#যে_থাকে_আঁখি_পল্লবে
#সুচনা_পর্ব
©Farhana_Yesmin
দাদা মারা যাওয়ার চারদিনের মাথায় মিলাদে তার দ্বিতীয় স্ত্রী ফজিলাতুন্নেছা উপস্থিত হলে সেঁজুতিদের বাড়িতে একটা শোরগোল শুরু হলো। সেঁজুতির দাদী শামসুন্নাহার শোক ভুলে বাজখাঁই গলায় প্রতিবাদ করলেন-“ও মাজেদ, ওই নষ্টা মেয়েমানুষটাকে চলে যাইতে ক এখনি। এই শোকের সময় আমি কোন অশান্তি চাই না।”
মায়ের উস্কানি হোক বা যাইহোক সেঁজুতির বাবা মাজেদুর রহমান লোকলজ্জার ভয় না পেয়েই ভরা মজলিসে হুঙ্কার দিলেন-“আপনের সাহস হইলো কেমনে আমার বাড়িতে পা দেওয়ার?”
ভদ্রমহিলা একটুও ভয় না পেয়ে দৃঢ় স্বরে জবাব দিলো-“ভুল বললা মাজেদ। আমি তোমার বাড়িতে না আমার স্বামীর বাড়িতে আসছি। এই বাড়িতে তোমার যতটুকু হক আছে আমার এবং আমার সন্তানদের অধিকার তার চেয়ে কম নাই।”
“কিসের অধিকার? বিশ বছর আগে আব্বা আপনাকে বাড়ি থিকা বাইর কইরা দিছিলো নিজে। এখন কোন মুখে ফিরা আসছেন?”
ফজিলাতুন্নেছা নামধারী মহিলা অদ্ভুত রহস্যময় হাসি দিলো-“হ্যা ঠিকই বলছো। তোমাদের বাবা আমাকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছিল সত্যি। কিন্তু উনি মনেহয় দেরিতে হলেও ওনার ভুল বুঝতে পেরেছিল। তাইতো আমাকে এবং আমার সন্তানদের নামে ওনার পুরো সম্পদের অর্ধের অংশ উইল করে দিয়ে গেছেন। হয়তো নিজের ভুলের প্রায়শ্চিত্ত করেছেন এভাবে।”
বলেই ব্যাগ থেকে একটা কাগজ বের করে হাতে নাচাল-“গত সপ্তাহেই কুরিয়ারে পেয়েছি এটা। তোমার বড্ড ভুল করেছ। ভুলে গেছো তোমাদের বাবা তমিজউদদীনের আরেকটা পরিবার আছে। তার মৃত্যু সংবাদ জানার অধিকার, বাবার কবরে মাটি দেওয়ার অধিকার তাদেরও আছে। স্বামী মারা যাওয়ার তিনদিন পর জানতে পারলাম সে দুনিয়ায় নাই। আমার সন্তানদের কেন তোমরা এই হক থেকে বঞ্চিত করলে?”
ঘটনার আকস্মিকতায় সকলে হতবাক। মিলাদে আশা অতিথিদের মধ্যে মৃদু গুঞ্জন উঠলো। ফিসফাস শুরু হলো। সেঁজুতির বাবা মাজেদুর রহমান কথা হারিয়েছে। সেঁজুতি দেখলো ছোট চাচা জাহাঙ্গীর মারমুখী হয়ে এগিয়ে গেলো-“আবার নাটক শুরু করছেন? আমাদের শান্তি নষ্ট করতে কি জন্য আইছেন এতোদিন পরে? আপনার এইসব দুই নাম্বারি কাগজ দিয়া আমাদের ভয় দেখায়া লাভ নাই। এই বিশ বছরে আব্বা একবারও নিজ মুখে আপনাদের কথা কয় নাই। আর আপনে আইছেন সম্পদের ভাগ নিতে?”
