মায়াবতীর ইচ্ছা পর্ব-১৬+১৭

0
7

#মায়াবতীর_ইচ্ছা
#পর্ব_১৬
#ইশরাত_জাহান
🦋
সবাই মিলে পোড়ানো মাছ খেয়ে নেয় তারপর ঘুমানোর প্রিপারেশন করবে। কাল শেষ দিন চট্টগ্রামে।পরের দিনই চলে যাবে ঢাকা।যে যে যার যার তাবুর দিকে চলে যায়।মায়া তাবুর চেইন খুলতেই ওখানে কিছু একটা নড়ে ওঠে।রাজ মায়ার পিছনেই দাড়িয়ে আছে।মায়া পকেট থেকে ফোন বের করে লাইট জ্বালিয়ে তাবুর দিকে তাকায়। পিয়াশ উকি দিয়ে দেখতে থাকে।মৌ পিয়াশের উকি দেওয়া দেখে বলে,”এভাবে উকি দিয়ে কি দেখছো?”

পিয়াশ মৌয়ের দিকে তাকিয়ে বলে,”বসের প্রেম দেখবো। ব্যাটা সবসময় বলে,বাচ্চারা চোখ বন্ধ করো।তোমাদের মন্ত্রী মশাই এখন প্রেম করবে।এখন তার অগোচরে প্রেম দেখতে চাই।”

মৌ হা হয়ে যায়।তারপর বলে,”কি করেছো তুমি?”

“তাবুতে তেলাপোকা ছেড়েছি।এখনই ম্যাম ভয়তে চিল্লিয়ে বসকে আলিঙ্গন করবে।ঘন জঙ্গলে চাঁদকে সাক্ষী রেখে আমার মতো লুকায়ীত পিএ এর সামনে বস আর ম্যামের প্রেম চলবে।”

মৌ ভ্রু কুচকে বলে,”পাগল টাগল হয়েছো কি?”
“ওটা তোমাকে বিয়ে করার পর পরই হয়েছি।সুযোগ পেলে বসকে বলবো যাতে সেও কোনোদিন বিয়ে না করে।”
“মানে?”(চোখ রাঙিয়ে মৌ বলে)
পিয়াশ ঢোক গিলে বলে,”আরে তোমার প্রেমে পাগল হয়েছি।উল্টোপাল্টা ভাববে না।আচ্ছা ম্যাম এখনও চিল্লাচ্ছে না কেন?চট্টগ্রামের তেলাপোকা কি দুর্বল?”
মৌ হাসতে থাকে।বলে,”মায়া আপুর মত মেয়েকে পেলে তেলাপোকার ভয় দেখাতে।দুনিয়াতে কি ভীতু মেয়ের অভাব ছিলো?”

পিয়াশ মৌকে আর কিছু বলতে যাবে তার আগে দেখতে পেলো মায়া তাবু থেকে তিনটি তেলাপোকা বের করে একটি ঠোঙায় রেখে জ্বলন্ত আগুনের ভিতর দিয়ে দেয়। পিয়াশ এটা দেখে বলে,”শুনেছি মেয়েরা রণচণ্ডি হলেও তেলাপোকার কাছে নেতিয়ে যায়।এ তো তেলাপোকা কেন হাতি আসলেও তাকে হারিয়ে দিবে।”

মৌ জোরে জোরে হেসে দেয়।মায়া ও রাজ মৌয়ের হাসি শুনতে পেয়ে সেদিকে তাকিয়ে দেখতে থাকে।মায়া রাজ ওদের দিকে তাকাতেই ওরা বের হয়ে আসে।মৌ হাসতে হাসতেই বলে,”তোমার আর রাজ ভাইয়ার রোমান্স দেখতে ও এখানে তেলাপোকা রেখেছে।”

মায়া চুপ করে তাকিয়ে থাকে পিয়াশের দিকে।রাজ আলতো হেসে বলে,”পিয়ু বেবী!বসের সেটিং করিয়ে দিচ্ছ বুঝি?”

হালকা ঢোক গিলে পিয়াশ বলে,”ওই আর কি।”

“শুনো পিয়ু বেবী!আমার মায়াবতী হলো আস্ত এক রক্তবতী।রক্ত নিয়ে খেলা তার নেশা।তাই বসের মায়াবতীর সাথে তার রোমান্স এর ব্যাবস্থা একটু ডিফারেন্ট ভাবেই করবে।”

“ওকে বস।”

মায়া সবাইকে বলে,”গুড নাইট।”
বলেই তাবুতে যেয়ে ঘুমিয়ে যায়।রাজ তার তাবুর দিকে যেতে যেতে পিয়াশকে ক্রস করার সময় পিয়াশের মাথায় টোকা দিয়ে বলে,”মাই ইনোসেন্ট পিয়ু বেবী।”

সকাল বেলা,
হিয়া এখন অনেকটাই সুস্থ।ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে ডায়নিং টেবিলে এসে বসেছে।মাহমুদ সরদার হিয়াকে দেখে বলেন,”তোমার তো খুব জ্বর মা।উঠতে গেলে কেনো?”

