#ভ্যাম্পায়ার_কুইন#
#সিজন_2#
পর্বঃ৪৯
.
.
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
.
.
গাছের ডালে বসে একটা মেয়ের সাথে গল্প করা পুরান যুগের রোমান্স হবে হয়তো। তবে পরিস্থিতি অনেকটা রোমাঞ্চকর হয়েছে। তার কারন হলো আমি বর্তমানে আমার এন্জেল ফর্মে আছি, যেটা আমি এন্জেল সত্ত্বার মৃত শরীর ব্যবহারের ফলে অর্জন করতে পেরেছি। আর দ্বিতীয়ত হলো আমার কোলে একটা সুন্দরী প্রিন্সেস। অবশ্য সে খুব শীঘ্রই রানী হতে চলেছে। যাইহোক একটা প্রিন্সেসকে কোলে নিয়ে উচু গাছের ডালে বসে গল্প করাটা আমার মতে অনেকটা রোমাঞ্চকর বিষয়। বাকিদের কাছে কিরকম লাগবে সেটা জানি না। তবে আমার ইচ্ছা হচ্ছে, এরকম আরো কিছু পরিস্থিতিতে সুন্দরীদের সাথে মনোরজ্জন করতে। অবশ্য সে আশা আপাতোতো আমি সাইডে রেখে দিলাম। কারন ড্রাকুলা উড়ে আসছিলো আমাদের কাছেই। ড্রাকুলার আসা দেখে আমি নিজের মানুষ ফর্মে চলে আসলাম। প্রথম বার সময় লাগলেও, এখন জিনিসটা খুব সহজই হয়ে গেছে। নিজের ব্রেইনের মধ্যে চলাচল করাটা এখন নদীতে সাতার কাটার মতো হয়ে গেছে। আমি মানুষ ফর্মে আসার পর অনেকটা খারাপ কিছু করে ফেললাম। যেহেতু এতোক্ষন প্রিন্সেস আমার একদম কোলে বসে ছিলো, তাই তার আর আমার দূরত্ব ছিলোই না। বরং আমি পিছন থেকে তাকে জরিয়ে ধরে বসে ছিলাম। যদিও আমি মানুষ ফর্মে আসার পর একটা লাফ দিয়েছি। কারন আমার হৃদপিন্ড কাপছিলো সেই আকারে, যেনো সেটা ব্লাস্ট হয়ে যাবে। উত্তেজনার কারনে আমি একটা লাফ দেই। যেটার কারনে প্রিন্সেস আমার কোল থেকে এবং গাছের ডাল থেকে নিচে পরে যায়।
।।।
।।।
অবশ্য আমি ভেবেছিলাম প্রিন্সেস হঠাৎ পরে যাওয়ার ফলে হয়তো আঘাত পাবে। তাই কিছুটা চিন্তিত হলাম। আমি লাফ দিয়ে উপরে থাকা আরেকটা ডালের সাথে জোরালো ভাবে একটা গুতো খেলাম। যেটার কারনে আমি মাথায় হাত দিয়ে কিছুক্ষন চুপ ছিলাম। প্রিন্সেস এর কথা মনে পরতেই, নিচে তাকালাম। প্রিন্সেস এর কিছুই হয় নি। বরং সে নিচে সুন্দর করেই দাড়িয়ে আছে। যদিও তার মুখেও আমি অবাক এর চিত্র দেখতে পেলাম। অবাক হওয়ারই কথা। এতোক্ষন আদর করে তাকে কাছে নিয়ে গল্প করতে ছিলাম। কিন্তু মানুষ ফর্মে এসে আবার আগের মতো ব্যবহার করবো এটা হয়তো কল্পনা করতে পারে নি সে।
।।।।
।।।।
যাইহোক আমার এন্জেল ফর্ম ব্যবহার করে বুঝতে পারলাম সেটা মেয়েদের জন্য ঠিক নয়। তাই সেটা তেমন ব্যবহার করা যাবে না। এন্জেল ফর্ম ব্যবহার করার ফলে আমি আরো কিছু ক্ষমতা সম্পর্কে জেনেছি যেটা আমি ব্যবহার করতে পারবো। এসকল জ্ঞান এন্জেল সত্ত্বার চেতনার মধ্যে ছিলো। সাধারনত আমার সকল সত্ত্বার চেতনা মানুষ সত্ত্বার চেতনার সাথে মিশেছে। তবে বাকি সত্ত্বার শরীর ব্যবহার না করলে পুরো চেতনার জ্ঞান আমি খুলতে পারবো না।
.
–প্রিন্সেস দেখছি আপনি খুব তারাতারি রিকোভার হয়ে গেছেন।(ড্রাকুলা হঠাৎ আমাদের পাশে টেলিপোর্ট হয়ে বললো)
.
–হ্যা।(প্রিন্সেস)
.
–তাহলে আপনার কাজ শুরু করা যাক। আপনাকে আপনার রাজ্যের জন্য প্যালেস দেওয়া হয়েছে। তবে একটা রাজ্যের বাকি জিনিসগুলো আপনাকে নিজেই বানিয়ে নিতে হবে। এখন আমি শুধু আপনাকে পরামর্শ দিবো।(ড্রাকুলা)
.
–ওকে। ঠিক আছে। চলুন কি করতে হবে বলুন আমাকে। আমি সবই করতে রাজি।(প্রিন্সেস)
.
–আমি হেল্প করবো যা দরকার হবে প্রিন্সেস এর।(আমি)
.
–না জ্যাক, তোমার আপাতোতো কোনো প্রয়োজন হবে না। তুমি এখন প্রিন্সেস এর কাছে থাকলে তার শর্ত অমান্য হবে।(ড্রাকুলা)
.
–আচ্ছা ঠিক আছে। তাহলে আমাকে থরের সাথে কথা বলতে হবে ট্রেনিং এর জন্য।(আমি)
.
