ভ্যাম্পায়ার কুইন ২ পর্ব-৪০+৪১+৪২

0
97

#ভ্যাম্পায়ার_কুইন#
#সিজন_2#
পর্বঃ৪০
.
.
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
.
.
আমি আমার দুই বোনের সাথে কথা বলে যেটুকু জানতে পারলাম যে স্কাই ড্রাগন এবং থান্ডার ড্রাগন দুটোই আমাদের নানার কাছে ছিলো, এবং সেটা এলেন এবং এলিনকে সেই গিফট করে। এর আগেও আমার মনে হয়েছিলো আমি ইগড্রাসিল এবং ভ্যালির মতো ট্যাটো অন্য কারো কাছেও দেখেছি, আমার স্মৃতিশক্তি হারিয়ে যাওয়ার ফলে আমি সঠিক ভাবে জিনিসটা মনে করতে পারি নি। এলেন এর হাতে বোল্ট এর ট্যাটু রয়েছে এবং এলিন এর হাতে রাইকুয়ার। রাইকুয়ার বাতাসের ক্ষমতা এবং বোল্টের থান্ডার ক্ষমতা মিলে একটা নতুন ক্ষমতা তৈরী করে যেটা ড্রাগন ব্যারিয়ার। এটার মধ্যে ড্রাগন ক্ষমতা ছাড়া অন্য কোনো ম্যাজিক কাজ করে না। আর এই শহরকে সুরক্ষিত রাখতে এলিন এবং এলেন দুজনেই ড্রাগন ব্যারিয়ার ব্যবহার করেছিলো।
।।।
।।।
তবে আমি একটা জিনিস বুঝতে পারছি না। এই শহরকে সুরক্ষা করে লাভ কি? যদিও এখানে অধিকাংশ মানুষ, তারপরও এই মানুষরা একে অপরকে দেখতে পারে না। আমার বর্তমান সহজাত হিসাবে আমি তাদেরকে শ্রদ্ধা করতে চাই, কিন্তু তাদের স্বভাব মোটেও ভালো না। আমি কিছু ক্ষনের জন্য বাসা থেকে বের হয়েছি থরের সাথে। যেহেতু বাসায় দুজনের সংখ্যা বেড়ে গেছে এখন, তাই আমাকে এখন যেতে হবে কিছু পন্য কিনতে। বাসার কাজ করার অভ্যাস ছিলো আগের দুনিয়াতে পৃথিবীতে। অনেক কাজই করতে হয়েছে। তখন যে পরিবারে ছিলাম আমি, একটা ছোট বোনও ছিলো, কিন্তু আমায় মোটেও দেখতে পারতো না। পৃথিবীর কথা মনে পরতেই আমার বন্ধু আবিরের কথাও মনে পরে গেলো। পৃথিবীতে একটা মাত্র বন্ধু ছিলো যে কিনা সব সময় আমার পাশে ছিলো। যদিও অন্য সবাই আমাকে অন্য রকম ভাবতো। আমি এখন বুঝতে পেরেছি সবাই আমাকে খারাপ চোখে দেখতো না বরং তারা আমাকে ভয় পেতো। এবং এরিয়ে চলতো আমাকে। আমি আগের দুঃখজনক দিনগুলো ভুলো হাটা শুরু করলাম। বাসার বাইরে বের হওয়ার পরে বাইরের সব ভাঙচুর দেখতে পেলাম। জেসির সাথে লড়তে গিয়ে এখানে সব কিছু ভেঙে চুরে গেছে। মনে হয় না আশে পাশে কেউ আছে।
.
–এরকম জায়গায় তোমার পরিবার কিভাবে আছে?(থর)
.
–মানুষেরা স্বাধীন ভাবে সব জায়গায় থাকতে পারে না। তবে এখানে মানুষেরা কিছুটা স্বাধীন, তাই সবার মাঝে রুগ্নতাও একটু বেশী।(আমি)
.
–শহরটা তো অনেক বিশাল। কিন্তু সেই হিসাবে কোনো উন্নতি নেই এখানে।(থর)
.
–এর কারন এখানের মানুষেরা অন্য কারো সাথে একত্রে থাকতে পছন্দ করে না।(আমি)
.
–আমি যতটা বুঝতে পারছি প্রতিটা শহর নিয়ন্ত্রন করে মিনিস্টার। শহরের উন্নতি এবং জনগনের সুরক্ষা সবই মিনিস্টারের দায়িত্ব। এখন মিনিস্টার যদি এসব কাজ ঠিক মতো না করে তাহলে উন্নতি হবে কিভাবে?(থর)
.
–মিনিস্টার?(আমি)
।।।
।।।
থরের কাজ থেকে মিনিস্টার কথাটা শুনে মনে পরলো আমার আম্মা এই শহরের মিনিস্টার। যদিও এটা আমি এলিন এর থেকে শুনেছি। আমার আম্মা যদি মিনিস্টার হয়ে থাকেন, তাহলে তার তো কর্তব্য এই শহরের উন্নতি করার। কিন্তু সে সেটা না করে কি করে আমি বুঝতে পারছি না। তার সব টা সময় সে বাইরেই থাকে। কোথায় থাকে এটা এলিন এবং এলেনও বলতে পারে না। যাইহোক সেই রহস্যও আস্তে আস্তে বের করা যাবে। প্রথমে আমাকে কিছু খাবার পন্য কিনতে হবে। আমি হাটতে হাটতে অনেকটা দূরে চলে এসেছি। তবে একটা জিনিস আমাকে এখনো ভাবাচ্ছে জেসিকে যদি ডেভিল কিং এখানে আসার জন্য অর্ডার করে, তাহলে ডেভিল কিং আমার আম্মাকে দিয়ে কি করতে চাই, হয়তো আমার আম্মার কাছে কিছু স্পেশাল জিনিস আছে, যেটা শুধু সেই জানে। সব কিছুতে আপাতোতো আমার ব্রেইন আটকে যাচ্ছে।
।।।
।।।
আমি থরের সাথে আমাদের বাসা থেকে অনেকটা দূরে চলে এসেছি। এই শহরটার মধ্যে বেশীরভাগই মানুষ। অন্য গোত্রের প্রানীও আছে। তবে মানুষের সংখ্যা এখানে বেশী। যদিও মানুষের ক্ষমতা এখানে, তারপরও মানুষেরা অন্য গোত্রের প্রানী দেখে ভয় পাই। যেমন কোনো বিস্টম্যান যদি একটা মানুষকে কোনো কিছু করতে বলে, তাহলে সেই মানুষটা সেটাই করে।
।।।
।।।
আমরা হাটতে হাটতে মার্কেটের মতো জায়গায় চলে এসেছি। এখানে কিছু সামান্য জিনিস নিয়ে অনেকগুলো দোকান তৈরী হয়েছে। একটা সাইনবোর্ড টানানো রয়েছে, যেখানে লেখা, “মানুষ বাদে অন্য গোত্রের জন্য সাধারন দামের অর্ধেক দামে পন্য বিক্রয় হবে।”
.
