে না। দিন দিন বেশি বাজে হচ্ছে লোকটা। পদ্মের মনে শুধু একটাই দুঃখ কেনো ইজহান তাকে কিছু বললো না। সব মানুষ জানে অথচ তার বউকেই বলেনি। আবার বলে ভালোবাসি। একটু বাসে না যদি ভালোই বাসতো তাহলে ঠিকই বলতো। পদ্ম রাগে শাড়িটা নিচে ফেলে দিলো। বেশ কিছু সময় বাদে শাড়িটা নিয়ে ইজহানের রুমে আসলো। যেহেতু মুনিরা শেখ বলেছেন শাড়ি পড়তে তাই অনিচ্ছা থাকা সত্ত্বেও শাড়ি পড়লো। আর তার সেই জাতীয় সাজ চুলে খোঁপা করা, চোখে কাজল দেওয়া, আর ঠোঁটে একটু লিপস্টিক দিলো। পদ্ম আয়নায় দেখে নিজেকে নিজেই বলছে ‘না খারাপ লাগছে না তো ভালোই লাগছে।’ কালো শাড়িতেও মানিয়েছে তাকে।’
‘ইজহান বাসায় আসলো। পদ্মের সাথে অনেকবার চোখাচোখি হয়েছিলো। কিন্তু পদ্মকে যতোবারই ইশারা করে তার কাছে যেতে পদ্ম ততবারই মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। যতোই হোক আজকে ইজহানের সাথে একটাও কথা বলবে না। ভালো কথা বললেও সে আজ গলবে না। পাথরের ন্যায় শক্ত হয়ে থাকবে।’
‘পদ্ম সবার সাথে হেসে হেসে কথা বলছে শুধু ইজহানের সাথেই বলছে না। এরকম কাহিনী বুঝছে না সে। ইজহান কেক কাটবে এখন তার আত্মীয় স্বজন সবাই দাঁড়িয়ে আছে তার পাশে কিন্তু তার বউ একদম দূরে দাঁড়িয়ে আছে।’
‘ইজহান পদ্মের সামনে এসে দাঁড়ালো। পদ্ম মুখটা ফিরিয়ে নিলো।’
“মান অভিমান পরে করো এখন চলো। তোমাকে ছাড়া আমি কেক কাটবো না।”
‘পদ্মকে জোর করে ইজহান তার পাশে দাঁড়া করালো। পদ্ম বেশি অভদ্রতা দেখায়নি কারণ সবাই কি না কি ভাববে।’
‘সবাই আস্তে আস্তে বাসায় চলে গেলো। রাত একটা বেজে গিয়েছে সব শেষ হতে। তাই ইজহান আর পদ্মকে নিয়ে তার ফ্ল্যাটে গেলো না। এখানেই থেকে গেলো। ইজহান বসে বসে ওয়েট করছে কখন পদ্ম আসবে। সব কাজ শেষ করে পদ্মের আসতে অনেক সময় লেগে গেলো।’
‘পদ্ম রুমেই এসেই ধুপ করে ওয়াশরুমে ঢুকে গেলো। শাড়িটা চেঞ্জ করে আসলো। ইজহান আড়চোখে পদ্মকে দেখছে। ম্যাডাম যে হারে রেগে আছেন এর রাগ ভাঙ্গানো এতো সহজ হবে বলে মনে হয় না।’
“পদ্ম এখানে আসো।”
‘পদ্ম যেনো কথাটা শুনেও শুনলো না। গলা থেকে স্বর্ণের চেইনটা আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে খুলছে।’
‘পদ্ম উত্তর দিচ্ছে না দেখে আবারও বললো-‘
“পদ্মফুল আমার একমাত্র বউ এখানে আসো।”
‘এবারও পদ্মের কোনো হেলদোল নেই। আগে থেকেই ইজহান এক কথা দু’বার রিপিট করা পছন্দ করে না। কিন্তু পদ্ম তো শুনছেই না। ইজহান এবার ধমক দিলো।’
“পদ্ম এখানে আসো। যদি এই মুহুর্তে তুমি আমার সামনে না আসো তাহলে আমি রুম থেকে বের হয়ে যাবো। সারারাত বাড়ি ফিরবো না। ইজহান কে আর কখনো দেখতে পারবে না তুমি।”
‘পদ্মের মনটা ধক করে উঠলো। তার সব রাগ, দুঃখ বিসর্জন দিয়ে ইজহানের সামনে দাঁড়ালো।’
‘ইজহান পদ্মের চিবুক ধরে প্রশ্ন করলো।’
“এতক্ষণ যে ডেকেছি আসোনি কেনো?”
“কেনো আসবো বলুন? আজ যে আপনার জন্মদিন আমাকে বলেছেন? আমার মায়ের কাছে শুনতে হয়েছে। আপনি বললে কি খুব বেশি ক্ষতি হয়ে যেতো? আমি তো আপনার কেউ না আমাকে কেনো বলবেন?”
‘ইজহান শব্দ করে হাসলো। পদ্ম ইজহানের দিকে তাকাচ্ছে আবার চোখটা সরিয়ে ফেলছে। নিশ্চয়ই এখন এই লোকের হাসি দেখলে তার রাগটা নিমিষেই উধাও হয়ে যাবে।’
“এইজন্য আমার পদ্মফুল রেগে আছে?”
‘ইজহানের চোখ হঠাৎ পদ্মের হাতে পড়লো। পদ্মের হাত এক জায়গা লাল হয়ে আছে। কেনো? দেখে তো মনে হচ্ছে কেউ কামড়ে দিয়েছে। মুহুর্তেই ইজহানের মেজাজটা চটে গেলো। পদ্মের বাহুতে হাত দিলো।’
“তোমার হাতে কে কামড় দিয়েছে? আমি তো দেইনি? আমার আগে কে কামড় দিয়েছে তোমাকে? আর তুমি সেই দাগ নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছো? কতো বড় সাহস তোমার!”
#চলবে…