–থরও ব্যস্ত আছে নতুন কিছু কাজে। মনে হয় না তোমাকে সাহায্য করতে পারবে। আমি বুদ্ধ দিবো তুমি আপাতোতো ডেভিল কিং এর দিকে নজর দাও।(ড্রাকুলা)
.
–আচ্ছা ঠিক আছে।(আমি)
.
–জ্যাক আমি দুঃখিত। তবে তোমার সাথে শীঘ্রই আমার দেখা হবে। তুমি ইগড্রোলিয়ায় গিয়ে এই খবর জানিয়ে দাও যে প্রিন্সেস এলিনাকে কিডন্যাপ করে নি কেউ, বরং আমি নিজেই এসেছি এখানে, এবং নিজেই নতুন একটা মানুষদের রাজ্য তৈরী করছি এখানে।(প্রিন্সেস)
.
–জ্বী প্রিন্সেস।(আমি)
।।।
।।।
যেহেতু ড্রাকুলা প্রিন্সেস এর সাথে থাকবে, তাই প্রিন্সেস এর সুরক্ষা নিয়ে আমার কোনো চিন্তা নেই। তবে সমস্যা হলো সেই শর্ত নিয়ে। ব্লাড কন্ট্রাক অনেক ভয়ানক। আমি জানি প্রিন্সেস নিজের ইচ্ছায় এটা করতে চাচ্ছে না। তবে হয়তো প্রিন্সেস এর ডেসটিনি এটাই।।।।
।।।।।
।।।।।
যাইহোক ড্রাকুলা এবং প্রিন্সেস দুজনেই পলকের মধ্যে উধাও হয়ে গেলো। সময়টা আমার জন্য খারাপ। আমি কিছু করার মতো ভেবে পাচ্ছি না। ইচ্ছা হচ্ছে বাকি সত্ত্বা গুলোর ফর্ম নেওয়ার। তবে সেটা অন্য একদিন করা যাবে। আপাতোতো আমার একটা কাজ করতে হবে। রাজ বংশের হুকুম জিনিসটা অনেক গুরুত্বপূর্ন। কেউ হুকুম দিলে সেটা অমান্য করা যায় না। বরং যে করেই হোক সেটা পালন করতে হয়। আগের দুনিয়ায় যেহেতু রাজার সিংহাসনে বসেছিলাম তাই এই সম্পর্কে আমার সেরকম ধারনা নেই। লোকজন রাজা কিংবা রাজবংশের আদেশ কেনো মানে সেটা আমি এই দুনিয়ায় বুঝতে পারছি। যাইহোক আমাকে ইগড্রোলিয়াতে যেতে হবে এখন। যেহেতু আমি টেলিপোর্টেশন স্পেল ব্যবহার করতে পারি না তাই ইগড্রোলিয়ার ক্যাপিটালে যাওয়া আমার পক্ষে এতোটাও সহজ হবে না৷ কি করবো বুঝতে পারছি না।।।
।।
।।
এখানে আসার সময় আমার সোজা পূর্ব দিকে উড়ে এসেছিলাম। হয়তো এখন পশ্চিম দিকে উড়ে গেলে আমি ক্যাপিটালে পৌছে যাবো। তবে একটা জিনিস নিয়ে আমার সমস্যা মনে হচ্ছে। যেহেতু আমি কয়েদখানা থেকে পালিয়ে এসেছি। তাই আমার মনে হচ্ছে এখন ক্যাপিটালে যাওয়া আমার জন্য ঠিক হবে না। যদিও চেষ্টা করে দেখা যাক।
।।।
।।।
আমার মাথায় আরেকটা প্লান এসেছে। আমি কোনো সত্ত্বার ফর্ম নিলে সেখানে নিজের চেহারার পরিবর্তন হয়। যেমন এন্জেল ফর্মে যাওয়ার পর আমি পুরো একজন এন্জেল এর মতো হয়ে গিয়েছিলাম। আমার ধারনা আমার ম্যাজিক পাওয়ারেরও পরিবর্তন হয় তাতে। যার কারনে চিন্তে পারাটা কষ্টকর হয়ে যায়। যাইহোক আমি এন্জেল ফর্ম নিতে চাই না। ঔটার ভাবগতি তেমন ভালো না। বরং আমি আমার ডিম্যান ফর্মটা নিয়ে দেখি।
।।।।
।।।।
আমি আমার ব্রেইনের মধ্যে আবার প্রবেশ করলাম। এবং সেখান থেকে আমার ডিম্যান সত্ত্বার শরীরকে স্পর্শ করলাম। যার কারনে আমি ডিম্যান ফর্মে ট্রান্সফর্ম হয়ে গেলাম। ডিম্যান ফর্মে ট্রান্সফর্ম হয়ে আমার শরীরে তেমন কোনো পার্থক্য আমি পেলাম না। শুধু অনুভব করলাম আমার শারিরীক ক্ষমতা অনেকগুন বেড়ে গেছে। ট্রাই করার জন্য আমি পাশে থাকা মোটা গাছে একটা ঘুষি দিলাম আস্তে করে। ঘুষির ফোর্স অনেক কম হওয়ার পরও সেটার ফলে যেখানে ঘুষি দিয়েছি গাছের ঠিক সেই জায়গায় বিশাল বড় একটা ফুটো হয়ে গেছে। যেটা দিয়ে এদিক সেদিক দেখা যাচ্ছে। আমি অবাক হলাম না। কারন ডিম্যানদের শারিরীক ক্ষমতা অনেক থাকে। তবে এই ডিম্যান ফর্ম নিয়ে ও আমি ক্যাপিটালে ঢুকতে পারবো না। কারন আমার চেহারা কিংবা রূপের কোনো বদল হয় নি ডিম্যান ফর্মে। অবশ্য আমি আপাতোতো হাফ ডিম্যান ফর্মে আছি, যেটা থেকে আমি ফুল ডিম্যান ফর্মে যেতে পারবো। যেটার আকার পুরো দুতলা একটা বিল্ডিং এর সমান প্রায়। তবে আমার মনে হয় না সেই ফর্ম নিয়ে আমি ক্যাপিটালে ঢুকতে পারবো। তাই ডিম্যান ফর্মে আমার হচ্ছে না।
।।।
