মনশহরে তোমার নিমন্ত্রণ পর্ব-৩১+৩২

0
36

#মনশহরে_তোমার_নিমন্ত্রণ
#৩১তম_পর্ব

মাথাটা নুইয়ে টুপ করে ঐন্দ্রিলার ঠোঁটে একটা চুমু এঁকে বলল,
“যেহেতু তুই বউয়ের মত আচারণ করছিস, আমিও তাহলে বর বর আচরণ করি, কেমন?”

অভ্রর কথাটায় এক অদ্ভুত শিহরণ জাগলো মনে ঐন্দ্রিলার। রাগ হলো না, ক্ষোভ হলো না, বিরক্তি আসলো না। বরং লজ্জায় মাথা নুইয়ে ফেললো। চিবুক ঠেকে গেলো গলার কাছে। অভ্র তার মুখখানা হাতের আদলে নিলো। তুলে ধরলো নত মস্তক। চোখ রাখলো লাজুক নজরে। কোমল গালে বিচরণ রুক্ষ্ণ আঙ্গুলের। কিছুসময় স্তব্ধ দাঁড়িয়ে রইলো অভ্র। অন্তঃস্থলের জোর করে দমিয়ে রাখা পাশবিক প্রবৃত্তিগুলোর আক্রোশ অনুভব করলো। তার স্পর্শে মোমের মত গলে যাবে ঐন্দ্রিলা, এমনটাই তো কামনা ইচ্ছে ছিলো অভ্রর। নিঃশব্দে হাসলো অভ্র। মাথা ঠেকালো ঐন্দ্রিলার কাঁধে। খুব আস্তে বললো,
“তোর লজ্জা আমাকে ধ্বংস করে দিবে, বাবু”

ঐন্দ্রিলা উত্তর দিতে পারলো না। অভ্র তাকে নিজের বাহুডোরে আবদ্ধ করে রয়েছে। নাক ঠেকিয়ে রয়েছে তার গলঃদেশে। তার উত্তপ্ত নিঃশ্বাস চিরে যাচ্ছে ঐন্দ্রিলার কোমল চামড়া। শক্ত, সুঠাম বাহুডোরের আলিঙ্গনের উষ্ণতায় গলছে কঠিন হৃদয়। এই মানুষ তাকে ছাড়ার পাত্র নয়। বরং অদ্ভুত নেশাতুর চোখে সে তাকিয়ে আছে ঐন্দ্রিলার দিকে। বুক কাঁপছে ঐন্দ্রিলার। এই বাধন থেকে ছাড় পাবার একমাত্র উপায় অভ্রের মুডের মুড়িঘন্ট বানানো। ফলে ঐন্দ্রিলা মিনমিনিয়ে বললো,
“খিদে পেয়েছে”

সাথে সাথে মুখ তুললো অভ্র। চোখ ছোট ছোট করে বললো,
“বর রোমান্স করছে, আর তোর খিদে পেয়েছে?”
“রোমান্সে কি পেট ভরে?”

অভ্র ফিঁচেল হাসলো। কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিস করে বললো,
“ভরে, ট্রাই করবি? যদি সময় লাগবে এই ধর আট নয় মাস”

কথাটা শুনতেই কান গরম হয়ে গেলো ঐন্দ্রিলার। ঘুষি মেরে বসলো সুঠাম পেশীতে। কোপিত স্বরে বললো,
“অসভ্য”
“লাইসেন্স আছে”
“ছাড় আমাকে”

অভ্র ছেড়ে দিল বিনা বাক্যে। বাইকের চাবিটা পকেটে পুরে বললো,
“এই ছাড় কিন্তু সীমিত সময়ের জন্য”
“আমি লুজ ক্যারেক্টারদের সাথে কথা বলি না”
“অপবাদ দিবি না ঐন্দ্রিলা। আমি অনেক ভালো ছেলে”
“দেখেছি গত রাতে”
“কি দেখেছেন?”
“ওই যে তৃষার সাথে………”

বলতে যেয়েও থেমে গেলো ঐন্দ্রিলা। মুখখানা শক্ত হয়ে গেলো। নাক, ঠোঁট ফুলে আছে রাগে। অভ্র তার কোমড়খানা জড়িয়ে ধরল। কপালে উষ্ণ ঠোঁট ছুয়ে বললো,
“যদি আমার কিছু করার ইচ্ছে থাকতো আমি দেখিয়ে করতাম না। আমার মন, দেহ সব ভার্জিন। তোর কসম”
“ছিঃ নোংরা। কি ভাষা! মানুষ শুনলে কি বলবে?”
“বলবে বেচারা, বিবাহিত হয়েও কপালে আদর জুটলো না। বউয়ের আদরের অভাবে…”

