মেঘলা আকাশে রংধনু হবো পর্ব-৩২+৩৩

0
10

#মেঘলা_আকাশে_রংধনু_হবো
#লেখনীতে_তাইয়েবা_বিনতে_কেয়া
#পর্ব_৩২( সাঝেঁর ছোঁয়া).

হৃদানের এইরকম অবাক হওয়ার কারণ হিয়া বুঝতে পারে না ওর মায়ের পাহাড়ে আসা বা না আসা নিয়ে হৃদানের কি যায় আসে। হিয়ার মায়ের কথা শুনলে হৃদানের মুখ কেমন যেনো হয়ে যায় যখন মামা বাড়িতে ছিলো তখন ও এমন হয়েছে। হিয়া বিষয়টা বুঝতে পারে না তবে হৃদানের চিন্তা করা দেখে জিজ্ঞেস করে –

“- কি হয়েছে আপনার এমন টেনশন কোনো করছেন আর মায়ের সাথে আপনার টেনশনের কি রিলেশন। এই পাহড়ে আসার পর থেকে দেখছি আপনার চেহারার রং পাল্টে গেলে কি হয়েছে সত্যি করে বলুনতো “।

হৃদান একটা ঘোরের মধ্যে চলে গিয়েছিলো কিন্তু হিয়ার কথা শুনে একটু নরমাল হয়। কারণ সে চাই না হিয়া কিছু বুঝতে পারুক আগে নিজে আসল সত্যি জানবে পরে হিয়াকে বলবে। হৃদান বলে –

“- কিছু হয় নাই আমার কি হবে আসলে পাহাড়ে আসা আমার এতো পছন্দ না উঁচুতে আসতে ভয় করে আমার। তাই একটু আনহেজি লাগছে “।

হিয়ার হৃদানের কথা বেশি বিশ্বাস হলো না কিন্তু সত্যি মনে হয় পাহাড়ে উঠলে হৃদানের খারাপ লাগে। তাই কথা বাড়ালো না চুপ করে থাকল পাহাড়ের একটা উষ্ণ হওয়া হিয়া গাঁ ছুয়েঁ যাচ্ছে কি সুন্দর দৃশ্য। একটু দূরে জঙ্গল গাছপালা দেখা যাচ্ছে বাতাসে গাছের পাতাগুলো কি সুন্দর লাগছে। যদি ও হিয়ার একটু শীত করছে তবুও সে পরিবেশ উপভোগ করছে। কিন্তু হৃদান তার এইসব বিষয়ে কোনো খেয়াল নাই সে গভীর ভাবনায় মগ্ন। হিয়ার সামনে যতই নরমাল থাকার চেষ্টা করুর না কোনো ভিতরে ভিতরে একটা টেনশন কুঁড়ে কুঁড়ে খাচ্ছে ওকে।

হিয়া হৃদানকে এমন করে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে বিরক্ত হয় লোকটার মধ্যে রোমান্স নাম গন্ধ ও নাই। আবার ঠিকই রুমে রোমান্টিক পুরুষ সাজবে কিন্তু কাজের সময় কিছু না। হিয়া গিয়ে হৃদানের মুখের সামনে আঙ্গুলের শব্দ করে আর বিরক্ত নিয়ে বলে –

“- কি হয়েছে আপনার কখন থেকে এইভাবে দাঁড়িয়ে রয়েছেন কতো সুন্দর রোমান্টিক পরিবেশ। কোথায় বউকে জড়িয়ে ধরবেন একটু রোমান্টিক হবেন তা না আপনি কবি হয়ে কল্পনার জগতে বিচরণ করছেন “।

হৃদানের ধ্যান ফিরে আসে হিয়ার কথা শুনে হৃদান হাসেঁ এই প্রথম তার বউ তাকে রোমান্টিক কিছু করতে বলছে ভাবা যায়। তবে হিয়ার যে শীত করছে সেটা হৃদানের চোখ এড়িয়ে যায় নাই তাই হৃদানের শরীরে থাকা চাদর দিয়ে হিয়াকে নিজের কাছে নিয়ে এসে ঢেকে দেয়। হিয়াও বেশ সুন্দর করে হৃদানকে জড়িয়ে ধরে হৃদান বলে –