।।।
আমি আবারো আমার ফর্ম চেন্জ করলাম এবং সোজা মানুষ ফর্মে চলে আসলাম। যদিও আমি আমার ফর্ম গুলো ব্যবহার করতে পারি, তবে সেটার জন্য ঝামেলাও আছে। আমি মানুষ বাদে অন্য ফর্মে গেলে, সেটার জন্য গড হ্যান্ড ব্যবহার করতে পারবো না এবং আমার কোনো এট্রিবিউট ম্যাজিক ব্যবহার করতে পারবো। আর এট্রিবিউট ম্যাজিক ছাড়া আমি উড়তে পারবো না। তাই আমার মনে হচ্ছে না এন্জেল এবং ডিম্যান ফর্ম আমার কোনো সাহায্য করবে। কারন এন্জেল ফর্মে আমার এক সাইডে ছয়টা ডানা, যেটা দিয়ে উড়া সম্ভব নয়। আর ডিম্যান ফর্মে আমার পিঠে কোনো ডানায় নেই। এবং সবশেষে রয়েছে আমার ভ্যাম্পায়ার ফর্ম। জানি না সেটা কিরকম হবে। কিন্তু সেটাও একটা ঝামেলা করবে সেটা আমি বুঝতে পারছি।
।।।
।।।
আমি আমার ভ্যাম্পায়ার ফর্মে ট্রান্সফার হয়ে গেলাম। এক সেকেন্ড এর প্রয়োজন হয় এখন ফর্ম চেন্জ করতে করতে। জিনিসটা করতে চাই নি। তবে এভানে আমার প্রাকটিসও হচ্ছে। সাথে সাথে আমি সব ফর্ম সম্পর্কে জানতেও পারছি।
।।।
।।।
ভ্যাম্পায়ার ফর্মে আসার পর আমি আমার শরীরে অনেক পরিবর্তন লক্ষ করতে পারলাম। প্রথমেই পিঠে কালো দুটো ডানা বের হয়েছে, যেগুলো দেখতে বাদুড়ের মতো। এর পর দুটো দাঁতের আকারও অনেকটা বড় হয়েছে। মনে হচ্ছে এ দুটো রক্ত পান করার জন্য। ভ্যাম্পায়ারেরা যে কোনো প্রানীর রক্ত খেতে পারে। তবে তার মধ্যে মানুষের রক্ত তারা বেশী পছন্দ করে। আর মানুষের রক্তই তাদের ক্ষমতার প্রধান উৎস। যত বেশী মানুষের রক্ত পান করতে পারবে একজন ভ্যাম্পায়ার তত শক্তিশালী হবে সে।।। যাইহোক আসল কথায় আসা যাক। আমার শরীরের রং সাদা হয়েছে অনেকটা। যদিও এন্জেল ফর্মে অনেক সাদা হয়েছিলো। চেহারা একই রকম থাকলেও রং পাল্টে গেছে।
।।।
।।।
আমি একটা জিনিস চেক করার চেষ্টা করলাম। ড্রাকুলার সাথে লড়ার সময় আমার ব্যাগ নিচে পরে গিয়েছিলো। আমি সেটা থেকে ভ্যালিরাকে উঠানোর চেষ্টা করতে চাইলাম। কিন্তু ভ্যালিরাকে উঠাতে পারছি না। ইগড্রাসিলকেও উঠানোর চেষ্টা করছি কিন্তু সেও এতো ভারী যে উঠাতে পারছি না। আমি আমার ডান এবং বাম হাতে লক্ষ করে দেখতে পেলাম সেখানে ভ্যালিরা এবং ইগড্রাসিল দুজনেরই কোনো ছবি নেই। আমি বুঝে গেলাম যে, আমি অন্য কোনো ফর্মে চলে গেলে এই দুটোকে ব্যবহার করতে পারবো না। তাই তখন এই দুটোকে বহন করাও আমার পক্ষে সম্ভব নয়। পিঠে যদি থাকে এই দুটো, আর আমি যদি সেই সময়ে মানুষ থেকে অন্য কোনো ফর্মে যায়, তাহলে সোজা এই দুটোর ভরের কারনেই নিচে পরে যাবো। তাই আপাতোতো আমাকে এই দুটো জিনিসের জন্য কিছু করতে হবে। আমি সব কিছু একা করতে পারবো না। অনেক কাজ রয়েছে, যেগুলোর জন্য আমার হ্যারি এবং বাকিদের সাহায্য নিতেই হবে।
।।
।।
।।
আমি আপাতোতো আমার মানুষের ফর্মেই ফেরত আসলাম। এই ফর্মেই আমি আমার এট্রিবিউট ম্যাজিক এর সাথে ভ্যালিরা, ইগড্রাসিল এবং গডহ্যান্ডকে ব্যবহার করতে পারি। তাছাড়া অন্য ফর্মে গেলে সেগুলো আমার পক্ষে সম্ভব নয়। আমি আমার ব্যাগটাকে কাধে নিলাম। হাতে লক্ষ করে দেখতে পেলাম সেখানে ভ্যালি এবং ভিরুদার ছবি রয়েছে। তাই চিন্তা করা বাদ দিয়ে আমি পশ্চিমের দিকে উড়তে শুরু করলাম। পূর্ব দিকে যেহেতু উড়ে এসেছি তাই পশ্চিমে গেলেই ইগড্রোলিয়ার ক্যাপিটালে পৌছে যাবো। যাইহোক আমি আবারো উড়ার জন্য আমার জেট ক্ষমতা ব্যবহার করেছি। যেটার জন্য আমার গ্রাভিটি একদম জিরো করতে হয়। এবং তারপর সামান্য আগুনের ফোর্স হলেই আমি সামনে যেতে পারি নিজ ইচ্ছায়। যেহেতু আমার গ্রাভিটি তখন জিরো, তাই আমি অনেকটা ভাসমান বেলুন এর মতো। যেটাকে আমার ডান হাত এবং ডান পায়ের তালু থেকে বের হওয়া আগুন সামনের দিকে নিয়ে যায়। এটাকে আমি আপাতোতো