ঐন্দ্রিলা হাত দিয়ে ঠোঁট চেপে ধরলো অভ্রর। চোখ রাঙ্গিয়ে বললো,
“আর কোনো কথা না। হুঁশ। আমার খিদে পেয়েছে। খেতে যাব”

অভ্রর চোখ হাসছে। মাথা নেড়ে সে সম্মতি জানালো। ঐন্দ্রিলা হাত সরিয়ে নিলো। অভ্র সেই সুযোগে টুপ করে আবার চুমু খেলো ঐন্দ্রিলার গালে। ঐন্দ্রিলা হাল ছেড়ে দিল। এই ছেলেটার সাথে সে কখনো পারবে না। সে কোনো না কোনোভাবে নিজের মন মর্জি চালাবেই। ঐন্দ্রিলার হাতখানা নিজের হাতের ফাঁকে গলিয়ে গাঢ় স্বরে বলল,
“চল, বউ”

****

বাহিরে বিনা নোটিশে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। তৃষা দোকানের বাহিরে দাঁড়িয়ে আছে। ব্যাংকে আজকে আর যাবে না। হাফ ডের ছুটি নেওয়া আছে। এখন বাসায় যাবে। কিন্তুর বর্ষার ধারে রিকশা মেলা ভার। ছাতাও নেই যে হেটে পাড়ি দিবে। ফলে এখানেই অবস্থান করতে হচ্ছে। বৃষ্টির ছিটে এসে লাগছে তার গায়ে। হঠাৎ খেয়াল করলো তার মাথায় ছাউনির উপস্থিতি। উপর মুখ তুললে ছাতি দেখতে পেলো। ফলে পাশ ফিরতেই দেখলো বিল্লাল একহাত দূরে তার মাথায় ছাতি ধরে আছে। সে ছাতির ভেতরে নেই। বৃষ্টির ছাটে ভিজলেও পকেটে হাত গুজে অন্যদিকে তাকিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। তৃষা মুচকি হাসলো। একটু দুষ্টুমি করলে কি মন্দ হবে? তাই খানিকটা সেই দিকে ঝুকে বললো,
“তুমি কি আবার চুমু খেতে চাও বিল্লাল?”

তৃষার কথাটা শুনতেই গতরাতের স্মৃতি হামলা করলো মস্তিষ্কে। মুখ, নাক, কান আবার লাল হয়ে গেলো বিল্লালের। রাগে গজগজ করতে করতে বললো,
“এমন অশ্লীল কথা বলবে না”
“বললে দোষ আর করলে দোষ নেই? রাতের বেলায় একটি মেয়ের ঠোঁটে চুমু খেয়ে পালিয়ে গেলে এখন আমার শ্লীলতা দেখাচ্ছো?”

বিল্লাল বেশ বিব্রত হলো। আমতা আমতা করে বললো,
“আমি মোটেই তোমাকে ইচ্ছে করে চুমু খাই নি”
“অনিচ্ছায় বুঝি মানুষ চুমু খায়?”
“সেটা একটা দূর্ঘটনা ছিলো”
“ওহ। তাই বুঝি?”

বিল্লালের মুখের অবস্থা দেখে মনে হলো এখনি লজ্জায় কেঁদে দিবে। বদরাগী, ক্ষ্যাপা, খিটখিটে, গোমড়োমুখো ছেলেটাকে এমন বিড়ালের বাচ্চার মতো অসহায়রুপে দেখবে কল্পনাতেও ভাবে নি। যে পুরুষ কখনো ভালোমুখে তার সাথে কথাও বলে নি সেই পুরুষ লজ্জায় চোখ মেলাতে পারছে না। তৃষার সাথে বিল্লালের সম্পর্ক সেই স্কুল থেকে খারাপ। তাদের সখ্যতা তো ছিলোই না বরং বিল্লাল সর্বদা শীতল চোখে তাকাতো তার দিকে। অদ্ভুত নীরব যুদ্ধ ঘোষণা করে। এর কারণ তৃষা আবিষ্কার করতে পারে নি। চায়ও নি। অথচ বিল্লালের সেই রুঢ় চরিত্র খষে পড়লো গতরাতের ঘটনায়।

রাত তখন দুটো ছুই ছুই। অভ্রর জন্য বাধ্য হয়ে তৃষাকে বাসা অবধি পৌছে দেবার দায়িত্ব ঘাড়ে নিতে হয়েছে বিল্লালের। মনে মনে হাজার অকথ্য গা’লি দিলেও রাগ কমছে না। তৃষার পাশ ধরে একটু দূরত্ব রেখে হাটছে সে। তৃষাও কিঞ্চিত বিরক্ত। দমবন্ধ লাগছে। বিল্লালের নীরব যুদ্ধ এখনো থামে নি। সে এখনো তার প্রতি একটা শত্রুতাপরায়ন দেওয়াল গড়ে রেখেছে। ফলে নীরবতা ভাঙ্গলো তৃষা ই,
“কি সমস্যা তোমার? আমি তোমার কোনো পাকা ধানে মই দিয়েছি বিল্লাল?”

