ভালোবাসার কাব্য গাঁথবো পর্ব-৮২+৮৩

0
1043

#ভালোবাসার কাব্য গাঁথবো

(৮২)
সোহানা ইসলাম এটা কিছুতেই মেনে নিচ্ছেননা। রোজীকে পুরোপুরি রিকোভারীর আগে বাসায় রাখতে মোটেই ভরসা পাচ্ছেননা। হোক ছেলে ডাক্তার। তাতে কি? এতো গুলো বছরের এক্সপেরিয়েন্স শুধু সাইকোলজি ডিপার্টমেন্টেই। এই প্রথম তামিমের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে তার অপছন্দের ওয়ার্ডটি খাস বাংলাতে তাচ্ছিল্য করলেন , ‘ তুমি পাগলের ডাক্তার তাই বলে তোমার বউকি পাগল হয়েছে তাই যে তুমি দায়িত্ব নিচ্ছো? ছোট মানুষের মতো জেদ করছো কেনো?’
‘ পাগলের ডাক্তার ও এক ধরনের পাগল। তাই জেদ করছি। অন্যকিছু নয়। ‘
তামিমকে রিয়েক্ট করতে না দেখে উপস্থিত সবাই হতবাক হলো একমাত্র রোজী বাদে। রোজীর কাছে ব্যপারটা অজানা যে তার হাজব্যান্ড একজন পাগলের ডাক্তার হয়েও পাগলের ডাক্তার টাইটেল টা সবথেকে বেশি অপছন্দ করে। তানভীর মনে মনে বেশ মজা পেলো। আড় চোখে লাবিবার দিকে তাকালো।‌ লাবিবাকে মনে করিয়ে দিলো তার সাথে প্রথম তামিমের মিট আপের ঘটনা। বাবাহ! পাগলের ডাক্তার বলাতে সে কি রাগ! সব রাগ পড়েছিলো লাবিবার উপর। তানভীরকে মজা নিতে দেখে লাবিবা গাল ফুলালো। এক হাতের আড়ালে মুখ ঢেকে সাথে সাথেই তানভীর ফ্লাইং কিস ছুড়ে দিলো। লাবিবা ঠোঁট টিপে হাসলো। পরক্ষনেই সিরিয়াস ভাব এনে সোহানার দিকে মনোনিবেশ করলো। তানভীর দেখলো রোজী অসহায় চোখে তাকিয়ে আছে তাদের দিকে। ব্যপারটা এরকম যে সে একটা বিপদে পড়েছে অথচ তার পাশে না থেকে দুজনে নিজেদের মাঝে প্রেম চালিয়ে যাচ্ছে। তাকে নিয়ে কেউই ভাবছে না। তানভীর এটা মানতে পারলোনা। সে শুরু থেকেই আছে রোজী আর তার ভাইয়ের পাশে। সোহানা রাগে ফুঁসছেন দেখে ফিরোজ কাঁধে হাত রাখলেন।
‘ আহ! বউ। এতো উত্তেজিত হয়ো না।’
‘ তোমার ছেলে আবেগে গাছে চড়ছে দেখছো না? বুঝাও ওকে। দু তিনটে মাস আর অপেক্ষা করতে পারবে না? আমি কি তার খারাপ চাই?জেদ করতে না বলো। আমার কথা কেনো শুনেনা?’
‘ তুমিও তো কম জেদ করছো না। এখন তোমার যদি এমন কিছু হয় তোমাকে হসপিটালে থাকতে হবে কয়েকমাস আমি তোমাকে নিশ্চয় তোমাকে হসপিটালে মাসের পর মাস ছাড়বো না। বরং হসপিটালকেই পারলে আমার বাড়িতে নিয়ে আসবো যাতে সবসময় তোমাকে আমার কাছে রাখতে পারি। বড়বউ‌ তো এখন সুস্থ ই মোটামুটি। বাড়িতে থেকেই বাকি ট্রিটমেন্ট সারা যাবে। তোমার দায়িত্ব বড়বউকে দেখেশুনে রাখা।’
ফিরোজ খান সোহানা ইসলামকে এভাবেই সামলে নিলেন। রোজী নিজের ঘরে ফিরে জোরে শ্বাস নিলো। দম না নিয়েই লাগেজ খুলতে বসে গেলো। পুরো লাগেজ খালি করে খাটের পাশে রেখে দিলো। শুকনো খাবারের বয়াম গুলো ওয়ার্ডোবের ভেতরে রাখলো ‌। রান্না খাবারের ক্যারিয়ারটা জবেদা কে ডেকে পাঠিয়ে দিলো। খাটের উপর বসে বসে দেখছে লাবিবা। রোজীর কাজে হাত লাগায় নি। রোজী বাঁধা চুল গুলো ছেড়ে দিলো।কাটা হাতে নিয়ে লাবিবার দিকে এগুলো।
‘ সামনের চুল গুলো নিয়ে পেছনে এই ছোট্ট কাটায় আটকে দাও তো। ভেজা চুল গুলো ছাড়া থাক। ‘