পুরোপুরি মাস্টার করেছি, যার ফলে উড়তে তেমন সমস্যা হয় না। তাই দেরী না করে আমি উড়তে লাগলাম। পশ্চিম দিকে উড়ে যাচ্ছি। থরের মিওনির এর স্পিড আলোর থেকে অনেকগুন বেশী। যার কারনে সেটা একটা গ্যালাক্সি মুহুর্তেই পার করতে পারে। সেটার স্পিডের কারনে আমার এখানে আসতে সময় বেশী প্রয়োজন হয় নি। তবে এখন আমি যাচ্ছি আমার নিজের জেট ক্ষমতা দিয়ে। যেটার কারনে অনেক সময় লাগছে। আমি আকাশের অনেকটা উপর দিয়ে উড়ে যাচ্ছি, তার কারন হলো আমি চাইনা কোনো শহর থেকে কোনো সেনা আমাকে দেখে ফেলুক। তাতে সমস্যা হবে। বিনা অনুমতি ছাড়া ইগড্রোলিয়াতে উড়া নিষেধ। এজন্য আকাশে লোকজন দেখায় যায় না৷ আপাতোতো আমি নিচে দেখতে পাচ্ছি শুধু সবুজ গাছপালা। তাছাড়া দূরের শহর গুলো একদম ছোট দেখা যাচ্ছে। লোকজন দেখার কোনো উপায় নেই, কারন আমি অনেক উপর দিয়ে উড়ে যাচ্ছি। আপাতোতো আমার চিন্তা ইগড্রোলিয়াতে পৌছানোর। আমার বুঝতে পারছি না ঠিক জায়গামতো যাচ্ছি কিনা। তবে হয়তো এটাই রাস্তা হবে।
।।।
।।।।
।।।
আমার উড়ার স্পিড থরের মিওনির এর কাছে কম হলেও, এই দুনিয়াতে সেটা অনেক স্পিডে। আমি উড়তে উড়তে অনেকটা ক্লান্ত হয়ে গেলাম। নিজের ম্যাজিক পাওয়ারও শেষের দিকে প্রায়। আর এদিকে রাতও হয়ে গেছে। রাতের দিকে দিক নিয়ন্ত্রন করাটা কষ্টকর। আমি নিচে নেমে গিয়েছি। তবে জায়গাটা বন। তাই আমি এখানে থাকার জন্য মোটেও রাজি হবো না। আশে পাশে কোনো রাজ্য দেখাও যাচ্ছে না আপাতোতো। আর আমি আর উড়তেও পারবো না। শরীর থেকে আর কিছুটা ম্যাজিক পাওয়ার শেষ হলে আমি এমনিতেই ঘুমিয়ে যাবো। সেটা চাইবো না। তাই আমি এক্সোনিয়া হাতে নিলাম। এক্সোনিয়ার মতো আমার বাকি তলোয়ারগুলো হলে অনেক ভালো হতো। যদি আমি তিনটাকে এক করে নতুন একটা তলোয়ার বানাতে পারতাম তাহলে কিরকম হতো? হয়তো সেটা ডয়ারফস রাই পারবে। ব্লাক স্মিথ এর কাছে গেলে খারাপ হতো না।
।।।
।।।
আমার এক্সোনিয়া দিয়ে টেলিপোর্ট হওয়া এখনো শেখা বাকি। আমি এটা ব্যবহার করলেই যে জায়গায় থাকি সেটার অনেকটা উপর থেকে বের হয়। এই জিনিসটা ঠিক করার জন্য হয়তো আমাকে আরো গভীর মনোযোগ বসাতে হবে কোথায় যাবো সেটা নিয়ে। আমার প্রথম চিন্তা ছিলো আমি হ্যারিদের কাছে যাবো। কিন্তু দুটো স্লাইস দিয়ে যখন পোর্টাল থেকে বের হলাম তখন নিজেকে একটা অন্ধকার রুমের মধ্যে আবিষ্কার করলাম। যেটা পুরোই অন্ধকার ছিলো। আপাতোতো আমার ম্যাজিক পাওয়ার নেই। তাই এক্সোনিয়াকে অদৃশ্য করলাম। এবং ভিরুদাকে হাতে নিলাম। ভিরুদার ব্লেড দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে দিলাম। যেটা জ্বলছে এবং চারিদিক আলোকিত হয়ে গেলো। জায়গাটা দেখে চিন্তে সমস্যা হলো না আমার। এটা সেই জায়গা যেখানে এক্সোনিয়া ঠিক করে এসেছিলাম আমি। যদিও আমরা ব্লাক স্মিথকে বাচিয়েছিলাম সেদিন। কিন্তু ব্লাক স্মিথকে দেখতে পাচ্ছি না এখানে কোথাও। হয়তো তার উপরে হামলা হওয়ার পর থেকে সে এখান থেকে পালিয়ে গিয়েছে। যাইহোক তাকেও দরকার ছিলো আমার। তবে আপাতোতো দরকার একটা আশ্রয়। তবে আশা করি নি এভাবে এ্যালকোর্টে চলে আসবো। যাইহোক আমি আলোর উৎস খুজছিলাম। যেটা টেবিলের উপরেই ছিলো। সেটায় আমার তলোয়ার দিয়ে আগুন ধরিয়ে দিলাম। পুরো রুম আলোকিত হয়ে গেলো এবার। আলোকিত হওয়ার পর ভালো করে লক্ষ লরে দেখলাম একপাশে একটা ছোট বিছানা রয়েছে, যেখানে কাঁথা মুরো দিয়ে শুয়ে ছিলো একজন। আমি কাছে গিয়ে গুতো দিয়ে উঠালাম৷ প্রথমে উঠতে চাই নি। তবে চারটা গুতো দেওয়ার পর হঠাৎ লাফ দিয়ে উঠলো হাতে তার সাইজের থেকে বিশালকার একটা তলোয়ার নিয়ে। অবশ্য আমাকে দেখার পর অবাক হলো। এবং তলোয়ার নিচে নামিয়ে নিলো।
.
