যে থাকে আঁখি পল্লবে পর্ব-২৯

0
9

#যে_থাকে_আঁখি_পল্লবে
#পর্ব-২৯

নুমা কাঁদছে, নাদিরা নাহিয়ান কাঁদছে। সেঁজুতি অসহায় মুখ করে ওদের দেখছে। কি শান্তনা দেবে ভেবে পাচ্ছে না। হাশেম ফুপা সহজ সরল মানুষ। তাকে কেউ কেন কিছু করবে? সত্যি কি বাবা চাচারা তার ক্ষতি করেছে? সেরকম হলে রুজাইফ কি করবে চিন্তা করে হাসফাস লাগে সেঁজুতির। এই পারিবারিক অশান্তি আর ভালো লাগে না তার৷

ফজিলাতুন্নেছা কাঁপতে কাঁপতে উঠনে এসে দাঁড়ায়। রুজাইফ পুলিশের অপেক্ষায় আছে। দিদাকে দেখে বললো-“তুমি আবার এলে কেন?”
ফজিলাতুন্নেছা জবাব না দিয়ে এগিয়ে গেলো শামসুননাহারের দিকে। চোখে চোখ রেখে ঘৃণাভরা কন্ঠে বললো-“আপনে এই মরার কালেও শোধরাইলেন না। সারাজীবন আমারে হিংসা কইরা কত অপরাধ করলেন তাও একটু অনুতাপ নাই আপনের মধ্যে। আপনে আবার শয়তানি শুরু করছেন। ভাবছেন, সেই আগের মতো আমাকে বাড়ী ছাড়া করবেন?”
শামসুননাহার মুখ বাঁকা করলো-“আমার ঠেকা পড়ছে তোর মতে মাতারিরে হিংসা করতে। তুই আগেও আমার জীবনে আইসা ঝামেলা করতে চাইছোস, এখনও আবার আইছোস। তাইলে কি আমি বইসা বইসা আঙুল চুষমু?”
ফজিলাতুন্নেছা বিবশ কন্ঠে সুধাল-“আমি আপনার জীবনে আইসা ঝামেলা করছি? কইতে পারবেন কোনদিন কোন ক্ষতি করার চেষ্টা করছি আপনার? কিন্তু আপনে করছেন। অতীতের কথা বাদ দিলাম, এই যে এখন সবসময় আমাদের বিপদে ফেলতে চান। কেন? কারণ আমরা সম্পদের ভাগ নিতে আসছি, নিজেদের হক বুঝে নিতেছি এইজন্য।”
শামসুননাহার আগের মতো অটল গলায় বললো-“তোরা কেন ফিরে আসবি? এতো কিছু হওয়ার পর সাহস হয় কেমনে?”
“এইজন্য আপনে আমার মেয়ের জামাইকে গুম করবেন? ওই নিরীহ মানুষটা কিছু জানেই না। যখন এই এলাকা ছাড়া হইছিলাম তখন আমার নুমার বয়স মাত্র সতেরো। অভাবের দায়ে মেয়েকে ভোলাভালা হাশেমের সাথে বিয়া দিছিলাম। কতো কষ্ট করছে আমার নুমা। আইজ একটু সুখের মুখ দেখছে আর আপনের শরীর জ্বলতেছে? এতো হিংসা! আল্লাহ আপনারে কঠিন সাজা দিবে দেইখেন।”
জাহাঙ্গীর তেড়ে এলো-“খবরদার আমার মায়ের লগে মুখ লাগাবেন না। খুব খারাপ হইয়া যাবে কইলাম।”
রুজাইফ এসে জাহাঙ্গীরকে ধাক্কা দিলো-“বেয়াদবি করলে পিঠের চামড়া থাকবে না। দূরে দাঁড়ান।”
জাহাঙ্গীর থমকে গেলো। মাজেদ তাকে টেনে নিয়ে গেলো-“ঝামেলা করিস না। ওদের মাথা গরম আছে।”
জাহাঙ্গীর অগ্নি দৃষ্টিতে দেখলো ভাইকে যেন সব দায় মাজেদের। লাকি খুকু শ্যামলী পেছনে দাঁড়িয়ে আছে। বাচ্চারাও আছে দূরে। রুজাইফ ওদের দেখে দিদাকে বললো-“তুমি ঘরে যাও ফুমাকে সামলাও। আমি দেখছি এদিকটা।”
