গল্পের নামঃ- #ভালোবাসার_নতুন_প্রনয়ণ
লেখিকাঃ- #konika_islam (sanju)
part:14
এরিশ বলে
” দেখ হূর তুই এখন চাইলেও আমার না চাইলেও। মানুষটা আমি স্বার্থপর। কিন্তু আমার থেকে বড় স্বার্থপর তুই। আমার জন্য তোর একটুও খারাপ লেগেনি। এইযে আমার সাথে এমন করতে যাচ্ছিল না সেটা সুদসময় ফিরে পাবি। হূর কিছু বলতে যাবে তখনই এরিশ বলে
” যা এখান থেকে। হূর ভয়ে দুইপা পিছিয়ে যায়। হূরতো ভেবেছিল তার বিয়ের পর এরিশ ঠিক হয়ে যাবে কিন্তু এরিশের সাথে যে তার বিয়ে হবে ধারনার বাইরে ছিল। এখন নিচে গিয়ে না করলে এরিশ হুংকার দিয়ে উঠবে।
হূর নিচে নামছে হঠাৎ করে কেউ হূরের রুমাল দিয়ে মুখ চেপে ধরে। কিছুসময় ছটফট করার পর। হূরে শান্ত হয়ে যায় আর ধীরে ধীরে চোখ বুজে ফেলে।খুব সাবধানে হূরকে সবার চোখের আড়াল করে বাসার পিছনের দরজা দিয়ে বের করে আনা হয়।
__________
চোখ মেলতেই হূর নিজেকে আবিষ্কার করে একটা অন্ধকার রুমে। এমন অবস্থা বাইরে দিন নাকি রাত অব্দি বুঝা যাচ্ছে না। হূর ঘামতে লাগে ভয়ে। কারণ আগে কখনো এমন কিছুর সমক্ষীন হতে হয়নি।
হূর কোনো রকম উঠে দাড়ায় সামনে আগাতেই কিছুতে বেজে নিচে পরে যায় হূর। ব্যাথায় কুকরে যায়,পা টা হয়তো কেটে গেছে জ্বালা পুরা করছে । বেশ ভালোভাবেই বুঝতে পারে জায়গাটা বেশ পুরোনো। হূর সেখানে আসেই জোড়ে চিৎকার দিয়ে বলে
” কেউ কি আছে এখানে?? আমাকে এখানে কে এনেছে?? কেউ শুনছেন?? হূরের আওয়াজ গুলোই দুই দেয়ালে বার বার বারি খেয়ে ফিরে আসছে। হূরের এবার প্রচন্ড রকম ভয় করছে।
হূর আবার দাড়িয়ে যায় আর ধীর পায়ে এগিয়ে আসে খুব সাবধানের সাথে।
___________________
অপর দিকে সবাই পাগলের মতো খুজে চলেছে সবাই হূরকে। এরিশের অবস্থা সব থেকে খারাপ। সবার একটাই কথা হূর কোথায়?? সবাই টেনশন করছে। হূরের মা কান্না করছে আর এরিশের মা হূররে মাকে সামলাচ্ছে। এরিশ বৃথা চেষ্টা করছে হিসাব মিলানোর। কারণ হূরের এতটা সাহস নেই বাসায় থেকে একা চলে যাবে। তার সাথে দেখা করার আসার পরই নাকি হূরকে পাওয়া যায়নি। আর হূরকে কেউ বাসায় থেকে বের হতেও দেখা যায়নি। যখন সবাই হূরকে রুমে আনতে যায় দেখে হূর নেই। সবাই সম্পূর্ণ বাড়ি খুঁজলেও কেউ হূরের হদিস অব্দি পায়নি
এরিশের বাবা বলে
” পুলিশকে খবর দেওয়া যাক.। তখন মৃধা বলে
” কেন? পুলিশকে বলার কি আছে?? আর হয়তো হূরের এই বিয়েতে মত ছিল না তাই চলে গিয়েছে।
এরিশ রাগী দৃষ্টিতে মৃধার দিকে তাকাতেই মৃধা বলে
