মম হৃদয় বিহারিনী পর্ব-১৯

0
41

#মম_হৃদয়_বিহারিনী
#ঐশী_রানী_রক্তিমা
১৯.
ভোররাতে শহরে এসে থামলো আমাদের ট্রেন।ধ্রুব একহাতে ব্যাগ ও আরেকহাতে আমার হাতটা মুঠোয় নিয়ে ট্রেন থেকে নামলেন।পরিচিত জায়গায় বহুদিন পর পা পরলো আমার।অদ্ভুত এক শিহরণ বয়ে গেল আমার কায়াজুড়ে।ধ্রুব আমাকে নিয়ে একটা গাড়ি ভাড়া করে চললেন আমাদের বাড়ির উদ্দেশ্য।এটা অবশ্য আমি বাড়ির প্রায় কাছাকাছি এসে বুঝেছি।কেননা আমার ধারণা ছিল ধ্রুব আমাকে নিয়ে প্রথমেই হয়ত অন্যত্র অর্থাৎ একটা বাসায় উঠবেন।যেখানে আমি আর উনি থাকবো।কিন্তু অপ্রত্যাশিত ভাবে বাড়ির পথে গাড়ি যেতে দেখেই বেশ খুশি হয়ে উঠলাম।বিয়ের পর এই প্রথম বাড়িতে যাচ্ছি আমি।ভাবতে ভাবতেই হৃদয় পুলকিত হয়ে উঠলো আমার।মৃদু হাসিও ফুটে উঠলো আমার ওষ্ঠকোণে।ধ্রুব সেটা লক্ষ্য করে নিঃশব্দ হাসলেন।আমি ফিরে তাকাতেই হাস্যজ্জ্বল ধ্রুব ভেসে উঠলো অক্ষিপটে।আমি ওনার দিকে তাকিয়ে মুখ ফিরিয়ে নিলাম।আমার ঠোঁটে তখন বিশাল বড় হাসির রেখা।

মিনিট দশেক পরে গাড়ি থামলো আমাদের বাড়ির সামনে।ধ্রুব ভাড়া মিটিয়ে গাড়িটা বিদেয় করলেন।আমি গেইটের সামনে স্তব্ধ হয়ে দাড়িয়ে রইলাম।আশ্চর্যজনকভাবে আমি মৃদু কাঁপছিলাম আমি।আমার শৈশব,কৈশোর আমার চোখের সামনে ভেসে উঠলো।প্রথমবারের ন্যায় এই আবাসস্থল ছেড়ে এতদিন অবধি দুরে কোথায় থাকলাম আমি।দুমাস সময় তো কম নয়।আমি গেট ঠেলে ভেতরে প্রবেশ করলাম।স্নিগ্ধ ভোরে পায়ের নুপুরের মৃদু স্বর কোলাহল তুললো।আমি বাড়ির উঠোনটায় চোখ বুলিয়ে দেখলাম।এই সেই জায়গা!নির্বানী রায় থেকে মিসেস ধ্রুব দেবনাথ হয়ে উঠার স্থান।সাধাসিধে এক তরুনী থেকে জমিদার বাড়ির মারপ্যাচে মিশে যাওয়ার সাক্ষী এই স্থান।আমি বাড়ির উঠোনটা থেকে দৃষ্টি সরিয়ে সেমিপাকা ঘরটার দিকে তাকালাম।ইদের গায়ে হালকা শ্যাওলা পরা বাড়িটার নাকি এখন অতিথি আমি!বড়ই বিচিত্র বাক্য!তবুও যে সত্য।

ভোরের এই সময়টায় বাড়ির কেউ না উঠলেও মা উঠেন।এখন তো আরো একটু বেলা হতে শুরু করেছে।একটু একটু করে বেড়েছে আলো,কেটেছে আঁধার।মা ব্রাহ্মমুহুর্তে স্নান ঘরে পুজো-অর্চনা করেন।আজও তার ব্যতিক্রম হয়নি।বাড়ির ডানদিকের উঠোনে তাকাতেই মায়ের দর্শন পেলাম।তুলশি তলায় জল দিচ্ছেন উনি।আমি মৃদু স্বরে ডেকে উঠলাম,

“মা!”

