ভ্যাম্পায়ার কুইন পর্ব-২৯+৩০+৩১

0
3

#ভ্যাম্পায়ার_কুইন#
পর্বঃ২৯
.
.
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
.
.
আমি আন্ডারওয়ার্ল্ডে ফিরে আসলাম এবার টেলিপোর্ট হয়ে। আমি আমার কাজটা নিরবে করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু হ্যাভেন যে আমাদের স্বাগতম না করে আক্রমন করবে সেটা কল্পনা করি নি। এমনিতেও এন্জেলরা শুধু ডেভিলদের সাথেই যুদ্ধ করে। তাই তারা ডেভিল কিং কেই হত্যা করে যুদ্ধ জিততে চেয়েছিলো। কিন্তু আমি তাদের দিকে উল্টো বাজি ফেলে দিয়েছি। এখন যতই চেষ্টা করুক এন্জেলরা কিন্তু আন্ডারওয়ার্ল্ডে তারা আসতে পারবে না। আন্ডারওয়ার্ল্ডে ঢুকার মোট দুইটা রাস্তা। একটা হলো গেইট, আর একটা হলো টেলিপোর্টেশন। গেট ভিতর বাইরে থেকে আমি নিয়ন্ত্রন করি এখন। কিন্তু আমি বাদেও অনেকেই আন্ডারওয়ার্ল্ডে গেটের সাহায্যে ঢুকতে পারবে। সেটার জন্য তাদের জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন কিছু ত্যাগ করতে হবে। যদি তাদের গুরুত্বপূর্ন কিছু জীবন্ত বস্তু বা ব্যক্তি হয়, তাহলে তাকে সে মারা যাবে, এবং সেখানে আন্ডারওয়ার্ল্ডের গেইট খুলে যাবে। কিন্তু বাইরের কারো জন্য আমার আদেশ ছাড়া আন্ডারওয়ার্ল্ডে থাকা সম্ভব নয়।
।।।
।।।
এখানে আবার একটা জিনিস আছে। মনস্টার দুনিয়ার মনস্টার কিংবা মানুষেরাই শুধু আমার আদেশবিহীন আন্ডারওয়ার্ল্ডে বেশীক্ষন থাকতে পারবে না। কিন্তু অন্যান্য দুনিয়ার সকল জীবন্ত বস্তুই খুব সহজে আন্ডারওয়ার্ল্ডে থাকতে পারবে। মূলত আন্ডারওয়ার্ল্ড বানানো হয়েছিলো পুরাতন ডেভিল কিং এর এনার্জি দিয়ে। এটার মধ্যে তার সমস্ত স্মৃতি ঘুরে বেরায়। তাকে ধোকা তাদের মনস্টার জাতি দিয়েছিলো। তাই সে চেয়েছিলো তার ডেভিল বাহিনীকে একটা নিরাপদ জায়গায় রাখতে। তখন সে আন্ডারওয়ার্ল্ড নির্বাচন করে। আন্ডারওয়ার্ল্ড আগে থেকে এভাবে ছিলো না। এটা একটা অন্ধকার জায়গা ছিলো যেখানে ডেভিল কিং তার সকল স্ত্রীকে রাখতো। এখানেই সকল ডেভিল কিং এর সন্তান জন্ম দিয়েছে। এমন নয় যে আমিই শুধু একা ডেভিল কিং এর রক্ত বহন করছি। বরং তার রক্ত অনেকের শরীরে বইছে এখন। কিন্তু অবাক বিষয় তাদের শরীরে ডেভিল কিং এর রক্ত বইলেও তারা ডেভিল কিং হতে পারবে না। যাইহোক আমি আলিয়ানা এবং আফরিয়েলকে নিয়ে সোজা লুসি যেখানে প্রথমে ছিলো সেখানে আসলাম। লুসিকে একটা ম্যাজিক দিয়ে আলিয়ানা উড়িয়ে আনছিলো। আমি এই ম্যাজিকের কথা আগে ভাবলাম না কেনো? হয়তো মনে পরলে লুসিকে ঘাড়ে বহন করতে হতো না আমাকে। যাইহোক এবার আফরিয়েল আমার দিকে তাকিয়ে রইলো,
.
–কি হলো কিছু বলবেন?(আমি জিজ্ঞেস করলাম কিন্তু কথা বলছে না সে)
।।।
।।।
আমি বুঝতে পারলাম আমার তখনকার কথায় ভয় পাচ্ছে এখনো,
.
–কথা বলতে পারেন, আমি তখন তো মজা করে বলেছিলাম। আমি ডেভিল কিং হতে পারি, আমাকে খারাপ ভাবতে পারেন। কিন্তু মেয়েদের সাথে খারাপ কিছু করবো সেরকম ছেলে আমি নই।(আমি)
.
–না আমার একটা প্রশ্ন?(আফরিয়েল)
.
–হ্যা।(আমি)
.
–রানী আলিয়ানা আলফাইম ডেভিল কিং কি আপনাকেও কিডন্যাপ করেছে?(আফরিয়েল)
.
–হ্যা অনেকটা সেরকমই।(আলিয়ানা)
.
–আর নিশ্চয় এই অসুস্থ মেয়ে দুটোকেও কিডন্যাপ করে এনেছে তার গোপন উত্তেজনা মিটানোর জন্য।(আফরিয়েল)
.
–বলে কি এই মেয়ে? আমি বলে রাখি আমি ঔরকম ছেলে না। আর এখানে যে মেয়ে পরে আছে তাদের মধ্যে এইজন লুসি দ্যা ফেইরী, কুইন অফ ড্রিম ওয়ার্ল্ড। আর এইটা তার ছোট বোন প্রিন্সেস লুসানা। আর আমি বলে রাখি আপনাকে ছাড়া আমি কাউকে কিডন্যাপ করি নি। এরা সবাই নিজের ইচ্ছায় এসেছে।(আমি)
.
–ও তাহলে আমি বুঝেছি, আমি আগে শুনেছি আগের ডেভিল কিং গুলো অনেক মেয়েদের তুলে নিজেদের শারিরীক চাহিদা পূরন করতো। তাহলে আপনি সেই টাইপের না। একটা মেয়ে হলেই আপনার হয়।(আফরিয়েল)
.
–আপনি ভুল বুঝতেছেন। আমার আপনার শরীরের প্রতি কোনো লোভ নেই। বরং আমি ভালোবাসি একজনকে।(আমি)
.
–এটা হতে পারে না। ডেভিল কিং তাহলে আমাকে ভালোবাসে? আমি এই অভিশাপ নিতে পারবো না। আমি আমার এই জীবন রাখতে চাই না।(আফরিয়েল)
.
–রানী আলিয়ানা আপনি কি সিওর এই পাগল মেয়েটা কিং মাইকেলের কন্যা?(আমি)
.
–হুমমম ম্যাজিক পাওয়ার দেখে তো সেটাই মনে হচ্ছে।(আলিয়ানা)
.
–দেখুন। আপনার এই কথাবার্তা বাদ দিন। আমার হ্যাভেনে যাওয়ার মূল কারন ছিলো আপনাকে খোজা। স্বপ্নের রানীর আহত শরীর আপনি দেখতেই পারছেন। উন্নত ম্যাজিকের প্রয়োজন তার শরীরকে ঠিক করতে। তারাতারি না করলে সে মারা যাবে। আর সে মারা গেলে কি হবে সেটা তো ঠিক মতো জানেন আপনি হয়তো।(আমি)
.
–স্বপ্নের রানী মারা গেলে মানুষ সহ আমাদের সকলের ঘুমের মধ্যে খারাপ স্বপ্ন দেখা দিবে। আর সেগুলোতে আমাদের ঘুম হবে না।(আফরিয়েল)
.
–হ্যা শুধু তাই নয়। লোকি তার নিজের একটা লোককে ড্রিম ওয়ার্ল্ডের কুইন বানাবে পরে। আর সেটা হলে আরো ভয়ানক কিছু হবে।(আলিয়ানা)
.