“- এখানে দাঁড়িয়ে থাকলে আপনার শীত করবে তাই তানিয়ার কাছে যান। আর এই পাহাড় একটু উঁচু নিচুঁ তাই পড়ে যেতে পারেন খেয়াল রাখেন নিজের “।

“- না খেয়াল রাখবো না আপনি যতখন আমার সাথে থাকবেন ততখন নিজের যত্ন নিতে হবে না। কিন্তু যদি একা একা থাকি তাহলে খেয়াল রাখবো কারণ আমি যানি আমার জামাই থাকতে আমার কোনো বিপদ হতে পারে না “।

হিয়া কথাটা শুনে হৃদানের বুকের ভিতর একটা ভয় কাজ করলো এতো বিশ্বাস করে তার হিয়া তাকে। কিন্তু হৃদান তো হিয়ার বিশ্বাস রাখতে পারে নাই ওতো হিয়া জীবন সমস্যা সৃষ্টি করেছে। হৃদান বলে –

“- আচ্ছা হিয়া কখনো যদি জানতে পারেন আমি আপনার জীবনে সবচেয়ে বড়ো সমস্যার কারণ। বিপদ বয়ে নিয়ে এসেছি আপনার জীবনে তাহলে কি ছেড়ে দিবেন আমাকে। জড়িয়ে ধরে রাখবেন না আমাকে “।

“- সবসময় রাখবো আর আপনার প্রতি বিশ্বাস সবসময় থাকবে আমার। আমি জানি যাই হোক না কোনো আপনি কখনো আমার কষ্টের কারণ হতে পারেন না। আমি আপনাকে অনেক অনেক ভালোবাসি “।

হিয়া মুখে ভালোবাসি কথাটা শুনে মনে হলো হৃদানের কলিজা ঠান্ডা হয়ে গেছে। তাই হৃদান হিয়াকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে নিজেও বলে –

“- হুম হিয়ক ভালোবাসি আপনাকে আমি বড্ড বেশি ভালোবাসি। জানি না কি করে এতোটা কাছের হয়ে গেলেন আপনি কিন্তু একটা কথা জানি হিয়া। আই লাভ ইউ হিয়া আই রিয়েলি লাভ ইউ “।

হৃদানের মুখে ভালোবাসি কথাটা শুনে হিয়া অনেক খুশি হয়ে যায় মনে হলো প্রাণ জুড়িয়ে গেছে। কতো অপেক্ষা করেছে হিয়া এই কথাটা শুনার জন্য হিয়া আবেশে জড়িয়ে ধরে ওর চোখে পানি চলে আসে। অনেক সময় পার হয়ে যায় হৃদান আর হিয়া পাহাড়ে একটু ঘোরাঘুরি করে যতটা সময় ওরা পাহাড়ে হেঁটেছে হৃদান হিয়ার হাত ধরে রেখেছিলো। কিন্তু এখন তানিয়াদের কাছে ফিরে যাওয়া উচিত ওরা হয়তো ওদের জন্য টেনশন করবে।

হৃদান আর হিয়া তানিয়ার কাছে পৌঁছে যায় ওরা গিয়ে দেখে আবির আর পিকু মিলে ছবি তুলছে তানিয়া জিনিস সব গুছিয়ে রেখেছে। হিয়া খারাপ লাগে তানিয়ার সব কাজ একা একা করতে হয়েছে তাই ওকে সাহায্যে করতে থাকে রান্না সকালে করে নিয়ে এসেছে।যেহেতু ওরা কোনো হোটেল বুক করে নাই তাই খাবার খাওয়া সম্ভব না বাড়ি থেকে রান্না করা খাবার বেড়াতে এসে খাওয়া মন্দ লাগে না। সব কাজ শেষে ওরা সবাই মিলে ছবি তুলে নেয় পরে দুপুর হয়ে গেলে সবাই খাওয়া দাওয়া শেষ করে।

