#ভালোবাসার_চেয়েও_বেশি💞💞
#লেখিকা- Mehruma Nurr
#পর্ব-৩৯
★ ভোরের মিষ্টি আলো জানালা দিয়ে নূরের চোখে পরতেই রোজকার অভ্যাস অনুযায়ী নূরের ঘুম ভেঙে গেল। নূর আড়মোড়া ভেঙে চোখ খুলে তাকালো। আজকের সকালটা ওর কাছে যেন অনেক সুন্দর লাগছে। কাল রাতের কথা মনে হতেই নূর লজুক হেসে দুই হাত দিয়ে মুখ ঢেকে ফেললো। ওর জীবনেও যে এত সুখ আসতে পারে। এটা কখনো কল্পনাও করেনি নূর।
নূর বেড থেকে নেমে ওয়াশরুমে যেয়ে ফ্রেশ হয়ে এসে নামাজ পড়ে নিল। নামাজ শেষ করে নূর কতক্ষণ শুয়ে রইলো। কিন্তু ঘুম আসছে না। রোজ এইসময়ে নূর বাসার সব কাজ করে। কিন্তু এখানে তো কোনো কাজ নেই। আদিত্য নূরকে কোনো কাজ করতে দেখলেই ভীষণ রেগে যায়। তাইতো কাকিও নূরকে কোনো কাজ করতে দেয় না। আবার ঘুমও আসছে না। নূর কতক্ষণ এপাশ ওপাশ করে ঘুমানোর চেষ্টা করলো। নাহ্ কিছুতেই ঘুম আসছে না।
নূর আর না পেরে বেড থেকে উঠে পরলো। দরজা খুলে বাইরে বেড়িয়ে এলো। বাইরে এসে দেখলো কেউই নেই। কাকিও এখনো আসেনি। নূর কতক্ষণ একা একাই বাইরে বাগানে হাঁটাহাঁটি করলো।
একঘন্টা হাটাহাটির পর নূরের আর ভালো লাগলো না। নূর আবারও বাসার ভেতরে ঢুকলো। হঠাৎ ওর আদিত্যের কথা মনে হলো। নূর ধীর পায়ে আদিত্যের রুমের দিকে এগিয়ে গেল।
আদিত্যের রুমের দরজায় এসে দরজাটা হালকা করে ঠেলে দেখলো দরজা খোলায় আছে। নূর আস্তে করে দরজাটা খুললো। পা টিপে আস্তে করে ভেতরে ঢুকলো। ভেতরে ঢুকে দেখলো আদিত্য খালি গায়ে উপর হয়ে শুয়ে আছে। নূর আস্তে করে আদিত্যের পাশে বেডের ওপর বসলো।
নূরের আদিত্যের ঘুমন্ত চেহারাটা দেখতে লাগলো। ঘুমন্ত অবস্থায় আদিত্যকে দেখতে আরো সুন্দর লাগছে। লম্বা সিল্কি চুলগুলো এলোমেলো হয়ে কপালের উপর পরে আছে। ফর্সা উন্মুক্ত শরীরে আদিত্যকে আরো আকর্ষণীয় লাগছে নূরের কাছে। নূর ঘোর লাগা দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে আদিত্যের দিকে। নূর আস্তে করে নিজের হাতটা উঠিয়ে আদিত্যের মাথায় রাখলো। আলতো করে আদিত্যের সফট চুলের ভেতর হাত বোলাতে লাগলো। আদিত্যের চুলগুলো নূরের খুব ভালো লাগে। কি সুন্দর সফট মোলায়েম চুল। নূরের কেমন ঘোর লেগে যাচ্ছে। নূর একটু ঝুঁকে আদিত্যের ঘাড়ের কাছে নাক নিয়ে আদিত্যের শরীরের সেই মন মাতানো ঘ্রাণটা নাক টেনে নিতে লাগলো।
কিছুক্ষণ পর আদিত্য হালকা নড়ে উঠলো। নূরের এবার ঘোর কাটলো। আমাকে এখন এখানে দেখে ফেললে উনার সামনে লজ্জায় পরতে হবে। কথাটা ভেবে নূর তাড়াতাড়ি করে ওখান থেকে চলে যেতে নেয়।
কিন্তু নূর যেতে পারে না। তার আগেই আদিত্য ঝট করে নূরের হাত ধরে টেনে বিছানায় চিৎ করে ফেলে দেয়। তারপর নূরের ওপর এক হাত পা উঠিয়ে দিয়ে নূরকে জাপ্টে ধরে নূরের গলায় মুখ গুঁজে দিলো।
নূর কোনো কিছু বুঝে উঠার আগেই এসব হয়ে গেলো। আচমকা এমন হওয়ায় নূর থতমত খেয়ে গেল। নূর কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বলে উঠলো।
…..কি কি ক করছেন? ছা ছাছাড়ুন প্লিজ।
আদিত্য নূরের গলায় নাক ডুবিয়ে নূরের শরীরের ঘ্রাণ নিল।তারপর নূরের কানের কাছে এসে লো ভয়েসে বললো।
…..আমিতো আর তোমার কাছে যায়নি তুমিই এসেছো আমার কাছে। তাহলে কিসের ছাড়াছাড়ি? তুমি আমার ঘুম ভাঙিয়েছো, এখন তুমিই ঘুম পাড়িয়ে দিবে।
কথা বলার সময় বারবার আদিত্যর গরম নিঃশ্বাস আর ঠোঁটের ছোঁয়া নূরের কানে আর ঘাড়ে পড়ছে। নূরের সারা শরীর শিনশিন করে কেঁপে উঠে চোখ বন্ধ করে নিল। নূর কম্পিতো স্বরে আবার বলে উঠলো।
….তা তারমানে আ আপনি জেগে ছিলেন এতক্ষণ?