লাবিবা তাই করলো। রোজীর মুখটা পরখ করলো।
‘ আপু মুখে মেকাপ বোঝা যাচ্ছে। গ্লিটারি গুলো তুলে ফেলো তো। ‘
রোজী বাথরুম থেকে মুখ ধুয়ে এলো। লাবিবার দিকে হাত এগিয়ে ধরলো।
‘ একটা চিমটি কাটোতো। ‘
‘ কেনো? অবিশ্বাসের কিছু নেই। তুমি খান বাড়িতেই আছো। ‘
‘ জানি। বুঝবেনা। চিমটি কাটো। ‘
লাবিবা চিমটি কাটলো। নখের দাগ বসে গেলো। কিন্তু রোজী একটুও ইস্ আস করলোনা। লাবিবা চোখ বড় বড় করে তাকালো। সে হলে এতোক্ষনে বিচ্ছিরি একটা চিৎকার দিয়ে উঠতো। রোজী হাত দিয়ে লাবিবার চোখ বন্ধ করে দিলো। লাবিবা আবার তাকালো। বললো,
‘ আপু তুমি পাল্টে গেছো। ‘
‘ তাই না? ‘
মনে হলো তাকে অনেক প্রশংসা করা হলো। উচ্ছাসের সাথে জানতে চাইলো, ‘ তাই না? ‘
লাবিবা বললো, ‘ সত্যিই তুমি চেঞ্জ হয়েছো। আগের ল্যাপ্টা ব্যপারগুলো আর নেই। এখন মনে হচ্ছে সত্যি সত্যিই তুমি আমার বড় ঝা। আগে ছোট মনে হতো।’
‘ তোমার ভাইয়ের পছন্দ হলো না তো। আচ্ছা কি করলে তোমার ভাই আমাকে পছন্দ করবে? তিনি অনেক বার বলতো কিন্তু খোলাসা করে নয়। পয়েন্ট টু পয়েন্ট না ধরিয়ে দিলে আমি কিভাবে তার পছন্দের লিস্টে আসবো? তুমি কি কিছু জানো?’
লাবিবা হাসলো। ‘ এই কয়েকমাসেই তুমি এতোটা এগিয়ে গেছো! সত্যি মন থেকে চাইছো তো?’
‘ রিহাবে থেকে অনেক কিছুই বুঝতে পেরেছি। একা একটা মানুষ যখন দিনের পর দিন থাকে তখন তার অফুরন্ত সময় নিজের সাথে বোঝাপড়ার। সময় যে পায়নি আগে তা নয়। কিন্তু তখন পাশে আপনজন ছিলো। তাই হয়তো এতোটা বুঝতাম না। এখন অনেক কিছুই বুঝতে পেরেছি। না বোঝা হয়তো আরো অনেক আছে তবে গতি পরিবর্তনে মুখোমুখি হতে চাই। লাব্বু মানুষ সামাজিক জীব। তারা একা বাস করতে পারেনা। জঙ্গলে গেলেও তারা পশু পাখিকেই আপন করে জীবন শুরু করে। চার দেয়ালের মাঝে বদ্ধপরিকর তখন ধীরগতিতে শ্বাসটাই চলে বাকি সব নিভু নিভু করে শেষের পথে এগোয়। ‘
বলতে বলতেই রোজীর চোখে জল গড়িয়ে পড়ে কখন রোজী জানেনা। লাবিবার টলমল চোখ গুলো দেখে হুস ফিরে। চোখ মুছে মুচকি হাসে। ‘ ধুর মেয়ে তুমি কাঁদছো কেনো? কষ্টগুলো অতীতেই থাক। দোয়া করো আর যেনো মুখোমুখি না হই। আমি জানি আর হবোও না। আল্লাহ আমাকে এমন একজন স্বামী দিয়েছেন যে আমি নিজে নিজের সর্বনাশ না করলে কোন কষ্ট ই আমাকে ছুঁতে পারবেনা। তিনি নিজে আমাকে আগলে রাখবেন। ‘
‘ তুমি ভাইয়াকে ভালোবেসে ফেলেছো। এতো মিস করছিলে আমাকে বললেনা কেনো? চুপি চুপি বললেও তো হতো। অনেক আগেই আমাদের মাঝে ফিরিয়ে নিয়ে আসতাম। ‘
‘ হ্যা উনারা না ছাড়লে আপনি ম্যাজিক করে নিয়ে আসতেন। ‘
‘ আই হ্যাভ এ পার্সোনাল ম্যাজিকম্যান। যিনি সবকিছু ইজিলি ম্যানেজ করে দেন। ‘
বলতে বলতেই লাবিবা চোখ মেরে দিলো। রোজী শুধু দুষ্টু হাসলো।

রাতে আটটা নাগাদ ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি নামলো। বীনা বার্তায় বৃষ্টি। প্রথমে মনে হলো ঝড় উঠবে। কিন্তু তা হলোনা। একটু বাতাস হয়েই বৃষ্টি শুরু হলো। লাবিবা রুমে বসে থাকতে পারলো না। বেলকনিতে এসেই হাত বাড়িয়ে দিলো। রোজীর কথা মনে পড়তেই ভেজা হাতেই ছুটলো। সিড়ির গোড়াতে আসতেই ধাক্কা খেলো তানভীরের সাথে। তানভীর লাবিবাকে ধরে ব্যালেন্স করলো। ‘ পাগলের মতো কোথায় ছুটছো? ‘