এখন ওরা ঘুরতে যাবে কিন্তু জিনিসপত্র কোথায় রাখবে তাই সব গাড়িতে রেখে আসে। সবাই মিলে পাহাড়ের একটা কাছে নদী আছে সেখানে যায় অনেক মানুষ রয়েছে তারা বোর্ডে উঠে বেড়াচ্ছে। সো ওরাও বোর্ড ভাড়া করে তানিয়া আবির আর পিকু একটাই হিয়া আর হৃদান একটাই। হিয়া বোর্ড উঠতে গেলে হৃদান হাত বাড়িয়ে দেয় হিয়া হাত ধরে উঠে বসে বোর্ড ছেড়ে দেয় কি সুন্দর পানির জলমল শব্দ করছে চারপাশে। সত্যি দারুণ আর অদ্ভুত সুন্দর একটা দৃশ্য মনে হচ্ছে প্রাকৃতির এক অপরূপ সৌন্দর্য্যের ভিতর ওরা অবস্থান করছে।

হিয়া বোর্ড দিয়ে নদীর জল দেখছে হাত বাড়িয়ে ছুয়েঁ দেয়। হৃদান হিয়ার কাণ্ড দেখছে কি সুন্দর হাসি মেয়েটার সামান্য বিষয় নিয়ে এতো খুশি হতে পারে সেটা হিয়াকে দেখলে বুঝতে পারা যায়। হিয় জল নিয়ে খেলছে হঠাৎ একটা দুষ্ট বুদ্ধি মাথায় চলে আসে সে একটু জল হৃদানের শরীরে ছুঁড়ে মারে। হৃদান কি কম যায় সেও হিয়ার শরীরে জল ছুঁড়ে মারে।

অনেক আনন্দ করে কাটিয়েছে আজকের দিন সবাই অনেক মজা করেছে কিন্তু এখন সময় ঘনিয়ে এসেছে বাড়ি ফিরতে হবে। হিয়া আর একটু থাকার বায়না করলো কিন্তু সেটা সম্ভব না অলরেডি অন্ধকার হয়ে গেছে। আর রাতে দুইজন মেয়ে মানুষ নিয়ে পাহাড়ে থাকা সেইফ না তাই হৃদান কোনো কথা না শুনে গাড়ি ছেড়ে দেয়। গাড়ি চলছে বেশ অন্ধকার চারপাশ মাগরিবের আযান শুনা যাচ্ছে। হিয়া গাড়ির সামনের আলো দিয়ে রাস্তা দেখছে হৃদান গাড়ি চালাচ্ছে।

অল্প সময়ের মধ্যে বাড়ি পৌঁছে যায় সবাই হৃদান নিজের ঘরে যায় আর হিয়া ফ্রেশ হয়ে ঘরে যায়। হিয়া ওয়াশরুমে ঢুকে পড়ে ফ্রেশ হয়ে ওযু করে নামাজ পড়ে কালকে আবার কোচিং রয়েছে পড়াশোনা করতে হবে রেজাল্টের বেশি দেরি নাই। রেজাল্ট পর এডমিশন টেষ্ট সো কোচিং ভালো চাপ দিচ্ছে হৃদান অফিসের ফাইল চেক করছে। কিন্তু ওর মনে পাহাড়ের হিয়ার কথাটা মনে পড়ে। হিয়া মা পছন্দ করতো না মানে এইটা কি করে সম্ভব।

হৃদান নিজের ফোন বের করে কাউকে একটা কল দেয় একজন অপরিচিত মানুষ ফোন ধরে। আগন্তুক বলে –

“- হ্যালো হৃদান স্যার আপনি এতোদিন পর “।

“- হুম তোমার দরকার আছে শোনো একটা মহিলার ছবি তোমার ফোনে পাঠিয়ে দিচ্ছি ওনার সব খবর আমি চাই। যদিও মহিলা মারা গেছে তবুও সে কোথায় থাকতো তার হাসবেন্ড সন্তান বিষয়ে সব জানতে চাই “।

“- কিন্তু এই মহিলার কথা আপনি আগে ও জানতে চেয়েছেন পরে তো ওর মেয়েকে খুঁজে পেয়েছেন তারপর ও কোনো “।