আদিত্য নূরের গলায় নাক ঘষে নেশাক্ত কন্ঠে বললো।
…..উহুম,শুধু এতক্ষণ না। আমার ঘুমতো তোমাকে দেখার পর থেকেই চলে গেছে। যেদিন থেকে তোমাকে দেখেছি সেদিন থেকেই তুমি আমার ঘুম কেড়ে নিয়েছো। একটা রাতও আমাকে শান্তিতে ঘুমাতে দেওনি অনেক জ্বালিয়েছো আমাকে। তাই আজ তুমিই আমাকে শান্তি মতো ঘুম পাড়িয়ে দিবে। আর যতক্ষণ আমি ঘুমাবো ততক্ষণ তুমিও আমার সাথেই থাকবে। একদম উঠে যাওয়ার চেষ্টা করবে না।
কথাগুলো বলেই আদিত্য নূরের গলায় একটা ডিপলি চুমু খেল।
আদিত্যের ছোঁয়ায় নূর আবারও কেঁপে উঠলো।
আদিত্য নূরের কানের কাছে মুখ নিয়ে লো ভয়েসে বললো।
….আমি এখন শুধু ঘুমাতে চাই। তোমার কাপাকাপি কিন্তু আমাকে অন্যকিছু করতে বাদ্ধ করবে।
নূর পরে গেছে বিপাকে মনে মনে নিজেকেই বকতে লাগলো। কি দরকার ছিল তোর এখানে আসার? নাচতে নাচতে এখানে চলে এলি।এখন ফেঁসে গেলিত? বোঝ মজা।
নূরের ভাবনার মাঝেই আদিত্য আবার বলে উঠলো।
….নিজেকে বকা শেষ হলে আমার মাথায় বুলিয়ে আমাকে ঘুম পারিয়ে দেও।
কথাটা বলেই আদিত্য নূরের হাতটা ধরে নিজের মাথায় রাখলো।
নূর বেচারি আর কি করবে। এখান থেকে যে ছাড়া পাওয়ার কোনো উপায় নেই। সেটা ভালোই বুঝতে পারছে ও। তাই নূর আর কিছু না বলে আদিত্যের মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগলো। পাঁচ মিনিট পর আদিত্যের ঘন নিশ্বাসের শব্দে নূর বুঝতে পারলো আদিত্য ঘুমিয়ে পরেছে। নূর মুচকি হেসে আদিত্যের চুলে বিলি কেটে দিতে লাগলো। এভাবে একসময় নূর নিজেও ঘুমিয়ে পরলো।
————————————–
তাসির মাত্রই জগিং থেকে ফিরেসে। বাসায় ঢুকে ওর মাকে কফি দিতে বলে উপরে নিজের রুমে গেল ফ্রেশ হতে।
তাসির শাওয়ার নিয়ে ওয়াশরুম থেকে একটা তোয়ালে পরে বের হলো। আয়নার সামনে যেয়ে নিজের চুল ঝাড়তে লাগলো।
একটু পরে হঠাৎ তাসিরের সামনে কেউ কফির মগ ধরলো। তাসির মনে করলো ওর মা হয়তো কফি নিয়ে এসেছে। তাসির মুচকি হেসে কফির মগটা হাতে নিল। মুখে কফি নিতেই পাশ থেকে মেয়েলি কন্ঠে কেউ বলে উঠলো।
……কফি কেমন হয়েছে সোয়ামী,,
হঠাৎ করে এমন উদ্ভট কথা শুনে তাসিরের কাশি উঠে গেলো। তাসির পাশে তাকিয়ে দেখলো একটা মেয়ে শাড়ি পরে ইয়া বড়ো ঘোমটা নিয়ে দাড়িয়ে আছে। তাসির কোনরকমে কাশি থামিয়ে ভ্র কুঁচকে বললো।
….কে আপনি? এখানে কেন এসেছেন? আর, কি আবোল তাবোল বলছেন?
মেয়েটি ঘোমটার ভেতর থেকে বললো।
… আরে কি বলেন এসব? তওবা তওবা। সোয়ামী হয়ে নিজের বউকেই চিনছেন না? এটা কেমন ধরনের কথা? আর আমি এখানে কি করছি মানে? আমার সোয়মীর রুমে আসবেনা তো কে আসবে?
তাসির যেন আকাশ থেকে পড়লো। কি বলে এই মেয়ে? তাসির থতমত খেয়ে বললো।
….কি কিকি বলছেন এসব? কে আপনার সোয়ামী? আপনাকে তো আমি চিনিই না।
হঠাৎ মেয়েটা নিজের ঘোমটা ফেলে দিয়ে বললো।
….এখ চিনেছেন সোয়া…..মী।
মেয়েটিকে দেখে তাসির ভ্যাবাচেকা খেয়ে গেল। অপ্রস্তুত হয়ে বললো।
…সানাহ? তুমি? তুমি এখানে কি করছো? আর এসব নাটকের মানে কি?
সানা লাজুক হেসে হেলেদুলে বললো।
…নাটকের কি দেখলেন? আসলে আমি ভবিষ্যতের প্রাকটিস করছিলাম। ভবিষ্যতে তো বউ হয়ে এসে আমাকেই এসব করতে হবে তাই না?
তাসির ভ্রু কুঁচকে বললো।
…..মানে? কি বলছো এসব? দেখ তোমাকে আমার রুমে এভাবে কেউ দেখে ফেললে খারাপ ভাববে। তাই তুমি এখান থেকে যাও প্লিজ।
সানা দুষ্টু হেসে তাসির কাছে আসতে আসতে বললো।
….দেখলে দেখুক। তাতে আমার আরো ভালো। এমনিতেই আমাকে আপনার বাবা মা অনেক পছন্দ করেন। এখানে আপনার সাথে আমাকে দেখে তারা খুশী হয়ে আমাদের বিয়ে দিয়ে দেবেন। এতে দুজনেরই সুবিধা হয়ে যাবে তাইনা?
কথা বলতে বলতে সানা তাসিরের একদম কাছে চলে আসলো।
সানার এভাবে কাছে আসা দেখে তাসির পেছাতে লাগলো। পেছাতে পেছাতে দেয়ালের সাথে ঠেকে গেল। আর পেছানোর জায়গা নেই। সানা তাসিরের কাছে এসে তাসিরের দুইপাশে দুই হাত দিয়ে তাসিরের দিকে ঝুকে দাঁড়ালো। তাসির দেয়ালের সেটে দাঁড়িয়ে শুকনো ঢোক গিলে বললো।
….দে দে দেখ এসব কি বলছ? তো তোমার এখান থেকে চলে যাওয়া উচিৎ।
সানা ঠোঁট কামড়ে দুষ্টু হেসে বললো।
…. কেন? ভয় লাগছে বুঝি? আপনার চোখে তো আমি একটা পিচ্চি। তাহলে আমাকে দেখে কিসের ভয়?
সানা তাসিরের উন্মুক্ত বুকে নিজের তর্জনী আঙ্গুল দিয়ে স্লাইড করে এক চোখ টিপ দিয়ে আবেদনী ভঙ্গিতে বললো।
…..বায়দা ওয়ে আপনাকে কিন্তু খালি গায়ে সেই হ…….ট লাগছে। ঠোট দুটো গোল ওর মতো করে টেনে কথাটা বললো সানা।
তাসিরের এবারে মনে পরলো যে ও এতক্ষণ খালি গায়ে আছে। কথাটা মনে আসতেই তাসির তড়িঘড়ি করে দুই হাত দিয়ে সানাকে ধরে সরিয়ে দিল। দৌড়ে যেয়ে কাবার্ড থেকে টিশার্ট বের করে পরে নিল।
সানা পেছন থেকে হেসে দিয়ে বললো।
….এখন আর ঢেকে কি লাভ?আমিতো সব দেখেই ফেলেছি।
তাসির সানার দিকে তাকিয়ে একটু গম্ভীর কণ্ঠে বললো।
…..সানা অনেক হয়েছে। ছেলে মানুষির একটা সিমা আছে। কি শুরু করেছো এসব? তুমি এখান থেকে চলে যাও প্লিজ।
কথাটা বলেই তাসির ওখান থেকে সরে যেতে নিলেই সানা ওর হাত টেনে ধরে সিরিয়াস ভঙ্গিতে বলে উঠলো।
….আপনি কি ভেবেছেন , আপনি আমাকে যে ভালোবাসেন সেটা কি আমি জানিনা?