লাবিবা উত্তরে ঠোঁট টিপে হাসলো। টুপ করে তানভীরের গালে চুমু দিয়ে আবার ছুটলো। তানভীর চেচালো,
‘ ধীরে। শাড়িতে পা যেনো না স্পর্শ করে। ‘
বলতে না বলতেই পা বাঁধে শাড়ির কুচিতে। তানভীরের সামনে পড়তে লাগলো। কিন্তু সাথে সাথেই ব্যালেন্স করে দাঁড়িয়ে পেছন ঘুরলো। তানভীরের চোখ চোখ রেখে প্রশস্ত হাসলো। তানভীর ভয় পেয়ে অনেকটাই এগিয়ে এসেছিলো ধরে নিতে। মাঝপথে পা থেমে গেলো। এতো দৌড়ায় মেয়েটা! লাবিবা আবার ছুটলো। তার পরে যাওয়ার ধাত আছে। নরমালি মানুষ চলতে গিয়ে পায়ের সাথে কিছু লাগলে বা গর্তে পা পড়লে তখন পড়ে যায়। কিন্তু লাবিবার কোন কিছুই লাগেনা। তার পা এমনিতেই বেঁকে যায়। তাও আবার ভরা মজলিসে বা মানুষের সামনে যেখানে মানুষজনের দৃষ্টি তার দিকেই থাকে। সেজন্য তার জীবনের সঙ্গী ফ্ল্যাট স্লিপার আর স্নিকারস। শাড়ি পড়ার জন্য হাই হিল পড়তেই হয়। সেখানে আবার সাপোর্টে থাকে তানভীর নিজে। শুধু হাই হিল পড়লেই নয় প্রায় সব সময় লাবিবার হাত থাকে তানভীরের হাতের মুঠোয়। এদিক থেকে সেদিক হওয়া যায়না। মনে হয় কোনো বাচ্চা মেয়ে হারিয়ে যাবে তাই মুঠোয় হাত নিয়ে রেখেছে।

এদিকে রোজীকে টেনে বৃষ্টিতে নামিয়েছে লাবিবা। রোজী বার বার বলছে, ‘ দেখো আমি ভিজছি বাড়ির কেউ দেখলে বকাঝকা করবে। এমনিতেই মামুনি রেগে আছে দেখোছোতো। ‘
‘ পেছনের দরজা দিয়ে ঢুকবো। টেনশন করো নাতো। ‘
‘ ভয় লাগছে আমার। যদি জ্বর আসে রাতে?’
‘ পাগলের ডাক্তার তো আছে। হি হি হি। ‘
‘ সেটা নিয়েই তো ভয় হচ্ছে। ভালোভাবে কথাই বলেনা শুধু শুধু রাগ ঝাড়ে। ‘
জানালা দিয়ে সবটাই দেখছে তামিম। তবে তার নজর রোজীর উপরেই ঘুরছে। দ্বিধা কাটিয়ে রোজীও মাতলো লাবিবার সাথে। বৃষ্টির পানি পা দিয়ে জলকেলি খেললো। রোজী বললো, ‘ আমার অভ্যাস নেই। ‘
‘ আমার কাছে নাপা আছে। ‘
‘ কাজ না হলে?’
‘ এসব তো ধারনা মাত্র। এন্টিবায়োটিক দিয়ে দিবো। ‘
‘ আচ্ছা। ঠিক আছে। ‘

ঘন্টা দেড়েক ভেজার পর রুমে ফিরলো রোজী। প্রথমে নামতে চাইছিলো না পরে উঠতেই চাইছিলো না। সেইতো লাবিবাকে টেনে টুনে আনতে হলো। দিনের আলোয় বৃষ্টিতে ভেজার চেয়ে রাতের অন্ধকার আলো মিশ্রিত পরিবেশে ভেজা বেশী ভালোলাগার সৃষ্টি করে। পেছনের দরজা দিয়ে চোরের মতো ঢুকেছে। কেউ দেখতে পায়নি। রোজী না জানলেও লাবিবা জানে আজ ডাইনিং এ সবাই একসাথে ডিনারে বসবেনা। সবাই কাথা মুড়ি দিয়ে ঘুমিয়েছে। যার যার খাবার তার তার রুমেই খাবে। রোজী দরজা খুলেই পা বাড়ালো বাথরুমের দিকে। কিন্তু তামিমকে দেখে থেমে গেলো। ভয় পেয়েও পেলো না। সাহস রাখলো। কি করবে? দুটো বকাই তো দিবে। চোখ বন্ধ করে সহ্য করে নিবে। কিন্তু এতো ভালো সময় কাটাতে তো পারলো। এটা তো মিস করেই যেতো। তামিম বললো,
‘ হলো বৃষ্টি বিলাস করা? ‘
‘ হু। ‘
‘ হাতের মুঠোয় কি?’