–ও এবার আমি বুঝতে পেরেছি। তাহলে আমাকে রানী লুসিকে ঠিক করতে হবে, আর তারপর আপনি আমাকে হ্যাভেনে দিয়ে আসবেন তাই তো?(আফরিয়েল)
.
–হ্যা।(আমি)
.
–ঠিক আছে এটা তো আমার বা হাতের কাজ।(আফরিয়েল)
।।।।।
।।।।।
আফরিয়েল এবার লুসির পাশে একটা টুলে বসলো। আমি দাড়িয়ে দেখতে লাগলাম। আফরিয়েলের দুটো ডানা বের করে দিলো। সাধারন এন্জেলদের ডানা অনেক পাতলা আর সরু হয়। এন্জেল রাজাদের দশটা ডানা থাকে। কিন্তু তাদের ডানাগুলোও সরু হয়। কিন্তু আফরিয়েল এর মাত্র দুটো ডানা। কিন্তু এই দুটোই অনেক বড় এবং দেখতেও পাখির পালকের মতো মনে হয়। অনেক নরম ডানাগুলো, মনে হচ্ছে এখানে মাথা দিয়ে শুয়ে থাকা যাবে। যাইহোক আফরিয়েল লুসিকে হিল করার সময় তার ডানাদুটো বের করলো, আর আমি সেটা দেখার সুযোগ পেলাম। ধরতে মন চাচ্ছিলো, কিন্তু সেটা ঠিক হবে না বুঝতে পারলাম।
.
–নিন আমি ড্রিম কুইনকে ঠিক করে দিয়েছি। এখন শুধু তার বিশ্রামের প্রয়োজন। কিছুদিন বিশ্রাম করলেই ঠিক হয়ে যাবেন তিনি। এবার আমাকে হ্যাভেনে পৌছে দিন।(আফরিয়েল)
.
–সেটা এখন সম্ভব নয়।(আমি)
.
–এখন হ্যাভেনে গেলে আপনার সেনা আমার উপরে হামলা করবে আর আমি সেটা চাই না। আপনি নিজেই টেলিপোর্ট হয়ে ফিরে যান।(আমি)
.
–ডেভিল কিং মনে হচ্ছে আপাতোতো আমার কাজ শেষ হয়ে গেছে এখানে। যুদ্ধের দিন আমার সৈন্য পেয়ে যাবেন আপনি। কিন্তু বলে দিচ্ছি আমার সৈন্য শুধু ডার্ক এল্ফসদের বিরুদ্ধেই লড়বে।(আলিয়ানা)
.
–হ্যা ঠিক আছে।(আমি)
।।।
।।।
রানী আলিয়ানা নিজে টেলিপোর্ট হয়ে চলে গেলো আলফাইমে। আর এখন আফরিয়েল আমাকে বলতে লাগলো,
.
–আমি টেলিপোর্টেশন স্পেল ব্যবহার করতে পারি না।(আফরিয়েল)
.
–কি? আপনি হ্যাভেনের থার্ড প্রিন্সেস আর আপনি টেলিপোর্টেশন স্পেল ব্যবহার করতে পারেন না?(আমি হাসতে লাগলাম)
.
–আমার বাবা কখনো চাই নি আমি হ্যাভেন থেকে কোথাও যায় তাই আমাকে শিখায় নি।(আফরিয়েল)
.
–তারপরও এটা অনেক হাস্যকর। আমি কিছুটা গুজব শুনেছি, পরবর্তী রানী নাকি আপনাকেই বানানো হবে, আর আপনি নিজে টেলিপোর্টেশন স্পেল ব্যবহার করতে পারেন না।(আমি)
.
–অনেক হয়েছে আপনার হাসাহাসি, আমি আর নিতে পারছি না। যদি এটা আন্ডারওয়ার্ল্ড না হতো তাহলে আপনাকে দেখাতাম।(আফরিয়েল)
.
–এখানে আপনার পুরো ক্ষমতা কাজ করবে না। আপনি যে স্পেলই ব্যবহার করেন না কেনো? সেটা যতটা ম্যাজিক পাওয়ার এর হবে তার অর্ধেক আমার ভিতরে চলে আসবে।(আমি)
.
–হ্যা এজন্যই তো আপনি আমাকে কিডন্যাপ করেছেন। আমি জানি আপনি কি ভাবছেন এখন? এই রুমে দুইজন তো বেহুশ হয়েই আছে। আর আমি একা সুন্দরী একজন এন্জেল। আর আমিই পরবর্তী রানী হবো। আপনি চাচ্ছেন আমাকে আপনার গোলাম বানাতে। আমার শরীর নিয়ে মজা করতে। কিন্তু আমি বলে দিচ্ছি আপনি আমার শরীর পেলেও মন পাবেন না।(আফরিয়েল)
.
–আপনার মাথার কয়েকটা ক্রু ঢিলা আছে জানেন। আপনি সুন্দর হলেও আমি ইন্টারেস্টেড নয় আপনার প্রতি একটু। তাই দয়া করে আমার মাথা ব্যথা করে লাভ নেই।(আমি)
.
–কি?(আফরিয়েল)
.
–দেখেন আমি আর নিতে পারছি না এতো কিছু। আমি লুসেফারকে বলছি আপনাকে হ্যাভেনে দিয়ে আসতে।(আমি)
।।।
।।।
আমি আর কথা বললাম না। লুসেফারকে আমি মাইন্ড কন্টাক করলাম। এটা এক ধরনের ছোট স্পেল। এতে করে আমার মনে যার চেহারা মনে থাকবে আমি আন্ডারওয়ার্ল্ডের মধ্যে তার সাথে কথা বলতে পারি মনে মনে। এটা বাইরে ও কাজ করে, এটা সবাই ব্যবহার করতে পারে না। পুরো দুনিয়ার মধ্যে হাতে গোনা কয়েকজন এটা ব্যবহার করে থাকে। আমি লুসেফারকে এই স্পেলের মাধ্যমে জানালাম এন্জেল প্রিন্সেসকে হ্যাভেনে দিয়ে আসতে। আমি ওকে এখানে রাখতে পারতাম। কিন্তু মেয়েটা এখনো বাচ্চা। হয়তো রিয়েলিটি সম্পর্কে কিছু জানে না। আবার হয়তো সব জেনেই আবুল তাবুল বলছে, যায়হোক আমার মাথা আসলেই অনেক ব্যথা করছে। আজ অনেক স্পেল ব্যবহার করা হয়েছে। আর সেটার জন্য আমি আর ঠিকমতো হাটতেও পারছি না। কোনোমতে আমি আমার রুমের মধ্যে আসলাম। জেসি আর ক্যারেনের সাথেও দেখা হয়নি। ওরা হয়তো হ্যারির ট্রেনিং এর ঔখানে আছে। আর থরের সাথেও কথা হয়নি। কিন্তু এখন আমি নিজেই নরতে পারছি না। আমার আশেপাশের সব কিছু অন্ধকার হয়ে যাচ্ছে। আমি কিছুই দেখতে পারছি না। মনে হচ্ছে ঘুমিয়ে গেছি আমি। ঘুমের মধ্যে আমি দেখতে লাগলাম, আমার মতোই দেখতে চারজন আমার সামনে দাড়িয়ে আছে। আমি কিছু বলতে পারছি না। শুধু দেখেই যাচ্ছি। তারাও আমার দিকে তাকিয়ে আছে। হঠাৎ এক একজন এক একটা জিনিসে পরিনত হলো। একজন ডেভিল কিং ফর্মে, একজন এন্জেল কিং ফর্মে, একজন ভ্যাম্পায়ার ফর্মে, আর একজন পুরো ডিম্যান ফর্মে পরিনত হলো। আমি কখনো কোনো আসল ডিম্যানকে দেখি নি। আমার নিজের আসল বাবা একজন হাফ ডিম্যান, যার জন্য কেনো রিয়েল ফর্ম নেই। কিন্তু তারা ডিম্যানদের সকল ক্ষমতা ব্যবহার করতে পারে। কিন্তু এখন আমার সামনে একজন আসল ডিম্যান। যার আকার একদম ইগড্রাসিলের আসল সাইজের মতো। আর বাকি দাড়িয়ে আছি আমি। আমি জানি না এখানে আমি কি? কিন্তু চারজন এক এক করে কথা বলতে লাগলো,
.