“আমি কোন ভাগটাগ নিতে আসিনি। আমার স্বামী সেচ্ছায় আমাকে ভাগ দিয়ে গেছে। বিশ্বাস না হলে একজন উকিল ডেকে আনো। সেই না হয় কাগজ পরীক্ষা করে বলুক আমি মিথ্যে বলছি কিনা।”
এতটুকু শুনেই সেঁজুতির দাদী শামসুন্নাহার হাহাকার করে উঠলো-“ও মাজেদ, নষ্ট বেডি এইসব কি কয়? তোর বাপ সত্যি এমন করছে? সারাজীবন কার এতো সেবা করলাম গো?” বলেই মুর্ছা গেলেন তিনি। বাড়ির অন্দরের মহিলারা ছুটে এসে তাকে ধরলো। মায়ের এই কষ্ট সহ্য হলো না সেঁজুতি বড় চাচা সাজেদুর রহমানের। সে ছুটে এলো ফজিলাতুন্নেছার পানে। হাত ধরে টানলো-“বাইর হন এখনি। অনেক হইলো আপনের জারিজুরি আর সহ্য করুম না। নিজের ভালো চাইলে এখনি যানগা।”
ঠিক সেই সময় কোথ্থেকে একজন সুদর্শন যুবক এসে ফজিলাতুন্নেছাকে আগলে দাঁড়ালো। যুবকের তামাটে গায়ের রং এর সাথে খাঁড়া নাক পুরু অধর আর তীক্ষ্ণ লোচন। ছোট করে ছাঁটা ঘন কেশরাশি দারুন মানিয়েছে তাকে। ক্লিন সেভ গালের নিচের এ্যডম আপেলসের ঘনঘন ওঠানামা যেকোন মেয়ের হৃদয়ে ঝড় তুলবে। পাঁচ ফিট আট ইঞ্চি উচ্চতায় শরীরে ব্লাক জিনসের শার্ট প্যান্টের সাথে ব্রাউন কালারের জুতোজোড়া তার মেজাজি স্বভাবের পরিচয় দিচ্ছে যেন। সে সাজেদকে চোখের ইশারা করলো-“মুরব্বি, ভদ্র লোকের মতন হাতটা ছেড়ে দেন এখনি।”
সাজেদ গোঁয়ারের মতন মাথা নাড়ে-“ছাড়ুম না কি করবি তুই? আর তুই কে আমাদের মাঝে আইসা কথা কস? যা এইখান থিকা।”
“হাতটা ছেড়ে না দিলে এখান থেকে যেতে পারছি না যে। ও দিদা বলো না ওনাকে হাতটা ছেড়ে দিতে।”
ফজিলাতুন্নেছা সাজেদের দিকে তাকালো-“ওকে চেনো নাই এখনো? ও আমার তৌফিকের ছেলে রুজাইফ। আমার হাত ছাড়ো সাজেদ না হলে এখন এইখানে যা হবে তার জন্য কিন্তু আমাকে কিছু বলতে পারবা না পরে।”
“কি হইবো? কিসের ডর দেখান আমারে? আমার বাড়ির উঠানে দাঁড়ায়া আমারেই হুমকি?”