–জায়গাটা দেখেই বোঝা যাচ্ছে এখানে মানুষের গুরুত্ব তেমন নাই।(থর)
.
–হ্যা।(আমি)
.
–আমি আমার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলছি। আমার এজগার্ড আমি এখানেই তৈরী করবো। এবং এখানে সকল গোত্রের সমান অধিকার থাকবে।(থর)
.
–এটা কোনো কথা?(আমি)
.
–কেনো?(থর)
.
–ইগড্রোলিয়া আপনাকে এমনি এমনি একটা শহর দিয়ে দিবে বলে আমার মনে হয় না।(আমি)
.
–সেটার চিন্তা তোমাকে করতে হবে। প্রথমে ড্রাকুলা তার রাজ্যের নাম ছড়ালেই আমার কাজ ও হয়ে যাবে।(থর)
.
–ড্রাকুলার কথা শুনে মনে পরলো আমাদের তো ড্রাকুলার কাছে যাওয়ার কথা ছিলো?(আমি)
.
–সেটা নাহয় পরেই যাওয়া যাবে। প্রথমে তোমার বোনের রান্না করা খাবার তো খেতে হবে।(থর)
.
–মনে লাড্ডু ফুটছে?(আমি আস্তে আস্তে বল্লাম)
।।।
।।।
আমরা মার্কেটের মধ্যে আশার পরে সবাই চুপ হয়ে গেছে। শহরে আসার সময় সবাই খারাপ নজরে আমাদের দিকে তাকাচ্ছিলো। কিন্তু এখন আমাকে দেখে সবাই ভয় পাচ্ছে। আমি জানি না কেনো, কিন্তু সবার চোখে ভয় দেখতে পাচ্ছি। একটা দোকানের সামনে গেলাম যেখানে আমাদের পন্য দেখতে পেলাম যেটাকে নিতে এসেছি আমরা। দোকানদারকে দেখতে পেয়ে আমি অবাক হয়ে গেলাম। একটা ছেলে যে দেখতে ঠিক আবিরের মতো। আমার সেই একটা মানুষ বন্ধু যে পৃথিবীতে হয়েছিলো। আমি ওর দিকে কিছুটা তাকিয়ে ছিলাম। কিন্তু তার কথায় হুস ফিরলো,
.
–স্যার কি লাগবে আপনার?
।।।
।।।
আমি ওকে দেখে অবাক হয়ে আছি। এই দুনিয়াতে এভাবে দেখা হবে বুঝতে পারি নি। বয়স আমার থেকে এক দুই বেশী হতে পারে এটাই শুধু পার্থক্য। যাইহোক ওর চোখেও আমি ভয় দেখতে পেলাম। ভিতর থেকে একটা মেয়ে বেরিয়ে আসলো। যাকে দেখে আমি অবাক হয়ে গেলাম। মেয়েটা হৃদি যে কিনা আমার আগের দুনিয়ায় পৃথিবীতে যে পরিবারের কাছে বড় হয়েছি সেই পরিবারের বোন। যদিও তার প্রতি আমার টান অনেকটা ছিলো বড় ভাই হিসাবে। কিন্তু আমাকে কিছুতেই দেখতে পারতো না ও। যাইহোক আমাকে দেখতে পেয়ে ও ভয় পেয়ে গেলো। বুঝতে পারলাম না আমাকে দেখে এভাবে সবাই ভয় পাচ্ছে কেনো?
.
–এই দোকানদার?(আমি)
.
–হ্যা স্যার।
.
–নাম কি তোমার?(আমি)
.
–আবির স্যার।(আবির)
.
–তো আমাকে দেখে সবাই এভাবে ভয় পাচ্ছে কেনো?(আমি)
.
–এমনি স্যার।(আবির)
.
–এমনি মানে। আমার মাথা খারাপ করবে না।(আমি আবিরের কলার ধরে)
।।।
।।।
আমি আবিরের কলার ধরায় পাশ থেকে হৃদি কথা বলতে লাগলো। যদিও আগের দুনিয়ায় ওর সাথে একটা সম্পর্ক ছিলো আমার। কিন্তু এখানে ও আমাকে চিনেই না। তাই সেরকম ফিল করে লাভ হবে না। যাইহোক হৃদির ভাব দেখে বুঝতে পারলাম সে আবিরের স্ত্রী।
.
–স্যার ওকে মারবেন না। ওর কোনো দোষ নেই এতে।(হৃদি)
.
–দোষ?(আমি)
.
–আমরা আপনাকে মারতে চাই নি তখন। সেটা তো বাকি লোকেরা মিলে প্লান করেছিলো।(হৃদি)
.
–আমাকে মারার কি বলছো সেটা সঠিক করে বলো?(আমি আবিরের কলার ধরে বল্লাম)
.
–আপনিই কি আমাদের মিনিস্টার এর ছেলে?(আবির)
.
–হ্যা।(আমি)
.
–অনেক বছর আগে যখন আপনার বয়স পাঁচ বছরের কাছাকাছি তখন এই শহরের অনেক লোকজন মিলে প্লান করে আমাদের মিনিস্টারের ছেলে মানে আপনাকে মেরে ফেলবে। আর তারা সেটাই করে। আপনাকে মেরে শহরের ময়লার স্তূপের মধ্যে ফেলে আসে সবাই। কিন্তু রহস্যজনক ভাবে আপনি বেঁচে যান এবং এই শহর থেকে চলে যান মিলিটারি স্কুলের উদ্দেশ্যে। আর এখন যখন আপনি একজন রয়েল গার্ড হয়ে ফিরে এসেছেন, তাই সবাই ভয় পাচ্ছে তাদের জীবন নিয়ে।(আবির)
.
–ওওওও। চিন্তার কারন নেই। আমি সেটার জন্য কারো উপরে রেগে নেই। বিশেষ করে আমার সেই স্মৃতিই নেই, তাই কাউকে প্রতিশোধের চিন্তা আসছে না মাথায়।(আমি)
।।
।।
আমি আবিরের কলার ছেড়ে দিলাম।
.
–তো জ্যাককে মারার প্লান করেছিলো কেনো সবাই? এতে তাদের লাভ হবে কি?(থর)
.
–তারা মিনিস্টারকে দেখতে পারে না। এই মিনিস্টার কোনো দিক দিয়েই মিনিস্টার হওয়ার যোগ্য না তারা এটা মনে করতো। অনেকে না খেয়ে মরতে ছিলো। আর বরাবরের মতো মিনিস্টারের কোনো খোজ পাওয়া যেতো না। অনেকে প্রতিশোধের জন্য আপনার দুই বোনের উপরে হামলা করার চিন্তা করে, কিন্তু তাদের কাছে এমন শক্তিশালী ক্ষমতা ছিলো যে তারা কাছেও যেতে পারে নি। এরপর তারা সবাই মিলে ম্যাজিক ছাড়া আপনার উপরে হামলা করে।(আবির)
.