তৃষার অকপট প্রশ্নে থতমত খেয়ে গেলো বিল্লাল। সাথে সাথেই প্রতিবাদ করে উঠলো,
“আমার কি সমস্যা হবে?”
“তাহলে এমন ভাব করছো কেনো যেনো আমি তোমার কিডনী খুলে নিয়েছি! আমাকে তুমি ঘৃণা করো কেনো এত?”
“আমি কখন তোমাকে ঘৃণা করলাম?
“ঘৃণা করো না?”

বিল্লাল কান চুলকাতে চুলকাতে বললো,
“কই না তো”
“আমার চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বলো’

ধমকে উঠলো তৃষা। বিল্লাল হতভম্বের মত চাইলো। হুট করেই অভ্রর উপর এতোসময়ের রাগটা বেড়ে তৃষার উপর বর্ষিত হলো। ক্ষিপ্র স্বরে বললো,
“তোমাকে এজন্যই আমি অপছন্দ করি। কিসের এতো ভাব তোমার? মনে হয় মিস ইউনিভার্স হয়ে বসে আছো। দেখতে আলুর ছোলকার মত”

বিল্লালের কথায় চোখ মুখ রক্তিম হয়ে গেলো তৃষার। “আলুর ছোলকা” বলে আজীবনে কেউ তাকে অপমান করে নি। এর মধ্যেই একটা বাইক পাশ দিয়ে যাচ্ছিলো তৃষার। তার ব্যাগের দিকে হাত বাড়াতেই বিল্লাল তৃষার হাত ধরে হ্যাচকা টান দিল। টানের তাল সামলাতে না পেরে হুমড়ি খেয়ে পড়লো সে বিল্লালের উপর। ব্যালান্স হারিয়ে দুজন পড়ে গেলো ফুটপাতের উপর। অসতর্কতায় ছুয়ে গেলো দুজনের ঠোঁট। এর মধ্যে বাশির শব্দ, সাইরেন বাজতে শুরু হলো। চোরের দল বাইক ছুটালো ফুল বেগে। ঘটনার আকস্মিকতায় দুজন বিমূঢ় হয়ে গেলো। বিল্লাল কোনোভাবে টেনে তুললো তৃষার। কান লাল হয়ে আছে তার। নারীর অধর ছোঁয়া এতো নরম হয় জানা ছিলো না তার। তোতলিয়ে বললো,
“আমি আসি। তোমার বাসা চলে এসেছে”

তৃষা উত্তর দিতে পারলো না। থমকে দাঁড়িয়ে ছিলো শুধু। আজ দোকানে আসার সময় হাজারো চিন্তা ছিলো তার। কিন্তু বিল্লালকে এমন খোঁচাতে পারবে ভাবে নি। তৃষা বিদ্রুপ টেনে বলল,
“পুরুষ এমন ই হয়। তাদের মন মর্জি উশুল হয়ে গেলেই সব দূর্ঘটনা বলে চালিয়ে দেয়। চুমু খাবার বেলায় ষোল আনা, কিন্তু দায়িত্বের বেলায় নেই”
“আমি কি বলেছি আমি দায়িত্ব নিবো না। তুমি চাইলে আমি দায়িত্ব নিতে রাজি”

তৃষা থমকে গেলো। স্তব্ধ চেয়ে রইলো। বিল্লালের এমন দৃঢ় কথা শুনবে অভাবনীয় ছিলো। বিল্লালের চোখ মুখ দেখে মনে হচ্ছে না সে মজা করছে। বৃষ্টি থেমে গেছে। অভ্র এবং ঐন্দ্রিলা বেরিয়ে আসলো। অভ্র তৃষাকে দেখে বললো,
“তুই যাস নি?”

তৃষা কিছু বললো না। সোজা একটা রিকশা ডেকে উঠে বলল। ঐন্দ্রিলা এবং অভ্র হতবাক চেয়ে থাকলো। দুজন তাকালো বিল্লালের দিকে। বিল্লালের চোখমুখের দশা সুবিধার নয়। কিছু জিজ্ঞেস করার সুযোগ পেলো না। বিল্লাল হনহন করে হাটা দিল।