চমকে ফিরে তাকালেন মা।এত সকালে অপ্রত্যাশিতভাবে আমাকে দেখে যে অনেকটাই চমকে গিয়েছেন তার বোঝায় গেল।বহুদিন পরে মাকে দেখে আবেগপ্রবণ হয়ে পরলাম আমি।চোখের কোণে অশ্রু জমতে শুরু করলো।যখন দৃষ্টি প্রায় ঘোলা হওয়ার পথে মা এগিয়ে এলেন আমার দিকে।চোখের দৃষ্টি সম্পূর্ণ ঘোলা হয়ে যাওয়ার পূর্বে খেয়াল করলাম।মায়ের চোখে জল চিকচিক করছে!

আমি মায়ের কাছে গিয়ে জড়িয়ে ধরলাম ওনাকে।ধ্রুব মাকে প্রণাম করার পর আমাদের নিয়ে বাড়িতে ঢুকলেন।বাবা,দাদা তখনো ঘুমে।মা ডেকে নিয়ে আসলেন ওনাদের।এত ভোরে আমাদের উপস্থিতি অনেকটাই অপ্রত্যাশিত থাকায় অবাক হয়ে গেলেন দুজনেই।ধ্রুব ও আমি পরপর বাবা ও দাদাকে প্রণাম করে দাঁড়ালাম।

সকালের হালকা নাস্তা করে আমার জিনিসপত্র রেখে মেসে ফেরার জন্য প্রস্তুত হলেন।জানালেন একটা ঘর ভাড়া করে নিতে আসবেন আমাকে।আমার মন খারাপ হলেও কিছু বললাম না।চুপচাপ ওনাকে বিদায় জানালাম।ওনাকে এগিয়ে দিতে গেটের কাছটায় এসে দাড়ালাম আমি।উনি বেরিয়ে গেলেন কাঁধে ব্যাগ নিয়ে।আমি উঠোনেই গেটের কাছটায় ঠাঁই দাড়িয়ে রইলাম।মা বাবা ভেতরে গেলেও আমি বিষন্ন মনে দাঁড়িয়ে রইলাম।আচমকা গেট ঢেলে ফের ভেতরে আসলেন ধ্রুব।আমি ওনাকে দেখে চমকে উঠলাম।কেননা এতক্ষণে পাঁচ মিনিটের পথ পাড়ি দেওয়ার কথা।ধ্রুব আচমকাই উপস্থিত হয়ে আচমকাই আমার কপালে ও গালে চুম্বন করলেন।সবটাই ঘটলো খুব দ্রুত।আমি স্তব্ধ হয়ে দাড়িয়ে রইলাম।ধ্রুব আমার এরুপ অবস্থা দেখে বলে উঠলেন,

“আসি!দ্রুত ফিরবো।”

তারপর চলে গেলেন ধ্রুব।আমি লজ্জা পেলাম।লাল হয়ে আসা শ্যামলা গাল নিয়ে ফিরে এলাম ঘরে।
.
দুইদিন পর ধ্রুবের পা পরলো আমাদের বাড়িতে।এ দুইদিন আমি চাতকের ন্যায় অপেক্ষায় ছিলাম ওনার।বাড়ির উঠোনে এসে বসা কয়েকটা পায়রাকে আমি তখন দানা খাওয়াচ্ছিলাম।হঠাৎ গেট খুলে একটা প্যান্ট পরুয়া পা দৃষ্টিতে ভাসলো।আমি চট জলদি তাকালাম।দৃষ্টিতে ভাসলো আকাশি রাঙা শার্ট পরিহিত বহুকাঙ্ক্ষিত দীর্ঘদেহী যুবকের অবয়ব।আমি চমকে উঠলাম খানিকটা।সেই সাথে ভেতরে ভেতরে খুশিও হলাম।আমাকে দেখেই ধ্রুব মিষ্টি একটা হাসি উপহার দিলাম।আমি একপ্রকার দৌড়ে এসে দাড়ালাম ওনার নিকটে।একটা গাঢ় শ্বাস ফেলে উনি বললেন,

“নিয়ে যেতে এলাম তোমায়।”