–কেমন আছো? মানুষ জ্যাক? আমি ডেভিল জ্যাক।(আমাকে বললো ডেভিল জ্যাক)
.
–ভালো থাকবে কিভাবে? আমাদের ছাড়া ভালো থাকা যায়? আমি এন্জেল জ্যাক।(এন্জেল জ্যাক)
.
–আমি অনেক চেষ্টা করেছি তোমাদের সাথে থাকতে কিন্তু আর হচ্ছে না আমার দ্বারা। একই শরীরে একজন এন্জেলের সাথে আমি থাকতে পারবো না আর। আমি হলাম ডেভিল কিং আর আমাকেই যদি শরীরের শেয়ার দিতে হয়।(ডেভিল কিং)
.
–গর্ব করো না। এটা ভুলে যেয়ো না আমার কাছে এন্জেল কিং এর ক্ষমতা রয়েছে। যদিও আমি হ্যাভেনের কিং না। আমার সাথে একই শরীরে থাকতে পারছো এটাই তোমাদের ভাগ্য।(এন্জেল জ্যাক)
.
–তাহলে হয়ে যাক লড়াই, যে জিতবে মানুষ জ্যাকের শরীর তার হয়ে যাবে চিরদিনের জন্য।(ডেভিল জ্যাক)
.
–আমি এই লড়াই টড়াই এর ভিতরে নেই। আমার শুধু কিছুটা রক্ত দিলে আমি মানুষ জ্যাকের শরীরের এক কোনায় বসে ঘুমাতে পারবে, কাউকে ডিসট্রাব করবো না।(ভ্যাম্পায়ার জ্যাক)
.
–দেখো আমি লড়তে চাই না। তেমরা সবাই আমার কাছে বন্ধুর মতো। আমি বন্ধুদের গায়ে হাত তুলতে চাই না।(ডিম্যান জ্যাক)
.
–এখানে কি হচ্ছে আমি বুঝতে পারছি না?(আমি)
.
–আচ্ছা কে মানুষ জ্যাকের শরীরে থাকবে সেটা সেই সিদ্ধান্ত নিক, আমাদের যুদ্ধের কোনো প্রয়োজন হবে না সেটার জন্য।(ভ্যাম্পায়ার জ্যাক)
.
–ঠিক আছে। তো মানুষ জ্যাক, দেখো ডেভিল জ্যাক তোমার শরীরে থাকলে তোমার মাথা কুড়ে কুড়ে খাবে, কারন সে সবসময় আমাদের জায়গাটাও দখল করতে চাচ্ছে। সে নিজেই তোমার শরীর চাচ্ছে। তাই তাকে বাদে আমাদের তিনজনকে চুজ করো। তাকে তোমার শরীরে রাখলে তোমার ভালোবাসা, তোমার পবিত্র চিন্তা সব কিছু শেষ হয়ে যাবে। আগের ডেভিল কিং দের মতো হয়ে যাবে তুমি।(এন্জেল জ্যাক)
.
–অনেক হয়েছে, আমি জানি বাকি সবাই আমার সম্পর্কে সব খারাপ কথা বলবে, তাই আমি চাই না কোনো কথা বলতে। আমি নিজেই দখল করে নিবো মানুষ জ্যাকের শরীর।(ডেভিল জ্যাক)
।।।
।।।
এবার ডেভিল জ্যাক এর পুরো শরীর একটা কালো ধোয়ার মতো হয়ে গেলো। আর এন্জেল জ্যাকের আলো প্রায় একদম নিভে গিয়েছে,
.
–আমাকে মাফ করে দিয়ো। কোনো এন্জেল স্পেল ব্যবহার না করায় আমার ক্ষমতা একদমই কম হয়ে গেছে। আমি মনে হয় ডেভিল জ্যাককে থামাতে পারবো না।(এন্জেল জ্যাক)
।।।
।।।
ডেভিল জ্যাক এর অন্ধকার আমাকে গিলে ফেলছিলো। আমি নরতেও পারছি না, কথাও বলতে পারছি না। বুঝতে পারলাম আসলেই আমি এখন মানুষ। আমার করার মতো কিছুই নাই। হঠাৎ আকাশ থেকে একটা আলো দেখা দিলো, জানি না সেটা কিসের কিন্তু সেই আলোর জন্য এন্জেল জ্যাকের আলোও আস্তে আস্তে বারতে লাগলো, এন্জেল জ্যাকের আলোর জন্য ডেভিল জ্যাকের কালো অন্ধকার ধোয়ার মতো শরীর আস্তে আস্তে আসল ফর্মের মতো হয়ে গেলো,
.
–এখন নাহয় আমাকে থামাতে পেরেছো, কিন্তু একদিন দেইখো এই শরীরে শুধু অন্ধকারই থাকবে। আমি কোনো আলোকে এই শরীরকে স্পর্শ করতে দিবো না তখন।(ডেভিল জ্যাক ধমকের সুরে বলে উঠলো)

।।।
।।।
সাথে সাথে আমি ঘুম থেকে উঠে পরলাম। আমার উপরে বসে আছে আফরিয়েল, শুধু বসে না আমার ঠোটে ঠোট লাগিয়ে চুম্বন ও দিচ্ছে। আমি জানতাম এই মেয়ের একটা সমস্যা ছিলো কিন্তু আমাকে ঘুমের ঘোরে মারবে সেটা আমি জানতাম না। আমি একটা ধাক্কা দিয়ে দূরে ফেলে দিলাম। নিচে পরতে গিয়েছিলো কিন্তু দুটো ডানা বের করে উড়তে উড়তে ফ্লোরে দাড়ালো সে।
.
–কি করছিলেন আপনি? আমাকে মারতে চাচ্ছিলেন? নাকি রেপ করতে ছিলেন?(আমি রেগে বল্লাম)
।।।।।
।।।।
।।।
।।

(((চলবে)))

#ভ্যাম্পায়ার_কুইন#
পর্বঃ৩০
.
.
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
.
.
আমি পুরো অবাক হয়েছি। যে মেয়ে একটু আগে আমাকে খারাপ মনে করছিলো। ভাবছিলো আমি ওর সাথে খারাপ কিছু করবো, সেই এখন আমাকে চুমু দিলো। আমি রেগে আছি অনেকটা। আমি এখনো এনাকেই ঠিক মতো কিস করতে পারলাম না। কিন্তু এই এন্জেল আমার ঘুমের সুবিধা নিয়ে আমাকে কিস করেছে। আমি বুঝতে পারছি না ও এখনো এখানে কি করছে। এতোক্ষনে তো ওর হ্যাভেনে চলে যাওয়ার কথা ছিলো। তাহলে কি লুসেফার ওকে ফেরত পাঠায় নি। আমার একটা আদেশ কিভাবে অমান্য করলো সে এটা আমি বুঝতে পারলাম না। আমি সাথে সাথেই লুসেফারকে ডাকলাম আমার কক্ষে। আমার রাগের ফলে আমার শরীর থেকে কালো ছায়া আবার বারতে লাগলো,
.
–জ্বী মাই কিং, আপনি ডেকেছেন?(লুসেফার)
.
–হ্যা। আমি তোমাকে একটা কাজ দিয়েছি আর তুমি সেটা ঠিক মতো করো নি।(আমি)
.
–কিন্তু মাই কিং আমি তো প্রিন্সেস আফরিয়েলকে হ্যাভেনে পৌছে দিয়েছি।(লুসেফার)
.
–তাহলে ও এখানে কি করছে?(আমি রেগে বললাম)
.