ফজিলাতুন্নেছা ওদের সবার দিকে নজর বুলিয়ে রুজাইফকে বললো-“এতোদিন তোকে কিছু করতে দেইনি। কিন্তু হাশেমের নিখোঁজ হওয়ায় যদি এদের হাত থাকে তবে কঠিন সাজা দিবি এদের। রুজাইফ, এটা আমার আদেশ। অন্যায় করতে করতে এদের সাহস আসমান ছুঁয়েছে। এবার এদের থামানো জরুরি।”
রুজাইফ দাঁতে দাঁত চাপলো-“তুমি ভেবো না দিদা। ওনাদের এবার ভালোভাবে বুঝিয়ে দেব যে, সবসময় অন্যায় করে পার পাওয়া যায় না।”
ফজিলাতুন্নেছা আর দাঁড়াল না, ঘরে ঢুকে গেলো। কিছুক্ষণ পর পুলিশের গাড়ি এলো। রুজাইফ ইন্সপেকটরের সাথে করমর্দন করে পরিস্থিতি বর্ননা করলো। পুলিশ জানালো, চব্বিশ ঘণ্টার আগে নিখোঁজ ব্যাক্তির জন্য জিডি করা যায় না। রুজাইফ বললো-“জানি যায় না। তবে এদের সম্পর্কে আগে থেকেই ধারণা ছিলো বলে আমি থানায় আগেই একটা সাধারণ ডায়েরি করে রেখেছিলাম। আমার ও পরিবারের জানমালের ক্ষতির সম্ভাবনা আছে এদের থেকে। জানতাম আগে পরে এরা এমন কিছু করার চেষ্টা করবে। এখন আপনারা আমার ফুপার খোঁজ করেন। আমি চাই না তার কোন ক্ষতি হোক। বড় ধরনের কোন ক্ষতি হওয়ার আগেই তাকে খুঁজে বের করেন। আমি খোঁজ নিয়ে দেখেছি, উনি চায়ের দোকানেই ছিলেন। ওখান থেকে কারো সাথে বেরিয়ে আর ঘরে ফেরেননি। আগে কয়েকদিন ফুপার পেছনে লোক লাগিয়ে রেখেছিলাম। সেই হিসেবে বলতে পারি, ওনাদের হাত আছে আমার ফুপার নিখোঁজ হওয়ায়।”
মাজেদ সাজেদরা হতভম্ব হয়ে গেলো। রুজাইফ যে তাদের ভাবনার চাইতে চালাক তা টের পেয়ে আকাশ থেকে পড়লো ওরা। একে অপরের মুখের দিকে তাকালো। শামসুননাহারের দিকে তাকিয়ে জাহাঙ্গীর বললো-“এখন কি করবা মা? সবাইরে ধইরা থানায় নিব লাগে।”
শামসুন্নাহার ভোতা মুখ বানিয়ে বসে আছে। পুলিশ বললো-“কি করতে চান স্যার?”
“ওনাদেরকে নিয়ে যান থানায়। দু’চার ঘা পিঠে পড়লে এমনিতেই সব বলে দেবে। তারপর যা হওয়ার আইন মেনে হবে।”
“আপনি শিওর।”
“একশোভাগ।”
রুজাইফের ইশারা পেয়ে পুলিশ এগুলো সবার দিকে। মুখে বললো-“আপনেরা গাড়িতে উঠে বসুন থানায় যেতে হবে।”
শামসুন্নাহার বললো-“কেন থানায় যামু? কি করছি আমরা?”
পুলিশ বললো-“ওনার পরিবারকে গুম করছেন। যদি থানায় যাইতে না চান তাইলে এখনই বলেন ওনার ফুপা কই?”