–তো কি মনে করে আবার আমার কাছে?(আমি)
.
–এইযে আপনার মেরামত করে দেওয়া তলোয়ারই নিয়ে এসেছে এখানে।(আমি)
.
–মজা করছেন? কোনো তলোয়ার টেলিপোর্ট করতে পারে? আমি জানি এই তলোয়ারের মাঝে অনেক ক্ষমতা রয়েছে, তবে টেলিপোর্টেশন এর মতো কোনো তলোয়ার নেই।(ব্লাক স্মিথ)
.
–হ্যা সত্য। আপনি দেখবেন।(আমি)
.
–হ্যা সেটা তো অবশ্যই।(ব্লাক স্মিথ)
.
–তবে তার আগে একটা কাজ করে দিতে পারবেন আমাকে?(আমি)
.
–আবার কি কাজ? আমি তখনি বলেছিলাম সেটাই শেষ হবে।(ব্লাক স্মিথ)
.
–হয়তো ভুলে গেছিলেন সেটা বলতে। যাইহোক আমার কাছে এই তিনটা তলোয়ার রয়েছে। আপনি তো একজন ব্লাক স্মিথ, এই তিনটাকে সংমিশ্রন করা আপনার জন্য কঠিন কোনো ব্যাপার হবে না।(আমি)
.
–হ্যা। তবে আমি আর কোনো কাজ করতে রাজি নই। আমি ম্যাজিকাল তলোয়ার নিয়ে কাজ করার চিন্তা বাদ দিয়েছি।(ব্লাক স্মিথ)
.
–ওওও।(আমি)
।।।
।।।
।।।
দেখছি সাধারন কথায় কাজ হচ্ছে না। আমার অনেক প্রয়োজন ছিলো তিনটা তলোয়ারকে এক করার। আর সেটা ব্লাক স্মিথ ছাড়া কেউ করতে পারবে না। তাই প্লান টু ব্যবহার করতে হবে আমাকে। আমি আমার এন্জেল ফর্মে ট্রান্সফার হয়ে গেলাম। যেটা দেখতে পেয়ে ব্লাক স্মিথ ভয় এবং অবাক দুটোই হলো। আমি তাকে ভয় দেখাতে চাচ্ছি না। বরং তার উপরে একটা স্পেল ব্যবহার করতে চাচ্ছি। জানি সেটা খারাপ হবে, তারপরও এটা না করলে তিনটা তলোয়ার নিয়ে ঘোড়া আমার জন্য কষ্টকর হয়ে যাবে।
।।।
।।।
আমি মাইন্ড কনট্রোল স্পেল ব্যবহার করলাম ব্লাক স্মিথের উপরে। এটা ড্রাকুলাও ব্যবহার করতে পারে। আর এই ফর্মে প্রথম যাওয়ার পর আমিও বুঝতে পারি যে এটা আমিও ব্যবহার করতে পারবো। তারপরও সিওর ছিলাম না। তবে এখন চেষ্টা করে দেখা যাক। হঠাৎ ব্লাক স্মিথের হালকা কালো চোখ পুরো সাদা হয়ে গেলো। যেটা দেখতে অনেকটা ভয়ানক। এবং সে আমার থেকে তিনটা তলোয়ার নিতে চাইলো। যদিও এক্সোনিয়া আমি ওর হাতে দিয়েছি, তবে বাকি দুটো উঠাতে পারে নি। এজন্য আমাকেও সাহায্য করতে হবে। কিছু বলছে না, শুধু কাজই করছে।
।।।
।।।
যাক এই সুযোগে হয়তো তিন তলোয়ার দিয়ে নতুন কিছু একটা তৈরী হবে। হয়তো সেটা দুর্বল হবে। আবার শক্তিশালীও হতে পারে। আবার এমনও হতে পারে সেটা ব্লাক সোর্ডের থেকেও ভয়ানক।
।।।।
।।।
।।
।
(((চলবে)))
।
।।
।।।
।।।।
#ভ্যাম্পায়ার_কুইন#
#সিজন_2#
পর্বঃ৫০
.
.
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
.
.