সানার কথায় তাসির থতমত খেয়ে গেল। আমতা আমতা করে বললো।
…কি কি বলছো এসব? এ এএমন কিছুই না। তুমি ভুল ভাবছো।
সানা বললো।
….ভুল আমি না, আপনি ভুল ভাবছেন। আপনি ভাবছেন হয়তো আমি ছোট মানুষ। আমি এসব বুঝবো না, আপনার ভালোবাসাকে বুঝবো না। আর আমি সেটাই প্রমাণ করতে চাই আপনি ভুল ভাবছেন। আপনার চোখের ভাষা আমি বুঝতে পারি। আপনার অনূভুতি গুলোও আমি বুঝতে পারি। তাহলে আপনি কেন আমার অনূভুতি গুলো বুঝতে পারেন না? কেন বুঝতে পারেন না যে আমিও আপনাকে ভালোবাসি?
সানার মুখে ভালোবাসি কথা শুনে তাসির চমকে তাকালো সানার দিকে।
সানা তাসিরের কলার চেপে ধরে করুন সুরে বললো।
….বলুন কেন এমন করেন আমার সাথে? আমি যতো আপনার কাছে আসতে চাই আপনি ততই দূরে সরে যান। আমি ফোন করলে ফোন ধরেন না। ম্যাজেস দিলে রিপ্লাই করেন না। কেন এমন করেন? আর কিভাবে আপনাকে বুঝাবো যে আমি কোনো ছোট্ট খুকি না। বলুন কিভাবে বুঝাবো?
একটু থেমে তাসিরকে ছেড়ে দিয়ে আবার বলে উঠলো।
…..ঠিক আছে দরকার হলে আমি আপনাকে শারীরিক ভাবেই বুঝিয়ে দেব যে আমি কোনো ছোটো বাচ্চা নই।
কথাটা বলেই সানা নিজের বুকের ওপর থেকে শাড়ির আচলটা একটানে সরিয়ে নিল।
তাসির এবার রেগে যেয়ে সানার গালে ঠাস্ করে একটা চড় মেরে দিল। তারপর চোয়াল শক্ত করে বললো।
….কি করছো এসব? পাগল হয়ে গেছো তুমি?
সানা গালে হাত দিয়ে ছলছল চোখে তাসিরের দিকে তাকালো। তারপর নিজের আঁচল আবার ঠিক করে নিয়ে তাসিরকে কিছু না ওখান থেকে চলে যেতে নেয়।
তাসিরের এবার খুব গিল্টি ফিল হচ্ছে। তাসির সানার সামনে এসে অপরাধী সুরে বলে উঠলো।
…..সানা আই এ্যাম সর,,,,,,
তাসিরের কথা শেষ হওয়ার আগেই সানা হাত উঠিয়ে তাসিরকে থামিয়ে দিয়ে বললো।
…..আপনি কেন সরি বলছেন? দোষ তো আমার। আমিই আপনার পেছনে পরে আছি। তবে চিন্তা করবেন না। আজকের পর থেকে আর আপনাকে ডিস্টার্ব করবো না। আর না আপনার সামনে আসবো। ভালো থাকবেন।
কথাগুলো বলেই সানা হনহন করে ওখান থেকে চলে গেলো।
তাসির নিজের চুল টেনে ধরে বেডের ওপর বসে পরলো। মনে মনে ভাবলো,মেয়েটার সাথে এতটা রুড হওয়া ঠিক হয়নি আমার। মেয়েটা বোধহয় অনেক কষ্ট পেয়েছে। এখন কি করবো আমি?
———————————-
সকাল ১০ টা
ঘুম ভেঙে চোখ খুলে তাকালো নূর। চোখ খুলে তাকাতেই দেখলো আদিত্য এক হাতে মাথা রেখে নূরের ওপর ঝুঁকে অপলক চোখে তাকিয়ে আছে ওর দিকে।
নূর ভীষণ লজ্জায় পরে গেলো। চোখ নামিয়ে আমতা আমতা করে বললো।
…..আ আ আপনি উঠে পরেছেন তাহলে আমাকে ডাকলেন না কেন?
আদিত্য নূরের গালে হাত রেখে বৃদ্ধাঙ্গুল দিয়ে গালে স্লাইড করে নেশাক্ত কন্ঠে বললো।
….তোমার এই ঘুমন্ত মুখটা এতো সুন্দর আর মায়াবী লাগছিলো যে জাগানোর ইচ্ছাই হচ্ছিল না। ইচ্ছে করছিল শুধু চেয়ে চেয়েতাই দেখি। সত্যি আমি বুঝতে পারিনা আর কতো রুপ আছে তোমার? আর কতো রুপে আমাকে পাগল করবে তুমি? তোমার এই ঘুমু ঘুমু চেহারা এলেমেলো চুল কতজে সুন্দর লাগছে বলে বুঝাতে পারবো না।
নূর চরম লজ্জায় পরে গেলো। লজ্জায় আদিত্যর দিকে তাকাতেই পারছে না। চোখ দুটো এদিক ওদিক ঘোরাতে লাগলো।
আদিত্য আবার বলে উঠলো।
…. এইযে এখন লজ্জায় লাল হয়ে যাচ্ছো। জানো তোমার এই লাজুক চেহারাটা কতো সুন্দর লাগে দেখতে? একদম পাকা টমেটোর মতো লাগছে। ইচ্ছে করছে কামড়ে খেয়ে ফেলি।
নূর সাথে সাথে দুই হাতে নিজের মুখ ঢেকে ফেলে বললো।
….ছিহ্ আপনি দিনে দিনে প্রচুর অসভ্য হয়ে যাচ্ছেন।
আদিত্য শরীর কাঁপিয়ে হেসে দিয়ে বললো।
….অসভ্যের তো এখনো কিছু করলামই না। বিয়ের পরে দেখাবো অসভ্য কতো প্রকার ও কি কি।
নূর বুঝতে পারছে এভাবে ও এখান থেকে ছাড়া পাবে না। তাই ছাড়া পাওয়ার জন্য বাহানা করে বললো।
….স সরুন আমার ক্ষুধা লেগেছে।
ক্ষুধার কথা শুনে আদিত্য নূরের কপালে চুমু দিয়ে বললো।
…..ঠিক আছে যাও ফ্রেশ হয়ে এসো। তারপর আমরা একসাথে ব্রেকফাস্ট করবো।
কথাটা বলে আদিত্য নূরের ওপর থেকে সরে গেল।
নূর মাথা ঝাকিয়ে বেড়িয়ে গেলো।
ব্রেকফাস্ট টেবিলে নূর নাস্তা করতে করতে বললো।
….আমি ক্যাম্পাসে কবে থেকে যাবো? আমার ক্লাস মিস হয়ে যাচ্ছে তো।
আদিত্য বললো।
….তুমি ভালো করে পুরোপুরি সুস্থ হও। তারপরে আমি তোমাকে নিয়ে যাবো। আর চিন্তা করোনা আমি তানিকে বলে দিয়েছি তোমার জন্য ইম্পর্ট্যান্ট সবকিছু নোট করে রাখবে। ঠিক আছে?
নূর মাথা ঝাকিয়ে বললো।
…হুম।
ব্রেকফাস্ট শেষে আদিত্য নূরের দিকে তাকিয়ে বললো।
….আমার একটু অফিসে যেতে হবে। সন্ধ্যার দিকে চলে আসবো। বাসায় কাকি আছে । আর কোনো কিছু দরকার হলে আমাকে ফোন দিয়ো ঠিক আছে?