“আমরা কেমনে কমু ওনার ফুপা কই? হুদাই আমাগো পেরা দিতেছে। ভাইজান, আমার ছোট ছোট পোলাপান, আমারে নিলে ওরা কি করবে? সত্য বলতেছি আমি কিছুই জানি না।” খুকু আহাজারি শুরু করলো। ওর দেখাদেখি লাকিও শুরু করলো। শ্যামলী মুখে আঁচল চাপা দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। ও কি বলবে বুঝে পেলো না। স্ট্যাচু হয়ে দাঁড়িয়ে রইলো। সবাইকে টেনে গাড়ির কাছে নিতেই সেঁজুতি দৌড়ে এলো। সে এতক্ষণ দোতলা থেকে দেখছিল। বাবা মাকে পুলিশের গাড়িতে তুলবে এটা সহ্য হলো না তার। ছুটে এসে বাবা মাকে জড়িয়ে ধরে বললো-“এই কি করতেছেন? আমার আব্বা মাকে কই নিতেছেন? ছাড়েন তাদের।”
রুজাইফ বললো-“আমার ফুপাকে এনে দাও সেঁজুতি তোমার আব্বা মাকে ছেড়ে দিব।”
সেঁজুতি রুজাইফের কাছে এসে দাঁড়ায়-“আপনে জানেন আমার আব্বা মা এমন না। তাও পুলিশ ডাকলেন কেমনে?”
রুজাইফ কঠিন হলো-“ফালতু বকো না সেঁজুতি। হয় আমার ফুপাকে এনে দাও নয়তো পথ ছাড়ো। এর বাইরে কোন কথা নেই।”
সেঁজুতি ওর বাবার কাছে দৌড়ে গেলো-“আব্বা, আপনে জানেন হাশেম ফুপা কই? জানলে কয়া দেন। মানুষটা ভালো, বোকাসোকা। সবাইকে আদর করে, ভালা পায়। তার খোঁজ জানলে বইলা দেন আব্বা। আপনে জেলে থাকবেন এইটা সহ্য হইবো না আমার।”
মাজেদ ভীষণ লজ্জা পেলো মেয়ের প্রশ্নে। সে মাথা নিচু করে বললো-“সত্যি আমি কিছু জানি না সেঁজুতি। আমি কারো কোন ক্ষতি করি নাই।”
সেঁজুতি বাবার হাত ধরলো-“আমি জানি আমার আব্বা এতো খারাপ কাজ করতে পারে না।”
মাজেদের চোখে জল জমলো। মেয়েটা তাকে এতো বিশ্বাস করে!
সেঁজুতি দৌড়ে এলো রুজাইফের কাছে-“আমার আব্বা কোনদিন কোন খারাপ কাজ করে নাই। স্কুলের মাস্টার হিসেবে এলাকায় তার সন্মান আছে। আপনে তার সন্মানহানি কইরেন না। ফুপাকে খুঁইজা বাইর করুম একটু টাইম দেন।”
“উহু, টাইম দেব না। তোমার দাদী একজন খুনী তার উপর কোন বিশ্বাস নাই। সে যদি আমার ফুপাকে কিছু করে তার দায় কে নেবে?”
সেঁজুতি দাঁড়িয়ে রইলো। রুজাইফের কঠোরতা তাকে অবাক করছে। সে আবার দাদীর কাছে ছুটে গেলো-“দাদী, তুমি কিছু জানলে কয়া দাও। হুদাই জেলে যাইবা কেন?”
শামসুন্নাহার বললো-“আমি কিছু জানি না।”
“দাদী এমুন কইরো না। হাশেম ফুপা ভালো মানুষ তার ক্ষতি আল্লাহ সইবে না। তুমি জানলে কও সে কই আছে।”
শামসুন্নাহার চুপ করে রইলো। সেঁজুতি ছুটে গেলো সাজেদ আর জাহাঙ্গীরের কাছে। একইভাবে অনুনয় করলো। ওরাও নীরব রইলো। সেঁজুতি হাল ছেড়ে দিলো। সবাইকে ঠেলে গাড়িতে তুলবে এমন সময় খবর এলো, হাশেমকে পাওয়া গেছে। রাস্তার ওপারে বড় পুকুরের পাড়ে পড়ে আছে সে। পুলিশের গাড়ি নিয়েই ছুটলো রুজাইফ।