আমি ব্লাক স্মিথের উপরে মাইন্ড কন্ট্রোল স্পেল ব্যবহার করেছি। অবশ্য এটাকে স্পেল বলা যায় না। বরং এটা আমার ক্ষমতা। এন্জেলরা অন্য যেকোনো গোত্রের প্রানীদের মাইন্ড কন্ট্রোল করতে পারতো আগের দুনিয়ায়। এই দুনিয়ায় পারে কিনা সেটা আমি জানি না। তবে অনেক কাজের জিনিস এটা। যেহেতু আমি এখন এন্জেল ফর্মে আছি, তাই এটা আমিও ব্যবহার করতে পারবো। এটা দিয়ে যে কাউকে যেকোনো জিনিস করানো যায়। তবে আমার সবকিছু করানোর ইচ্ছা নাই, তারপরও এন্জেল ফর্মে আসার পর কিছু বলা যায় না। এই ফর্মে আসার পর আমি অনেকটা বদলে যায়। আর সেটা মোটেও ভালো বিষয় না। আপাতোতো আমি আমার মানুষের ফর্মে চলে এলাম, কারন সেটা ছাড়া আমি তলোয়ার গুলো নরাতে পারবো না। আমি চাইবো সে কিছু না জানুক কি হচ্ছে তার সাথে। কাজ শেষ হলে তার স্মৃতিও মুছতে হবে। যেটাও আমার এন্জেল ফর্ম করতে সক্ষম।
।।।
।।।
অনেকটা সময় লাগলো পুরো তিনটা তলোয়ারকে একত্র করতে। তিনটাকে গলিয়ে এক করলেই কাজ হয় না। কারন একজন ব্লাক স্মিথই জানেন তলোয়ারের ক্ষমতা অন্য তলোয়ারে নেওয়ার জন্য কি করতে হয়। অনেক ধরনের স্পেল ব্যবহার করতে হয়েছে তাকে, যেগুলো সম্পর্কে আমার কোনো জ্ঞানই ছিলো না। এবং শেষমেষ পুরো তিনটা তলোয়ারকে পুরোপুরি গলিয়ে তিনটা পাত্রে আগুনের মধ্যে রেখে দেওয়া হয়েছে। শুধু তলোয়ার তিনটার হাতল ছাড়া পুরো ব্লেড গলিয়ে তরল করে রাখা হয়েছে। তিনটা তলোয়ারের হাতল এবার ব্লাক স্মিথ হাতে নিলো। এবং সেগুলোর মধ্য থেকে এক্সোনিয়ারটা মধ্যখানে এবং বাকি দুটো দুইপার্শে রেখে সেটাও আগুনের মধ্যে ঢুকিয়ে দিলো। এবং গরম করে সেগুলো বের করে তিন হাতলের মিশ্রনে নতুন একটা হাতল তৈরী করলো, যেটার আকার অনেকটা মোটা। এবার কিছু ম্যাজিক পাওডার নিক্ষেপ করলো হাতলের উপরে, যেটার কারনে উজ্জ্বল হয়ে গেলো হাতলটা। সব কিছু নারাচরা আমাকেই করতে হচ্ছে, ব্লাক স্মিথ নিজে শুধু হাতুরি দিয়ে বাড়ি দিয়ে সঠিক আকার দিচ্ছে।
।।।
।।।
হাতল তৈরী হয়ে গেলো। এবার গলিত ব্লেড এর তরল আগুন থেকে বের করা হলো। সেগুলোর উপরে এরকম স্পেল দেওয়া হয়েছে যে সেগুলো আগুন পাওয়ার সাথে সাথে গলে পানি হয়ে গেছে। তাছাড়া এক্সোনিয়ার ব্লেড গলানো এতো সহজ নয়। আর ভিরুদা তো আগুনেরই তৈরী। তার উত্তাপে সে নিজে গলে না। ডয়ারফসদের এই স্পেল গুলোও মারাত্মক। যদি তারা চাই তাহলে তারা নিজেরাই একটা রাজ্য খুলে নিতে পারে। অবশ্য তাতে তাদেরই লাভ হবে অনেক।
।।।
।।।
হাতল তৈরী পরে প্রথমে এক্সোনিয়ার ব্লেডের তরল সেখানে দেওয়া হয়। এরপর নিচের সাইডে ভ্যালিরার ব্লেড এবং উপরের সাইডে ভিরুদার ব্লেড। অনেকটা সময় শেষ হওয়ার পর তলোয়ারটা পুরোপুরি শেষ হলো। যেটার আকার দেখেই আমার ভয় করছে। একটা দানবাকৃতির তলোয়ার তৈরী হয়েছে। যেটার ব্লেড অনেক মোটা এবং চওড়া। মাঝখানে একটা ব্লেড রয়েছে, যেটা এক্সোনিয়ার। আর দুই সাইডে ভয়ানক আকারে ভ্যালিরা এবং ভিরুদার মিশ্রন করা হয়েছে। প্রথমে তিনটায় কাটানা ছিলো। কিন্তু এখন এই তলোয়ারটা দেখতে অন্যরকম। দুই সাইডে মাসাডির মতো ভ্যালি এবং ভিরুদার ব্লেড রয়েছে। এবং মাঝ বরাবর লংসোর্ড যেটা মূলত এক্সোনিয়ার ব্লেড দিয়ে তৈরী। মূল কথা দেখতে মারাত্মক লাগছে তলোয়ারটাকে। তবে এটাকে দেখতে থাকলেই হবে না আমার। আমাকে টেস্টও করতে হবে। আমি মানুষের ফর্মে ছিলাম। তাই মনে হচ্ছে উঠাতে কোনো সমস্যা হবে না। তাই তারাতারি করে ডান হাত দিয়ে উঠানোর চেষ্টা করলাম। কিন্তু ভারের কারনে সেটা হালকা উঠলেও পুরোটা উচু করতে আমি পারছি না। বাম হাত দিয়েও একই অবস্থা। যেহেতু এটা একটা হেভি সোর্ড, আর এরকম তলোয়ার দুই হাত দিয়েই উঠাতে বা ধরতে হয় তাই আমি দুই হাত দিয়ে ধরলাম হাতলটা। হাতলটা অনেক বড়, এবং একদম মাথায় দুই সাইডে দুটো ড্রাগনের লোগোও রয়েছে, যেটা মারাত্মক লাগছে দেখতে। আমি দুই হাত দিয়ে ধরার পর তলোয়ারটা একদম হালকা হয়ে গেলো। মনেই হচ্ছে না কোনো কিছু আছে আমার