–ওওওও। আচ্ছা ঠিক আছে। আমাকে আমার পন্য গুলো দিয়ে দাও।(আমি)
।।।
।।।
আমি আমার হাতে থাকা কাগজ দেখালাম যেখানে কি কি নিতে হবে সেটা লেখা। আবির সবকিছু দিয়ে দিলো। সে আমার থেকে কোনো অর্থ নিতে চাচ্ছিলো না। কিন্তু আগের দুনিয়ার বন্ধুত্ব এবং বোনকে দেখে আমি আমার ব্যাগ থেকে পন্যের দামের একশোগুন বেশী অর্থ আবিরের হাতে তুলে হাটতে লাগলাম।
।।।
।।।
আমি এতোক্ষন ভাবছিলাম আমার লড়াই দেখে হয়তো ভয় পাচ্ছে এরা। কিন্তু কাহিনী যে এটা হবে বুঝতে পারি নি। যাইহোক সব মিলিয়ে বুঝতে পারলাম আমার আম্মা মিনিস্টারের কোনো দায়িত্বই পালন করে না। সে কি করে এটাও আমাকে বের করতে হবে। কিন্তু সব তারাতারিই করতে হবে। কারন ড্রাকুলার কাছেও আমাকে যেতে হবে।
।।।।
।।।
।।

(((চলবে)))

।।
।।।
।।।।
#ভ্যাম্পায়ার_কুইন#
#সিজন_2#
পর্বঃ৪১
.
.
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
.
.
আমি হাটতে হাটতে বাসায় চলে আসলাম। এতোক্ষনে আমার মাথার মধ্যে অনেক প্রশ্ন বাসা বেধেছে। তবে আমি একটারও উত্তর পাচ্ছি না। যদি শুধু আমার কাছে এখন ড্রাকুলার মতো ক্ষমতা থাকতো, তাহলে আমার সকল প্রশ্ন সমাধান হয়ে যেতো। প্রশ্ন জিনিসটা অনেক খারাপ লাগে। উত্তর না পাওয়া পর্যন্ত মন স্থির থাকে না। তারপরও আমাকে এখন স্থির থাকতে হবে। আমি চাচ্ছিলাম আম্মা কি করে সেটা জানার জন্য। কিন্তু সে অনেক গভীর ঘুমে আছে। এখন জেসির ক্ষমতাটাও আমার কাছে থাকলে অনেক ভালো হতো। আমি ব্লাক স্মিথের থেকে শুনেছিলাম একটা ডেভিল মেয়ে তার উপরে যে ক্ষমতা ব্যবহার করেছিলো, সেটা দিয়ে সে তার মাথার সকল স্মৃতি দেখতে পেরেছিলো। আর আমি সিওর সেই ডেভিল মেয়েটা জেসিই ছিলো। আর আম্মার উপরেও শেষে একই ক্ষমতা ব্যবহার করতে ছিলো সে। কিন্তু শেষ মুহুর্তে আমি তাকে আটকে ফেলি। ক্ষমতাটা এখন থাকলে আমি জানতে পারতাম আমার আম্মা কি করে এবং কোথায় যায়। আমি জেসির কাছ থেকে শুনতে পারি নি সে আমার আম্মার কাছ থেকে কি নিতে এসেছিলো। ব্লাক স্মিথের থেকে ব্লাক সোর্ড নিয়ে গিয়েছিলো। কিন্তু আমার আম্মার কাছে কি আছে সেটা আমি বুঝতে পারছি না।।।।
.
–অনেক চিন্তায় আছো মনে হচ্ছে?(থর)
.
–না ভাবছি ডেভিল কিং কি করতে চাচ্ছে।(আমি)
.
–তুমিই তো একটা সময় ডেভিল কিং ছিলে? তো ডেভিল কিং এর মতো চিন্তা করো?(থর)
.
–বিষয়টা এতো সহজ নয়। আমি ডেভিল কিং থাকলেও, কখনো একটা ডেভিল কিং এর মতো ভাবি নি।(আমি)
.
–ও।(থর)
.
–বুঝতে পারছি না। প্রথমে ব্লাক সোর্ড নিয়ে গেলো। এখন আবার আম্মার কাছ থেকে তথ্য নিয়ে গেলো কিছুর।(আমি)
.
–কি বললে ব্লাক সোর্ড?(থর)
.
–হ্যা।(আমি)
.
–আমি যেটা চিন্তা করছি সেটা হলে তো অনেক ভয়ানক হবে।(থর)
.
–কেনো?(আমি)
.
–দ্যা ন্যাকরো সোর্ডের নাম শুনো নি তুমি?(থর)
.
–হ্যা, ডেভিল কিং এর ক্ষমতা অর্জনের পর তার স্মৃতির মাঝে এটা সম্পর্কে কিছুটা উল্লেখ ছিলো।(আমি)
.
–হ্যা দ্যা ন্যাকরো সোর্ডকে তৈরী করেছিলো একজন ডিম্যান, যার নাম ছিলো নুল। যাকে আগের এগারো দুনিয়ার সবাই ভয় পেতো।(থর)
.
–কিন্তু আপনার বাবা ওডিন সবাইকে একত্র করে তো নুলকে হারিয়ে ব্লাক হোলের মধ্যে ফেলে দিয়েছিলেন।(আমি)
.
–হ্যা। তাকে সহ তার তলোয়ার দ্যা ন্যাকরো সোর্ডকেও ব্লাক হোলের মধ্যে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিলো।(থর)
.
–তো আপনি বলতে চাচ্ছেন এই ব্লাক সোর্ড সেটাই? কিন্তু এটা কিভাবে সম্ভব এটা তো একটা কালো ব্লেড এবং ব্লাক ড্রাগনের সংমিশ্রনে তৈরী করেছিলো প্রথম ব্লাক স্মিথ।(আমি)
.
–কালো ব্লেড?(থর)
.
–হ্যা ছোট এক টুকরা ব্লেড যেটা একটা গুহার মধ্যে পেয়েছিলো।(আমি)
.
–আচ্ছা তোমার এক্সোনিয়া কি পুরো ঠিক ঠাকই পেয়েছিলে?(থর)
.
–না শুধু হাতলই পেয়েছিলাম, যেটার সাথে সামান্য ভাঙা ব্লেড ছিলো। ব্লাক স্মিথের সাহায্যে আমি ঠিক কি এটা।(আমি)
.
–তাহলে আমার মনে হচ্ছে ঔ কালো ছোট ব্লেডটাও ন্যাকরো সোর্ডের ছিলো।(থর)
.
–সম্ভব হতে পারে। আমি শুনেছি ব্লাক সোর্ডের ক্ষমতা, সেটা যেকোনো জিনিসের সংস্পর্শে আসলে সেটার ম্যাজিক পাওয়ার সহ জীবন্ত শরীরকে ভিতরে এবজোর্ব করে নেই।(আমি)
.