রোজী হাত বাড়ালো। লাবিবার দেওয়া মেডিসিন, নাপা। তামিম খেয়াল করলো ফ্লোর ভিজে যাচ্ছে। রোজীর শরীরের ভাজে ভাঁজে লেপ্টে আছে। মেডিসিন না হাতে নিলো। বললো, ‘ চেঞ্জ করে আসো। অনেক ভিজেছো। ঠান্ডা লেগে যাবে। ‘
রোজী যাওয়ার পর তামিম নিজেই ফ্লোরের পানি টুকু মুছলো। রোজী বের হয়ে আসলে নিজেই মেডিসিন বের করে গ্লাস সমেত রোজীর দিকে এগিয়ে দিলো। বললো,
‘ খাও। ‘
রোজী খেলো। টাওয়েলে মোড়ানো চুল গুলো টাওয়েলের উপর থেকেই ঘষতে লাগলো। তামিম নিজে থেকেই হাতে নিলো। খাটে বসিয়ে ভেজা চুলগুলো মুছে দিতে লাগলো। রোজী চোখ তুলে তাকিয়ে আছে তামিমের দিকে। মুগ্ধকর সেই দৃষ্টি। তামিম বাঁকা হাসলো। বললো,
‘ নিজেকে এতোটা স্মার্ট দেখালেও তুমি আদৌ স্মার্ট নও। ‘
‘ স্মার্ট হলে কি করতেন? ভালোবেসে কাছে টেনে নিতেন?’
‘ ধরা যায়। ‘
‘ আমার অভিনয়টা কাঁচা লাগছে?’
‘ এনাফ আছে। ‘
‘ ধরে নিন না। ‘
তামিমের হাত থেমে গেলো। টাওয়েলটা সোফার উপর ছড়িয়ে দিলো। রোজীর চুল গুলো পেছনে ছড়িয়ে দিয়ে চিবুক হাল্কা করে ধরলো। এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে আবদারের সুরে বললো, ‘ তোমায় চুমু খাই?’
রোজী চোখে সম্মতি জানালো। হাত রাখলো তামিমের উরুর উপর। তামিম যত মাথা নামিয়ে আনলো দু চোখ বন্ধ রেখে রোজী ততো ঠোঁট বাড়ালো। এক ইঞ্চি দূরত্বে তামিম থেমে গেলো। দৃষ্টি রাখলো বৃষ্টিতে ভিজে সাদা হয়ে যাওয়া পুরু ঠোটজোড়ার উপর। মৃদু স্বরে বললো,
‘ আমার পবিত্র চুম্বন তোমার কপালেই ঠিক ছিলো। ‘
‘ আপনার ঠোঁটের স্পর্শ আমার শরীরের প্রত্যেকটা স্থানের পবিত্রতা বাড়িয়ে দিতে সক্ষম। ‘
‘ এতোটা এডভান্স হয়ে গেলে!’
‘ আমি আনাড়ি নয়। এক্সপেরিয়েন্স আছে। ‘
তামিম আর কথা বললো না। রোজীর ঘাড়ের পেছনে হাত রেখে ঠোঁটে গভীর স্পর্শ করলো। সময় এবং গভীরতা কতটুকু রোজীকে বুঝিয়েই তারপর ছাড়লো। রোজী জোরে জোরে নিঃশ্বাস নিতে নিতে মাথা এলিয়ে দিলো বিছানায়। তামিম এখনো ঠাঁয় দাঁড়িয়ে। সে নিজেও হাপাচ্ছে। রোজী স্বাভাবিক হবার পর তামিমের চোখে চোখ রাখলো। রোজীর বুক এখনো উঠানামা করছে। তামিম ঠোঁট কামড়ে হাসলো। রোজীকে উদ্দেশ্য করলো , ‘ তো এক্সপেরিয়েন্সড লেডি য়্যার য়্যু রেডি টু মেক সাম লাভ উইথ মি?’