★★★

আধমরা হাশেমকে নিয়ে হাসপাতালে এসেছে রুজাইফ। জ্ঞানহীন হাশেমের গলায় গভীর দাগ। সম্ভবত তাকে গলায় ফাঁস দিয়ে মারতে চেয়েছিল কেউ। রুজাইফ দাঁতে দাঁত চেপে রাগ সামলালো। এখন জলের মতো পরিস্কার সবকিছু। হাশেমকে মেরে ফেলতে চাইছিল ওরা। আবারও! এতো দুঃসাহস? পুলিশ জানালো, হাশেমের জ্ঞান ফিরলে তার কাছ থেকে বয়ান নিয়ে আসামিকে গ্রেফতার করবে তারা। ততক্ষণ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।

পরদিন হাশেম কথা বলার পর্যায়ে এলে পুলিশ তার জবানবন্দি নিতে এলো। সে জানালো, জাহাঙ্গীর তাকে নিয়ে গেছিল গ্রামে জমি দেখাতে। শুরুতে যেতে না চাইলেও পরে জাহাঙ্গীর একা বলে অনুনয় করলে যেতে রাজি হয়। সেখানে থেকে ফিরতে রাত হয়ে গেল। পুকুরের কাছাকাছি পৌঁছাতে কে যেন তার মাথায় বাড়ি দেয়। সে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। এরপর তার সাথে কি হয়েছে সে বলতে পারে না। রুজাইফ বললো-“দেখলেন তো অফিসার, ও বাড়ির লোকেরা কেমন? ওদের বিরুদ্ধে এবার হত্যামামলা করবো আমি।”
ইন্সপেক্টর ইতস্তত বোধ করে-“স্যার, আপনাদের পরিবারের মধ্যকার ব্যাপার্ নিজেরা মিটিয়ে নিলে হতো না?”
রুজাইফ রেগে গেলো-“ওরা আমার পরিবার নয়। ওদের সাথে মিটমাটের প্রশ্নই আসে না। আপনি দ্রুত ওদের গ্রেফতার করুন।”
ইন্সপেক্টর বাধ্য হয়ে বললো-“যেমন আপনার ইচ্ছা।”
“চলুন আমি যাচ্ছি আপনার সাথে। এখন আর কেন অজুহাত নয়।”