হিয়া মিষ্টি হেসে বলে,”আমার জ্বর এখন নরমাল বাবা।”

“তোমার তো পরশু থেকে পরীক্ষা।প্রিপারেশন কেমন?নাকি দুর্বল বোধ করছো?যদি এমন হয় এবার আর এক্সাম দিতে হবে না।”

“আমি এক্সাম দিবো বাবা।আমি কি সিয়ার মত নাকি যে এখন ডাক্তার হবো বলে ভালো রেজাল্ট করতে হবে।আমি তো নরমাল পাশ করলেই হ্যাপি।”

হিয়ার কথায় সবাই হেসে দেয়।সবাই জানে হিয়া পড়াশোনাতে পিছিয়ে।কিন্তু কোনো ক্লাস গ্যাপ দিবে না।সবার হাসির মাঝে সেখানে উপস্থিত হয় রুদ্র।অন্যদিক থেকে আসে মিলি ও জারা।রুদ্রকে চেয়ার টেনে বসতে দেখে হিয়া একবার রুদ্রের দিকে তাকায়।কোনো প্রতিক্রিয়া না দেখিয়ে হিয়া খাওয়া দাওয়ায় মন দেয়। জারাকে দেখে সিয়া বলে,”তুমি কখন এসেছ, জারা আপু?তোমার তো কালকে আসার কথা ছিলো।”

জারা একটু বিদেশি কণ্ঠ নিয়ে বলে,”রাতেই চলে এসেছি। কাল তো আমার রাজ বেইবী আসবে।তাই আমিও চলে এসেছি।”

রুদ্র বলে ওঠে,”তোর রাজ বেইবী কি বলেছিলো তোকে আসতে?”

জারা অপমানবোধ করে।সোনালী এসে বলে,”আহ রুদ্র!এভাবে বলো না। জারা অনেক ভালোবাসে আমাদের রাজ কে।”

“ব্রো ভালোবাসে কি না এটা একবারও শুনেছ?নিজেদের থেকেই তো উৎসাহ বাড়িয়ে দিচ্ছো।”

মালিনী রুদ্রের দিকে এগিয়ে এসে বলে,”ও আর কি বলবে?ও তো ওর কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকে।এই যে গেলো ঘুরতে আমাদের ফোন তো একবারও ধরেই না।এত ব্যাস্ত তার।তাকে তো এখন বিয়ে করতে হবে।আমি ভাবছি মন্ত্রীর সাথে একজন স্মার্ট মেয়ে না হলে হয়না।আমাদের জারা অনেক স্মার্ট।ওর সাথে রাজকে খুব মানাবে।”

রাজ ব্রেডে বাটার মাখাতে মাখাতে বলে,”ওটাকে স্মার্ট বলে না।ওটাকে বলে গায়ে ঢলে পড়া স্বভাব।”

সোনালী এবার রুদ্রকে চেঁচিয়ে বলে,”রুদ্র!তুমি কিন্তু জারাকে অপমান করছো।”

“অপমানের কিছুই না।এখন এইটুকু সহ্য করতে পারছ না। আর যখন সারসরি জারার হার্টব্রেক হবে তখন সহ্য করতে পারবে তো?”

সোনালী একটু থমকে যায়।উনি এতটুকু জানে রাজ গায়ে ঢলে পড়া মেয়েদের পছন্দ করে না।বিদেশে থাকতেও রুদ্রকে বারে যেতে শুনলেও রাজ কখনও যায়নি।মালিনী রাজের খোঁজ নিলে জানতে পারতো রাজ বাসায় বই পড়ছে বা ল্যাপটপে কোনো শিক্ষণীয় ভিডিও দেখছে।

সোনালীর ভাবনার মাঝেই মালিনী এসে সোনালীর কাধে হাত রেখে বলে,”জারা বিদেশে পড়াশোনা করেছে।এগুলো নরমাল ব্যাপার। জারা তো আর সব ছেলেদের সাথে কথা বলে না।ও শুধু রাজের জন্য পাগলামি করে।আমরা শিখিয়ে দিবো রাজের মন জয় কিভাবে করতে হয়।”

মালিনীর কথা শুনে সোনালী শান্তি পায়।মনে মনে শয়তানি বুদ্ধি করে ফেলে।সোনালীর উদ্দেশ্য রাজের থেকে এই বাড়ি নেওয়া।তাই তো জারাকে এই বাড়িতে রেখেছে।রাজ থাকবে তার বাংলোতে।রাজের সবকিছু তো আর তার চাই না।এই পুরো বাড়িটা নিজের করে স্বামী সন্তান নিয়ে থাকবে। জারা আর রাজ নাহয় বাংলোতে।এনার এই গেদারিং ভালো লাগে না। আর তার থেকেও বড় কথা এই পরিবারের লোকজনের চলাচল তার থেকে বিপরীতে।সোনালী জারার দিকে তাকিয়ে শয়তানি হাসি দেয়।যা দেখে জারা নিজেও এক ভ্রু উচু করে মিস্কি হাসি দেয়।শাশুড়ি তো রাজি। আর কি লাগে তার?