*****

একটি পার্কে পাশাপাশি বসে রয়েছে আহাশ এবং পিউ। শরতের মেঘেদের কোনো ঠিকানা নেই। এই মুখভার তো এই খিলখিল করে হাসে। এই তো একটু আগে ঝুমবৃষ্টি হলো। মাটির ভেজা গন্ধ নাকে আসছে। অথচ এখনই সাদা তুলোর মত মেঘরাজী দলবেধে ঘুরে বেড়াচ্ছে। কি অদ্ভুত তাই না। এমন আকাশের দিকে তাকালে কবিতা লেখার ইচ্ছে হয়। আহাশের মনে হয় সেও হয়ত কোনো খাদি কাগজে বনলতাকে দিয়ে কবিতা লিখে ফেলত। তার বনলতা, তার পিউ। একবার পাশে তাকালো সে। পিউ বসে রয়েছে হাজারো দ্বিধা, জড়তা নিয়ে। হয়তো কথা গুছাচ্ছে। এই মেয়েটি কাউকে আঘাত করতে পারে না, স্বার্থপর হতে পারে না। তাই খুব সতর্কতার সাথে কথা সাজায় যেন কেউ কষ্ট না পায়। আহাশ খুব ভালো করে জানে সেটা। আচ্ছা, সে যদি একটু স্বার্থপর হয় তাহলে পিউ কি করবে? যদি জেদ দেখিয়ে বসে, “তুমি আমার হবে”— পিউ কি করবে? মনে মনে হাসে আহাশ। না সে এমন কুরুপ পিউকে দেখাতে পারবে না। মেয়েটি আঘাত পাবে। ভালোবাসা তো আঘাত দেওয়া নয়। ভালোবাসা শুধু আনন্দের কেনো হতে হবে, কিছু ভালোবাসা তো নীল বেদনার হয়। তাই তো সে সংগোপনে বলে, “তুমি আমার জীবনের সেই অজানা কবিতা, যার প্রতিটি শব্দে লুকিয়ে আছে এক অতল বেদনা”

পিউ তার কথা সাজিয়ে ফেলেছে। সন্তর্পনে সে বললো,
“আহাশ, আমি……”
“তোমাদের বিয়ে কবে পিউ আপু?”

পিউ চমকালো। একটু সামলে বলল,
“ঠিক হয় নি”
“আমি তোমার বিয়েতে থাকতে পারছি না। ক্ষমা করে দিও”
“কেনো?”
“প্রেমের প্রথম নিয়ম, প্রণয়িনীর বিয়েতে ঘুমের ঔষধ খেয়ে ঘুমাতে হয়। উঠতে হয় বিয়ে শেষে। যেন তাজা জখম না লাগে”

পিউ কথা হারিয়ে ফেললো। তেতো একটা অনুভূতি বুকের ভেতর ছেয়ে গেলো। আহাশ পা দুলিয়ে বললো,
“আমি আজ তোমাকে এখানে কেনো এনেছি জানো?”
“কেনো?”
“তোমার সাথে শেষবারের মতো সময় কাটাতে। পিউ আপু, তোমার প্রতি আমার প্রেমটা যেন সমুদ্রের ঢেউয়ের মতো—তার জোয়ার আসে, যায়, কিন্তু তীরে এসে পৌঁছানোর আগেই মিলিয়ে যায় অসীমের কোলে। আমি তোমার থেকে আমি কোন কৈফিয়ত চাই না। না তোমাকে অপরাধী করতে চাই। ভালোবাসা তো জোর করে হয় না। আমি তোমাকে ভালোবেসেছি সেটা আমার নিজস্ব ইচ্ছে। আমি তোমাকে চাপিয়ে দিয়ে পারবো না। আবার আমি এটাও চাই না, তুমি আমাকে সান্ত্বনা দাও। বা তোমাকে ভুলে যেতে বল। আমি পারবো না। ভালোবাসতে যখন পেরেছি, সেই আঘাত সইতেও পারব। আমি এখন বড় হয়ে গেছি। তাই আমাকে নিয়ে চিন্তা কর না। আমি চাই তুমি সুখী হও। ওই বোকা ব্যাটার সাথেই সুখী হও। তবে তোমার থেকে একটা প্রতিশ্রুতি চাই। কখনো যদি মনে হয় ওই ব্যাটা তোমার যোগ্য নয়, আমার কাছে চলে আসবে। ভেব না বদদোয়া দিচ্ছি। সেটা আমি পারবো না। অসম্ভব আমার জন্য তোমাকে বদ দোয়া দেওয়া। শুধু বলব, আমি তোমাকে ভালোবাসবো। যতদিন আমার মন ভালোবাসতে পারবে”

পিউ কাঁদছে। আহাশ আলতো করে তার অশ্রু মুছে দিল। কিছু গল্প অপূর্ণই ভালো। কিছু প্রেম অপূর্ণই ভালো। আহাশ হাসছে। ব্যাথা করছে বুকের বা পাশটা। তবুও সে হাসছে। কারণ তার প্রণয়িনীর চোখে অশ্রু, এই অশ্রু শুধু তার।