–ডেভিল কিং শুধু শুধু আপনার জেনারেলের উপরে রাগ করে কোনো লাভ নেই। উনি আসলেই আমাকে হ্যাভেনে পৌছে দিয়ে এসেছেন।(আফরিয়েল)
.
–তাহলে আপনি আবার টেলিপোর্ট হয়ে এসেছেন? কিন্তু আপনি যে বললেন আপনি সেই স্পেল জানেন না।(আমি)
.
–আসলে সেটা নয়। একটা স্পেল আছে যেটার নাম বডি ডুপ্লিকেইট। এটার দ্বারা আমি আমার নিজের মতো দুটো বডি বানাতে পারি। আর আমার কপি বডিকে জেনারেল লুসেফার নিয়ে গিয়েছেন।(আফরিয়েল)
.
–কিন্তু কেনো? আপনি তো চলে যাওয়ার জন্য অস্থির হয়ে ছিলেন।(আমি)
.
–হ্যা। প্রথমে ভেবেছিলাম আপনি হয়তো আমার সাথে খারাপ কিছু করবেন তাই চলে যেতে চেয়েছিলাম। কিন্তু পরে মন বদলে গেলো। হ্যাভেনে এখন চলে গেলে আমার বাকি দুনিয়া গুলো দেখা হবে। বিশেষ করে আমার মানুষের দুনিয়া দেখার অনেক ইচ্ছা। আমার বড় দুই বোন সব সময় নিজের ইচ্ছামতো ঘুরতে পারে যেখানে সেখানে, কিন্তু আমার হ্যাভেনের বাইরে পা দেওয়া নিষেধ। তাই একটা সুযোগ পেয়েছি এটা হারাতে চাই না।(আফরিয়েল)
.
–ও।(আমি)
.
–আর আপনার অবস্থাও আমি ভালো দেখি নি। আপনি যখন আমার হাত স্পর্শ করেছিলেন আমি তখনি বুঝতে পেরেছিলাম আপনার মধ্যে কিছু একটা চলছে। আর সেটা খুবই ভয়ানক। আপনাকে প্রথম দেখে আমি অবাক হয়েছি। আজ পর্যন্ত কেউ ডেভিল আর এন্জেল এর ক্ষমতা এক সাথে ব্যবহার করতে পারে নি। আপনি দুটোর ক্ষমতা বহন করলেও, আপনার এন্জেল সাইড অনেক দুর্বল ছিলো। আর আপনি যখন ঘুমাচ্ছিলেন তখন আপনি আপনার মনস্টার-এন্জেল ফর্মে ছিলেন। কিন্তু আপনার বাম পাশের কালো ডানার পাওয়ার গুলো আসতে আসতে বারতে ছিলো, আর আপনার সাদা ডানাগুলো আসতে আসতে কালো হয়ে যাচ্ছিলো। আমার মনে হলো আপনার এন্জেল সাইড হয়তো পাওয়ার হারিয়ে ফেলছে।(আফরিয়েল)
.
–তাহলে আমি স্বপ্নে আকাশ থেকে একটা আলো দেখেছিলাম সেটা কি আপনার?(আমি)
.
–আপনি ঘুমে ছিলেন। আর স্বপ্নের রানী তার দুনিয়াতে নেই, তাই আপনার স্বপ্নে আপনার ক্ষমতা গুলো জীবন্ত হয়ে ছিলো। আর তাদের মধ্যে লড়াই ও হচ্ছিলো?(আফরিয়েল)
.
–এগুলো আপনি জানেন কিভাবে?(আমি)
.
–আপনার সাথে কি হচ্ছিলো সেটা আমি প্রথমে ভালো করে বুঝি নি। তাই আমাদের এন্জেলদের একটা গোপন স্পেল আমি ব্যবহার করেছি আপনার উপরে?(আফরিয়েল)
.
–সেটার জন্য কিস করতে হবে আমাকে?(আমি)
.
–স্পেলটা কিস এর মাধ্যমেই শুরু হয়। এটার দ্বারা আমি কারো কি ধরনের রোগ বা সমস্যা হচ্ছে এটা খুব সহজেই দেখতে পারি।(আফরিয়েল)
.
–এখন আমি বুঝতে পেরেছি। আপনি শক্তিশালী একটা স্পেল ব্যবহার করেছেন। আর যেহেতু আন্ডারওয়ার্ল্ডে ব্যবহার করছেন তার অর্ধেক ম্যাজিক পাওয়ার আমার শরীরে এসেছে।(আমি)
.
–হ্যা।(আফরিয়েল)
।।।
।।।
এবার আমি বুঝেছি কেনো এন্জেল জ্যাকের ক্ষমতা বেরেছিলো। আফরিয়েলের ব্যবহার করা স্পেলটার জন্যই সেটা আমার শরীরে অনেক ম্যাজিক পাওয়ার বারিয়েছে। যেহেতু সেটা অনেক পিওর পাওয়ার, তাই সেটা আমার এন্জেল সাইডে যোগ হয়েছে। যায়হোক বুঝলাম আফরিয়েল অনেকটা আমাকে খারাপ হওয়া থেকে বাচিয়েছে। তারপরও কিসের ব্যাপারটা আমার ভালো লাগছে। রাগ কমে গেছে এখন। মাথা ব্যথাও নেই এখন। এখন থেকে স্পেল কম ব্যবহার করতে হবে। একদম প্রয়োজনের সময় ব্যবহার করতে হবে, নাহলে আবারো একটু আগের মতো অবস্থা হবে।
.
–আপনি আমার অথিতি। এমনকি আমার সাহায্যও করেছেন। আপনার এখানে থাকাতে আমার কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু একটা কথা বলে দি, কখনো আমার কাছে আসার চেষ্টা করবেন না আর?(আমি)
।।।
।।।
আমার এই কথাটা শুনে অনেকটা নিরাশ হলো আফরিয়েল। হয়তো এটা আশা করে নি আমার থেকে। ওর ভাব দেখে মনে হচ্ছে হয়তো আমাকে লাইক করা শুরু করেছে। সে যায় হোক। আমাকে দুর্বল হওয়া চলবে না। দেখতে আফরিয়েল এনার থেকে অনেক গুন সুন্দরী হলেও আমার মন শুধু এনার জন্য। আমি চাই না ও আমার জন্য কষ্ট পাক। এমনিতেই এনা কষ্টে আছে এখন আমি জানি। ভালোবাসার মানুষ ডেভিল কিং এটা কেউ মানতে পারে না। সে যায় হোক আমি আর কিছু বললাম না। লুসেফার তার কাজের জন্য মাফ চেয়েছে। যদিও তার কোনো ভুল নেই, তারপরও মাফ চেয়েছে। একজন জেনারেল এতো সহজে বোকা হয়েছে এটা সে মানতে পারছিলো না। কিছু শাস্তি চাচ্ছিলো আমার থেকে। আমিও মানা করতে পারি নি। শাস্তি হিসাবে আমার টেলিপোর্ট এর সকল কাজ ওকে দিয়ে দিলাম। আমার এখন স্পেল কম ব্যবহার করতে হবে, তাই যেখানে যাওয়ার দরকার সেখানে লুসেফারই আমাকে নিয়ে যাবে। আমি লুসেফারের সাথে হেটে যাচ্ছি সিংহাসনের দিকে,
.
–মাই কিং আপনি হাটছেন কেনো? আপনি চাইলে আমি আপনাকে টেলিপোর্ট করে সিংহাসনে নিয়ে যাচ্ছি।(লুসেফার)
.
–এই ছোট ছোট কাজের জন্য ম্যাজিকের উপরে নির্ভর না করায় ভালো। আর হালকা হাটা চলা করা শরীরের জন্য ভালো, তাতে আমার মানুষের যে ফর্মটা আছে এটা ভালো থাকবে। তোমরাও মাঝে মাঝে চেষ্টা করো।(আমি)
.