রুদ্র দুজনের দিকে তাকিয়েই আলতো হাসি দিতে থাকে।মাহমুদ সরদারকে বলে,”বুঝলে বড় বাবা!”

মাহমুদ সরদার খাওয়া থামিয়ে তাকায় রুদ্রের দিকে।রুদ্র বলে,”জীবনে অনেক কিছু দেখার আছে।এখনই যেনো হাঁফিয়ে যেও না।পিকচার আভি বাকি হে।”

মাহমুদ সরদার মজা করে বলেন,”কিছু পপকর্ন এর ব্যাবস্থা করে দিও।দেখবো আর খাবো।”

বাচ্চারা সবাই মিলে হেসে দেয়।পরিবারের সাথে থাকার কারণে হিয়ার এখন আর ভয় লাগছে না।কিন্তু মনে মনে বলে,”আমি আপনার মুখোশ খুলে দিবো রুদ্র ভাই।”

এদিকে,
মায়া ও রাজ চলে আসে রিসোর্টে।সন্ধায় মায়া ও রাজের দাওয়াত আছে।মিডিয়াতে পাবলিক হওয়ার পর থেকে সবাই দেখা করার জন্য অনেক রিকোয়েস্ট করছে।তাই রাজ সকালেই হাজির হয় রিসোর্টে।সকাল সকাল মিডিয়ার লোকদের কিছু উত্তর দিয়ে রাতের দাওয়াত খেতে যাবে।দাওয়াত এসেছে মায়ার আশ্রম থেকে।মায়ার আশ্রমের কর্মী যখন জানতে পারে মায়া এবার মন্ত্রীর সাথে টুরে এসেছে তখনই সবাই মিলে তোলপাড় শুরু করেছে।

রিসোর্টের সামনে চার পাঁচটি গাড়ি শো শো করে এসে ধূলাবালির মিশ্রণ তৈরি করে।গাড়ির আগমন দেখেই মিডিয়ার লোক মাইক ক্যামেরা নিয়ে তাদের দিকে এগিয়ে যায়।তাই সমস্ত ধুলাবালি তাদের দিকেই এগিয়ে আসে।দূর থেকে তাদের এই অবস্থা দেখে হেসে দেয় কিছু ক্ষুদ্র জনগণ।তাদের মুখ থেকে বের হয়,”টাকার জন্য মানুষ উচ্চ শিক্ষা অর্জন করলেও সহ্য করতে হয় অনেক কিছুই।”

গাড়ি থেকে বের হয় সুট বুট পরা রাজ।রাজের ওপর প্রান্ত থেকে জানালা খুলে বের হয় মায়া।মায়ার পরনে গাঢ় নীল রঙের গাউন।গাড়ি থেকে বের হয়ে চোখের সানগ্লাস খুলে সবার দিকে তাকিয়ে দেখতে থাকে মায়া।মুখে ঝুলিয়ে ওঠে মিষ্টি হাসি।

এইসব কিছুই লাইভ ভিডিও চলছিলো।সরদার পরিবার ঢাকা থেকেই লাইভ দেখছে।রাজের গাড়িতে এতবড় মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানির মেয়েকে তাও এত সকাল সকাল দেখে অবাক হয় জারা ও মালিনী সোনালী।রুদ্র ঠোঁট প্রসারিত করে হেসে দেয়।হিয়া সিয়ার দিকে তাকিয়ে বলে,”নতুন ভাবীর আগমন শুভেচ্ছায় স্বাগতম।”

আস্তে করেই বলে কথাগুলো।রুদ্রের পাশে মিলি আর তার পিছনে সিয়া ও হিয়া।মিলি চোখ ছোট ছোট করে বলে,”কিসের ভাবী?ভাবী তো আমাদের সাথে বাসায়ই আছে।”

“তোর ঘটে বুদ্ধি থাকলে তো হতই।দেখতে থাক কি হয়।”

মিলি মুখ ভেংচি কেটে মনোযোগ দেয় লাইভ দেখতে।মাহমুদ সরদার টিভির সাউন্ড বাড়িয়ে দেন।

মায়া ও রাজকে একসাথে বের হতে দেখে মিডিয়ার লোক ধুলাবালি গেলার পরও তাদের কাছে যায়।কিছুক্ষণ সাক্ষাৎ করে একজন সাংবাদিক বলে,”আপনাদের এই সাপ্তাহিক ভ্রমণে তাও একসাথে এটা লোকজন জানাজানি হওয়ার পর অনেকে অনেককিছুই ভাবছে।আপনাদের কি আদৌ এমন কোনো সম্পর্ক আছে?”