‘ কান্ট। আই উইল রিয়েলি লস। ‘
‘ দেন আই উইল টিচ য়্যু লাইক য়্যুর টিউটর। ‘

চলবে___
@লাবিবা তানহা এলিজা

#ভালোবাসার_কাব্য_গাঁথবো

(৮৩)
বৃষ্টি ভেজা রাস্তায় ছুটে চলেছে সাদা রঙের গাড়ি। ড্রাইভিং সিটে বসে তানভীর। তার পাশের সিটে গা এলিয়ে আছে লাবিবা। তার দৃষ্টি তানভীরের উপর। বলা বাহুল্য তানভীর আজ সেলুন থেকে ফিরেছে। এই দিনগুলোতে এতো এটার্কটিভ লাগে! লাবিবা তো পারলে কামড়ে দাগ বসিয়ে দেয় স্কিনে। রাগ হয়। প্রচুর রাগ। এসব রূপচর্চা নিয়ে বসে থাকে মেয়েরা। লাবিবার মনে হয় সে মেয়ে হয়ে ভুল করেছে। তার হওয়া উচিত ছিলো ছেলে। তাহলে তার সাথে তানভীরের সামঞ্জস্য থাকতো। অসভ্যতামোও করতে পারতো মন মতো। যদিও কম যায় না। ব্যক্তিগত পুরুষ তার যা ইচ্ছে সে তাই করবে। এইযে হাত বাড়িয়ে কানের নিচে তার নরম আঙুলের স্পর্শে আদর করে চলছে। তানভীর কোন রিয়েক্ট ই করছেনা। তার পুরো এটনশন এখন ড্রাইভিং এ। লাবিবার সহ্য হলোনা। পিঠ ঘুরিয়ে শুয়ে পড়লো জানালার দিকে। পা দুটো তুলে দিলো তানভীরের কোলে। গাড়ির ঝাকিতে পা সরে গেলে তানভীর পা উঠিয়ে আগের জায়গায় রাখলো। দেন ড্রাইভিং এ মন দিলো। লাবিবা চোখ কুঁচকে নিলো। এতো চুপচাপ থাকা যায়? তানভীর সাথে আছে। কথা বলে তার মুখটা সচল রাখা লাবিবার উচিত না? স্ত্রীর একটা দায়িত্ব আছে না?

‘ কোথায় যাচ্ছি আমরা?’
তানভীর গাড়ির স্পীড স্লো করে লাবিবার দিকে তাকালো। কোমল মোলায়েম পা দুটো তার কোলে। এক পায়ের উপর আরেক পা তুলে নাচিয়ে যাচ্ছে। ব্লাক জিন্স গুটানো রয়েছে গোড়ালি থেকে দুই টাক উপরে। দুজনের পরনেই সেম সাদা শার্ট। টাইট ফিটিং হওয়াতে লাবিবার গায়ে আঁটসাঁট হয়ে লেগে আছে। চুল গুলো খোলা। মুখের উপর বেবী হেয়ার গুলো দোল খাচ্ছে। তানভীর মুগ্ধ দৃষ্টিতে তাকালো। চোখে চোখ রেখেই হাতের মুঠোয় পায়ের তালুতে প্রচন্ড ভালোবাসা নিয়ে শব্দ করে চুমু খেলো। লাবিবার সারা শরীর শিউরে উঠলো। তৎক্ষনাত পা নামিয়ে নিয়ে সোজা হয়ে বসলো। তানভীরের মতি গতি একদম ভালো না। পরে না চলন্ত গাড়ি এক্সিডেন্ট করে বসে। লাবিবার হাত টেনে তানভীর কোমড় চেপে ধরল। একদম মিশিয়ে নিলো নিজের প্রশস্ত বুকে। মাথায় চুলের উপরেই আরেকটা চুমু খেলো। জানতে চাইলো,
‘ শেষ আপনার করা জ্বালাতন?’
‘ কে কাকে জ্বালাতন করে?’
‘ জানেন না আপনি? হুম? হুম? ‘ বলতে বলতেই রসালো ঠোঁট জোড়ায় আরেকটা চুমু খেয়ে নিলো। লাবিবা লাল হয়ে বুকে মুখ গুজে দিলো। দু হাতে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে ধরলো। ওভাবেই পড়ে থেকে বললো,
‘ এভাবে বৃষ্টি রাতে কোথায় যাচ্ছি আমরা? ‘
‘ দূর থেকে দূরে অন্য কোনো এক শহরে রোমান্টিক একটা ওয়েদারে লং ড্রাইভে আমার রাণীর সাথে। ‘
তানভীর মুখ নামিয়ে নিয়ে ফিসফিসিয়ে বললো, ‘ সাদা শার্টে ভিজলে আমার রাণীকে মারাত্মক দেখাবে। ‘
লাবিবা হাসলো। মাথা ঝাঁকিয়ে বললো, ‘ মাথা খারাপ না হলে। ‘ যদিও তার জীবন চলছে তানভীরের কন্ট্রোলে। তানভীরের কাছে নিজের জীবনকে সে উৎসর্গ করেছে। যার প্রতিটা ক্ষনে ক্ষনে সুখের দেখা মিলে। প্রত্যেকটা কথায় সুখ, প্রত্যেকটা কাজে সুখ। এতো সুখের দেখা সে কখনোই পেতোনা এই মানুষটা জীবনে না এলে। লাবিবার এমন কোনো আবদার নেই যা এই মানুষটা না রাখে। হয়তো একটু দেড়িতে হয়তো সময় সুযোগে। লাবিবা আবদারের ঝুলি নিয়ে বসে। কিন্তু তা মুখ থেকে উচ্চারণ করার আগেই অনেক কিছু পেয়ে বসে। একসময় বিরক্ত লাগতো মানুষ তাকে পড়তে পারে বলে। সে চুপ থাকলেও চোখ ঠিক ই বেইমানি করে। আজ সেই বেইমান চোখকে লাবিবা ভীষন ভালোবাসে। তানভীরকে মনে হয় অন্তযামী। সে সবকিছুই প্রায় জেনে যায়। রাখ ঢাক কিছুই করার সুযোগ থাকেনা।