–আমি এবার নিশ্চিত ঔটা ন্যাকরো সোর্ড। জ্যাক আমাদের ব্যাপারটা স্বাভাবিক ভাবে নেওয়া যাবে না। যদি ওটা সত্যিই ন্যাকরো সোর্ড হয়ে থাকে, তাহলে এই পুরো দুনিয়াকে সেটা গিলে ফেলতে পারবে। সবকিছু একটা অন্ধকার রাজ্যে চলে যাবে।(জ্যাক)
.
–ন্যাকরো সোর্ড সম্পর্কে আমার তথ্য অল্প। আমার আরো অধিক তথ্য লাগবে।(আমি)
.
–এটার সম্পর্কে লোকি অনেকটা জানে। কিন্তু সমস্যা হলো লিম্বো ডাইমেনশন থেকে এখানে আসার পর থেকে তাকে কোথাও খুজে পাওয়া যাচ্ছে না।(থর)
.
–আচ্ছা সমস্যা নাই। তাকেও খুজে বের করা যাবে।
।।।
।।।
থর আর আমি বাসার মধ্যে ঢুকে আমাদের আনা পন্য আমার দুই বোনের হাতে দিয়ে দিলাম। তারা রান্না করছে আমাদের জন্য। আমি বর্তমানে ব্লাক সোর্ড নিয়ে ভাবছি। ন্যাকরো সোর্ড অনেক ভয়ঙ্কর একটা অস্ত্র যেটা আমি নিজেও জানি। নুলের কাছে এরকম ক্ষমতা ছিলো যে সে তখনকার ডেভিল কিং কে হাতের ইশারা দিয়েই মেরে ফেলতো পারতো। কিন্তু ডেভিল কিং কে না মেরে সে নুলের গোলাম করে বানিয়ে রেখেছিলো। নুলের শক্তির প্রধান উৎস হলো এই ন্যাকরো ব্লেড বা সোর্ড। ধারনা করা হয় পুরো দুনিয়ার অন্ধকার নিয়ে তৈরী করা হয়েছিলো ন্যাকরো সোর্ড। আর ন্যাকরো সোর্ড যে ব্যবহার করবে তার মন এমনিতেই অন্ধকার হয়ে যাবে। তলোয়ারটার নিজেরই একটা মাইন্ড আছে। আর তাকে ব্যবহার কারীকে সে নিজের মতো কন্ট্রোল করতে পারে। যাইহোক থরের এ নিয়ে অনেক বড় একটা ইতিহাস রয়েছে যেটা আমি ওর চেহারা দেখেই বুঝতে পারলাম। ন্যাকরো সোর্ডের কথা বলার পর থেকেই ও ভয়ে কাপছে। জানি না ওর সাথে কি হয়েছে, কিন্তু যায় হোক ব্যাপারটা মোটেও ভালো না।।।
।।।
।।।
আমরা খাবার খেয়ে বিশ্রাম নিলাম কিছুক্ষন। থর ঘুমিয়ে পরেছে রেস্ট নিতে নিতে। আমি ভাবছিলাম ড্রাকুলার হোটেল/প্যালেসে যেতে। কিন্তু থরকে জাগিয়ে লাভ হবে না। তার চেয়ে আমি উঠে হাটতে লাগলাম। আমার বাসার স্মৃতিও আমার মনে নেই। তাই আমি ঘুরে ঘুরে প্রতিটা রুম দেখতে লাগলাম। যদিও এটা আমার বাসা। আমার পাঁচ টা বছর কেটেছে এখানে, তারপরও কিছু মনে নেই আমার। মনে হচ্ছে নতুন এসেছি এখানে। আমি দেখতে দেখতে একটা দরজা খুলে ফেললাম এবং নিচের দিকে এবং উপরের দিকে সিড়ি দেখতে পেলাম। উপরের দিকে ছাদ হবে। আর নিচে কি সেটা দেখার ইচ্ছা আমার। নিচে একদম অন্ধকার। কিন্তু ভিতর থেকে আমি ম্যাজিক পাওয়ার দেখতে পাচ্ছি। আমার কোনো আলোর প্রয়োজন হলো না। বিভিন্ন ধরনের ম্যাজিক পাওয়ারের সংমিশ্রনে আলোকিত হয়ে গেছে। সাধারন চোখে আমি এগুলো দেখতে পারতাম না। কিন্তু যেহেতু আমার কাছে ড্রাগনদের ম্যাজিক সেন্স ক্ষমতাটা রয়েছে, তাই আমি ম্যাজিক দেখতে পারি। লুকের সাথে লড়ার সময় আমার এই ক্ষমতা আরেক লেভেলে চলে যায়, যেটার ফলে আমার ডান চোখ লাল হয়ে যায়। আর সেটা দিয়ে আমি আরো ভালো ভাবে ম্যাজিক পাওয়ার দেখতে পারি। এখন আমি সাধারন চোখে ম্যাজিক পাওয়ার দেখার ক্ষমতাটা নিয়ন্ত্রন করতে পারি। আগে তো আমি সব সময় ম্যাজিক পাওয়ার দেখতে পেতাম। কিন্তু এখন আমার ডান চোখ যখন লাল হয় তখনি শুধু ম্যাজিক পাওয়ার দেখতে পারি।
।।।
।।।
আমি সিড়ি দিয়ে নেমে গেলাম। নিচে অনেক গুলো কাচের বোতল এবং একটা টেবিলে অসংখ্য টেস্টটিউব রয়েছে। যেগুলোর মধ্যে অনেক ধরনের তরল উপাধান রয়েছে। সেগুলো থেকেই ম্যাজিক পাওয়ার বের হচ্ছে। জানি না কি এগুলো, কিন্তু হয়তো কোনো দরকারী জিনিস হবে। আমি এখানে আর কিছু দেখতে পাচ্ছি না। দুটো আলমারী যেগুলোর মধ্যে রয়েছে কাচের বোতল এবং সেগুলো বিভিন্ন রঙের তরল দিয়ে ভরা। আর মাঝখানে একটা টেবিল যেখানে টেস্টটিউবে ভরা। সাধারন চোখে বোঝায় যাবে না যে এখানে কোনো ম্যাজিকাল তরল আছে। যদিও আমার আগের চোখ দিয়ে ও আমি এটা দেখতে পারতাম না। এখন যখনি আমি আমার ম্যাজিক সেন্স ক্ষমতা ব্যবহার করি, তখনি আমার ডান চোখ লাল হয়ে যায়। বিষয়টা দেখতেও ভালো লাগে অনেকটা। আবার ভয়েরও বিষয়টা। তাছাড়া এখনে লাল চোখ দেখে ভয় পাওয়ার কেউ আছে বলে মনে হয় না।
।।।
।।।