*******

খাওয়া দাওয়া শেষে নিজ ঘরে আসতেই চমকে গেলো ঐন্দ্রিলা। ঘরে আলো জ্বলছে না। সব আলো নিভানো। মোমবাতি জ্বলছে। সুগন্ধি মোমবাতি। এই সাথে ফুলের মিষ্টি গন্ধ। দরজা থেকে ফুলের পাপড়ি ছড়ানো। অভ্র এগুলো করেছে? ভেতরে প্রবেশ করতেই অভ্র দরজা আটকে ফেললো। পেছন থেকে জড়িয়ে ধরলো তাকে। তার স্পর্শে কেঁপে উঠলো ঐন্দ্রিলা। সেদিন দোকানের ঘটনার পর তাদের সম্পর্কটা অনেক সহজ হয়ে গেছে। কিন্তু এমন কিছু হবে এ যেন অকল্পনীয় ছিল। অভ্রের ঠোঁট স্পর্শ করলো ঐন্দ্রিলার কান। হালকা কামড় দিয়ে বললো,
“তোর বরের সারপ্রাইজ কেমন লাগলো বউ?”
“এগুলো কখন করেছিস?”
“যখন তুই আম্মার ঘরে ছিলি। আমি কিন্তু কথা রেখেছি। আমি তখনই তোর কাছে এসেছি যখন তুই চেয়েছিস। এবার কি তোর মনশহরের নিমন্ত্রণ পেতে পারি?”

ঐন্দ্রিলার হৃদয় স্পন্দিত হচ্ছে বারে বারে। আধো আধো আলোতে একরাশ লজ্জার ভিড়ে তাকালো সে অভ্রের গাঢ় নয়নে। দুজনের চোখে নিজেদের নতুনরুপে আবিষ্কার করলো যেনো তারা। মোমের হলদেটে আলোয় অভ্রকে স্বপ্নের পুরুষের মতো ঠেকলো ঐন্দ্রিলার কাছে। হৃদয় থমকে গেলো। মনে হলো “একটু প্রশ্রয় দিলে কি খুব ক্ষতি হবে? থমকে যাওয়া সম্পর্কটাকে সুযোগ দিলে খুব ক্ষতি হবে? ভাঙ্গা মন দিয়ে আরেকবার ভালোবাসলে কি খুব ক্ষতি হবে?” মস্তিষ্ক উত্তর দেবার সুযোগ পেলো না। পুরুষ তাকে কোলে তুলে নিলো। অবাধ্য চাহিদা আর নেশায় বুদ হওয়া চোখে তার দিকে চেয়ে রয়েছে সে। অভ্রর উষ্ণ হাতের স্পর্শে গললো ঐন্দ্রিলার হৃদয়। অভদ্র পুরুষ কানে ঠোঁট মিশিয়ে বলল,
“কথা দিচ্ছি, ব্যাথা দিবো না”……………

চলবে

#মনশহরে_তোমার_নিমন্ত্রণ
#৩২তম_পর্ব

[প্রাপ্তবয়স্ক এবং মুক্তমনাদের জন্য উন্মুক্ত]

“কথা দিচ্ছি, ব্যাথা দিবো না”

অভদ্র পুরুষের কথায় লজ্জার ভার বাড়লো। মুখখানা লুকিয়ে নিলো বলিষ্ঠ বুকে। চোখ তোলার সাহস হলো না। অভ্রর মুখে বিজয়ী হাসি।

বাহিরে তখন ভাদের লাজহীন বর্ষার। পাতার উপর উদাসীন কুম্ভরাজীর নৃত্য চলছে। ভিজছে তৃষ্ণার্ত ধরনী। ঘরের ভেতর আলো আঁধারীর খেলা। বারান্দার থাই গ্লাসে পানির রেখা জমছে। ভেতরের দেওয়ালে লিখিত হচ্ছে প্রেমের উপকথা। অভ্র তার স্ত্রীর পেলব শরীরখানা আলতো করে বিছানাতে শোয়ালো। ভাব এমন যেন খুব ভঙুর, অতি দূর্বল কোনো প্রাণ, একটু অবহেলায়ই ভেঙ্গে গুড়িয়ে যাবে। ঐন্দ্রিলার নত মস্তক দুহাতে তুললো সে। খুব সময় নিয়ে দেখলো তার হৃদয়রাজ্ঞী লজ্জার ভিড়ে তিরতির করে কাঁপছে চোখের পাতা, চিকন রক্তিম ঠোঁটজোড়া শিহরণ জাগাচ্ছে অন্তস্থলে। মস্তিষ্ক হয়তো সবুরের চাবিকাঠি হারিয়ে ফেললো। মনের অবাধ্য কামনায় বুদ হলো সংযমী পুরুষ। দখলে নিলো চিকন ওষ্ঠজোড়া। বাধা দিল না ঐন্দ্রিলা। বরং তার সাথে সাড়া দিল। মনের দ্বিধাগুলোকে একপাশে “টাইম প্লিজ” বলে প্রশ্রয় দিল তার অভদ্র, গোঁয়ার পুরুষকে। ঐন্দ্রিলার প্রশ্রয়ে আরো আগ্রাসী হয়ে উঠলো অভ্র। ঐন্দ্রিলার বুকের ওড়নাটা একটানে খুলে ছুড়ে ফেললো মাটিতে। অধরজোড়াকে মুক্তি দিয়ে একজন তাকালো ঐন্দ্রিলার কোমল মুখখানায়। তার ছলছল নয়ন দেখে হুট করেই ছ্যাৎ করে উঠলো অভ্রর ভেতরখানা। গভীর স্বরে শুধালো,
“তুই না চাইলে আমি এগোবো না”