ঘটনা পরস্পরায় হতবিহ্বল হয়ে বসে থাকা মাজেদুর রহমান তার পাশে উপস্থিত ছেলেগুলোকে চোখের ইশারা দিতেই ওরা ছুটে এসে ধরতে চাইলো সুদর্শন যুবককে। ঠিক তখনই নব্বই ড্রিগ্রী এ্যাঙ্গেলে ঘুরে একজনকে কিক এবং অন্যজনকে ঘুসি মেরে দিলো যুবকটি। দু’জনই দুই হাত দূরে যেয়ে ছিটকে পড়লো। সাজেদুর ঘাবড়ে গেলো। তার চোখ কোটড় থেকে বেড়িয়ে আসার উপক্রম। সে দ্রুত ফজিলাতুন্নেছার হাত ছেড়ে দিলো। যুবক ততক্ষণে তার আঙুল দিয়ে তার এলোমেলো চুলগুলো ব্যাকব্রাশ করে নিয়েছে। শার্টের ফোল্ড করে রাখা হাতা সামান্য কুঁচকে গেছিল সেটা আস্তেধীরে ঠিক করে নিলো। মিলাদে উপস্থিত উৎসুক পাড়াপ্রতিবেশিরা কৌতুহলি নয়নে তাকিয়ে আছে। যুবকটি সেদিকে পাত্তা না দিয়ে বললো-“আমার দিদাকে অন্য কেউ ধরলে আমার ভালো লাগে না। গায়ের মধ্যে বিছে ঢুকে যাওয়ার অনুভূতি হয়। তাই এই মুহূর্ত থেকে সাবধান করে দিলাম সকলকে এরকম ভুল যেন আর না হয় কারো। আমার দিদার থেকে দূরে থাকবেন সবাই।”
মাজেদুর ভেতরে ভেতরে ভীষণ চমকে গেলেও শান্ত চোখে সবটা দেখলেন। ঘর ভরা মানুষের সামনে আর অপদস্ত হতে চাইলো না বিধায় শান্তি পূর্ণ সমাধানের পথ খুঁজতে ছোট ভাইকে ডাকলো-“জাহাঙ্গীর, উকিল সাহেবকে ফোন করে আসতে বল।”
জাহাঙ্গীর মাথা দুলিয়ে চলে গেলো। যুবকটি তাচ্ছিল্য ভরে হাসলো-“এতোক্ষণে বুদ্ধিমানের মতো কাজ করলেন চাচাজান। এখন তাড়াতাড়ি মিলাদ শেষ করে ফেলুন৷ এতো লোকের মাঝে সম্পদ নিয়ে কথা বলাটা ভালো দেখায় না। ঘরের কথা ঘরে থাকলেই ভালো। কি বলেন?”
দাঁতে দাঁত চেপে নিঃশব্দে অপমান হজম করলো মাজেদুর। পরবর্তী আধাঘন্টা মিলাদ আর দোয়ায় কেটে গেলো। যদিও বাড়ির শোকের পরিবেশ বদলে গেছে এতোক্ষণে। ভেতরে মহিলাদের আসর থেকে গুনগুন করে কান্নার আওয়াজ ভেসে আসছে। বিরক্তিতে ভ্রু কুঁচকে গেলো মাজেদুরের। মাথায় চিন্তারা ভীড় করে আছে। তাদের বাবা কি সত্যি সত্যি ওদের অর্ধেক সম্পদ লিখে দিয়েছে?
★★★
পারিবারিক উকিল শম্ভু নাথ বিশ্বাসের গম্ভীর চেহারা আরও গম্ভীর হলো। হাতের কাগজটা শতভাগ সত্যি এতে কোন সন্দেহ নেই। কিন্তু অবাক ব্যাপার হলো সব কাজ তাকে দিয়ে করালেও এতো বড় একটা ব্যাপার তমিজউদদীন তাকে লুকিয়ে কেন করলো? বন্ধু তমিজউদদীন তার পরামর্শ ব্যাতীত একটা কদমও ফেলতো না সেখানে এতোবড় একটা সিদ্ধান্ত কিভাবে নিলো? সে অন্য উকিল দিয়ে উইল পরিবর্তন করছে কেন? মাজেদুর খুকখুক করে কাশলো-“কাকা, চুপ কইরা আছেন কেন? কিছু কন। এই কাগজ কি সত্য?”