সময়টা ছিল দুপুরের পর মুহুর্ত।অসময়ে এসে পরায় ধ্রুবকে শুধু চা-নাস্তায় দেওয়া হলো।উনি সেটা সামান্য মাত্রায় খেয়ে নিয়ে আমাকে বললেন ব্যাগ গোছাতে।বুঝলাম ওনার বেশ তাড়া।মা অবশ্য জোরাজুরি করেছিল রাতের খাবার খেয়ে যেতে তবে উনি নারাজ।বললেন অন্য সময় আসবেন।

আমাকে নিয়ে আমাদের বাড়ি থেকে বেরোতে বেরোতে প্রায় বিকেল হয়ে এলো।আমাদের বাড়ি থেকে সামান্য এগিয়ে গেলেই গাড়ি পাওয়া যায়।ধ্রুব একটা রিকশা থামিয়ে রেখে আমাকে ডাকতে এলেন।কিন্তু আমাকে দেখে একটু চমকালেন বোধহয়।আমি ওনার দিকে তাকিয়ে ঠোঁট কামড়ে ওনার অভিব্যাক্তি বোঝার চেষ্টা চালালাম।

পরনে আকাশি রঙের শাড়ি আমার।তাও আবার কুঁচি দিৈ পরেছি।মাথার দীর্ঘ চুল বেঁধে রেখেছি খোঁপা করে।কপালে ওনার দেওয়া লাল টিপ।চোখে সামান্য কাজল!আর কানে ছোট একটা সোনার ঝুমকো।উনি ধীরে ধীরে এগিয়ে এসে দাড়ালেন আমার সামনে।আমার ঘরটায় এখন কেবল আমি আর উনি।বাবা স্কুল থেকে এখনো ফেরেননি আর দাদা বোধহয় কোথাও গিয়েছেন।ধ্রুব প্রচন্ড ধীরে পায়ে হেঁটে এসে দাড়িয়েছেন আমার সামনে।উনি সুক্ষ ভ্রু কুঁচকাইতেই আমি চটজলদি বলে উঠলাম,

“এমনটা ভাববেন না কাউকে অনুকরণ করে এমন সেজেছি।এই সাজ আমার নিজের ইচ্ছেতে,নিজের জন্য!”

কথাটা ওনার কর্ণগোচর হতেই আমার মাথায় আলতো করো মারলেন উনি।আমি সুক্ষ আর্তনাদ করে উঠলাম।উনি আমার গুছিয়ে রাখা ব্যাগটা নিয়ে বেরিয়ে যেতে যেতে শান্ত স্বরে বললেন,

“জলদি বাইরে এসো।”

আমি পেছন পেছনই ছুটলাম।কাজল ঘেরা আঁখিতে খানিক রাগ নিয়ে তাকালাম আমি।এভাবে বলাতে মারতে হলো?

রিক্সায় চড়ে বসতেই সেটা ধ্রুবর বলা ঠিকানার উদ্দেশ্যে চলতে লাগলো।গন্তব্য কোথায়,আমার অজানা।পাশে বসা মানুষটাই আমার গন্তব্য।আমার মন যেন খুশিতে ভরে উঠলো।উনি চলতি পথেই বললেন,

“ঘরটা ছোট।এডজাস্ট করে নিও একটু।”

“আমাকে দেখে বুঝি মনে হয় আমার জন্য বিশাল কামরা প্রয়োজন?”

তখনকার করা হালকা রাগ আর একটু অভিমান মিশিয়ে বলে উঠলাম কথাটা আমি।ধ্রুব ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে দেখলেন।এটাই হয়ত বোঝালেন আমি কেন রাগলাম।

আচমকা আমাকে নিজের দিকে টেনে নিলেন ধ্রুব।চমকে উঠে ওনার পানে তাকালাম আমি।ঠিক ওনার ওই গভীর চোখে।উনি আমার দিকেই তাকিয়ে।গভীর ওই চোখজোড়ার গাঢ় কৃষ্ণবর্ণ মনিতে তাকিয়ে ঢোক গিললাম আমি।তারপর দৃষ্টি নত করতেই ধ্রুবর ফিসফিসয়ে বলা কথাটা কানে বাজলো,

“চোখে কাজল দেওয়ার প্রয়োজন ছিল না।ওদুটো এমনিতেই প্রাণঘাতী!”