অভ্রর এমন কথায় কাঁপা স্বরে ক্ষীণ গলায় ঐন্দ্রিলা শুধালো,
“তোকে বিশ্বাস করে ঠকে যাবো না তো?”

মোমের মৃদু হলদেটে আলোয় ঐন্দ্রিলার কান্নারত মুখখানা অভ্রের কাছে ঐশ্বরিক ঠেকলো। চোখের কোন থেকে গড়িয়ে পড়া অশ্রুগুলো যেনো মুক্তদানা। ঠোঁট ছোয়ালো সে সেই নেত্রপল্লবে। শুষে নিলো নোনা জল। গাঢ় স্বরে বললো,
“আজীবন তো বিশ্বাসের দুয়ারে ঠাঁই পেলাম না। একবার বিশ্বাস করেই দেখ”
“ঠকে গেলে?”

অভ্রর হাসির বিস্তৃত হলো। ফিসফিসিয়ে বললো,
“আমার গর্দান আর তোর হাত, সপে দিবো না হয়”

ঐন্দ্রিলার ঠোঁটে উন্মোচিত হলো নিষ্পাপ হাসি। “টাইম প্লিজ” বলা চিন্তার জোয়ারগুলো ভাটায় পরিণতি হলো। দুহাতে অভ্রর মুখাবয়ব খাতা আগলে ধরল। নিজ থেকে ওষ্ঠরেখায় নিজেকে সপে দিল ঐন্দ্রিলা। ঐন্দ্রিলার এমন কাজে হৃদস্পন্দন বেড়ে গেলো অভ্রর। নেশাগ্রস্থের মতো নিজের আধিপত্য জমালো সে। “এই নারী কেবল আমার” এই উক্তিটি বিস্তার করলো মন মস্তিষ্কে। একসময় ঠোঁট ছেড়ে নেমে গেলো গলঃদেশে। নিজের আধিপত্যের প্রমাণকে রক্তিম বর্ণে উজ্জীবিত করলো। ঘোরলাগা মাতালের মতো তার বিচরণ হলো ঐন্দ্রিলার দেহে। বিশাল দেহী মানুষটির ভারে নিষ্পেষিত হলো ক্ষীন নারীদেহ। জলন্ত অগ্নির তাপে গলন্ত মোমের মত মিশে রইলো ঐন্দ্রিলা। সেই সাথে প্রারম্ভ হলো এক নতুন অধ্যায়। বাহিরের ঝড়ো হাওয়া, বর্ষানৃত্য, বজ্রপাতের মাঝে মিলে গেলো কিছু সুখময় আর্তনাদের গল্প।

আদিমখেলা যখন শেষ হলো তখন ঐন্দ্রিলার ক্লান্ত শরীরটাকে আগলে বুকের উপর নিয়ে শুয়ে রইলো অভ্র। ঐন্দ্রিলা তখন ঘুম। তার ভারী নিঃশ্বাস আছড়ে পড়ছে নগ্ন বুকে। লম্বার চুলের মাঝে বিশাল হাতখানা আস্তে আস্তে বিলি কাটতে লাগলো অভ্রর। কপালে চুম্বন এঁকে গাঢ় স্বরে বললো,
“আমার থেকে তোর মুক্তি নেই, ঐন্দ্রিলা। একবার যেহেতু মনশহরে নিমন্ত্রণ দিয়েছিস আর কোথাও যাচ্ছি না আমি। এখন থেকে তুই পুরোদস্তর আমার”