রুমটার মধ্যে আমি তেমন আর খুজে পেলাম না। আমার মনে হচ্ছে আমার আম্মা এগুলো তৈরী করেছে। কিন্তু এখানে আমি এসব তৈরীর কোনো পন্য দেখতে পারলাম না। আমি হঠাৎ মেঝে দিয়ে হাটার সময় কিছুটা লক্ষ করলাম। একটা তক্তার উপরে পা দিলে সেটা থেকে যে শব্দ হয় সেটা বাকিদের থেকে আলাদা। তাই আমি তক্তাকে উঠানোর চেষ্টা করলাম। একপাশে কিছুটা জায়গা আছে তক্তা উঠানোর। আমি সেটা দিয়ে হাত দিয়ে তক্তাকে মেঝে থেকে উঠিয়ে ফেলাম। নিচের দিকে নতুন আরেকটা রাস্তা বের হলো এবার। অনেকটা গুপ্ত রাস্তা। আর একটা লোহার মই নিচের দিকে যাচ্ছে। অনেকটা গভীর হবে সেটা আমি অন্ধকার দেখেই বুঝতে পারছি। নিচে কি আছে সেটা তো এখন নিচে গেলেই জানতে পারবো। তাই দেরী না করে আমি আস্তে আস্তে নামতে শুরু করলাম। অনেক অন্ধকার হওয়ায় আমি কোথায় পা রাখছি সেটাও বুঝতে পারছি না। এভাবে মই দিয়ে নামা অনেকটা ঝুকি কর। তাই আমি আমার পায়ের নিচে একটা লাইট স্পেল ব্যবহার করে আলো বানিয়ে দিলাম। এবার অনেক স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। আমি সেই অনেক আগে থেকে নেমেই যাচ্ছি, কিন্তু মই শেষ হচ্ছে না। এখানে এমন জায়গা কে বানিয়েছে সেটা আমি নিজেও জানি না। তবে আমার মনে হচ্ছে আমার আম্মা এদিকেই আসে। অনেক গোপন ভাবে রাস্তাটা বানানো হয়েছে বলে কারো চোখে বাধে নি এতোদিন। কিন্তু আমার কাছে ম্যাজিক সেন্স এর ক্ষমতা আছে, তার উপরে ড্রাগনদের। তাই আমার চোখ ফাকি দিতে পারে নি এটা। আমি অনেকটা নিচে নামার পর মই শেষ হয়ে গেলো। এবং সামনেই একটা দরজা দেখতে পেলাম। দরজাটা খুলার চেষ্টা করলাম। কিন্তু সেটা ম্যাজিকের সাহায্যে লক করা। আমি টানতে লাগলাম তারপরও খুলার নাম নিচ্ছে না। কি আছে ভিতরে এটা দেখার কৌতহল আমার বেড়ে গেলো। কারন ভিতর থেকে দরজার নিজ থেকে ম্যাজিক পাওয়ার আস্তে দেখতে পাচ্ছি আমি। তাই আর দেরী করলাম না আমি, আমার হাতে এক্সোনিয়া নিয়ে নিলাম। এক্সোনিয়ার একটা ক্ষমতা রয়েছে, যেটা অনেকটা ব্লাক সোর্ডের সাথে মিলে যায়। ব্লাক সোর্ড ম্যাজিক পাওয়ার সহ পুরো জীবন্ত শরীরকে নিজের মধ্যে চুষে নেই। কিন্তু এক্সোনিয়া ম্যাজিক পাওয়ার চুষে নিতে পারে। আমি এক্সোনিয়াকে হাতে নিয়ে সেটার ব্লেড দরজার সাথে ধরলাম। এবং দরজা যে ম্যাজিক দিয়ে লক করা ছিলো, সেটার ম্যাজিক পাওয়ার এক্সোনিয়া এবজোর্ব করে নিলো। এবার দরজা টান দেওয়ার পরেই খুলে গেলো। ভিতরে ঢুুকলাম আমি। প্রথমে অন্ধকার থাকলেও, আমি রুমে পা দেওয়ার পরে পুরো রুম আলোকিত হয়ে গেলো। আমি অবাক হয়ে গেলাম। কারন আমি আশা করি নি এখানে আমি ইলেকট্রিসিটি দেখতে পাবো। সাধারনত ম্যাজিক দিয়েই সকল কাজ করা হয় এই নতুন দুনিয়াতে। এখানে সাইন্সের কোনো মূল্য নেই। সাইন্সকে হয়তো সবাই রূপকথার গল্প হিসাবে মনে করে। যাইহোক একটা একটা ম্যাগনেটিক ফিল্ড দেখতে পেলাম আমি, যেটার সাথে বড় একটা কোষ(যেটাকে আমরা ব্যাটারি বলে থাকি) যুক্ত আছে। ম্যাগনেটিক ফিল্ডকে এরকম ভাবে বানানো হয়েছে, যে সেটা দেখতে অনেকটা চুম্বক এর মতো। দুটো চুম্বক রয়েছে সেটার মধ্যে। চুম্বক বানানো অনেকটা সহজ। আমি চুম্বক দুটোকে দেখেই বুঝতে পারলাম দুটো বানানো হয়েছে। আর চুম্বক বানানোর মূল উৎস হলো এলেন। অবশ্য সেটা থরও পারবে। অবশ্য আমিও পারবো। আকাশ থেকে বিদ্যুৎ চমকানোর সময় কোনো উচু জায়গায় লোহার একটা বড় টুকরো বেধে রেখে আসতে হবে। যদি একটা থান্ডার লোহার টুকরোর উপরে পরে তাহলে লোহাটা চুম্বক হয়ে যাবে।
।।।
।।।
আমি এখানের চুম্বক দেখে বুঝতে পারলাম এখানে এলেন এর সাহায্য নেওয়া হয়েছে। যাইহোক চুম্বক দুটো একে অপরের সাথে সংঘর্ষে আছে একটা ম্যাজিকাল যন্ত্রের মাঝে। আর তাতে তৈরী হয়েছে ম্যাগনেটিক ফিল্ড। আর অনবরত সংঘর্ষের ফলে সেখান থেকে চার্জ তৈরী হচ্ছে যেটা কোষের মধ্যে সংগ্রহ হচ্ছে। আর সেখান থেকে এই পুরো ঘরের মধ্যে তিনটা বাল্ব জ্বলছে। আমি বাল্বগুলোকে সামনে থেকে দেখতে লাগলাম। একদম প্রাকৃতিক ভাবে তৈরী করা হয়েছে বাল্বগুলোকে। কাচ দিয়ে চারপাশ ঢাকা হয়েছে। এবং ভিতরে ফিলামেন্ট হিসাবে বাশের ব্যবহার করা হয়েছে। পৃথিবীতেও সর্ব প্রথম বাল্বের তৈরী হয়েছিলো সেখানে কার্বনাইট বাশের ব্যবহার করা হয়েছিলো। আমি ফিলামেন্ট কে দেখেই বুঝতে পারতাম না। তবে পাশে টেবিলে অনেক বাশ এবং কাচের গ্লাস পরে আছে। আমি সেটা দেখেই বুঝতে পারলাম। আরেকটা টেবিলের উপরে একটা ফ্যান বানিয়ে রাখা হয়েছে, যেখানে ছোট চুম্বক দিয়ে মোটর তৈরী করা হয়েছে, এবং একই কার্বনাইট বাশ দিয়ে কয়েক তৈরী করা হয়েছে। কয়েলের চারিদিক দিয়ে তিনটা চুম্বক রাখা হয়েছে, আর তাতে একটা সরু লোহার দন্ড মাঝে দিয়ে দেওয়া হয়েছে। প্লাস্টিকের মতো পদার্থ দিয়ে পাখা বানানো হয়েছে। আমি সামনে এগিয়ে যাওয়ার পরই সেটা ঘুরতে লাগলো। অনেকটা ঠান্ডা বাতাস লাগলো।