নড়েচড়ে বসলো শম্ভু নাথ। কিভাবে কথাগুলো বললে ছেলেগুলোর কষ্ট কম হবে তা ভেবে পাচ্ছেন না তিনি। ঘরে উপস্থিত সকলের উপর চোখ বুলিয়ে শম্ভু নাথ বলে উঠলো-“এই দলিল শতভাগ সত্য। তোমাদের বাবা তমিজউদদীন সেচ্ছায় স্বজ্ঞ্যানে এই উইল করেছেন। অন্তত এখানে যে তারিখ লেখা তাতে তাই বোঝা যায়। তমিজউদদীন এই বাড়ির অর্ধেক মানে ডানদিকের দালান, গ্রামের জমির অর্ধেক ফজিলাতুন্নেছা ভাবির নামে করছে। স্কুলের মালিকানা ও শহরের বাড়ি তৌফিকুর রহমানের ছেলে রুজাইফ ইবনে তৌফিকের নামে দিয়েছে। এখন থেকে এইসব কিছুর মালিকানা তার। এমনকি জমির কোন দিক কে পাবে সেটাও উল্লেখ করা আছে দলিলে। এর মধ্যে কোন ঘাপলা নাই মাজেদুর।”
ঘর জুড়ে পিনপতন নীরবতা নেমে এলো। জাহাঙ্গীর বললো-“মানি না এই উইল। এতোদিন সব দেখা শোনা করলাম আমরা আর আইজ একজন উইড়া আইসে জুইড়া বইসা সব ভোগদখল করবো? আব্বা এমুন অন্যায় কেমনে করলো? আমাদের তিন ভাইরে যা দিলো তার দ্বিগুণ দিলো আরেকজনকে। এইটা কেমুন হিসাব? ভাইজান, আপনে চুপ কেন? একবার খালি কন এই পোলাসহ ওই বেটিরে মাটিতে পুঁতে দেই।”
শম্ভু নাথ বিরক্ত হলেন-“আহ জাহাঙ্গীর, কিসব বলতেছিস? সহবত ভুলে গেছিস তোরা?”
রুজাইফ নামের যুবকটি ঠোঁট বাঁকিয়ে হাসলো-“সহবত ছিলো কবে? তমিজউদদীনের অমানুষ অওলাদ সবকটা।”
ফজিলাতুন্নেছা রুজাইফকে চোখ রাঙানি দিলো। শম্ভু নাথের দিকে তাকিয়ে বললো-“বলতে দেন দাদা। সম্পদের লোভে কতকিছু করছে ওরা। আজকে সেই সম্পদ হারাতে বসছে মাথা তো একটু নষ্ট হবেই।”
জাহাঙ্গীর তেড়ে আসতে গেলেই মাজেদুর থামালো-“মাথা গরম করিস না জাহাঙ্গীর। বাদ দে।”
রুজাইফ উঠে দাঁড়ায়-“অনেক দূরের পথ পাড়ি দিয়ে আসছি। আমাদের থাকার জায়গা বুঝায় দেন রেস্ট করবো। দিদার বিশ্রামের প্রয়োজন।”
মাজেদুর চিন্তিত হয়ে ভেতরে গেলো। সবাই উৎসুক নয়ন মেলে উঠোনে তাকিয়ে ছিলো। মাজেদুর কে দেখে ভেতর ঢুকে গেলো। শ্যমলী এগিয়ে এলো-“ওই পাশে বাচ্চারা থাকে। ওরা কেউ ঘর ছাড়তে রাজি না। সেঁজুতি তো সেই যে ঘরে দোর দিছে তারে বুঝান পারলে।”
দাঁতে দাঁত চেপে নিজেকে সামলালো মাজেদুর-“এইসব ঢং দেখার সময় নাই এখন। সেঁজুতিরে বলো নিজের জিনিস নিয়ে বামের কাঁচারি ঘরে আসতে। তাড়াতাড়ি যাও।”
শ্যামলী মন খারাপ করে বেরিয়ে গেলো। সাজেদূর পায়ে পায়ে ভাইয়ের পেছনে দাঁড়ালো-“ভাইজান, এমনে মাইনা নিতেছেন? ওরা তো পায়া বসবো। ভাববে আমরা ভয় পাইছি।”