নূর মাথা ঝাকিয়ে সায় দিল।
আদিত্য মুচকি হেসে নূরের গালে হাত রেখে কপালে ভালোবাসার পরশ দিয়ে বললো।
….তোমার কোনো কিছু লাগলে আমাকে বলো। আমি আসার সময় নিয়ে আসবো।
নূর মাথা নাড়িয়ে বললো।
…না কোনো কিছু লাগবে না।
আদিত্য বললো।
….ঠিক আছে আমি তাহলে আসি।
কথাটা বলে আদিত্য বেড়িয়ে গেলো।
————————————-
সন্ধ্যা ৭ টা
বাসার কলিং বেল বাজতেই নূর খুশী হয়ে দৌড়ে গেল দরজা খুলতে। ও জানে এখন আদিত্যই এসেছে। নূর যেয়ে হাসি মুখে দরজা খুলে দিল।
দরজা খুলতেই নূরের হাসি মুখটা দেখে আদিত্যের সারাদিনের সব ক্লান্তি ছু মন্তর হয়ে গেলো আদিত্য মুচকি হেসে নূরের কাছে এসে নূরের দুই গালে হাত দিয়ে বললো।
….আমার প্রাণপাখী টা মনে হচ্ছে আমাকে অনেক মিস করেছে তাইনা?
নূর লাজুক হেসে মাথা নিচু করে ফেললো।
আদিত্য এদিক ওদিক তাকিয়ে দেখলো কাকি কোথাও আছে নাকি। কাউকে না দেখে আদিত্য মুচকি হেসে নূরকে দুই হাতে কোলে তুলে নিল।
নূর আদিত্যের গলা জড়িয়ে ধরে বুকে মাথা রাখলো। ও সত্যিই সারাদিন আজ আদিত্যকে অনেক মিস করেছে। সারাদিন ওর সময়ই কাটছিলো না।শুধু অপেক্ষা করছিলো কখন আদিত্য আসবে। আদিত্য যেন ধীরে ধীরে নূরের অভ্যাসে পরিণত হয়ে যাচ্ছে। আদিত্যকে ছাড়া কিছুই ভালো লাগে না ওর।
আদিত্য নূরকে কোলে নিয়ে এসে সোফায় বসলো।
নূর এখনো আদিত্যের বুকেই মাথা দিয়ে আছে। লজ্জায় আদিত্যের দিকে তাকাতে পারছে না।
আদিত্য বলে উঠলো।
….সারাদিন কেমন কাটলো আমার নূরপাখি টার। কোনো সমস্যা হয়নি তো?
নূর আদিত্যের বুকের মাঝেই মাথা নাড়ালো।মানে না।
আদিত্য আবার বলে উঠলো।
….আচ্ছা কাকি কোথায়?
নূর আদিত্যের বুকের মাঝে মাথা রেখেই বলে উঠলো।
….উনার ছেলে নাকি অসুস্থ। তাই আমিই উনাকে বাসায় পাঠিয়ে দিয়েছি।
….ওহহ।আচ্ছা ঠিক আছে।
কিছুক্ষণ পর নূর আদিত্যের বুকের ওপর থেকে মাথা তুলে বললো।
….আপনি ফ্রেশ হয়ে আসুন। আমি টেবিলে ডিনার সার্ভ করছি।
কথাটা বলে নূর আদিত্যের কোল থেকে নেমে দাড়ালো।
আদিত্য মাথা ঝাকিয়ে বললো।
…..ঠিক আছে।
রাত ৯ টা
নূর একটু আগেই ডিনার সেরে এসেছে। ওষুধ খেয়ে বেডের ওপর বসে মোবাইলে একটু ঘাটাঘাটি করছিলো। এমন সময় ওর দরজায় নক পরলো। নূর জানে আদিত্য ছাড়া আর কেউ হবে না। তাই মুচকি হেসে বললো।
…দরজা খোলায় আছে ভেতরে আসুন।
আদিত্য দরজা খুলে রুমের ভেতরে ঢুকলো।
নূর তাকিয়ে দেখলো আদিত্যের হাতে অনেক গুলো সপিং ব্যাগ। নূর জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললো।
…এসব কি?এতো গুলো ব্যাগ কিসের?
আদিত্য ব্যাগগুলো নূরের বেডের ওপর রেখে মুচকি হেসে বললো।
….এগুলো তোমার জন্য। এখানে তোমার জন্য কিছু ড্রেস আর তোমার দরকারি কিছু জিনিস আছে। তুমি নিজের থেকে তো আর কিছু বলবে না। তাই আমি আমার আন্দাজমতো এসব নিয়ে এসেছি। পরে আবার তোমাকে নিয়ে যাবো শপিংয়ে। তখন তোমার যা যা লাগে সবকিছু কিনে নিও।
নূর চোখ বড়ো বড়ো করে বললো।
…আরো কিনবো? এখানেই যা জামাকাপড় আছে সেগুলোই তো পড়ে শেষ করতে পারবো না। এতো জামাকাপড় আমি কখন পড়বো। কি দরকার ছিল শুধু শুধু এতো টাকা নষ্ট করার।
আদিত্য একটা প্যাকেট নূরের সামনে ধরে বললো।
…এসব ফালতু কথা বলে আমার মুড নষ্ট করো নাতো? ওসব বাদ দিয়ে এই প্যাকেট টা হাতে নিয়ে এর ভেতরে যা আছে সেটা পরে এসো।
…..কি আছে এতে?
….হাতে নিয়ে ওয়াশরুমে যেয়ে দেখো কি আছে। আর এটা এখুনি পরে এসো। আমরা বাইরে যাবো।
….এতো রাতে কোথায় যাবো?
আদিত্য একটু বিরক্তির স্বরে বললো।
….উফফ এতো প্রশ্ন করো কেন তুমি? যা বললাম তাই করো যাও এটা পরে এসো। আর কোথায় যাবো সেটা গেলেই দেখতে পাবে।
নূর আর কিছু না বলে মাথা ঝাকিয়ে প্যাকেট টা হাতে নিয়ে ওয়াশরুমের দিকে গেল।
আদিত্য ততক্ষণে নিজের রুমে যেয়ে রেডি হতে লাগলো।
নূর প্যাকেট টা খুলে যা দেখলো সেটা দেখে ও চিন্তায় পড়ে গেল। মনে মনে ভাবলো, এটা আমি কিভাবে পরবো?
আদিত্য রেডি হয়ে নূরের রুমে এসে দেখলো, নূর এখোনো বের হয় নি। আদিত্য ওয়াশরুমের দরজায় নক করে বললো।
…নূর, কি হলো এতো সময় লাগছে কেন? তাড়াতাড়ি বের হও।
কিছুক্ষণ পর নূর ওয়াশরুমের দরজা খুলে বের হলো। নূরকে দেখে আদিত্য ভ্রু কুঁচকে বললো।
….এসব কি?
চলবে….
#ভালোবাসার_চেয়েও_বেশি 💞💞
#লেখিকা-Mehruma Nurr
#পর্ব-৪০
★ আদিত্য ভ্রু কুঁচকে বললো।
….এসব কি?তুমি এখনো ড্রেস চেঞ্জ করোনি কেন?