–জ্বী মাই কিং, করবো। কিন্তু আমরা প্রিন্সেস আফরিয়েল এর কি করবো? তাকে এখানে এভাবে রাখলে তো হ্যাভেন ভাববে আমরা তাকে জোর করে এখানে রেখেছি। আর আমাদের মধ্যে যুদ্ধ আবার লেগে যাবে।(লুসেফার)
.
–আমার হ্যাভেনের সাথে যুদ্ধে যাওয়ার কোনো চিন্তা নাই। কিন্তু হ্যাভেন যদি জোর করে আমাদের উপরে হামলা করে, তাহলে হ্যাভেনকেও দেখিয়ে দিতে পারবো আন্ডারওয়ার্ল্ড আর আগের মনস্টার ওয়ার্ল্ড নেই। ডেভিলরা এখন মনস্টারদের ছাড়াই এন্জেলদের হারাতে পারবে।(আমি)
.
–মাই কিং, কিছু মনে করবেন না? কিন্তু হ্যারি আমাকে বলেছি কিং মাইকেল আপনার মামা হয়।(লুসেফার ভয়ে বললো)
.
–হ্যা। কোনো ভয় পাওয়ার দরকার নেই লুসেফার। আমাকে নিজের ছেলের মতোই দেখতে পারেন আপনি, শুধু শুধু ভয় পেয়ে লাভ আছে?(আমি)
.
–সেটা তো আমার ভাগ্য হবে মাই কিং, আমি বলতে চাচ্ছিলাম যেহেতু আপনার শরীরে আপনার আম্মার এন্জেল পাওয়ার রয়েছে, সেটার প্রমান আপনি হ্যাভেনের প্রিন্স। কিং মাইকেল এতোটাও বোকা হবে না যে আপনার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে, কারন সে জানে আপনার কাছে এখনি এন্জেল কিং এর ক্ষমতা রয়েছে। আপনার ছয়টা এন্জেল ডানা সেটার প্রমান।(লুসেফার)
.
–হ্যা, মাইকেল মনে হয় না কোনো যুদ্ধে যাবে আমাদের বিরুদ্ধে।(আমি)
.
–কিন্তু মাই কিং, কিং মাইকেল তার প্রায় সময় পৃথিবীতে কাটায়, তার পৃথিবীর পশুপাখির প্রতি অনেক ভালোবাসা। তাই হ্যাভেন থেকে কেউ তাকে যোগাযোগ না করলে তিনি সেখানেই থাকেন। আর সেই সময়ে হ্যাভেনের সকল কাজ হয় হ্যাভেনের প্রথম ও দ্বিতীয় প্রিন্সেস এর আদেশে। কিং মাইকেল হয়তো আপনার সাথে যুদ্ধ করবে না। কিন্তু প্রথম ও দ্বিতীয় প্রিন্সেস পরের হ্যাভেনের সিংহাসন পাওয়ার জন্য ঠিকই আপনাকে হারাতে চাইবে।(লুসেফার)
.
–হ্যা আমি বুঝতে পেরেছি তাহলে। তারা এখন হয়তো ভাবছে আমি আসলেই জোর করে প্রিন্সেস আফরিয়েলকে এখানে রেখে দিয়েছি। তাই এই সুযোগে তারা যুদ্ধ ছুড়ে দিবে আমাদের উপর।(আমি)
.
–সবচেয়ে ভয়ানক হবে যদি দুই জন প্রিন্সেস এর একজনও লোকির সাথে হাত মিলিয়ে নেই। আর সেটা হলে আমাদের জন্য অনেক খারাপ হবে। আমাদের বাহিনী আগের থেকেও শক্তিশালী হলেও এজগার্ড, ড্রাগন এবং একই সাথে এন্জেলদের সাথে লড়তে পারবে না।(লুসেফার)
.
–হ্যা আমি বুঝেছি।(আমি)
।।।
।।।
আমি গিয়ে সিংহাসনে বসলাম। সময় যত যাচ্ছে আমার চিন্তা তত বারছে। একটা রাজ্য চালনা করা মোটেও সহজ কাজ নই সেটা আমি বুঝতে পারছি। একটা সাধারন জীবনই সবচেয়ে ভালো। তার উপর পুরান ডেভিল কিং এর অভিশাপ এই পুরো দুনিয়া আমার হাতের মুঠোই থাকবে। আসলেই কি সেটা হবে? আমার আম্মা নাকি সেই ভবিষ্যৎ পাল্টে দিয়েছিলো। পাল্টে দিলেই ভালো। এই ছোট একটা আন্ডারওয়ার্ল্ডই আমার শাসন করতে এখন এতো চিন্তা লাগছে আর পুরো এগারো দুনিয়া হলে তো আমার মাথা ফেটেই যাবে। কিন্তু আমি একটা জিনিস দেখতে পারছি না। আমার মধ্যে তো আমি পার্থক্য দেখতে পারছি নি। হয়তো নতুন হিসাবে আমার মধ্যে একজন ডেভিল আর এন্জেল দুটোর ক্ষমতা আছে। বিশেষ করে ডেভিল কিং এবং এন্জেল কিং এর ক্ষমতা। কিন্তু একজন ডেভিল কিং আর একজন এন্জেল কিং মিলেও কখনো এগারো দুনিয়াকে নিজেদের করতে পারবে না। এই এগারো দুনিয়াকে যত সহজ মনে হয় তত সহজ তারা না। মনস্টার দুনিয়াকেও যত দুর্বল মনে হয় তারা তত দুর্বল না। আন্ডারওয়ার্ল্ডে আসার পর আমি জানতে পেরেছি, এটা পুরানো ডেভিল কিং এর মেমোরীর মধ্যেই একটা জিনিস। মনস্টার দুনিয়ার পাঁচ রাজ্যের মধ্যে একটার মধ্যে এমন নয়জন মনস্টার আছে, যারা একত্রে একজন ডেভিল কিং কেও হারাতে পারে। তাদের ক্ষমতা এমন যে প্রথম ডেভিল কিং কে তাদের ক্ষমতা লক করে রাখতে হয়েছিলো। ক্ষমতা লক করে দেওয়ার পরও সেই নয়জন থেমে থাকেনি। বংশের মধ্য দিয়ে এই ক্ষমতা চলতে চলতে এই সময়েও নয়জন আছে। কিন্তু তাদের ক্ষমতা এখনো লক করা। পুরাতন সকল ডেভিল কিং ভয়ে থাকতো এই নয়জনের জন্য। কিন্তু আমাকে ভয় পেলে চলবে না।
।।।
।।।
মনে হয় না আমি নিজে কখনো এগারো দুনিয়াকে নিজের করতে পারবো। এমনকি আমি নিজে কখনো আন্ডারওয়ার্ল্ডকে শত্রুর থেকে বাচাতে পারবো না। কিন্তু দুটোই আমি করতে পারবো যদি আমার সেনা শক্তিশালী হয়। আমার এমন সৈন্য দরকার যাদের একশো জনই এক লক্ষ শত্রুকে হারাতে পারবে। আমার এগারো দুনিয়া দখলের কোনো উদ্দেশ্য নেই। কিন্তু এগারো দুনিয়ার মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী বানানোর চেষ্টা করবো আন্ডারওয়ার্ল্ডে। এখানেও একটা সমস্যা। আমার আন্ডারওয়ার্ল্ড শক্তিশালী হলে সেটার লাভ মনস্টার দুনিয়ার বাকি পাঁচ রাজ্য ও করবে, যেহেতু আন্ডারওয়ার্ল্ড ও মনস্টার দুনিয়ার একটা অংশ। পরে হয়তো আমাকে আন্ডারওয়ার্ল্ডকে আলাদা একটা দুনিয়া বানিয়ে ফেলতে হবে। এতে করে আন্ডারওয়ার্ল্ড আর মনস্টার দুনিয়ার অংশ থাকবে না। সে যায় হোক অনেক আজে বাজে ভাবনা ভাবছিলাম। এখন আসল কাজে আসা যাক। থরের সাথে কথা বলতে হবে। থরও বিশাল একটা বিশ্রাম নিয়ে অপেক্ষা করছিলো আমার জন্য সিংহাসনের সামনে। যদিও সে একজন এজগার্ডের প্রিন্স, তারপর ও সে একজন অন্য দুনিয়ার রাজার সামনে দাড়িয়ে আছে, তাই তাকে আমাকে একটু সম্মান তো দেখাতে হবেই। থর আর আমি কিছুটা কথা বলতে লাগলাম,
.