।।।
।।।
পুরো রুমটা বিভিন্ন ধরনের বৈজ্ঞানিক পদার্থ দিয়ে ভরপুর। রুমের পুরো দেওয়াল ভরা অনেক কিছু লেখা। লেখা দেখে বুঝতে পারলাম আমার আম্মা এখানেই আসে। আমি এর আগেও আম্মার লেখা পড়েছি, তাই লেখা চিনতে সমস্যা হলো না। আমার মনে হচ্ছে আম্মার আগের দুনিয়ার কথা মনে আছে। যেহেতু সে একজন মানুষ, তাই আগের দুনিয়ার যত জ্ঞান তার কাছে আছে, সে সেটার ব্যবহার করার চেষ্টা করেছে এখানে। আমি সাধারন জিনিস গুলোই দেখেছি শুধু। এরপর আরো অনেক কিছু তৈরী করা আছে এখানে। তৈরী করার থেকে তৈরী করা লাগবে এমন জিনিসেই ভরা এখানে। অনেক কিছু অর্ধেক তৈরী হয়ে পরে আছে। হয়তো সেগুলো বানাতে সমস্যা হচ্ছে তার। আমি এখানে আর বেশীক্ষন থাকলাম না। কারন আমি বুঝতে পেরেছি আমার আম্মা কি করে, আর কোথায় যায়। অবশ্য তার থেকে এক সময় শুনে নেওয়া যাবে এটার সম্পর্কে। কিন্তু আজকের মতো এই পর্যন্তই। আমাকে আবার ড্রাকুলার কাছে যেতে হবে। আমি আবারো মই বেয়ে উপরে চলে আসলাম। এবং সিড়ি দিয়ে বেসমেন্টের রুম থেকে বেরিয়ে আসলাম। এতোক্ষনে থরও উঠে গেছে। এবং সে আমার বোন এলেনের সাথে বসে বসে গল্প করছে। এলিন কে দেখতে পারছি না। দুজন ভালোই হেসে হেসে গল্প করছে। আমি তাদের কাছে গিয়ে থরকে বলতে লাগলাম।
.
–থর ভুলে গেছেন নাকি আমাদের ড্রাকুলার কাছে যেতে হবে।(আমি)
.
–সেটা অন্য এক সময় যাওয়া যাবে। এখন তো লান্স করলাম। ডিনার করে কাল সকালে গেলেই ভালো হবে?(থর)
.
–ড্রাকুলা রেগে গেলে আমার দোষ নেই কোনো।(আমি অন্য দিকে তাকিয়ে)
.
–ওও হ্যা। আমি তো ভুলেই গিয়েছি। জরুরী কাজে তোমাকে নিয়ে যেতে বলেছে, ঠিক আছে গডেস অফ থান্ডার তাহলে অন্য সময় দেখা হবে। এখন তো পরিচয় হয়েই গেলো, তাহলে দেখা হবে মাঝে সাজে।(থর)
.
–জ্যাক আজকেই আসলে এবং চলে যাচ্ছো?(এলেন)
.
–আমি এতোদিন আস্তে পারি নি, কারন আমার স্মৃতি ছিলো না। এখন চেনা হয়ে গেছে। মাঝে মাঝেই আসবো। কিন্তু প্রথমে আমার কিছু কাজ করতে হবে।(আমি)
.
–আমাদের সাহায্য লাগলে শুধু বলবে। আমি জানি এখন তুমি অনেক শক্তিশালী। তারপরও কোনো ভাবে সাহায্য করতে পারলে ভুলবে যে তোমার বোন আছে দুটো।(এলেন)
।।।।
।।।
।।

(((চলবে)))

।।
।।।
।।।।
#ভ্যাম্পায়ার_কুইন#
#সিজন_2#
পর্বঃ৪২
.
.
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
.
.
আমার শহর থেকে আমি বেরিয়ে গেলাম। এবার থরের সাথে উড়ছি না। বরং নিজেই আমার আগুনের সাহায্যে উড়ছি। এটাকে আমি নাম দিয়েছি একটা। নাম না দিলে কি রকম আজব লাগে। যেহেতু জেট এভাবেই ফিয়ল দিয়ে আকাশে উড়ে, তাই আমি এটাকে নাম দিয়েছি জেট স্কিল/ক্ষমতা৷ ডান পা এবং তালু দিয়ে হাই স্পিডে আগুন বের করলে অনেকটা সুরসুরি লাগে। থর পুরো স্পিডে মিওনিরের সাহায্যে উড়ে যাচ্ছে। আর এদিকে আমি তার স্পিডের সাথে তাল মিলাতে পারছি না। আমার এই ক্ষমতাটা নিয়ন্ত্রন করতেও সমস্যা হচ্ছে অনেক। কারন এক হাত এবং এক পা দিয়ে আগুন বের হলে আমার এক সাইড নিয়ন্ত্রনে থাকে, কিন্তু অন্যটা থাকে না। অন্যটা নিয়ন্ত্রনে না থাকার ফলে আমি বাম সাইডের দিকে বেশী হেলে যাচ্ছিলাম৷ এতে আমার স্পিডের সাথে দিক নিয়ন্ত্রনটা কষ্টকর হয়ে যাচ্ছে। আমার মাথায় হঠাৎ আরেকটা বুদ্ধি আসলো। আমি এর আগে আমার গডহ্যান্ডকে ব্যবহার করেছিলাম কিন্তু তাতে কোনো ফল আসে নি। আমি পিঠের পাঁচ টা হাতকে যেকোনো আকৃতি দিয়ে কন্ট্রোল করতে পারি। একদম যেকোনো আকৃতিই দিতে পারি, শুধু আমাকে সেই জিনিসটার আকৃতি সম্পর্কে ভাবতে হবে। আমি গডহ্যান্ডকে এর আগেও ব্যবহার করেছিলাম আমার ডানার আকৃতি দেওয়ার জন্য। তবে সেটায় কোনো কাজ হয় নি। ডানা বানালেও সেটা উড়তে সাহায্য করে না আমাকে। শুধু দেখতেই ভালো লাগে। কিন্তু আমি এবার আমার উড়াটা নিয়ন্ত্রন করার একটা বুদ্ধি পেয়েছি। পৃথিবীতে উড়োজাহাজ তৈরী হতো দুই সাইডে দুটো পাখাসহ। অবশ্য প্লেন এর মডেলটা পাখির ডানাকে দেখেই বানানো হয়েছিলো। প্লেন এর ডানা প্লেনকে নিচ থেকে উড়তে এবং ভারসাম্য