“- তারপরও দরকার আছে এই মহিলা বিষয় এ টু জেড সব আমি জানতে চাই মনে রাখবে একটা খবর ও যেনো মিস না হয়। আর হৃদান চৌধুরী যদি খুশি হয়ে যায় তাহলে তার কাজ যে করে তাকে ও সে খুশি করে দেয় কথাটা মাথায় রাখবে “।

“- টেনশন করবেন স্যার আপনার কাজ হয়ে যাবে সব তথ্য পেয়ে যাবেন “।

হৃদান ফোন রেখে দেয় কোনো যোনো ওর ঘরে মন টিকছে না হিয়াকে দেখতে ইচ্ছে করছে। একটু আগে হিয়ার সাথে কতো সময় কাটিয়েছে তবুও কোনো বারবার ওর কথা মনে পড়ে বুঝতে পারে না হৃদান। হৃদান হিয়ার রুমে গিয়ে দেখে হিয়া খুব মনোযোগ সহকারে পড়াশোনা করছে। হিয়াকে বিরক্ত করতে চাই না বলে ওর রুম থেকে চলে আসতে চাইলে হিয়া ওকে ডাক দেয়। হিয়া বলে –

“- আপনি এখানে কিছু কি বলবেন আপনার কি কফি বা চা চাই “।

“- না দরকার নাই আপনাকে দেখতে ইচ্ছে হলো তাই এসেছি কিন্তু আপনি এতো মনোযোগ সহকারে পড়ছেন তাই বিরক্ত করি নাই। ভালো করে পড়াশোনা করেন “।

“- হুম করতে হবে কারণ আমার জামাই কতো কষ্ট করে টাকা দিচ্ছে তাই পড়াশোনা করতে হবে। ভালো রেজাল্ট করে জামাইয়ের টাকার শোধ করতে হবেতো “।

হৃদান ওর কথা শুনে হাসে হিয়ার রুমের ভিতরে ঢুকে আসে টেবিলের পিছনে গিয়ে হিয়ার মাথায় হাত দিয়ে মেসেজ করতে থাকে। হিয়া একটু শান্তি পায় আজকে সারাদিন জার্রিতে বেশ মাথা ব্যাথা ধরেছে তাই ভালো লাগছে। হৃদান বলে –

“- আপনার জামাইয়ের কোনো টাকার শোধ চাই না শুধু চাই তার বউ পড়াশোনা করে ভালো রেজাল্ট করুক সেটা চাই। নিজের সপ্ন পূরণ করবে সেটা খুব ভালো করে চাই। আপনার খুশি আমার কাছে সবচেয়ে বড়ো পাওয়া হিয়া।

#চলবে

#মেঘলা_আকাশে_রংধনু_হবো
#লেখনীতে_তাইয়্যেবা_বিনতে_কেয়া
#পর্ব_৩৩

হিয়া হৃদানের কথা শুনে হেসে উঠে সত্যি সে কতটা ভাগ্যবতী এইরকম একজন ভালো মানুষ তার জীবনে এসেছ৷ হিয়া পড়তে থাকে হৃদান রুম থেকে চলে যায় সে চাই না হিয়ার পড়াশোনায় বিরক্ত হোক। হিয়া পড়াশোনা শেষ করে নিচে যায় সবাইকে খাবার দিয়ে রুমে চলে আসে ঘুমানোর জন্য।

হৃদান খাবার খেয়ে নিজের রুমে চলে যায় আজকে বেশি কাজ করবে না যেহেতু সারাদিন ঘুরাঘুরি করেছে তাই শরীর বেশ টার্য়াড। কালকে অফিস রয়েছে তাই ঘুমিয়ে পড়তে হবে তাড়াতাড়ি হৃদান যখন ঘুমানোর জন্য চোখ বন্ধ করে। একটা চিৎকার ওর চোখের সামনে ভেসে আসে সাথে সাথে ঘুম ভেঙে যায় চোখ খুলে আশেপাশে দেখে। হৃদান বলে –