” আমার দিকে এইভাবে তাকালে সত্যি টা মিথ্যা হবে না। এরিশ মৃধার দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বলে
” সত্যি টা কি মিথ্যা ভাবে সাজানোর বৃথা চেষ্টা কি তুই করছিস মৃধা?? মুহূর্তেই মৃধার চোখ মুখের রঙ পাল্টে যায়। মৃধা বলে
” আম,,আমি কি মিথ্যা বলবো!! এরিশ খুব শান্ত কন্ঠে বলে
” হুমম, সেটাই ভালো। হূরের কিছু হলে যে এই কাজের সাথে যুক্ত তার খবর আছে।
এরিশের বাবা বলে
” আহহ তোরা চুপ করবি..। এটা ভাব মেয়েটা কোথায় গেলো?? প্রায় ঘন্টা পাঁচেক হতে লাগলো। আরেকবার সবাই ভালো করে খুজোঁ বাসাটা। তখনই উপর থেকে নেমে আসে আসে সিফাত।
সিফাত কে দেখে আরেক দফা অবাক এরিশ। সিফাত কখন আসলো??? সিফাত কে দেখেই এরিশ রেগে গিয়ে বলে
” সিফাত এখানে কি করে??? এরিশের মা আমাতা আমতা করে বলে
” কিছু সময় আগেই এসেছে তোর ফুপিকে নিতে বাইরে থেকে চলে যেতে চেয়েছিল শুধু আমি আটকাতে থেকে গলো। এরিশ বলে
” তা এতখন কোথায় ছিল?? এতো যে খুঁজাখুজি হলো সিফাত কোথায় ছিল?? সিফাত বিরক্ত হয়ে বলে
” আমিও সম্পূর্ণ বাসা খুঁজছিলাম।
“এতো টা সময়?? হূর কোথায়?? সিফাত বিরক্ত হয়ে বলে
” আমি কি করে বলবো?? দেখ আমি আর অন্তর্যামী না হূর কোথায় বলে দিব, খুঁজতে হবে।
এরিশ রেগে পাশে থাকা ফুলদানি টা সোজরে মেঝেতে মারে। সিফাত এরিশের কাঁধে হাত রেখে বলে
” চিন্তা করিস না হূর ঠিক আছে।
রাত ২ টা বাজতে চললো কারো চোখে ঘুম নেই। আলাইনা ঘুমিয়ে পরেছে৷ হূরের দিদুন বলে
” আমি ঘুমাতে গেলাম নয়তো বিপি বেরে যাবে। মৃধাও তার দিদুনের সাথে তাল মিলায় এদের দুইজনের কিছু যায় আসে না।
_____________
হূর অনেক কষ্টে দরজাটা খুঁজে পেয়েছে কিন্তু না বাইরে থেকে লক করা। হূর বারবার বলছে কেউ দরজাটা খুলো। ঘেমে একাকার হয়েগেছে হূর। চোখ গুলো অতিরিক্ত কান্নার ফলে জ্বালা পুরা করছে। সকালে নাশতা করে বেরিয়ে ছিল হূর আর কিছু হায়নি। বেশ দূর্বল লাগছে হূরের। মাথাটা কেমন ঝিম ঝিম করছে। হূর দুইপা পিছিয়ে যায় ভারসাম্য রাখতে না পেরে পিছনে কিছু সাথে আবার ধাক্কা লাগে। কিন্তু এবার সেই বস্তুটাই হূরের উপর পরে যায়। হূরে চিৎকার করলেও কারো কান অব্দি সেই আওয়াজ পৌঁছায়নি।
—————-