*****

ঐন্দ্রিলার ঘুম ভাঙলো কাকডাকা ভোরে। অনিয়মিত বর্ষণ থেমেছে শেষরাতে। নির্মল বর্ষায় প্রকৃতি ধুয়ে সতেজরুপে হাসছে। মাথার কাছের জানালা দিয়ে প্রবেশ করছে শীতল হাওয়া। সেই সাথে মেঝেতে লুটোপুটি খাচ্ছে সোনারোদ। মোমগুলো গলে নিজে নিজেই নিভে গেছে। অবিন্যস্ত, বিশৃঙ্খল হয়ে স্তুপ আকারে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে গোলাপের পাঁপড়ি। অভ্র তখন তার দেহের সমস্ত ভার নিয়ে গভীর ঘুমে লিপ্ত। ঐন্দ্রিলা চোখ মেলেই নিজের একান্ত পুরুষটিকে দেখলো। রুক্ষ্ণ, বদরাগী, অভদ্র পুরুষটিকে কি শান্ত, সুপুরুষ লাগছে! ঘুমিয়ে থাকলেই বুঝি এই মানুষটিকে এতো ভালো লাগে? ঐন্দ্রিলা অনুভব করলো অভ্রর রুক্ষ্ণ চেহারার মাঝে কোথায় যেন সুপ্ত মায়া আছে। সে কি এই পুরুষের প্রেমে পড়ে যাচ্ছে? হয়তো যাচ্ছে, তাইতো এতো বদগুনের সমারহের মাঝেও এক অদ্ভুত আকর্ষণ খুঁজে পাচ্ছে। ঐন্দ্রিলা হাতখানা আলতো করে ছুয়ে দিল ঘুমন্ত মুখখানা। খাড়া নাক, নিকোটিনে পোড়া ঠোঁট, খসখসে অবিন্যস্ত দাড়ি, সব কিছুতেই যেন কাব্যিক মায়া। মুচকি হাসলো সে। অস্থিমজ্জায় আগুন জ্বালানো পুরুষের প্রেমে পড়া মোটেই ভালো কোনো কথা নয়। বরং তা স্বাস্থ্যের পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকর কিছু। তবুও প্রেমে পড়তে ভালো লাগছে। ভগ্ন, একাকী হৃদয়টা আরোও একবার জ্বলন্ত অগ্নিতে নিজেকে সপে দিতে চাইছে। হয়তো বিয়ের বন্ধনটাই এমন নির্মল। চিরশত্রুর প্রতিও মায়া জন্মায়, হৃদয় দূর্বল হয়।

ঐন্দ্রিলা খুব সাবধানে সরিয়ে দিল অভ্রকে। বিয়ের তো মাস দেড়েক হয়ে যাচ্ছে। এখন আর এই নব্বই কেজি ওজনের মানুষটিকে ভারী লাগে না। ঐন্দ্রিলা বিছানা ছাড়লো মিষ্টি এক ব্যাথা নিয়ে। বাথরুমের আয়নায় নিজেকে দেখলো। সারা শরীরে অভ্রর আধিপত্যের চিহ্ন। মন্দ লাগছে না। এই অনুভূতিটা নতুন কিন্তু বেশ মিষ্টি।

*****

নিজ হাতে চা বানিয়ে আনলো ঐন্দ্রিলা। অভ্র এবং নিজের জন্য বানালো। ভাগ্যিস শ্বাশুড়িমার দর্শন হয় নি। আহাশ জার্মানী চলে যাওয়াতে মহিলা কিছুটা আবেগপ্রবণ হয়ে আছেন। হয়তো রাতে ঘুমানও নি। এতে ভালোই হয়েছে। হয়তো সকাল সকাল ভেজা চুলে শ্বাশুড়ির সামনে ঘুরতে লজ্জা লাগতো ঐন্দ্রিলার। চা বানিয়ে ঘরে গিয়ে দেখলো ফাঁটা নোট এখনো ঘুম। ফলে দুষ্টু একটা বুদ্ধি মাথায় খেললো ঐন্দ্রিলার। আস্তে করে অভ্রর হাতটা হাতে দিল। তারপর কনিষ্ঠ আঙুল চুবিয়ে দিল গরম চায়ে। সাথে সাথে গগনবিদারী চিৎকার দিয়ে উঠে পড়লো অভ্র। চোখে মুখে তীব্র আতংক। ব্যাথার ছাপ মুখমন্ডলে। হাঁপাচ্ছে সে। বিমূঢ় চোখে তাকিয়ে রইলো ঐন্দ্রিলার দিকে। ঐন্দ্রিলা হাসছে। প্রাণচ্ছ্বল হাসি। অভ্রর চোখ সরু হলো। আঙ্গুলখানা মুখের ভেতর চেপে ধরলো। জ্বলছে, লাল হয়ে গেছে রীতিমত। ঐন্দ্রিলা সেই চায়ের কাপটা রেখে নিজেরটা এগিয়ে দিল। নির্ভার, নিরোপরাধ স্বরে বলল,
“চাখানা খেয়ে উদ্ধার কর স্বামী মহোদয়”

অভ্র চায়ে চুমুক দিল। ঐন্দ্রিলা তার চুলের গামছাটা নেড়ে দিল। ভেজা চুল ইচ্ছে করে ঝাড়া দিল অভ্রর দিকে। ফলে পানির ছিটায় ভিজে গেলো সে। সকাল থেকে বউয়ের এমন যন্ত্রণার উদ্দেশ্য অভ্রর হাড় জ্বালানো। অভ্র রেগে গেলেই সে বাতিল খেলা থেকে। অভ্র তাই নির্লিপ্তভাবে চা খেলো। এমন ভাব যেনো প্রশান্ত মহাসাগরের স্রোত তাকে ভাসিয়ে দিলেও তার কিছুই যায় আসে না। ফলে আয়না থেকে কিড়মিড় করে তাকালো ঐন্দ্রিলা। মেকি রাগী স্বরে বললো,
“লজ্জা করে না তোর? কি অবস্থা করেছিস আমার”
“আমি কি করেছি?”