নূর মাথা নিচু করে আমতা আমতা করে বললো।
…আ আসলে আমি শাড়ী পরতে পারিনা।
হ্যাঁ আদিত্য নূরের জন্য একটা নীল রংয়ের শাড়ি এনেছে।
আদিত্য নূরের দিকে তাকিয়ে বললো।
….কেন তুমি না নবীন বরনের দিন শাড়ী পরেছিলে? আবার কালও তো কত সুন্দর করে শাড়ী পরেছিলে। তাহলে?
…..নবীন বরণের দিন তানি শাড়ী পরিয়ে দিয়েছিল।আর কালতো কাকি শাড়ী পরিয়ে দিয়েছিল। আমি নিজে নিজে পরতে পারি না।
আদিত্য মুচকি হেসে বললো।
….তো এতে এতো মন খারাপ করার কি আছে? চলো আমি তোমাকে পরিয়ে দিচ্ছি শাড়ী।
নূর চমকে তাকিয়ে বললো।
….আ আআপনি?
….হ্যাঁ আমি। এখানে কি অন্য কেউ আছে নাকি?
….আপনি পারেন শাড়ী পরাতে?
……না পারলে কি আর বলছি নাকি? এক হিসেবে ভালোই হয়েছে য, তুমি শাড়ী পরতে পারোনা। এখন থেকে শুধু আমার নূরপাখিকে আমিই শাড়ী পরিয়ে দেব। অন্য কেউ না।
নূর সন্দেহ দৃষ্টিতে আদিত্যের দিকে তাকিয়ে বললো।
…..আপনি কিভাবে জানেন শাড়ী পরানো? আগেও কাউকে পরিয়েছেন নাকি শাড়ি?
আদিত্য দুষ্টুমি করে বললো।
….হ্যাঁ পরিয়ছিতো। একজনকে অনেকবার শাড়ী পরিয়ে দিয়েছি। ইনফ্যাক্ট তাকে পরানোর জন্যই শাড়ী পরানো শিখেছিলাম।
আদিত্যর কথায় নূরের চোখ দুটো ছলছলে হয়ে উঠলো। নূর অভিমানী সুরে বললো।
….ঠিক আছে, তাকেই গিয়ে পরান বেশি করে। আমাকে পরানোর দরকার নেই। আমি শাড়িই পরবো না।
কথাটা বলেই নূর রাগ করে ওখান থেকে চলে যেতে নিলেই, আদিত্য মুচকি হেসে নূরের হাত ধরে টান দিয়ে নিজের সাথে মিশিয়ে নেয়। নূরের পিঠ ঠেকে যায় আদিত্যের বুকের সাথে। আদিত্য নূরের দুই হাতের ওপর দিয়ে নিজের দুই হাত দিয়ে, নূরের হাতের আঙ্গুলের ভেতর নিজের আঙুল ঢুকিয়ে নূরের পেটের ওপর হাত ভাজ করে চেপে ধরে। নূরের কানের কাছে মুখ নিয়ে বললো।
….সবকিছু এক লাইন বেশি বুঝো কেন তুমি হুম? আরে পাগলি আমিতো সানার কথা বলছি। মা ছিলোনা তাই সানার ছোট বড়ো সব আবদার আমাকে আর বাবাকেই পুরোন করতে হতো। সানা ছোটবেলায় অনেক শাড়ী পরার জিদ করতো। তাই ওকে শাড়ী পরিয়ে দেওয়ার জন্যই আমি শাড়ী পরানো শিখেছিলাম। বুঝতে পেরেছো পাগলি? এখন যাও ব্লাউজ আর পেটিকোট টা পরে এসো। আমি শাড়ী পরিয়ে দিচ্ছি। আর হ্যাঁ ভয় পেয়োনা আমি চোখ বন্ধ করে নিবো। এখন সময় নষ্ট না করে জলদি যাও।
নূর লাজুক হেসে মাথা নিচু করে ঝাকালো। মানে ঠিক আছে।
আদিত্য মুচকি হেসে নূরের কানে একটা চুমু দিয়ে ছেড়ে দিলো। সাথে সাথে নূর দৌড়ে ওয়াশরুমে চলে গেলো।
একটু পরে নূর ওয়াশরুমের দরজা হালকা খুলে শুধু মাথা বের করে দিয়ে বললো।
…হ হয়ে গেছে আমার।
আদিত্য নিজের চোখে একটা স্কার্প বেঁধে নিয়ে বললো।
…..ঠিক আছে এখন বেড়িয়ে এসো।
নূর ধীরে ধীরে বেড়িয়ে এলো। ওর প্রচুর লজ্জা লাগছে এভাবে আদিত্যের সামনে যেতে।
নূর আসতেই আদিত্য নূরকে শাড়ি পরিয়ে দিতে লাগলো। শাড়ী পরানোর সময় আদিত্যের হাত নূরের শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছুঁয়ে দিচ্ছে। আর আদিত্যর ছোঁয়ায় নূর বারবার শুধু চোখ বন্ধ করে কেঁপে উঠছে।
কুচি করা শেষ হলে আদিত্য নূরকে বললো কুচিগুলো গুঁজে নিতে। কিন্তু নূর বুঝতে পারছে না, কিভাবে আর কোথায় গুজবে। নূর আমতা আমতা করে বললো।
….কিভাবে আর কতটুকু গুজবো? আসলে আমি বুঝতে পারছি না।
আদিত্য বললো।
…তাহলে আর কি করার? আমিই গুঁজে দিচ্ছি।
কথাটা বলে আদিত্য হাঁটু গেড়ে বসে নূরের কোমড়ে কুচিগুলো গুঁজে দিলো।
পেটে আদিত্যের হাতের ছোঁয়া পেয়ে নূরের সারা শরীর শিহরণে কেঁপে উঠলো। নূর শাড়ির আচল শক্ত খামচে ধরলো।
কুঁচি গুজে দেওয়া শেষ হলে আদিত্য উঠে দাঁড়িয়ে নূরের আঁচল টা ঠিক করে দিল। শাড়ী পরানো শেষ হলে আদিত্য চোখের বাঁধন খুলে দিয়ে নূরের দিকে মুগ্ধ নয়নে তাকিয়ে বললো।
…..ওয়াও, আমার নূরপাখি টাকে একদম নীল পরী লাগছে।
নূর সবসময়ের মতো লাজুক হাসলো।
আদিত্য বললো।
….এখন তাহলে যাওয়া যাক নাকি।
নূর নিচের দিকে মাথা ঝাকিয়ে সায় দিল।
আদিত্য নূরের হাত ধরে বেরিয়ে এলো। নূর এতক্ষণে খেয়াল করলো আদিত্যও আজ একটা নীল পাঞ্জাবি পরেছে। কি সুন্দর লাগছে ওনাকে।
তারপর গাড়িতে বসে রওনা দিল গন্তব্য স্থলে।
————————————–
একঘন্টা ড্রাইভ করার পর একটা নির্জন জায়গায় এসে গাড়ি থামালো। আদিত্য নেমে নূরের পাশে এসে দরজা খুলে নূরের হাত ধরে নূরকে নামালো। আদিত্য নূরের দিকে তাকিয়ে বললো।
….আমার উপর ভরসা আছে তোমার?