নিয়ন্ত্রন রাখতেই ব্যবহার হয়। তাছাড়া সেখানে আসল কাজ ফিয়লের হয়ে থাকে। যাইহোক আমি সেটাই করতে পারি এখন। আমি যদি আমার এই জেট ক্ষমতার সাথে গড হ্যান্ড দিয়ে ডানা বানিয়ে ব্যবহার করতে পারি, তাহলে আমি আমার শরীরের দিক নিয়ন্ত্রন ঠিক করতে পারবো। দেরী না করে আমি আমার পিঠ থেকে দুটো দুটো হাত বের করলাম। দুটো হাত দিয়েই দুই সাইডে বড় বড় দুটো ডানার আকৃতি দিলাম। এতো লম্বা এবং বড় ডানা কারো হয় না। আর আমার ডানা পাখির পালকের মতোও দেখতে না। স্বচ্ছ সাদা ডানা তৈরী হয় গডহ্যান্ড থেকে, যেটার এইপাশ থেকে ঔপাশ কিছুটা দেখা যায়। যেহেতু আগের দুনিয়ায় আমি ডানাকে নিয়ন্ত্রন করেছি, তাই দুটো হাত দিয়ে ডানা বানিয়ে সেগুলোকে নিয়ন্ত্রন করা কষ্টকর হলো না। আমি ভেবেছিলাম আমি এই ডানা দিয়েই উড়তে পারবো, কিন্তু এই রিয়েলিটিতে সেটা কাজ হয় না। আমি এবার আমার ডান হাত এবং পায়ের তালু থেকে আরো স্পিডে আগুন বের করতে লাগলাম। যেটা আমাকে আরো স্পিডে সামনে পাঠাচ্ছে। আর দুটো ডানা বানানোর ফলে এবার আমার দিক নিয়ন্ত্রনে থাকছে। আমার আর সমস্যা হচ্ছে না। থরকে আমি আমার এট্রিবিউটের আগুনের পুরো স্পিডেও ধরতে পারলাম না। থর আমার পাশে এসে বলতে লাগলো?
.
–কি হলো হাপিয়ে গেলে নাকি?(থর)
.
–আপনাকে ধরা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। আপনার মিওনির এক ডাইমেনশন থেকে আরেক ডাইমেনশনে আলোর বেগ থেকে দশগুন দূরতে চলাচল করতে পারে। আর সেখানে আমি কিছুই না।(আমি)
.
–তোমার কাছে তো আরো একটা অস্ত্র রয়েছে যেটার সঠিক ব্যবহার তুমি জানো না।(থর)
.
–কি সেটা?(আমি)
.
–এক্সোনিয়া, শুধু ডাইমেনশন পোর্টালের জন্য ব্যবহার করা হয় না। বরং ডাইমেনশন স্পেস ব্যবহার করে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যাওয়াও যায়।(থর)
.
–কিভাবে?(আমি)
.
–এটা ড্রাকুলা আমাকে বলেছিলো, যখন ওর হোটেলটা তোমার থেকে অন্য জায়গায় চলে যায়।(থর)
.
–এই প্রশ্নটা আমারও। তার হোটেল কিভাবে অন্য জায়গায় গেলো?(আমি)
.
–ড্রাকুলার কাছে তার পুরো হোটেলকে টেলিপোর্ট করার ক্ষমতা রয়েছে। তুমি যখন পোর্টাল তৈরী করলে, তখন সেখানে এক্সোনিয়ার সাহায্যে একটা ডাইমেনশন স্পেস তৈরী হয়েছিলো। তুমি তখন যেখানের চিত্র সঠিক ভাবে মনে করবে সেখানেই টেলিপোর্ট হয়ে যাবে।(থর)
.
–আপনার কথা আমি বুঝতে পারি নি।(আমি)
.
–আচ্ছা তাহলে জিনিসটা আমি দেখিয়ে দিচ্ছি তোমাকে৷ তবে প্রথমে নিচে নামতে হবে।(থর)
।।।।
।।।।
আমি নিচে নেমে গেলাম থরের সাথে। এরপর থর আমাকে বলতে লাগলো।
.
–এবার একটা স্লাইস দিয়ে একটা পোর্টাল তৈরী করো।(থর)
.
–হ্যা।(আমি পোর্টাল তৈরী করলাম লিম্বোতে যাওয়ার জন্য)
.
–এবার তুমি মনে মনে লিম্বোর কথা ভাববে না। যেহেতু তুমি পোর্টাল তৈরী করেছো, তাই তুমি যেখানের কথা ভাববে সেখানেই তোমাকে পাঠিয়ে দিবে।(থর)
.
–আচ্ছা আমি ঔ পাশের গাছের উপরে যাওয়ার কথা ভাবছি।(আমি)
.
–আচ্ছা এবার যেখানে স্লাইস দিয়েছিলে, সেখানে আরেকটা স্লাইস দিয়ে প্লাস চিহ্ন করো। এতে তোমার জন্য ডাইমেনশম স্পেস তৈরী হবে। এবং সেটা তোমাকে তোমার ভাবনার জায়গায় টেলিপোর্ট করে নিয়ে যাবে।(থর)
।।।
।।।
থরের কথা আজব লাগলো। তারপরও চেষ্টা করে দেখলাম। আরেকটা স্লাইস দিয়ে প্লাস বানালাম। তখন গাড়ো মাটি কালারের মতো একটা রঙ ছিলো কিন্তু এবার পোর্টাল নীল রঙের হয়ে গেলো। আমি ঢোক গিলে সেটার ভিতরে ঢুকে পরলাম। এবং বের হলাম সোজা আকাশের উপর থেকে। নিচে দিকে পরতে লাগলাম। নিচে থর দাড়িয়ে আছে। মনে হচ্ছে যেখান থেকে পোর্টালে ঢুকেছি আমি তার অনেক উপর থেকে বের হয়েছি। আমি এবার জেট ক্ষমতার ব্যবহার করলাম না। বরং পাঁচটা হাত বের করলাম পিঠ থেকে, এবং তাদেরকে আমি নিচে পরার আগে আমার পায়ের নিচে মেঝের মতো বানিয়ে নিলাম। এবং হাত গুলো মাটিতে পরার আগেই আমি একটা লাফ দিলাম। এতে করে আমার স্পিড পুরো স্বাভাবিক হয়ে গেলো লাফ দেওয়ার ফলে, এবং আমি থরের সামনে লাফ দিয়ে দাড়িয়ে গেলাম। এভাবে যত উপর থেকেই পরি না কেনো। নিচে আমার তৈরী গডহ্যান্ডের মেঝে স্পর্শ করার কিছুটা আগে যদি আমি লাফ দেই তাহলে আমার কাছে মনে হবে আমি এক ফিট উচ্চতা দেখে লাফ দিয়েছি। যাইহোক এটা অনেক ক্ষতিকর। একটু এদিক সেদিক হলেই সব শেষ।
.