রাজ সানগ্লাস পড়া ছিলো।যেই সাংবাদিক এমন কথা বলে রাজ তার দিকে তাকিয়ে বলে,”এটা আমি এখন বলতে চাই না।তবে যদি এমন কিছু থেকে থাকে তাহলে আপনারা খোঁজ পেয়ে যাবেন।”

রাজের উত্তরে হ্যাঁ বা না কোনোটিই প্রকাশ পায় না।আরেকজন সাংবাদিক বলে,”আপনাদের পরিচয় কিভাবে হয়?”

“একই শহরের একই গন্তব্যের দুই বাসিন্দা আমরা।আমাদের কি আলাদা পরিচয় দরকার?”

সাংবাদিক হেসে দেয়।রাজের ইনডাইরেক্ট উত্তরগুলো তারা আগে থেকেই আশা করে রেখেছিলো।কোনো ব্যাক্তি তার জীবন নিয়ে সরাসরি কনভারসেশন করে না।কিন্তু তাদের কোম্পানি তাদের এসব প্রমোট করতেই তো পাঠিয়ে দেয়।তাই বাধ্য হয়ে টাকার চেহারা দেখে আসল নিউজ বাদ দিয়ে এদের কীর্তি কলাপ শুনতে এসেছে।একজন মেয়ে সাংবাদিক মায়ার দিকে মাইক নিয়ে বলে,”আপনার জীবনে সফলতার এই জার্নি আমাদের একটু শেয়ার করুন ম্যাম।”

মায়া মিষ্টি হেসে বলে,”আমি যদি এখন আপনাকে প্রশ্ন করি আপনি কিভাবে এই মিডিয়াতে সফলতা পেয়েছেন।বলতে পারবেন ফুল ডিটেইলস?”

সাংবাদিক থতমত খেয়ে যায়।এদের কাজ হলো অন্যের বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা।তাদের বিষয় কেউ করে না।তারপরও বলে,”হায়ার স্টাডি করে ইন্টারভিউ দিয়ে কিছু ট্রেইনিং এভাবেই।”

মায়া এবার নিজের দিকে মাইক নিয়ে বলে,”প্রত্যেকটা মানুষের জীবনে সফলতার শুরু হয় বিদ্যার সূত্র দিয়ে।যতটা বিদ্যা অর্জন করবে ততটা সফলতা পাবে।আপনি যেমন একটা সাবজেক্ট নিয়ে স্টাডি করে এই পজিশনে,আমিও তেমন আমার স্টাডি কমপ্লিট করে এই পজিশনে।”

কেউ কথা বাড়ায় না।মায়া কাউকে বলতে চায় না এই সফলতা তাদের পারিবারিক ব্যাবসা মানে নানাভাই এর ফ্যাক্টরি থেকে শুরু।বললে আস্তে আস্তে সব প্রকাশ পাবে।এতে তার উদ্দেশ্য কখনও সফল হবে না।সে তো এই পজিশনে এসেছে সারদার বাড়িকে বরবাদ করতে।

জারা মায়াকে আজ প্রথম দেখলো।তাই সে প্রশ্ন করে,”রাজ বেইবীর সাথে এই মেয়েটি কে?

রুদ্র সোফায় হেলান দিয়ে বলে,”তোর সতিন।”

জারা রাগান্বিত চোখে তাকিয়ে থেকে বলে,”কখনও হবে না।”

“তুই না চাইলে ব্রোকে ছেড়ে দিতে পারিস।যদিও তুই আর বেশিদিন নেই।”

সোনালী জারার পাশে বসে জারার মাথায় হাত বুলিয়ে বলে,”শাট আপ রুদ্র।রাজ এন্ড জারা একটা বেস্ট জুটি।এখানে অন্য কেউ আসবে না।”

রুদ্র হামি দিতে দিতে হেয়ালি করে বলে,”দেখা যাক।”

চলবে…?

#মায়াবতীর_ইচ্ছা
#পর্ব_১৭
#ইশরাত_জাহান
🦋
নিউজ দেখা শেষ করে হিয়া একা ঘরে বসে আছে।সবাই সবার কাজে ব্যাস্ত।হিয়ার জ্বর নেই কিন্তু তার মনটাও ভালো নেই।সিয়া কোচিংয়ে গেছে মিলি কলেজে।পরিবারের বড়রা তাদের কাজে ব্যাস্ত।হিয়া কিছুক্ষণ ভেবে ফোন বের করলো।ডায়েল করলো তারেকের নাম্বারে।

অনেকদিন পর যাকে ট্র্যাপ করতে চায় সে নিজে থেকে কল দিয়েছে।এটা যেনো মেঘ না চাইতেই জল।তারেক কল রিসিভ করলো।বলে,”হেলো।”

হিয়া অস্বস্তি রেখেও গলা খাকারি দিয়ে বলে,”একটু দেখা করতে পারবেন আজকে?”