নূর মুচকি হেসে বললো।
….নিজের থেকেও বেশি।
আদিত্য তৃপ্তির হাসি দিয়ে একটা কালো ফিতা দিয়ে চোখ বেঁধে দিল। তারপর নূরকে পাজা কোলে তুলে নিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে লাগলো।
কিছু দূর আসার পরে। আদিত্য নূরকে নামিয়ে দিয়ে ওর চোখের বাঁধন খুলে দিয়ে বললো।
….এখন সামনে তাকাও প্রাণপাখী।
নূর আস্তে করে চোখ খুলে সামনে তাকালো। সামনে তাকাতেই নূর হতবাক হয়ে গেলো। নূরের সামনে পায়ের নিচে গোলাপের পাপড়ি দিয়ে রাস্তা বানিয়ে রাখা হয়েছে।দুই পাশে মোশাল জ্বালিয়ে রাখা হয়েছে। নূর চারপাশে চোখ বুলিয়ে দেখলো এটা একটা নদীর পার। পূর্ণিমার রাতে চাঁদের আলোয় সবকিছু কি সুন্দর লাগছে দেখতে। নূর আশ্চর্য হয়ে ঠোঁটে হাত চেপে ধরে হাসলো।
আদিত্য নূরের হাত ধরে বলে উঠলো।
….চলো, সামনে আগাও প্রাণপাখী।
নূর একবার আদিত্যের দিকে তাকালো। তারপর কাঁপা কাঁপা পা ফুলের গালিচায় ফেলে ধীরে ধীরে আদিত্যের হাত ধরে সামনে এগিয়ে যেতে লাগলো। ফুলের গালিচার শেষ সিমানায় আসতেই নূর আশ্চর্যের শেষ সিমানায় পৌঁছে গেল। নিজের চোখকেই বিশ্বাস করতে পারছে না। সবকিছু ওর কাছে স্বপ্ন মনে হচ্ছে।
নূরের সামনে নদীতে একটা নৌকা বাঁধা। পুরো নৌকায় গাঁদা ফুল দিয়ে চাদরের মতো ঢেকে দেওয়া হয়েছে। নৌকার কিনারার চারপাশে ঘিরে ফেরিলাইট দিয়ে সাজানো হয়েছে। সবকিছু এতো সুন্দর লাগছে নূর যেন ভাষা হারিয়ে ফেলেছে। চোখ দুটো চিকচিক করছে। অবাক নয়নে একবার আদিত্যের দিকে তাকাচ্ছে, তো একবার নৌকার দিকে তাকাচ্ছে।
আদিত্য প্রথমে নৌকায় উঠে নূরের দিকে হাত বাড়িয়ে দিয়ে বললো।
….এসো নূরপাখি,আমার হাত ধরে উঠে এসো ।
নূর মাথা ঝাকিয়ে আদিত্যের হাতে হাত রেখে নৌকায় উঠলো। আদিত্য নূরকে নৌকার মাঝখানে এনে বসিয়ে দিলো। তারপর নৌকার বাঁধন খুলে দিয়ে বৈঠা হাতে নিয়ে আদিত্য নৌকা চালাতে লাগলো।
নূর শুধু মুগ্ধ হয়ে সবকিছু দেখছে। পূর্ণিমার রাত,ভরা চাদের আলো, চারিদিকের ঠান্ডা ঝিরিঝিরি বাতাস, নদীর পানির ঘ্রাণ আর ছলাৎছলাৎ শব্দ সবমিলিয়ে একটা অপূর্ব মনোমুগ্ধকর পরিবেশ যেটা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব না নূরের কাছে। নিজের খুশী কিভাবে প্রকাশ করবে বুঝতে পারছে না নূর।
আর আদিত্য নৌকা চালাচ্ছে আর মুগ্ধ নয়নে শুধু নূরকে দেখছে। নূরকে খুশী দেখে আদিত্যের মনটাও ভরে যাচ্ছে। নূরের খুশীর জন্য ও সব করতে পারবে। এই স্বপ্নটার মতো নূরের বলা না বলা সব স্বপ্নই পূরণ করবে আদিত্য।
আদিত্যের নৌকা চালানো দেখে নূর বললো।
….আপনি নৌকা চালানোও জানেন?
আদিত্য মুচকি হেসে বললো।
…..জানতাম না।গত দুইদিনে শিখেছি। কারণ আমি চাই আমার নূরপাখিকে নৌকা রাইড আমি নিজে করাবো। আজকের জন্য আমি হবো তোমার মাঝি।
নূর মায়া ভরা চোখে আদিত্যের দিকে তাকালো। উনি আমার জন্য এতো কিছু করেছে? উনি এতো কেন ভালোবাসেন আমাকে? আমার কপালে কি এতো সুখ সইবে? আচ্ছা উনি কি জানেন এটা আমার স্বপ্ন, এভাবে আমার রাজকুমারের সাথে পূর্ণিমার রাতে নৌকায় চড়ে চাঁদ দেখার? হ্যাঁ উনিই তো সেই রাজকুমার। আমার স্বপ্নের রাজকুমার।
আদিত্য নৌকা অনেক খানি চালিয়ে আসার পর, নদীর মাঝামাঝি এসে নৌকা চালানো বন্ধ করে বৈঠা তুলে নৌকায় রাখলো। তারপর নৌকার একটা পার্ট তুলে নিচ থেকে একটা ফুলের বুকে বের করলো।তারপর ধীরে ধীরে নূরের কাছে এগিয়ে গেল।
নূর অন্য দিকে তাকিয়ে থাকায় বিষয় টা খেয়াল করেনি।
আদিত্য নূরের সামনে গিয়ে হাঁটু গেড়ে নূরের মুখোমুখি বসলো। তারপর ফুলের বুকেটা পেছনে লুকিয়ে মায়া ভরা কন্ঠে নূরকে ডাকলো।
….প্রাণপাখী।
আদিত্যের ডাকে নূর সামনে তাকালো। নূর তাকাতেই আদিত্য পেছন থেকে ফুলের বুকেটা বের করে নূরের সামনে ধরলো। নূর অবাক নয়নে একবার আদিত্যর দিকে, তো একবার বুকেটার দিকে তাকাতে লাগলো।
আদিত্য মুগ্ধ নয়নে তাকিয়ে আবেগি কন্ঠে বলে উঠলো।
…… জানিনা কিভাবে শুরু করবো? নিজের অনূভুতি গুলো হয়তো ভালো করে বুঝিয়ে বলতে পারি না আমি। শুধু বলবো, যেদিন তোমাকে প্রথম দেখেছিলাম সেদিন প্রথমবার বুকের বামপাশের যন্ত্রটার উপস্থিতি টের পেয়েছিলাম। যেটা তোমাকে দেখলে কখনো তিব্র গতিতে ছুটে বুক ফেটে বেড়িয়ে আসতে চায়। তো কখনো বিট করাই বন্ধ করে দেয়। আমি এটা বলবো না যে তুমি আমার কাছে পৃথিবীর সবচেয়ে প্রিয় জিনিস। কারণ আমার পৃথীবিটাই তুমি। তুমি ছাড়া আমি নিঃস্ব। শুধু ভালোবাসি বললেও কম হবে। তোমার প্রতি আমার অনূভুতি গুলো #ভালোবাসার চেয়েও বেশি। আমি তোমাকে বলবোনা যে আমাকে ভালোবাসো। শুধু আমায় একটু তোমাকে ভালোবাসার সুযোগ দেও।আমার পৃথিবীতে তোমাকে চাই না। তোমার পৃথিবীতে আমাকে একটু জায়গা দেও। হবে কি আমার দিন রাত, সুখ দুঃখের সঙ্গি? দেবে কি সকালে তোমার এই চাঁদ মুখটা দেখে ঘুম থেকে ওঠা আর রাতে তোমার মুখটা দেখে ঘুমানোর সৌভাগ্য? দেবে কি তোমার হাতটা ধরে সারাজীবন চলার সুযোগ? হবে কি আমার রাজ্যের রানী?