“- মনে হয় সপ্ন ছিলো কোনো আমি সেই ঘটনা ভুলতে পারি না।
হৃদানের কাছে এই কথার কোনো উত্তর নাই সে ঘুমানোর চেষ্টা করে কিন্তু শুধু সেই গাড়ির কথা মনে পড়ে। হৃদান বিছানা থেকে উঠে রুম থেকে বের হয়ে হিয়ার রুমে আসে কিন্তু হিয়া দরজা বন্ধ করে ঘুমিয়ে পড়ে। হিয়াকে বিরক্ত করতে চাই নাই হৃদান কিন্তু সত্যি ওর ঘুম আসছে না। হৃদান দরজায় টোকা দেয় আর বলে –

“- হিয়া দরজা খোলেন “।

হিয়া যদিও শুয়ে পড়েছিলো কিন্তু ঘুমিয়ে পড়ে নাই হঠাৎ হৃদানের ডাক শুনে অবাক হয়। এতো রাতে কোনো এসেছে বুঝতে পারে না তবে গিয়ে দরজা খোলে দেয় আর ঘুম ঘুম চোখ নিয়ে বলে –

“- আপনি এতো রাতে কিছু কি হয়েছে “।
“-না কিছু হয় নাই ঘুম আসছিলো না তাই আপনার রুমে এসেছি। আজকে আপনাকে জড়িয়ে ধরে ঘুমাতে চাই “।

হিয়া হৃদানের কথা শুনে একটু তাকিয়ে থাকে কি হলো বিষয়টা হিয়া সবসময় ওকে জড়িয়ে ধরে ঘুমাতে চাই। আজকে হৃদান নিজ থেকে ওর কাছে কাছে আসতে চাইছে। হিয়া বলে –

“- জি রুমে আসেন “।

হৃদান রুমে ঢুকে যায় বিছানায় বসে যায় হিয়া এসে হৃদানের পাশে বসে লোকটাকে এমন কোনো দেখাচ্ছে। পাহাড়ে যাওয়ার পর থেকে এমন কোনো লাগছে হিয়া ওর হাত ধরে বলে –

“- কি হয়েছে আপনার সকাল থেকে এমন কোনো দেখাচ্ছে আপনাকে বলুন। ঠিক আছেন আপনি “।

“- হুম ঠিক আছি এক খারাপ সপ্ন দেখছিলাম তাই একটু ঘেমে গেছি। যানেন হিয়া আমার জীবনে খুব বেশি মানুষের অস্তিত্ব নাই কারণ যাকে আমি সবচেয়ে বেশি ভালোবাসি সেই ছেড়ে চলে যায়। ছোটবেলা মা ছেড়ে চলে গেছে সেইসময় নিজেকে খুব কষ করে সামলে রেখছি। যদি আপনি চলে যান তাহলে সত্যি হৃদান চৌধুরী মরে যাবো হিয়া। আই লাই ইউ হিয়া “।

হৃদানের মরে যাওয়ার কথা হিয়ার কানে পৌঁছায় নাই এর আগে হিয়া ওর মুখ৷ ধরে ফেলে। আর বলে –

“- কি বলছেন এইসব আপনি হৃদান এই হিয়া কখনো আপনাকে ছেড়ে যাবে না। সবসময় আপনার পাশে থাকবে ওকে “।

“- হুম ওকে খুব ঘুম পেয়েছে কালকে অফিস আছে যেতে হবে একটু মাথায় হাত বুলিয়ে ঘুম পাড়িয়ে দেন “।

হৃদানের প্রতি হিয়ার মায়া হয় হিয়া ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দেয় আর হৃদান ঘুমিয়ে পড়ে। হিয়া তাকিয়ে দেখ হৃদানের দিকে কি সুন্দর একটা মায়াময় চেহারা। আচ্ছা কোনো ছেলে কি এতো সুন্দর হতে পারে যার চেহারা দেখে যেকোনো মানুষ প্রেমে পড়ে যেতে বাধ্য হয়। এই কথার উত্তর হিয়ার জানা নাই তবে এইটা যানে ওর হৃদানকে যদি কেউ একবার ঘুমানোর সময় দেখে তাহলে প্রেমে পড়বেই। কিন্তু এই অধিকার শুধু হিয়ার আছে কারো নাই।