তারেক হালকা হেসে বলে,”হ্যাঁ।আমাদের বন্ধুত্ব তো এমনটাই।আমি তো ভেবেছিলাম তুমি আমাকে ভুলে গেছো।”

“এমন কিছুই না।এক্সামের ঝামেলা ছিলো।এখন একটু মাইন্ড সুইং হয়েছে।একটু ফ্রেশ হাওয়া লাগাতে চাই।”

“ওকে,আমাকে লোকেশন ম্যাসেজ করে দেও।আমি আসছি।”

“আচ্ছা।”
বলেই কল কাটে হিয়া।আয়নায় দাড়িয়ে ওড়না সাবলীলভাবে গায়ে দিয়ে চুলগুলো একটি ব্যান্ড দিয়ে বাঁধে।বের হওয়ার সময় মালিনীকে বলে,”আমি একটু আসছি মা।বাইরের আবহাওয়া লাগাতে চাই।”

মিসেস মালিনী যেতে দেয় হিয়াকে।হিয়া বের হওয়ার পর সোনালী বলে,”মেয়েকে এত উড়ন্ত হতে দিচ্ছ কেন?”

“তাহলে কি মেয়েকে বেধে রাখবো?”

“আমি এমনটা বলছি না।আমার রুদ্র তো ফ্রী আছে।হিয়া কোথাও গেলে রুদ্র ওকে দিয়ে আসবে আবার নিয়ে আসবে।কলেজ কোচিং এগুলো আলাদা কথা কিন্তু হুটহাট বাইরে যাওয়া তো ভালো না।”

সোনালীর কথাগুলো অন্য ইঙ্গিত করলেও মন্দ লাগেনি মালিনীর কাছে।হিয়া এখন প্রাপ্ত বয়স্ক।এই সময় মেয়েদের অনেক দিকেই নজর যায়।কিছুক্ষণ ভেবে মালিনী বলে,”তুমি ঠিক বলেছো।হিয়া আজকাল একটু বেশি উড়ছে।দেরি করে আসা যাওয়া আমার পছন্দ না।”

মালিনীর এমন কথা শুনে সোনালী হেসে দেয়।তার তো এটাই উদ্দেশ্য।হিয়াকে ঘরবন্দী করে রুদ্রর করে দেওয়া।সিয়া ডাক্তার হতে চায়।তার জীবন ভিন্ন।কিন্তু হিয়া তার কোনো সপ্ন নেই।হিয়াকে রুদ্র পাবে আর রাজকে জারা।এদের দ্বারা তার স্বার্থ উশুল হবে।

হিয়ার সাথে কথা শেষ করে তারেক মায়াকে ম্যাসেজ করে,”আপনার প্লান কাজ করছে ম্যাম।আজ পাখি নিজে থেকেই খাঁচায় দেখা দিতে আসছে।”

তারেকের ম্যাসেজ দেখে মায়া ঠোঁট প্রসারিত করে হাসে।সে বুঝতে পারে তারেকের কথার মানে।মায়ার সামনা সামনি সোফায় বসে আছে রাজ।দৃষ্টি তার মায়ার দিকে।তাদের আড়াআড়ি সোফাতে বসে আছে পিয়াশ ও মৌ।মাঝখানে একটি বড় টি টেবিল।সেখানে আছে দুপুরের ভিন্ন খাবার।

রাজ মায়ার হাসির দিকে তাকিয়ে বলে,”তো মায়াবতী গুড নিউজ পেতে খুব ভালো লাগে?”

মায়ার হাসিতে ঠোঁটজোড়া একটু চওড়া হয়।কিন্তু রাজের কথায় তা স্বাভাবিক হতে থাকে।রাজ মায়ার এই আতঙ্ক দেখে বলে,”জীবন যুদ্ধে ভয় পেতে নেই মায়াবতী।আমি তো শুধু এমনি বলছিলাম।তোমার এই মিষ্টি হাসি তো সবসময় দেখা হয় না তাই।হঠাৎ একবার কি দুইবার দেখেছি।”

মায়া রাজের কথাটি স্বাভাবিক নিয়ে বলে,”জীবন যুদ্ধে মায়া ভয় পায় না।ভয় নামের শব্দ মায়া তার ডিকশনারিতে রাখে না মন্ত্রী মশাই।”

রাজ তার বাম দিকের বুকের উপর হাত রেখে বলে,”মাই ব্রেভ মায়াবতী।আমার এই জায়গাটায় বসবাস করে।”

পিয়াশ এবার রাজের দিকে তাকিয়ে বলে,”কিন্তু বস!আপনি ম্যামের কোন জায়গায় বসবাস করেন?”