–বেশ অনেকদিন লেগে গিয়েছে ডেভিল কিং আপনার পুরো ক্ষমতা জন্য।(থর)
.
–হ্যা।(আমি)
.
–আপনার মনস্টার ফর্ম দেখেই মনে হচ্ছে আমার মিওনির থাকলেও আমি আপনাকে হারাতে পারবো না।(থর)
.
–আপনার মিওনির এর কাছে তো আমার এই মনস্টার ফর্ম ও কিছু না। আগের ডেভিল কিং এর মেমোরী থেকে জানতে পারলাম, আগের ডেভিল কিং কে প্রত্যেকবারই আপনি লড়াইয়ে হারিয়েছেন।(আমি)
.
–হ্যা। লোকির সাথে অনেকবার হাত মিলিয়ে আমাকে মারার চেষ্টা করেছিলো। কিন্তু আমার মিওনির এর এক আঘাতেই হেরে যেতো।(থর)
.
–আমার জন্যও এক আঘাতই প্রয়োজন।(আমি)
.
–আমার সেটা মনে হয় না। আপনার মধ্য থেকে আমি অসম্ভব পরিমান পাওয়ার অনুভব করতে পারছি।(থর)
.
–আচ্ছা সে যায়হোক। এখানে কেমন বোধ করছেন?(আমি)
.
–আন্ডারওয়ার্ল্ডে এর আগেও কয়েকবার এসেছি। তাই নিজের বাসার মতোই মনে হচ্ছে। বাদ দিন। আসল কথায় আসি। আপনার সৈন্য সবাই প্রস্তুত তো?(থর)
.
–হ্যা।(আমি)
.
–লোকি আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে। সে জানে আপনি আমার সাথে হাত মিলিয়েছেন। এবং যুদ্ধ করতেও প্রস্তুত।(থর)
.
–হুমমম।(আমি)
.
–লোকি চাচ্ছে এই এগারো দুনিয়া মধ্যে যাতে সবাই ওকে রাজা হিসাবে মেনে নেই, আর যারা মানবে না তাদের সবাইকে মেরে ফেলবে। আর ওর স্বপ্নের রাস্তায় প্রথমত আমি। এর পর আপনি রয়েছেন। লোকির কাছে আপনি অনেক বড় অস্ত্র। আর সে অস্ত্র যদি লোকি ব্যবহার না করতে পারে তাহলে তাকে ধ্বংস করতে দেরী করবে না সে।(থর)
.
–আমার চিন্তা করবেন না। লোকির স্বপ্ন কখনো পূরন হবে না। আমরা দুইদিনের মধ্যে যুদ্ধে যাবো। এজগার্ডের সিংহাসন থেকে লোকিকে সরিয়ে দিবো।(আমি)
।।।।।
।।।।
।।।
।।

(((চলবে)))

।।
#ভ্যাম্পায়ার_কুইন#
পর্বঃ৩১
.
.
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
.
.
দেখতে দেখতে দুইদিন সময় পার হয়ে গেলো, গতকাল লুসেফারের সাথে গিয়েছিলাম সিলভার লোটাসে। এনার সাথে ঠিক মতো এখনো কথা হয় নি। ওর রাগ কিছুতেই ভাঙাতে পারি নি আমি। হালকা কিছুটা কথা বলেছিলো যখন আমি ওকে একটু জোর করেছিলাম। তারপরও ফরমালিটি নিয়ে। আসলে এনা আমি ডেভিল কিং সেটার জন্য তেমন রাগ করে নি যতটা করেছে এই বিষয়টা ওর থেকে লুকানোর জন্য। ভালোবাসার মানুষের কাছে যদি নিজের বাস্তব লুকিয়ে রাখতে হয় তাহলে সেটা ভালোবাসা কিভাবে হলো। এটুকুই ওর কথা ছিলো। এর থেকে বেশী কিছু ওর থেকে বের করতে পারি নি। যায়হোক অনেকটা হতাশা বুক ভরা কষ্ট নিয়ে আন্ডারওয়ার্ল্ডে এসে আমি ইচ্ছা মতো ঘুম দিয়েছি। ঘুমের মধ্যেও আমি শান্তি পাচ্ছিলাম না। যেহেতু স্বপ্নের রানী তার দুনিয়াতে নেই তাই অনেক আজব আজব স্বপ্ন আমি দেখছিলাম।
।।
।।
এখন উঠে আমি ভিরুকে নিয়ে আন্ডারওয়ার্ল্ডে উড়তে লাগলাম। আন্ডারওয়ার্ল্ড মূলত মাটির নিচে। এটা ঠিক মনস্টার দুনিয়ার যে গ্রহটা রয়েছে সেটার মাঝখানে অবস্থিত। তাই আন্ডারওয়ার্ল্ডের চারিদিকে রয়েছে গলিত লাভা। বাইরে থেকে ম্যাজিকের সাহায্য ছাড়া এখানে কেউই ঢুকতে পারবে না। কিন্তু এনার সাথে আমার একটা কন্ট্রাক্ট হয়েছে, সেটা হলো যুদ্ধের পরে আমাকে আন্ডারওয়ার্ল্ড খুলে দিতে হবে ওদের জন্য। পাঁচ রাজ্যের সবাই আন্ডারওয়ার্ল্ডে প্রবেশ করতে পারবে, আবার আন্ডারওয়ার্ল্ডের সবাই পাঁচ রাজ্যে নিজ ইচ্ছা মতো প্রবেশ করতে পারবে, কিন্তু বিষয় টা আমার তেমন ভালো মনে হচ্ছে না। আন্ডারওয়ার্ল্ড যদি এরকম করে তাহলে মনস্টার দুনিয়ায় ছয়টা রাজ্য থাকবে বলে সবাই মনে করবে। এখন এমনিতেই আন্ডারওয়ার্ল্ডকে সবাই আলাদা একটা দুনিয়ার চোখেই দেখে, কারন এটা সব দুনিয়ার থেকে আলাদা একটা জায়গায় আছে, এবং আমি না চাইলে কিছু সংখ্যক লোক বাদে এখানে কেউ প্রবেশ করতে পারবে না।
।।
।।
যাইহোক অনেক হলো আলাপ। আমি ভিরুর পিঠে দাড়িয়ে উড়ে যাচ্ছিলাম হ্যারির কাছে। হ্যারিকে আজকে আমার পঞ্চম জেনারেল হিসাবে ঘোষনা করতে হবে। মূলত ডেভিলদের কাউকে সে তার সেনা হিসাবে পাবে না। তার মূল সেনা সবসময় মনস্টার দুনিয়ার পাঁচ রাজ্য থেকে আসা লোকজনই হবে। যাইহোক আমি একটা ভাঙা স্টুডিয়াম এর উপরে এসে থামলাম। এখানেই হ্যারির ট্রেনিং চলছে। ডেভিলদের একটা জিনিস আমার খুব ভালো লাগে। ডেভিল কিং যত শক্তিশালী হবে তার জেনারেল, সেনা ততই বেশী শক্তিশালী হবে। এদের সব শক্তি মূলত ডেভিল কিং থেকেই আসে। ডেভিল কিং যদি মারা যায়, তাহলে সকল ডেভিলরা সাধারন মনস্টারই হয়ে যায়। ডেভিলরা ও এক ধরনের মনস্টার। তবে সকল মনস্টার থেকে ডেভিলরা অনেক শক্তিশালী হয়। তাদের ম্যাজিকাল ক্ষমতাও বেশী হয়ে থাকে। আমি নিচে দেখতে পেলাম হ্যারি দশ বারো জন ডেভিলদের সাথে লড়ছে। আগের থেকে অনেক শক্তিশালী হয়েছে। ওর তলোয়ার চালনোর ভঙ্গিও অনেক উন্নত হয়েছে। আমি ওদের লড়াই এর মধ্যে প্রবেশ করলাম। এক পাশে ক্যারেন, আফরিয়েল, আর জেসি বসে বসে গল্প করছে৷ আমি এখানে আসছি হয়তো ওরা সেটা লক্ষ করে নি। আমার সকল ক্ষমতার মধ্যে একটা ক্ষমতা হলো আমি দূরের জিনিস খুব কাছে দেখতে পারি। এটার জন্য কোনো স্পেলের প্রয়োজন হয় না। শুধু তাই না দূরে কেউ কিছু কথা বললেও সেটা শুনতে পারি সহজে। দুইটা পাওয়ার লড়াই এর জন্য বেশ উপযোগী। শত্রুকে দূর থেকেই সঠিক ভাবে আঘাত করা যায় এইটার মাধ্যমে, যায়হোক আমাকে দেখে সবাই কুর্নিশ করলো আমাকে।
.