‘ জানালাটা খুলে দিলে ভালো হতো। মুঠো ভরে বৃষ্টি ছুতাম। ‘
‘ বৃষ্টির ছিটা এসে ভিজে যাবে। ভেজা কাপড়ে ঠান্ডা লাগবে। ‘
‘ লাল চায়ে শরীর গরম করবো। ‘
‘ দোকানপাঠ সব বন্ধ। বাইরে চোখ রাখো। ‘
‘ একটাও খোলা নেই? ‘
তানভীর শহরের দিকে গাড়ি টানলো। যদি কোনো চায়ের দোকান খোলা পাওয়া যায়। পুরো শহর ঘুরে কোনো চায়ের দোকান খোলা পাওয়া গেলো না। কয়েকটা দোকান অবশ্য মাঝে মাঝে চোখ পড়ছিলো সেগুলো ইলেকট্রনিক অথবা মুদি দোকান। মনে হয় বৃষ্টিতে আটকা পড়ে গেছে। সেজন্যই।
‘ বুদ্ধি করে চায়ের ফ্লাক্স নিয়ে বের হওয়া উচিত ছিলো।’
‘ আপনি তো আমাকে একটু সাজুগুজু করার টাইমটুকুও দিলেন না। ‘
তানভীর হাত দিয়ে মাথার চুল এলোমেলো করে দিলো।
‘ আমার মেসি রাণীকে আরো ভালো লাগছে। ‘
‘ একদম না। ‘
‘ য়্যু য়্যার ন্যাচারাল বিউটি। ‘
লাবিবা হাসলো। ‘ সত্যি? আমি ফর্সা নই। মামুনী, রোজ আপুর স্কিন কতো ব্রাইট! ফ্লোরা আপু তো পরী। ‘
‘ পৃথিবীর সব থেকে সুন্দর মেয়েটি আমার রাণী। আমার শ্যামাঙ্গীনি। আমার অর্ধাঙ্গীনি। আমার মনোহরনী। ‘
‘ তাই?’
‘ অন্যকারো বিষয়ে জানার প্রয়োজন বা ইচ্ছা কোনোটাই আমার নাই। আমার দেখা দ্বিতীয় সুন্দরী নারী তুমি। সুন্দরীর খাতায় নাম লেখাতে চাইলে সব দিক থেকে সুন্দর হওয়া চাই। চকচকে স্কিন থাকলেই হয়না। ফ্যাকাশে চামড়ার মেয়েরাও মাঝে মাঝে সৌন্দর্যের শীর্ষে পৌঁছায়। কালো চামড়ার মেয়েরাও বিশ্বসুন্দরী হয়। হৃদয় যদি পবিত্র এবং সুন্দর বাহিরটা এমনিতেই সুন্দর হয়ে উঠে। ছোট বেলায় মমকে হা করে তাকিয়ে তাকিয়ে দেখতাম। কত সুন্দর! তার থেকেও সুন্দর দেখাতো মম আর পাপার ভালোবাসা। দুজন দুজনকে সব কিছু উজাড় করে ভালোবাসছে। পাপার সাফল্যের পেছনে যদি পার্সেন্ট হিসাবে কাউকে মার্ক দেওয়া হয় সিক্সটি পার্সেন্ট মম প্রাপ্য। আজকের যা পজিশন সব মম পাপা একসাথে কাজ করার ফল। প্রত্যেকটা কাজে মমকে দায়িত্ব নিতে হয়েছে। তোমার সাথে পরিচয় আমার সাফল্যের পর। তোমার শুধু দায়িত্ব আমাকে সুখী করা। আমার দিকে ফোকাস করা। আর কিছুই না। নিজের লাইফ যা ইচ্ছা করতে পারো। কোনো বাধা নেই অবশ্যই আমাকে ঘিরেই। ‘
‘ আই লাভ য়্যু। ‘
তানভীর হাসলো। নাকের ডগায় চুমু দিয়ে বললো,
‘ আই লাভ য়্যুর নোজ। ‘

ইলেকট্রনিক একটা দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে লাবিবা। মাথায় তার সাদা ওড়না। কোনভাবে চুলটা ঢেকে ফেলে রেখেছে বুকের উপর। তানভীর ফোনে সিউর হয়ে নিলো। কাঁচের দরজা ঠেলে বললো,’ এসো। ‘
ভেতরে গিয়ে লাবিবা চারদিক চোখ ঘুরালো। এলজি ফ্রিজ এবং টিভি, ওয়াশিং মেশিন, এসি সারিবদ্ধভাবে সাজিয়ে রাখা। মিনিট দুয়েক পর উপরের সিড়ি বেয়ে একটা ছেলে প্রায় দৌড়ে এলো। ছেলেটার উচ্ছাসিত মুখ। তানভীরকে কিছু বলতে যাবে তার আগেই লাবিবার দিকে চোখ পড়লো। সাথে সাথে মাথায় হাত রেখে জিব কাটলো। তানভীর কে পাস করে লাবিবার দিকেই এগিয়ে এলো।
‘ আরে সর্বনাশ! ভাবী সাহেবা যে। বসুন বসুন। ‘
চেয়ার টেনে এগিয়ে দিলো। তানভীরকে বললো,
‘ বেরিয়েছিলি কোথায়? ‘
‘ কোথাও না। ভাবী আছে উপরে? ‘
‘ নাহ। বাপের বাড়ি গিয়েছে। চল উপরে চল। ‘
‘ চা খাওয়াতে পারবি? আদা দিয়ে লাল চা। ‘
‘ আরে হবে। আয় আয়। ‘
তানভীর ঘাড় বাকিয়ে লাবিবার দিকে চোখ রাখলো
‘ দুধচা লাগবে? ‘
‘ লাগবে। ‘
‘ একদিন টেস্ট চেঞ্জ করলে হবেনা?’