সকাল হতেই সবাই যার যার মতো বাসায় ফিরে যাচ্ছে। এরিশ যেতে না চাইলেও। এরিশের বাবা এরিশকে বুঝিয়ে বাসায় যাওয়ার জন্য রাজী করায়। আলাইনারও মুড ওফ হূরকে পাওয়া যাচ্ছে না। সে খুব মিস করছে। মৃধা আলাইনাকে নিয়ে গার্ডেনে দাড়িয়ে আছে। সবার অপেক্ষা। মৃধা বারবার হাই তুলছে। আলাইনার চোখ পরে কিছু একটা উপর রোদের আলোতে উজ্জ্বল জিনিসটা আরো জ্বলজ্বল করছে। আলাইনা মৃধার হাত ছেড়ে দৌড়ে গিয়ে সেটা তুলে নেয়। একটা চেন এটা সে কোথাও একটা দেখেছে। মৃধা গিয়ে তাড়াতাড়ি সেটা নিতে যাবে তখনই আলাইনা সেটা অন্য হাতে নিয়ে নেয়। মৃধা বলে
” কি এইটা দেখি। আলাইনা মৃধার দিকে তাকিয়ে বাসার উদ্দেশ্যে দৌড় দেয়। মৃধাও পিছু পিছু ছুটে আলাইনাকে থামতে বলছে। কিন্তু আলাইনা তার মতো সোজা বাসার ভিতরে চলে যায়। গিয়ে সে এরিশ ভাইয়া বলে বাসা মাথায় করে নিয়েছে। এরিশ আলাইনাকে এভাবে আসতে দেখে বলে
” কি হয়েছে আলাইনা?? আলাইনা কিছু বলতে যাবে তখনই মৃধা এসে বলে
” না ভাইয়া কিছু না আমি আলাইনাকে ভয় দেখিয়ে ছিলাম বলেছিলাম যে তুই কথা না শুনলে হূরের মতো তোকেও ছেলেধরা নিয়ে যাবে, আলাইনা আসো সবার মন খারাপ চলো আমরা কারে গিয়ে বসি দেখি কে আগে যেতে পারে। মৃধার কথা শুনে ভ্রু-কুচকে আলাইনা বলে
” তুমি এতো মিথ্যা কথা কিভাবে বলো?? তোমাকে অস্কার দেওয়া দরকার মিথ্যা বলার জন্য। তুমি এইসব কিছু বলোনি তুমি তো পাগলের মতো হাই তুলছিলে। ব্রাশ অব্দি করোনি গন্ধ আসছে তোমার থেকে।
এরিশ আলাইনাকে নিয়ে সোফায় বসে পরে আর বলে
” কি হয়েছে আলাইনা সত্যি করে বলোতো। সবাই তাকিয়ে আছে আলাইনার দিকে। আলাইনা তার হাতের চেনটা এরিশের হাতে দেয়। হ্যা এইটা সেই চেন যেটা সে হূরকে তার বার্থডেতে দিয়েছিল। এরিশ সেটা নিয়ে বলে
” এটা তুই কোথায় পেলি?? আলাইনা বলে
” আমি আর মৃধা আপু দাড়িয়ে ছিলাম বাইরে তখন দূর থেকে দেখলাম কিছু একটা চিকচিক করছে। মৃধা র চোখ মুখের রঙ বদলাতে লাগে। সিফাত কিছু না বলেই দৌড়ে গার্ডেনে চলে আসে। সিফাতকে সবাই এইভাবে বের হত দেখে এরিশও সিফাতের পিছু পিছু আসে। পরক্ষণেই এরিশের মনে পরে কালকে সব জায়গায় খুজা হলেও তাদের বাসার বাইরে ইস্টোর রুমটা দেখা হয়নি। আর প্রশ্নই আসে না হূরের এখানে আসার। এরিশ একরকম সবার আগেই দৌড়ে ইস্টোর রুমের দরজা খুলে। আর যা দেখে তার জন্য কেউ প্রস্তুত ছিল না। মেঝেতে পরে আছে হূর রক্তাক্ত অবস্থায়। হূরের উপর পরে আছে পুরনো বই রাখার সেলফটা। আসে পাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে কাচের টুকরো। এরিশ আর সিফাত তাড়াতাড়ি করে সেই সব সরিয়ে ফেলে। এরিশ হূরকে কোলে তুলে নেয় আর সিফাতকে বলে
” তাড়াতাড়ি করে আমাদের হূরকে হসপিটালে নিতে হবে।
চলবে
😑😑😑😑 ভুলত্রুটি ক্ষমার চোখে রিচেক হয়নি 🙄