সকাল হয়ে যায় হৃদান ঘুম থেকে উঠে নিজেকে হিয়ার কোলে দেখে কি সুন্দর বেডের সাথে মাথা দিয়ে ঘুমিয়ে রয়েছে। হৃদানের মুখে হাসি ফুটে উঠে সাথে সাথে সে উঠে গিয়ে হিয়ার মুখে কিস করে। হিয়ার চোখ খুলে যায় নরমালি সে খুব সকালে ঘুম থেকে উঠে কিন্তু কালকে ঘুমাতে দেরি হয়ে গেছে তাই উঠতে দেরি হয়। ঘুম থেকে উঠে চোখ খুলে হৃদানকে দেখে কালকের ওর রুমে আসার কথা মনে পড়ে। হিয়া বলে –

“- আপনি উঠে পড়েছেন “।
“- হুম উঠে পড়েছি তবে আমি যানতাম না কালকে সারারাত আমি বউয়ের কোলে ঘুমিয়ে থেকেছি। তাহলে এতো সকালে ঘুম থেকে উঠতাম না “।

“- আমার কাজ রয়েছে রান্না করতে হবে ফ্রেশ হবো “।

“- একটু থাকেন না খুব ইচ্ছা করছে আপনাকে দেখতে আরেকটু সময় আপনার পাশে থাকতে “।

“- বাহ মিস্টার হৃদান চৌধুরী এতো রোমান্টিক কবে থেকে হলো শুনি “।

“- হৃদান চৌধুরী সবসময় রোমান্টিক ছিলো কিন্তু তার বউ সেটা দেখতে পায নাই “।

“- ওহ তাই আপনি কবে রোমান্টিক ছিলেন আনরোমান্টিক লোক একটা “।

“- আমি যদি রোমান্টিক হয় তাহলে আপনি এতো সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠতে পারতেন না। আর যদি বেশি কিছু করি তাহলে তো সাতদিন রুম থেকে বের হতে পারবেন না। আপনি কি চান হিয়া সাতদিন ঘরে থাকার মতো কোনো কিছু করি “।

“- অসভ্য পুরুষ মানুষ “।

“- পুরুষ মানুষের বউয়ের কাছে অসভ্য হতে হয় বুঝতে পারলেন। না হলে নিজের বাবার মতো দুই বাচ্চার বাপ হয়ে থেকে যাবো “।

“- তো আপনি কয়টা বাচ্চার বাপ হতে চান “।

“- এগারোটা বাচ্চার বাপ হতে চাই একটু পুরো ফুটবল টিম দরকার আমার। যদি আপনার অনুমতি থাকে তাহলে “।

“- আমি রান্না করতে যাবো “।

হিয়া ঘুম থেকে উঠে পড়ে রান্না ঘরে যেতে হবে তাকে সবার জন্য খাবার বানাতে হবে। পিকু স্কুলে যাবে আবির ভাইয়া রয়েছে তাই নিচে যায় কিন্তু দেখে তানিয়া রান্না বসিয়ে দিয়েছে। হিয়া বলে –

“- আরে তানিয়া আপু তুমি রান্না বসাতে গেলে কোনো আমি করতাম “।

“- যারে এইটা কোনো বিষয় না তুমিতো আসতে দেরি করছিলে তাই আমি রান্না করছি। প্রায় রান্না শেষ “।

“- আসলে কালকে রাতে ঘুমাতে একটু দূরে হয়ে গিয়েছিলো তাই উঠতে দেরি হয়ে গেছে।

হিয়া গিয়ে তানিয়ার সাহায্য করতে থাকে কিন্তু পিকু স্কুলের যাওয়ার জন্য রেডি হবে তাই তানিয়াকে ডাকে। তানিয়া বলে –

“- হিয়া তাহলে তুমি বাকি রান্না করো আমি পিকুকে রেডি করে দিয়ে আমি “।

“- সমস্যা নাই আপু আর আমি আবির ভাইয়ার জন্য নাস্তা পাঠিয়ে দিবো “।

#চলবে