হাতে। যেটা একদম সুদর লাগছে আমার কাছে। সাধারনত হেভি সোর্ডগুলো দুই হাতেই চালাতে হয়। তাই এটা দুই হাতে চালানোতে আমার কোনো সমস্যা নাই। আমি আরেকটা জিনিস টেস্ট করার চেষ্টা করলাম, যেটা হলো এটা অদৃশ্য হয় কিনা এক্সোনিয়ার মতো। যেহেতু এক্সোনিয়ার নাম বললেই আমার হাতে চলে আসতো সেটা তাই আশা করা যাচ্ছে এক্সোনিয়ার কথা বললেই এইটাও আমার হাতে চলে আসবে। প্রথমে দেখা যাক এটা অদৃশ্য হয় কিনা। আমার দুইহাত থেকে আমি তলোয়ারটা ফেলে দিলাম নিচে। প্রথমে ভেবেছিলাম সেটা নিচে পরবে, কিন্তু সেটা না হয়ে একদম অদৃশ্য হয়ে গেলো। এবার আমি এক্সোনিয়ার কথা বলতেই আমার হাতে তলোয়ারটা চলে আসলো। আমি আপাতোতো কিছুটা নিশ্চিত হলাম যে তলোয়ার নিয়ে আমার কোনো ঝামেলা পোশাতে হবে না।
।।।
।।।
এই তলোয়ারটার কারনে এখন আমি অনেকটা সহজ ভাবে কোথাও যেতে পারবো, সেই সাথে নিজের রূপটাও যে কোনো সময় যেকোনো ফর্মে পাল্টাতে পারবো। তখন আর তলোয়ার ভারি হওয়ার চিন্তা থাকবে না। যাইহোক আপাতোতো আমি আবার এন্জেল ফর্মে চলে আসলাম, এবং সামনে থাকা ব্লাক স্মিথের মাথায় হাত দিলাম। তার ব্রেইন থেকে আজকের স্মৃতি আমি মুছে দিলাম। আপাতোতো নতুন তলোয়ার অদৃশ্য আছে, সেটার দরকার না হলে সেটা অন্য একটা স্পেসে চলে যায়। আর যখন আমার দরকার হয়, তখন সেটার নাম উচ্চারন করলেই আমার হাতে সেটা চলে আসে। এরকম সকল তলোয়ার হলে তো কাউকে তলোয়ার বহন করতেই হতো না। সে তাদের ইচ্ছামতো তলোয়ার বিভিন্ন জায়গায় রেখে দিতে পারতো। যাইহোক আপাতোতো আমি ব্লাক স্মিথকে ঘুম পারিয়ে দিলাম। এবং নিজেও রাতটা এ্যালকোর্টে কাটিয়ে দিলাম। ইচ্ছা ছিলো এখানে আসার, তবে সেটা অনেক পরে, যাইহোক একটা কাজ হয়ে গেলে জিনিসটা অনেক সহজ হয়ে যায়।
।।
।।
।।
আমি সকালে খুব তারাতারি উঠলাম। উঠে তেমন কিছু দেখতে পেলাম না, বরং রুমটাকে কালকে অনেক বাজে অবস্থা করেছি, সেটাই দেখা যাচ্ছে। আমি এ্যালকোর্ট থেকে উড়ে ইগড্রোলিয়ার ক্যাপিটালে যেতে পারবো না। আমার আপাতোতো যে স্পিড তাতে আমি কয়দিনে ইগড্রোলিয়াতে যাবো তার ঠিক নাই। আবার আমার দিক নিয়ন্ত্রন করার বিষয়ে তেমন কোনো জ্ঞান নেই। তাই ইগড্রোলিয়ার দিকে রওনা দিয়ে আমি হিমারারে পৌছে যেতে পারি। আপাতোতো আমার উড়তে মন চাচ্ছিলো। তবে সেটা অন্য সময়ের জন্য রেখে দিবো। আমি আমার তলোয়ারটার ব্যবহার করতে চাই। কালকে যেহেতু এখানে টেলিপোর্ট হয়ে আসতে পেরেছি, তাই ইগড্রোলিয়াতে যাওয়া কোনো ব্যাপার হবে না৷ কিন্তু প্রথমে তলোয়ারটার সুন্দর একটা নাম দিতে হবে। তলোয়ারটা আমার ফুল ডিম্যান ফর্মের সাথে অনেকটা বানাবে। কারন তখন আমার আকারও বৃদ্ধি পাবে, আর এটার আকার তো বিশালই। তলোয়ারটা আমার সামনে রাখলে সেটার ব্লেডই আমার থেকে বড়। আর তার বিশাল হাতল তো আছেই। যেই দেখবে মনে করবে অনেক ভারী তলোয়ার। ভারী তো বটেই, তবে সেটা আমার এক হাতের জন্য। দুই হাত দিয়ে একদম তুলার মতো মনে হয়। আমিও দেরী না করে দুটো কাট দিলাম হাওয়ার মধ্যে, তবে কাট দেওয়ার সময়, ব্লাক স্মিথের দেওয়াল চলে আসে, যেটা আমার এক আঘাতেই ভেঙে যায়৷ আমি অবশ্য এটার আশা করি নি। অবশ্য জায়গাটা আমার এই তলোয়ার চালানোর জন্য মোটেও সুবিধার নয়। আমার অনেক বড় একটা জায়গা লাগবে। সেটার জন্য বাইরে যেতে হবে। তাই দেরী না করে আমি আমার তলোয়ারটা কাধে তুলে নিলাম। এবং হাটতে হাটতে যাচ্ছি উপর। এরমাঝে ভ্যালিরা এবং ইগড্রাসিলের কথা শুনতে পেলাম আমি,
.
–এ কি হাল করেছো আমাদের সুন্দর শরীরের? এখন তো পুরো মনস্টার মনস্টার ফিল আসছে।(ইগড্রাসিল)
.
–তাহলে জ্ঞান ফিরেছে তোমাদের? ইদানিং তোমাদের কোনো খোজ পাওয়া যায় না। হানিমুনে ছিলে নাকি?(আমি)
.
–এটা কিরকম কথা? বড়দের এরকম কথা জিজ্ঞেস করতে নেই।(ভ্যালিরা)
.
–না প্রথমে আমার আকার ছিলো একটা কাটানা কিন্তু এখন একটা মাসাতি হয়ে আছি, যেটা মোটেও সুন্দর লাগছে না।(ইগড্রাসিল)
.
–তো যখন মন চাইবে আকার পাল্টে নিবে।(আমি)
.