মৌ আর মায়া হেসে দেয়।রাজ পিয়াশের দিকে তাকিয়ে বলে,”তোমাকে কেনো দেখাবো আমার বসবাস?তুমি তোমার বউয়ের সাথে সুখে করো বসবাস।”

এদের কথা শুনলে মৌ খুব মজা পায়।মৌ রাজকে বলে,”আপনি একমাত্র সেই ব্যাক্তি যে পিয়াশকে সঠিকভাবে শায়েস্তা করতে পারেন।”

রাজ নিজের এত ভালো সুনাম শুনে বলে,”আমার থেকে ট্রেনিং নিও।তোমার বর সুবিধার না।ওকে টাইট দিয়ে রাখতে হয়।”

পিয়াশ এবার মুখটা বিড়ালের মত করে রাখে।মৌ তো হো হো করে হাসতে থাকে।এই রাজ যেমন পিয়াশকে আগলে রাখে ঠিক তেমন পিয়াশকে পচাতে থাকে।মায়া এদের কনভারসেশন শুনে এবার ব্যাগ থেকে ল্যাপটপ বের করে।রাজ তার ঢাকার লোকদের সাথে কনভারসেশন করতে থাকে।কোথায় কার কি হয়েছে এসব খোঁজ নিতে থাকে রাজ।মায়া ল্যাপটপে দেখছে তার ফ্যাক্টরির নতুন ড্রেসগুলোর সাথে কোন হিরোইনের এড বেশি ভালো মানাবে।

হিয়া ও তারেক এসে বসেছে একটি কফি হাউজে।দুজনের সামনে কফি।তারেক কফি নিয়ে চুমুক দিলেও হিয়া কফি হাতেও নেয় না।তার কেমন যেনো লাগছে।এতদিন তো রুদ্রর সাথে চা শেয়ার করতো।সবসময় তার কয়েক চুমুক পড়েই রুদ্র সেই কাপে চুমুক দিতো।তারপর বলতো,”তোর এই চায়ের কাপটাও আমার এক নেশা।এখানে আছে তোর ভালোবাসা।”

হিয়া কল্পনা করতে থাকে মুহূর্ত।ভাবতে ভাবতেই হিয়ার চোখ দিয়ে গড়িয়ে পরে অশ্রুকণা।চারকোনা চিকন চশমার ভিতর দিয়ে বয়ে যাওয়া অশ্রু দেখতে পেলো তারেক ।টেবিলে থাকা টিস্যু বক্স থেকে একটি টিস্যু নিয়ে হিয়ার সামনে ধরলো।হিয়া তাকালো সেদিকে।তারেক বলে,”জীবনে যে নিজেকে প্রিয় ব্যাক্তির জায়গা করে নেয়,সে হাজারও তিক্ত কাজ করলে প্রিয় থেকেই যায়।”

হিয়া তারেকের হাত থেকে টিস্যু নিয়ে চোখের পানি মুছে।বলে,”এটা নরমাল এলার্জি।বেশি কিছু না।”

“আমি কি বলেছি বেশি কিছু?”

হিয়া আমতা আমতা করতে করতে বলে,”না মানে!”

“বন্ধুত্বের সম্পর্ক আমাদের হিয়া।এখানে এমন ইন্সিকিওর হওয়ার তো কথা নয়।”

হিয়া হালকা হাসি দেখায়।বলে,”ঠিকই বলছেন আপনি।আমাদের বন্ধুত্বে কোনো ত্রুটি নেই।”

“তুমি কিন্তু আমাকে বন্ধুত্বের দাবিতেই ডেকেছো।আমি তোমার বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে অবগত নই কিন্তু তোমার মন খারাপ সম্পর্কে অবগত।কারণ একজন মানুষের মন খারাপের সময় তার বন্ধুত্বের সাপোর্ট লাগে।”

“ঠিক বলেছেন আপনি।আসলে আমার এখন একটু বন্ধুত্বের প্রয়োজন।আমার সাথে মেশার কেউ নেই।সবাই যে যার মতো ব্যাস্ত।আমি আমার একমাত্র সঙ্গী আমার উপন্যাসকে বেঁচে নিয়েছিলাম।কিন্তু এখন ওখানেও মন বসতে চায় না।”

“যদি কিছু মনে না করো।তাহলে আমাকে কি শেয়ার করা যাবে?”

