ভুলি কি করে তোকে পর্ব-০৭

0
17

গল্প #ভুলি_কি_করে_তোকে

(এ প্রথম লেখা লেখি করছি জানি না কেমন লাগবে ভুলক্রুটি হলে ক্ষমার চোখে দেখবেন)

(কাজিন রিলেটেড + রোমাঞ্চকর+থ্রিলার)

লেখক : #নুরজাহান_আক্তার_স্নিগ্ধা……

📌কপি সম্পুর্ন নিষিদ্ধ
#পর্ব_৭

পশ্চিম আকাশে রঙ মেশে, বিকেলের রোদ আস্তে আস্তে মুছে যায়।স্বচ্ছ নীল আকাশে চারিপাশে ঠান্ডা হাওয়া বইছে। আকাশে পাখিরা মনের আনন্দে ঘুরে বেরাচ্ছে কিচিরমিচির শব্দ করে।নেমে এসেছে স্নিগ্ধ বিকেল ছাদে বিভিন্ন ধরনের ফুল গাছ সারিতে সাজানো নাগচম্পা,জবা ,চন্দ্রপ্রভা,গোলাপিটগর ,বেলি,কাঠগোলাপ,জারবেলা,গোলাপ আরো অনেক ধরনের ফুল পুরো ছাদ সাজানো পুরো ছাদ জুড়ে ফুলের স্নিগ্ধ গন্ধে ভরা নিশিতা ছাদে এসে ফুলের টবে পানি দিচ্ছে আর বিকেলের স্নিগ্ধ পরিবেশ অনুভব করছে এই ফুল গাছ গুলো নিদি,নিশিতা,আরোহী,ইরা চার বোনই স্বযত্নে বড় করেছে গাছে রংবেরঙের ফুল ফুটে আছে নিশিতা পানি দিতে দিতেই তার চোখ যায় লাল জবা ফুলের দিকে লাল টকটকে জবা ফুল দেখে তার ঠোঁট কিছু টা হাসি ফুটে যায়। জবা ফুলের গাছ থেকে একটি জবাফুল হাতে নিতে নিতে গান ধরে

বন্ধ কোনো অন্ধকারে
থমকে ছিল মন
চিনলো আলো, মন্দ-ভালো
তুই এলি যখন…

হঠাৎ পিছন থেকে কেউ একজন গেয়ে উঠে _

হয়রানি হয়রানি মনের ভেতর
কানে কানে দিয়ে গেল বলে…..
তুই এলে, তুই এলে
মনের ভেতর
নদীতে আগুন জ্বলে……

নিশিতা গানের সুর পেয়ে পিছনে তাকাতেই ঠোঁটের স্মিত হাসি আরো কিছুটা প্রসারিত হয়।নিশিতা তাকাতেই দেখতে পাই মাহদি তার সাথে সুর দিয়েছে। মাহদি আর রাদিফ ছাদেই আসছিল বিকেলে সুন্দর পরিবেশ অনুভব করতে এসে দেখতে পায়। নিশিতা টবে পানি দিচ্ছে আর জবা ফুল দেখতে পেয়ে হাতে নিতে নিতে গান ধরেছে তাই মাহদি ও তার সাথে সুর দিয়ে কিছুটা নিশিতার পিছে এসে দাঁড়ান। মাহদি আর রাদিফ কে দেখে বসা থেকে উঠে দাঁরায়।মাহদি মুচকি হাসি দিয়ে সামনে এসে দাড়ান নিশিতার হাতে থাকা জবা ফুলটা নিয়ে নিশিতার কানের উপরে চুলে গোজে দিতে দিতে

–জানো কি ফুলের সৌন্দর্য দুই জায়গায় ফুটে উঠে প্রথমত গাছের মাঝে আর দ্বিতীয়ত নারীর চুলের ভাজে

মাহদি নিশিতার দিকে তাকিয়ে ভাবে ও কি জানে তার হৃদয় এই মেয়েটির জন্য কতটা ব্যাকুল হয়তো যানে না আর যানবে ও না সে না চাইলে কারণ সে তার অনুভুতি কোথায় কিভাবে ব্যবহার করতে হবে যানে এখনো সময় হয়ে আসেনি নিজেকে খোলা বইয়ের মতো উপস্থাপন করার। এই সবুজ রঙের চোখের মেয়েটিকে দেখলে তার ব্যাকুল হৃদয় বার বার চিৎকার করে বলতে চায়।ভালোবাসি তোমাকে
❝প্রেমের শক্তি কতটা প্রবল হতে পারে, তা প্রেমে না পড়লে বোঝা যায় না।❞ — হুমায়ূন আহমেদের কথাটি অনুভব হচ্ছে..এই মেয়েটিকে দেখলে বরাবর তার অনুভুতি সারা দেয় দুধের আলতা গায়ের রং ঘন,বাদামী হাটু অবধি সোজা চুল উচ্চতা ৫.৪ মেয়ে হিসেবে ভালোই লম্বা আকর্ষণীয় দেহের অধিকারী তার শরীরে সবচেয়ে আকর্ষণীয় হচ্ছে তার চোখ সবুজ রঙের চোখের মনিতে তাকাতেই যে কেউ প্রেম পড়ে যাবে। যাবেই বা না কেন এমন চোখ যে সচারাচর দেখা যায় না। খুব কম মানুষেরই হয়ে থাকে তার মধ্যে এই মেয়েটি একজন।