অবুঝ বালকের মতো প্রশ্ন। ঐন্দ্রিলা গলা উচু করে বললো,
“এই সব নিয়ে সবার সামনে যাব কি করে আমি? কলেজ কিভাবে যাব। দেখলে তো মনে হচ্ছ আমার বসন্ত হয়েছে”
“আহা হা, আমার নেকুপিসি”

বলেই নিজের পিঠ দেখিয়ে বললো,
“আমার পিঠের উপর তুমি যে নখের আলপনা করেছো আমি কিছু বলেছি? দেখলে মনে হচ্ছে কোনো বিড়াল খামছে দিয়েছে”

অভ্রর কথা শুনে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি ছুড়লো ঐন্দ্রিলা। অভ্র মোটেই পাত্তা দিল না। অর্ধেক চা খেয়ে বললো,
“নাও বউ, তোমার আধা চা। প্রেম বাড়বে”

ঐন্দ্রিলা উঠে চা নেবার জন্য হাত বাড়াতে গেলেই খপ করে হাতটা ধরে ফেললো অভ্র। চায়ের কাপখানা সাইডে রেখে হ্যাচকা টান দিল সে। ফলে হুড়মুড়িয়ে ঐন্দ্রিলা বসে পড়লো তার কোলে। চিকন কোমড়খানা শক্ত করে জড়িয়ে ধরে থুতনি ঠেকালো ঐন্দ্রিলার কাঁধে। মৃদু স্বরে বলল,
“সরি বউ। আর হবে না। এবারের মত ক্ষমা করে দিও”
“ন্যাকা”
“সত্যি বলছি। আর কষ্ট দিব না”

কথাটা শুনতেই কান গরম হয়ে গেলো। দুহাতে মুখখানা লুকালো ঐন্দ্রিলা। অভ্র স্বল্প হেসে বলল,
“তোর এই লজ্জা আমাকে শেষ করে দিবে, ঐন্দ্রিলা। তোর ধারণাও নেই, তোর এই লাজুক হাসিখানা আমাকে মাতাল করে দেয়”

ঐন্দ্রিলা উত্তর দিতে পারলো না। এতো লজ্জা শুধু এই অভদ্র ছেলেটার জন্য মানা যায়?

*****

পিউয়ের মার সামনে বসে রয়েছেন সালাম সাহেব এবং সাবেরা। নীলাদ্রি অন্য একটি সোফায় বসা। সকাল সকাল সারাবাড়ি মাথায় করে ঘোষণা দিয়েছে আজ সে মেয়ে দেখতে যাবে। কারণ তার হবু স্ত্রী সবুজ পতাকা দেখিয়েছে। মেয়ে কে সেটা না বলেই একপ্রকার বগলদাবা করে নিয়ে এসেছে বাবা মাকে। এখন পিউদের বাসার সামনে আসতেই তারা বুঝতে পারলো মেয়েটা কে। নীলাদ্রি বলছে সে নাকি পিউকে ভালোবাসে না। অথচ বিয়ে সে পিউকেই করবে। সালাম সাহেব আর সাবেরা একপ্রকার কিংকর্তব্যবিমূঢ়ের মতো তাকিয়ে আছেন। পিউয়ের মাও অপ্রস্তুত এমন আচমকা আগমনে। পিউয়ের চক্ষুচরাগ গাছ। সে শুধু সকালে একটা ম্যাসেজ করেছে,
“আপনাকে আমি বিয়ে করবো”

কিন্তু এই ম্যাসেজের উত্তরে এই পাগল মা-বাবা সহ বাসায় আসবে সেটা কে জানতো? পিউ বাসায় কাউকে জানায় অবধি নেই। পিউয়ের মা কিঞ্চিত বিব্রত গলায় শুধালো,
“আপা হঠাৎ আমাদের বাসায়? কোনো সমস্যা?”

সাবেরা দীর্ঘশ্বাস গোপন করলো। মস্তিষ্কে কথা সাজালো। কিন্তু বলার সুযোগ হলো না। এর পূর্বেই নীলাদ্রি বলে উঠলো,
“আন্টি, আমরা পিউয়ের সাথে আমার বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে এসেছি”………………

চলবে