আদিত্য পাঞ্জাবির পকেট থেকে একটা রিং বক্স বের করে নূরের সামনে ধরে বললো।
….উইল ইউ ম্যারি মি, প্রাণপাখী?
নূর যেন বাকরুদ্ধ হয়ে গেছে। মুখ দিয়ে কোনো কথায় বের হচ্ছে না। খুশিতে যেন হতভম্ব হয়ে গেছে।গলায় সবকিছু দলা পাকিয়ে যাচ্ছে। চোখ দুটো দিয়ে শুধু আনন্দ অশ্রু ঝরছে। এতো সুখ কোথায় রাখবে ও?
আদিত্য অধীর আগ্রহে নূরের জবাবের অপেক্ষা করছে। নূরের চুপ করে থাকা দেখে আদিত্যের মনে একটু ভয় লাগছে। আদিত্য আবার বলে উঠলো।
….নূ নূরপাখি প্লিজ টেল মি ইউর আনসার।
নূর চেষ্টা করেও মুখ দিয়ে কিছু বের করতে পারছে না। ঢোক চিপে কোনরকমে আদিত্যের হাত থেকে ফুলের বুকেটা নিয়ে, মাথা ঝাকিয়ে হ্যাঁ বোধক ইশারা দিল।
আদিত্য খুশী হয়ে একটা বিশ্ব জয়ের হাসি দেয়। তারপর বক্স খুলে একটা ডায়মন্ডের রিং বের করে নূরের অনামিকা আঙ্গুলে পরিয়ে দিয়ে হাতের ওপর একটা চুমু দিল। তারপর মুখটা এগিয়ে নূরের কপালে একটা চুমু দিয়ে দুই হাতে শক্ত করে নূরকে বুকের মাঝে জড়িয়ে ধরলো। নূরও আদিত্যকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে দিলো। আদিত্য নূরকে আরো শক্ত করে বুকের মাঝে আঁকড়ে ধরে নূরের ঘাড়ে চুমু দিল।
পাঁচ মিনিট পর নূর একটু শান্ত হয়ে এলো। আদিত্য নূরের মুখটা ধরে সামনে আনলো। নূরের মুখের কাছে ঝুকে নূরের চোখের পানি ঠোঁট দিয়ে চুষে নিলো আদিত্য। নূর কেঁপে উঠে আদিত্যের বুকের ওপরের অংশের পাঞ্জাবি খামচে ধরলো।
আদিত্য নূরের কপালের সাথে কপাল ঠেকিয়ে দুই হাতে নূরের মুখটা ধরে নেশা ভরা কন্ঠে বললো।
…ভালোবাসি প্রাণপাখি। #ভালোবাসার চেয়েও বেশি ভালোবাসি।
নূর লাজুক হেসে আবারও আদিত্যকে জড়িয়ে ধরলো। আদিত্যর বুকে মাথা রেখে বললো।
….আমিও আপনাকে ভালোবাসি রাজকুমার।
আদিত্য অবাক হয়ে বললো।
…রাজকুমার?
নূর আদিত্যর বুকে মাথা রেখেই বললো ।
….হ্যাঁ রাজকুমার। আপনি আমার রাজকুমার। আমার স্বপ্নের রাজকুমার।
আদিত্য ঠোঁট কামড়ে হেসে বললো।
….রাজকুমার। আই লাইক দিস নেম। আমি তোমার রাজকুমার। আর তুমি আমার রানী। বেস্ট কাপল, কি বলো?
নূর লাজুক হাসলো।
———————————–
আদিত্য আর নূর দুজন পাশাপাশি চিৎ হয়ে শুয়ে থেকে চন্দবিলাস করছে। নূর আদিত্যের এক হাতের ওপর মাথা রেখে চাঁদ দেখছে। নূর চাঁদ দেখছে আর হাত নেড়ে নেড়ে নানা রকমের কথা বলছে। আদিত্য শুধু হু হু করছে।
নূর হঠাৎ পাশে তাকাতেই দেখলো আদিত্য একধ্যানে ওর দিকেই তাকিয়ে আছে। নূর বললো।
…..আপনি চাঁদ না দেখে এদিকে তাকিয়ে আছেন কেন? আকাশে দেখেন কতো সুন্দর চাঁদ।
আদিত্য বললো
……কে বললো আমি চাঁদ দেখছি না? আমিতো সেই কখন থেকে চাদই দেখছি।
নূর ভ্রু কুঁচকে বললো।
….মানে? চাঁদ তো আকাশে। আপনি এদিকে তাকিয়ে কিভাবে চাঁদ দেখছেন?