“এখন কোন কথা কবি না কেউ। চুপচাপ থাক। ওই পোলা কি করে জানোস? ঝামেলা করিস না কোন নাইলে আমরা বিপদে পরবো।”
সাজেদুর চুপ করে গেলো। মাজেদুর ভাইয়ের কাঁধে হাত রাখলো-“ধৈর্য্য ধর। সময় হইলো আমি ব্যবস্থা নিবো চিন্তা করিস না।”
সাজেদুর মাথা দুলালো।
★★★
“আম্মা, আমার কতো শখের কামরা তুমি জানো তাও এমন কথা কও কেন? আমি এই ঘর ছাড়বো না কিছুতেই ছাড়বোনা।”
শ্যামলী অসহায় চোখে চাইলো-“বাড়াবাড়ি করিস না সেঁজুতি। তোর বাপে কইছে তোর প্রয়োজনীয় জিনিস নিয়ে কাঁচারি ঘরে যাইতে। ওরা এখন থিকা এইখানে থাকবে।”
সেঁজুতি ছলছল চোখে নিজের হাতে সাজানো কামরার চারিদিকে চোখ বুলালো। ওই যে দরজার সামনে ঝুলানো সুরের ঝঙ্কার তোলা উইন্ডচাইমটা চাচ্চুকে দিয়ে ঢাকা থেকে কিনে আনিয়েছিল। শুভ সাদা খাটের সাথে ম্যাটিং ড্রেসিং টেবিল, আলমারি সবই এই কামরার শোভা বাড়াতে ব্যবহার হয়। দেয়ালে টানানো সুন্দর সুন্দর ওয়ালম্যাট, বারান্দার মানিপ্ল্যান্ট সবই তো সেঁজুতির শখের। একটু একটু করে অনেকদিন ধরে মনের মতো করে সাজিয়েছে কামরাটা। এই বিছানায় শুয়েই স্বপ্নের রাজ্যে হারিয়ে যায় সেঁজুতি। জানালার ধারে পড়ার টেবিলে বসে পড়তে পড়তে ক্লান্ত হয়ে গেলে ওপাশের দিঘির দিকে তাকিয়ে থেকে ক্লান্তি দূর করে। নীলা আর কেয়ার কতো হিংসে এই কামরা নিয়ে। আজ কিনা কোথাকার কোন ছেলের জন্য তার নিজের স্বাধের রুমটা বিসর্জন দিতে হবে? শ্যামলী সেঁজুতির কাপড় আর পড়ার বইগুলো ব্যাগে ভরে নিয়ে বললো-“আমি এগুলো নিয়ে গেলাম। তুই তাড়াতাড়ি বাকি জিনিস নিয়ে আয়। তোর বাবা বলছে ওদের সাথে দেখা যেন না হয়। মন খারাপ করিস না মা। এইরকম রুম তোরে নতুন কইরা বানায় দিবে।”
কোন কথাতেই সেঁজুতি স্বান্তনা পেলো না। তার ভেতরে ভেতরে তীব্র রাগ আর জেদ জন্মায়। বদমাশ ছেলেটাকে দেখেছে ও। তখন উপল ভাই আর মিরাজ ভাইকে যেভাবে ফ্লাইং কিক দিলো। সেই দৃশ্য মনে করে সেঁজুতির শরীর কেঁপে উঠলো। লোকটাকে এত সহজে তার ঘরে বসবাস করতে দেবে না সে। টেবিলের গোপন ড্রয়ার থেকে নিজের জিনিসগুলো বের করলো সে। বিছানাটা সুন্দর করে গুছিয়ে ড্রেসিং টেবিলের আয়নার লিপস্টিল দিয়ে লিখলো-“সেঁজুতির কামড়া দখলের জন্য একটু সাজা তো পেতে হবে মিস্টার কুংফু পান্ডা।”
চলবে