নিশিতা তার মুদ্ধ নয়নে তাকিয়ে আছে সামনে দাঁড়িয়ে থাকা ব্যাক্তির দিকে সুঠাম দেহে পেশিবহুল হাত আকর্ষণীয় দেহের অধিকারী এই ব্যক্তিটি যাকে তার কিশোরী মন আপন করে নিয়েছে।খুব তিব্র ভাবে চায় তাকে। ওর এমন চাহনি দেখে মাহদি ঠোঁট কামরে হাসছে। সেতো জানে এইমেয়েটা ওযে তার জন্য অনুভূতি রাখে। এর মাঝে রাদিফ হাচি দিয়ে ওঠে এতে ওদের ভাবনাতে ব্যাঘাত ঘটায়। রাদিফ বলেই ওঠে

-মাশাআল্লাহ! নিশিতা তোকে আজ সত্যি সুন্দর লাগছে লাল জামাটা অনেক মানিয়েছে সাথে চুলে লাল জবা। আয় ছবি তুলে দেই তোকে নাহয় সব গুলো এসে পরবে।

নিশিতা লাজুক হেসে। ডানদিকে মাথা বাকিয়ে সম্মতি দিলেন। রাদিফ যে কেন করছে এমন মাহদি তা ভালোই বুঝতে পারেছে। সে বুঝেছে রাদিফ তার অনুভতি বুঝেছে তাই বোনের কিছু ছবি তুলে নিচ্ছে ভাই এরজন্য। সে তো জানে ভাই কেমন বোনের সাথে সম্পর্ক হলে মন্দ হবে না বোনকে ভালোই রাখবে তার। মাহদি আর নিশিতা যে একে অপরের জন্য অনুভতি রাখে তাও সে বুঝে তাই স্বইচ্ছায় হয়ে গেছে তাদের ধাল।আর এদিকে মাহদি নিশিতা আড়ালে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। রাদিফ নিশিতাকে বিভিন্ন স্টাইলে কিছু ছবি তুলে দিয়ে। তারপর রাদিফ ,মাহদিকে নিয়ে নিশিতার সাথে ও কিছু ছবি তুলে। ছবি ঢেবঢেব করে চেয়ে আছে মাহদির দিকে। মাহদি তা বুঝে ও না বুঝার ভান ধরে আছে সে। ভাবটা এমন সে ছবি তুলতে খুবই ব্যস্ত তার আসেপাশে কেউ তাকে দেখছে তা সে বুঝতে পারেনি। কিন্তু মনে মনে হাসিতে ফেটে পড়ছে। ছবি তুলে রাদিফ তা দেখতে পায় সে বোনের এহেন কান্ড দেখে ঠোঁট টিপে হেসে হালকা কাশি দেয়

-উহু উহু
এতে নিশিতার হুশ আসে প্রচুর লজ্জা পায়। ছিঃ ছিঃ রাফিদ আর মাহদি কি ভাববে এভাবে সে তাকিয়ে ছিল এখন তার নিজের উপর বিরক্তি লাগছে এমন একটা কাজ কীভাবে করল মন চাচ্ছে নিজের গালে থাপ্পড় মারতে।মাহদি ততক্ষণ তাকায় নি রাদিফ বজ্জাত টা কাশির পরে তাকিয়েছে। এই বজ্জাত টা ছোট বোনকে ও লজ্জা দিতে ছাড়লো না।মাহদি নিশিতা লাজ্জা পেয়েছে বুঝতে পেরে কথা ঘুরিয়ে দেয়

-মেহু(মাহদি আর রায়হান শেখ এই নামে ডাকেন) সন্ধ্যা হয়ে আসছে যেয়ে বলো সবাই কে আসতে আসতে সবকিছু তৈরি করে উপরে আসতে।

-আচ্ছা ঠিক আছে তাহলে আমি যাই বলি সবাইকে।

বলেই নিচে চলে আসে আজ ওরা সব ভাইবোনেরা মিলে ছাদে বারবিকিউ পার্টি করবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুপুরে।নিশিতা কল করে মিলি আর ওর ভাইকে আসতে বলেছে মিলির ভাই ইভান নাহিয়ানের প্রানপ্রিয় বন্ধু। নাহিয়ান আসতে চায়নি সে গম্ভীর একরোখা মানুষ মিশে না কারো সাথে তেমন একটা ভাইদের সাথে টুকিটাকি কথা হয়। বোনদের সাথে হয় কিন্তু নিশিতা নাহিয়ানকে তেমন পছন্দ করে না এমন একরোখা বলে তার সাথে কোন কালেই তেমন কথা হয়নি কখনো কলের সামনে পরে গেলে সালাম আর ভালো আছে নাকি জিজ্ঞেস করেই তার কথা শেষ।নাহিয়ান কে ভয়ও পায় তাই দূরে সরে থাকে।

চলবে