হিয়া মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ বুঝায়।তারপর বলে,”আসলে আমি একজন ভুল মানুষের প্রতি আপ্লুত হয়েছি।মানুষটির যত প্রকার সাইট আমি দেখেছি সবই জঘন্য।আমি তাকে একটাও ভালো কাজ করতে দেখিনি।মেয়ে নিয়ে ঘুরতে দেখেছি,মেয়েদের সাথে বারে যেতে দেখেছি,মেয়েদের সাথে ফুর্তি করা তার স্বভাব।এখন তো আবার তাকে…”

বলেও বলতে পারলো না হিয়া।খুন করা শব্দটি ব্যাবহার করতে কেমন দ্বিধা লাগছে তার মাঝে।তারেক বলে,”কি হলো?কি দেখেছিলে?”

“আছে কিছু একটা।কিন্তু এগুলো দেখে তার উপর ঘৃণা ধরে গেছে।কিন্তু তার অবর্তমানে আমাকে তার জন্য খুব করে মনটা পোড়ায়।”

তারেক হিয়ার চোখের দিকে তাকিয়ে বলে,”এটাকে কি বলে জানো?”

হিয়া মাথা নাড়িয়ে বুঝিয়ে দিলো না।তারেক বলে,”মনের গহীনে তাহার বসবাস।”

হিয়া অবাক নয়নে তাকিয়ে বলে,”কিন্তু….”

হিয়ার কিছু বলার আগে তারেক বলে,”আমরা যখন কাউকে ভালোবাসি তার ব্যাকগ্রাউন্ড দেখি না।দেখো হিয়া আমি বলবো না তুমি ওই লোকটিকে ভালোবেসে গ্রহণ করো।এটা একান্তই তোমার সিদ্ধান্ত।কিন্তু বন্ধু হিসেবে বলবো যে,ভালোবাসা মানুষ বিবেচনা করে হয় না।ভালোবাসা হয় মন থেকে।এটা যেকোনো সময় যেকোনো মুহূর্ত গড়ে ওঠে।”

“আপনার মনে হয় আমি তাকে ভালোবাসি?”

তারেক হিয়ার দিকে তাকিয়ে বলে,”তোমার প্রতিটা কথায় আমি তার জন্য ঘৃণা দেখিনি হিয়া।দেখেছি আফসোস।ভালোবাসা হারানোর আফসোস।”

“তাহলে আমি কি করবো?আমি এমন লোককে কখনও গ্রহণ করতে পারবো না।”

“টেক ডিসটেন্স।অথবা তাকে ভালো হওয়ার সুযোগ দেও।”

“সম্ভব না। ওরা ফুল ফ্যামিলি এমন।”

“ফ্যামিলির উপর ডিপেন্ড করেই তো মানুষ তার কালচার পাবে।কিন্তু ভালোবাসা মানুষকে বদলে দেয়।আমি বলবো তুমি তোমার মনকে শুনো।”

“মন তো চাচ্ছে তার কুকর্মের জন্য তাকে শাস্তি দিতে।”

“তাহলে চলো দেই তাকে শাস্তি।”

“কিভাবে?”

“তার দুর্বলতাকে হাতিয়ার বানিয়ে।”

হিয়া তাকালো তারেকের দিকে।ভাবতে থাকলো রুদ্রর দুর্বলতা।মনে পড়লো রুদ্রর বড় দুর্বলতা তো সে নিজেই।অতঃপর একটি মিষ্টি হাসি দিয়ে বলে,”আপনি একদম ঠিক বলেছেন।তার দুর্বলতা দিয়েই আমি তার শেষ করবো।”

“গুড।”

হিয়া কিছু একটা ভেবে তারেককে বলে,”আচ্ছা আপনি কি কখনও একজন খুনিকে নিজের জীবনে জায়গা দিবেন?”

তারেক হিয়ার দিকে সরু চোখে তাকালো।তারপর বলে,”খুনের দুই রকম রূপ থাকে হিয়া।একটি রূপ নিঃস্বার্থভাবে কারোর ভালোর জন্য তো আরেক রূপ নিজের অসৎ পথের স্বার্থ সিদ্ধির জন্য।আমি বুঝেশুনে পা ফেলবো আমার জীবন সঙ্গীর দিকে।”

হিয়া আলতো হেসে কফি শেষ করে বিদায় নিলো।হিয়ার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছে তারেক।হিয়ার চুল অনেক বড়।ঝুঁটি বেধে পিছনে ঝুলানো চুলগুলো দুলতে থাকে।ওড়নার আচল দুই পাশেই সুন্দর করে মেলে রাখা।তাই হিয়ার পিছন থেকে ওড়নার দুই আচল ও চুলগুলো খেলা করতে থাকে।সেদিকে তাকিয়ে তারেক বলে,”একুশ বছরের এক যুবক খুন করে জেল খেটেছে।আজ তাকেই জিজ্ঞাসা করা হচ্ছে কোনো খুনিকে তার জীবনে জায়গা দিবে কি না।”

কথাগুলো বলেই চোখ বন্ধ করে তারেক।চোখের পাতা বন্ধ করতেই দুই চোখ দিয়ে বিন্দু বিন্দু ফোঁটা বের হয়।চোখের সামনে ভাসছে আকাশী রঙের কামিজের সাথে সাদা রঙের বেল্ট ও সেলোয়ার পরিহিতা এক কিশোরী স্কুলে যাচ্ছে।দুই পাশে দুটো মোটা মোটা বিনুনি কাধে স্কুল ব্যাগ।কখনও কখনও সে তারেকের দিকে তাকিয়ে দাঁত বের করে হেসে হেসে বলে,ওহে কালাচান এমনে চাইয়া কি দেহ?”