বাড়ি এসে শোনা গেলো, জাহাঙ্গীর আর সাজেদ পালিয়েছে কাল রাতেই৷ দুইভাই কে না পেয়ে বাকিদের তুলে নিতে যেয়ে বিপাকে পড়লো ওরা। সেঁজুতি পথরোধ করে দাঁড়ালো। নিজের বাবাকে কিছুতেই থানায় নিয়ে যেতে দেবে না সে। তার একটাই কথা, বাবা কিছু করেনি। সেঁজুতি ফজিলাতুন্নেছাকে অনুরোধ করলেও সে আমলে নেয়নি। পরে বাধ্য হয়ে রুজাইফের কাছে এসেছে। রুজাইফ রুমের দরজা আঁটকে বসে ছিলো। সেঁজুতি বললো-“দরজা না খুললে আমি এখনই নিজের হাত কাইটা ফেলুম।”
“কাটো।” বন্ধ দরজার ওপাশ থেকে উত্তর দেয় রুজাইফ।
“আহ।” সেঁজুতির আর্তনাদ শোনা গেলো। রুজাইফ বসে থাকতে পারে না। দ্রুত দরজা খুলে দেখলো সেঁজুতি চুপ করে বসে আছে। হাত কাটা নিছক বাহানা, আওয়াজটা ইচ্ছাকৃত ছিলো। নিজেকে বোকা আবিস্কার করে রুজাইফের মেজাজ তেতো হলো। সে ঘরে ঢুকে দরজা লাগাবে তার আগেই সেঁজুতি দরজা ঠেলে ঢুকলো-“এমন কাপুরুষের মতন লুকায়ে আছেন কেন?”
রুজাইফ এগিয়ে এসে সেঁজুতির চোয়াল চেপে ধরলো শক্ত করে-“একদম বাজে বকবে না। আমি মোটেও কাপুরুষ না। কাপুরুষ তোমার বাপ চাচারা। না হলে ভেগে গেলো কেন?”
সেঁজুতি সেসব আমলে নিলো না। গোঁয়ারের মত মাথা নাড়ে-“এতকিছু বুঝি না। আমার আব্বারে থানায় নিতে দিমু না। আপনে গিয়া থামান।”
“পারবো না। অন্যায় করেছে সাজা পেতে হবে।”
সেঁজুতি রেগে গেলো-“আপনে জানেন আব্বা এমন কিছু করেনাই। মিথ্যা অভিযোগে তাকে ফাঁসাবেন? লজ্জা করে না?”
“না করে না।”
রুজাইফ কোনভাবেই নরম হচ্ছে না দেখে সেঁজুতি ওর পায়ে পড়ে গেলো-“আল্লাহর দোহাই লাগে এমন কইরেন না। আব্বার মানসম্মানের প্রশ্ন। অপরাধ করছে চাচারা আব্বা কেন ফাঁসব? আপনে ওদের বলেন আব্বার দোষ নাই কোন।”
রুজাইফ পা সরিয়ে নিতে চাইলো-“পা ছাড়ো সেঁজুতি। কি করছো?”
সেঁজুতি মাথা নেড়ে আরও শক্ত করে পা চেপে ধরে-“ছাড়ুম না। আপনে আগে আব্বাকে ছাইড়া দিতে কন। আপনে যা কইবেন আমি করুম শুনুম কিন্তু আমার আব্বারে কিছু কইরেন না।”
রুজাইফকে বিচলিত দেখায়। এই মেয়েটা দিন দিন ওর দূর্বলতায় পরিনত হচ্ছে। প্রমান থাকা স্বত্তেও ওদের ছেড়ে দেওয়া মানে অপরাধীকে প্রশ্রয় দেওয়া। এই মেয়েটার জন্য এখন তাই করতে হবে মনেহয়। রুজাইফ বললো-“যা করতে বলবো তাই করবে?”
সেঁজুতি মাথা দুলায়। রুজাইফ বললো-“মুখে বলো। পরে যদি অস্বীকার করো।”
সেঁজুতি বললো-“অস্বীকার করুম না। আপনে যা কইবেন তাই করুম।”
“ঠিক তো?”
“ঠিক ঠিক ঠিক। তিনবার কইলাম। আপনে আব্বারে নিতে দিয়েন না।” সেঁজুতি অস্থির হলো।
রুজাইফ উঠে দাঁড়ায়-“আজ রাতে সেজেগুজে আমার রুমে আসবে তুমি। রাজি আছো?”
সেঁজুতি না বুঝে বললো-“রাজি আছি।”
পরক্ষনেই পা ছেড়ে উঠে দাঁড়ালো। বিস্মিত হয়ে ঢোক গিলে বললো-“কি কইলেন আপনে? রাইতে আপনের রুমে আসুম?”
“হুম। আসবে। রাজি না থাকলে এখনই বলো। পরে পল্টি নিলে কিন্তু খারাপ হবে।”
সেঁজুতি দ্রুত মাথা দুলায়-“না না রাজি আছি। আপনে যা কইবেন তাই সই। আমার আব্বারে কিছু কইরেন না খালি।”
“মনে থাকলে ভালো।”
বলেই রুজাইফ চলে গেলো। ইন্সপেক্টরকে জানালো, তার অভিযোগ কেবল জাহাঙ্গীর আর সাজেদের বিরুদ্ধে, কাজেই তাদের গ্রেফতার করার চেষ্টা করুক। বাকীরা অপরাধী ধরতে সাহায্য করবে এই শর্তে আপাতত ওনাদের ধরা হবে না। পুলিশ মেনে নিয়ে চলে গেলো। ফজিলাতুন্নেছা রুজাইফের সিদ্ধান্তে খুশি হতে পারলোনা। রুষ্ট হয়ে বলে ফেললো-“কাজটা ঠিক করলি না রুজাইফ। ওই মহিলা হইলো আসল কালপ্রিট। ওর বুদ্ধিতে সব হয়।”
রুজাইফ এগিয়ে এলো, দিদাকে জড়িয়ে ধরে বললো-“তুমি আমার উপর ভরসা রাখো দিদা। আমি ওদের উপযুক্ত শাস্তি দেব।”
ফজিলাতুন্নেছা নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে বললো-“যা ভালো বুঝিস কর।”

★(বইটই তে আমার নতুন বই #এরই_মাঝে পড়ুন। লিংক কমেন্টে দিলাম।)

চলবে—
© Farhana_Yesmin