‘ না হবে না। ‘
‘ আরে দুধচা, রংচা, আদা চা সব হবে। আয় আয়। ‘ বললো তানভীরের ফ্রেন্ড।
‘ বাসায় ঢুকছি না। এখানেই নিয়ে আয়। ‘
‘ তা কি করে হয়? বাসায় আয় একসাথে চা খাওয়া যাবে। ‘
‘ তোর সাথে খাবো না। বউয়ের সাথে খাবো। বুঝছিস তো?’
বেচারা জিব কাটলো। মেরিড পারসন হওয়া সত্ত্বেও ভুলটা করে যাচ্ছিল। যুগলকে রেখেই উপরে ছুটলো ।
ফিরে এলো চা নিয়ে। লাবিবার হাতে ট্রে টা ধরিয়েই আবার চলে গেলো। লাবিবা চায়ের কাপ হাতে বাইরে চলে এলো। এখন টিপ টিপ বৃষ্টি পড়ছে। গাড়ির দরজা খুলে পা বাইরে ঝুলিয়ে বসলো সিটে। তানভীর গিয়ে দাঁড়ালো তার পায়ের সাথে পা রেখে। দু হাত আটকা পড়লো লাবিবার দুপায়ের মাঝখানে। তানভীর মৃদু হাসলো। সিপ তুললো চায়ের কাপে। দ্বিতীয়বার একসাথেই হয়ে গেলো মৃদু সাউন্ডে। তানভীর তাকাতেই লাবিবা খিলখিল করে হেসে উঠলো। ব্যপারটা প্লানমাফিক ছিলো। পরবর্তী চুমুক গুলো প্ল্যানমাফিক ই হলো। চায়ের কাপ এক্সচেঞ্জ ও করা হলো। তানভীর দুধচাটা ইগনোর করে সবসময় আর লাবিবার র চা পছন্দ না। এখন দুটোই ভালো লাগছে। কোনটাকেই কম রেট দেওয়া যাচ্ছে না। টিপটিপ বৃষ্টি ঠান্ডা ওয়েদার হাতে চায়ের কাপ ভালোবাসাকে নিয়ে লং ড্রাইভ। ভালোলাগার জোয়ারে ভেসে যাচ্ছে মন প্রাণ শরীর। লাবিবা বললো, ‘ এতো সুন্দর একটা মুহূর্ত কাটাবো আজ ভাবতে পারিনি। রোজ আপুর সাথে ভেজার সময়েও ভেবেছিলাম আপনাকে ডিস্টার্ব করবোনা কারণ সকালেই আপনাকে কলেজে যেতে হবে। ‘
‘ উমমম ইটস এ সেলিব্রেশন। ‘
‘ সেলিব্রেশন?’
‘ হুম। ‘
‘ কিসের?’
তানভীর মিট মিট হাসছে। কিন্তু বলছেনা।
‘ বলুন না। ‘
‘ আমার মুখে না আনাই বেটার। ‘
‘ আমি শুনবো। ‘
‘ তারপর আমি কি পাবো? ‘
‘ যা চাইবেন তাই। ‘
‘ যদি আমি কিছুই না চাই?’
‘ আমি বুঝে নিবো। ‘
‘ থ্যাংকস। ‘
‘ মানে কি? কেনো?’
‘ ভাবীকে বৃষ্টিতে ভেজানোর জন্য। ‘
‘ এর জন্য থ্যাংকস কেনো? আপনার তো বকা দেওয়া উচিত। যাদের অভ্যাস নেই তাদের জ্বর আসে। ‘
‘ ভালোতো। ‘
‘ আপুর কি জর এসেছে?’
‘ আসতেই পারে।’
‘ তাহলে ভাইয়া কোথায়? আপুর জর তো কমাতে হবে।’
‘ সাথেই আছে। ‘
‘ ফোন করুন একটা। আপুর জর কি কমেছে?’
‘ কমেছে। ‘
‘ অটোমেটিক জেনে গেলেন?’