–তোমার ট্রেনিং কিছুটা কাজে দিয়েছে বলতে হবে হ্যারি।(আমি)
.
–মাই কিং, ধন্যবাদ আপনাকে। আমি আমার সম্পূর্ন চেষ্টা করবো।(হ্যারি)
.
–হ্যারি, একটু পরেই যুদ্ধের ময়দানে যেতে হবে আমাদের। তাই বেশী সময় নেই আমাদের। তুমি প্রস্তুত আমার জেনারেল হওয়ার জন্য?(আমি)
.
–জ্বী মাই কিং।(হ্যারি)
।।।
।।।
হ্যারি হাটু গেড়ে বসলো আমার সামনে। আমি ওর কপালে হাত দিলাম। এবার ওকে বলতে লাগলাম,
.
–হ্যারি অদ্রি, আমি জ্যাকসন ব্রিট, ডেভিল কিং, তোমাকে আজ থেকে আমার পঞ্চম জেনারেল বানাচ্ছি।(আমি)
।।।
।।।
আমার কথাটা বলার সাথে সাথে আমার শরীর থেকে একটা কালো ধোয়া হ্যারির শরীরে ঢুকলো। আর তাতে করে হ্যারির ডানা পিছনে আস্তে আস্তে ডানা বারতে লাগলে। মূলত ডেভিল জেনারেলদের দশটা ডানা থাকে। যেহেতু হ্যারি আমার চার জেনারেলের কেউ না, তাই তার পিঠে দশটা ডানা হলো না। বরং ছয়টা ডানা হলো। এখন যদি চার জেনারেলের মধ্যে কেউ একজন মারা যায় তাহলে ওর পিঠে দশটা ডানা হবে, এবং পুরো জেনারেলের ক্ষমতা পাবে। এখন একজন জেনারেলের পাঁচ ভাগের একভাগ শক্তি হয়েছে তার।
এতোক্ষনে জেসি আমাকে লক্ষ করেছে। জেসি, ক্যারেন আর আফরিয়েল এই দিকেই আসছে।
.
–হ্যারি আমি তোমাকে আদেশ করছি এখনি সিলভার লোটাসে যাও। তোমার বাবার সেনা থেকে একশোজন ভালো সেনা সাথে করে নিয়ে যাও।(আমি)
.
–ইয়েস, মাই কিং। আমি এখনি রওনা দিচ্ছি।(হ্যারি)
।।
।।
হ্যারি আর দেরী করলো না। ও সাথে সাথে উড়ে গেলো। হয়তো লুসেফারের সাথে দেখা করবে। আমি জানি না এখনো, যুদ্ধ কোথায় হবে। কিন্তু সেনা তো রেডী রাখতে হবে। জেসি আমাকে বলতে লাগলো,
.
–শুনলাম তুই নাকি মেয়েদের কিডন্যাপ করা শুরু করেছিস।(জেসি)
.
–কি বলছিস আমি কিডন্যাপ করবো কেনো?(আমি)
.
–এইযে আমাকে।(আফরিয়েল)
.
–ওকে তো স্বপ্নের রানীকে বাচাতে এনেছিলাম। কিন্তু সেটার পরে তাকে পাঠিয়ে দিতে চেয়েছি কিন্তু সে যায় নি।(আমি)
.
–এনা এই ব্যাপারে শুনলে কি করবে আমি সেটা ভাবছি। এমনিতেই ওর সাথে আমার যোগাযোগ হয়েছে, ভিশন রেগে আছে।(জেসি)
.
–তোর কথা হয়েছে ওর সাথে?(আমি)
.
–হ্যা। ম্যাজিক কলের মাধ্যমে কথা বলেছি। আর ওর কথা শুনে মনে হলো অনেক রেগেই আছে।(জেসি)
.
–আমার থেকে বেঁচে গেছো ভাইয়া, কিন্তু এখন যে এই এন্জেলকে এখানে এনে ভুল করেছো।(ক্যারেন)
.
–দেখ আমার প্রিন্সেসকে অনেক ভালো লেগেছে, এনাকে কিভাবে বুঝাবি আমি জানি না। যেহেতু তোর জন্য আমার ঘাড়ে একটা সতিন এসেছে তাই তোকে আমি খালি রাখতে চাই না। এনা আর আফরিয়েল দুইজনকেই আমি ভাবী হিসাবে চাই। না মানলে আমি এনাকে এমন কিছু বলবো যে তোর ভালোবাসা একদম চুরমার হয়ে যাবে।(জেসি)
.
–তুই আমার আপন বোন তো?(আমি)
.
–কেনো? ক্যারেনকে আমার ঘাড়ে দেওয়া সময় সেটা মনে ছিলো?(জেসি)
.
–ঔটা তো এক্সিডেন্ট ছিলো।(আমি)
.
–আমি কিছু শুনতে চাই না। কি করবি সেটা আমি জানি না। কিন্তু আমি ভাবী হিসাবে দুইজনকেই চাই। তাতে যদি তোর এন্জেল দের সাথে যুদ্ধ করতে হয় তাতেও কোনো সমস্যা নাই।(জেসি)
.
–তুই ওর সামনেই এগুলো বলতেছোস কেনো?(আমি)
.
–আমার কোনো সমস্যা নাই? আপনার সাথে দেখা করার পর থেকে আমার আপনার প্রতি অনেক ভালো ধারনা হয়ে গেছে। আর হ্যাভেন এর রানী আমি কখনো হতে পারবো না, যেহেতু আমি ডেভিল কিং এর দ্বারা কিডন্যাপ হয়েছি আমি যতই নিষ্পাপ হয় না কেনো এখন হ্যাভেনে গেলে আমি কখনো রানী হতে পারবো না। সেটা আমার দুই বোনের একজন হবে। আমার মর্যাদাও সেখানে অনেক কমে যাবে। তাই আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি।(আফরিয়েল)
.
–যেহেতু আপনি আমাকে এখানে এনেছেন। আর আমার মর্যাদায় দাগ লাগিয়ে দিয়েছেন হ্যাভেনে। তাই আমি এখান থেকে যেতে চাই না। আমি আপনার রানী হতে চাই। অবশ্য না আপনি বলতে পারবেন না। এনা কে সেটা আমি প্রিন্সেস জেসির কাছ থেকে শুনেছি, আমি আপনাদের মধ্যে আসতে চাই না। শুধু আপনার মনে একটু জায়গা চাই।(আফরিয়েল)
.
–দেখ রাজি না হলে আমি ওকে নিয়ে সোজা এনার কাছে চলে যাবো। আর তখন কি হবে সেটা তো বুঝতে পারতেছোস?(জেসি)
.