তারেক দেখতে কালো।তাই মেয়েটি তাকে কালাচান বলে ডাকতো।সহজ সরল তারেক মাথায় তেল মাঝখানে সিঁথি করে রাখা।মেয়েটির দিকে তাকিয়ে বত্রিশ দাত বের করে বলে,”তোরে দেখিরে হুরপুরী।তুই দেখতে এককারে হুরপুরীদের মতো রে।”

পরী নামের মেয়েটি সাথে সাথে হেসে দেয়।কিন্তু আজ সে নেই।তার জন্য তারেক নিজের বাম পাশটায় আজও শূন্যতা বোধ করে।তারেকের ভাবনার মাঝেই তার ফোনে একটি ম্যাসেজ আসে।তাতে লেখা,”মিস ইউ ব্ল্যাক ডায়মন্ড।কবে হবা আমার বাবুর আব্বু?”

তারেক ম্যাসেজটি পড়ে নিজেকে বিড়বিড় করে বলে,”ওরে তোর বোনকে ফাঁসাতে চাই।তুই কেন ফেঁসে এলি?”

সন্ধায়,
আশ্রমে যাবে বলে নিজেকে রেডি করছে মায়া।ফ্যাক্টরি থেকে আশ্রমের লোকজন ভালোবেসে মায়াকে একটি তাতের শাড়ি কিনে দেয়।ওটা পড়েই আয়নায় নিজেকে তৈরি করতে থাকে।ফুল হাতার নীল তাতের শাড়ি দিয়ে একদম বাঙালি আবির্ভাব ফুটিয়ে তোলে নিজেকে।শাড়ির উপরে চিকন কাজের একটি হার গলায় দেয় মায়া।হাতে কিছু গোলাপী ও কালো রঙের কম্বিনেশনে চুরি পড়ে।কপালে ছোট একটি কালো টিপ দেয় মায়া।নিজেকে আয়নায় দেখে নেয়।সবদিক থেকে পারফেক্ট আছে সে।বাইরে বের হলে ব্যাস্ত হবে তাই এখনি হাসিকে কল দিয়ে কথা বলতে চায় মায়া।হাসিকে ভিডিও কল দেওয়ার সাথে সাথে কল রিসিভ করে হাসি।

হাসি মায়ার দিকে তাকিয়ে বলে,”আমার মায়াবতী মা।”

মায়া হেসে দেয়।বলে,”তুমিও হাসি মা?”

“কেনো তোমার মন্ত্রী মশাই একাই তোমাকে মায়াবতী বলবে?আমি বলতে পারি না?”

“তুমি আমার দ্বিতীয় মা।তুমি তো আমাকে ভালোবেসে ডাকবেই।”

“আশ্রমে যাচ্ছো বুঝি?”

“হ্যাঁ।”

“আমার সামনে থাকলে এখন তোমাকে আমি কালো টিকা দিয়ে দিতাম।তোমাকে মাশাআল্লাহ অপূর্ব লাগছে।”

“বলছো?”

“হ্যাঁ রে মা।তোমার মন্ত্রী মশাই ফিদা হয়ে যাবে ।”

“হসপিটালের কি অবস্থা হাসি মা।”

“সবকিছু নরমাল।একটু একটু ভালো রেসপন্স পাচ্ছি।জানি না কি হয়।”

মায়ার মুখ প্রথমে খুশির ঝলক দেখা দিলেও শেষে একটু ফ্যাকাশে হয়ে যায়।তার অপেক্ষার অবসান কবে ঘটবে?হাসি এটা দেখে বলে,”আরে ডোন্ট ওরি।আগের থেকে ভালোই রেসপন্স এসেছে। আশা করা যায় বেস্ট কিছু হবে।”

“তাই যেনো হয় হাসি মা।আমার ভালোবাসার জন্য অনেক কিছুই করেছি।আমি চাই তাড়াতাড়ি সবকিছু ঠিক হয়ে যাক।আমার অপেক্ষার যে শেষ হয় না হাসি মা।”

“মায়াবতীকে দুর্বল মানায় না।আমাদের শিক্ষা কি তুমি ভুলে গেছো?”

“না হাসি মা।আমি কাল এসে তোমার কোলে ঘুমাবো।তুমি রেডি থেকো,বাই।”

“বাই।”
বলেই কল কেটে দেয় হাসি।

চলবে…?