‘ হুম ভাইয়া আছে। ‘
‘ ভাইয়া থাকলেই জর কমে যাবে?’
তানভীর চোখ ছোট ছোট করে তাকালো। লাবিবার উত্তেজিত দৃষ্টির দিকে কিছুক্ষণ দৃষ্টি রেখে কপালে ঠোকা দিলো।
‘ টিউবলাইট। ‘
লাবিবা ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলো।মাথায় কিছু আসলো না। ‘ ওমা! কেনো?’
‘ আজকের পর জর জর লাগলে আমাকে ডেকো।’ সোজাসুজি হুমকি। লাবিবার ঠাহর হবার পর নিজেই নিজের মাথা ঠুকে দিলো।বললো,
‘ টিউবলাইট। ‘
তানভীর হো হো করে হেসে উঠলো। লাবিবা একটু লজ্জাই পেলো। গাড়ির ছাদের উপর রাখা চায়ের কাপ ইতোমধ্যে বৃষ্টির ফোঁটায় অর্ধেক পূর্ণ হয়ে গেছে। লাবিবা হাতে নিয়ে এগিয়ে দিলো।
‘ লেটস সেলিব্রেট। চিয়ারর্স?’
‘ চিয়ারর্স। ‘
চা পানি মিশ্রিত বাজে একটা পানীয়তে তারা সেলিব্রেট করলো।

ফেরার পথে লাবিবা গাড়ি থামাতে বললো। গ্ৰাম্য ফাঁকা পিচঢালা রাস্তায় তানভীর গাড়ি থামাতে চাইলো না। লাবিবা জেদ করলো। গাড়ি থামতেই বেরিয়ে এলো গাড়ি থেকে। তানভীর ডাকলো,
‘ জান ভালো বৃষ্টি হচ্ছে ভেজো না।’
লাবিবা কথা শুনলে তো। হেঁটে হেঁটে এগিয়ে যেতে লাগলো। তানভীর ও পেছন পেছন গাড়ি নিয়ে এলো। রাস্তার মোড়ে বড় খাম্বার উপর বৈদ্যুতিক বাল্ব। আবছা আলো পড়ছে রাস্তার চারিপাশে। লাবিবা গিয়ে সেখানে দাঁড়ালো। আকাশের দিকে তাকাতেই বৃষ্টির ফোঁটা মুখে পড়লো। লাবিবা হা করে মুখে নেয় সেই পানি। ভিজে গেছে সে পুরোপুরি। জুবুথুবু অবস্থা। সাদা শার্ট এখন টান্সপারেন্ট। তানভীর গাড়ি থেকে নেমে আসতে আসতেই লাবিবা সটানে শুয়ে পড়লো। তানভীর বুঝলো একে উঠানো সম্ভব না। কিছু সেকেন্ড দাঁড়াতেই লাবিবা বললো, ‘ ভীষন ভালো লাগছে। ‘
‘ একদিনেই এতো না ভিজলে হতো না?’
‘ আমি তো চাওয়াটা পূরণ করলাম। পাগল বোধহয় এবার হয়েই গেলাম। ‘
‘ তুমি আসলেই একটা মেড। ‘
তানভীর ও শুয়ে পড়লো। তবে লাবিবার উপরেই। লাবিবা হচকালো।
‘ রাস্তা একদম মসৃণ। ব্যথা লাগে নাতো। ‘
‘ আমার পঞ্জের বেড ছেড়ে আমি কেনো পিচের উপর সুতে যাবো?’
লাবিবা খিল খিল করে হেসে উঠলো।
‘ আপনাকে নিতে এই স্পঞ্জের দফা রফা হয়ে যায়। ‘
‘ যাক। ‘
‘ মায়া দয়া নেই। ‘
‘ আছে। তাই এতো যত্ন নিই। মারাত্মক লাগছে। রাত শেষ হতে চললো।তাড়াতাড়ি বাসায় চলো। ‘
‘ এখানেই আদর করুন। ‘
‘ আচ্ছা। গাড়িতে চলো। ‘
‘ এখানেই। এই বৃষ্টির রাতে রাস্তার মাঝখানে। ‘
‘ নো ওয়ে। ফ্যান্টাসি কমাও।তোমাকে নিয়ে নো রিস্ক। ‘
‘ আমিতো আমার সব ফ্যান্টাসি ফুলফিল করবো। আপনার ইচ্ছা না থাকলে গাড়ি ঐ দিকে। ‘
‘ আচ্ছা! তাই না? এতো সাহস? ‘
লাবিবা হাসতে হাসতে মাথা নাড়ালো।
‘ হ্যা। এতোই সাহস। ‘
হঠাৎই জোর বৃষ্টি পড়া শুরু হলো। ঘন বর্ষনে আলোর নিচেও ঝাপসা করে দিলো তানভীর লাবিবাকে। খালি চোখে কাছাকাছি দাড়িয়েও কেউ দৃষ্টিগোচর করতে পারবেনা তাঁদেরকে।

চলবে___
@লাবিবা তানহা এলিজা