–তুই আমার আর এনার মধ্যে পরলি কেনো?(আমি)
.
–আগে বল তুই কেনো আমার আর হ্যারির মধ্যে পরলি?(জেসি)
.
–সেটা তো এই বাচ্চার কাজ।(আমি)
.
–ঔ আমি বাচ্চা না একদম।(ক্যারেন)
.
–ওকে বাচ্চা বলতেছিস কেনো? তোর একদম ছোট বোন ও।(জেসি)
।।।
।।।
আমার মনে হয় ক্যারেন জেসির উপরেও ওর ক্ষমতা প্রয়োগ করেছে। নাহলে জেসির সাথে ক্যারেনের এতো ভাব সেটা মানা যায় না। যায়হোক ক্যারেন চুপ চাপই রয়েছে। কারন ও নিজে এখন খারাপ বোধ করে ওর কাজের জন্য। হয়তো মেয়েটা আস্তে আস্তে বড় হচ্ছে জেসির সাথে থেকে। যায়হোক আমি ওদের থেকে ভাবার জন্য কিছু সময় চেয়ে নিলাম,
.
–আচ্ছা আমাকে ভাবতে দে।(আমি)
.
–এতে আবার ভাবার কি আছে?(জেসি)
.
–আজকে যুদ্ধে যেতে হবে। আর আমি এখন এসব আজে বাজে ভাবনা মাথায় আনতে চাই না।(আমি)
.
–যুদ্ধে যাবে আজ? সেটা তো আমাদের আগে বলো নি ভাইয়া?(ক্যারেন)
.
–আমিও সাথে যাবো তোর।(জেসি)
.
–না আমার আদেশ তোরা তিনজন আন্ডারওয়ার্ল্ডেই থাকবি।(আমি)
.
–কিন্তু।(জেসি)
.
–কোনো কিন্তু না। আমার কথা না শুনলে আমি একটা রুমে তোদের লক করে দিবো।(আমি)
.
–হ্যারিও যাবে তাহলে?(জেসি)
.
–হ্যা। চিন্তা করিস না। ওর কিছু না হবে না।(আমি)
.
–হারামী, আমি ওর চিন্তা করছি না। আমার তোর চিন্তা হচ্ছে। ওকে বলা দরকার তোর খেয়াল রাখতে।(জেসি)
.
–আরে আমার কিছুই হবে না। তোরা কোনো চিন্তা করিস না।(আমি)
.
–প্রমিস কর।(জেসি)
.
–হ্যা বাবা প্রমিস।(আমি)
.
–আচ্ছা।(জেসি)
.
–জ্যাকসন সময় হয়ে গেছে। আমাদের যেতে হবে।(ভিরু হঠাৎ নিচে নেমে বললো)
.
–ঠিক আছে ভিরু চলো যায়।(আমি)
।।।
।।।
আমি এক লাফ দিয়ে আবারো ভিরুর পিঠে চরলাম। ভিরু আমাকে নিয়ে সোজা প্রাসাদের দিকে যেতে লাগলো, জেসিদের জন্য একটা কালো রথ আছে। সেটাই করে ওরা প্রাসাদে যাবে। প্রাসাদের সামনে আমার সমস্ত সৈন্য দাড়িয়ে রয়েছে। আমি সবার সামনে ভিরুর পিঠ থেকে নামলাম। সবাই আমাকে কুর্নিশ দিয়ে সম্মান জানালো।
.
–মাই কিং, লোকি মনস্টার দুনিয়ায় আক্রমন করার জন্য প্রস্তুত হয়ে আছে।(অর্নিজ)
.
–ওরা কি আন্ডারওয়ার্ল্ডে আক্রমন করবে না?(আমি)
.
–আমার মনে হয় না ওরা আন্ডারওয়ার্ল্ডে আক্রমন করবে। বরং ওরা বাকি পাচ রাজ্যে আক্রমন করবে।(থর)
.
–তাহলে তো আমাদের এখনি সেখানে যাওয়া উচিত।(আমি)
.
–লোকির সেনারা সবাই আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে। ওরা আক্রমন করছে না। ওদের ডিম্যান্ড হলো আপনি যুদ্ধক্ষেত্রে প্রবেশ করলেই ওরা আক্রমন করবে।(লুসেফার)
.
–আমি যতদূর জানি লোকি এই পুরো এগারো দুনিয়ার মধ্যে সবথেকে চালাক এবং মিথ্যাবাদী। ও আক্রমন করছে না এর মানে কিছু একটা ঠিকই প্লান করে রেখেছে ও।(থর)
.
–আমাদের সব বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে। অর্নিজ, লুইস, লুসেফার, কর্ডিজ যুদ্ধের সেনাদের সকল ভার আমি তোমাদের উপর দিচ্ছি। নিজেদের সেনাদের সঠিক ব্যবহার করবেন। যুদ্ধের সম্পর্কে আমার তত জ্ঞান নেই যততা আপনাদের আছে, তারপরও যুদ্ধক্ষেত্রে আপনাদের মতামত দিবেন আমাকে।(আমি)
.
–জ্বী মাই কিং।(চার জেনারেল)
.
–তাহলে চলুন যুদ্ধের ময়দানে যাওয়া যাক।(আমি)
।।।
।।।
আমি এতো সেনাকে টেলিপোর্ট করতে পারবো না। কিন্তু আন্ডারওয়ার্ল্ড গেইটের ব্যবহার ঠিকই করতে পারবো। গেটের মাধ্যমে আমরা খুব সহজে পৃথিবী এবং মনস্টার দুনিয়ার যে কোনো জায়গায় যেতে পারবো। আর গেটের সাহায্যে যাতায়াত খুব সহজও হয়। শুধু সমস্যা একটু সময় প্রয়োজন এতো লোকের গেইটের সাহায্যে কোথাও যেতে হলে।
।।
।।
আমি বিরাট একটা গেট খুলে ফেললাম ঠিক যুদ্ধের ময়দানে। জায়গাটা সকল রাজ্য থেকে অনেক দূরে। এখানে যুদ্ধ করলে আশে পাশের কোনো রাজ্যতেই হয়তো কোনো ক্ষতি হবে না। তারপরও বলা যায় না। প্রথমে গেইট দিয়ে আমি বের হলাম। আন্ডারওয়ার্ল্ডের গেইটের একটা সুবিধা। যদি আন্ডারওয়ার্ল্ড থেকে গেট ব্যবহার করা হয়, তাহলে নিজেকে হেটে গেইটের মধ্যে যেতে হয় না, বরং গেইটই সবার কাছে আসবে এবং অন্য জায়গায় নিয়ে যাবে। এখানে ঠিক তেমনি হচ্ছে সকল সৈন্যরা দাড়িয়ে ছিলো কিন্তু গেইট আস্তে আস্তে তাদের যুদ্ধের ময়দানে নিয়ে আসছে। আমাদের ডান পাশে দাড়িয়ে আছে পাঁচ রাজ্যের সেনা। আর বাম পাশে আমরাই এসেছি। ভাবলাম প্রথমে পরিস্থিতি বুঝে নিবো তারপর আক্রমন করবো। কিন্তু না লোকির ড্রাগন সেনা গুলো আমাদের সকল ডেভিল সেনাদের উপর আক্রমন শুরু করলো। তারা মুখ দিয়ে আগুন মারছিলো। যেহেতু এটা হঠাৎ ছিলো তাই বেশী কিছু করে উঠতে পারি নি। অনেক সেনা গুরুতর আহত হলো। আবার অনেকে মারাও গেলো। হয়তো লোকি এগুলো আগে থেকেই প্লান করে রেখেছে। এমনিতেও লোকি যদি আমাদের ডেভিল সেনাদের হারাতে পারে তাহলে এমনিতেই যুদ্ধ ওরা জিতে যাবে। কিন্তু আমরাও এতো সহজে হার মানছি না।
।।।।।
।।।।
।।।
।।

(((চলবে))