–আমরা আমাদের আকার পাল্টাতে পারলে তুমি তো আমাদের এরকম রূপ দিতে না।(ভ্যালিরা)
.
–ব্লাক স্মিথের স্মৃতি থেকে একটা ভয়ানক স্পেল আমার কাছে এসেছে। যেটা ড্রাগন অস্ত্রের জন্যই শুধু। যেটার মাধ্যমে তোমাদের রূপ চেন্জ করা ব্যাপার না।(আমি)
.
–কিভাবে কাজ করে সেটা?(ইগড্রাসিল)
.
–সময় হলে ঠিকই দেখতে পারবে। আপাতোতো তোমাদের একটা নাম দেওয়া প্রয়োজন।(আমি)
.
–তোমার বলতে সুবিধা হয় এরকম একটা নাম দাও আমাদের(ভ্যালিরা)
.
–ঠিক আছে। আজ থেকে তোমাদের তিনজনকে একত্রে আমি এক্সোভিলিরা বলবো। যেখানে তিনজনের নামের সঠিক ব্যবহার হয়েছে।(আমি)
.
–এখানে আমার নাম কোথায়?(ইগড্রাসিল)
.
–কেনো ভি দ্বারা তোমাকেই বোঝাতে যাচ্ছি।(আমি)
.
–আমার নাম ইগড্রাসিল। যেখানে কোনো ভি শব্দ নেই।(ইগড্রাসিল)
.
–ঔ হলো একটা। ধরে নাও ভি তোমারই নাম। ভ্যালিরা তুমি বলো নামটা কেমন হয়েছে?(আমি)
.
–অনেক সুন্দর নাম। আমি তো ভাবতেই অবাক হচ্ছি আমার নাম ইগোর পাশে।(ভ্যালি)
.
–ইগোহহ!(আমি অবাক হলাম)
.
–ভ্যালি তোমাকে কতবার বলেছি আমার ঔ নাম ব্যবহার না করতে।(ইগড্রাসিল)
.
–সরি, আসলে ভুলে যায়।(ভ্যালি)
।।।
।।।
দুজনের অনেক আলাপ আলোচনা শোনার পরে আমি চলে আমার জেট ক্ষমতার মাধ্যমে উড়ে আকাশে চলে আসলাম। অনেকটা উপরে চলে এসেছি, এখান থেকে নিচে আমাকে কেউ দেখবে না। আমি আমার গ্রাভিটি কনট্রোল করলাম। এবং নিজেকে জিরো গ্রাভিটিতে নিয়ে আসলাম। এখন হাওয়ায় ভাসতে লাগলাম। হাওয়ার উপরেই আমি জোরে দুটো স্লাইস দিলাম। এখন আমার মাথায় অন্য কোনো চিন্তা ছিলো না। শুধু আমি কোথায় যাবো, সেই চিন্তাই করছিলাম। আমার একটা পোর্টাল খুলেছে, আমার চিন্তা ইগড্রোলিয়াতেই ছিলো। তবে কোথায় যাবো সেই চিন্তা করতে পারি নি। আর আসলেই পোর্টাল এর ওপারে কোথায় পৌছাবে সেটাও জানি না। দেখা গেলো আমি সোজাসুজি রাজার সামনে গিয়ে বের হলাম। এরকম চান্সও হতে পারে। তাই আমি তলোয়ারটা আপাতোতো উধাও করে দিলাম। এবং নিজের এন্জেল ফর্মে চলে আসলাম। আপাতোতো ইগড্রোলিয়াতে সবাই এন্জেল এবং ডেভিল দেরকে অনেক ভয় পায়, তাই আমি একজন এন্জেল হয়ে সেখানে গেলে কিছু হবে না আমার মতে। চেহারা আর কয়জন আমার দেখেছে, আমি সব সময় মাস্কই ব্যবহার করেছি। মাস্কেই আমাকে প্যালেসের সবাই চিনে।
।।।
।।।
আমি পোর্টালে ঢুকতে যাবো ঠিক সেইসময় একটা সাদা দড়ি আমার পেটে আটকে গেলো। যেটা আমাকে নরতেই দিচ্ছে না। আমি হাতকে পেটের সাথেই পেটে দিয়েছে, যার কারনে নরতেও পারছি না। এদিকে আমার পোর্টালও বন্ধ হয়ে যাচ্ছে আস্তে আস্তে। এই ফর্মে আমি এক্সোভিলিরাকে ও ব্যবহার করতে পারবো না। কেনো যে এন্জেল ফর্মে যেতে গেলাম সেটাই বুঝতে পারছি না। যাইহোক পিছনে ফিরে দেখার চেষ্টা করলাম, যে কে আমাকে বাধার চেষ্টা করছে। পিছনে ফিরে অনেকটা উপরে লক্ষ করলাম এন্জেল রানী আফরিয়েল তার বড় চারটা ডানা মিলিয়ে উড়ছে, এবং সেই তার হাত থেকে একটা দড়ি দিয়ে আমাকে বেধে রেখেছে৷ এতো সুন্দরী রমনী দেখে এখন আর দড়ি থেকে ছুটতে মন চাচ্ছে না। বরং এই একই দড়িতে দুজনে বন্ধী থাকার ইচ্ছা হচ্ছে। আমার মানুষ সত্ত্বার চেতনার উপরে এখন রাগ হচ্ছে। এতো সুন্দরী একটা রানীকে সে বিয়ে না করে থাকতে পারে। আমার গ্রাভিটি কন্ট্রোলও আস্তে আস্তে শেষ হয়ে যাচ্ছে, যেটার কারনে আমি ঝুলতে লাগলাম দড়িতে। যেটার ফলে কষ্টকর হচ্ছে রানীকে দেখতে। দেখা যাক তার সাথে গল্প করতে পারি কিনা।
।।।।
।।।
।।
।
(((চলবে)))
।
।।
।।।
।।।।