আদিত্য মুচকি হেসে বললো।
….আকাশে যেটা আছে, সেটা তোমার চাঁদ। আমার চাঁদ তো এখানে, আমার পাশেই আছে। আর আমার চাঁদ ওই আকাশের চাদের থেকে অনেক বেশি সুন্দর।
নূর লজ্জায় লাল হয়ে গেলো। আমতা আমতা করে বললো।
….আ আপনি একটু বেশিই বলছেন। এতটাও সুন্দর না আমি। যতটা আপনি বলেন।
আদিত্য নূরের ওপর ঝুকে আধশোয়া হয়ে, ডান হাতটা নূরের গালে রেখে বললো।
….একদম বেশি বলিনা। বরং যতই বলি ততই কম হবে। তোমার রুপের বর্ননা দিয়ে আমি কখনো শেষ করতে পারবো না। তুমি জানো? তোমার সবকিছু ইনডিভিজুয়ালি সুন্দর।
আদিত্য নূরের চুলে হাত বুলিয়ে বললো।
….তোমার এই ঘনকালো লম্বা কেশ। তোমার এই চুল যদি মেঘ দেখে তাহলে সারাবছরই বৃষ্টি ঝড়াবে।
আদিত্য নূরের চোখের দিকে তাকিয়ে বললো।
……আর তোমার এই ডাগর ডাগর দুটি আখি। এই চোখের দিকে আমি একবার তাকালে নিজেকে এর সমুদ্র সমান গভীরতায় হারিয়ে ফেলি। নিজেকে খুঁজে পাওয়া কঠিন হয়ে যায় তখন।
তারপর নূরের নাকের ডগায় আঙুল ছুঁইয়ে বললো।
….তোমার এই সরু বাঁশির মতো নাকটা। এই ফর্সা নাকের ডগায় যখন বিন্দু বিন্দু ঘাম জমে থাকে। কতোযে সুন্দর লাগে তোমাকে বোলে বোঝাতে পারবো না।
আদিত্য এবার দৃষ্টি দেয় নূরের গোলাপি ঠোঁটের দিকে। আর ঠোঁটের দিকে তাকিয়ে আদিত্য একটা শুকনো ঢোক গিলে। হাতের বৃদ্ধাঙ্গুল দিয়ে নূরের ঠোঁটে স্লাইড করে নেশা ভরা কন্ঠে বললো।
….আর তোমার এই অধরজোড়া। এটাতো সবচেয়ে বেশি পোড়ায় আমাকে। এটার কাছে আমি সবসময় পরাজিত হই। তোমার গোলাপি রসালো ঠোঁটের দিকে তাকালে নিজেকে কিছুতেই কন্ট্রোল করতে পারি না। যেমন এখনও পারছি না।
বলতে বলতে আদিত্য মাতাল চোখে তাকিয়ে ধীরে ধীরে নূরের ঠোঁটের দিকে এগুতে লাগলো।
নূরের ঠোটে আদিত্যের আঙ্গুলের ছোয়ায় নূর শিরশির করে কেঁপে ওঠে। পায়ের নখ শিনশিন করে ওঠে। নূর চোখ বন্ধ করে আদিত্যের বুকের কাছের পাঞ্জাবির অংশ খামচে ধরে ঘন ঘন নিঃশ্বাস ফেলতে লাগলো।
নূরের এসব মুভমেন্ট আদিত্যকে আরও পাগল করে তুলছে। আদিত্য নিজেকে আর ধরে রাখতে পারলো না। ডুব দিলো নূরের মধুর ভান্ডারে।আদিত্য নূরের ঠোঁটে নিজের ঠোঁট চেপে ধরলো। তারপর নূরের ঠোঁটের মাঝে জিহ্বা ঢুকিয়ে ঠোঁট আগলা করে মুখে পুরে নিলো আদিত্য। চুষে নিতে থাকলো নূরের ঠোঁটের সব রস। আদিত্যর ডান হাতটা গলিয়ে দিল নূরের শাড়ীর ফাঁকে খোলা কোমড়ে। আস্তে আস্তে কোমড়ের চারপাশে স্লাইড করতে লাগলো। কোমড় থেকে হাতটা ধীরে ধীরে পিঠ বেয়ে উপরের দিকে উঠতে লাগলো। এমন পাগল করা স্পর্শে নূরও আর চুপ থাকতে পারলো না । আদিত্যের চুল খামচে ধরে নূরও আদিত্যের ঠোঁটে সমান তালে চুমু খেতে লাগলো। নূরের রেসপন্স পেয়ে আদিত্য আরো পাগলের মতো চুমু খেতে লাগলো। একজন উপরের ঠোঁট চুষছে তো আরেকজন নিচের ঠোঁট। মনে হচ্ছে দুজন প্রতিযোগিতায় নেমেছে। কে কার চেয়ে বেশি চুমু খেতে পারে। আদিত্য চুমুর সাথে আলতো কামড়ও দিচ্ছে নূরের ঠোঁটে। আদিত্যর হাত নূরের পিঠে বিচরণ করছে। পিঠে স্লাইড করতে করতে একসময় আদিত্যের হাত নূরের পিঠে ব্লাউজের ভেতর গলিয়ে দিয়ে সারা পিঠে স্লাইড করতে লাগলো। নূর আর সহ্য করতে পারছে না। এ যেন এক অসহ্য যন্ত্রণাদায়ক সুখ। নূর আদিত্যকে থামানোর জন্য আদিত্যের ঠোঁটে একটু জোরে একটা কামড় দিলো।
সাথে সাথে আদিত্য থেমে যেয়ে নূরের ঠোঁট ছেড়ে দিলো।আদিত্য নূরের পিঠে থাকা হাতটা নিজের ঠোঁটে নিয়ে বললো।
….আহ্হ। এভাবে কেউ কামড় দেয়? একদম মাংস তুলে ফেলেছো।
নূর লজ্জায় আদিত্যর বুকে মুখ লুকিয়ে কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বললো।
….আ আআপনিই তো বলেছেন। আপনি আউট অফ কন্ট্রোল হয়ে গেলে আপনাকে থামিয়ে দিতে।
….তাই বলে এভাবে? ঠিক আছে করো। আমারও সময় আসবে। আমিও তখন দেখিয়ে দেবো কামড় কাকে বলে।
তারপর আদিত্য দুষ্টু হেসে নূরের কোমড়ে হাত দিয়ে স্লাইড করে বললো।
….বায়দা ওয়ে এখনো কিন্তু তোমার অনেক বডি পার্টসের প্রশংসা করা বাদ আছে। যেমন তোমার এই সেক্সি কোম……
আর বলতে পারেনা আদিত্য তার আগেই নূর আদিত্যের মুখে হাত চেপে ধরে আদিত্যের কথা বন্ধ করে দিয়ে বললো।
….থা থাথাক অনেক হয়েছে। আর প্রশংসা করতে হবে না।
আদিত্য নূরের চেপে ধরা হাতের তালুতে চুমু খায়।
নূর সাথে সাথে হাত সরিয়ে নেয়। আর আদিত্য শরীর কাপিয়ে হেসে দেয়। তারপর নূরকে জড়িয়ে ধরে বললো।
….আচ্ছা আমি তোমাকে এতো সারপ্রাইজ দিলাম। তুমি আমাকে কোনো গিফট দিবে না?
নূর আদিত্যের বুকে মাথা রেখে অসহায় ভাবে বললো।
….কি দেব আপনাকে? আমিতো কিছুই আনিনি। আর আমার কাছে কোনো টাকাও নেই।
আদিত্য মুচকি হেসে বললো।
…..সবসময় গিফট দিতে শুধু টাকা লাগে না। ইচ্ছা করলেই টাকার চেয়ে দামী জিনিস দেওয়া যায়। আমি যেটা চাইবো সেটা দিবে তুমি?
…কি চাই বলুন? আমি পারলে অবশ্যই দেব।
…আজ থেকে তুমি আমাকে তুমি করে ডাকবে। এটাই হবে আমার জন্য সেরা গিফট। বলো বলবে?
…..কিন্তু আমার তো লজ্জা করে। আমি কিভাবে আপনাকে তুমি করে বলবো?
….অতশত জানিনা।আজ এবং এখন থেকেই তুমি আমাকে তুমি করে বলবে। বলো এখুনি।
নূর আমতা আমতা করে বললো।
….তু তুতুমি।
….এভাবে না ঠিক করে বলো। বল আদিত্য আমি তোমাকে ভালোবাসি।
….আ আদিত্য আমি আপ,, থুক্কু তো তোমাকে ভালোবাসি।
কথাটা বলেই নূর লজ্জায় আদিত্যের আরও বুকের ভেতর ঢুকে গেল।
আদিত্য একটা তৃপ্তির হাসি দিয়ে নূরকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বললো।
….আমিও তোমাকে ভালোবাসি প্রাণপাখি।
চলবে………