আমি চমকে উঠলাম।সরে আসার প্রচেষ্টা চালাতেই হাতের বাঁধন ঢিলে করে দিলেন উনি।আমি একটু চেপে বসলাম।হাতটা বুকে নিয়ে সেটার কৈফিয়ত শুনতে লাগলাম।প্রচন্ড গতিতে হৃদপিণ্ডটা সংকোচন-প্রসারণ চালিয়ে বলে উঠলো,

“এত জ্বালা তার সহ্য হয় না।”

মিনিট বিশেক পরে একটা দোতলা অট্টালিকার সামনে এসে থামালো রিক্সা।আমি হালকা হলুদ রাঙা অট্টালিকার থেকে দৃষ্টি সরিয়ে ধ্রুবর পানে তাকালাম।ৎনি ভাড়া মিটিয়ে আমার ব্যাগটা নিয়ে আমাকে নামতে ইশারা করলেন।আমি রিক্সা থেকে নামতেই ধ্রুব আমার হাতটা ধরে বাড়ির গেট পেরিয়ে ভেতরে ঢুকে পরলেন।
দোতলায় এসে একটা ঘরে দরজা খুললেন উনি।তারপর আমাকে আগে ভেতরে ঢুকতে বলে উনি পেছন পেছন এলেন।বললেন,

“দেখো তোমার সংসার।”

আমি এই কথায় মনে মনে খুশি হলাম।চোখ বুলিয়ে দেখতে লাগলাম তিন কামরার ঘরটা।একটা শোয়ার ঘর,বসার ঘর আর রান্নাঘরের সমন্বয়ে আমাদের সংসার।আগে থেকেই খাট বিছানো ছিল।একটা আলমারি,পড়ার টেবিল,বসার ঘরে বেতের আসবাব আর রান্নাঘরে সব প্রয়োজনীয় জিনিসপাতি।একেবারে সাজানো গুছানো একটা সংসার।
আমি পেছন ফিরে ধ্রুবর দিকে তাকিয়ে বলে উঠলাম,

“আমার বেশ পছন্দ হয়েছে।”

ধ্রুব মুচকি হেসে উঠলেন।ওনার দাঁত তাতে দৃশ্যমান হলো একটু।বললেন,

“কৃতার্থ হলাম।”

সন্ধ্যায় রান্না বসালাম আমি।বহুদিন পর চুলোর পারে আসা হলো।চুলোর আগুনের তাপ পোড়া রঙের দেহে লাগে না বহুদিন।কিন্তু আমার ভেতর এক অজানা সুখের ছড়াছড়ি তখন।ধ্রুবর সংসার,পুরো ধ্রুবর খেয়াল রাখা,ওনার পাশে সবসময় পাশে থাকা।ইশ!ভাবতেই তো সুখ।

ধ্রুব বাজার করেই আমাকে নিয়ে আসতে গিয়েছিলেন।আমি রান্না ঘরে বসে বসে ভাবতে লাগলাম এসব।ওইদিন ধ্রুবর প্রেমের স্বীকারোক্তি।আমাকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরা!সব যেন তরতাজা।কিছু মুহুর্ত আগেরই স্মৃতি!
আমি ভাবতে ভাবতে লজ্জায় মুখ লুকালাম!
হঠাৎ বজ্রপাতের শব্দে ধ্যান ভাঙলো আমার।রান্নাঘরের জানালা গলে বাইরের অন্ধকার অম্বরে তাকালাম।তখনই ফের বিদুৎ চমকে উঠে।তারপর স্বশব্দে মেঘের গর্জন ভেসে আসলো।হঠাৎ খেয়াল আসলো ছাদে ধ্রুবর একটা শার্ট শুকাতে দেওয়া হয়েছে বিকালে।আকস্মিক হাত থেকে তরল খাবার ওনার শার্টে পরে যাওয়ায় সেটা ধুয়ে শুকাতে দেওয়া হয়েছিল।আর আনতেই ভুলে গেছি আমি!ভগবান!