–মনে হচ্ছে তোমার ট্রেনিং এর প্রয়োজন এটা নিয়ে। কিন্তু প্রথম বারে যে করতে পেরেছো এটাই অনেক।(থর)
.
–হ্যা। তবে আমি বুঝতে পারতেছি না ড্রাকুলা এটা ব্যবহার করেছিলো কিভাবে? আমি তো তখন ডাবল স্লাইস দিয়েছিলাম না।(আমি)
.
–তুমি কি জানো না? আগের দুনিয়ায় এগারো টা ডাইমেনশন ব্লেড ছিলো ঠিক এক্সোনিয়ার জন্য। আর এগারোটা এক এক দুনিয়ার এক একজনের কাছে সুরক্ষিত ছিলো।(থর)
.
–হ্যা।(আমি)
.
–ড্রাকুলার কাছে মনস্টার ওয়ার্ল্ড এর ব্লাড সোর্ড লুকারিও রয়েছে।(থর)
.
–ওওও।(আমি)
.
–ড্রাকুলাকে দুটো স্লাইস দিতে হয় না। সে লুকারি এর ব্যবহার অনেক ভালো ভাবে করতে পারে, তার শুধু একটা স্লাইসই প্রয়োজন হয়।(থর)
.
–এখন বুঝতে পেরেছি কিভাবে ড্রাকুলা আগের রিয়েলিটি ধ্বংসের আগেই লিম্বোতে যেতে পেরেছে। কিন্তু একটা জিনিস বুঝতে পারছি না। যদি তার কাছে এক্সোনিয়ার মতো ডাইমেনশন ব্লেড থাকে তাহলে সে তো এখানে অনেক আগেই আসতে পারতো। সেটা করলো না কেনো?(আমি)
.
–ডাইমেনশন ব্লেড যেটাকে বলা হয়, সেটা এগারোটার এক একটা ক্ষমতা রয়েছে। এবং সেই ক্ষমতা তাদের রিচার্জও করতে হয়। আমাদের এজগার্ডেও একটা ছিলে, যেটার নাম ছিলো হোফান্ড। সেটা হাইমডালের কাছে ছিলো। এবং বাইফ্রোস্টের ব্রিজ নিয়ন্ত্রন করা হতো সেটা দিয়ে। সেটা তার ব্যবহারকারীকে এরকম ক্ষমতা দিতো যে, সে পুরো দুনিয়ার সবাইকে দেখতে এবং শুনতে পারবে, কিন্তু এর বদলে ব্যবহারকারী সমস্ত জীবন তলোয়ারকে দিয়ে দিতে হতো। ঠিক বাকি তলোয়ারদের ব্যবহার করার জন্যও কিছু প্রয়োজন হয়।(থর)
.
–এটা তো আমি জানতাম না।(আমি)
.
–হ্যা। যেমন তোমার এক্সোনিয়া। এটা চাদের আলো থেকে তার ক্ষমতা গ্রহন করে এবং সেটা ব্যবহার করে। যদি তুমি রাতে চাদের আলোর নিচে এক্সোনিয়া ব্যবহার করো তাহলে সেটা অনেক ভয়ানক হবে।(থর)
.
–আর ড্রাকুলার লুকারিও?(আমি)
.
–সেটার নামই দ্যা ব্লাড সোর্ড। সেটার জন্য মানুষের রক্ত প্রয়োজন হয়। মানুষের এক ফোটা রক্তের মাধ্যমে একবার ডাইমেনশন স্লাইস ব্যবহার করা যায়। আর রক্ত না থাকলে সেটা ব্যবহার করা যাবে না। ড্রাকুলা সেটা ব্যবহার করতো না। তার জীবন পৃথিবীর ইংল্যান্ডে ভালোই যাচ্ছিলো। তবে ভয়ানক কিছু একটা হবে সেটা সে আগেই বুঝতে পেরেছিলো তার টেলিপ্যাথিক ক্ষমতার মাধ্যমে। তাই সে তারা তারি করে একজন মানুষের থেকে কিছুটা রক্ত লুকারিও কে দিয়ে তার পুরো হোটেলকে টেলিপোর্ট করে লিম্বোতে নিয়ে যায়।(থর)
.
–এখন আমি পুরো কাহিনী বুঝতে পেরেছি। আচ্ছা তাহলে চলুন ড্রাকুলার কাছে যাওয়া যাক।(আমি)
.
–হ্যা।(থর)
।।।
।।।
থরের কাজ থেকে অনেক কিছুই জানতে এবং শিখতে পেরেছি। অবশ্য জ্ঞানই শক্তি। যার যত জ্ঞান আছে সে ততই শক্তিশালী। আমি এতোদিন এতোকিছু জানতাম না বলে এসব করতে পারবো এটা ভাবি নি কখনো। কিন্তু থরের সাহায্যে এখন নতুন কিছু জানতে পারলাম। এটা আমাকে ভালোই সাহায্য করবে সামনে। এবার আমি উড়ছি না বরং থরের হাত ধরেছি আমার পিঠ থেকে একটা গডহ্যান্ড বের করে। অনেকটা বলা যায় আমি ঝুলে আছি। মনে হচ্ছে আমার পিঠের সাথে কেউ দড়ি দিয়ে বেধে রেখেছে। থর এতো স্পিডে উড়ে যাচ্ছে যেটার কারনে আমি কিছুই দেখতে পাচ্ছি না। মিওনির এর এতো স্পিড আমি আজকে ভালো ভাবে বুঝতে পারলাম। আমাদের এই নতুন দুনিয়াটার আকার অনেক বড়। পৃথিবীর ভাষায় বললে এটা অনেক বড় গ্রহ। পৃথিবীর আকারের থেকে বিশগুন বড় একটা গ্রহ, যেটার মধ্যে এতোদিন তিনটা রাজ্য ছিলো। রাজ্যগুলোর সবচেয়ে ছোট শহর গুলোও অনেক বিশাল সাইজের। কিন্তু সেগুলো ক্যাপিটালের তুলনায় অনেক ছোট। যাইহোক এতো বড় গ্রহের ঘূর্নন দিতে থরের কিছু মুহুর্ত লাগবে যদি থর তার মিওনির এর পুরো স্পিডে উড়ে। তারপরও এখন যেভাবে উড়ছে সেভাবে মনে হচ্ছে এক ঘন্টা লাগবে পুরো গ্রহ একবার ঘুরে আসতে। আমাদের বেশীক্ষন লাগলো না ড্রাকুলার হোটেলে পৌছাতে। আরো আগে থরের হাত ধরে আসলে হয়তো আরো আগে চলে আসতাম। ড্রাকুলার হোটেলটা বিশাল একটা জঙ্গলের মাঝখানে অবস্থিত। যেটাকে দেখায় যাবে না পাশ থেকে। আমি এবং থর ঢুকে পরলাম ড্রাকুলার নতুন প্যালেসে। জানি না সে আমাকে কি বলবে।
।।।।
।।।
।।

(((চলবে)))

।।
।।।
।।।।