ভাত রান্না শেষ।আমি সেটা নামিয়ে রেখে শোয়ার ঘরে উঁকি মেরে দেখলাম ধ্রুব পড়ছেন। আমি তাই বিরক্ত না করে একা একটা ছাদে যাওয়ার সিন্ধান্ত নিলাম।যথারীতি ছাঁদে পৌছালাম আমি।

আকাশে তখন বিদ্যুৎ চমকানো আর মেঘের গর্জনের আওয়াজ।আমি ধ্রুবর শার্ট নিয়ে সেই না কাঁধে ঝুলিয়েছি ওমনি অসংখ্য বারিধারা পরতে লাগলো আমার কায়াজুড়ে।এবছর প্রথম আমার গায়ে বৃষ্টির ফোঁটা বর্ষিত হলো।আমি খুশিতে হেসে উঠলাম নিঃশব্দে।দুহাত মেলে সারা অঙ্গে পরতে থাকা বৃষ্টির ফোঁটা আনন্দে গ্রহণ করতে লাগলাম।সময় জ্ঞান হারিয়ে আবছা আলোকিত ছাঁদে বৃষ্টি বিলাসো মেতে উঠলাম বৃষ্টিপ্রিয়া আমি।পরনের শাড়ি ভিজে চুপচুপে হয়ে লেগে আছে গায়ের সাথে।পেটের কাছটার শাড়ি সরে গেলো কখন টেরই পেলাম না।পবনের তোর বাড়ছে ক্রমশ!সেই সাথে বারিধারাও।

আমি আনন্দে বৃষ্টি নিয়ে খেলা করতে লাগলাম।আমার কাঁধে থাকা ধ্রুবর শার্টটা তখন আমার হাতের মুঠোয়।হঠাৎ আমার দৃষ্টি আটকালো সিঁড়ির দিকে।ধ্রুব দুহাতে বুকে গুঁজে তাকিয়ে আছেন আমার দিকে।আবছা আলোয় ওনার মুখের অভিব্যাক্তি বোঝা গেলো না।তবে আমি থমকে দাড়ালাম।ভেজা ঢোক গিলে দাড়িয়ে রইলাম।উনি ধীর পায়ে এগিয়ে আসতে লাগলেন আমার দিকে।পরনের শুভ্র শার্ট ভিজে দেহের কাঠামো ক্রমশ আমার সামনে ভেসে উঠলো।যত নিকটে আসছেন তত বুঝতে পারলাম ওনার মুখশ্রী একটু বেশিই গম্ভীর দেখাচ্ছে।আমি করুন দৃষ্টিতে তাকালাম ওনার।উনি এসে সোজা দাড়লেন আমার সামনে।ওনার রেশমি চুল তখন ভিজে কপালের কাছে পরে আছে।আমি আবারও একটা ঢোক গিলে তাকালাম ওনার দিকে।

আচনকা আমাকে প্রচন্ড বেগে টান দিয়ে ওনার সাথে মিশিয়ে নিলেন উনি।আমি চোখ খিঁচে পরলাম ওনার বুকের উপরে।পেটের কাছটায় তখন ওনার গাঢ় স্পর্শ,যা ক্রমশ গাঢ় হয়ে আমার শ্বাস রোধ করার প্রয়াস করছিলো।হঠাৎ কানের কাছটায় ওনার উষ্ণ শ্বাস অনুভব করলাম আমি।বৃষ্টির পানির শীতলতায় নাকি ওনার সঙ্গ,কিসের দরুন কেঁপে উঠলাম আমি।ধ্রুব শ্বাস ফেলে গাঢ় বলে উঠলেন,

“আমি বেসামাল হয়ে গেলে তোমার পক্ষে সামলানো কঠিন হয়ে পরবে নির্বানী।”

ওনার কথার তোরে বুকের কাছটার শার্ট আঁকড়ে ধরলাম আমি।ক্রমশ আমার শ্বাস গাঢ় হতে লাগলো।ধ্রুব ফের বলে উঠলেন,

“খুব বেশি বেসামাল হলে কি দোষ হবে?হলাম না হয় একটু দোষী!এই দোষ তোমার।সাজা তোমার প্রাপ্য!”

চলবে….